মেহেরপুরে বিএনপির ৩ বিদ্রোহীসহ ১২ জনের মনোনয়ন জমা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে মেহেরপুরের দুটি আসনে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে মোট ১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ সোমবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে মেহেরপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবীরের কাছে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় স্ব স্ব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদের মধ্যে বিএনপির ৩ বিদ্রোহীসহ মোট ৫ জন, জাতীয় পার্টির ২ জন, জামায়াতের ২ জন, এনসিপির ১ জন, সিপিবির ১ জন এবং ১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।

মেহেরপুর-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুণ, বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রোমানা আহমেদ, জামায়াত মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির তাজ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আব্দুল হামিদ, এনসিপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা, সিপিবি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান।

মেহেরপুর-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী মো. আমজাদ হোসেন, জামায়াত প্রার্থী নাজমুল হুদা এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল বাকি।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, আমরা এখনো আশা করছি মনোনয়ন পরিবর্তনের সুযোগ আছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়েছে। সে হিসেবে আমরা আশাবাদী। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত।

প্রসঙ্গত, মেহেরপুর-১ আসনে ১৪ জন এবং মেহেরপুর-২ আসনে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।




গাংনীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের বার্ষিক মতবিনিময় ও আলোচনা সভা

বসুন্ধরা শুভসংঘ গাংনী উপজেলা শাখার আয়োজনে “কেমন চাই আগামীর বাংলাদেশ?” শীর্ষক আলোচনা ও বার্ষিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

একাত্তরের চেতনা ও চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশকে একটি উন্নত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় সভায়।

অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা শুভসংঘ গাংনী উপজেলা শাখার উপদেষ্টা সৈয়দ জাকির হোসেন মাস্টার বলেন, একাত্তরের চেতনা ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশকে একটি উন্নত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা মেহেরপুর জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বকুল বলেন, ডান-বাম কিংবা বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে নয়, বাংলাদেশকে এখন হাঁটতে হবে নিজের নাক বরাবর বাংলাদেশপন্থী হয়ে।

ইঞ্জিনিয়ার ও বসুন্ধরা শুভসংঘের উপদেষ্টা রাশেদ বোরহান বলেন, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে তরুণদের সঙ্গে নিয়ে ইসলামের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।

মেহেরপুর জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল ইসলাম তরুণ সমাজ ও রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তরুণদের এই বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ। সমাজের সব শুভ কাজে তরুণদের একটি প্ল্যাটফর্মে এসে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে কাজ করতে হবে। সেই কাজই করে যাচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।

শীতের বিকেলে গাংনী উপজেলার আব্দুল মজিদ মাস্টার স্টাডি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা ও বার্ষিক সভায় প্রাণবন্ত আলোচনা হয়।

একঝাঁক তরুণদের অংশগ্রহণে আয়োজিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ গাংনী উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মাহফুজ রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক এস. এম. তারেক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সাংবাদিক জুলফিকার আবির, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক ফাহাদ হোসেন শিহাব, কার্যকরী সদস্য ইয়াছিন হাবিব, জায়েদ কবির এবং ওয়াহিদুজ্জামান স্বপ্নীল।

নতুন বছরে বসুন্ধরা শুভসংঘ গাংনী উপজেলা শাখা কীভাবে ভিন্নধর্মী সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে এবং বসুন্ধরা শুভসংঘ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন রাজু আহমেদ বনি।




দর্শনায় একের পর এক চুরি, এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আবারো চুরির ঘটনা ঘটেছে। কোনভাবেই যেন থামছে না এই চুরি। চুরি ঠেকাতে বাড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন কিন্তু অবশেষে সিসি ক্যামেরায় চুরি হয়ে গেছে।

এ ঘটনায় জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত শুক্রবার রাতে দর্শনা পৌর এলাকার ঈশ্বরচন্দ্রপুর ঈদগা পাড়ায় এই দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দর্শনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

