মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলায় গত এক বছরে আধিপত্য বিস্তার, পূর্বশত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ, জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও মাদক সংশ্লিষ্ট বিরোধের জেরে অন্তত ৬ জন খুন হয়েছেন।
একই সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে গাংনী উপজেলায়।
সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে গাংনী উপজেলায় ৪টি এবং মেহেরপুর সদর উপজেলায় ২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গাংনী উপজেলায় ৫টি, সদর উপজেলায় ৪টি এবং মুজিবনগর উপজেলায় ১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা হাজিপাড়া মাঠের একটি পেঁপে বাগান থেকে তপন (২৮) নামের এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়দের ধারণা, মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত তপন এক সন্তানের জনক।
এছাড়া গাংনীর ফতাইপুরে একটি তালাবদ্ধ কারখানার ভেতর থেকে কাঠমিস্ত্রি বিপ্লব হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার সঙ্গে থাকা দুই সহযোগী ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
কাজিপুর গ্রামে দুই সন্তানের জননী টলি খাতুন (৩৭) এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে, যদিও স্বজনদের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার দাবি করা হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এছাড়া বামুন্দি বাগানপাড়া, গোপালনগর মাঠ, ছাতিয়ান-বাদিয়াপাড়া মাঠসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ঝুলন্ত ও অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কালিগাংনী গ্রামে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে মফেজ আলী নামের এক কৃষক নিহত হন। এছাড়া আমঝুপি দক্ষিণপাড়ায় পারিবারিক কলহের জেরে বড় ভাইয়ের আঘাতে ছোট ভাই বাপ্পি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সদর উপজেলার পাটকেলপোতা, শোলমারি সীমান্ত ও বাজিতপুর সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিক ঝুলন্ত ও অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যা ও দুর্ঘটনার আলামত পাওয়া গেছে।
মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এক বছরে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড ও মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।