কোমরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাজী মো: আমানউল্লাহ আর নেই

কোমরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাজী মো: আমানউল্লাহ বেলু ইন্তাকাল করেছেন।

মরহুমের জানাযার নামাজ আগামীকাল রবিবার সকাল ৯:০০ ঘটিকায় কোমরপুর বাইতুল আমিনা মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হবে ইনশাল্লাহ। উক্ত জানাযায় সকলে উপস্থিত হয়ে দো-জাহানের অশেষ নেকি হাসিল করুন।




মহেশপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চায়ের দোকানে প্রাইভেট কার, নিহত ১ আহত ৩

ঝিনাইদহের মহেশপুরে প্রাইভেট কারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ায় এবং কারের ধাক্কায় একজন নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরও ৩ জন।

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম হোসেন উপজেলার রাখালভোগা গ্রামের মৃত আলিম মন্ডলের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, দর্শনা থেকে ছেড়ে আসা সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কার মহেশপুরের দিকে যাচ্ছিল। শিশুতলা বাজার এলাকায় পৌঁছালে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি চায়ের দোকানে ধাক্কা দেয়। এতে দোকানটি ভেঙে পড়ে ঘটনাস্থলেই ইব্রাহিম হোসেন গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় রাখালভোগা গ্রামের বাবলু মন্ডল, ফতেপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম খুদে ও কদমতলা গ্রামের নাসির উদ্দিন আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কোটচাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




ঝিনাইদহে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

শীতার্ত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ঝিনাইদহ সমাজসেবা অফিস প্রাঙ্গণ, পৌরসভার সামনে, পৌর গোরস্থান এলাকা ও রেড ক্রিসেন্টসহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে এ কম্বল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধা, স্বামী পরিত্যক্তা নারীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির অসহায় ও দুস্থ মানুষকে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল প্রদান করা হয়।

সেসময় জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, স্থানীয়র সরকারের উপ-পরিচালক রথীন্দ্রনাথ রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুবীর কুমার দাশ, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ ইকবাল মাখন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান, রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি এম এ কবিরসহ সমাজসেবা অধিদপ্তর, পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন কোনো মানুষ কষ্ট না পায় এ লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

উপকারভোগীরা জেলা প্রশাসনের এই মানবিক উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখার দাবি জানান।




জয়রামপুর স্টেশনের সংস্কার ও সাগরদাঁড়ী-কপোতাক্ষ ট্রেনের স্টপেজ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেলস্টেশনের সংস্কার, সাগরদাঁড়ী ও কপোতাক্ষ ট্রেনের স্টপেজ চালু, স্টেশন মাস্টার ও গেটম্যানসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেন চলাচল পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার সকাল ৯টায় জয়রামপুর রেলস্টেশন চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে জয়রামপুরসহ আশপাশের এলাকার সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

এসময় চলাকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী আপ কপোতাক্ষ ট্রেনটি মানববন্ধনকারীরা জয়রামপুর স্টেশনে সাময়িকভাবে থামিয়ে দেন। এ সময় ট্রেনের পরিচালক কর্মসূচিকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দাবিসমূহ সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

পরবর্তীতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হলে কর্মসূচি স্থগিত করেন। কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়। এ ঘটনায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।

বক্তারা বলেন, জয়রামপুর রেলস্টেশনটি এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্টেশন হলেও দীর্ঘদিন ধরে চরম অবহেলার শিকার। স্টেশনে নিয়মিত ট্রেন না থামায় শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক ও সাধারণ যাত্রীদের প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, সাগরদাঁড়ী ও কপোতাক্ষ ট্রেনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের স্টপেজ চালু হলে এ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, স্টেশনে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নিরাপত্তা ও যাত্রীসেবায় মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। দ্রুত সংস্কার ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।

মানববন্ধনের আয়োজন করে দামুড়হুদাবাসীর পক্ষে জয়রামপুর ট্রেন সুবিধা সংরক্ষণ কমিটি।




