ঝিনাইদহের মহেশপুরে সবুজ বেষ্টনীতে ২৫ কিলোমিটার সড়ক
ঝিনাইদহের মহেশপুরে উপকারভোগীদের ২৫ কিলোমিটার সড়কে লাগানো গাছ এখন পরিণত হয়েছে সবুজ বেষ্টনীতে। গাছগুলো একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান করবেন উপকারভোগীদের। এ ধরনের বাগান কোটচাঁদপুরেও সৃজন করা হবে বলে জানিয়েছেন বনকর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।
মহেশপুরের কোলা গ্রামের উপকারভোগী সিরাজুল ইসলাম বলেন,উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের বালিনগর করতোয়া খালের দুইপাড় ও কোলা সুইজ গেট হতে কুল্লাপাড়া ব্রীজ হয়ে নাড়াপোতা পর্যন্ত (সিডলিং) সংযোগ সড়ক বাগান সৃজন করা হয়েছে। গেল ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পরিচালন ব্যয় খাতের আওতায় এ বাগান করা হয়।
২৫ কিলোমিটার এ বাগানে ২৫ হাজার টি বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপন করা হয়। যার রয়েছে চিকরাশি, সম্পদলাদলি, শিশু, জারুল, অর্জুন, আমলকি, পেয়ারা, লেবু, কাঁঠাল, কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, ইপিলইপিল, নিম।
তিনি বলেন, এ বাগানে ১৫৬ জন উপকারভোগী রয়েছে। যার মধ্যে ২৮ জন নারী ও ১২৬ জন পুরুষ সদস্য আছে। তারা মেয়াদপূর্তিতে লাভবান হবেন আর্থিক ভাবে। এ জন্য সবাই খুব যত্ন সহকারী বাগানটি পরিচর্যা ও দেখা শোনা করেন। আর সে কারনেই গেল দুই বছরেই বাগানটি সবুজ বেষ্টনীতে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর বনবিভাগের বন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ২০২১-২২ সালে বাগানটি করা হয়। সামাজিক বনায়ন নীতিমালার আলোকে যা করা হয়েছে। ওই বাগানের আবর্তকাল ১০ বছর। আবর্তকাল উত্তীণ হলে বাগানের গাছ বিক্রয় পূর্বক বিক্রয়লদ্ধ অর্থের ৫৫% শেয়ার উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে সমভাবে প্রদান করা হবে। এছাড়া গাছ রোপনের অনুমতি প্রদানকারী ভূমির মালিক ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ তাদের শেয়ার পাবেন।
তিনি বলেন, যশোর সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা, সহকারী বন সংরক্ষক,ভারগ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ফরেস্টারগণ ও অন্যান্য বন কর্মচারীগন পরিদর্শন করেন বাগানটি। এতে সংরক্ষন ব্যবস্থা জোরাদার রেখেছেন উপকারভোগীরা। বর্তমানে বালিনগর খালের পাড়ের সৃজিত বাগানটি এলাকায় দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। উন্নত হয়েছে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ।
এ কারনে স্থানীয় লোকজন ফলসের জমিতে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেন। বাগানের গাছে বাসা করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির পাখ-পাখালি। তাদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠে ওই এলাকা। ইতোমধ্যে বাগানটি দেখতে বালিনগর এলাকায় প্রতিদিন বিকালে ও ছুটির দিনে অনেক লোকজনের সমাগম হয়।
আগামীতে এ ধরনের বাগান আরো সৃজন করা হবে এ উপজেলায়। এ ছাড়া কোটচাঁদপুর উপজেলাতেও এ ধরনের বাগান করা হবে। এতে করে ওই এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন ওই কর্মকর্তা।