ভিক্ষুক পুনর্বাসনে শেখ হাসিনা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানের ১৫(ঘ) ও ১৯ অনুচ্ছেদে সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আয়ত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারী সাহায্যলাভের অধিকার ও মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন” এ আইন প্রণয়ন করেন এর পর দীর্ঘ দিন ভিক্ষুকদের নিয়ে তেমন কোন কাজ চোখে পড়েনি,স্বৈরশাসক ও বি এন পি জামায়াত জোট সরকারের আমলে যেমন বেড়েছে দুর্নীতি তেমনি বেড়েছে দারিদ্রের হার ও ভিক্ষুকদের সংখ্যা।

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরতœ শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরই ভিক্ষুকদের প্রতি এবং তাদের পুর্নবাসনে প্রথম নজর দেন। এর পর ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেকে সামনে নিয়ে ভিক্ষুক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজে হাত দেন। তারই ধারাবাহিকতায় অন্তর্ভূক্তিমুলক উন্নয়নের অংশ হিসেবে এবং একই সাথে দারিদ্র্যতা নিরসন ও ভিক্ষাবৃত্তির মত অমর্যাদাকর পেশা থেকে মানুষকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিগত ২০১০ সালের আগস্ট হতে ‘‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’’ শীর্ষক কর্মসূচি গ্রহণ করে। সেই লক্ষ্যে ঢাকা শহরের ২০০০ ভিক্ষুকের পুনর্বাসন এবং পর্যায়ক্রমে ভিক্ষাবৃত্তি নিরসন” এই লক্ষ্য নির্ধারণ করে ২০১০ সালে প্রাথমিক ধারণাপত্র প্রণয়ন করা হয়। ঢাকা শহরের সকল ভিক্ষুককে জরিপের আওতায় এনে তা থেকে পাইলটিং পর্যায়ে ২০০০ ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করার বিষয়টি সংযোজিত হয়।

কর্মসূচির বাস্তবায়ন পর্যায়ে ১০টি এনজিও নিয়োগ করে ঢাকা শহরের দশটি জোনে একই দিনে ১০,০০০ জন ভিক্ষুকের উপর জরিপ কার্য পরিচালনা করা হয় এবং জরিপে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে ১০,০০০ ভিক্ষুকের ডাটাবেইজ তৈরি করা হয়। ধারণাপত্রের আলোকে কর্মসূচির পাইলটিং পর্যায়ে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি পরিচালনার জন্য ভিক্ষুকের সংখ্যা বিবেচনায় প্রাথমিকভাবে ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও জামালপুর জেলাকে নির্বাচন করা হয় এবং প্রতিটি জেলায় ৫০০ জন করে মোট ২০০০ জনকে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও ২০১৮ সালে ভিক্ষুক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে “ভিক্ষুক পুর্নবাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান নীতিমালা গ্রহণ করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রধান করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়, এছাড়া প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি কর্পরেশনে আলাদা স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের কাজ হলো প্রকৃত ভিক্ষুক খুজে বের করা, তাদের আশ্রয়ন, কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা ও ডিজিটাল ডাটাবেস সংরক্ষণ এবং প্রতি মাসে একটি সভা করা সহ ১৩ টি দায়িত্ব পালন করে থাকে।

২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে প্রথম বারের মত দেশের ৫৮টি জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসনও বিকল্প কর্মসংস্থানের নিমিত্ত অর্থ প্রেরণ করা হয়। ভিক্ষাবৃত্তি কখনই সম্মানজনক জীবিকা বা পেশা হতে পারে না। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সত্বেও এক শ্রেণির জনগোষ্ঠী শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকায় বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশেষ করে রোজা, কোরবানীর ঈদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠাণ সামনে রেখে গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে চলে আসে ভিক্ষাবৃত্তির জন্য। ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ি থামলে ভিক্ষুকরা অনেক সময় যাত্রীদের বিব্রত করে এবং বিদেশি নাগরিকদের নানাভাবে উত্যক্ত করে।এ সকল বিষয়কে বিবেচনায় এনে ভিক্ষাবৃত্তিকে বন্ধ করতে হলে প্রথমেই ভিক্ষা প্রদানকে নিরুৎসাহিত করতে ও ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরনের জন্য এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার ভিক্ষুক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধ পরিকর।

