ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ সময় তিনি বাওড়পাড়ের হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাঁদের দুঃখ–দুর্দশার কথা শোনেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে তিনি বলুহর বাওড় পরিদর্শনে যান। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এতে আরও বক্তব্য দেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, জেলা ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান এবং মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতের আমির তাজুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি এস.কে.এম. সালাউদ্দিন বুলবুল সিডল, প্রগতিশীল নাগরিক সমাজের সভাপতি শরিফুজ্জামান আগা খান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সংগঠক হৃদয় হাসান।
সভায় হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, শত বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা এই বাওড়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু বর্তমান জলমহাল নীতিতে পরিবর্তন এনে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে প্রভাবশালী অমৎস্যজীবীদের হাতে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। তাঁরা জানান, এসব ইজারাদার বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাওড়ে কৃত্রিম খাবার ও রাসায়নিক ব্যবহার করছেন, যা পরিবেশ ও মাছের স্বাভাবিক প্রজননব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।
মৎস্যজীবী নির্মল হালদার বলেন, “বাওড় এখন আমাদের জন্য নিষিদ্ধ। জীবিকা নেই, কর্ম নেই, পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে।”
বক্তারা বলেন, “জাল যার, জল তার” এই প্রবাদ শুধু মুখের কথা নয়; এর বাস্তবায়ন জরুরি। তাঁরা দেশের সব বাওড়ের বর্তমান ইজারা বাতিল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বণ্টনের দাবি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, “জল যার, জলা তার এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজ করব। তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। এই প্রজন্মই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাওড়ের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলব। পরিবেশ রক্ষা ও মৎস্যজীবীদের জীবনধারা টিকিয়ে রাখতে একটি সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।”