শৈলকুপায় বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজার নামাজ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে শৈলকুপা শহরের সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এ গায়েবানা জানাজার আয়োজন করা হয়। জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন কোর্টপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আবু সাঈদ রহমান।

গায়েবানা জানাজার নামাজে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন, সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, পৌর বিএনপির সভাপতি আবু তালেব মিয়া, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা ঠান্ডুসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

জানাজার নামাজ শেষে বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।




কোটচাঁদপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

স্ত্রীর অধিকার চেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী শেফালী খাতুন। বুধবার সকালে কোটচাঁদপুর পৌর পাঠাগারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। শেফালী খাতুন স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডপাড়া এলাকার মতিয়ার রহমানের মেয়ে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি কোটচাঁদপুর মিনার ডেকোরেটরে রান্নার কাজ করি। সেই সুবাদে সাকিলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সে নিয়মিত আমার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমি তখন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সাকিল স্থানীয় একটি মসজিদের হুজুর ডেকে এনে আমাকে বিয়ে করে। এরপর প্রায় ৮-৯ মাস আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে বসবাস করি। এ সময় সে আমার কাছ থেকে নগদ সাড়ে ৪ লাখ টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়। পরে ধীরে ধীরে আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে।

শেফালী খাতুন অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি আমি স্ত্রী পরিচয় নিয়ে তার বাড়িতে গেলে সাকিল ও তার মা আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর কেউ জিজ্ঞেস করলে সে আমাকে তার স্ত্রী বলে অস্বীকার করতে থাকে।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানায় যেতে চাইলে স্থানীয় এক কাউন্সিলর বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু কোনো সমাধান না হওয়ায় আমি আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি। আপনারা ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরুন, যাতে দেশের মানুষ জানতে পারে।

শেফালী খাতুন বলেন, হয় সাকিল আমাকে স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা দিয়ে সঙ্গে রাখবে, নতুবা আমার কাছ থেকে নেওয়া টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ফেরত দেবে। তা না হলে আমি আদালতে মামলা করবো।

তিনি আরও জানান, তার বয়স ৩০ বছর। তিনি পেশায় একজন রান্নার কর্মী এবং এক সন্তানের জননী।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাকিল হোসেন বলেন, শেফালির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। কেউ আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য তাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে। আমি তার কাছ থেকে কোনো টাকা বা মালামাল নিইনি। তার আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

সাকিল আহম্মেদ কোটচাঁদপুর পৌর শহরের পশু হাসপাতালপাড়া এলাকার পিরু আহম্মেদের ছেলে। তিনি কোটচাঁদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।




ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার নবনির্বাচিত বোর্ডের দায়িত্ব গ্রহণ

ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার নবনির্বাচিত বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাহফুজুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ মোহাম্মদ তোয়াশীন।

দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত সভাপতি মাহফুজুর রহমান জেলা বোর্ডের সদস্য, ইউনিট পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই দায়িত্ব কোনো ব্যক্তিগত সাফল্যের প্রতীক নয়; বরং এটি সংগঠনের প্রতি সদস্যদের আস্থা, ত্যাগ ও সম্মিলিত পরিশ্রমের স্বীকৃতি।

নেতৃত্বকে ক্ষমতার নয়, বরং সেবা, দায়বদ্ধতা ও মানবিক দায়িত্বের জায়গা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকলকে সঙ্গে নিয়ে মেহেরপুর জেলাকে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের একটি আদর্শ, কার্যকর ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ তোয়াশীন তাঁর বক্তব্যে বলেন, সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করা তাঁর জন্য একই সঙ্গে সম্মানজনক ও দায়িত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, এই সাফল্য একক কোনো অর্জন নয়; বরং এটি সংগঠনের প্রতিটি সদস্যের বিশ্বাস, সহযোগিতা ও নিরলস পরিশ্রমের ফল। স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলা ও ঐক্যের ভিত্তিতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল, সংগঠিত ও ফলপ্রসূ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। পাশাপাশি ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার নবনির্বাচিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি আনাস আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ রুবাইয়া সুলতানা, প্রজেক্ট অফিসার মোছাঃ টুম্পা, মানব সম্পদ কর্মকর্তা মাসুমা সুলতানা রানী এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা নাফিস সাদিক।