ভিক্ষাবৃত্তির ইতিহাস বহু পুরানো, ১৪৯৫ বৃটিশ রাজা সপ্তম হেনরির সময় প্রচুর ভিক্ষাবৃত্তি দেখা দেয়,যার ফলে তখন আলাদা আইন প্রনয়ন করতে হয়। প্রাচীন বাংলা ছিল অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত সমৃদ্ধ জনপদ। কিন্তু বিগত কলোনিয়াল ও পাকিস্তানী শাসকদের শোষণ, বঞ্চনা, লুটপাট, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, নদী ভাঙ্গন, দারিদ্র্য, রোগ-ব্যাধি, অশিক্ষা ইত্যাদি কারণে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। তখন থেকে এ উপমহাদেশে ভিক্ষাবৃত্তি ব্যপক আকার ধারণ করে। সামাজিক স্বীকৃতি না থাকলেও অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। আবার অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করেছে। যারা পেশা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নিয়েছে তাদের নৈপথ্যে অর্থনৈতিক দুর্বলতা, সামাজিক নির্যাতন এবং নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জড়িত। যারা ভিক্ষাবৃত্তিকে ব্যবসা হিসেবে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগের জন্য সরকার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। কিন্তু আইনের মাধ্যমে বা শাস্তি দিয়ে প্রকৃতভাবে অসহায়ত্বের কারণে যারা ভিক্ষাবৃত্তির চর্চা করে তাদের নির্মূল করা যাবে না,এজন্য দরকার জনসচেতনতা ও সকলের সহযোগিতা।

বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্রেই আর্থিক দুর্দশায় নিপতিত নাগরিকের জন্য সম্পদ হস্তান্তরের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি রয়েছে। বাংলাদেশে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। অস্বীকার করার সুযোগ নেই, বিগত দুই দশকে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে স্বল্পোন্নত অবস্থান থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণ ঘটেছে। এ পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক ছিল নেতৃত্বের সদিচ্ছা। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ছিল এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর। তিনি একটি সুখী সমৃদ্ধ এবং কাঙ্খিত আত্মমর্যাদাশীল জাতির সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলার স্বপ্ন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন এবং ভূমিহীনদের জমি লিখে দিয়ে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছেন।

সকল শ্রেণিপেশার মানুষের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের কাঙ্খিত লক্ষ্যে উপনীত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। তাই ভিক্ষুকদের আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী করতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাদের সামাজিক মর্যাদা ফিরিয়ে এনেছেন। দেশে প্রায় ১৪ হাজার ৭০৭ জন ভিক্ষুককে মুদি দোকান, ছাগল, হাঁস-মুরগির খামার, গরুর খামার, রিকশা ও ভ্যান উপকরণ প্রদানের মাধ্যমে ভিক্ষা পেশা থেকে কর্মসৃজনের মাধ্যমে আয় করার সুযোগ দেয়ার যে অন্যন্য নজির স্থাপন করেছেন তা বিশ্বে বিরল। এরা শুধু আয় করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তা নয়, দেশ ও সমাজে তাদের সামাজিক মর্যাদা ফিরিয়ে এনেছেন। পেয়েছেন সমাজে মাথা উঁচু করে চলার সুযোগ।

ভিক্ষকুদের ভিক্ষা করা থেকে ফিরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি উন্নত জীবন গড়ে তুলতে দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন সাধিত করে গ্রামকে শহরে পরিণত করেছেন। এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।

ঢাকা শহরে ভিক্ষাবৃত্তি রোধের জন্য প্রাথমিকভাবে সিটি কর্পোরেশনের কিছু এলাকা ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করেছে। এলাকাগুলো হচ্ছে- বিমান বন্দরে প্রবেশ পথের পূর্ব পাশের চৌরাস্তা, বিমান বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি ও এর আশ-পাশ এলাকা, হোটেল রেডিসন সংলগ্ন এলাকা, ভিআইপি রোড, বেইলী রোড, হোটেল সোনারগাঁও ও হোটেল রূপসী বাংলা সংলগ্ন এলাকা, রবীন্দ্র সরণী এবং কূটনৈতিক জোনসমূহ। ঢাকা শহরের ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকাসমূহ ভিক্ষুকমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নিয়মিত মাইকিং, বিজ্ঞাপন, লিফলেট বিতরণ এবং বিভিন্ন স্থানে নষ্ট হয়ে যাওয়া প্লাগস্ট্যান্ড মেরামত/নতুনভাবে স্থাপন করার কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও ঢাকা শহরের ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষিত এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আটককৃত ভিক্ষুকদের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নিমিত্তে ৫টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ফাঁকা জায়গায় অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৬টি টিনসেড ডরমিটরি ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