পৌর এলাকার ঈশ্বরচন্দ্রপুর ঈদগা পাড়ার মৃত মহি উদ্দীনের ছেলে পল্লী চিকিৎসক শাহিন হোসেনের বাড়িতে এই চুরি সংঘটিত হয়।

বাড়ির মালিক শাহিন হোসেন জানান, গত ২৬/১২/২০২৫ তারিখ শুক্রবার রাত ১১:৪৫ ঘটিকার সময় অজ্ঞাত চোর আমার নিজ বসত ঘরের দেওয়ালে থাকা আমাদের নিজস্ব ইলেকট্রিকস সিসি টিভি ক্যামেরা ভেঙ্গে নিয়ে চলে যায়। পরে সকালে দেখতে পেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের খবর দেন তিনি। এরপর দর্শনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমার পাশের বাড়ির ইদ্রিসের সাথে ১ সপ্তাহ আগে বাকবিতন্ডা হয়। আমার ধারনা সে আমার উপরে রাগের বশবর্তী হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

অন্যদিকে, গত ১৯/১২/২০২৫ইং তারিখে শুক্রবার দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটের দিকে দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে বিসমিল্লাহ ইলেকট্রিক দোকানে নামাজের সময় চুরির ঘটনা ঘটেছে এবং তার প্রায় ১০-১৫ দিন আগে কেরুজ মিল গেটের সামনে হাজী আব্দুল কাদের এর দোকানেও ঠিক দুপুরে নামাজের সময় এরকম চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও দর্শনা থানা এলাকায় রেলবাজারের বিভিন্ন দোকানে ও বিভিন্ন গ্রামে দিনে-রাতে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে।

এ নিয়ে জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। আবার এদিকে চুরি ঠেকাতে বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনেকেই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। কিন্তু এবার সিসি ক্যামেরা চুরির ঘটনা ঘটায় সচেতন মহলেও চরম সমালোচনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, এই চুরির ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্য করেও তিনি বলেন, সকলকে একটু সজাগ থেকে পুলিশকে সহায়তা করবেন আর বিশেষ করে দিনের বেলায় চুরির ঘটনায় নিজেদের আরও সজাগ হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও অন্যান্য চুরির ঘটনায় চোর সনাক্ত করে চুরিকৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। আর এই চুরি সহ পূর্বের চুরির ঘটনার বিষয়ে চোর সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।




মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম

মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়।

কার্যক্রমে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম। যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের শারীরিক অবস্থা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করেন। প্রকৃত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঠিকভাবে শনাক্ত করে সরকারি ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাই এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য বলে জানান উপজেলা প্রশাসন।




দামুড়হুদায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা–২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান খাঁন বাবু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ সোমবার দুপুর ১ টাই দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উবাইদুর রহমান সাহেল-এর নিকট তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এসময় বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত থেকে প্রার্থীকে শুভেচ্ছা ও সমর্থন জানান। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কার্যালয় এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।মনোনয়নপত্র জমা শেষে বিএনপির প্রার্থী মাহমুদ হাসান খাঁন বাবু সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন এবং ভোটারদের ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়ে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা–২ আসনকে ঘিরে এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আগ্রহ ও আলোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।




মেহেরপুরে এনজিও বিষয়ক মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর সদর উপজেলায় এনজিও বিষয়ক মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টায় উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খায়রুল ইসলাম। সভায় শহরের বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম, সমন্বয় জোরদারকরণ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এনজিওগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।




এক বছরে দেশে ঠেলে দেওয়া হলো ৩৭২ বাংলাদেশিকে

এক বছরে মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে ৩৭২ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর ও পুশ ইন করেছে বিএসএফ। এক বছরে মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ৩৭২ জন বাংলাদেশিকে হস্তান্তর ও পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

