
মেহেরপুরে সড়ক পরিবহন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারায় দায়ের করা পাঁচটি মামলায় ছয় আসামিকে জেল-জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলী এসকল আদেশ দেন।
প্রথম মামলায়, সড়ক পরিবহন আইনের মামলায় মো. রোকনুজ্জামান রোকনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
দ্বিতীয়, মাদক মামলায় মো. রুহুল আমিনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ছয় টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয়, মারধর মামলায় মো. শাফায়েত মোল্লাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
চতুর্থ মামলায়, মারধর মামলায় মো. জুয়েল রানা ও মো. কিফাজ উদ্দিন কিপাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চম মামলায়, হামলার মামলায় মো. আল মামুনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
প্রথম মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে মেহেরপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার নিহত মমিনুল ইসলামতার মোটরসাইকেলযোগে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে গাংনী উপজেলার চেংগাড়া বাজার ব্রীজের কাছে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে দ্রুতগামী ও বেপরোয়া গতিতে চালানো ইটবোঝাই শ্যালো ইঞ্জিনচালিত স্টিয়ারিং গাড়ি তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়।
ধাক্কায় তিনি মোটরসাইকেলসহ সড়কে পড়ে গেলে গাড়িটি তার ডান পা ও কোমরের ওপর দিয়ে চলে যায়, ঘটনাস্থলেই তিনি গুরুতর আহত হন এবং পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দ্বিতীয় মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩ আগস্ট মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার এএসআই মাহাতাব উদ্দিন মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে ২৫০ গ্রাম গাঁজাসহ মো. রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করেন।
তল্লাশি চালিয়ে তার পরিহিত লুঙ্গির ভেতর থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
তৃতীয় মামলার বিবরণে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাদীর পরিবারের সঙ্গে আসামিদের বিবাদ ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
আসামিরা লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে বাড়িতে ঢুকে বাদীর স্বামীকে পিটিয়ে জখম করে, তার নগদ ৩০,০০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। বাদীর শ্বাশুড়ি মোছা. সাজেদা খাতুনকেও মারধর করা হয়।
চতুর্থ মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদীর স্ত্রীর রান্নার চাল ধোয়া পানির সামান্য অংশ আসামির বাড়ির দিকে গেলে এ নিয়ে বিবাদ ও হামলার ঘটনা ঘটে। আসামিরা লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে এবং পরিবারের সদস্যদের এলোপাতাড়ি মারধর করে, এতে তারা গুরুতর আহত হন।
পঞ্চম মামলার বিবরণে জানা যায়, এক দল আসামি ধারালো দা, হাসুয়া, রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধে বাদীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ১নং আসামি মো. আল মামুন ধারালো হাসুয়া দিয়ে বাদীর মুখে ও চোখের পাশে কোপ মেরে রক্তাক্ত জখম করে, অন্য আসামিরা বাঁশ ও রড দিয়ে বাদী ও তার স্ত্রীকে মারধর করে।
মামলাগুলোর তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। সাক্ষ্য ও প্রমাণ পর্যালোচনা শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

 
								
				

 
												