এদিকে সংগঠনের মেহেরপুর জেলা শাখার সাবেক নেতৃবৃন্দ নবনির্বাচিত কমিটিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখা আরও শক্তিশালী হবে এবং মানবিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে জেলায় একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

সংশ্লিষ্ট মহলের প্রত্যাশা, নবনির্বাচিত কমিটির ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার কার্যক্রম নতুন গতি পাবে এবং মানবতার সেবায় সংগঠনটি আরও বিস্তৃত ভূমিকা রাখবে।




লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ চুয়াডাঙ্গার দুই তরুণ

চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গার দুই তরুণ লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ রয়েছেন। দুই পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কালুপোল গ্রামের ইসাহক আলীর ছেলে মিঠুন হোসেন (২৯) এবং আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের খাসবাগুন্দা গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে সাঈদ মিয়া (২২) প্রায় ১৫ দিন আগে লিবিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগ্নে।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক তাদেরকে লিবিয়া নিয়ে যান এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সাগরপথের যাত্রায় সামিল করেন। পরিবারের ভাষ্যমতে, সাগরে নেমে নৌকা থেকে সর্বশেষ ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছিলেন মিঠুন ও সাঈদ আজ থেকে প্রায় ১৩ দিন আগে। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

লিবিয়া হয়ে সাগরপথে ইতালি যাওয়ার সময় প্রায় প্রতিদিনই ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে যাওয়া বা নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। সেই ভয়াবহ বাস্তবতা মনে করে দিন দিন মা-বাবার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। কোনো খোঁজখবর না পেয়ে পরিবারজুড়ে নেমে এসেছে চরম উৎকণ্ঠা, স্বজনেরা প্রায় পাগলপ্রায় অবস্থায় রয়েছেন।

নিখোঁজ দুই তরুণের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে যদি কোনোভাবে তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়।




এক টুকরো কম্বলের অপেক্ষায় আলমডাঙ্গার অসহায় পরিবার গুলো

হিমেল হাওয়ায় নীরব কান্না, একটু সহানুভূতির চোখে একটুকরো শীতবস্ত্র নামক কম্বলের আকুল আবেদন। ধনবান ও সম্পদশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান। ঠান্ডা হিমেল বাতাসে শীতের তীব্র আক্রমণে সাধারণ মানুষের জীবন থমকে গেছে।

আলমডাঙ্গায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে প্রায় ৯ ডিগ্রিতে। কনকনে শীতে কাঁপছে উপজেলাবাসী, কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরভাবে কম্বল বিতরণের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। নামমাত্র স্টেশনে দু’দিন বিতরণের কথা শোনা গেলেও সেই কম্বল ছিন্নমূল মানুষের হাতে পৌঁছায়নি।

উপজেলাজুড়ে ঘুরে দেখা গেছে, ঠান্ডার রাতে কারও কপালে জোটেনি একটুকরো উষ্ণতা। কনকনে শীতে প্রাণ কাঁপে, অথচ প্রশাসনের কম্বল এখনো পৌঁছায়নি অসহায় মানুষের হাতে। রাস্তায় এবং যারা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটায়, তাদের জন্য প্রশাসনের এই উদাসীনতা সরাসরি অমানবিকতার শামিল।

২০২২ সালের আদমশুমারি রিপোর্ট অনুযায়ী, আলমডাঙ্গায় ১৫টি ইউনিয়নের ২১১টি গ্রাম ও ১টি পৌরসভা নিয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বসবাস করে। এছাড়াও উপজেলায় রয়েছে ৬টি আবাসন, ১৩টি এতিমখানা ও ১টি বৃদ্ধাশ্রম যার কোনোটিতেই এবার দৃশ্যমানভাবে কম্বল দেওয়া হয়নি।

অথচ এই শীতে বৃদ্ধদের শরীর নিথর হয়ে আসছে, আর প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। প্রশ্ন জাগে এই শীতেও যদি প্রশাসন দায়িত্ব না নেয়, তাহলে কবে নেবে দায়িত্ব?