ভিক্ষুক পুনর্বাসনের কাজটি পদ্ধতিগতভাবে করার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকার শুধু যে ঢাকায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে তা নয়, বরং সারা দেশেই এমন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পেশাদার ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ৫ জন ভিক্ষুককে ডাব বিক্রয়ের উপকরণ, একটি করে ভ্যান ও ১০০টি করে ডাব বিতরণ, নাটোর পৌরসভা ও নাটোর সদর উপজেলার ১০জন ভিক্ষুকের মাঝে একটি করে দোকানঘরের চাবি ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা প্রদান, চাঁদপুর বাগাদীতে ৪০ জন ভিক্ষুকদের পূনর্বাসনে নগদ অর্থ প্রদান, সুনামগঞ্জে ৪জন ভিক্ষুককে মুদি দোকানের মালামাল প্রদান, বাঘায় ১৪ জনকে ভিক্ষুককে ছাগল, শেলাই মেশিন, কাপড়, মুদি দোকান, বেত সামগ্রী, জুতার ও ভ্রাম্যমাণ মাছের দোকান প্রদান, আলমডাঙ্গায় ৪ জন ভিক্ষুককে গরু ও ১ জন ভিক্ষুককে পাখি ভ্যান বিতরণ, নোয়াখালীর সেনবাগের নবীপুরে নগদ অর্থ প্রদান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে চার ব্যক্তিকে চার লাখ টাকা প্রদান, কুলাউড়া উপজেলার ৪০ জন ভিক্ষুকের মধ্যে ছাগল বিতরণ, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় ১ হাজার ৩৫০ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন, মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় ৮ জন ভিক্ষুকদের মাঝে ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা মূল্যের গরু- ছাগল বিতরণ, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ৩২ জনকে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ, গোপালগঞ্জে ছয়জন ভিক্ষুকের হাতে মোট একলাখ ৯৫ হাজার টাকার চেক প্রদানসহ সারা দেশে প্রায় ১৪ হাজার ৭০৭ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করেছে বর্তমান সরকার। বাকিদের পুনর্বাসনের কাজ চলমান রয়েছে।

সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাদের দেশে কোনো ভিক্ষাবৃত্তি থাকবে না। একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। দেশ চলতো বৈদেশিক দাতা সংস্থাদের অর্থে। এখন সে ধারণা পালটে গেছে। বাংলাদেশ পরের উপর নির্ভরতা হতে বেরিয়ে এসেছে। নিজ অর্থে বড় বড় মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গা ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, ক্রমান্বয়ে সকল জেলা ভিক্ষুকমুক্ত করা হবে, সরকার বিভিন্ন সময় ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনে ক্রাস প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে থাকে যা এখন ও চলমান। গত ১৫ বছরে সম পর্যায়ের যেকোন দেশ হতে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে একটা বিষয় ম্যাজিক হিসেবে কাজ করেছে আর তা হচ্ছে শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্ব।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।




ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আওয়ামী লীগের গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নকে জনগণের মাঝে তুলে ধরে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আওয়ামী লীগের গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে শৈলকুপা নতুন বাজার এলাকায় বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ধলহরচন্দ্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চাঁদ আলী মন্ডলের সভাপতিত্বে ও শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার কায়সার টিপুর পরিচালনায় উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও বিশ্বাস বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম দুলাল। এছাড়াও শৈলকুপা পৌরসভা মেয়র কাজী আশরাফুল আজিম আজম, ঝিনাইদহ জেলা আওয়মী লীগের সহ-সভাপতি সরোয়ার জাহান বাদশা, শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আরিফ রেজা মুন্নু, ঝিনাইদহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি এ্যাড. আজাদুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান, শৈলকুপা উপজেলা কৃষকলীগর সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য রেজাউল করিম খান, ১১ নং আবাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস, শৈলকুপা পৌর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

