জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধানের শীষে ভোট দিন

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শালদহ গ্রামে বিএনপি কর্তৃক মহিলাদের নিয়ে এক উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে আয়োজিত এ বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আমজাদ হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান গাড্ডু, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি উপাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন, গাংনী উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান বুলবুল, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আতাউল হক আন্টু, গাংনী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা ও তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, গাংনী পৌর জাসদের সাধারণ সম্পাদক সুলেরী আলভী, রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগীদুল আলম, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুসাইন, যুবদলের সদস্য ফারুক হোসেন, যুবদল নেতা মাহফুজ আলম রহিদুল।

বক্তারা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

উঠান বৈঠক শেষে আমজাদ হোসেন এলাঙ্গী, রায়পুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বিএনপির ঘোষণা করা ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করেন এবং আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে পুরো এলাকায় নির্বাচনী আমেজ আরও জোরদার হয়ে ওঠে।

লিফলেট বিতরণকালে রাস্তার দু’ধারে শতশত নারী ভোটার ধানের শীষের এমপি প্রার্থী আমজাদ হোসেনকে হাত তুলে অভিবাদন জানান।




গাংনীর মফিজ ফল ভাণ্ডার ভাঙচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুরের গাংনী বাজারে ‘মফিজ ফল ভাণ্ডার’ ভাঙচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দোকানটির স্বত্বাধিকারী মফিজুর রহমান।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাই রফিকুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত শনিবার বিকেলে গাংনী বাজারের আমিরুল মার্কেট ও এস এম প্লাজা মার্কেটের একদল লোক দোকানের ভেতরে ঢুকে জোরপূর্বক ভাঙচুর চালায়। প্রায় ৪০ বছর ধরে গাংনী বাজারে ফলের ব্যবসা করে আসছেন মফিজুর রহমান। জেলা পরিষদের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেওয়া দোকানঘরটিতেই তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাজারে চলমান রাস্তা নির্মাণ কাজকে কেন্দ্র করে ‘ম্যাপে না থাকা’ অজুহাতে অভিযুক্তদের একটি চক্র গত ৪-৫ মাস ধরে তাকে দোকান ভাঙার হুমকি দিয়ে আসছিল। এমনকি দোকান অক্ষত রাখতে তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তিনি সেই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ১৫ নভেম্বর দুপুর ২টার দিকে অভিযুক্তরা লোহার রড, লাঠিসহ একটি সংঘবদ্ধ দল নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। তারা দোকানের মালামাল লুটপাটের পাশাপাশি প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

রফিকুল ইসলাম আরও জানান, হামলার সময় আসামি সালাউদ্দিন শাওন দোকানের ক্যাশ ড্রয়ার থেকে মহাজনকে দেওয়ার জন্য রাখা ১৫ লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে মফিজুর রহমানকে মারধর করে দোকান থেকে বের করে দেয় হামলাকারীরা।

এ ঘটনায় মফিজুর রহমান গাংনী সাবেক পৌরমেয়র আমিরুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিন শাওন, কাপড় ব্যবসায়ী রেজাউল হক, মানিক, সৌখিন বস্ত্রালয়ের মালিক রাশেদুল ইসলাম, কাপড় ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবি, ওয়ালটন শোরুমের স্বত্বাধিকারী সাজু এবং ইমন টেইলার্সের মালিক ইমনের নামে অভিযোগ দিতে গাংনী থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।




গাংনীতে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি এবং শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার বিকেলে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে এ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আখেরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা ও সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির নেত্রী ফরিদা পারভীন, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম সোহাগ, মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন এডাম, ইমন হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম বিপ্লব, গাংনী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রিপন হোসেনসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার পর থেকেই দলের একাংশের নেতাকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।




ঝিনাইদহ-২ আসনে নির্বাচন নিয়ে নতুন মেরুকরণ, মাঠে থাকছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী

যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ত্রয়োদশ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মঝে বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ২০২৬ সালেরঝিনাইদহ ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে সম্ভাব্য সময় ঘোষণা দিয়েছেন। এলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তুতি নিতে রাতদিন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে।