এটি শুধু অবহেলা নয়, এটি দায়িত্বহীনতার নির্মম উদাহরণ। দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে কম্বল বিতরণে ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণভাবে উপজেলা প্রশাসনের।

জামজামি ইউনিয়নের নারায়ণপুর আবাসনের এক বৃদ্ধা বলেন, এই শীতেও একটা কম্বল পেলাম না। যে শীত পড়ছে, মনে হচ্ছে এবারই সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে। আমরা গরিব মানুষ অন্যের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি কখন একটু গরম কাপড় পাব এই আশায়। গতবার উপজেলা থেকে আগে কম্বল দিয়েছিল, কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত পাইনি।

কম্বল বিতরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মানবাধিকার কমিশন আলমডাঙ্গা শাখার সভাপতি আল-আমিন হোসেন পরশ বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে যে কনকনে শীত পড়ছে, তাতে মানুষের হাড় কাঁপছে, অথচ উপজেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত কম্বল বিতরণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

সিনিয়র সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম আজম বলেন, শীত কারও জন্য অপেক্ষা করে না, কিন্তু সহায়তা কেন এত দেরি করে? একটি কম্বল কারও কাছে শুধু কাপড় নয় এটাই তার জীবন বাঁচানোর শেষ আশ্রয়।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পান্না আক্তার বলেন, নির্বাচনের ব্যস্ততার কারণে এবার একটু দেরি হচ্ছে। প্রতিদিনই মিটিং অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে দুই-তিন কার্যদিবসের মধ্যে কম্বল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।




মেহেরপুরের অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্ট প্রসেনজিৎ হালদার গ্রেপ্তার

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের ক্যাসিনো এজেন্ট প্রসেনজিৎ হালদারকে গ্রেপ্তার করেছে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কোমরপুর বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

গ্রেপ্তার প্রসেনজিৎ হালদার কোমরপুর গ্রামের মধু হালদারের ছেলে।

ডিবি সূত্র জানায়, প্রসেনজিৎ হালদার সম্প্রতি মেহেরপুরে দায়ের হওয়া সাইবার সুরক্ষা আইনের একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

পাশাপাশি ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতা ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকা সিআইডি মানি লন্ডারিং ইউনিট অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এছাড়া ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক মামলাও রয়েছে।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাদ্দিদ মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘নতুন সাইবার সুরক্ষা আইনে মেহেরপুর জেলায় দায়ের হওয়া প্রথম মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে প্রসেনজিৎ হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চলমান অন্যান্য মামলাগুলোতেও গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।

গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত আলামত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো যাচাই-বাছাই একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। যাচাই সম্পন্ন হলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও অনলাইন জুয়া সাইট ও ক্যাসিনো এজেন্ট পরিচালনার অভিযোগে প্রসেনজিৎ হালদার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।




মেহেরপুরের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম তুহিন আর নেই

মেহেরপুর শহরের মল্লিকপাড়া মোড়ের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম তুহিন গতরাত সোয়া ১১টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।

তিনি একমাত্র ছেলে, স্ত্রী, ভাইবোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তার মৃত্যুতে ‘আমরা ৮৫’ সামাজিক সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে। শোকবার্তায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।




শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের পাশে সিগারেট বিক্রি করলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধুলার স্থান ও শিশুপার্কের আশপাশে সিগারেট বা তামাক বিক্রির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধুলার স্থান ও শিশু পার্কের সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করবেন না বা করাবেন না।

সরকার বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সময় সময় সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দিয়ে এ সীমানার পরিধি বাড়াতে পারবে বলে আর অধ্যাদেশে জানানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে তিনি সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার মুখে পড়বেন। দ্বিতীয়বার বা বারবার-এ অপরাধ করলে দ্বিগুণ হারে শাস্তি পেতে হবে।




মেহেরপুরে এক বছরে ৬ খুন, উদ্ধার ১০ মরদেহ

মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলায় গত এক বছরে আধিপত্য বিস্তার, পূর্বশত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ, জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও মাদক সংশ্লিষ্ট বিরোধের জেরে অন্তত ৬ জন খুন হয়েছেন।

