ডা. রমেশ ক্লিনিকে অপারেশনের পর রোগীর মৃত্যু, ২০ লাখ টাকায় রফা

মেহেরপুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিক ‘ডা. রমেশ ক্লিনিকে’ এপেন্ডিকস অপারেশনের পর স্বর্ণালী খাতুন নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। স্বর্ণালী ঐ ক্লিনিকেরই সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার পর রোগীর আত্মীয়-স্বজন ক্লিনিক ঘেরাও করে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

নিহত স্বর্ণালী মেহেরপুর পৌর এলাকার হোটেল বাজার পাড়ার মৃত আদম শেখের মেয়ে এবং মেহেরপুর মল্লিকপাড়ার সাদ্দামের স্ত্রী।

গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মেহেরপুর পৌর এলাকার মল্লিক পাড়ার রমেশ ক্লিনিকে বহিরাগত চিকিৎসক মস্তফা কামাল জাহিদের পরামর্শে এপেন্ডিক্সের অস্ত্রপচার করা হয় সেখানকারই কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স স্বর্ণালী খাতুনের। কিন্তু অপারেশন শেষে পোস্ট অপারেটিভ বেডে নিতেই স্বর্নালীর কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয় বলে জানায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দীর্ঘ ৩০ ঘন্টায় অবস্থার উন্নতি না হলে রমেশ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে ঢাকায় নেওয়ার পথে পথিমধ্যে তার মৃত্যু ঘটে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস যাবৎ স্বর্ণালী পেট ব্যাথায় ভুগছিল। বৃহস্পতিবার ওটিতে চিকিৎসকদের সাথে চারটি অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়ার পর ক্লিনিকে আসা বহিরাগত চিকিৎসক

মোস্তফা কামাল জাহিদকে স্বর্নালী সমস্যার কথা জানালে চিকিৎসক তাকে অস্ত্রপচারের পরামর্শ দেয়। স্বর্নালীর স্বজনদের না জানিয়েই কোনরকম পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই ক্লিনিকে তার এপেন্ডিক্স অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে তার চেতনা না ফেরাতে এলাকায় স্বর্ণালীর মৃত্যু হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনগন ক্লিনিক ঘেরাও করে। সেসময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তার স্বামী সাদ্দামের কাছ থেকে বণ্ডে স্বাক্ষর নেয় (নিয়মানুযায়ী অস্ত্রোপচারের আগে নেওয়ার কথা) এবং মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করে।

নিহতের মামাতো ভাই রুবেল অভিযোগ করে অপারেশনের রাতে বলেন, ‘আমার বোনের অপারেশনের সময় ডাক্তার ছিলো না হাসপাতালের কর্মচারী হাবিব এনেস্থিসিয়া করেছে আর ম্যানেজার শহিদুল অপারেশন করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিলন বলেন, বৃহস্পতিবার আমার সামনেই ডা. মেহেদী হাসান বলেছিলেন এনেস্থিসিয়া ইনজেকশন হাবিব দিয়েছে।’

নিহত স্বর্ণালী দেবর সায়ন বলেন, ‘পরিবারের লোকদের না জানিয়ে এবং কোনরকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া কিভাবে তারা অপারেশন করলো সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। আমি কোনদিন শুনি নাই যে, এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করতে যেয়ে রোগী মারা যায়। তদন্তসহ এই ঘটনার বিচার দাবি করছি। ‘

২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকাল পৌনে চারটায় স্বর্নালীর মরদেহ মেহেরপুর এসে পৌছালে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ও ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেওয়ার দাবী জানায়। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশের অনুরোধে মেহেরপুর পৌর মেয়র ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সহ মৃতের স্বজনরা আলোচনায় বসে এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মৃতের পরিবার কে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘটনার মিমাংসা করে বলে জানা গেছে।

তবে, মেহেরপুর থেকে এবং ঢাকা থেকে মেহেরপুর নিয়ে আসার সময়ের মধ্যে মৃত দেহকে কখন গোসল করানো হলো এবং কাফন পড়ানো হল এটা নিয়েও এলাকাবাসীর রয়েছে প্রশ্ন। ঢাকা থেকে ফিরে আসা এম্বুলেন্সে নার্স স্বর্ণালী খাতুন কে কাফন পড়ানো অবস্থায় দেখা যায়। এ বিষয় জানতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এঘটনায় অর্ণব, রুবেল, ইমন সহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, গত দুই মাসে এ নিয়ে রমেশ ক্লিনিকে তিন জন কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অপারেশন টেবিলেই প্রান হারিয়েছেন এবং এবছরে মোট পাচ জন মারা গেছেন। ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া উচিত।