গত ৩নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে ২৩৭ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। সেই তালিকায় ঝিনাইদহ জেলার মাত্র ১টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকী ৩টি অসনের প্রার্থীর নাম চুড়ান্ত না করায় বিএনপির মধ্যে বিষন্নতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির মধ্যে এই বিষন্নতা বেশি দানা বেধেছে। অনেকে মনে করছেন হাসিনা সরকারের পতনের সময় যুগপথ আন্দোলনের শরিক বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে এই আসনটি ছেড়ে দিতে পারে। আবার বিএনপি তৃনমূল নেতা কর্মীরা মনে করেণ ঝিনাইদহ-২ আসনটি জেলার রাজনীতিতে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে, ফলে নমিনেশন যদি অন্য দলকে দেয়া হয় তাহলে জেলার রাজনীতিতে বিএনপির উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ঝিনাইদহ সদরের ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা একাধিক থাকলেও কেন্দ্র কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। মনোনয়ন দৌড়ে এ আসন থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ প্রচার প্রচারনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে, তাছাড়া ড্যাব নেতা সাবেক এমপি মসিউর রহমানে ছেলে ডা: মো: ইব্রাহীম রহমান (বাবু)’র প্রচারণাও লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া এই আসনে আরও মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম মশিউর রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর রবিউল ইসলাম লাভলু। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জোটের প্রার্থী হবে বলে জোর আলোচনায় রয়েছে। তাছাড়াও জাতীয় নাগরিক পাটি’র (এনসিপি) তারেক রেজা এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। অন্য দিকে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলটির জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকর নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে দলের নেতা কর্মীরা প্রত্যাশা করে। এদিকে জাতীয় পাটির প্রার্থী হিসেবে জেলা জাতীয় পাটির সভাপতি মেজর (অব:) মাহফুজুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পাটি একটি নির্বাচনমূখী অবাধ গণতাতিন্ত্রক রাজনৈতিক দল। দেশে অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন অনুষ্টিত হলে জাতীয় পাটি অবশ্যই অংশ গ্রহন করবে এবং আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দিলে আমি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে নির্বাচন করবো।

তাছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হচ্ছেন জেলা সভাপতি ডা. মমতাজুল ইসলাম। এছাড়া দ্বাদশ সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি মো: নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বছরাধিকাল ধরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচিত সহসভাপতি হিসেবে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন বলে সমালোচনাও রয়েছে। বর্তমানে তিনি বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকেন।

এ প্রসঙ্গে টেলিফোনে জানতে চাইলে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মূলত মহুল সাহেব নামমাত্র সহসভাপতি থাকলেও দলের কার্যক্রমে তিনি কখনো সক্রিয় ছিলেন না। ওনার সামাজিক কার্যক্রমে সুনাম আছে এ কথা সত্য, একটা ভালো ভাবমর্যাদাও আছে, এসব কারণেই তাকে সহসভাপতি করা হয়েছিল; তবে নামমাত্র সহসভাপতির পদ থাকলেও তিনি সেভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধারণ করেননি এবং সাংগঠনিক কোনো কাজে অংশগ্রহণ করেননি। জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথেও তার ছিল বিরাট দূরত্ব। এসব কারণেই মহুল সাহেবের সাথে আওয়ামী লীগের একটা রাজনৈতিক টানাপড়েন সব সময়ই ছিল।

এছাড়া ২০২২ সালের পৌরসভার নির্বাচনে মহুল সাহেব নৌকার বিপক্ষে মেয়র পদে ওনার ছোট ভাইকে দাঁড় করান, যা দলের কেউই মেনে নিতে পারেনি। ওনার ভাই পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় নির্বাচনের আগে ওনাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়, ওনার যে ভাই প্রার্থী ছিলেন তার প্রচারণা কলে তিনি এবং তার আরেক ভাই আক্রমণের শিকার হয়ে মারাত্মকভাবে জখম হলে মহুল সাহেব ২০২২ সালের জুন মাসে দল থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরে তিনি ২০২৪ সালে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয়লাভ করেণ।