কাজের সন্ধানে এসব বাংলাদেশি অবৈধভাবে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তাদের মধ্যে কেউ ১৫ বছর আগে, কেউ ১০ বছর আগে, আবার কেউ চার-পাঁচ বছর আগে ভারতে যান। সেখানে তারা বিভিন্ন ইটভাটা ও কলকারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের আটক করে হাজতে পাঠায়। হাজত থেকে মুক্তির পর রাতের আঁধারে অবৈধ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যা পুশ ইন নামে পরিচিত।

সূত্র জানায়, এর মধ্যে ২০৫ জন বাংলাদেশিকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে বিএসএফ হস্তান্তর করে। অপরদিকে, ১৬৭ জনকে মেহেরপুরের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ অবৈধভাবে পুশ ইন করেছে।

মেহেরপুরের গাংনী সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে নারী, শিশু ও পুরুষসহ ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

৩ ডিসেম্বর, মেহেরপুরের গাংনী সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে আটক হওয়া নারী, শিশু ও পুরুষসহ ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

পুশ ইন হওয়া সবাই ভারতের কলকাতাসহ বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়ে এবং বিভিন্ন মেয়াদে ভারতে কারাভোগ করেন। আটকদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ, ২ জন শিশু ও ১২ জন নারী রয়েছেন। তারা সবাই খুলনা, লালমনিরহাট ও আশপাশের জেলার বাসিন্দা।
আটকদের একজন জানান, কাজের সন্ধানে তারা অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন এবং কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছিলেন।

নভেম্বর ১৯, গাংনী উপজেলার কাথুলী সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ২৪ জন বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর কাছে হস্তান্তর করেছে।

পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে কাথুলী কোম্পানির দপ্তর কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. কামরুজ্জামান এবং বিএসএফের পক্ষ থেকে ভারতের নদীয়া জেলার তেহট্টার ৫৬ ব্যাটালিয়নের তেইরপুর কোম্পানি কমান্ডার এসি আনচ কুমার উপস্থিত ছিলেন।

অক্টোবর ২৬, মুজিবনগর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠকের পর ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ২৯ জন বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। হস্তান্তরিতদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ, ১৭ জন নারী ও ১ জন শিশু রয়েছেন।

অক্টোবর ২৫, মেহেরপুরের গাংনীর দুই সীমান্ত দিয়ে ভারতে আটক ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যসহ ৬০ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার সকালে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ও কাথুলী সীমান্ত দিয়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করা হয়। সকাল ১০টার দিকে কাজিপুর সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১৪৭ মেইন পিলারের নিকট শহীদ স্মরণী অংশে প্রথম দফায় ৩০ জনকে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। এরপর বেলা ১২টার দিকে একই উপজেলার কাথুলী সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৩৩/৩ এসের নিকটে দ্বিতীয় দফায় আরও ৩০ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করা হয়।

ভারতের তেইমপুর বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অনোজ কুমার পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের কাথুলী কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।

১৮ অক্টোবর, গাংনী উপজেলার কাথুলী সীমান্ত দিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৪ জনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে।

সেপ্টেম্বর ২০, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দিনে দুই দফায় মোট ২২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

সেপ্টেম্বর ১৯, মুজিবনগর সীমান্তের স্বাধীনতা সড়কে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১০৫ নম্বর পিলারের কাছে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতে অনুপ্রবেশকারী এক শিশুসহ চার বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

সেপ্টেম্বর ৬, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর সীমান্ত দিয়ে মা ও দুই মেয়েকে পুশ ইন করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার সকালে বিজিবির সদস্যরা ওই তিনজনকে আটক করে মুজিবনগর থানায় সোপর্দ করেছেন।

আগস্ট ১৯, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নারী ও শিশুসহ ৩৯ জনকে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় কাজিপুর সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৪৭ এর নিকট বিজিবির কাছে তাদের হস্তান্তর করে বিএসএফ।

১৪ আগস্ট, মুজিবনগর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ৯ বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মধ্যে মেইন পিলার ১০৫-এর নিকটে শূন্য লাইনে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