উন্নয়ন সভায় বক্তারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশে যে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে সেই ধারাবাহিকতায় শৈলকুপায় কোন উন্নয়নই হয়নি। শৈলকুপা উপজেলা আওয়মী লীগের নেতা কর্মীরা এই জনপদকে একটি আধুনিক বাসযোগ্য আবাসভুমি গড়ার লক্ষ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচেন নজরুল ইসলাম দুলালকে নৌাকার মাঝি হিসেবে দেখতে চান।

সমাবেশের প্রধান অতিথি সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, আগামীতে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনতে নৌকা মার্কায় আবার ভোট দেওয়ার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জনগনের উন্নয়নের কথা ভাবেন। তার উন্নয়নে ঈশ্বার্ণিত হয়ে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে এতে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি নজরুল ইসলাম দুলাল তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল তৈরী করেছেন। অথচ ঝিনাইদহ -১ শৈলকুপা আসন উন্নয়নের দিক দিয়ে অনেক অবহেলিত। আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জনগনকে সাথে নিয়ে শৈলকুপাবাসীর কাঙ্খিত উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌছে দেবেন। এই গণসমাবেশে অন্যান্য বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে শৈলকুপার নির্যাতিত মানুষের অধিকার ফিরে পেতে, হত্যা ও সন্ত্রাসমুক্ত শৈলকুপা গড়ার লক্ষ্যে আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম দুলালকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।




আলমডাঙ্গার পোলবাগুন্দায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আলমডাঙ্গা উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যা মামলার আসামী ফোন্টু মণ্ডল নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দার আসামির উপস্থিতে এ রায় দেন। তিনি উপজেলা আইলহাঁস ইউনিয়নের পোলবাগুন্দা গ্রামের বাসিন্দা।

আলমডাঙ্গা থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশিকুল হক চলতি বছরের ৩১ মে ওই হত্যার ঘটনায় চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে। এরপর বিচারক নিহত ডালিয়ার ছেলেসহ ১৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেন। ফোন্টু মণ্ডল আলমডাঙ্গা উপজেলার মৃত ইসলাম মন্ডলের ছেলে।
হত্যার ৬ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা করায় রাষ্ট্রপক্ষ, মামলার বাদি ও স্থানীয়রা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে কোট কাস্টডিতে নেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে সরকারী কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন জানান, ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার পোলবাগুন্দা গ্রামের ফোন্টু মণ্ডল তার স্ত্রী ডালিয়া খাতুনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন রাতে ফন্টু বাড়ি ফিরে আসেন, কিন্তু তার স্ত্রী ডালিয়ার খোঁজ পাই না। পরিবারের সদস্যরা ডালিয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি নানান বাহানা করেন। পরদিন সকালে কোঁদাল নিয়ে ফোন্টুকে ফিরে আসতে দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। তার এলোমেলো কথা বলায় বাড়ির লোকজন ডালিয়াকে খুঁজতে বের হয়। একপর্যায়ে পোলবাগুন্দা মাঠের বিলের পাশে রক্ত ও চুল দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর । পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গাবতলা মাঠের মিলন আলীর সোলার সেচ পাম্পের পাইপের ভেতর থেকে ক্ষতবিক্ষত ডালিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। পালিয়ে যাবার চেষ্টা কালে স্থানীয়রা সরোজগঞ্জ বাজার থেকে ফোন্টুকে আটক করে পুলিশে দেয়। ওই দিন রাতেই নিহতের ছেলে জামিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেন।




চুয়াডাঙ্গায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ভাই ভাই ফুচকা হাউজে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটার সময় চুয়াডাঙ্গা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ এর নেতৃত্ব এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে চুয়াডাঙ্গা ভাই ভাই ফুচকা হাউজে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি, বাসি খাবার খাওয়ানো ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করাসহ নানা অপরাধে শহরের ভাই ভাই ফুচকা হাউজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের কবরী রোডে অবস্থিত ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ জানান, পূর্বে সতর্ক করা সত্বেও ভাই ভাই ফুচকা হাউজ কর্তৃপক্ষ অস্বাস্থ্যকরভাবে বিভিন্ন খাবার তৈরি, একই ফ্রিজের কাচা মাংসের সাথে প্রস্তুতকৃত খাবার সংরক্ষণ, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ব্যবহার, আগের বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করে পুনরায় খাওয়ানো, আগের দিনের পোড়াতেল ব্যবহার, উৎপাদন ও মেয়াদ তারিখবিহীন বিভিন্ন খাবার সংরক্ষণ, রান্নাঘরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ওহিদুল ইসলামকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৭ ও ৪৩ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় বাসি খাবার ও পোড়াতেল নষ্ট করা হয়।