আওয়ামী লীগের নানা সমালোচিত কর্মকান্ডের বিরোধীতার কারণে তাকে সবাই একজন ভালো মানুষ হিসেবে জানে। তাছাড়া তার পরিচালিত জাহেদী ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন দাতব্য কর্মকান্ড পরিচালনা করায় সবাই তাকে দানশীল হিসেবে জানেন, আওয়ামী লীগের একজন হিসেবে তিনি কখনো বিবেচনায় ছিলেন না। তিনি হয়তো ওই বিবেচনায় পরিচিত হতেও চাননি। এসব কারণেই আগামী নির্বাচনে মহুল সাহেব নির্বাচনে আসলে জনগণের সাড়া পাবেন বলে বিশ্বাস করেণ।

এবিষয়ে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেন, ভোট গণতান্ত্রিক অধিকার রাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ছাড়া সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারে, জনগণ যাকে বেছে নিবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন।

তিনি আরও বলেন আমি অনেক আগেই আওয়ামী লীগ ছেড়েছি। ২০২২সালে যখন আমার ভাই স্বতন্ত্র মেয়র নির্বাচন করে তখন আওয়ামী যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করে এবং প্রচার প্রচারণায় বাধা দেয় তাছাড়া প্রচারণার সময় আমার দুই ভাইসহ আমার ভায়ের কর্মী অনুসারীদের উপরে আক্রমন করে মারাত্মক ভাবে জখম করে, তারপর আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে নিজেকে ইস্তফা দিয়। পরে ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বহু হামলা মামলার মধ্যে জনগণের ভালবাসায় ভোটে জয়লাভ করি। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ এই সরকারের কাম্য তাই আশাকরি নির্বাচন অংশগ্রহন মূলক এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে।




নতুন কুঁড়ির দেশসেরা শিশুশিল্পী টাঙ্গাইলের প্রিয়সী চক্রবর্তী

একটি প্রতিভা, একটি কণ্ঠ ও একটি মঞ্চ—এই তিনের অপূর্ব মেলবন্ধনে প্রিয়সী চক্রবর্তী এখন নতুন কুঁড়ির দেশসেরা শিশুশিল্পী। গান যেন তার সঙ্গী, আর মঞ্চ যেন তার নিজের ঘর। সেই আলোকিত ঘরে দাঁড়িয়ে আট বছর বয়সি এই শিশুশিল্পী প্রমাণ করেছে—মন থেকে সংগীতচর্চা করলে বয়স কখনো বাধা হতে পারে না। নতুন কুঁড়ির রঙিন মঞ্চে তার গান লক্ষ শ্রোতার হৃদয় স্পর্শ করেছে।

প্রিয়সী চক্রবর্তী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শাহিন ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রিয়সী ২০২৫ সালের নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ‘ক’ শাখার সেরা পুরস্কার বিজয়ী শিশুশিল্পী। সে আধুনিক গান ও রবীন্দ্রসংগীত— উভয় বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এবারের নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় কোনো প্রতিযোগী দুটি বিভাগে প্রথম হতে পারেনি। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে পরিবারের উৎসাহ ও সহযোগিতা।

একদিন প্রিয়সীর বাবা টাঙ্গাইল শিল্পকলা একাডেমির ওয়ালে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন দেখতে পান। বিজ্ঞাপন দেখে মেয়েকে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর শুরু হয় প্রিয়সীর নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার যাত্রা। আঞ্চলিক বাছাই অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহে। নতুন কুঁড়ির মঞ্চে প্রিয়সীর প্রথম গান ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে চুপি চুপি বলে যায়…’। আঞ্চলিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রিয়সীকে নিয়ে পরিবারের স্বপ্ন বড় হতে থাকে।