হস্তান্তর হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ফরিদপুর ভাঙ্গা থানার ওদুদ শেখের ছেলে আবু সাইদ (৪৫), তার স্ত্রী বিউটি বেগম (৪০), ছেলে সম্রাট (৭) ও মেয়ে শিমলা আক্তার (১১), ফরিদপুর নগরকান্দা থানার বদিরুজ্জামান (৩৯), তার স্ত্রী ডলি (৩৫), মেয়ে লামিয়া আক্তার (৬), ছেলে আলী আকবার (৪) ও মেয়ে ছাদিয়া আক্তার (১.৫)।

আগস্ট ১৩, মেহেরপুরের মুজিবনগরে ১ জন পুরুষ ও ৩ জন মহিলাসহ মোট ৪ জনকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পুশইন করেছে। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাদের আটক করেছে মুজিবনগর থানা পুলিশ।

আগস্ট ১, মুজিবনগর সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্য পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে চার শিশু, পাঁচ নারীসহ ১৭ বাংলাদেশীকে ফেরৎ পাঠিয়েছে বিএসএফ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ৬ বিজিবি এবং ১৬১ বি এস এফ এর কোম্পানি কমান্ডার পর্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এসব বাংলাদেশীকে ফেরৎ দেন তারা।

২৯ জুলাই, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৭ জন নারীসহ ১৮ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

২৬ জুন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রংমহল সীমান্ত দিয়ে ৮ জন বাংলাদেশি নারী, পুরুষ ও শিশুকে পুশ-ইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

২৬ জুন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রংমহল সীমান্ত দিয়ে ৮ জন বাংলাদেশি নারী, পুরুষ ও শিশুকে পুশ-ইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

১০ জুন, ভোরে মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস সীমান্ত দিয়ে ১২ জনকে, ৪ মে ভবেরপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে, ২৫ মে সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে এবং ২৭ মে সোনাপুর সীমান্ত পিলার ১০১ কাগমারী মাঠ দিয়ে আরও ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করা হয়।

২৬ ফেব্রুয়ারি সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।পুশ ইন হওয়া বাংলাদেশিদের অধিকাংশের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। এর পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, লালমনিরহাট, কক্সবাজার, ফরিদপুর, পিরোজপুরের নাগরিক রয়েছেন।

ভারত থেকে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানকার পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের সীমান্তে এনে কাঁটাতারের গেট খুলে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

কক্সবাজারের রিয়াজ আলী বলেন, প্রায় চার বছর হলো জীবিকার আশায় চোরাইপথে ভারতে গিয়েছিলাম। নয়ডা জেলার একটি লোহার কারখানায় চাকরি করতাম। ২ মে পুলিশ এসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা আমাকে নদীয়া জেলার কারাগারে পাঠায়। সেখান থেকে একটি ট্রাকে সীমান্তে এনে ফেলে দেয়।

কুড়িগ্রাম জেলার জাহাঙ্গীর আলম ও বাবুল হোসেন বলেন, তারা দুজনই পরিবার নিয়ে প্রায় এক যুগ আগে ভারতে গিয়েছিলেন। গত বছরের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বহরমপুর বাজারে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। ভারতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি। গত মাসে পরিবার নিয়ে দেশে ফেরত আসার সময় বিএসএফ আটক করে তাদের জেলে পাঠায়।

জেল থেকে হৃদয়পুর সীমান্ত এলাকায় ট্রাকে করে এনে তাঁদের জড়ো করে এবং কাঁটাতারের মাঝখানে যে দরজা আছে, সেটা খুলে আমাদের বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দেয়।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের বিজিবি থানায় হস্তান্তর করলে আমরা আইনানুগভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

কোনো ব্যক্তি যাতে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে দেশে ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। পাশাপাশি, যেসব ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পুশ ইন-এর চেষ্টা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিতভাবে বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন পর‌্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।