নির্ভার আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী, তলে তলে প্রচারে বিএনপিও

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরইমধ্যে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তারা। নির্বাচনী কাজের সেই পালে যেন হাওয়া লেগেছে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটরদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রচারে নেমেছে দলের নেতাকর্মীরা। একই সাথে শুরু হয়েছে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, তলে তলে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছে বিএনপিও। দলের নেতাকর্মীদের সাথে সভা, জনসংযোগ করার পাশাপাশি কেউ কেউ পোস্টারও ছেপেছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলছেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল, নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত। এদিকে জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, ইসলামী ঐক্যজোট, বিএনএফসহ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও এখন নির্বাচনমুখী।

আওয়ামী লীগের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এসময় তিনি দলের নেতাদের পুরোদমে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন। এসময় দলীয় সভানেত্রী তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। গত ১৫ বছরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিদ্যুৎখাতসহ দেশে যে সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে তা গ্রামপর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তুলে ধরা; বিএনপি মিথ্যার রাজনীতি করে, সেই মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যটা মানুষকে জানানো এবং আগামীতেও আওয়ামী লীগ কেন ক্ষমতায় আসতে চায়, কেন মানুষে আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে সে বিষয়টিও ব্যাপকভাবে প্রচার করতে নির্দশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস নেতাদেরকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ় করেছে। তারা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নসহ একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন। দলটির নির্বাচনী ইশতেহারও তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে, কর্মসংস্থান তৈরি, দেশকে আরো বেশি বিনিয়োগবান্ধব করে তোলাসহ নানান বিষয় তুলে ধরা হবে ইশতেহারে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘দেশের ফেরার পর দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কুশল বিনিময় করেছেন। এসময় নেত্রী কিছু নির্দশনাও দিয়েছেন। আমরা তৃণমূলের কাছে সেই বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘যতো বাধা বিপত্তি, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসুক না কেন, নির্বাচন যথাসময়ে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণেই অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি না আসলে তারা একেবারে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।’

আওয়ামী লীগের সামনে এখন নির্বাচন ছাড়া আর কোনো ভাবনা নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাঠ নির্বাচনী কার্যক্রম, প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচনে ভোটরদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং দেশ পরিচালনার জন্য আবারও কেন আওয়ামী লীগকে দরকার সেটিও মানুষকে জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিকল্প এই মুহূর্তে আর কেউ নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা বাস্তবায়নে, বাংলাদেশকে উন্নয়নমীল রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচনী প্রচারণার পাশাপাশি বিএনপির মিথ্যাচার, আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও ঠেকাতে দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে সক্রিয় থাকার নির্দেশনাও দিয়েছি। বিএনপি-জামায়াত জোটের অপকর্ম ঠেকাতে আমরা সব সময় রাজপথে আছি।’ নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ দখলে রেখে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বললেও ভিতরে ভিতরে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করছে বিএনপিও। দেশের অনেক সংসদীয় আসনে বিভিন্ন দেয়ালে শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টারও। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যে রোড মার্চ, সভা-সমাবেশ করছে এর মধ্য দিয়ে দলটি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে বিএনপি ভোটে অংশ নেবেনা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের মতো বর্তমান সরকারের অধীনে শেষ মুহূর্তে যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে তারও বিকল্প প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।

জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত। নির্বাচনের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না। বিএনপি যে কয়েকবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে সেটাও নির্বাচনের মাধ্যমেই। এখন বিএনপির চলমান আন্দোলন যেটাও অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে।

এছাড়া জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, ইসলামী ঐক্যজোট, বিএনএফসহ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও এখন নির্বাচনমুখী। এসব দলের নেতাকর্মীরাও মাঠ পর্যায়ে তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন।




আলমডাঙ্গায় ইসলামী ব্যাংকে ঢুকে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১

