
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেহেরপুরের দুটি আসনে নির্বাচনের প্রচার—প্রচারণা শুরু হয়েছে। গণসংযোগ, প্রচার—প্রচারণা, মিছিল, সমাবেশসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। মেহেরপুরের দুটি আসনে বিএনপির দুই হালি প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করে ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন। দুটি আসনেই বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকায় দলটি মনোনয়ন কাকে দেয় এ নিয়ে রাজনৈতিক নেতাকমীর্ ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা হিসেবে নিকেষ।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামি দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষনা করেছে অনেক আগেই। ফলে নির্ভার হয়ে জামায়াতের প্রার্থীরা তাদের ভোট প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। মেহেরপুরের—১ আসনে এনসিপি কোন প্রার্থী ঘোষণা না দিলেও প্রাথমিকভাবে মেহেরপুর—২ আসনে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করেছেন। তিনিও এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। ইসলামী অন্যান্য দলগুলোর তেমন তৎপরতা এখনো লক্ষ করা যায়নি। তবে ইসলামি শাষনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে দুটি আসনেই। মেহেরপুরের দুটি আসনে মূলত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকেই এমপি নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। তবে জামায়াত চেষ্টা করছে বিজয়ী হতে।
মেহেরপুর—২ (গাংনী): গাংনী উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর—২ আসন। জাতীয় সংসদের ৭৪ নম্বর আসন এটি। এ আসনে হালনাগাদ ভোটার ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৯ জন। এ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সদস্য আমজাদ হোসেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টন, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। গ্রামে গ্রামে গণসংযোগ, প্রচারপত্র বিলি, ৩১ দফার লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তারা পৃথক পৃথক ভাবে পরিচালনা করছেন।
জামায়াতে ইসলামী জেলা জামায়াতের সূরা সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: নাজমুল হুদাকে এ আসনে প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে। তিনিও পুরোদমে ভোটের প্রচার প্রচারণা ও গণসংযোগ প্রচুর সময় ব্যয় করছেন। নেতাকমীর্দের সঙ্গে নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সমন্বয়ক অ্যাড. শাকিল আহমেদকে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। তিনি ৫ আগষ্ট এর পর থেকে তাঁকে এলাকার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। ইসলামী শাষনতন্ত্র আন্দোলন থেকে মোস্তাফিজুর রহমান সেন্টু, এনডিএম এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান সেন্টুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। জনগণের ম্যাণ্ডেটের উপর আস্থাশীল। সেই ম্যাণ্ডেট নিয়ে বিএনপি সরকারও পরিচালনা করেছে। একটি বড় দলের অসংখ্য নেতাকমীর্র নিবার্চনে আগ্রহ থাকাই যৌক্তিক। দল যাকে জনগণের নেতা হিসেবে বিবেচনা করবে সেই মনোনয়ন পাবে। আমি ২০১৮ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। আমি এবার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদি। তারপরও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন তার হয়েই আমরা নির্বাচনে মাঠে নামবো।
সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন বলেন, বিএনপি অনেক বড় দল। এই দল থেকে অনেকেই প্রার্থীতা চাইবে এটাই স্বাভাবিক। আমিও মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি ২০০৮ সালে বিএনপির মনোনিত খুলনা বিভাগে বিএনপির বিজয়ী ২টি সিটের মধ্যে গাংনীতে এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। গাংনীর মানুষ আমার প্রতি আস্থা রেখে আমাকে এমপি নির্বাচিত করেছিল। তারপর দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে গাংনীর মানুষকে সাথে নিয়েই আছি। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমার বিশ্বাস মানুষ আবারও সে আস্থায় আমাকে নির্বাচিত করবেন।