মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী আমজাদ হোসেনের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাংনী ইউনিয়ন পরিষদে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে তাঁর প্রতিনিধি দল এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বাবু।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, তেতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এ এস এম সায়েম, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন এবং উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মোখলেছুর রহমান মুকুল।




ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি

দিনটি ছিল শুক্রবার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। দেশবাসী নাশতা সেরে ছুটির দিনের কাজগুলো যেমন, বাজার করা, রান্না-বান্নার বিশেষ আয়োজন, আয়েশ করে বিশ্রাম, বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তুতি, এসব নিয়ে ব্যস্ত। সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে হঠাৎ করে রাজধানীসহ পুরো দেশ একটা ঝাঁকুনি অনুভব করলো। ঝাঁকুনির তীব্রটা ক্রমে বাড়তে থাকলো।

সেই সাথে বেশ খানিকটা সময় নিয়ে পুরো দেশ যেন দুলছিলো। নিকট অতীতে এত বড়ো ঝাঁকুনি বা ভূমিকম্প দেশবাসী উপলব্ধি করেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে গণমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে জনসাধারণ বিষয়টা বিষদ জানতে পারলো। সেই সাথে তারা তাদের প্রতিক্রিয়াটাও প্রকাশ করলো।

২১ নভেম্বরের এ ভূ-কম্পনটির উৎপত্তি স্থল ছিল ঢাকার অদূরে নরসিংদীতে। তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার। কাছাকাছি উৎপত্তিস্থল এবং তীব্রতার কারণে রাজধানীবাসীসহ দেশবাসী উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছিল। এদিনের ভূমিকম্পে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। আহত হন আরও অনেকে।

২১ নভেম্বরের পরদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় আরও দুবার কম্পন অনুভূত হয়। তবে এর মাত্রা ছিল কম। শুক্রবারের ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর শনিবার ফের দুবার মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এদিন সকালে ৩.৩ মাত্রা এবং সন্ধ্যায় ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এই কম্পনগুলোকে ‘আফটার শক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পরিচালক ভূমিকম্প বলতে সাধারণভাবে ভূ-পৃষ্ঠে সৃষ্ট কম্পনকে বোঝায়। অর্থাৎ ভূ-অভ্যন্তরে হঠাৎ সৃষ্ট কোনো কম্পন যখন ভূত্বককে আকস্মিক আন্দোলিত করে, সাধারণত তাকে ভূমিকম্প বলে। ভূমিকম্পের ফলে ভূ-পৃষ্ঠে পরিবর্তন সূচিত হয়। মৃদু ভূমিকম্প আমরা অনুভব করতে পারি না। কিন্তু অপেক্ষাকৃত প্রবল ভূমিকম্প আমরা সহজে অনুভব করতে পারি। সাধারণত ভূমিকম্প কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং পর্যায়ক্রমে একাধিকবার ঘটতে পারে। ভূমিকম্পনের মাত্রা তীব্র হলে ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, গাছপালা প্রভৃতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোন একটি স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। ভূঅভ্যন্তরের যে স্থানে ভূমিকম্পনের উৎপত্তি হয় তাকে কেন্দ্র (Centre) বলা হয়। কেন্দ্রের সোজা উপরে ভূপৃষ্ঠস্থ বিন্দুকে উপকেন্দ্র (Epicentre) বলে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূ-অভ্যন্তরের প্রায় ১৬ থেকে ২০ কিলোমিটার এর মধ্যে অবস্থিত থাকে। ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকাগুলো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা: বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে ভূমিকম্পন-প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান। মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা: ঢাকা, কুমিল্লা, ফরিদপুর। কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা: খুলনা, বরিশাল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে ৭.৫ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঘটনা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাত্রায় রেকর্ড করা হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৭ বছরে মোট ৫৯০টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যা বছরে গড়ে প্রায় ৩৫টি ভূমিকম্পের সমান। এই গড় অনুসারে, গত ৮ বছরে (২০১৭ থেকে ২০২৫) ২৮০টি ভূমিকম্প হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান পেতে আবহাওয়া অধিদপ্তর বা ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য পর্যালোচনা করা উচিত। বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৩৫টি মৃদু ভূমিকম্প (সাধারণত ৪.০ বা তার কম মাত্রার) বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূতাত্ত্বিক এবং ভূমিকম্প সংক্রান্ত ইঙ্গিত বহন করে। ভূমিকম্প হলে ঢাকার কী ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে এ নিয়ে যারা চিন্তিত, উদ্বিগ্ন এবং ঐ সময়ের করণীয় ও এর পূর্বের করণীয় বিষয়ে নির্দেশ করছেন, এর প্রায় সবটার সাথে আমরাও একমত। বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তীব্র ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকা অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হবে।’ তিনি জাপানের কোবে নগরীর উদাহরণ টেনে বলেন, ভূমিকম্পে ঐ বাণিজ্যিক নগরী শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসে প্রায় সাত দিন জ্বলেছিল।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা। সেই সঙ্গে ঢাকায় রয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ। শক্তিশালী ভূমিকম্পে রাজধানীতে ধসে যেতে পারে ১০ শতাংশ ভবন। এতে কমপক্ষে দুই লাখ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। ধসে যাওয়া ভবনে অবরুদ্ধ হবে পাঁচ থেকে ১০ লাখ মানুষ। নগরবাসীদের উদ্ধারে যথাযোগ্য প্রস্তুতি না থাকায় গ্যাসলাইন ফেটে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ও অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সাম্প্রতিক এই কম্পনগুলো বাংলাদেশকে পুনরায় ভূমিকম্পের ঝুঁকির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভবিষ্যৎ বিপর্যয় এড়াতে তাঁরা বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চল ভূমিকম্পের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য আমাদের ভবন নির্মাণে অধিক সচেতন ও বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে। আমাদের খোলা মাঠ, পার্ক সংরক্ষণ করতে হবে। একই সঙ্গে ভবনসংলগ্ন রাস্তাগুলোকে সুপ্রশস্ত করতে হবে।’

