আওয়ামীলীগের লিফলেট বিতরণ; ৬ জন গ্রেফতার

আওয়ামীলীগের হরতাল ও অবরোধের লিফলেট বিতরণের অপরাধে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের ৪ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে গাংনী থানা পুলিশ। অপরদিকে পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে মাদক ও নারী নির্যাতন মামলায় আদালতের পরোয়ানাভূক্ত দুই আসামি গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের আক্তার আলীর ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমান (৪৩), ধলা গ্রামের মৃত কলিম উদ্দীনের ছেলে মোঃ আকবর আলী (৩২), মাইলমারী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ মাসুদুর রহমান খোকন (৪০) ও সহড়াতলা গ্রামের সেন্টু মিয়ার ছেলে মো: বেল্টু মিয়া ।

অপরদিকে আদালতের পরোয়ানাভূক্ত দুই আসামি গাংনী উপজেলা নওপাড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো: হুমায়ূন আহমেদ ও গাংনী উপজেলা শহরের মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে হজরত আলী (২৭)। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ৩১ জানুয়ারী সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে গ্রেফতার চার আসামিরা আওয়ামীলীগের লিফলেট বিতরণ করেছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব আসামি গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে হাফিজুর রহমান, আকবর আলী ও মাসুদুর রহমানের নামে গাংনী থানার এফআইআর নং-১১, তারিখ- ১৯/০৮/ ২০২৪, ধারা- ২০০৯ সাল (সংশোধনী/ ২০১২) এর সন্ত্রাস বিরোধী আইন এর ৬/২১/৭/৫)/৭(৬)(কে) ৭(৬) /১০/১১/১২/১৩। এছাড়া মোঃ বেল্টুর নামে গাংনি থানার এফআইআর নং-৪, তারিখ- ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫; ধারা- ৯(১) ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩; তৎসহ ৩৭৯ প্যানাল কোর্ড, ১৮৬০; অপরেিদেক থানা পুলিশ অপর দুটি অভিযান চালিয়ে আদালতের পরোয়ানাভূক্ত আসামি গাংনী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের দর্গাপাড়া এলাকার মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মোঃ হুমায়ন (২৯) ও মাদকনিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার আসামি গাংনী উপজেলা শহরের মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে হজরত আলী (২৭)কে গ্রেফতরা করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত হুমায়নের বিরুদ্ধে মেহেরপুর সদর থানার, এফআইআর নং-২৫/২৩২, তারিখ- ১৫ আগস্ট, ২০২১; ধারা- ৩৬(১) সারণির ১৯(ক)/৪১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮; জিআর-২৩২/২১ ও মোঃ হযরত আলীর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের সিআর নং-৮৯৯, ধারা- ৩ যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮; সিআর নং-৮৯৯/২৪ মামলা রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি বিকালে গাংনী উপজেলার মাইলমারী, ধলাসহ কয়েকটি স্থানে ওই চার ব্যক্তিসহ ৬ জন লিফলেট বিতরণ করে এলাকায় আতংক তৈরী করেছে।

গ্রেফতারকৃতদের গতকাল সোমবার বিকালের দিকে আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।




ওজন কমাবে এই ফলগুলো

অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য নানা চেষ্টা করে থাকেন মানুষ। অনেকেই আছেন, নিজের ওজন কমানোর জন্য লাখ টাকা খরচ করেও তেমন উপকার পাচ্ছেন না। তবে প্রোটিনে ভরপুর কিছু ফল খাদ্যতালিকায় রেখে ওজন কমানো যেতে পারে।

প্রোটিন এমন একটি অপরিহার্য ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট, যা দীর্ঘ সময় মানুষের পেট ভরিয়ে রাখতে পারে। এতে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার চাহিদা কমে এবং ওজন কমে। মানবদেহের গঠন উপাদান হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রোটিন।

ওজন কমানোর পাশাপাশি প্রোটিন পেশীর ভর বৃদ্ধি করে, হাড় শক্তিশালি করে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, বাদাম, ছানা, মসুর ডাল, কুইনোয়া এবং দুগ্ধজাত পণ্য প্রোটিনের ভালো উৎস।

প্রোটিন ডায়েট করে যারা ওজন কমাতে চান, তারা খাদ্যতালিকায় নিচের ফলগুলো রাখতে পারেন –