এনেস্থিসিয়ার চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসান ঘটনার রাতে বলেছিলেন তার পরিবর্তে ঐ ক্লিনিকের এক কর্মচারী হাবিব স্বর্নালীর এনেস্থিসিয়া করেছিলো। এবিষয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে সরাসরি ও ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও ডা. মেহেদী হাসানের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি আত্মগোপনে চলে গেছেন।

মেহেরপুর পৌর ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নুরুল আশরাফ রাজিব মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। তিনি বলেন, ‘শুধু রমেশ ক্লিনিকেই নয় মেহেরপুর শহরের অন্যান্য ক্লিনিকেও এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। ভুল চিকিৎসা অথবা চিকিৎসা জনিত অবহেলাতে রোগীর মৃত্যু ঘটছে আর পরবর্তীতে রোগীর স্বজনদের সাথে আর্থিক বিনিময় করে ঘটনার মীমাংসা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। এধরণের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত যারা তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিৎ।’

অস্ত্রোপচার ও পরবর্তী ঘটনা পরিক্রমা সহ আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি নিশ্চিত হতে ডঃ রমেশ ক্লিনিকের ম্যানেজার শহিদুল ইসলামকে বার বার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। ক্লিনিকে গেলে বলা হয় তিনি বাইরে আছেন।

মেহেরপুর ২৫০ শহর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের সময়েই মুলত রোগী কোমাতে চলে গেছিলো। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে স্বর্নালীর ফুসফুসটি সচল রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অনুরোধে শুক্রবার দিবাগত রাত চারটার সময় রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে রেফার্ড করা হয়।’

মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত আছি, কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মেহেরপুর সদর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ সচেষ্ট ছিলাম। ঘটনার দিন থেকেই পরিবারের সদস্যদের বলা হয়েছে অভিযোগ দিতে, কিন্তু তারা কোন অভিযোগ দেয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ‘ কোন আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা এ প্রশ্ন করলে ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন,’ আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাইরে অবস্থান করছিলাম। লেনদেন হয়েছে এমন একটা কথা শুনেছি। তবে সঠিক তথ্য আমার জানা নাই।’

তবে, মিমাংসাকারী মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা কিছুই বলতে রাজি হননি।




আলমডাঙ্গায় তুচ্ছ ঘটনায় শাশুড়িকে কুপিয়েছে পুত্রবধূ ইয়াসমিন

আলমডাঙ্গায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিপালী খাতুন (৪৮) নামের এক নারীকে কুপিয়েছে তারই পুত্রবধূ ইয়াসমিন।

গতকাল শনিবার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিপালী খাতুন একই গ্রামের বউবাজার পাড়ার ইয়াকুব আলীর স্ত্রী।

জানা গেছে, সাংসারিক টুকিটাকি কাজ নিয়ে পুত্রবধূ-শাশুড়ির মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ায় সকালে বটি দিয়ে শাশুড়ীকে কুপিয়েছে পুত্রবধূ। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শেফালীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, শিপালী খাতুনের মাথায় চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়েছে।




বাংলাদেশের মানুষ ভয়কে জয় করতে জানে

যুক্তরাষ্ট্র গত মে মাসে ভিসানীতি আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় তারা ভিসানীতি ঘোষণার কার্যকারিতার কথা জানালো। এই ভিসানীতি কার্যকারিতার কথা তারা তখন জানালো যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় গত শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার এক বৈঠকে আবারও বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।

ওই বৈঠকের পর আজরা জেয়া নিজেই এক্সে (সাবেক টুইটার) সচিত্র একটি পোস্ট দিয়েছেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের একটি সাইড ইভেন্টের আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আবারও যুক্ত হতে পেরে সম্মানিতবোধ করছি। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, অংশীদারত্বের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি এবং ৯ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদারতার সঙ্গে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছি।’

বৈঠকে আজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তারা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জেয়া রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবিকা নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেন।

জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা উচিত, অন্যথায় এই অঞ্চল নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ রোহিঙ্গারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান এবং মাদক কারবার। রোহিঙ্গারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে কারণ তাদের প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে এবং তারা সেখানে কোনো ভবিষ্যৎ অনুভব করছে না।

একটা বিষয় খেয়াল করলে বুঝা যাবে, উজারা জেয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর পরই বাংলাদেশের উপর যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসানীতি কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে। এতে বুঝা যাচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেছে। তাদের দাবি ছিলো, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, তাদেরকে নিজ দেশ ফিরিয়ে নিতে যত তাড়াতাড়ি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।

এ থেকে বুঝতে কোনো অসুবিধা নেই যে, রোহিঙ্গাদের কর্মসংসস্থানের প্রস্তাব সরাসরি ফিরিয়ে দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নাখোশ হয়েছে। এই প্রস্তাব ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আর কী কী প্রস্তাব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছিল তা আমরা জানিনা। মনে হচ্ছে, এমন কিছু প্রস্তাব হয়তো প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছিল যেগুলো তিনি নাকচ করে দিয়েছেন।

এবার আসা যাক বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন প্রসঙ্গে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। অনেকদিন ধরে তারা সেটি বলে আসছে। বাংলাদেশের তরফ থেকেও বার বার জানানো হয়েছে যে, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে। তারপরও তারা ভিসানীতি আরোপ করে সেটি কার্যকর করতে শুরু করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- নির্বাচন তো এখনও হয়নি। তার আগেই কেন ভিসানীতি আরোপ ও কার্যকর করা হলো?

