শীতের আমেজে জমজমাট মেহেরপুরের ফুটপাতে পিঠার দোকান
শীতের আমেজ অনুভূত হতেই মেহেরপুর শহরজুড়ে পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। শহরের বিভিন্ন মোড়, বাজার ও জনসমাগমস্থলে বসেছে পিঠাপুলির অস্থায়ী দোকান। স্বাদে অনন্য এসব পিঠা খেতে প্রতিদিন ভিড় করছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ঋতুচক্র অনুযায়ী পৌষ-মাঘ শীতকাল হলেও মেহেরপুরে শীতের অনুভূতি চলে আসে কার্তিকের শেষ দিক থেকেই। ঠান্ডা হাওয়া বইতেই শহরের পথে পথে শীতের পিঠার ঘ্রাণ জানান দিচ্ছে মৌসুমের আগমন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেহেরপুর শহরের গড়পুকুর, কলেজ মোড়, পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে, নতুনপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে বসেছে পিঠার দোকান। দুপুর গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিক্রেতারা দোকান সাজিয়ে ফেলেন। সন্ধ্যার পর এসব দোকানে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। ক্ষুধার্তদের পাশাপাশি শখ করেও অনেককে দেখা যায় পিঠার স্বাদ নিতে।
পাটিসাপটা, ধুপি, চিতই সবচেয়ে বেশি চাহিদা এসবের। চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি ধুপি গরম গরম চুলা থেকে নামিয়ে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন দোকানিরা। চিতই পিঠার সঙ্গে পরিবেশন করা হচ্ছে, ঝাল ভর্তা, সরিষা বাটা, শুঁটকি ভর্তা ও বিভিন্ন উপকরণ।
গড়পুকুর এলাকার ধুপি বিক্রেতা সম্রাট ইসলাম বলেন, সারা বছর চপ পেঁয়াজি বিক্রি করি। তবে শীত এলেই পিঠার চাহিদা বেড়ে যায়। চাকরিজীবী, ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী সকলেই পিঠা খেতে আসেন। অনেকে আবার বাসায় নিয়েও যান।
তিনি জানান, বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ধুপি বিক্রি করে দিনে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা লাভ থাকে, যা দিয়ে এখন তার সংসার চলে।
পিঠা বিক্রেতা জামাল উদ্দিন বাবু বলেন, আগেরবার বাইরে আয়োজন করে দারুণ ব্যবসা হয়েছিল। এবার গড়ে আয়োজন করছি বলে তুলনামূলক কম হচ্ছে, তবে পায়েশ, সুজি ডিমের পিঠা, সরু পিঠা আর পাটিসাপটার স্বাদ ও মান আগের মতোই চমৎকার। ধীরে ধীরে মানুষ জানলে এবং স্বাদ পেলে আবার আগের মতোই ভালো ব্যবসা হবে।
ক্রেতা শাহাদাত হোসেন বলেন, একসময় শীতে বাড়ি বাড়ি পিঠা তৈরির ধুম ছিল। ভাপা, চিতই, রসের পিঠা নানা রকম পিঠা বানানো হতো। সময়ের সাথে সেই প্রচলন অনেকটাই কমে গেলেও এখন ফুটপাথের পিঠা আবার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই সন্ধ্যা নামলেই পিঠার দোকানে ভিড় লেগে থাকে।
ক্রেতা মিলন হোসেন বলেন, ছেলে-মেয়েদের জন্য পিঠা নিয়ে যাচ্ছি। শীতের এসব পিঠা তারা খুব পছন্দ করে। তাই পিঠা নিয়ে যাচ্ছি ওরাও খাবে, আমরাও খাবো।
শীতের আগমনে মেহেরপুরের পথঘাটে পিঠার ঘ্রাণ ও ভিড় যেন শহরবাসীর মৌসুমী আনন্দকে আরও রঙিন করে তুলেছে।