আলমডাঙ্গা মাধবপুর মডেল হাইস্কুল পরিদর্শনে রাজবাড়ী জেলা দায়রা জজ 

আলমডাঙ্গা ডাউকি ইউনিয়নের “মাধবপুর মডেল হাই স্কুল” পরিদর্শন করেন লন্ডন প্রবাশী ব্যারিষ্টার জিল্লুর রহমান ও রাজবাড়ী জেলা দায়রা জর্জ মো:তহিদুল  ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সম্মানিত সভাপতি মো: ছরোয়ার হোসেন।

অতিথিদের সামনে প্রধান শিক্ষক আশরাফ জাহান, আবেদ আলী স্কুলের কাগজ পত্র সহ বিভিন্ন সময়ের উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়ে তুলে ধরেন। মাধবপুর গ্রামের কৃতি সন্তান রাজবাড়ী জেলা দায়রা জর্জ তহিদুল ইসলাম বলেন, অত্র বিদ্যালয়ের সাথে আমার পিতামহ জড়িত ছিলেন, তিনি জমি দান করে স্কুল নির্মাণ করেছিলেন, আমরা তার সন্তান হিসেবে তার হাতে গড়া বিদ্যালয়টিকে ডিজিটালাইজ্ড মডেল হাইস্কুলে রুপান্তরিত করার জন্য সর্ব প্রকার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো।

তিনি আরো বলেন, আমার বড় ভাই এখানে শিক্ষকতা করেন, তার কাছ থেকে সব সময় স্কুলের খোজ খবর রাখি। আপনারা সকলে মিলে স্কুলটির উন্নয়ন কল্পে এগিয়ে আসলে আমরা সবাই মিলে গ্রামের স্কুলটির উন্নয়ন করবো ইনশাল্লাহ। এছাড়া তিনি দীর্ঘ  আলোচনা, মূল্যবান দিক নির্দেশনা ও গুরুত্বপূর্ণ  পরামর্শ প্রদান করেন।

ব্যারিষ্টার জিল্লুর রহমান বলেন, আপনারা সকলে মিলে এই স্কুলের জন্যে যেভাবে কাজ করছেন, তাতে আমি আশাবাদি স্কুলটি অত্র এলাকার মধ্যে সেরা স্কুলে রুপান্তরিত হবে। আমি যেখানেই থাকি আপনারা আমাকে স্বরণ করলে আমি সবসময় আপনাদের পাশে থাকবো। এর আগে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ তাদের দুজনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।




গাংনীর ভাটপাড়ায় বিএনপি ও জামায়াত কর্মিদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৬

মেহেরপুরে গাংনীর ভাটপাড়া গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে  জামায়াত ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে  হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় বিএনপি সমর্থক জিয়ারুল চৌধুরী ও জামায়াতের ৪ কর্মি আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহত জামায়াত কর্মীরা হলেন, সোহরাব হোসেন, তার ছেলে শিশির, রবিউল ইসলাম রুবেল, আলাউদ্দিন বাবলু। আহতদের গাংনী উপজেলা  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ৯ টার দিকে ভাটপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে গাংনী উপজেলা জামায়াত। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গাংনী উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জামায়াতের আমীর মো: রবিউল ইসলাম।

এসময় জামায়াত মনোনীত প্রার্থী নাজমুল হুদা, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, পৌর জামায়াতের আমীর আহসানুল হক, পৌর জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি জিল্লুর রহমান, গাংনী উপজেলা জামায়াতের জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সচিব শফিকুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা যুববিভাগের সভাপতি আবু সায়েম ও পৌর জামায়াতের আইন সম্পাদক আলমগীর হোসেন।

উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, রবিবার সকালে বিএনপি কর্মী জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলা চালায়। এতে জামায়াতের চার স্থানীয় কর্মী আহত হন। আহতরা হলেন, সোহরাব হোসেন, তার ছেলে শিশির, রবিউল ইসলাম রুবেল, আলাউদ্দিন বাবলু। আহতদের গাংনী উপজেলা  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের বিচারের দাবী জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, রবিবার সকাল ৯ টার দিকে জামায়াতের ইউনিট বায়তুল মাল বিষয়ক সম্পাদক সোহরাব হোসেনের মুদি দোকানে কয়েকজন মহিলা জামায়াত কর্মী ইয়ানতের টাকা দেয়ার জন্য যায়। এসময় জান্নাত কেনা বেচা নিয়ে কথা হয়। পরে স্থানীয় বিএনপি কর্মি জামাল হোসেনের সাথে সোহরাব হোসেন ও শিশিরের কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি হলে স্থানীয়রা বিষয়টি মিমাংসা করে।