মেহেরপুরের মোখলেছুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর জেলার এসএসসি ও এইচএসসিতে শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গাংনীর সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেহেরপুর ক্যাম্পাসে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য দ্বিতীয় থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য এক ঘণ্টা এবং চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়।
জেলায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত ও শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২৬ সাল থেকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের চাঁদবিল প্রধান সড়কের পাশে সন্ধানী সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মোখলেছুর রহমানের নামে মোখলেছুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৬ সালেই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে সন্ধানী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোঃ আবু জাফর বলেন, আজ আমাদের জন্য অন্যরকম অনুভূতির দিন। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন মেহেরপুরে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার এই প্রচেষ্টা। সকলের সহযোগিতায় জেলায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ভর্তি পরীক্ষার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৬১ জন ফরম উত্তোলন করে ৪৯ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
তৃতীয় শ্রেণিতে ৮০ জন ফরম উত্তোলনের মধ্যে ৭৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পঞ্চম শ্রেণিতে ৫১ জন ফরম উত্তোলন করে ৪৭ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১১৮ জন ফরম উত্তোলনের মধ্যে ১০৬ জন এবং সপ্তম শ্রেণিতে ৬০ জন ফরম উত্তোলনের মধ্যে ৫৭ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
সব মিলিয়ে এ বছর ৪২৩ জন শিক্ষার্থী ফরম উত্তোলন করে ৩৯০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, যার গড় উপস্থিতির হার ৯১.১২ শতাংশ।
প্রথমবারের মতো এ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।




নির্বাচনে যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবির বলেছেন, অতীতের নির্বাচনের ধারণাগুলো ভুলে যান। আমরা এখানে কাউকে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতে কাউকে এলাও করবো না, সে যেই হোক না কেন। কোনো ধরনের পেশি শক্তি যদি কেউ প্রদর্শন করে, তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো, সে যেই হোক না কেন এবং মানুষকে কালো টাকা, বেশি শক্তি, ভয়-ভীতি, প্রেসার ক্রিয়েট করে মানুষকে ভোট দেওয়াতে বাধ্য করবে এই ধরনের যত ফোর্স আছে, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে নির্দ্বিধায় বলছি, আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

গণভট ২০২৬ উপলক্ষ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে গণবোধ প্রচার প্রচারণা বিষয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সকল কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে, এটা আসলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে অসুবিধা করবে এবং নির্দ্বিধায় যদি আমাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে না পারে, এই জাতি এগোতে আর পারবে না।

আমরা আগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি দিনের ভোট রাতে, রাতের ভোট দিনে; একজনের ভোট আরেকজন এসে দিয়ে দিচ্ছে; নির্বাচন জেতার জন্য ব্যাপক কালো টাকা মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতীক বরাদ্দের পর যে প্রার্থীরা প্রচারণায় নামবেন, আমি তাদের প্রতি অনুরোধ করবো এখন থেকে আপনারা এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবেন। আমাদের নলেজে আসলে আমরা আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হব।

মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ খাইরুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল হুদা, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুকুমার মিত্র, জেলা আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ কামরুজজামান প্রমুখ।

এছাড়াও এসময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি এবং প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।




গাংনীতে এনসিপি প্রার্থী অ্যাড. সাকিল আহমেদের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সাকিল আহমেদের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

শনিবার সকালে গাংনী ইউনিয়ন পরিষদে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে অ্যাডভোকেট সাকিল আহমেদের প্রতিনিধি দল এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে। এ সময় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মুজাহিদুল ইসলামসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এনসিপি নেতারা জানান, মেহেরপুর-২ আসনে দলীয় কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে এবং সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে অ্যাডভোকেট সাকিল আহমেদকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সামনে ব্যাপক জনসংযোগ ও প্রচারণা কার্যক্রম জোরদার করা হবে বলেও তারা জানান।