এ থেকে এটা স্পষ্ট যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতেই এসব ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। গণতন্ত্র, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ভোট শুধুমাত্র ইস্যু। নিজের দেশেই আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে নানান কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। নিজের দেশেই যেখানে বাইডেন প্রশাসন প্রশ্নবিদ্ধ সেখানে অন্যদেশের গণতন্ত্র নিয়ে তাদের এতো মাথা ব্যাথা কেন?

বাংলাদেশেই যে তারা প্রথম ভিসানীতি আরোপ বা নিষেধাজ্ঞা জারি করে তা কিন্তু নয়। সাম্প্রতিক অতীত ঘাটলে দেখা যাবে, যুক্তরাষ্ট্র আরও বহু দেশের সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদদের উপর একইভাবে ভিসানীতি এবং নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এটা নতুন কিছু নয়। যেখানেই তাদের স্বার্থ জড়িত সেখানেই তারা একই পথে হেঁটেছে। কিন্তু কোথাও তারা সফল হতে পারেনি। সব জায়গা থেকেই ফিরেছে শুন্য হাতে। আমরা যদি ভেনিজুয়েলা থেকে শুরু করে সিরিয়া, ইরান, মিশর, তুরস্ক, রাশিয়া, বেলারুশের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো এদের সবার উপরই নিষেধাজ্ঞা জারি কিংবা ভিসানীতি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু খুব একটা ফল হয়নি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই সেদেশে সামরিক অভ্যূত্থান হয়েছিল। সেই অভ্যূত্থানে যুক্তরাষ্ট্র ইন্ধন দিয়েছিল। ২০২১ সালে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সৌলু যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনের বিষয়টি স্পষ্ট করেন। ভেনিজুয়েলায় নিজেদের পছন্দের লোক গুইদুকে প্রেসিডেন্ট করতে না পেরে মাদুরোকে বার বার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পাঠকদেরকে হালের একটা তথ্য দিয়ে রাখি। যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের উপরও। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল। বারাক ওবামা ভারত সফরের পর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তার সফরের বেশ কিছু দিন পর ভারত নাসার সঙ্গে চুক্তি করল।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। গুজরাট দাঙ্গার কারণে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পরবর্তিতে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র তার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়।

বাংলাদেশের রাজনীতি কোন দিকে যাবে, কারা সরকার পরিচালনা করবে- সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক শুধুই বাংলাদেশের জনগণ। এখানে বাইরের রাষ্ট্র সে যুক্তরাষ্ট্র হোক কিংবা অন্য কোনো দেশ হোক কারোরই হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। যখনই বাইরের কোনো রাষ্ট্র কোনো অজুহাতে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করবে তখনই বুঝতে হবে ওই দেশের বৃহত্তর স্বার্থ আছে। আর এসব নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি আরোপে এদেশের সাধারণ মানুষের কিছুই যায় আসে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্ত করেছে এবং করছে।

শেষ করতে চাই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রসঙ্গ টেনে। মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়েছিল। শুধু বিরুদ্ধেই অবস্থান নেয়নি, তারা সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। সেই যুদ্ধে সপ্তম নৌবহর পর্যন্ত পাঠিয়েছিল রিচার্ড মিলহাউস নিক্সন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তাই ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আর আমাদের সংবাদ মাধ্যমেরও উচিত নিষেধাজ্ঞা বা ভিসানীতির বিষয়টি এতো বড় করে না দেখা। বাংলাদেশের মানুষ ভয়কে জয় করতে জানে।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




চুয়াডাঙ্গায় এসএসসি-৮৯ ব্যাচের আয়োজনে ডা. শামিম কবিরকে সম্মাননা প্রদান

বন্ধু মহল এস এস সি ৮৯ ও এইচ এস সি ৯১ ব্যাচের আয়োজনে মাগুরার সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শামিম কবিরকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় একাডেমি মোড়স্থ সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে বন্ধু মহলের অন্যতম সদস্য ডা. শামিম কবির মাগুরা জেলার সিভিল সার্জন হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করায় এ সন্মাননা প্রদান করা হয়।

