
আলমডাঙ্গায় মেঘলা আকাশে মাঝারি বৃষ্টিতে মা দূর্গার বিদায়ী সুরে ঢাক আর উলুধ্বনিতে বিসর্জন দিয়েছে মা দূর্গার মৃন্ময়ী প্রতিমা।
বিজয়া দশমী সিঁড়ির খেলার শেষে বিদায়ী করুন সুরে মা দূর্গার প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে আলমডাঙ্গা সহ সারাদেশে। শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিন বিজয়া দশমী। মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তরা আজ দেবী দুর্গাকে সিঁদুর দিয়েছেন। খেলেছেন সিঁদুর খেলা।আজ দুপুরের পর আরতি, শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
আজ সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, পূজার প্রস্তুতি নিয়ে ভক্তরা দলে দলে মণ্ডপে জড়ো হচ্ছেন। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে শুরু হয় বিজয়া দশমী বিহিত পূজা। পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর দর্পণ বিসর্জন করেন। শাস্ত্রমতে দেবীর দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা শেষ হয়েছে। মা বিদায় নিয়েছেন। তারপর ভক্তরা অঞ্জলি দিয়েছেন। ভক্তরা মাকে সিঁদুর দিয়েছেন ও সকল বিবাহিত নারী ও নারীদের স্বামীর মঙ্গল কামনায়,দীর্ঘায়ু জীবনের আশায় সিঁদুর দিয়েছেন, যাকে আমরা বলি সিঁদুর খেলা। মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে বিদায় জানিয়েছেন।
পূজার পর অঞ্জলি দেওয়া শুরু হয় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এ সময় ভক্তদের জন্য হাতে হাতে অঞ্জলির ফুল দেওয়া হয়। ফুল হাতে পুরোহিতের সঙ্গে সঙ্গে ভক্তরা মন্ত্র বলেন। মন্ত্র পাঠ শেষে ভক্তরা অঞ্জলির ফুল তুলে দেন। তখন উলুধ্বনি বাজিয়ে মা দুর্গাকে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়।
স্ত্রীকে সাথে নিয়ে পূজা মন্ডপে এসেছেন অমল কুমার বিশ্বাস। তিনি মেহেরপুর প্রতিদিন কে বলেন ‘মায়ের আশীর্বাদে সবার জীবনে বয়ে আনুক শান্তি, সুখ আর সমৃদ্ধি। অন্যায়ের অন্ধকার দূর হোক, সত্য ও ন্যায়ের আলো ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে। মায়ের কাছে এই প্রার্থনাই করেছি।’
স্ত্রী কন্যাকে সাথে নিয়ে বিজয়ার অন্তিম দিনে পূজা মন্ডপে এসেছেন এসিআই ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি সুজিত কুমার শীল।তিনি বলেন বলেন, ‘ধর্ম, বর্ণ–নির্বিশেষে সবার জন্য মা দুর্গার কাছে আশীর্বাদ চেয়েছি। যাতে সবার মঙ্গল হয়। এ বছর পূজা সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলায় মোট ৩৫ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রতিমা স্থান পেয়েছে।কালীদাসপুর পূজা মন্ডপে এক অনান্য নজীর সৃষ্টি করেছে।সাম্প্রতিক সম্প্রতির এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মন্ডপের পাশেই রয়েছে মসজিদ। শুধুমাত্র একটি পাঁচ ইঞ্চির প্রাচীর আলাদা করেছে দুই ধর্মের মানুষকে।কিন্তু পূজার সকল কর্ম,যেমন মন্ডপ তৈরি,আলোকসজ্জা,নিরাপত্তা ব্যাবস্থা সকল কাজই করে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ।
এছাড়াও রথতলা,হরিতলা,আনন্দধাম,স্টেশন পাড়ায় খুব ধূমধাম করে প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসবের পালন করা হয়।আলমডাঙ্গায় কোল ভীল,ব্যাদ সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ বসবাস করে।এই শারদীয় দুর্গোৎসবে তাদের ভক্তি সাধনার অজ্ঞলি আর নৃত্য গানে ভরে উঠে আকাশ বাতাস।