মেহেরপুরে এনসিপি প্রার্থী সোহেল রানার পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-১ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানার পক্ষে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের কার্যালয় থেকে সোহেল রানার পক্ষে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেন জেলা এনসিপির সদস্য (লিয়াজু) মো. মাহাবুব ই তৌহিদ রবিন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ খান ও আসিক রাব্বি, সদস্য (লিয়াজু/সংগঠন) মো. হাসনাত জামান সৈকত, সদস্য (অর্থ) মো. তামিম ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এনসিপি নেতৃবৃন্দ জানান, মেহেরপুর-১ আসনে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানাকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে দলীয় কর্মসূচি ও জনসংযোগ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলেও তারা জানান।




খাবারের অপচয় রোধ করতে হবে

পৃথিবীতে প্রতি রাতে ৮০ থেকে ৮৩ কোটির বেশি মানুষ ক্ষুধার্ত অবস্থা ঘুমাতে যায় যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার কম- বেশি ১০ শতাংশ এবং এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮.২ বিলিয়ন বা ৮২০ কোটিরও বেশি। বাংলাদেশের জনসংখ্যা কম-বেশি ১৮ কোটি। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে দেশে চার বছর ধরে দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। সংস্থাটির মতে বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশের কিছু বেশি। সে হিসেবে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কম-বেশি ৩ কোটি ৬০ লাখ। দেশের জনসংখ্যার বড়ো একটি অংশ দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকে। তারা উচ্চ মূল্যস্ফীতির মতো বিভিন্ন আঘাতের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে ২০২২ সালে সংখ্যাটি ছিল ৬ কোটি ২০ লাখ। ২০২৫ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে (GHI) বাংলাদেশের অবস্থান ৮৫তম, যা ১২৩টি দেশের মধ্যে ‘মাঝারি’ (Moderate) ক্ষুধার ক্যাটাগরিতে পড়েছে এবং স্কোর ১৯.২, যা ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা ভালো। তবে, জাতিসংঘের ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৫’ অনুযায়ী, তীব্র খাদ্য সংকটে থাকা শীর্ষ ৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে আছে। ভারত (১০২তম) ও পাকিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকলেও নেপাল ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে।

বিশ্বে প্রতিদিন না খেয়ে থাকা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে,যা খুবই হতাশার সংবাদ। বিশ্বে প্রতিদিন যে পরিমান খাবার মানুষ অপচয় করে তা দিয়ে কম-বেশ ১০০ কোটি মানুষকে খাওয়ানো যেতো। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ১০০ কোটি মানুষের খাবার নষ্ট হয়, যা বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত মোট খাদ্যের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ । যেখানে কোটি কোটি মানুষ অনাহারে থাকে সেখানে এটা ভাবাও চরম বিলাসিতা। এই অপচয় পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় ৯০ কোটি মানুষ গুরুতর খাদ্য সংকটে ছিল এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৬০ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। ধনী দেশগুলোর আর্থিক সাহায্য কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সংঘাতের কারণে এই অভুক্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ মানবিক সাহায্যের জন্য চার হাজার ৯৬০ কোটি টাকা তুলতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ৪৬ শতাংশ অর্থ তুলতে পেরেছিলো। অর্থের অভাবে জাতিসংঘ মানবিক সাহায্য সংস্থা প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও অভুক্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছাতে পারে নি।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট (এফপিএমইউ) ও জাতিসংঘের তিন সংস্থা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ দেশের ৩৬ জেলার ৯ কোটি ৬৬ লাখের বেশি মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি অবস্থা বিশ্লেষণ করে গত ৩০ অক্টোবর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের দুর্যোগপ্রবণ জেলাগুলোর ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বড়ো ধরনের খাদ্যসংকটে পড়তে যাচ্ছে। আর চরম অপুষ্টির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে ১৬ লাখ শিশু। বাংলাদেশে জনসংখ্যার অর্ধেক নারী এবং কম-বেশি দুই-তৃতীয়াংশ কর্মক্ষম। এটি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল অর্জনের একটি সুযোগ। জনসংখ্যার ৭ শতাংশ প্রায় ১.২ কোটি মানুষ ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি, যা বয়স্ক জনগণের সংখ্যা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ কম-বেশি ৩ কেটি ৫০ লাখ কিশোর-কিশোরী এবং ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সি তরুণের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি যা জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ। চরম অপুষ্টির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম।