দিবালোকে ইসলামী ব্যাংকে ঢুকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় আলমডাঙ্গা শহরের ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখায় এমন ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ব্যাংকের ম্যানেজার (অপারেশন্স) মোমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

আটকৃত যুবক হলেন- দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার দুধপাতিলা গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে উজ্জল (২৮)। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় তিন চুরি ও ১ মাদক মাদক মামলা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে আলমডাঙ্গা পৌরশহরের আলতায়েবা মোড়ের, ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখায় উজ্জল নামের এক যুবক প্রবেশ করে। সে সুযোগ বুঝে ক্যাশ ইনচার্জের কাউন্টারে প্রবেশ করে। ওই কাউন্টারের টেবিলে থাকা এক হাজার টাকার নোট (সম্বলিত) দশ বান্ডিল টাকা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে। এসময় ক্যাশ ইনচার্জ কায়সার আলম বাঁধা দিলে তাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তিনি আঘাত প্রাপ্ত হয়ে চিৎকার দিলে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা ও উপস্থিত গ্রাহকেরা ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে ওই ছিনতাইকারীকে আটক করে গণধোলাই দেয় উপস্থিতিরা। পরে, থানা পুলিশ ব্যাংকে পৌছালে তাদের নিকট তুলে দেয় ব্যাংকের কর্মকর্তা।

ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল ওয়াদুদ জানান, ছিনতাইকারীর নিকট থেকে দশ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে, ওই টাকা ব্যাংকের ক্যাশ ইনচার্জ কায়সার আলমের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত সময়ে ব্যাংকে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ছিনতাইকারী ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। বিকেলে ওই ব্যাংকের ম্যানেজার (অপারেশন্স) বাদি হয়ে মামলা করেছেন।




জীবননগরে ৩৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক-৫

জীবননগর থানা পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩৬বোতল ফেন্সিডিলসহ ৫মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৩টার সময় জীবননগর অফিসার ইনচার্জ (ওসি)এস.এম. জাবীদ হাসানের নেতৃত্বে এসআই(নি:) এসএম রায়হান সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে জীবননগর জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের বন্দর মাঠ সংলগ্ন পাকা রাস্তার উপর ৫ জনকে আটক করে পুলিশ।

আটককৃত আসামীরা হলেন মোঃ রাজা মিয়া (২৬), পিতা-মোঃ কলম মিয়া, মোঃ রোহান মিয়া (১৯), পিতা-মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ রিয়াজ আলী (১৯), পিতা-মোঃ সমীর আলী, মোঃ নাইমুল হাসান (১৯), পিতা-মোঃ মিন্টু মিয়া, আল্ ফাত্তাহ আল মামুন (১৯), পিতা-মোঃ হামিদুল ইসলাম, ৩৬ বোতল মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল সহ আটক করে।

আটককৃত আসামীদের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।




তৃতীয় টার্মিনাল: বাংলাদেশকে বানাবে দক্ষিণএশীয় অর্থনৈতিক হাব

পদ্মা সেতু ও পদ্মা রেল সেতুর মাধ্যমে সড়ক ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলপথে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে বাংলাদেশ মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নের মাধ্যমে সমুদ্রযোগাযোগেও নতুন দিগন্তের দেখা পেয়েছে। সর্বশেষ ঢাকা বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার বলেছেন, বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির হাব। ভৌগলিকভাবে ভারত, চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মাঝামাঝি হওয়ায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাথে যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে বাংলাদেশ। এই অবস্থানগত সুবিধা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে রূপান্তরের জন্য সড়ক, রেল, নৌ এবং বিমান যোগাযোগ সমন্বিত হচ্ছে বাংলাদেশে। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সেই সমন্বিত উদ্যোগেরই অংশ।

আজকের এই ঝা চকচকে তৃতীয় টার্মিনালে ঢোকার আগে আমাদের জানা দরকার, কোথায় ছিলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিমান বন্দরের নথি বলছে, ২০০৬ সালে আজকের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর ছিলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী। তখন পর্যন্ত বিমান বন্দরে সিডিউলের বিপর্যয় ছিল খুবই নিয়মিত ঘটনা। ২০০৬ এর ২৯ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি মাত্র এক সপ্তাহের বিমানের ৪১টি ডিসি-১০ ফ্লাইটের একটিও সময়মতো ছাড়তে পারেনি। এর মধ্যে মাত্র একটি ফ্লাইট অল্প বিলম্বে ছেড়েছিল। বাকি ৪০ টি ফ্লাইট অনেক দেরিতে। কোনটা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। ওই একই সময় এয়ারবাস-৩১০ প্লেনের ১১৬টি ফ্লাইটের মধ্যে মাত্র ১৭% ফ্লাইট নিয়মিত সময় চলাচল করেছে।