সকালে ভেজানো আখরোট খেলে মিলবে যেসব উপকারিতা
কলা

কলা অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল এবং পটাশিয়ামের একটি দারুণ উৎস। সহজলভ্য এ ফল খাদ্যতালিকায় রাখলে প্রোটিন, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন সি, ফাইবার, ফোলেট এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ একসঙ্গে পাওয়া যায়।

বেদানা

বেদানা অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এ ফলে ক্যালোরির পরিমাণ বেশ কম। এ ছাড়াও এতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ। বেদানা প্রোটিনেরও একটি ভালো উৎস।

পেয়ারা

ভিটামিন সি’র একটি চমৎকার উৎস হচ্ছে পেয়ারা। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ যেসব ফল রয়েছে তার মধ্যে পেয়ারা অন্যতম। এক টুকরো পেয়ারায় প্রায় ১.৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

কিউই

প্রোটিনের অন্যতম উৎস হচ্ছে কিউই। এ ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমশক্তি উন্নত করতে, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

কাঁঠাল

প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের অন্যতম একটি উৎস হচ্ছে কাঁঠাল। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঠালের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যাপ্রিকট

যারা মিস্টি খেতে ভালোবাসেন তারা খাদ্যতালিকায় অ্যাপ্রিকট বা খোবানি রাখতে পারেন। সুস্বাদু মিস্টি স্বাদের শুকনো খোবানি দিয়ে সকালের নাস্তা করতে পারেন। এতে পেট ভরবে, আবার মিষ্টির লোভও মিটবে।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরের আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপি’র কর্মী সমাবেশ

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি সফল করার লক্ষ্যে আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপি’র ১ নং ওয়ার্ড খোকসা গ্রামের কর্মী সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলা আমঝুপি ইউনিয়নের খোকসা গ্রামের এ কর্মী সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।

খোকসা গ্রামের বিএনপির প্রবীণ নেতা মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আমিরুল ইসলাম ও ফয়েজ মোহাম্মদ।

সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোঃ ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় জেলা বিএনপির সদস্য মোঃ ইলিয়াছ হোসেন, মোঃ আলমগীর খান ছাতু, আনছারুল হক, খাইরুল বাশার, আব্দুল্লাহ, হাফিজুর রহমান, মীর ফারুক হোসেন, ওমর ফারুক লিটন, মোছাঃ রোমানা আহম্মদ, গনিউল আজম, জেলা বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, কেন্দ্রীয় যুবদলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রিন্স আহমেদ ইমরান, ঢাকা মহানগর উত্তর জাসাসের যুগ্ম আহবায়ক রাফিজা আলম নাকী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাউছার আলী, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকাবিল্লা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আজমুল হোসেন মিন্টু, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লব, মেহেরপুর সদর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি হাসিবুজ্জামান স্বপ্নন, আমঝুপি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ, পৌরসভা ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রহিম, জেলা যুবদলের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজুর রহমান, জেলা যুবদলের সদস্য মেহেদী হাসান রোলেক্স, জেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম মনি, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাহিদ মাহবুব সানি, আব্দুল লতিফ, মোশিউল আলম দিপু, নাহিদ আহম্মেদ, ইসমাইল শাহ, দবির, জনিসহ জেলা বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষেরা উপস্থিত ছিলেন।




এবার পরিচালকের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন সামান্থার

বিনোদন জগতের দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু ও অভিনেতা নাগা চৈতন্য দীর্ঘদিন প্রেমসম্পর্কে থাকার পর ২০১৭ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন। চার বছর এক ছাদের নিচে থাকার পর তৃতীয় নারীর অভিযোগে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন অভিনেত্রী।

পরে এ তারকা জুটির বিচ্ছেদ ঘটে। আর অভিনেতা নাগা চৈতন্য বিচ্ছেদের পরপরই যাকে নিয়ে অভিযোগ সেই অভিনেত্রী শোভিতা ধূলিপালাকে বিয়ে করে ফেলেন। যদিও তাদের দাম্পত্য নিয়ে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে বিয়ে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি সামান্থা।

এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের মাঝে গুঞ্জন ছড়িয়েছে অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু এক পরিচালকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন।