খাদ্য অপচয়কে বুঝতে হলে ‘ফুড লস’ ও ‘ফুড ওয়েস্ট’ বুঝতে হবে। যখন শস্যদানা যেমন চাল-গম-ডাল, সবজি ও ফল, বিভিন্ন প্রাণীর মাংস, ডিম বা দুধ এসব উৎপাদনের পর বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে যেসব অপচয় হয় তাকে ‘ফুড লস’ বলে। কিন্তু যখন এসব খাবার বাড়ি বা রেস্তোরাঁ বা কমিউনিটি সেন্টারে রান্নার পর অপচয় হয় তখন সেটিকে ‘ফুড ওয়েস্ট’ বলা হয়। খাবার নষ্ট করা কোনো বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও অনেক সময় ইচ্ছা না থাকলেও খাবার নষ্ট হয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু খাবার নষ্টে মানসিকতাও অনেকটা দায়ি। হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোয় বুফে খেতে গিয়ে অনেক খাবার নষ্ট হয়। কোনো অনুষ্ঠানে প্রয়োজনের বেশি রান্না করা হয়, সেগুলোর অনেকটাই ডাস্টবিনে চলে যায়। শিল্পপ্রধান দেশগুলোতে প্রধানতঃ দোকান, বাসা ও খাওয়ার টেবিলে খাদ্যের অপচয় হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ফসল সংগ্রহ করার অদক্ষ পদ্ধতি, অপর্যাপ্ত খাদ্য গুদাম ও খাদ্য হিমায়িত রাখার অপ্রতুল ব্যবস্থা অথবা ক্ষেত থেকে বাজারের খাদ্য নিয়ে যাওয়ার সমস্যার কারণে ক্ষেত থেকে বের হবার আগেই বেশিরভাগ খাদ্যের অপচয় হয়।

খাদ্যের অপচয় রোধ করা এই মুহূর্তে মানবতার সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি। জীবন ধারণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে খাবার। খাবার অপচয় করার অর্থ হলো ক্ষুধার্ত এবং গরিবের মুখ থেকে কেড়ে নেয়া। কোনো এক সময় প্লেটের সব খাবার শেষ করে খেতে না পারা স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে । কিন্তু অনেকে আছেন যাদের খাবার অপচয় করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, প্রতিবারেই তারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার নিচ্ছে এবং অপচয় করছে যা একটা গুরুতর সমস্যা। তবে খাবার অপচয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা খুব সহজ বিষয় নয়। তাহলে কীভাবে খাবার অপচয় রোধ করা সম্ভব। প্রথমত সবাইকে খাবার অপচয় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমরা প্রতিদিন যত খাবার কিনি বা তৈরি করি তার কম-বেশি ১৪ শতাংশ খাবারই অপচয় হয়। শুধু খাবার অপচয় হলে যে ক্ষতি হয়, তার চেয়ে আরও বেশি ক্ষতি হয় পরিবেশের পঁচে যাওয়া খাবার থেকে যে পরিমাণ গ্রীন হাউস গ্যাস (মিথেন) নির্গত হয়, তা কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে প্রায় ২৫ গুণ বেশি ক্ষতিকারক।

বিশেষজ্ঞরা খাদ্যের অপচয় রোধে কিছু টিপস দিয়েছেন। এগুলো ফলো করলে একদিকে যেমন খাদ্যের অপচয় রোধ করা সম্ভব,তেমনি আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য নিজেকে একটু স্মার্ট’ হতে হবে।বাজার করার আগেই জেনে নিতে হবে বাড়িতে কী আছে,আর কি নাই। আর প্রয়োজনইবা কতোটুকু। যা প্রয়োজন, কেবল ততটুকুই কিনতে হবে। বিশেষ করে পচনশীল খাবার কেনার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনের তালিকা করে নিয়ে বাজারে যেতে হবে। রোজ কতটা খাবার বা খাদ্য উপকরণ ফেলে দেওয়া হচ্ছে সেটিরও খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে সহজেই বুঝা যাবে কতটা অপচয় রোধ করার সুযোগ আছে । খাওয়ার সময় প্লেটে ততটুকুই খাবার নিতে হবে, যতটা খাওয়া সম্ভব ।

