গাংনীতে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নিলেন ছেলে

মাত্র তিন ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছেন আপন চাচাকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মশিউর রহমান ওরফে মশা।

গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামে নিয়ে আসা হয়। এ সময় গ্রামবাসীর কৌতূহল ও উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। শত-শত নারী-পুরুষ রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে এই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে এক নজর দেখার চেষ্টা করেন।

জানাজা ও দাফন কার্যক্রম শেষে বিকাল ৫টার দিকে আবারও তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মেহেরপুর জেলা কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। পুরো কার্যক্রমে গাংনী থানার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বাড়ির চলাচলের পথ নিয়ে মাত্র দেড় ফুট জমির বিরোধের জেরে ২০০৩ সালে প্রকাশ্যে দিবালোকে নিজ চাচা আমিরুল ইসলামকে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন মশিউর রহমান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সামিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

মামলার রায়ে মেহেরপুর জজকোর্ট প্রথমে মশিউর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। পরে আসামিপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করলে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত ২২ বছর ধরে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন—প্রথমে যশোর এবং বর্তমানে মেহেরপুর জেলা কারাগারে।

গতকাল শুক্রবার সকালে মশিউর রহমানের পিতা মনিরুল ইসলাম বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করলে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানানো হয়। আদালতের নির্দেশে বাবার জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য তিন ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। এরপর পুলিশ পাহারায় আদালত থেকে নিজ গ্রাম জুগিন্দায় আনা হয়।

নিহত আমিরুল ইসলামের ছেলে সামিকুল ইসলাম জানান, “মাত্র দেড় ফুট জমির জন্য আমার বাবাকে প্রকাশ্যে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে আমার চাচাতো ভাই মশিউর রহমান। ঘটনার সময় বাবাকে বাঁচাতে অনেক চেষ্টা করা হলেও তিনি পুকুরে নেমে পড়ার পরও ঘাতক তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। আদালতের রায়ে সে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছে। আজ তার বাবার মৃত্যুতে আদালতের নির্দেশে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছে—এতে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি জানানো হয়নি।”

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস ও হৃদয়বিদারক। প্রকাশ্যে দিবালোকে বহু মানুষের সামনে সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ড এখনো এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক হিসেবে রয়ে গেছে। বিকেলে পুলিশ পাহারায় আসামিকে গ্রামে আনা হলে সেই স্মৃতিই যেন আবার ফিরে আসে গ্রামবাসীর সামনে।




৩৭ বছর ধরে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি করছেন দর্শনার পংকজ কর্মকার

দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে লোহা পিটিয়ে কৃষি উপকরণ তৈরি করে আসছেন পংকজ কর্মকার। ডুগডুগি হাটের গোরস্থানের বিপরীত পাশে একটি কামারশালায় দা, নিড়ানি, হাসুয়া, কাঁচি, কোদাল ও কুড়ালসহ নানা ধরনের কৃষি সরঞ্জাম তৈরি করেন তিনি। তবে আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রভাবে লাঙ্গলের ফলার ব্যবহার এখন অনেক কমে গেছে।

পংকজ কর্মকার জানান, মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবা ও দাদার কাছ থেকে এই কাজের হাতেখড়ি নেন তিনি। বংশপরম্পরায় তাঁদের চৌদ্দ পুরুষ এই পেশার সাথে যুক্ত। দীর্ঘ ৩৭ বছরের এই কর্মজীবনে তিনি প্রতিদিন কোনো দিন ৪ হাজার টাকা, আবার কোনো দিন ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তাঁর দুই ছেলে স্বর্ণের দোকানে কাজ করলেও ছোট ছেলে বাবার সাথে কামারশালায় সহযোগিতা করছেন। লোকনাথপুর, পরানপুর, জয়রামপুর, ছোট দুধপাতিলা ও কাদিপুরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কৃষকরা নিয়মিত তাঁর কাছে কৃষি সরঞ্জাম তৈরি করতে আসেন।