বন্ধু মহলের সভাপতি এজাজ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ্যাড. মনিবুল হাসান পলাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম, সাংবাদিক বিপুল আশরাফ ও মোশারফ হোসেন। পরে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডা. শামিম কবির। তিনি বলেন, বন্ধুত্বের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই। ধনী, গরীব নির্বিশেষে সবাই আমরা এক কাতারে কাজ করতে চাই। তার উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করতে পারি, সেই জন্য সকল বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে বন্ধু মহলের সদস্য হামিমুজ্জামান সুমন, সাজ্জাত হোসেন বাদল, মিজানুর রহমান, খোকন, লিটন, আব্দুল হালিম, জাহাঙ্গীর, সাহিন মিয়া, টুটুল, শফিকুল, মুকুল, খন্দকার শামিম, হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।




চুয়াডাঙ্গায় লোকমোর্চার মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা

চুয়াডাঙ্গায় নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জেলা লোকমোর্চার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার বেলা এগারোটায় চুয়াডাঙ্গা ওয়েভ ফাউন্ডেশন ট্রেনিং সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা লোকমোর্চার সভাপতি এ্যাড. বেলাল হোসেন। সামাজিক পুঁজি গঠনের মাধ্যমে স্হানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সরকারি সেবাসমুহ জনবান্ধব লোকমোর্চার প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশন ও লোকমোর্চা।

সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি। এরপর বাল্য বিবাহের অশুভ পরিণাম ও প্রতিরোধে করণিয়সহ জেলা লোকমোর্চার পক্ষ থেকে প্রশাসনের নিকট দাবিনামা তুলে ধরেন অতিথিদের মাঝে কিশোর কিশোরী ক্লাবের মেন্টর উম্মে মায়মুনা। এরপর নিজের বাল্যবিয়ে নিজে কি ভাবে প্রতিরোধ করেছে তার অনুভূতি প্রকাশ করেন আনিকা। বাল্যবিবাহ হিন্দু ধর্মের কথা নিয়ে আলোচনা করেন দেবেন্দ্রনাথ বাবু লাল। ইসলামের বাল্য বিবাহের সমুহ নিয়ে আলোচনা করেন সভায় কাজি শামসুল হক। এরপর অতিথি ও উপস্থিত লোকমোর্চার সদস্যগণদের সাথে সভায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ নিয়ে জেলার কাজিদের সাথে আলোচনা করা হয়। এসময় সভাটি উপস্থাপন করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল আলিম সজল।

এসময় সভার প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ নিয়ে বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। বাল্যবিবাহের প্রতিটা আইন কার্যকর হচ্ছে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হলে মানসিক আর বিবেক টা কে ত্যাগ করতে হবে। বাল্য বিবাহ নিয়ে সরকার অটুট। বাল্যবিবাহ সবাইকে বন্ধ করতে হবে। বাল্যবিয়ে একটি অপরাধ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে হলে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। বাল্যবিবাহ যারা সাহায্য করে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি দেওয়া হবে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে তাহলে বাল্য বিবাহ বন্ধ হবে। পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা থাকলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা যাবে। বাল্যবিবাহের সাহায্য কারিদের ধরে নিয়ে এসে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, জীবননগর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদুল আলম, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক পারভীন লাইলা, সহ-সভাপতি নাবিলা রুখসানা ছন্দা, ও নাসির আহাদ জোয়ার্দার, দপ্তর সম্পাদক নাসির জোয়ার্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, জেলা লোকমোর্চার প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আহাদ আলী মোল্লা, নির্বাহী সদস্য সেলিমুল হাবিব সেলিম, লোকমোর্চার সদস্য জামান আক্তার, নুরুনাহার কাকলি, শিরিনা ইয়াসমিন, ইলিয়াস হোসেন, শেখ লিটন, উম্মে হাবিবা, হেলেনা নাসরিন, আঞ্জুমান আরা, জেলা লোকমোর্চার সচিব ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার কানিজ সুলতানা, প্রমুখ।




আমেরিকা যাদের বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন হয়না

সারা বিশ্বে দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার, অবিচার, জুলুম ও নিপীড়ন চরম আকার ধারণ করেছে। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে যুদ্ধ-বিগ্রহ, হানাহানি ও হত্যাযজ্ঞ চলছে। যদি প্রশ্ন করা হয় এর জন্য দায়ী কে,তাহলে সহজভাবেই উত্তর আসবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সেসকল যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে এর জন্য দায়ী আমেরিকা।