একই সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে গাংনী উপজেলায়।

সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে গাংনী উপজেলায় ৪টি এবং মেহেরপুর সদর উপজেলায় ২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গাংনী উপজেলায় ৫টি, সদর উপজেলায় ৪টি এবং মুজিবনগর উপজেলায় ১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা হাজিপাড়া মাঠের একটি পেঁপে বাগান থেকে তপন (২৮) নামের এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়দের ধারণা, মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত তপন এক সন্তানের জনক।

এছাড়া গাংনীর ফতাইপুরে একটি তালাবদ্ধ কারখানার ভেতর থেকে কাঠমিস্ত্রি বিপ্লব হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার সঙ্গে থাকা দুই সহযোগী ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।

কাজিপুর গ্রামে দুই সন্তানের জননী টলি খাতুন (৩৭) এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে, যদিও স্বজনদের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার দাবি করা হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

এছাড়া বামুন্দি বাগানপাড়া, গোপালনগর মাঠ, ছাতিয়ান-বাদিয়াপাড়া মাঠসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ঝুলন্ত ও অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মেহেরপুর সদর উপজেলার কালিগাংনী গ্রামে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে মফেজ আলী নামের এক কৃষক নিহত হন। এছাড়া আমঝুপি দক্ষিণপাড়ায় পারিবারিক কলহের জেরে বড় ভাইয়ের আঘাতে ছোট ভাই বাপ্পি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সদর উপজেলার পাটকেলপোতা, শোলমারি সীমান্ত ও বাজিতপুর সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিক ঝুলন্ত ও অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যা ও দুর্ঘটনার আলামত পাওয়া গেছে।

মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এক বছরে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড ও মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।




দর্শনা আকন্দবাড়িয়ার জামাত আলি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে

চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনার আকন্দবাড়িয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পুত্র জামাত আলিকে হত্যা প্রচেষ্টা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালোও গত প্রায় এক মাসেও তাদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে বাদি পক্ষ অভিযোগ করেছে। মারাত্বক যন্ত্রনায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ছটফট করছে বলে জানান।

পুলিশ ও এলাকাবাসিরা জানায়, দর্শনা আকন্দবাড়িয়া গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ জামাত আলি পাশের উথলি গ্রামের খোকন বিশ্বাসের কয়েক বিঘা জমি দীর্ঘদিন লিজ নিয়ে চাষ করে আসছে।

এসব বিষয় নিয়ে উথলি আমতলা পাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলেদের সাথে জামাত আলির প্রায় সময় কথা কাটাকাটি হয় এবং জামাত আলিকে জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিল। কোনো কথায় যখন কাজ না হয় তখন চলতি মাসের ৬ ডিসেম্বর বিকালে উথলি গ্রামের ফজলুর রহমানের লোকজন জামাত আলিকে উথলি বাসস্ট্যান্ড কৃষি ব্যাংকের কাছে আসতে বল্লে সে চলে আসে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জামাত আলিকে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মৃত ভেবে তারা চলে যায়।

স্হানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা পরে অবস্হার অবনতি হলে পরদিন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে তাকে রেফার্ড করা হয়। অসংখ্য কোপের যন্ত্রনা ও ক্ষত নিয়ে জামাত আলি এখন মারাত্বক যন্ত্রনায় হাসপাতালের বেডে ছটফট করছে।

গত ১১ ডিসেম্বর আহত জামাত আলির ছোট ভাই ফয়সাল হোসেন বাদি হয়ে জীবননগর থানায় ১৪৩/৩২৩/৩২৬/৩০৭ ধারায় (হত্যা প্রচেস্টা) একটি মামলা দায়ের করে(মামলা নং ৯)। জীবননগর থানার ওসি মোঃ সোলায়মান শেখ মামলাটি আমলে নিয়ে রেকর্ড করেন এবং মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে থানার সাব ইন্সপেক্টর  রকি মন্ডলকে দায়িত্ব প্রদান করেন।

মামলার ভিকটিম জামাত আলির স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, হত্যা চেষ্টা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। বিষয়টি পুলিশ সুপার মহদ্বয় দেখবেন বলে নিরীহ পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসিরা মনে করেন।