পংকজ কর্মকার আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আমি চারবার স্ট্রোক করার পরেও এই লোহা পেটানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এ অঞ্চলের কৃষকরা আমার কাজ পছন্দ করেন বলেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো শক্তি পাই না, তবে ছেলেটা সহযোগিতা করে বলে এখনো টিকে আছি। বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগে না, কাজের ফাঁকে কৃষকদের সাথে গল্প করেই সময় কেটে যায়।”

তিনি আরও জানান, বর্তমানে আধুনিক চাষাবাদের যুগেও সারা বছরই তাঁর কাজের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে ধান ও পাট কাটার মৌসুমে কাজের চাপ বেড়ে যায়। এই পেশার মাধ্যমেই তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সুখে দিনাতিপাত করছেন।




ওসমান হাদিকে পরিকল্পিত হত্যার প্রতিবাদে দর্শনায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ

দর্শনায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা এবং হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে দর্শনার ছাত্র-জনতা ও স্বদেশপ্রেমী মানুষের আয়োজনে ‘দর্শনা মুক্তমঞ্চে’ জমায়েত হয়ে এই বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মুক্তমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মহাসড়কের চার রাস্তার মোড় (বক চত্বর) এলাকায় গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দর্শনা পৌর জামায়াতের আমির সাইফুল ইসলাম অপু, কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি রিফাত রহমান, তানজির রহমান অনিক ও আজারুল ইসলাম সোহান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন তানজির রহমান অনিক। সমাবেশে বক্তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে উপস্থিত সবার প্রতি আহ্বান জানান। আন্দোলনকারীরা এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা’, ‘আমি কে তুমি কে? হাদি হাদি’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, কোটি হাদি ঘরে ঘরে’।

মিছিলটি দর্শনা সীমান্তের অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। সমাবেশ শেষে দর্শনা বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তার মোড়ে নিহত হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন দর্শনা জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ওসমান গনি। এছাড়া দর্শনা পৌরসভার বিভিন্ন মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে; এর মধ্যে পরানপুর রিফিউজি কলোনি মসজিদে দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ মো. রবিউল ইসলাম।




আলমডাঙ্গায় চায়নাবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত

আলমডাঙ্গায় ১৬ দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘চায়নাবার ফুটবল টুর্নামেন্টের’ জমকালো ফাইনাল ম্যাচ সম্পন্ন হয়েছে। আলমডাঙ্গা ফুটবল একাডেমির আয়োজনে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় আলমডাঙ্গা পাইলট সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (এটিএম) মাঠে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ে কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচটি ট্রাইবেকারে গড়ায়। ট্রাইবেকারে লাভ স্টার একাদশকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ফ্রেন্ডস ক্লাব আলমডাঙ্গা।

সাবেক ফুটবলার খোন্দকার আমিনুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়াও স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক ফুটবলাররা উপস্থিত ছিলেন।

পুরো খেলাটি সঞ্চালনা করেন মীর আসাদুজ্জামান উজ্জ্বল। ম্যাচে প্রধান রেফারির দায়িত্ব পালন করেন আলমডাঙ্গা ফুটবল একাডেমির পরিচালক সোহাগ আলী। সহকারী রেফারি হিসেবে ছিলেন প্রমিলা ফুটবলার উর্মি ও কাজলি।

খেলা শেষে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন। আয়োজকরা জানান, নিয়মিত এমন টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে স্থানীয় তরুণদের খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করা এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরি করাই তাদের মূল লক্ষ্য।




ওসমান হাদীর মৃত্যুতে আলমডাঙ্গায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল

আলমডাঙ্গায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদী হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও শোক মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে আলমডাঙ্গার আলিফ উদ্দিন মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের ‘৭১ স্তম্ভ মোড়’ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় আলিফ উদ্দিন মোড়ে এসে সমবেত হয়। এ সময় পুরো এলাকা শোক ও প্রতিবাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভ ও শোক মিছিল শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক রাকিব মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রনেতা কামরুল হাসান কাজল, আরাফাত রহমান, তাওহিদ খান ও শাকিব মাহমুদ।

রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য দেন এবি পার্টির মুসাব ইবনে শাফায়েত, এনসিপির সালেহীন কাউনাইন (সামাউন) এবং গণঅধিকার পরিষদের খন্দকার মাশুক।

সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ওসমান হাদীর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। একইসঙ্গে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।




আলমডাঙ্গার জেহালায় সাবেক যুবলীগ নেতা আটক

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় জেহালা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক এক নেতাকে আটক করেছে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে মো. সোহেল তিতুমীর (৪৫) নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলার ৭ নম্বর জেহালা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সোহেল তিতুমীর জেহালা বাবুপাড়া গ্রামের মো. সুজা উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শনিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।




দামুড়হুদায় ডিবির অভিযানে এক কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে।

গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দামুড়হুদা থানাধীন কোমরপুর পূর্বপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি কোমরপুর গ্রামের মৃত আঃ রহমানের ছেলে মোঃ ইউসুফ আলী (৬৫)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সার্বিক নির্দেশনায় জেলা পুলিশের সকল ইউনিটে একযোগে মাদক ও চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই জুম্মান খান ও এএসআই ছানোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ গতকাল শুক্রবার সকাল আনুমানিক ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে কোমরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানকালে ওই গ্রামের ইমদাদুলের ছেলে আঃ সালামের বাঁশবাগানের সামনের পাকা রাস্তার ওপর থেকে ইউসুফ আলীকে ১ কেজি গাঁজাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মেসবাহ্ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।




গাংনীতে জাভেদ মাসুদ মিল্টনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আনোয়ার হোসেনের কার্যালয় থেকে এই মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়।

মনোনয়ন ফরম উত্তোলনকালে উপস্থিত ছিলেন, গাংনী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল, গাংনী পৌর বিএনপি’র সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডাম সুমনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন জাভেদ মাসুদ মিল্টন। তবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। এরপর থেকেই আমজাদ হোসেনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র একাংশের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

মনোনয়ন ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় গাংনী উপজেলা শহর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকেরা মশাল মিছিল, সড়ক অবরোধ ও টায়ার জ্বালানোসহ নানা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আসছেন।

অন্যদিকে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই আমজাদ হোসেনের অনুসারীরা নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন ও তার নেতাকর্মীরা।

এ সময় তার সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মতিউর রহমান মতি মোল্লাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।




খুলনাতে এপেক্স ক্লাব জেলা-৬ এর কনভেনশন অনুষ্ঠিত 

এপেক্স বাংলাদেশের খুলনাতে এপেক্স ক্লাব জেলা-৬ এর কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিকালে হোটেল ডিএস প্যালেস কনফারেন্স রুমে খুলনা এপেক্স ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট এ্যাড. জিএম আবু মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এপেক্স বাংলাদেশের জাতীয় সভাপতি এপেক্সিয়ান এম সায়েম টিপু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ন্যাশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট এপেক্সিয়ান আবু নাঈম মোঃ মাকসুদুর রহমান, ন্যাশনাল একশন ডাইরেক্টর এপেক্সিয়ান রফিকুল ইসলাম ও ন্যাশনাল এক্সটেনশন ডাইরেক্টর এপেক্সিয়ান শাহনাজ পারভীন সেতু।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জেলা-৬ এর গভর্নর এ্যাডঃ শেখ আমীর হামজা। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা হয়। এরপর এপেক্স সংগীত ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। প্রথম  পর্বে আলোচনা সভা ও জেলা-৬ এর অধীনে  ক্লাবগুলোর বার্ষিক রিপোর্ট ও ডিজি ৬ এর বার্ষিক রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয় ও রিপোর্টের উপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