স্থানীয় আদিবাসীদের নির্মম- নিষ্ঠুর পন্থায় হত্যা করে ইউরোপীয় বেনিয়ারা ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই প্রতিষ্ঠা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । প্রতিষ্ঠা লাভের পর ২৪৭ বছরে এক দিনের জন্যও এ দেশটি বিনা যুদ্ধ বসে থাকেনি। এরা বিশ্বের মোড়ল। মানবতা রক্ষার নামে নিজেরা অস্ত্র ব্যবহার করে। আবার অন্যদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে তা ব্যবহার করার জন্য। এরা যুদ্ধের পটভূমি তৈরি করে বন্ধুত্বের মাধ্যমে, তারপর নিজেরদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বিভিন্ন ধরণের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে, ছরি ঘুরাতে থাকে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রের উপর। নিজেদের প্রেস্ক্রিপশানে বন্ধু রাষ্ট্রকে চালাতে থাকে, কথা না শুনলেই শুরু করে যুদ্ধ মিশন। কখনও সরাসরি আবার কখনও অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে সংঘাত জিইয়ে রাখে। নিকট অতীতে আমেরিকার কূটকৌশলে অনেক দেশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে ।

১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানকে দখল করে রেখেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের একচ্ছত্র আধিপত্য মেনে নিতে পারেনি আমেরিকা। তখন সোভিয়েত ইউনিয়নকে হটানোর জন্য আফগানিস্তানে তালেবান যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণসহ অস্ত্র- গোলাবারুদ সরবরাহ করতে থাকে আমেরিকা। সৃষ্টি হয় সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদার। একসময় আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন।

পরবর্তীতে আমেরিকা তালেবানদের নিয়মিত অর্থ এবং অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দিলে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়, ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর আল কায়েদা আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা করে যা আমেরিকা এবং আফগানিস্তানকে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের দিকে ধাবিত করে। সন্ত্রাস নির্মূলের নামে যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর যাবৎ আফগানিস্তানে সৈন্য মোতায়েন করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্ট’ অনুসারে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধে আফগানিস্তানে ১,৭৪,০০০ জন মানুষের মৃত্যু হয় ।

২০২০ সালের ২৯শে ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান দোহায় শর্তসাপেক্ষ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তিতে বলা হয় যে ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে, পরিবর্তে তালিবান চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী “আল-কায়েদাসহ এর কোনো সদস্য, অন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে এমন কার্যক্রম করার অনুমতি প্রদান করবে না ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা পারমাণবিক বোমা দিয়ে জাপানের হিরোশিমাতে প্রায় ১,৪০,০০০ এবং নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪,০০০ লোককে হত্যা করে। পরবর্তীকালে এ দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও ২,১৪,০০০ মানুষ। দুই শহরেই মৃত্যুবরণকারীদের বেশির ভাগই ছিলেন বেসামরিক ব্যক্তি।

মধ্যপ্রাচ্যসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি ইসলামিক রাষ্ট্রপ্রধান আমেরিকার সকল অসংগতির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে আসছিল তখন। এসকল রাষ্ট্রপ্রধানদের ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে নেমে পরে আমেরিকা। একনায়কতন্ত্র হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্লোগানকে সামনে রেখে একে একে প্রতিটি দেশের জনগণকে উস্কে দেয় আমেরিকা। আরব বসন্তে অবদান রাখায় একজন নারী সাংবাদিককে নোবেল শান্তি পুরস্কারও দেয়া হয় যদিও একটা বড় অংশের দাবী, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্যই নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে আন্দোলনকে আরো উস্কে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

মিসরে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রতিবাদকারীরা মাঠে নামে। প্রতিবাদ ক্রমেই উত্তাল হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক পদত্যাগ করেন। দেশটি ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের পথে হাঁটা শুরু করলেও দুই বছর পর ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতেই যায়। আরো কঠোরভাবে ফিরে আসে সেনাশাসন। যে তিউনিসিয়া থেকে আরব বসন্তের সূচনা হয়েছিল সেখানে গণতন্ত্র খুব শক্ত ভিত গাড়তে পারেনি। অগ্রগতি যা হয়েছে তা সামান্যই।
পার্শ্ববর্তী লিবিয়া গাদ্দাফিকে হটালেও দেশটি গৃহযুদ্ধ থেকে বের হতে পারেনি। সরকারিভাবে লিবিয়ায় মার্কিন সৈন্যের সংখ্যা সীমিত। কিন্তু সৈন্য সংখ্যা কম থাকার মানে যে লিবিয়ার ভেতরে তাদের তৎপরতা কম, তা কিন্তু নয়। গাদ্দাফিকে হত্যার পর থেকেই লিবিয়াতে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। তার মৃত্যুর পর যারা দেশটিতে ক্ষমতায় এসেছে তাদের চেয়ে তিনি অনেক ভালো ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ ইতালি এরইমধ্যে নিজেদের এই ভুল স্বীকারও করেছে।

ইয়েমেনে সৌদি মার্কিন আগ্রাসন ছিলো ভয়াবহ। ইয়েমেনকে রক্ষার নামে সেখানে গণহত্যা চলেছে যার নেতৃত্বে ছিলো সৌদি মার্কিন জোট। মার্কিন সরকার স্বীকার করেছে যে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহর বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটকে তারা সীমিত পর্যায়ে সামরিক সমর্থন দিয়েছে। এতে কিন্তু স্পষ্ট এই ইয়েমেনে তথকথিত যুদ্ধের নামে সেখানে কী করেছে তারা!