আবার এর পরের সপ্তাহে যদি দেখি, তাহলে দেখবো, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ডিসি-১০ প্লেনের ৬৭টি ফ্লাইটের মধ্যে মাত্র একটি ফ্লাইট সময়মতো ছেড়েছিল। এয়ারবাস প্লেন দিয়ে পরিচালিত ৯৬টি ফ্লাইটের মধ্যে মাত্র ১৬টি চলেছিল নিয়মিত সময়ে। ওই সময় একটানা ২১ দিন বিমানের ডিসি-১০ এর কোন ফ্লাইটই সময়মতো চলাচল করেনি।

আজ দেশি-বিদেশি ৩৩টি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। একটি রানওয়ে ব্যবহার করে প্রতিদিন গড়ে ১৫০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করছে। ফলে প্রায় পিক আওয়ারে একই সময়ে একাধিক ফ্লাইট থাকলে টেক অফের জন্য উড়োজাহাজগুলোকে সিরিয়াল ধরে অপেক্ষা করতে হয়। অন্যদিকে ল্যান্ডিংয়ের অনুমতি না পেলে আকাশে গো অ্যারাউন্ড করতে হয়। এতে এয়ারলাইনসগুলোর জ্বালানি খরচ যেমন বাড়ে, তেমনি ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখাও হয় মুশকিলের। বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বার্ষিক ৮০ লাখ যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা রয়েছে।

এই সময়ে বিমানবন্দরে যুক্ত হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল। এতে থাকছে বর্তমানের চেয়ে ৩ গুণেরও বেশি যাত্রী এবং প্রায় দ্বিগুণ কার্গো ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা। এরইমধ্যে নতুন ৫৫ টি এয়ারলাইন যাত্রী পরিবহন সেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হয়েছে। ২ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন,সরকারের মেগা প্রজেক্টগুলোর মধ্যে অন্যতম এই প্রজেক্ট সরাসরি আন্তর্জাতিক কমিউনিটির সাথে সম্পৃক্ত।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আরও জানায় তৃতীয় টার্মিনাল চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে বিদেশিদের যাতায়াত বাড়বে, পাশাপাশি বাংলাদেশিদের বিদেশে ভ্রমণ করা অনেক আরামদায়ক হবে। হিসাব অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহন সংখ্যা বাড়বে প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে ৮০ লাখ যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে পারলেও, দেড় কোটি যাত্রী পরিবহনের জন্য বর্তমান বিমানবন্দর যথেষ্ট নয়।

এক সমিক্ষায় দেখা গেছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে আড়াই কোটিতে উন্নীত হবে যাত্রী পরিবহন সংখ্যা। এই অতিরিক্ত যাত্রীর পরিমাণ সামলাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং জাইকার যৌথ অর্থায়নে ২১,৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিসেম্বর ২০১৯ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এখন নতুন এই টার্মিনাল, ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার বিস্তৃত, যা বছরে ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীদের পরিষেবা দেবে। যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে ২ কোটিতে উন্নীত হবে। অতিরিক্তভাবে এই টার্মিনালে মোট ৩৭টি বিমানের জন্য অ্যাপ্রোন পার্কিং তৈরি হয়েছে, যা প্রায় ৫.৫ লাখ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে।

বর্মানে বিমান বন্দর ৭,০০০ বর্গমিটার আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সটি বার্ষিক ৩ লাখ টন কার্গো আনলোড করে, এখন ৩৬,০০০ বর্গমিটার রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স বার্ষিক প্রায় ৫.৫ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডেল করবে। এছাড়াও, টার্মিনালে মেট্রোরেল এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সরাসরি সংযোগসহ একটি আলাদা স্টেশন থাকবে। থাকছে আন্তর্জাতিক মানের লাগেজ হ্যান্ডিলিং ও যাত্রীদের জন্য বিশ্বমানের সুযোগসুবিধা। নতুন টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে কর্মসংস্থান হবে ৬ থেকে ৭শ নতুন কর্মকর্তা আর কর্মচারি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মাণ হয়েছে এই তৃতীয় টার্মিনাল। ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিত্সুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং- এই তিন প্রতিষ্ঠান মিলে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ করেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। প্রকল্পের মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দেয় ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