খাবার সংরক্ষণে যত্নবান হতে হবে। ফ্রিজ ও ডিপফ্রিজ নিয়মমাফিক পরিষ্কার রাখতে হবে। একসঙ্গে অনেক খাবার ফ্রিজে বা ডিপফ্রিজে না রাখাই ভালো আর যদি রাখতেই হয় তবে খাবারের ধরণ অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ফ্রিজে খাবার রাখার সময় আইটেম অনুযায়ী খাবার সাজিয়ে রাখতে হবে। এতে কোনো খাবার চোখের আড়ালে থাকবে না। খাওয়ার অযোগ্য হওয়ার আগেই সেটার সদব্যবহার করতে হবে। আর ফ্রিজে বা ডিপফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করার সময় সেসব খাবার সামনের দিকে রাখতে হবে, যেসব সহজে পচে যেতে পারে। কোনো খাবার কত দিন ভালো থাকতে পারে, তা জানতে হবে। অনেক খাবার বা খাদ্য উপকরণেরই মেয়াদ উল্লেখ করা থাকে। এসব কেনার সময় মেয়াদের মধ্যে তা ব্যবহার করার সম্ভাবনা আছে কি না তা খেয়াল করতে হবে। অনেক সময় মূল্যহ্রাসের বিজ্ঞাপন দেখে আমরা অনেক জিনিস কিনে ফেলি। এটি ভালো অভ্যাস নয়। ব্যবহার করার সম্ভাবনা না থাকলে কোনো জিনিস কম দামেও কেনা উচিত নয়। পরিবারে সদস্য সংখ্যা বিবেচনায় কার কতটা খাবার প্রয়োজন, কার কোনো ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন, তা বের করে খাবারের তালিকা করতে হবে। এতে বাজার করতেও সুবিধা হবে। দামি উপকরণ মানেই যে পুষ্টিকর খাবার, তা কিন্তু নয়। তুলনামূলক কম খরচে কোনো কোনো পুষ্টিকর উপকরণ কেনা সম্ভব, তা বিবেচনায় নিতে হবে। মাছ-মাংস ছাড়াও পুষ্টিকর খাদ্যতালিকা করে ফেলা সম্ভব। তাতে পরিবেশের ওপরও চাপ কমে।

বেঁচে যাওয়া উপকরণ বিশেষ করে সবজির খোসা, কাণ্ড, পাতা—এ রকম অনেক কিছুই ফেলে দেওয়া হয়, যা আসলে খাওয়া সম্ভব। প্রয়োজন মাফিক রান্নার পরও খাওয়াদাওয়ার শেষে অল্প কিছু খাবার অবশ্য থেকে যেতে পারে। সম্ভব হলে সেটি সংরক্ষণ করে পর দিন কাজে লাগাতে হবে। সম্ভব না হলে দুস্থ মানুষকে দিয়ে দিতে হবে। খাবার আয়োজনের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যতা থাকা ভালো। কিন্তু সেটা যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।কোনো খাবার ফেলে দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করতে হবে ,সেটা উত্পাদনে কতটা পরিশ্রম এবং সম্পদ ব্যয় হয়েছে। দুই সপ্তাহ অন্তর একবার খাতা-কলম নিয়ে হিসেব করে দেখতে হবে, এ সময়কালে কতটা খাবার নষ্ট হয়েছে এবং এতে কত টাকা অনর্থক খরচ হলো। টাকার হিসেব চোখের সামনে থাকলে খাবারের অপচয় রোধে সচেতন হওয়া সম্ভব।