সম্প্রতি গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন সূত্রে এমনটিই জানা গেছে। সামান্থার নতুন প্রেমিক ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ এবং ‘সিটাডেল: হানি-বানি’র পরিচালক রাজ নিদিমোরু। তা নিয়েই নেটিজেনদের গুঞ্জন-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি অভিনেত্রী সামান্থা সামাজিক মাধ্যমে কিছু ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে শেয়ার করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে— ওয়ার্ল্ড পিকলবল লিগ ম্যাচে নিদিমোরুর সঙ্গে হাজির হন সামান্থা। দুজনের পোশাকের মধ্যেও ছিল একই রঙের ছোঁয়া।

আর এ নিয়েই নেটিজেনদের মাঝে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তাদের ধারণা— এবার বিচ্ছেদ বেদনা ভুলে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন সামান্থা। অনেকেই তাদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, এই প্রথমবার নয়, মাঝে মধ্যেই নাকি কফি শপ, রেস্টুরেন্টে দেখা যায় এই নতুন জুটিকে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি সামান্থা।

সূত্র: যুগান্তর




বোমা থাকার সন্দেহে ঝিনাইদহে বাড়ি ঘিরল যৌথবাহিনী

ঝিনাইদহে বোমা থাকার সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে যৌথবাহিনী।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের কোরাপাড়া গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ অভিযান চলমান রয়েছে।

যশোর থেকে বোমা ডিসপজেবল টিম আসার অপেক্ষায় রয়েছে এই বাহিনী। কে বা কারা থুয়েছে সে ব্যাপাওে এখনো কিছু জানা যায়নি।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, যৌথ বাহিনী আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে। পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।




খুলনার সামনে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি রংপুর রাইডার্স

এলিমিনেটরের বাঁচা-মরার ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের সামনে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি রংপুর রাইডার্স। খুলনার বোলিং তোপে ৩.১ ওভার বাকি থাকতেই ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর।

টজ জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারিয়ে বসে রংপুর রাইডার্স। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই জেমস ভিন্সের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে কোনো বল না খেলেই রানআউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন সৌম্য সরকার।

আরেক ওপেনার ভিন্সও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। নাসুম আহমেদের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৭ বলে ১ রান করে।
নাসুমের পরের শিকার মেহেদি হাসান। মেহেদিকে বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় শিকার করেন এই স্পিনার।

সাঈফ হাসানকে নেওয়াজের হাতে ক্যাচ বানিয়ে নিজের প্রথম উইকেট নেন মিরাজ। সাইফুদ্দিনকে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ।

একপর্যায়ে ১৫ রানে যখন ৫ উইকেট পড়ে গেলে টিম ডেভিডকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু মাত্র ৭ রান করেই ফেরেন ডেভিড।

টিকতে পারেননি আন্দ্রে রাসেলও। মাত্র ৪ রান করে নেওয়াজের বলে বোল্ড হয়েছেন ক্যারিবীয় এই ক্রিকেটার। এরপর একে একে ফিরেছেন রাকিবুল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানরা। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন আকিব জাভেদ। সোহান করেন ২৩ রান। এ ছাড়া আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে নিতে পারেননি নিজেদের রান।

খুলনার ৪ ওভার বল করে মাত্র ১০ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩ উইকেট নিয়েছেন নাসুমও। ১টি করে নিয়েছেন নেওয়াজ, হাসান ও মুশফিক।

সূত্র: কালের কণ্ঠ




সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদকে কারাগারে নেওয়ার সময় ডিম নিক্ষেপ

সন্ত্রাস দমন আইন মামলায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন দোদুল ও তাঁর ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুলের তিন দিন করে এবং ও অপর একটি মামলায় ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের দুই দিন রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার সকাল ১১ টা থেকে শুরু হয়ে ঘন্টাব্যাপী শুনানী শেষে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক শারমিন নাহার এ আদেশ দেন। এদিকে, দুপুর ২ টার দিকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার বিক্ষুব্ধ জনতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও বিএনপির কর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং সাবেক মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন।
মামলায় সরকারি পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, কামরুল হাসান, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মানষ রঞ্জন ঘোষম সদর থানার ওসি জাহাঙ্গীর সেলিম এবং আসামি পক্ষে শফিকুল আলম, ইব্রাহিম শাহীন, কাজী শহিদুল হক আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে, সাবেক মন্ত্রী, তাঁর ভাই ও ভগ্নিপতিকে আদালতে হাজির করার খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী আদালত চত্বর ঘিরে রেখেছে। আদালত্ব চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলায় একটি মামলার আসামি হিসেবে তিন জনের ৫ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম জাহাঙ্গীর।

আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবিলক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাড. কামরুল হসান, মারুফ আহম্মেদ বিজন এবং মোখলেছুর রহমান স্বপন উপস্থিত ছিলেন। একইসাথে আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে রিমান্ড না দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন অ্যাড. খন্দকার আব্দুল মতিন, একেএম শফিকুল আলম,  ইব্রাহিম শাহীন।

এদিকে রিমান্ড শুনানিকালে আদালত প্রাঙ্গেণে বিক্ষোভ করেন বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। আসামিদের বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করেন তারা।

গত ৫ আগষ্ট মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলার ঘটনায় সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলার প্রধান আসামি হিসেবে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে ২৯ জানুয়ারি রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মেহেরপুর নিয়ে আসা হয় ফরহাদ হোসেনকে। ১৪ সেপ্টম্বর রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে হত্যা মামলায় তাকে আটক করেছিল র‌্যাব। তার নামে রাজধানী ঢাকাতে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়াও মেহেরপুরে রয়েছে আরও কয়েকটি মামলা।

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর হামলার দুটি মামলায় তাঁকে জেল গেটে শোন এ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে এবং একটি মামলায় রিমাণ্ডের আবেদন জানালে বিজ্ঞ বিচারক জেল গেটে দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ২ দিনের রিমান্ড শেষ ফের আদালতে তোলা হলে আদালত আবারও তিন দিনের রিমান্ড দেন।




সুপার টাইফুন কং-রে এবং জাহাজে উদ্বেগের কিছু সময়

মেরিন একাডেমী চট্টগ্রামে একটি কথা প্রচলিত আছে মেরিনার্স ডেয়ার টু গো হোয়ার ডেথ ফেয়ারস টু গো। অর্থাৎ মেরিনাররা মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে পৃথিবীতে যে কোন প্রান্তে সাহসিকতার সাথে যেতে সক্ষম। আমি জাহাজ নিয়ে গত ৩১ শে অক্টোবর ২০২৪ তারিখে তাইওয়ান এর একটি পোর্ট কাউশিউং এ সুপার টাইফুন কং-রে এর কবলে পড়েছিলাম। অর্থাৎ টাইফুনটি আমাদের খুব কাছে দিয়েই পার হয়ে গিয়েছিল।

টাইফুন বা ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়ে ফিলিপাইনের কোস্ট ঘেসে তাইওয়ানের ইস্ট কোস্টে আঘাত হানে এবং তারপর কিছুটা দুর্বল হয়ে চায়নার সাংহাই এর দিকে চলে যায়। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এখন অনেক আগে থেকেই জাহাজের ইনমারসেট,ওয়েদার ফ্যাক্স, নেভটেক্স,ইমেইলর মাধ্যমে সার্বক্ষণিক ওয়েদার ফোরকাস্ট, নেভিগেশনাল ওয়ার্নিং ছাড়াও সকল ধরনের সতর্কবাণী পাওয়া যায়। এছাড়াও জাহাজ কোম্পানির মেরিন ডিপার্টমেন্ট থেকে ওয়েদার ইনফরমেশন, ওয়ার্নিং, সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের লাইভ ইমেজ পাঠানো হয় জাহাজকে সতর্ক করার জন্য।

 

সবকিছু পর‌্যবেক্ষণ করেই আমরা জাহাজকে সব সময় নিরাপদে রাখার চেষ্টা করি। লোডিং পোর্ট ব্রাজিল এর সান্তোস থেকে আমরা দ্বীপ রাষ্ট্র তাইওয়ান এর জন্য খাদ্য কর্ন নিয়ে এসেছিলাম। আমরা প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন কর্ন কার্গো নিয়ে এসেছিলাম তাইওয়ানের দুইটি বন্দর কাউশিয়ং এবং তাইচুং এর জন্য। আমরা যথারীতি প্রথম বন্দর কাউশিয়ং এ যাই কারগো ডিসচার্জ করার জন্য। ৩০ অক্টোবর ২০২৪ এর বিকেলে কিছু কারগো ডিসচার্জ করার পর বন্দর থেকে কারগো অপারেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা ওয়েদার রিপোর্ট এর মাধ্যমে আগে থেকেই জানতাম টাইফুন কং-রে তাইওয়ানে আঘাত হানতে চলেছে। তাই অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বন্দর থেকে আমাদের জাহাজ সহ বাকি সব জাহাজ বার্থ বা জেটি থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমরা সার্বক্ষণিক জাহাজ থেকে ওয়েদার রিপোর্ট চেক করতে থাকি এবং পোর্ট অথরিটি, লোকাল এজেন্ট, চার্টারার এবং কোম্পানির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করি। আমরা প্রায় এক সপ্তাহ পূর্বেই জেনেছিলাম টাইফুনটি তাইওয়ানে আঘাত হানতে পারে। বর্তমানে ওয়েদার ফোরকাস্ট এর কল্যাণে অনেক আগে থেকেই জাহাজে সতর্কবাণী পাওয়া যায়। বন্দর এর নির্দেশ মতো আমরা জাহাজ আনমুরিং করে আউটার হারবারে ড্রিফটিং করতে চলে যাই।

বার্থ বা জেটিতে থাকা অবস্থাতেই আমরা টাইফুন এর জন্য সব রকম প্রিপারেশন নিয়ে রাখি। সবকিছু সিকিউর করে তারপরেই আমরা আউটার হারবারের দিকে রওনা হই। আউটার হারবারে আমরা জাহাজের ইঞ্জিন দিয়ে ব্যাড ওয়েদার মেনুভারিং করতে থাকি। বাতাস এবং ঢেউকে সামনে রেখে জাহাজ চালাতে থাকি বিপদজনক অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য। রাতে ধীরে ধীরে বাতাস এবং ঢেউ বাড়তে থাকে। আমরাও সার্বক্ষণিক বাতাস এবং ঢেউ পর‌্যবেক্ষণ করতে থাকি এবং সেভাবেই জাহাজের হেডিং এডজাস্ট করতে থাকি যাতে জাহাজে খুব বেশি রোলিং পিচিং না হয়। আমরা সকলেই সুপার টাইফুন টিকে নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম যেহেতু টাইফুন টি খুব শক্তিশালী ছিল।

 

ডেক এবং ইঞ্জিন ডিপার্টমেন্ট থেকেও যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল। নির্ঘুম কেটেছিল আমাদের সমস্ত নাবিকের রাতটি। এই অবস্থায় জাহাজের ক্যাপ্টেন এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাহাজের সকল নাবিকের মনোবল ধরে রেখে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে জাহাজ কে নিরাপদে রাখা এ সময় ক্যাপ্টেন এর প্রধান দায়িত্ব। কোম্পানির অফিস জাপান থেকেও আমাদের কাছে সতর্কবার্তা দিয়েছিল যাতে আমরা কোন নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করি। আমরা একটু পরপরই কোম্পানির কাছে আমাদের অবস্থান জানিয়েছিলাম। ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ খুব সকালে থেকেই লক্ষ্য করলাম বাতাস আস্তে আস্তে আরো বেড়ে গেল। বাতাসের গতি ৬০/৭০ নটস বা ঘন্টায় ১১১/১২৯ কিলোমিটার এবং সেই সাথে ঢেউ এর উচ্চতা প্রায় ৭/৮ মিটার হয়ে গেল। জাহাজের স্টিয়ারিং এবং ইঞ্জিন দিয়ে নিরাপদ অবস্থানে থাকার চেষ্টা করলাম। আমাদের মত অনেক জাহাজই এভাবে ব্যাড ওয়েদার মেনুভারিং এ ছিল সে সময়।

সুপার টাইফুন টি ৩১ শে অক্টোবর দুপুরেই তাইওয়ানের ইস্ট কোস্টে ঘন্টায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে। আমরা তাইওয়ানের ওয়েস্ট কোষ্ট এ ছিলাম এবং টাইফুন টি আমাদের থেকে প্রায় একশ কিলোমিটার দূর দিয়ে পার হয়ে যায়। জানা যায় গত ৫০ বছরের মধ্যে এটি ছিল তাইওয়ান এ আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। এরফলে বেশ কিছু হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়াও বিদ্যুৎবিহীন ছিল সেখানকার কয়েক লক্ষ মানুষ। প্রাণ হানি এড়াতে সেখানকার সরকার টাইফুন আসার পূর্বেই সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল। তাইওয়ান এর সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে জানানো হয়েছিল প্রায় ৩০০ টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সুপার টাইফুন কং-রে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে আঘাত হেনে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যায় এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। পূর্বাঞ্চলের কোন কোন জায়গায় আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছিল। টাইফুনটি কিছুটা উত্তর দিকে যেয়ে দিক পরিবর্তন করে চায়নার সাংহাই এর দিকে চলে যায়। এক সময় সমুদ্রের অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যায় এবং আমরা জাহাজে ইনেস্পেকশন করি।

