মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেন পলাশকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার মেহেরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান আলীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন পলাশ। আদালতের বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পলাশ উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
ঘটনার চার দিন পর, গত ৪ এপ্রিল নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান সোহাগের চাচা সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৯৮/১০৫ ধারায় মেহেরপুর সদর থানায় মামলা করেন। যার মামলা নম্বর—০৭।
আসামি সাজ্জাদ হোসেন পলাশ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেট কারের মালিকও তিনি। তিনি মেহেরপুর পশুহাট সংলগ্ন ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্রে বিপি করপোরেশনের মালিক।
মামলায় আসামিপক্ষে মারুফ আহমেদ বিজন ও কামরুল হাসান এবং সরকারপক্ষে কোর্ট পরিদর্শক জিয়াউল হাসান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেন পলাশকে নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়ে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। এ সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ রোজার ঈদের দিন বিকালে প্রাইভেট কার চালক পলাশ হোসেন বেপরোয়া গতিতে আমঝুপি থেকে মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন। এ সময় ভ্যানচালক আলী হাসান তার পরিবারের লোকজন নিয়ে ভ্যানযোগে আমঝুপির দিকে যাচ্ছিলেন। প্রাইভেট কারটি প্রথমে পাখিভ্যানের সাথে সজোরে ধাক্কা মারলে ভ্যানের সকল যাত্রী রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে প্রাইভেট কারটি একটি মোটরসাইকেলকেও ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আখতারুজ্জামান শোভন ও তার বন্ধু আল ইমরান রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে মারাত্মক আহত হন।
খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স তাদেরকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান মারা যান। এছাড়া অবস্থার অবনতি হওয়ায় আল ইমরানকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও জুবায়ের হাসানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রাজশাহীতে নেওয়ার পথে সন্ধ্যার দিকে পাবনার মধ্যে শিশু জুবায়ের হোসেন মারা যান। আল ইমরান রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান।
এদিকে, দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে সেখানে দেখা যায়, যে তিনজন নিহত হয়েছে তারা সবাই তাদের সঠিক সাইডে ছিলেন এবং আসামি তার গাড়ি হতে বেরিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। মামলার বাদী অভিযোগ করে এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আসামি পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করেছে।