দ্বিতীয় পর্বে জেলা ০৬ এর আগামী ২০২৬ সালের জন্য নুজন জেলা গভর্নর নির্বাচন করা হয়। নির্বাচনে আগামী বছরের জন্য এপেক্স ক্লাব অব মেহেরপুরের প্রেসিডেন্ট রফিকুল আলম বকুল কে জেলা-৬ এর নতুন গভর্নর নির্বাচিত করা হয়।৷ ন্যাশনাল বোর্ড, সকল ক্লাব প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ও সদস্যদের সম্মতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় মেহেরপুরের জেলার মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল আলম বকুল কে সর্বসম্মতিক্রমে জেলা-৬ এর নুতন গর্ভনর নির্বাচিত করা হয়।

অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের জন্য এপেক্স ক্লাব অব মেহেরপুর বেস্ট ক্লাব ও বেস্ট প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেহেরপুর ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রফিকুল আলম বকুল কে নির্বাচিত করে ক্রেস্ট ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এপেক্স বাংলাদেশের জাতীয় সভাপতি এপেক্সিয়ান এম সায়েম টিপু এপেক্সিয়ানদের উদ্দেশ্যে বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে এপেক্স ক্লাবকে আরও বেগবান ও কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। আগামী জেলা ৬ কে গতিশীল ও কার্যকর করতে নুতন গভর্নরের প্রতি আহ্বান জানান।




গাংনীতে প্রেমের সম্পর্ক ধরে বিয়ের দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বাড়িতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার অনশন

মেহেরপুরের গাংনীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে চার বছরের প্রেমের অভিযোগ এনে বিয়ের দাবিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা দুই দিন ধরে অনশন পালন করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আজ শুক্রবার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত তার বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

এদিকে বিয়ের দাবিতে স্কুল শিক্ষিকা সালমা খাতুন বাড়িতে আসার সাথে সাথে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক আমিরুল ইসলাম সুফল বাড়ি ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে গেছেন। আমিরুল ইসলাম গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের আনারুদ্দীনের ছেলে ও চেংগাড়া সরকারির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। সালমা খাতুন একই উপজেলার গোপালনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (বাংলা)।

সালমা খাতুন অভিযোগ করেন, বিগত চার বছর যাবৎ আমার সাথে প্রেম করছে সে। প্রেমের সম্পর্কের কারণে সে বিভিন্ন স্থানে আমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। সব ধরণের সম্পর্কও তৈরী হয়েছে। আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। আমি চাকুরি পেলে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল। আমি এখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে চাকুরি পেয়েছি। কিন্তু সুফল আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেনা। এমনকি আমার ফোনটুকুও ধরেনা। আমি তার বাড়িতে চলে এসেছি। বিয়ে না করলে এই বাড়ি থেকে আমার লাশ বের হবে।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আমিরুল ইসলাম অজ্ঞাত স্থান থেকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, তার সাথে আমার কোনো ধরণের সম্পর্ক নেই। বিয়ের জন্য সে আমাকে ব্লাকমেইল করছে।

অভিযুক্ত শিক্ষকের খালাত ভাই বাবু জানান, দুজনেই স্কুল শিক্ষক। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক আছে কিনা আমরা কেউ জানিনা। অনশনকারী সালমা খাতুন প্রেমের সম্পর্ক আছে দাবি করলেও আমিরুল ইসলাম সুফল সেটা মিথ্যা দাবি করছে। এই মূহূর্তে আমরা মেয়ের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তার পরিবারের লোকজনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাইনি। বিষয়টি গাংনী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তারাও এসে রিপোর্ট নিয়ে চলে গেছে। মেয়েটি আজ বিকাল পর্যন্ত এখানেই বসে আছে।

এদিকে আমিরুল ইসলাম সুফল মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, ওই শিক্ষিকার সাথে আমার কোনো প্রেমের সম্পর্ক নেই। তার সাথে বিয়ের কথা হয়েছিল এক সময়। তারপর থেকেই সে আমাকে জালাচ্ছে। আমি তাকে বিয়ে করবো না। বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেন কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরণের একটা পরিস্থিতিতে না পালিয়ে উপায় ছিলনা।

এব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ঘটনাটি শোনার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।