 

মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে এবং সকল নাবিকের একাগ্রচেষ্টায় এবং সহযোগিতায় আমরা বিপদ হতে মুক্ত হই। জাহাজ, নাবিক এবং লোডেড কার্গোর কোন ক্ষয়ক্ষতি ঘটেনি। যদিও একদিনের অধিক সময় আমাদের খুব উৎকণ্ঠায় কেটেছিল। আমার সী ক্যারিয়ারে এটি ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়েছি যার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এক্ষেত্রেও আমরা নিরাপদে উৎকণ্ঠার সময়গুলো পার করেছি।

সমুদ্রে বাতাসের গতি এবং ঢেউ স্বাভাবিক হয়ে গেলে আমরা পোর্ট কন্ট্রোলের সাথে যোগাযোগ করি এবং তারা কনফার্ম করলে আমরা আবারো বন্দরের ভিতরে প্রবেশ করি এবং বাকি কারগো ডিসচার্জ করে পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হই।

লেখক: মাস্টার মেরিনার (এ এফ এন আই), এক্স ক্যাডেট, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি চট্টগ্রাম।




ফরহাদ ও মৃদুলের তিন দিন , বাবলু বিশ্বাসের দুই দিনের রিমাণ্ড

সন্ত্রাস দমন আইন মামলায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন দোদুল ও তাঁর ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুলের তিন দিন করে এবং ও অপর একটি মামলায় ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের দুই দিন রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার সকাল ১১ টা থেকে শুরু হয়ে ঘন্টাব্যাপী শুনানী শেষে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক শারমিন নাহার এ আদেশ দেন।

মামলায় সরকারি পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, কামরুল হাসান, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মানষ রঞ্জন ঘোষম সদর থানার ওসি জাহাঙ্গীর সেলিম এবং আসামি পক্ষে শফিকুল আলম, ইব্রাহিম শাহীন, কাজী শহিদুল হক আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে, সাবেক মন্ত্রী, তাঁর ভাই ও ভগ্নিপতিকে আদালতে হাজির করার খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী আদালত চত্বর ঘিরে রেখেছে। আদালত্ব চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলায় একটি মামলার আসামি হিসেবে তিন জনের ৫ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম জাহাঙ্গীর।

আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবিলক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাড. কামরুল হসান, মারুফ আহম্মেদ বিজন এবং মোখলেছুর রহমান স্বপন উপস্থিত ছিলেন। একইসাথে আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে রিমান্ড না দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন অ্যাড. খন্দকার আব্দুল মতিন, একেএম শফিকুল আলম,  ইব্রাহিম শাহীন।

এদিকে রিমান্ড শুনানিকালে আদালত প্রাঙ্গেণে বিক্ষোভ করেন বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। আসামিদের বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করেন তারা।

গত ৫ আগষ্ট মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলার ঘটনায় সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলার প্রধান আসামি হিসেবে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে ২৯ জানুয়ারি রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মেহেরপুর নিয়ে আসা হয় ফরহাদ হোসেনকে। ১৪ সেপ্টম্বর রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে হত্যা মামলায় তাকে আটক করেছিল র‌্যাব। তার নামে রাজধানী ঢাকাতে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়াও মেহেরপুরে রয়েছে আরও কয়েকটি মামলা।

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর হামলার দুটি মামলায় তাঁকে জেল গেটে শোন এ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে এবং একটি মামলায় রিমাণ্ডের আবেদন জানালে বিজ্ঞ বিচারক জেল গেটে দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ২ দিনের রিমান্ড শেষ ফের আদালতে তোলা হলে আদালত আবারও তিন দিনের রিমান্ড দেই।




তামাকে গিলছে ভর্তুকির সার

মেহেরপুরে তিব্র রাসায়নিক সার সংকট তৈরি হয়েছে। সার পেতে কৃষকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবে এই সার সংকট তৈরি হয়েছে অতিমাত্রার তামাক চাষ ও অত্যাধিক ডিএডপি সার ব্যবহারের কারণে বলে জানিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর ।