প্রকল্পে কিছু খাতে টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এই টাকা দিয়ে সরকার তৃতীয় টার্মিনালের ১২টি বোর্ডিং ব্রিজের জায়গায় অতিরিক্ত আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ নির্মাণ করেছে। এখন বোডিং ব্রিজের মোট সংখ্যা ২৬ টি। এখানে রয়েছে মোট ৩৭টি অ্যাপ্রোন পার্কিং। এর ফলে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। বিমানবন্দরে বর্তমানে ট্যাক্সিওয়ে আছে চারটি। নতুন করে আরও দুটি হাই স্পিড ট্যাক্সিওয়ে যোগ হয়েছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজকে যাতে বেশি সময় থাকতে না হয়, সেজন্য তৈরি করা হয়েছে নতুন দুটি ট্যাক্সিওয়ে। এছাড়া পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। থাকছে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবন।

বেবিচকের তথ্যানুযায়ী, থার্ড টার্মিনালে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে প্রথম ধাপে চালু করা হবে ১২টি। ফলে শুরুতেই ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার এলাকায় ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেকইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেকইন কাউন্টার থাকবে। এছাড়া থাকবে ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার এবং ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার। আগমনের ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেকইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেকইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। থাকবে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট।

বহুরকম সুযোগ সুবিধার থার্ড টার্মিনালে ঢোকা এবং বের হ্ওয়ার জন্যে কোন ঝক্কিঝামেলা থাকছে না। কারণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি লুপ থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। থাকছে মেট্রোরেলের সংযোগও। হাজি ক্যাম্পের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য থাকছে টানেল। টানেলটি বিমানবন্দরের কাছে মেট্রোরেলের স্টেশনের সঙ্গেও যুক্ত হচ্ছে। ফলে বিদেশ থেকে যেসব যাত্রী আসবেন তারা খুব সহজেই বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবেন। আবার যারা বিদেশ যাবেন, তারাও রাজধানীর যানজট এড়িয়ে খুব সহজে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারবেন।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




কোটচাঁদপুরে জাতীয় শিক্ষক দিবস পালন

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে জাতীয় শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় কোটচাঁদপুর  বালিকা বিদ্যালয়ে র‍্যালি ও আলোচনা সভা করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসাহক আলী।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোমেন আল আরাফাত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুর রশিদ, শিক্ষিকা লতিফা খানম।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন, অভিভাবক সদস্য সাংবাদিক মোঃ মঈন উদ্দিন খান, মফিজুল ইসলাম,প্রভাষক মোঃ সাইফুর রহমান,সহকারি প্রধান শিক্ষক এস এম হুমায়ুন কবির।এসময় বক্তরা তাদের বক্তব্যে বলেন, শিক্ষকতা মহান এক পেশা।
শিক্ষকরা হলেন একটি মোমবাতির মত যারা নিজে প্রজ্বলিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আলো প্রদান করেন। একজন  মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলার জন্য পরিবারের পরেই সমাজের সবচেয়ে দায়িত্ববান এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা হলেন  মানুষ গড়ার কারিগর।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান শাখার ছাত্রী তাহমিদ ইসফার।
এ সময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।



আমঝুপিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন

“কাঙ্খিত শিক্ষার জন্য : শিক্ষক স্বল্পতা পূরণ বৈশ্বিক অপরিহার্যতা” এ প্রতিপাদ্যে মেহেরপুরের আমঝুপি আলোচনা সভা ও র‌্যালীর মধ্যে দিয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে মউকের হলরুমে  গণসাক্ষরতা অভিযানের সহায়তায় মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুস সালাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আতাউর রহমান ও আমঝুপি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ মাহবুব উল আলম।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মউকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মুরাদ হোসেন, দিবস উপলক্ষে প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার কাজল রেখা।

সভায় বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকসহ কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপের সদস্যগন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন মুজিবনগর উপজেলার প্রোগ্রাম ম্যানেজার শিরিন আক্তার। এর আগে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী আমঝুপির বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে।