নারী ও কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্যবিধি

মাসিক একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার অনেক সমাজের মতো বাংলাদেশেও মাসিক এখনো লজ্জা, ভ্রান্ত ধারণা ও নীরবতার আবরণে আবদ্ধ।

এই নীরবতা শুধু সামাজিক মনোভাবের কারণে নয়; এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অজ্ঞতা, দারিদ্র্য, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন সুবিধার অভাব এবং মাসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষা না থাকা। ফলে দেশের নারী ও কিশোরীদের একটি বড়ো অংশ আজও বৈজ্ঞানিকভাবে, নিরাপদ উপায়ে মাসিক সামলাতে পারে না।

একজন কিশোরীর প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা যতটা স্বাভাবিক হওয়ার কথা, বাস্তবে তা অনেক সময় ভয়, লজ্জা ও বিভ্রান্তির মিশ্র অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়। ফলস্বরূপ, মেয়েরা নিজের শরীরকে অবহেলা করতে শেখে, স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়াকেও লুকানোর বিষয় হিসেবে দেখে। এতে তাদের স্বাভাবিক আত্মবিশ্বাস কমে যায়, নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা সীমিত হয়।

অথচ মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা বা মেন্স্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট কেবল একজন নারী বা এক কিশোরীর ব্যক্তিগত গল্প হতে পারে না। মাইক্রো লেভেলে একজন নারী বা এক কিশোরীর স্বাস্থ্য সচেতনতা রাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার প্রকৃত চিত্রকে তুলে ধরতে পারে।

একটি দেশের নারী ও কিশোরীর মৌলিক অধিকার কতটা সংরক্ষিত, নারী ও কিশোরী কতটা মর্যাদাবান জীবনের অধিকারী হচ্ছে, সে বিষয়েও আলোকপাত করা যায়। এই প্রেক্ষাপটে এভাবে বলাটা অসত্য হয় না যে, যদিও দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তবুও বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারী ও কিশোরীদের জন্য নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব মাসিক স্বাস্থ্য পণ্য এবং সেবা নিশ্চিত করা এখনও একটি বড়ো চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। বিভিন্ন গবেষণা ও জাতীয় জরিপ এই সমস্যাগুলোর মূল কারণগুলো চিহ্নিত করেছে, যেমন সচেতনতার অভাব ও কুসংস্কার, অর্থনৈতিক বাধা ও সাশ্রয়ী পণ্যের অভাব, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও স্যানিটেশন সুবিধা ইত্যাদি।

ইউনিসেফ এবং অন্যান্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, দেশের স্কুলগামী কন্যাশিশুদের প্রায় অর্ধেকই প্রথম মাসিকের আগে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পায় না। ইউনিসেফের তথ্যমতে, প্রায় অর্ধেক স্কুলগামী কন্যাশিশু তাদের প্রথম মাসিকের আগে এ বিষয়ে কিছু শোনেনি। দেশের ৬৪ শতাংশ কিশোরী বয়ঃসন্ধিকালের আগে মাসিক সম্পর্কে জানে না, যার ফলে তারা প্রথম মাসিকের সময় অপ্রস্তুত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। পারিবারিক ও সামাজিক সংস্কারের কারণে মাসিক নিয়ে খোলাখুলি আলোচনার অভাব রয়েছে।

সামাজিক নীরবতা, কুসংস্কার আর ভুল তথ্যের ফাঁদে পড়ে নারী ও কিশোরীর স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক এক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা এই একুশ শতকে এসেও একটি ট্যাবু বা নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, নারী ও কিশোরীর জন্য মানসিক চাপ ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পণ্য কেনার সময় পুরুষ বিক্রেতাদের সাথে কথা বলার অস্বস্তিও একটি সামাজিক চ্যালেঞ্জ, যা তাদের জন্য এই সাধারণ কাজটিও লজ্জাজনক ও ভীতিকর করে তোলে। এই ট্যাবু মেয়েদের চলাচলের স্বাধীনতা সীমিত করে ফেলে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।

অর্থনৈতিক বাধা এবং সাশ্রয়ী পণ্যের অভাবও নারী ও কিশোরীর মাসিক স্বাস্থ্যবিধির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। ওয়াটারএইড বাংলাদেশের একটি গবেষণায় জানা যায়, স্যানিটারি প্যাডের উচ্চমূল্যের কারণে এটি অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। অনেকে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহাওে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও উচ্চ খরচের কারণে মাসিকের সময় কাপড় ব্যবহার করতে বাধ্য হন। অনেক দরিদ্র নারী বাড়ির বাইরে যেতে হলে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের সামর্থ্য রাখলেও, ঘরে থাকার সময় সাশ্রয়ের জন্য পুরোনো বা অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করেন। গার্মেন্টস এর নারী কর্মীরা দীর্ঘ শিফটে কাজ করেন, কিন্তু স্বল্প বেতনে প্রতি মাসে প্যাড কিনে ব্যবহার করা তাদের জন্য কঠিন। ফলস্বরূপ সাদা ¯্রাব, চুলকানি, এমনকি প্রজননক্ষমতার ক্ষতিও হতে পারে।

মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার পথে একটি বড়ো বাধা হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যথাযথ স্যানিটেশন অবকাঠামোর অভাব। দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাবান্ধব টয়লেট নেই। সেখানে জরুরি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সুযোগ থাকে না এবং ব্যবহৃত ন্যাপকিন ফেলার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা নেই। জাতীয়ভাবে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেখানে প্রতি ৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১টি করে টয়লেট থাকার কথা, সেখানে আছে ১৮৭ জনের জন্য ১টি। অনেক স্কুলে মেয়েদের জন্য পৃথক এবং ব্যবহারের উপযোগী টয়লেট না থাকায় প্রায় ৩০ শতাংশ ছাত্রীকে প্রতি মাসে ঋতুকালে স্কুলে অনুপস্থিত থাকতে হয়। ফলে তারা একদিকে ক্লাসে পিছিয়ে পড়ে, অন্যদিকে পরীক্ষার ফলাফলও খারাপ হয়, যা তাদের শিক্ষা জীবনকে ব্যাহত করে।

সরকারি অফিস ও কর্মক্ষেত্রগুলোতেও নারীর জন্য ঋতুকালীন বিশ্রামের জায়গা এবং ডঅঝঐ (ডধঃবৎ, ঝধহরঃধঃরড়হ, ধহফ ঐুমরবহব) সুবিধাগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, সাবান এবং ডাস্টবিনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। এসবের ফলাফল হিসেবে নারী ও কিশোরীদের জীবনে বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যা তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামগ্রিক সামাজিক অবস্থানের ওপর প্রভাব ফেলছে। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা যদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি, শিক্ষার ক্ষতি, সামাজিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে, তাহলে তা কোনো দেশের জন্য উপকার বয়ে আনে না। অস্বাস্থ্যকর পুরোনো কাপড় ব্যবহারের ফলে নারী ও কিশোরীরা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ছয় ঘণ্টা অন্তর ন্যাপকিন না পাল্টালে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, যা থেকে নানা রোগ দেখা দিতে পারে। অস্বাস্থ্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে নারীরা ভুগছে প্রজনন ও মূত্রনালি সংক্রমণ সংশ্লিষ্ট মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যায়। এমনকি, মাসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার সঠিক পরিবেশ না থাকায় প্রতিদিন গড়ে ১৮ জন নারী জরায়ুু ক্যানসারে মারা যাচ্ছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়। ওদিকে স্যানিটারি প্যাডের ব্যাপক ব্যবহার এবং অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির কারণে পরিবেশগত উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবহৃত প্যাড ফেলার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ডাস্টবিনের অভাব পরিবেশের ক্ষতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), বেসরকারি খাত এবং স্থানীয় কমিউনিটির সমন্বিত প্রচেষ্টাতো অবশ্যই প্রয়োজন। তবে সবার আগে দরকার পরিবারের সহায়তা। বিশেষ করে মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে কিশোর মেয়েকে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জানানো। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ব্যাপারে সচেতন ও সংবেদনশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে মাসিক স্বাস্থ্য শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, যা ছেলে-মেয়ে সবার জন্যই প্রয়োজন। পরিবারগুলোতে খোলামেলা আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা এবং সমাজ-ভিত্তিক প্রোগ্রামে পুরুষদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে এ সংক্রান্ত আলোচনায় বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের উপস্থাপন ঘটানোর মাধ্যমে মাসিক সংক্রান্ত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করা জরুরি। এভাবেই মাসিক নিয়ে যেসব কুসংস্কার আছে, সেগুলো দূর করে সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে।

রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের স্যানিটারি পণ্যের দাম কমাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি করা এবং বিকল্প পরিবেশবান্ধব পুনঃব্যবহারযোগ্য পণ্যের প্রসারের জন্য প্রচারণা চালানোর কাজ গুরুত্বের সাথে এগিয়ে নিতে হবে। কাঁচামালের ওপর কর ছাড়ের সুবিধা যেন ভোক্তার কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করার জন্য স্পষ্ট আইনের প্রয়োজন। গ্রামীণ নারীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। স্বল্পমূল্যে কীভাবে দরিদ্র নারীদের জন্য ন্যাপকিন সহজলভ্য করা যায়, তা বিবেচনায় নিতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই সরকারি নির্দেশনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে মেয়েদের জন্য উন্নত, আলাদা টয়লেট বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যেখানে ময়লা ফেলার ঝুড়ি, সাবান ও পানির ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও, নারী শিক্ষকদেরকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মাসিক নিয়ে কথা বলতে এবং যথাযথ স্যানিটারি ন্যাপকিন যেন পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা একটি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ হলেও গত এক দশকে জনগণের মাঝে মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। স্কুলভিত্তিক স্বাস্থ্য শিক্ষা বাড়ানো হয়েছে। বহু এনজিও অল্প খরচে প্যাড তৈরি ও বিতরণ করছে। স্থানীয়ভাবে “রিয়ুজেবল ক্লথ প্যাড” তৈরি হচ্ছে, যা ধুয়ে বারবার ব্যবহার করা যায়। মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা প্রচার বেড়েছে। সরকার স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য উদ্যোগে মাসিক স্বাস্থ্যকে অন্তর্ভুক্ত করছে। নতুন প্রজন্মের মায়েরা এখন অনেক বেশি সচেতন। মেয়েরা ১০-১২ বছর বয়সেই মাসিক সম্পর্কে জেনে যাচ্ছে, যা আগের প্রজন্মে ছিল না। ডিজিটাল মিডিয়া থেকেও তথ্য মিলছে। তবে ভুল তথ্য যেন মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনাকে আরও চ্যালেঞ্জের ভেতর ফেলে না দেয়, সে ব্যাপারে সচেতনভাবে ব্যাপক প্রচারণার প্রয়োজন আছে।