চলতি রবি মৌসুমে মেহেরপুরে ২৫ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে তামাক চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছরেও ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিলো। পরিবেশবান্ধব টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারে ভর্তুকি দেওয়া হলেও সেই সুবিধা নিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা পাওয়ায় তামাক চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের বর্তমান দাম ৪৮ টাকা, ডিএপি ৭০, টিএসপি ৫০, এমওপি ৬০ টাকা। ৫ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে এখন প্রতি কেজি ইউরিয়ায় ২১ টাকা, ডিএপিতে ৪৯ টাকা, টিএসপিতে ২৩ টাকা ও এমওপিতে ৪০ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোফাজ্জেল হোসেন । চলতি মৌসুমে তিনি ১১ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করছেন। মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “আমি দুটি তামাক কোম্পানির তালিকাভুক্ত চাষি। প্রতি বিঘা জমিতে তামাক চাষের জন্য কোম্পানি থেকে আমাদের শুধুমাত্র রাসায়নিক সার হিসাবে সালফেট অব পটাশ (এস ও পি) ও বাজার থেকে অন্যান্য সার কেনার জন্য নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার ১১ বিঘা জমিতে ১১০ বস্তা ডিএপি, ২২ বস্তা এমপি, ২২ বস্তা ইউরিয়া, ১১ বস্তা সালফেট প্রয়োজন পড়বে।

একই এলাকার কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার ৬ বিঘা জমিতে ফুল কপির চাষ করেছি। এই ৬ বিঘা জমিতে টিএসপি, ৬ বস্তা, ডিএপি ৬ বস্তা, এমপি ৩ বস্তা, ইউরিয়া ৩ বস্তা। কিন্তু চলতি মৌসুমে চাহিদা অনুযারী কোন সার পাওয়া যায়নি। সারের অভাবে ফুল কপি সময়মত বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এবারে বড় আকারের লোকশানে পড়তে হবে।
গত বছরে নভেম্বর মাসে ডিএপির মোট বরাদ্দ ছিলো ১ হাজার ৯৯৩ মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫১৭ মেট্রিকটন।
জানতে চাইলে বিসিআইসির ডিলার মিরাজুল হক বলেন, কৃষকেরা সবজি চাষের নামে তামাক চাষে ডিএপি ব্যবহার করছে। এই কারণে ডিএপি সারের সংকট দেখা দিয়েছে। সবজি চাষে তামাক চাষের মত অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন পড়ে না। কোন কৃষক কোন ধরনের ফসলের চাষ করছেন তা জানার উপায় থাকে না।

একই এলাকার কৃষক ছাদের আলী । তিনি বলেন, “ডিএপি সার হলো তামাকের প্রাণ। এটি ব্যবহার না করলে তামাকের ভালো ফলন পাওয়া যায় না।” তামাক কোম্পানিগুলো এর আগে সব রকমের সার দিতো। বর্তমানে শুধু মাত্র এস ও পি সার সরবারহ করে। এমওপি, ডিএপি সার এলাকার ডিলারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে বিশেষ করে ডি এপি সারের চরম সংকট তৈরি হয়েছে। একজন কৃষককে ৫০ কেজির বেশি ডিএপি সার দেওয়া হচ্ছে না। সারের যোগান দিকে কৃষকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ সামছুল আলম বলেন, মেহেরপুরে তামাকের চাষ হচ্ছে দির্ঘদিন থেকে। সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে তামাক চাষে কৃষকদের অনুৎসাহিত করার জন্য। কিন্তু তামাক কোম্পানির নানান সুবিধার জন্য কৃষকদের মধ্যে তামাক চাষ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে ডিএপি সারের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুন শুধুমাত্র তামাক চাষের কারণে।

সবজি,ধান,পাট, গম,পেঁয়াজ, রসুন, আলু চাষে নির্দিষ্ট পরিমানে সার ব্যবহার হয়। অন্যদিকে শুধুমাত্র তামাক চাষে বিঘা প্রতি ৫০০ কেজি ডিএপি সার ব্যবহারের প্রবনতা তৈরি হয়েছে কৃষকদের মাঝে। একারণে অন্যান্য ফসলের জন্য সার পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বিদেশি তামাক কোম্পানির প্রতিনিধি বলেন, তামাক কোম্পানি কৃষকদের তামাক চাষে সুবিধবার জন্য এসওপি সার বিদেশ থেকে আমদানি করে সরবারহ করে। ডিএপি, এমওপি, ইউরিয়া, জিপসাম সার বাইরে থেকে কেনার জন্য নগদ টাকা দেওয়া হয় ।