সিরিয়ায় এখন ১৫০০ মার্কিন সৈন্য তৎপর রয়েছে। এরা সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স, এসডিএফ-কে নানা ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, এসব সাহায্যের মধ্যে রয়েছে বোমা বর্ষণ করা, স্থানীয় বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা এবং অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা। সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে অন্তত ৩.৫ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। আরও ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি গৃহহীন জীবন যাপন করছে। প্রশ্ন হলো, ভিনদেশে যেখানে সে দেশের জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনা করবে সেখানে আমেরিকান সৈন্য কেন থাকবে? কেন এত রক্তপাত ঘটাবে?

এভাবেই আরব বসন্তের নাম করে আমেরিকা নিজেদের বিরুদ্ধাচারণ করা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে গেছে। এক হিসাবে বলা হয় আরব বসন্তের ফলে মাত্র পৌনে দুই বছরে লিবিয়া, সিরিয়া, মিশর, তিউনিসিয়া, বাহরাইন ও ইয়েমেনের মোট দেশীয় উৎপাদনের ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ৫৬ কোটি মার্কিন ডলার।

ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র রয়েছে। আর তা থেকে ইরাকি জনগণকে মুক্ত করতে সেনা অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। শুধুমাত্র এই অনুমান নির্ভর তথ্যের উপর ভিত্তি করে ২০ মার্চ, ২০০৩ তারিখে মারণাস্ত্র ধ্বংস করার নামে তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরাকে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট। হামলায় ২ লাখ বেসামরিক ইরাকিকে হত্যা করে আমেরিকা এবং প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে বন্দি করে পরবর্তীতে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।দখল করে নেয় ইরাকের সকল তেলের খনি।

সাদ্দামকে সরানোর পর ইরাকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন প্রভিশনাল অথরিটি নামে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করা হয়। যার প্রধান ছিলেন পল ব্রেমার। এ সময় ইরাকে সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থা ভেঙে দেয়া হয়। এছাড়া ইরাকে বহু বছর ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টিকেও সরকার গঠনে অংশ নিতে বাধা দেয়া হয়। এসময় দেশটিতে হাজার হাজার প্রশিক্ষিত সেনা সদস্য বেকার হয়ে পড়ে এবং সরকার ও প্রশাসনে শূন্যতা তৈরি হয়। নতুন করে মাথা চারা দিয়ে উঠে জঙ্গিবাদ ।

বাস্তবতা হলো, ওই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ২০ বছর পার হয়ে গেলেও ইরাকে আজ পর্যন্ত এখনো মারণাস্ত্র পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই অভিযোগেই ইরাকে হামলা চালানো হয়। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঝুলানো হয় ফাঁসির দড়িতে। পরবর্তীতে আমেরিকা স্বীকার করে নেয় যে ইরাক হামলা তাদের ভুল ছিলো এবং কোন মরণাস্ত্র ইরাকে ছিলো না।

মধ্যপ্রাচ্য,এর মজুত তেল এবং কৌশলগত জলপথ (সুয়েজ খাল) নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসরাইল-ফিলিস্তিনের দীর্ঘ সংঘাতে ইসরাইলের পক্ষপাতিত্ব করে আসছে আমেরিকা। মূলত আরব দেশগুলোকে চাপে রাখতে ইসরাইলকে সরাসরি সমর্থন দেয় আমেরিকা।

দীর্ঘদিন যাবৎ দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তানকে জঙ্গিবাদের হাব হিসেবে ব্যবহার করে আসছে আমেরিকা। তালেবান কিংবা আল কায়েদার উত্থানে তাদের প্রশিক্ষণে যেভাবে আমেরিকা পাকিস্তানের ভূমিকে ব্যবহার করেছে একইভাবে তালেবান/আল কায়েদার ধ্বংসের জন্যও পাকিস্তানকে ব্যবহার করেছে আমেরিকা। এই সুযোগে বছরের পর বছর পাকিস্তানকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র কিনতে বাধ্য করেছে আমেরিকা। যা পাকিস্তানের সামরিক খাতের বরাদ্দ দেখলেই বুঝা যায়। ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও প্রতিরক্ষা খাতে পাকিস্তানের বরাদ্ধ ছিল মোট বাজেটের ১৬ শতাংশ।