প্রিয়সীর জন্ম ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল সদর উপজেলার আকুর টাকুর পাড়ায়। তার পিতা সঞ্জয় চক্রবর্তী সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা। আর মা রাখী চক্রবর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। দুই বোনের মধ্যে প্রিয়সী ছোট। বড় বোন শ্রেয়সীর কাছ থেকে সে সংগীতের প্রথম পাঠ গ্রহণ করে। শ্রেয়সী এখন দিল্লীতে সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করছেন। পরিবারের স্বপ্ন শ্রেয়সী ও প্রিয়সী দুজনই একদিন গুণী শিল্পী হবে। পরিবারের এই স্বপ্ন প্রিয়সীর মানসিক দৃঢ়তাকে আরও শক্তিশালী করছে।

দেশসেরা প্রিয়সীকে গানের শিক্ষা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসীত রায়। প্রিয়সীর সফলতার পিছনে গুণী এই শিক্ষকের অনেক অবদান রয়েছে। প্রিয়সী সম্পর্কে ড. অসীত রায় বলেন, ওর সংগীত প্রতিভা অসাধারণ। এই বয়সের কোনো শিশুশিল্পীর মধ্যে সংগীতের যে বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবে থাকা উচিত, ওর মধ্যে তার থেকে একটু বেশিই আছে। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় সে প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। ড. অসীত রায় আশাপ্রকাশ করে বলেন, প্রিয়সী একদিন বাংলাদেশের গর্ব করার মতো একজন গুণী শিল্পী হবে।

নতুন কুঁড়ির প্রতিটি ধাপেই প্রিয়সী তার নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সংগীতের প্রতি গভীর ভালোবাসার পরিচয় দিয়েছে। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় প্রিয়সীর পরিবেশিত গানের মধ্যে রয়েছে—‘ওই ঝিনুক ফোটা সাগর বেলা…’, ‘তুমি মিষ্টি করে দুষ্টু বলো…’, ‘মন তো ছোঁয়া যাবে না…’, ‘আমি কি তোমার মতো এত ভালোবাসতে পারি…’ প্রভৃতি। তার কণ্ঠ, সুর ও গায়কি দর্শক-শ্রোতার মন ছুঁয়েছে। প্রতিযোগিতার বিচারকগণও তার অনবদ্য প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছেন। প্রিয়সীর গান শুনে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্বে থাকা কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা বলেন, ‘‘প্রিয়সীর অনবদ্য একটা কণ্ঠ রয়েছে। ওর গান শুনলে যেন ওর গানের ওপর ঘুমাতে ইচ্ছা করে। ওর গানে কোনো ভুলভাল নেই।’’ প্রিয়সীর গানের প্রশংসা করে প্রতিযোগিতার বিচারক কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম বলেন, ‘‘সে অনেক সুন্দরভাবে সংগীত পরিবেশন করেছে। তার গানের সুর ও উচ্চারণ—দুটিই ভালো।’’ বিচারক ময়নুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘আমি প্রিয়সীর সংগীত পরিবেশনায় অনেক বেশি সন্তুষ্ট হয়েছি। বয়স অনুযায়ী সে যথেষ্ট ভালো করেছে।’’ বিচারক মকসুদ জামিল মিন্টু বলেন, প্রিয়সী প্রতিটি গান সুন্দরভাবে গেয়েছে। ওর সুর ও এক্সপ্রেশন ভালো ছিল। গানের ভুবনে সে একদিন আলো ছড়াবে।’’ প্রিয়সীর গান শুনে বিচারক সাজ্জাদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘‘অসাধারণ, অসাধারণ এবং অসাধারণ। ওর গায়কি, উচ্চারণ—সবকিছু ভালো লেগেছে।’’ নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালনকারী কণ্ঠশিল্পী আগুন ও ন্যান্সিও প্রিয়সীর গানের প্রশংসা করেছেন।

গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকার চেক ও ট্রফি গ্রহণ করেন নতুন কুঁড়ির ‘ক’ শাখার দেশসেরা শিশুশিল্পী প্রিয়সী চক্রবর্তী। পুরস্কার গ্রহণের পর প্রিয়সী বলেন, ‘‘সরকারপ্রধানের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই পুরস্কার আমার সংগীতজীবনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। … আমি বড় হয়ে একজন গুণী শিল্পী হতে চাই।’’