খাবার নষ্ট হওয়ার বিষয়টাকে ‘বৈশ্বিক ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করা হয়। আমরা যখন বিশ্বজুড়ে খাবার নষ্ট করছি, তখন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত থাকছে। বিশ্বে যে পরিমাণ খাবার নষ্ট হচ্ছে তার ৬০ শতাংশ খাবার নষ্ট হচ্ছে বাসাবাড়িতে। এ ধরনের অপচয় হওয়ার বড়ো কারণ, মানুষ তাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার কিনছে। এছাড়া তারা কতটুকু খেতে পারবে তার আন্দাজ করতে পারছে না। এতে খাবার উচ্ছিষ্ট থেকে যাচ্ছে। ইউএনইপি ২০২১ সালে ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স নামে রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বছরে এক কোটি ৬ লাখ টন খাদ্য অপচয় হয়। মাথাপিছু খাদ্য অপচয়ের হারও বাংলাদেশে বেশি। ইউএনইপির ওই ইনডেক্স অনুযায়ী একজন বাংলাদেশি বছরে ৬৫ কেজি খাদ্য উপাদান কিংবা তৈরি খাদ্য নষ্ট করেন।আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই সবাইকে সচেতন হয়ে খাবার অপচয় রোধ করতে হবে।

লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা, খাদ্য মন্ত্রণালয়




মেহেরপুরে সড়কে ঝড়েছে ৪৩ প্রাণ, আহত শতাধিক

মেহেরপুরে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪৩ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু, শিক্ষার্থী, নারী, সরকারি প্রকৌশলী, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী, প্রবাসফেরত যুবক, কলেজ ছাত্র ও বৃদ্ধ রয়েছেন। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, ট্রাক, ভ্যান ও বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঘটনা রয়েছে।

মেহেরপুর প্রতিদিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষন করে এসকল তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ২৩ ডিসেম্বর, মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ-টেংরামারি সড়কের আশরাফপুর এলাকায় ড্রামট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে লিজন হোসেন ও রকিবুল ইসলাম নামের দুই যুবক নিহত হন।

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গাংনী-কুথিলী সড়কে ইটবাহী ট্রলির সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত তুহিন হোসেনের (৩২) পর তার শিশু কন্যা তানহাও মারা যায়। গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন হোসেন গাংনী উপজেলার মাইলমারী ধলা গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।

১৪ ডিসেম্বর, মেহেরপুরের গাংনীতে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে রাকেশ আহমেদ (১৮) নামের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২ জন। রবিবার সকালে উপজেলার বামন্দী বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাকেশ আহমেদ উপজেলার তেরাইল গ্রামের মো. কমিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। আহতরা হলেন মেহেরপুরের আব্দুল বাকীর ছেলে অভিক আহমেদ (২৮) ও শয়ন আলী (১৬)।

৭ ডিসেম্বর, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেবনগর বাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় শাহিন নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত শাহিন এবছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও মালয়েশিয়া প্রবাসফেরত কাজিপুর গ্রামের ছাদিমান আলীর ছেলে।

২ ডিসেম্বর, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মানিকদিয়া গ্রামে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিহাব হোসেন (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়।

সোমবার দুপুরে নিজ বাড়ির পাশে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিহাব উপজেলার মানিকদিয়া গ্রামের মাঠপাড়ার কৃষক ওসমান আলীর ছেলে।

২৯ নভেম্বর, মেহেরপুরের গাংনীতে অটোবাইকের ধাক্কায় তানিশা (৭) নামে এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাড়াডোব কাচারি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তানিশা খাতুন গাড়াডোব কাচারি পাড়ার তামিম ইকবালের মেয়ে।

একই দিনে, মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দ টেলিভিশনের মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান গুরুতর আহত হন। শনিবার দুপুর ২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

২৬ নভেম্বর, মেহেরপুরের গাংনীতে কাঁঠাল গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় রানা আহম্মেদ (১৭) নামের এক কিশোর নিহত হয়।

বুধবার দুপুরে সাহেবনগর গ্রামের তালতলা মোড় নামক স্থানে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রানা আহম্মেদ বামন্দী ইউনিয়নের নিশিপুর গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে।

২৫ নভেম্বর, মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামসংলগ্ন রাস্তায় সবজি বোঝাই ট্রাক উল্টে ট্রাকচালক জাহিদুল ইসলাম (২১) আহত হন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