বলা হয়ে থাকে যে, এ পর্যন্ত পাকিস্তানে যত সামরিক শাসক ক্ষমতায় এসেছে সবাই আমেরিকার পছন্দসই ব্যক্তি ছিলেন। পাকিস্তানে কে কখন সরকার প্রধান হয়ে ক্ষমতাসীন হবে আবার কে কখন ক্ষমতাচ্যুত হবে তা অনেকাংশেই আমেরিকার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য থেকেই যা স্পষ্ট হয়ে যায়।

আমেরিকার নির্দেশনায় চলা পাকিস্তানে আজ পর্যন্ত কোন রাষ্ট্রপ্রধান তার ক্ষমতার মেয়াদ পুরোপুরি শেষ করে যেতে পারেনি। মূলত নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্যই আমেরিকা পাকিস্তানের রাজনীতিতে যখন যাকে প্রয়োজন তাকে ক্ষমতাসীন করে আবার যখন ক্ষমতাচ্যুত করে। ফলস্বরূপ পাকিস্তানে দিনের পর দিন রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক টানাপোড়ান চলতেই থাকে।




দর্শনা সীমান্তে ৪০ লক্ষ টাকার রুপার গহনা পাচারকালে স্বামী-স্ত্রীসহ আটক ৩

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে প্রায় সাড়ে ৪০ লাখ টাকার ভারতীয় রুপার গহনাসহ স্বামী -স্ত্রীসহ ৩ চোরাকারবারীকে আটক করেছে ৬ বিজিবি।এ ঘটনায় বিজিবি বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করেছে মামলা।

জানাগেছে আজ শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান, পিএসসি নেতৃত্বে অভিযান চালায় নাস্তিপুর গ্রামের হায়দারের বসতবাড়িতে।

এ সময় ৬ বিজিবির বাড়াদী বিওপি কমান্ডার নায়েক সুবেদার জাকির হোসেন ও সুলতানপুর ক্যাম্পের বিওপি কমান্ডার দুলাল হক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ সীমান্ত পিলার ৮০/৬-আর হতে আনুমানিক ২শ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাস্তিপুর ওয়াসিম বিশ্বাসের ঘর তল্লাশী করে। পরে বিজিবি সশস্ত্র টহল দল বর্ণিত ব্যক্তির বাসার ভিতর রক্ষিত ড্রেসিং টেবিলের নীচে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় একটি গামছা দিয়ে বাধা পোটলা উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত পোটলার ভিতর থেকে স্কচটেপ দ্বারা মোড়ানো ২০টি প্যাকেট থেকে ২৩ কেজি ৪৭০ গ্রাম (২০১২ ভরি) ভারতীয় তৈরীকৃত রুপার গহনা জব্দ করে। যার আনুমানিক বাজার মৃল্য ৪০ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

এ ঘটনায় বিজিবি সশস্ত্র টহল দল ৩ চোরাকারবারীকে আটক করে। আটককৃত চোরাকারবারী দর্শনা পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের মৃত হায়দোর আলীর ছেলে ওয়াসিম বিশ্বাস (৩৮) ওয়াসিম বিশ্বাসের স্ত্রী মোছাঃ রিমা খাতুন (২৭),ও একই গ্রামের মৃত হায়দোর আলীর স্ত্রী মোছাঃ আরবী খাতুন (৫৫),আটক করে। এ রুপার গহনা উদ্ধারের ঘটনায় বিজিবি পলাতক হিসাবে নাস্তিপুর গ্রামের শিমুল বিশ্বাসের স্ত্রী মোছাঃ সোনিয়া (৩০)ও আনছার আলীর ছেলে আমানত (৩২)কে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করে।

আজ বাড়াদী ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার জাকির হোসেন বাদি হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করে। ভারতীয় তৈরীকৃত রুপার গহনাগুলি চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারী অফিসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থে এই ভিসানীতি

নতুন এই ভিসা নীতির পিছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে নিজস্ব আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থ। বিশ্ব অর্থনীতিতে চিন, জাপান ও ভারতের ক্রমবর্ধমান শক্ত অবস্থান মার্কিন প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকার জাতীয় অর্থনীতির আকার দিনকে দিন কমছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো ঋণগ্রস্ত দেশে পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক ইউক্রেন যুদ্ধে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। ফলে তারা এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দেশগুলোকে দমিয়ে রাখার কৌশল হাতে নিয়েছে। তাছাড়া ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে যে সুবিধা আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র সেই সুবিধা বাংলাদেশ দিতে প্রস্তুত নয়। কারণ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ ভারসাম্যমূলক কূটনীতির ক্ষেত্রে মার্কিন চাওয়া চরম বাধা।

গত ২৪ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন হঠাৎ করেই নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ঘোষণার প্রায় চার মাসের মাথায় ২২ সেপ্টেম্বর থেকে এই ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তার বিবৃতিতে উঠে এসেছে যে ভিসা নীতির আওতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন।

এই ভিসা নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখীনীতির একটি চমৎকার উদাহরণ। পাকিস্তানে নূন্যত্বম গণতান্ত্রিক চর্চা না থাকা সত্ত্বেও ২০২১ ও ২০২৩ সালে আমেরিকা কর্তৃক আয়োজিত ডেমোক্রেসি সামিতে পাকিস্তান আমন্ত্রণ পায়। বাংলাদেশকে একবারও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। যদিও এর সদুত্তর নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যেমনটা সৌদি আরবে রাজতন্ত্র থাকা সত্ত্বেও সৌদি আমেরিকার ভালো বন্ধু

স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রণীত সংরক্ষিত ভিসা নীতি বা নিষেধাজ্ঞা জারি কোনো সভ্য দেশের কাজ হতে পারে না। একটি পরাশক্তি দেশের এমন আচরণ দুঃখজনক। তাছাড়া ঘোষিত ভিসা নীতি মানবাধিকারেরও স্পষ্ট লঙ্ঘন। পৃথিবীতে মানুষের স্বাধীন চলাচল তার রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে না। বাংলাদেশ-আমেরিকা পরস্পরের সঙ্গে কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নেই। এ ধরনের ভিসা নীতি সাধারণ যুদ্ধরত দেশগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে।

শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। ২০০০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটেছিল, তা দমনে তাঁর সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সন্ত্রাসদমনের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছেন।

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের এই উত্থান মার্কিন আগ্রাসী স্বার্থে আঘাত হেনেছে বলেই, তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। কারণ তাদের কার্যক্রম থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের বদলে মার্কিন প্রশাসন মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় দিতে চাইছে।
এটা স্পষ্টতই বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের অবৈধ হস্তক্ষেপের একটি নিকৃষ্ট নজির। কূটনৈতিকভাবেও এই নীতি অগ্রহণযোগ্য। নানা অপ-তৎপরতার পরও মার্কিন পরাশক্তি যেহেতু বাংলাদেশকে তার নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরাতে পারেনি, সেহেতু ‘অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের’ আড়ালে তারা কার্যত বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্বের দ্বি-মেরু বিভাজনকে সবসময়ই নেতৃত্ব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ সাম্প্রতিক নানা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশ তার জোট-নিরপেক্ষ ও স্বাধীন অবস্থান বজায় রেখেছে। আধিপত্যবাদী মার্কিন প্রশাসন কোনোভাবেই এ পরিস্থিতি মেনে নিতে পারছে না।

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে আমূল বদলে যাওয়া আজকের পৃথিবীতে তথাকথিত মার্কিন কর্তৃত্ববাদের কোনো ঠাঁই নেই। এই বাস্তবতা মেনে নিতে পারছে না বাইডন প্রশাসন। বাংলাদেশের মতো একটি মধ্যম আয়ের বন্ধু রাষ্ট্রের বিষয়ে তাদের নতুন ভিসা নীতিটি একদিকে যেমন অমানবিক, তেমনি মার্কিন প্রশাসনের হঠকারিতারও উদাহরণ। এই হঠকারিতা অবশ্য নতুন নয়। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকেই বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

ড. ইউনুস থেকে শুরু করে র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর তথাকথিত নিষেধাজ্ঞা জারি আর আজকের এই নয়া ভিসি নীতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই মার্কিন প্রশাসন ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে, যা বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্কের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।




মেহেরপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির পথসভা

মেহেরপুরে সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ফতেপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির পথসভা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

 আজ শনিবার বিকেলে মেহেরপুর বুড়িপোতা ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই পথসভা এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এ্যাড. ইব্রাহিম শাহিন, মেহেরপুর সদর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, বুড়িপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বুড়িপোতা ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজামান, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, মেহেরপুর জেলার ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন, বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মিলন আহমেদ সহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি আলোচনা সভা

৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচতে এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আজ শনিবার রাতে কাথুলি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জাতীয় পার্টি অস্থায়ী কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কমিশনার ও জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ মোসলেম আলী।

প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি নেতা মোঃ মামলত হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি নেতা আমিরুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি নেতা নজরুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা জাতীয় পার্টি নেতা সোহরাব হোসেন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সদস্য লাল চাঁদ মিয়া, ওহাব মিয়া, লুৎফর রহমান সহ বিভিন্ন নেতা কর্মীবৃন্দ।

সাবেক কমিশনার ও জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ মোসলেম আলী তিনি মেহেরপুর প্রতিদিন কে জানান যে তৃণমূল নেতাকর্মীরা এমপি প্রার্থী হিসেবে তার নাম কেন্দ্রে প্রস্তাব করেছে।