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বিশেষ সংযোজন। নতুন কুঁড়ির মঞ্চ শিশুদের শৈল্পিক বিকাশের পাশাপাশি তাদের দায়িত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলে। ১৯৭৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা উপমহাদেশের বৃহত্তম রিয়েলিটি শো। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২০ বছর পর নতুন উদ্যমে শুরু হয় নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই প্রতিযোগিতা বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এ বছর ‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতায় প্রায় ৩৯ হাজার প্রতিযোগী অংশ নেয়। ৬৪ জেলাকে ১৯টি অঞ্চলে ভাগ করে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক পর্ব থেকে ‘ক’ ও ‘খ’ শাখা মিলিয়ে সকল ক্যাটাগরিতে প্রায় ১৪ হাজার প্রতিযোগী বিভাগীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়। দেশের আট বিভাগে একযোগে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার মোট বিষয় ছিল ১২টি। এগুলো হলো : অভিনয়, আধুনিক গান, আবৃত্তি, উচ্চাঙ্গ নৃত্য, কৌতুক, গল্পবলা, দেশাত্মবোধক গান, নজরুলসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, লোকসংগীত, সাধারণ নৃত্য ও হামদ-নাত। বিভাগীয় পর্যায় শেষে শুরু হয় চূড়ান্ত পর্ব। আট বিভাগ থেকে ১ হাজার ৪০ জন প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ ২৭৯ জন প্রতিযোগী সেরা ১০ পর্বে অংশগ্রহণ করে। এই পর্ব থেকে সেরা ৫ জন বাছাই করা হয়। এরপর ফাইনালে ‘ক’ বিভাগ থেকে ৩৬ জন এবং ‘খ’ বিভাগ থেকে ৩৭ জন প্রতিযোগীকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। দীর্ঘ এই প্রক্রিয়ায় ‘ক’ বিভাগে সেরাদের সেরা অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন হয় প্রিয়সী চক্রবর্তী।

এ বছর স্বচ্ছ ও ন্যায্য প্রক্রিয়ায় সারা দেশ থেকে নতুন কুঁড়িদের বাছাই করা হয়েছে। ২৯৩ জন বিজ্ঞ বিচারক এই বাছাই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত ছিলেন। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এবারে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে সকল শ্রেণির শিশু-কিশোর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। বিটিভিতে প্রচারিত নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার প্রতিটি পর্ব বিটিভির ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলেও প্রচার করা হয়েছে। এর ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই প্রতিযোগিতার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিটি শিশুর কোনো না কোনো বিশেষ প্রতিভা থাকে। শিশুদের বিশেষ প্রতিভা খুঁজে বের করাই নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা প্রিয়সীর মতো অসংখ্য প্রতিভা আবিষ্কার করেছে, যা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। ‘নতুন কুঁড়ি’ শিশু-কিশোরদের কাছে শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং শিল্পজীবনের প্রথম পাঠশালা। অল্প বয়সে মঞ্চে দাঁড়িয়ে গানের সুর তোলা, কবিতার ছন্দে ভেসে যাওয়া কিংবা নাটকের সংলাপ উচ্চারণ করার অভিজ্ঞতা শিশু-কিশোরদের সারাজীবনের আত্মবিশ্বাস গড়ে দেয়।

প্রিয়সীর সেরা হওয়া শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার অর্জন। প্রিয়সীর সাফল্য প্রমাণ করেছে—শিশুপ্রতিভা যথাযথ সুযোগ ও উৎসাহ পেলে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করতে পারে। তার এই সাফল্য অন্য শিশু-কিশোরদেরও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করবে। প্রিয়সীর মতো অসংখ্য প্রতিভাবান শিশু আগামী দিনের নতুন কুঁড়ির মঞ্চে প্রতিভার আলো ছড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা।

লেখক : বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সদস্য এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে কর্মরত




ঝিনাইদহে প্রবাসী মাহাবুব হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার

ঝিনাইদহে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রবাসী মাহাবুব হত্যা মামলার প্রধান আসামী রবিউল ইসলাম ওরফে রবিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

রবিবার রাতে শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রবি সদর উপজেলার কালা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে।

র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, প্রবাসী মাহাবুব হত্যা মামলার প্রধান আসামী শহরের আদর্শপাড়া এলাকায় অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার সকালে সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।