সরকারি সার সুপারিশ নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে, এক বিঘা ফুল কপির জমিতে ২৯ কেজি ইউরিয়া, ৩৩ কেজি টিএসপি, ১২ কেজি এমওপি সার ব্যবহার করতে হবে। অন্যদিকে একই জমিতে যদি তামাক চাষ করা হয় সেখানে কৃষকেরা বিঘা প্রতি জমিতে শুধুমাত্র ডিএপি ৫০০ কেজি ব্যবহার করছেন। ইউরিয়া ৫০ কেজি, এমওপি ৫০ কেজি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি ভর্তুকির সার চলে যাচ্ছে তামাক চাষে। অন্যান্য গুরুত্বপর্ণ ফষলের জন্য সার মিলছে না বাজারে। সরকারি ডিলারদের বরাদ্দের চেয়ে বেশি পরিমানে সারের প্রয়োজন পড়ছে শুধুমাত্র তামাক চাষের জন্য। কিন্তু সরকার তামাক চাষের জন্য কোন প্রকারের সারের বরাদ্দ দেয়না।
জেলা সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, মেহেরপুরে রবি মৌসুমে তামাক চাষের কারণে সার সংকট তৈরি হয়। তামাকে অধিকমাত্রায় সার ব্যবহারের কারণে সবজিসহ অন্যান্য ফসলের জন্য কৃষকদের সার পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে সার সংকট তৈরি হবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মাসে বিএডিসি ও বিসিআইসি থেকে জেলাতে ইউরিয়া বরাদ্দ ছিলো ৩ হাজার ৯৬৪ মেট্রিকটন, টিএসপি ১ হাজার ৭৮১ মেট্রিকটন, ডিএপি ২ হাজার ৪৫২ মেট্রিকটন, এমওপি সার বরাদ্দ ছিলো ১ হাজার ৮২৪ মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমে ভুট্টার চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে, গম ১ হাজার ৩৬৫ হেক্টর, বোরো ধান রয়েছে ১৯ হাজার ২৬৫ হেক্টর, পেঁয়াজ রয়েছে ৪ হাজার ৫৬৫ হেক্টর, বিভিন্ন সবজি ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ বছর ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ ছলছে। যা গত বছরে ছিলো ২৬ হাজার হেক্টর।

সদর উপজেলার শোলমারি গ্রামের বাসিন্দা প্রান্তিক কৃষত হাসেম মিয়া বলেন, আমাদের এই এলাকায় সবজি চাষ বেশি হয়ে থাকে। ঠিক এই সময়ে এসে তিব্র সারের সংকট দেখা গেছে। আমার ৫ বিঘা ফুল কপি আর বাধাকপি রয়েছে। সারের সংকটে এখনো চাহিদা মোতাবেক সার সংগ্রহ করতে পারিনি। যদিও এলাকার কয়েকটি দোকানে বেশি দামে সার পাওয়া যাচ্ছে।

একই এলাকার বাসিন্দা কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, ডিলারের দোকানে গেলে বলে সার নেই। এলাকার দোকানে ১ হাজার ৫০ টাকার ডিএপি সার ১ হাজার ৫০০ টাকা দামে কিনতে হচ্ছে। গত ১৬ বছর ধরে একই রকম দামে আমাদের সার কিনতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সারাফাত হোসেন বলেন, “এলাকায় খুচরা পর‌্যায়ে সার পাওয়া যায়। তবে ফসফেট, পটাশ, ড্যাপের দাম বস্তাপ্রতি ৩০০ টাকা বেশি পড়ে। চলতি মৌসুমে দাম বেশি দিয়ে ও সার পাওয়া যাচ্ছে না”।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, “কৃষি কর্মকর্তারা কখনোই তামাক চাষে কৃষকদের পরামর্শ দেন না। বরং তামাক চাষ থেকে কৃষকদের বের করে আনার পরামর্শ দেন। প্রতি বিঘা জমিতে তামাক চাষে কী পরিমাণ সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সেই পরামর্শ তামাক কোম্পানির কৃষিবিদরা দিয়ে থাকেন।” তামাক চাষের কারণে সবজি সহ অন্যান্য ফসলের সার পেতে কৃষকদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছ “।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরে উপপরিচালক বিজয় কৃঞ্চ হালদার বলেন, “ তামাক চাষ কৃষি জমি ও পরিবেশের জন্য মারাত্তক হুমকি। তামাক চাষে কৃষকদের নানাভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়।