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিকভাবে ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। দেশটি তিনটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে রয়েছে: ইউরেশিয়ান প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট ও বার্মা মাইক্রোপ্লেট। এ প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ও সঞ্চিত ভূতাত্ত্বিক চাপের কারণে বাংলাদেশে মাঝারি থেকে বড়ো মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ৬০টির বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে এ অঞ্চলে।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যদি ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তাহলে আট লাখ ৬৪ হাজার ভবন ধসে পড়বে। যা শতকরা হিসেবে মোট বিল্ডিংয়ের ৪০শতাংশ। এ ভূমিকম্প যদি দিনের বেলায় হয়, তাহলে দুই লাখ ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হবে। ভূমিকম্পটি যদি রাতের বেলায় হয়, তাহলে তিন লাখ ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হবে। এ তথ্য উঠে এসেছে ২০২৩ সালে রাজউকের গবেষণায়। বর্তমানে বিশেষজ্ঞদের মতে ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৭.৫ হতে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, একাধিক ছোটো ভূমিকম্প একটি বড়ো ভূমিকম্পের আগাম সংকেত হতে পারে। বিশেষ করে যদি এটি একই অঞ্চলে বারবার ঘটে এবং কম্পনের মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সতর্কবার্তা আসতে পারে যে, বাংলাদেশ বড়ো ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত কি না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের ভবন ও অবকাঠামো বড়ো ভূমিকম্প সহ্য করার মতো উপযুক্ত নয়, তাই যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ছোটো ভূমিকম্পগুলো যদি নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলে ঘনঘন হয়, তবে এটি সেখানে বড়ো ভূমিকম্পের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষত, ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত ভূমিকম্প হলে, এটি বড়ো বিপর্যয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশে বড়ো ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে, তবে তা মোকাবিলার সক্ষমতা এখনো অনেক সীমিত। ভূমিকম্প-সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও জরুরি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন জরুরি, না হলে বড়ো ভূমিকম্প হলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশে বছরে ৩৫টি মৃদু ভূমিকম্প একটি স্বাভাবিক ঘটনা মনে হলেও এটি ভবিষ্যতে বড়ো ভূমিকম্পের জন্য একটি সতর্কবার্তা হতে পারে। তাই এখন থেকেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সুতরাং বাংলাদেশের ঘনঘন ছোটো ভূমিকম্প ভবিষ্যতে বড়ো ভূমিকম্পের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই এখন থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা। ফল্টলাইন গুলোর পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি করা। জনগণকে ভূমিকম্প মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়া। জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ ব্যবস্থার উন্নতি করা। সচেতনতা বৃদ্ধি করা ও মহড়া চালানো। জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণব্যবস্থার উন্নতি করা।

ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধার বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। হাসপাতাল ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করা। সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করা। স্কুল, কলেজ, অফিসে ভূমিকম্প মহড়া বাধ্যতামূলক করা। জনগণকে ভূমিকম্প কালীন করণীয় সম্পর্কে সচেতন করা। উন্নত ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা। আন্তর্জাতিক গবেষণা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগই হঠাৎ করে আসে। আর এই দুর্যোগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা মানুষের নেই। তাই এর হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সচেতন থাকা এবং বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরির সময় নিয়ম মেনে চলা। বাড়ি তৈরির সময় খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করলে তা আমাদের বাড়িটিকে দুর্বল করবে। বলা যায় না, এই ফাঁকি হয়তো আমাদের জীবনের বিনিময়ে শুধতে হবে। তাই সকলের এ বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকা উচিত।

ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার মুহূর্তে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই প্রাণরক্ষার প্রধান উপায়। ভূমিকম্প শুরু হলে যারা ঘরের ভেতরে অবস্থান করছেন, তাঁদের উচিত দ্রুত মজবুত টেবিল, খাট বা কাঠামোর নিচে আশ্রয় নেওয়া এবং মাথা ও ঘাড় দুই হাত দিয়ে ঢেকে রাখা। জানালা, কাচ, আলমারি, ঝুলন্ত ফ্যান ও ভারী আসবাবপত্র থেকে দূরে থাকতে হবে। লিফট ব্যবহার না করে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে হবে এবং কম্পন চলাকালে বাইরে দৌড়ানোর চেষ্টা না করাই শ্রেয়। রান্নাঘরে থাকলে গ্যাসের চুলা বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে, তবে নিজের নিরাপত্তাকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইনের সম্ভাব্য ঝুঁকি মাথায় রেখে সতর্ক থাকতে হবে।

অন্যদিকে যারা বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের উচিত খোলা জায়গায় চলে যাওয়া এবং বিদ্যুৎ খুঁটি, বিলবোর্ড, গাছ ও উঁচু ভবন থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা। যানবাহনে থাকলে নিরাপদ স্থানে থামিয়ে গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করা উত্তম। ভূমিকম্প থেমে যাওয়ার পর ভবনে পুনরায় প্রবেশের আগে ফাটল বা ক্ষয়ক্ষতি রয়েছে কি না তা যাচাই করা জরুরি। একই সঙ্গে পরবর্তী আফটার শকের আশঙ্কা মাথায় রেখে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের সহায়তা করা এবং গুজবে কান না দিয়ে দায়িত্বশীল উৎস থেকে নির্দেশনা অনুসরণ করাই হবে ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ করণীয়।

ভূমিকম্প মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সচেতনতা ও প্রস্তুতি। ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্র সবার সম্মিলিত উদ্যোগই পারে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে। নিয়মিত মহড়া, প্রশিক্ষণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে ভূমিকম্পকালীন করণীয় সম্পর্কে জনগণকে প্রস্তুত করা গেলে অনেক প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব।
লেখক: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, ঢাকা।




ঝিনাইদহে মাদকমুক্ত ও আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে ক্রিকেট টুর্নামেন্টে’র উদ্বোধন

মাদকমুক্ত ও আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে বদরগঞ্জ কলেজ মাঠে এই ক্রিকেট খেলার উদ্বোধন করেন ঝিনাইদহ সরকারী নরুন্নেহার মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুষেন্দু ভৌমিক।

সাধুহাটী তারুণ্যের অগ্রযাত্রার প্রধান উপদেষ্টা সাকিব মোহাম্মদ আল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল ও বদরগঞ্জ বাকী বিল্লাহ (রহঃ) কামেল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রুহুল আমীন অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক অধ্যক্ষ সুষেন্দু ভৌমিক বলেন, এখানে শুধুমাত্র একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করতে সমবেত হইনি। আমরা একত্রিত হয়েছি একটি মহান অঙ্গীকার বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে। এই টুর্নামেন্টের মূল লক্ষ্য হলো: মাদক মুক্ত ও আলোকিত সমাজ বিনির্মাণ।

মাদকাসক্তি আমাদের সমাজের, বিশেষ করে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক মারাত্মক অভিশাপ। এটি কেবল একটি ব্যক্তিকে নয়, একটি পরিবারকে, একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেয়। মাদক আমাদের সম্ভাবনাময় তরুণদের স্বপ্নগুলোকে কেড়ে নেয়।

কিন্তু, আমরা জানি, খেলাধুলার শক্তি মাদকের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। খেলাধুলা তরুণদের মনে সাহস, শৃঙ্খলা এবং ইতিবাচকতা সৃষ্টি করে। যখন একটি ছেলে বা মেয়ে খেলার মাঠে ঘাম ঝরায়, তখন তার মনে মাদকের অন্ধকার বাসা বাঁধতে পারে না।

ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল বলেন, ক্রিকেট শুধু একটি খেলা নয়; এটি দলগত ঐক্যের, শৃঙ্খলাবোধের এবং প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধার এক অনন্য পাঠশালা। এই টুর্নামেন্টের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি বল ও প্রতিটি রান আমাদের তরুণদের নিয়মানুবর্তিতা ও সময়জ্ঞান যা তাদের জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে শেখাবে।

বদরগঞ্জ বাকী বিল্লাহ (রহঃ) কামেল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রুহুল আমীন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, খেলাধুলার এই আলোকরশ্মি তরুণদের মন থেকে মাদকের অন্ধকারকে দূর করবে এবং তাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। উদ্বোধনী খেলায় রাঙ্গিয়ারপোতা ও এনায়েতপুর ক্রিকেট টিম অংশ গ্রহন করে।




ঝিনাইদহে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

তীব্র এই শীতে সমাজের নিম্নআয়ের মানুষকে একটু উষ্ণতা দিতে ঝিনাইদহে ’শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে শহরের চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ড এলাকায় হোটেল শ্রমিকদের মাঝে এ কম্বল বিতরণ করা হয়।

জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেনের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত হোটেলের শ্রমিকদের মাঝে এ কম্বল বিতরণ করা হয়।

সেসময় হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন, সহ-সভাপতি বাবলু মিয়াসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। শীতে কম্বল পেয়ে অসহায় হতদরিদ্র মানুষেরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।




দামুড়হুদায় ডোবা পুকুর থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

দামুড়হুদা উপজেলা গেটসংলগ্ন লিটনের হোটেলের পেছনের একটি ডোবা পুকুরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

আজ বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে বিষয়টি নজরে এলে সেখানে জনতার ভিড় জমে। সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করে।

নিহত ব্যক্তি দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের বদনপুর গ্রামের মৃত বিশারত আলীর ছেলে মো. কামাল উদ্দিন (৭৫)। তিনি দীর্ঘদিন দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসে পিয়ন হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অবসরের পর থেকেই তার মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন এবং ২-৫ দিন পর ফিরে আসতেন। অনেক সময় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসতেন। তিনি প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ (টোকাই) করেও চলাফেরা করতেন।

নিহত কামাল উদ্দিন গত মঙ্গলবার আসরের নামাজের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরবর্তীতে সংবাদ পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দামুড়হুদা মডেল থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন এবং এটি তাদের পিতার লাশ বলে নিশ্চিত করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মৃত ব্যক্তি ৬ ছেলে ও ১ মেয়েসহ মোট ৭ সন্তানের জনক।

পুলিশ লাশ উদ্ধার করে দামুড়হুদা মডেল থানায় নিয়ে আসে এবং ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আনোয়ারুল কবির এবং দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মেজবাহ উদ্দিন। এছাড়াও ঘটনাস্থলে পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরা মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য কাজ করছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এদিকে পরিবারের দাবি, প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি হয়তো ওই ডোবা পুকুরে পড়ে যান এবং সেখান থেকে আর উঠতে পারেননি। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, পুকুরটি অত্যন্ত গভীর এবং এতে প্রচুর কচুরিপানা রয়েছে। কয়েকদিন আগেও ওই পুকুরে একটি গরু পড়ে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পুকুরপাড়ে তুলেছিলেন। এ কারণে অনেকের ধারণা, নিহত ব্যক্তি অসাবধানতাবশত পুকুরে পড়ে ডুবে মারা যেতে পারেন। তবে লাশ উদ্ধার করার পর দেখা যায়, লাশের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।




মেহেরপুরে জেলা ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে ২ কেজি গাঁজাসহ দু’জন আটক

মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদী বাজারে জেলা ট্রাফিক পুলিশের নিয়মিত অভিযানে গাঁজাসহ দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার বারাদী বাজারে ট্রাফিক অভিযান পরিচালনা কালীন সময়ে বেলা ১১.৪০ টার দিকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, মেহেরপুরের গাংনী থানাধীন ভাটপাড়া গ্রামের তাইজুল ইসলামের ছেলে মহিদুল ইসলাম (২৮) ও সদর থানার খোকসা কদমতলা পাড়ার মরহুম মোতালেব মিয়ার ছেলে মহিদুল ইসলাম (৩৬)।

মেহেরপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের চৌকস ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বিশ্বদেব ঘোষ এর নেতৃত্বে সার্জেন্ট মোজাফফর, সার্জেন্ট অথেলো রানা, সার্জেন্ট মামুন ও কনস্টেবল সাইফুল বারাদী বাজারে বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে বিভিন্ন যানবাহনের উপর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন।

এসময় উক্ত ব্যক্তিদের মোটরসাইকেল থামিয়ে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে তাদের মোটরসাইকেল থেকে নামতে বললে মহিদুলের লুঙ্গির নিচে থাকা পলিথিনে মোড়ানো দুই কেজি একটি গাঁজার পুঁটলি মাটিতে পড়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গাঁজা সরবরাহের কথা স্বীকার করলে তাদের আটক করে বারাদী পুলিশ ক্যাম্প হেফাজতে নেয়া হয়।

এসময় তাদের ব্যবহৃত নাম্বার প্লেট বিহীন একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। পরে তাদের মেহেরপুর সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।




মেহেরপুর-১ ও ২ আসনে জামায়াত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র উত্তোলন

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মেহেরপুর-১ আসনের মাওলানা তাজউদ্দিন খান এবং মেহেরপুর-২ আসনের নাজমুল হুদা মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের কাছ থেকে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন, রাজনৈতিক সেক্রেটারি কাজী রুহুল আমিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রউফ মুকুল, সদর উপজেলা আমীর মাওলানা সোহেল রানা, পৌর আমীর সোহেল রানা ডলারসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

জামায়াতে ইসলামী সূত্রে জানা গেছে, দলটি আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ তারিখে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মেহেরপুরের দুটি আসনে দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় নামার জন্য মনোনয়নপত্র উত্তোলনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।




মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী মাসুদ অরুণের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের কাছ থেকে তাঁর প্রতিনিধি দল এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন প্রার্থী মাসুদ অরুণের ছোট ভাই ও মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারুল হক কালু ও অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান স্বপনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করবেন। তারা বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

সরকার ও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। তফসিল অনুসারে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাসুদ অরুণের মনোনয়নপত্র উত্তোলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।




মেহেরপুর ১ ও ২ আসনে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র উত্তোলন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেহেরপুর-১ (সদর ও মুজিবনগর) আসন থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদ অরুণের মনোনয়নপত্র তার পক্ষে উত্তোলন করেছেন তাঁর ছোট ভাই মারুফ আহমেদ বিজন।

একই দিনে মেহেরপুর-১ ও মেহেরপুর-২ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রও উত্তোলন করা হয়।

মেহেরপুর-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী তাজউদ্দিন খান এবং মেহেরপুর-২ আসনে প্রার্থী নাজমুল হুদার মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন।

বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাড. সৈয়দ এনামুল কবির তাদের হাতে তুলে দেন।




‎গাংনীতে রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কুঞ্জনগর গ্রামের রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বারবার গাংনী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীকে অবহিত করেও কোনো লাভ হয়নি। বরং অভিযোগকারীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান।

গাংনী উপজেলার হুদাপাড়া কুঞ্জনগর বালিকা বিদ্যালয় মোড় থেকে মিনাপাড়া হাই স্কুলের মোড় পর্যন্ত ৬৬০ মিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ৩৫ লক্ষ ৩ হাজার ৬৭ টাকা বরাদ্দকৃত অর্থে কাজ করছেন মেসার্স মোকলেস ট্রেডার্স এন্টারপ্রাইজ। বর্তমান কাজ বাস্তবায়ন করছে বামুন্দি বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সোহাগ ট্রেডার্স।

সরকারিভাবে ১ নম্বর ইটের খোয়া ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও সেখানে ইটভাটার পরিত্যক্ত ৩ নম্বর ইটের রাবিশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।

গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান গাংনীতে যোগদানের পর থেকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এছাড়াও গাংনী উপসহকারী প্রকৌশলী ইমরান হাসানের ওপর রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্ব থাকলেও তিনি রাস্তার সাইটে দায়িত্ব পালন করেননি। ঠিকাদার ইচ্ছামতো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগে সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাটি নির্মাণে সবই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়রা এমন অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সোহাগ জানান, সব ঠিকঠাক আছে। আমরা কাজ করছি, কারও কিছু করার থাকলে করুক।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান জানান, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী অপসারণ করা হবে এবং ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, রাস্তাটি দেখভালের জন্য উপসহকারী প্রকৌশলী ইমরান হাসানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি রাস্তার সাইটে যাননি বলে জানান।