শনিবার সকালে সদর উপজেলার কালা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় কম্বোডিয়া প্রবাসী মাহাবুবকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষরা। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় রোববার রাতে নিহতের ভাই রুবেল হোসেন বাদি হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আগামী করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।




হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডের চাঁদাবাজি মামলায় সকল আসামি খালাস

মেহেরপুরের বহুল আলোচিত হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডের চাঁদাবাজি মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের যুগ্ম জেলা জজ-১ম আদালতের বিচারক মো: ইমদাদুল হক  এ রায় ঘোষণা করেন।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নাজনিন খান প্রিয়া, মতিয়ার রহমান, মামুন শাহজাহান, নেহাল , জয়, ছন্দা খাতুন, আবু আক্তার করণ, তুহিন অরন্য, রেক্সনা খাতুন, নিলুফার ইয়াসমিন রুপা, বর্ষা খাতুন, নুসরাত, সুমন রহমান বিমান ও বিপাশা খাতুন। অপর ২ আসামি মিজানুর রহমান জনি ও আব্দুস সালাম মামলা চলাকালীন মারা গেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর  মোখলেসুর রহমান স্বপন বলেন, মামলার  তদন্তকারী কর্মকর্তাদের  ভুলে  আসামিরা খালাস পেয়েছেন। রায়ের কপি হাতে পেলে বোঝা যাবে তদন্তে গাফিলতি আছে কি না।

মামলার পটভূমি গত বছরের ২২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের এনজিও কর্মী মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৩২)। মামলায় মূল আসামি ছিলেন নাজনীন খান ওরফে প্রিয়া খান।

তদন্তে বেরিয়ে আসে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইল চক্রের তথ্য। প্রিয়া খান ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে হোটেল আটলান্টিকায় নিয়ে যেতেন। সেখানে গোপনে অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে পরে তা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করা হতো।

পুলিশি অভিযানে হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুনসহ একাধিকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত শেষে মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর মধ্যে আসামি মিজানুর রহমান জনি ও আব্দুস সালাম মামলা চলাকালীন সময়ে মারা যান।

উল্লেখ্য, এর আগে একই কাল্ডের পর্ণগ্রাফি মামলায়  নাজনিন খান প্রিয়া, হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন ও সহযোগী শাহজাহানকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। অপর আসামি নেহাল ও জয়কে ৬ বছরের কারাদণ্ড ও সমপরিমাণ জরিমানা করা হয়। তবে জয় এখনো পলাতক রয়েছে , বাকিরা উচ্চ আদালত আপিল করে জামিনে রয়েছেন।




শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। একই অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। অপর আসামী ও পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা শুরু করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন— বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বেলা সোয়া একটার দিকে গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন জনের সঙ্গে শেখ হাসিনার টেলিফোনে কথোপকথনগুলো পড়ে শোনানো হয়। এছাড়া গণহত্যার সংজ্ঞা এবং এই মামলায় বিভিন্ন সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়ে শোনানো হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা প্রথম অভিযোগে তার মৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে আনা দ্বিতীয় অভিযোগে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, অভিযুক্ত শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলার রায়। গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। দুজনই এখন ভারতে অবস্থান করছেন।এই মামলায় একমাত্র আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষে তাকে বিমর্ষ মুখে চুপচাপ রায় শুনতে দেখা গেছে। এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তায় সকালে কারাগার থেকে তাকে আদালতে আনা হয়। মাথা নিচু করে তিনি প্রিজন ভ্যান থেকে আদালতে প্রবেশ করেন।

সূত্র: কালের কন্ঠ




মেহেরপুরে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় বিষয়ক সমন্বয় সভা

মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং করণীয় বিষয়ক অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সমন্বয় সভা আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ তরিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খায়রুল ইসলাম। সভার সভাপতিত্ব করেন পার্থ প্রতিম শীল। এতে মেহেরপুর জেলার সকল ইউনিয়নের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরগণ অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজন করে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন এবং বাস্তবায়নে ছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গ্রাম আদালতের জেলা ম্যানেজার জনাব মোঃ আসাদুজ্জামান। সহযোগিতায় ছিলেন উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ আলমগীর কবির, বাবুল আক্তার, মোঃ শাকিলুজ্জামান এবং পিএফএ মোঃ শাহাজুল।
সভায় বক্তারা গ্রাম আদালতের কার্যক্রম, পরিচালনা পদ্ধতি এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

প্রধান অতিথি বলেন, আপনারা ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজের পাশাপাশি গ্রাম আদালতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। গ্রামের ছোটখাটো ফৌজদারি ও দেওয়ানি বিরোধ যাতে উচ্চ আদালতে না যায় সেজন্যই ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত গঠন করা হয়েছে। আপনারা পেশকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলেও আপনাদেরই তাঁদের প্রশিক্ষিত করে কাজ এগিয়ে নিতে হবে। যে মামলাগুলো গ্রাম আদালতের এখতিয়ারভুক্ত সেগুলো এখানে নিষ্পত্তি হবে, আর এখতিয়ারবহির্ভূত মামলা উচ্চ আদালতে প্রেরণ করতে হবে। যে ইউনিয়নগুলো মামলা গ্রহণে পিছিয়ে আছে তারা প্রচারণা বাড়িয়ে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, এই সমন্বয় সভার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং সাধারণ মানুষকে আরও সহজে গ্রাম আদালতের সেবা প্রদান করতে পারবে। প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম দৃশ্যমান করতে হবে, ব্যানার ও সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে এবং মাসিক ভিত্তিতে মামলার তথ্য হালনাগাদ রাখতে হবে।

সভাপতি বলেন, সরকার গ্রাম আদালতকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করেছে। এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে গ্রামীণ বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব। গ্রাম আদালতে মানুষ হয়রানির শিকার হয় না, বরং এখান থেকে সুসম্পর্ক ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান গড়ে ওঠে।

সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা গ্রাম আদালতের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।




মেহেরপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন আজ

মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ব্যাপক প্রস্তুতির পর চরম উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যেই চলছে ভোটগ্রহণ।

ত্রিবার্ষিক নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভোটারদের মধ্যেও দেখা গেছে সরগরম পরিবেশ।

গত বছরের তুলনায় এবার নির্বাচন আরও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ ভোটাররা। তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। যারা আগামীতে শ্রমিকের ভোটে নির্বাচিত হবেন, তারা নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করবেন।

মনোনয়নপত্র ক্রয় করা প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আহসান হাবীব সোনা, শাহিন আলম ও বকুল হোসেন। কার্যকরী সভাপতি পদে মনোনয়ন নিয়েছেন সাজেদুর রহমান, সৈয়দ রাকেশ হাসান ও উজ্জল হোসেন।

সহ-সভাপতি পদে আলমগীর হোসেন ও শাহিন আলম টুটুল, সাধারণ সম্পাদক পদে মতিয়ার রহমান ও শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, যুগ্ম সম্পাদক পদে নাসিম ইসলাম, এরশাদ আলী ও রেজাউল হক মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সেন্টু শেখ ও ফরহাদ হাসান তুষার, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রমেজ উদ্দিন ও আফজারুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চঞ্চল শেখ ও চাঁদ আলী।

কোষাধ্যক্ষ পদে আজিজুল হক, মাহবুব, মোফাজ্জেল ও সোহেল; সড়ক সম্পাদক পদে সোহেল রানা সজীব, মুরসালিন ও আনারুল ইসলাম, শ্রমিক কল্যাণ সম্পাদক পদে মাহবুব রিপন ও খাইরুল ইসলাম; প্রচার সম্পাদক পদে সুমন ও ইয়ারুল ইসলাম মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন।

এছাড়া সদস্য পদে শরিফুল ইসলাম, আন্নাচ আলী, লাল মিয়া, জিয়ারুল, শাহিন শেখ, আব্দুল জব্বার, খবিরুল, রশিদুল ইসলাম ও বাচ্চু মনোনয়নপত্র তুলেছেন।