২২ নভেম্বর, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তাসিম (২১) নামে এক যুবক নিহত হন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মঠমুড়া ইউনিয়নের আকুবপুর গ্রামে মোজাম্মেল হকের বাড়ির সামনে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তাসিম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হিদিরামপুর গ্রামের আ. লতিফের ছেলে।

আহতরা হলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হিদিরাম গ্রামের রমজান আলীর ছেলে আকাশ (২০), একই গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে রাজা (২০), দৌলতপুর উপজেলার মহিশকুন্ডি মিস্ত্রিপাড়ার মোটরসাইকেলচালক খোকনের ছেলে জিসান (২২) এবং তার সঙ্গে থাকা আরও একজন অজ্ঞাত যুবক।

১৯ নভেম্বর, গাংনীর নওপাড়া বাজারে ট্রলির সঙ্গে দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় তুহিন আলী, ইমন ও সাব্বির হোসেন নামে তিন যুবক আহত হন। আহত তিনজনের বাড়ি একই গ্রামের নওপাড়া।

১৬ নভেম্বর, মেহেরপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তোফাজ্জেল বিশ্বাস নামের এক শিক্ষক নিহত হন। সদর উপজেলার পুরাতন দরবেশপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

৯ নভেম্বর, মেহেরপুরে বিআরটিসির একটি বাসের ধাক্কায় শরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের শহরের ব্র্যাক অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শরিফুল ইসলাম শহরের মল্লিকপাড়া এলাকার খাদেমুল ইসলামের ছেলে।

২৬ অক্টোবর, মেহেরপুরে ট্রাকের ধাক্কায় শাহিদা খাতুন (৬০) নামের এক নারী শ্রমিক নিহত হন। রবিবার দুপুরে সদর উপজেলার ফতেপুর-শোলমারি সড়কের তেরোঘরিয়া গ্রামের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শাহিদা খাতুন উজলপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গনির স্ত্রী।

২২ অক্টোবর, মেহেরপুরের গাংনীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের সঙ্গে ধাক্কায় সুজন নামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসফেরত যুবকের মৃত্যু হয়।

২১ অক্টোবর, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের গাংনী উপজেলার শুকুরকান্দী নামক স্থানে ট্রাক ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও তিনজন আহত হন। শুকুরকান্দীর গ্যাসপাম্পের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত হলেন উপজেলার বাদিয়াপাড়া গ্রামের উত্তরপাড়ার আরিফুল ইসলামের স্ত্রী সুমি খাতুন (৩৫)। আহতরা হলেন বাদিয়াপাড়া গ্রামের মফিজুল হকের স্ত্রী নোজিয়ারা খাতুন (৪০), একই গ্রামের আরিফুল ইসলামের ছেলে নিরব (১২) ও মহাব্বতপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে সিএনজিচালক হযরত আলী (৩২)।

১৫ অক্টোবর, মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর উত্তরপাড়া মসজিদের সামনে ট্রাকের ধাক্কায় ফারহানা ওয়াহিদা অমি (২৬) নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী নিহত হন।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ফারহানা ওয়াহিদা অমি মেহেরপুর শহরের কাসারিপাড়ার আব্দুল ওয়াহিদ চঞ্চলের মেয়ে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

১৪ অক্টোবর, মেহেরপুরের গাংনী-কাথুলি সড়কে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মকলেছুর রহমান নামের এক জমি পরিমাপ আমিন নিহত হন। নিহত মকলেছুর রহমান গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের আব্দুর রহমান কারিগরের ছেলে। মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে গাংনী-কাথুলি সড়কের এবাদতখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

১ অক্টোবর, মেহেরপুরের গাংনীতে আলমসাধুর ধাক্কায় সাইফুল রেজা ওরফে মহাজন (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হন। রাত সাড়ে ৭ টার দিকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পোড়াপাড়া গ্রামের হঠাৎপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

১৯ আগস্ট, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের আমঝুপি বাজার এলাকায় প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় দুইজন আহত হন। রাত আড়াইটার দিকে দ্রুতগতির দুই প্রাইভেটকার রেসিং করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে দুটি দোকান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

আহতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার সিনেমা হলপাড়ার হাফিজের ছেলে ফেরদৌস (১৯) ও পলাশপাড়ার ওহি (১৯)।

১০ আগস্ট, মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনা বাজারে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আকাশ নামের এক যুবক নিহত ও আরও দুইজন গুরুতর আহত হন।

১৮ জুলাই, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মোহাম্মদ মন্টু নামের এক পথচারী নিহত হন। আহত হন মোটরসাইকেলের দুই আরোহী।

১৬ জুলাই, মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সরফরাজ খান সোনা (৫৫) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।

২৫ জুন, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বনবিভাগের সামনে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক সরকারি প্রকৌশলী ও এক কলেজছাত্র নিহত হন। নিহতরা হলেন মেহেরপুর গাংনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. এ কে এম মাহফুজুর রহমান (৪৭) এবং মেহেরপুর সরকারি কলেজের ছাত্র মো. আকমল হোসেন (২০)।

এছাড়াও চলতি বছরে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু, শিক্ষার্থী ও প্রবাসফেরত যুবকসহ আরও অনেকে নিহত ও আহত হয়েছেন।

এই এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ জন শিশু ও শিক্ষার্থী এবং অন্তত ৪ জন প্রবাসফেরত যুবক রয়েছেন।

গত ১০ জুন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়াদিতে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে সৌরভ নামের এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন সদস্যসহ মোট ৫ জন আহত হন।

৫ জুন গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল কাশেম (৬২) নিহত হন।

৪ জুন মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ছাগল ব্যবসায়ী নজিম উদ্দিন (৬৪) নিহত হন এবং আরও ৪ জন আহত হন।

৩ জুন মুজিবনগরে ট্রলি ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে ৪ শিশু শিক্ষার্থী আহত হয়।

১০ মে গাংনীতে রাস্তা পার হতে গিয়ে আড়াই বছরের শিশু তাছনিয়া খাতুন নিহত হয়।

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের শুকুরকান্দিতে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও ৩ নারী আহত হন।

৯ এপ্রিল গাংনীতে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বৃদ্ধ সামসুল হক (৬৫) নিহত হন।

৩১ মার্চ মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রাইভেটকার, ভ্যান ও মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে এক ব্যাংক কর্মকর্তা, এক শিশু ও আরও একজন নিহত হন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন। নিহতরা হলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের হাসান মোল্লার ছেলে ও এনআরবিসি ব্যাংকের রূপনগর শাখার কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান ওরফে শোভন, সদর উপজেলার বাড়িবাঁকা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে আল ইমরান এবং গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের ভ্যানচালক আলী হাসানের শিশু পুত্র জুবায়ের হাসান।

২৭ মার্চ সদর উপজেলার আশরাফপুরে মোশাররফ হোসেন (৬০) সড়কে প্রাণ হারান।

২২ মার্চ কুঠি ভাটপাড়ায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত আলগামনের সঙ্গে ধাক্কায় প্রবাসফেরত সাগর মিয়া (২৪) নিহত হন।

৪ ফেব্রুয়ারি আমঝুপিতে ট্রাকের ধাক্কায় লাল্টু হোসেন (৩২) নিহত হন এবং মিনারুল ইসলাম গুরুতর আহত হন।

২৭ জানুয়ারি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জামায়াত নেতা শেখ মোমিনুল ইসলাম (৫৫) মারা যান।

৮ জানুয়ারি গাংনীতে পৃথক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র তাইমুজ্জামান (৯), কলেজছাত্র সিয়াম হোসেন (১৮) ও আব্দুল্লাহেল বাকী (১৮) নিহত হন।
এছাড়াও জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসপর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু, শিক্ষার্থী, প্রবাসফেরত যুবকসহ আরও বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন।

এই এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ জন শিশু ও শিক্ষার্থী এবং অন্তত ৪ জন প্রবাসফেরত যুবক রয়েছেন।