
আলমডাঙ্গার বেলগাছী ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয় পতাকার অবমাননা, বৃষ্টিতে ভিজলো পতাকা। দায়িত্বে যারা ছিল তারা নীরব।
আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী ইউনিয়ন পরিষদে ঘটেছে জাতীয় পতাকার অবমাননার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে স্থানীয় যুবক আব্দুর রকিব জীবন দেখেন , জাতীয় পতাকা বৃষ্টির পানিতে ভিজছে। তিনি তা ফেসবুকে সরাসরি লাইভ করেন, যা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এবং এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনা সৃষ্টি করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১০টায় ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিকেল চারটায় অফিস বন্ধ হয়ে গেলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পতাকা নামানো হয়নি। এতে পতাকা চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার শিকার হয়।
সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন , জাতীয় পতাকা কোনো সাধারণ কাপড় নয়, এটি লাখো শহীদদের রক্তে রঞ্জিত স্বাধীনতার প্রতীক। এর প্রতি অবহেলা পুরো জাতির প্রতি অসম্মান।
এ ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মেহেরাজ আলী এবং গ্রাম পুলিশের অবহেলার বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়মিত সময়মতো অফিসে আসেন না এবং সরকারি বিধি-বিধান উপেক্ষা করেন। গ্রাম পুলিশরাও পতাকা নামানোর দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। আইনের দিক থেকে বিষয়টি গুরুতর। বাংলাদেশ পতাকা বিধিমালা , ১৯৭২-এর ধারা ৭(৩) অনুযায়ী বৃষ্টি, ঝড় বা প্রতিকূল আবহাওয়ায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়া বাংলাদেশ দণ্ডবিধি , ১৮৬০-এর ১২৩(ক) ধারা রাষ্ট্রীয় প্রতীক বা জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননাকর আচরণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে।
এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান মেহেরাজ আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ট্রেইনিং করতে গিয়েছিলাম, আমি কিছু জানি না। তাঁকে আরও প্রশ্ন করা হয়, এখনও পতাকা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নামানো হয়েছে কি? উত্তরে তিনি বলেন, এসব কিছুই আমি জানি না।
স্থানীয় নাগরিক সমাজ প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে, যাদের অবহেলায় জাতীয় পতাকা বৃষ্টিতে ভিজেছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় পতাকা শুধু প্রতীক নয় , এটি আমাদের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি। এর প্রতি অবহেলা মানে বাংলাদেশের প্রতি অবমাননা।

 
								
				

 
												