পরে বিষয়টি নিয়ে আবার ভাটপাড়া বাজারে রবিউল ইসলামের ওষুধের দোকানে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।




কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে ১৪ নাগরিককে হস্তান্তর

অবশেষে ভারতের উড়িষ্যার ১৪ নাগরীককে কুষ্টিয়া  সীমান্ত দিয়ে ভারতের বিএসএফের কাছে তুলে দিলেন বিজিবি। গতকাল দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া মিরপুর ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীর মাধ্যমে তাদেরকে ভারতে প্রেরণ করে।

কুষ্টিয়ার মিরপুর ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি জানান, সীমান্ত আইন ও আন্তর্জাতিক রীতি লঙ্ঘন করে বিএসএফ দ্বারা ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে (দর্শনা সীমান্ত দিয়ে) ঠেলে পাঠানোর ঘটনায় বিজিবি কঠোর প্রতিবাদ জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসএফের ১৪৬ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট শ্রী প্রেমপাল সিংয়ের উপস্থিতিতে রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাদের ভারতের অভ্যন্তরে ফেরত পাঠানো হয়। তিনি আরো জানান, বিজিবির মোহাম্মদপুর কোম্পানি কমান্ডার ও বিএসএফের জলংগী কোম্পানি কমান্ডারের মাধ্যমে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট ১৪ জনকে পুশব্যাক করা হয়।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ভারতের নদীয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বিএসএফ দর্শনা সীমান্ত অতিক্রম করে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করে। পুশইন ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, ছয়জন নারী ও দু’জন শিশু ছিল বলে বিজিবি ও পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে।

পুশইনের পর দর্শনা হল্ট স্টেশনের কাছে একটি গাছতলায় তারা প্রচণ্ড শীত ও খাবারের অভাবে অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশ ও দর্শনা বিজিবির একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে এবং পরিচয় ও ঠিকানা সংগ্রহ করে।

পুলিশ ও বিজিবি জানায়, তারা ভারতের ওড়িষ্যা প্রদেশের জগশ্বরপুর জেলার বাসিন্দা। উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন- গুলসান বিবি (৯০), জব্বার আলি (৭০), আলকুম বিবি (৬৫), উকিল শেখ (৪৩), সাবেরা বিবি (৩৪), হাকিম আলি (৪৫), সামসেরা বিবি (৪২), শেখরাজ (৩২), মেহেরুন বিবি (২৫), রহিদ আলি (৩৪), শেখ বান্টি (২৮), শাকিলা খাতুন (১০), নাছরিন নেছা (১২) ও মো: তৌহিদ আলি (১৪)।

উড়িষ্যার বাসিন্দা বৃদ্ধ জব্বার আলি সাংবাদিকদের জানান, আমরা ভারতের নাগরিক। আমাদের কাছে নাগরিক কার্ড ও আধার কার্ড ছিল, সব কেড়ে নেয়া হয়েছে। শুধু মুসলিম পরিচয়ের কারণে আমাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এ দেশে আমাদের কেউ নেই, আমরা কোথায় যাবো?

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি হাসান জানান, রাতেই ১৪ জনের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করা হয় এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা-জীবননগর সার্কেল) মো: আনোয়ারুল কবির রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

দর্শনা বিজিবি সূত্র জানায়, উদ্ধার ১৪ জনকে শনিবার রাতেই কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা সবাই হিন্দি ভাষাভাষী এবং বাংলাদেশে তাদের কোনো আত্মীয়স্বজন বা পরিচিত কেউ নেই বলে জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও পুশইন ইস্যুতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।