মাসিক বা ঋতুস্রাবের সময় কিশোরীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। পরিমাণ মতো পানি (দিনে অন্তত ৮ গ্লাস) পান করতে হবে। এ কথা অনস্বীকার্য, যে সমাজ নারীকে সম্মান করে, সেখানে তার শারীরিক প্রয়োজনকেও মর্যাদা দেওয়া হয়। মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা মূলত নারীর সামগ্রিক ক্ষমতায়ন, যেখানে নারীর আছে নিজের শরীর নিয়ে কথা বলার অধিকার, মাসিকের সময় কর্মস্থলে সহযোগিতার পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা। মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা একটি দেশের উন্নয়ন পরিমাপের সূচক। বাংলাদেশের নারীরা বহু বাধা পেরিয়ে আজ শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, নেতৃত্ব প্রদান তথা সবখানে এগিয়ে যাচ্ছে। মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অবহেলা না থাকলে তাদের এই অগ্রগতি আরও তরাণি¦ত হবে। তখন জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের নারীর অবদানের পরিমাণও হবে অনেক বেশি।

আমরা চাই, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ একটি সভ্য দেশে পরিণত হোক। আর কে না জানে, একটি সমাজ তখনই সভ্য হয়, যখন তারা নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে তখনই, যখন প্রতিটি কিশোরী ও নারী তাদের মাসিককে নিরাপদ, স্বাভাবিক ও মর্যাদাপূর্ণভাবে পরিচালনা করতে পারবে। আশা করি সে-ই বাংলাদেশ আমরা অর্জন করতে পারব।

লেখক: উপ প্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদপ্তর।




প্রবাসিকে বিয়ে করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তালাক দিলেন কোটচাঁপুরের পাখি

মোবাইল ফোনে সর্ম্পকের পর পারিবারিকভাবে বিয়ে এরপর ওই প্রবাসি যুবকের নিকট থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে করেছেন ঘরবাড়ি, সোনার গয়না ও ব্যাংক ব্যালেন্স তার পরে দিছেয়েন তালাক।

স্ত্রীকে ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন যুবক, উপায় না পেয়ে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই প্রবাসি মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (৪৮)। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার লতব্দী গ্রামের সদর আলীর ছেলে।

স্ত্রী হামিদা খাতুন পাখি কোটচাঁদপুর উপজেলার লীকুন্ডু গ্রামের ওয়াজেদ আলী খানের মেয়ে। অভিযোগ সুত্রে জানা যায় প্রায় ৭ বছর আগে মালায়েশিয়া প্রবাসি মাহবুবুর রহমানের সাথে থাকেন প্রবাসি পাখির বোনের জামাইয়ের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাদের। এর পর প্রেমের সর্ম্পক তারপর ও পারিবাবিক সম্মতিতে দুজনের বিয়ে হয়।

এর মধ্যে কয়েকবার মাহবুবুর রহমান দেশে আসেন ও সংসার করেন পাখির সাথে। স্বামীর গ্রামের বাড়ি অনেক দুরে এবং স্বামী বিদেশ থাকার সুযোগে পরকিয়া সর্ম্পকে জড়িয়ে পরেন পাখি, ফলে তাদের সর্ম্পকে ভাটা পড়তে থাকে, এরমধ্যেই হামিদা খাতুন পাখি ডির্ভোস লেটার পাঠিয়েছেন মাহবুবুর রহমানের বাড়িতে।

তখন তিনি মালায়েশিয়াতে থাকার কারণে ডির্ভোস লেটার রিসিভ করতে পারেননি বলে জানান। মাহবুবুর রহমান অভিযোগে করে জানান পাখির সাথে তার ৭ বছরের সংসার জীবন। এর মধ্যে তিনি শুশুর বাড়িতে থাকার মত কোন ঘর না থাকায় নিজের খরচে একটি পাকা ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় স্ত্রী পাখির নামে ১০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন যা দিয়ে স্ত্রী হামিদা সংসারের খরচ, ঘরের আসবাব পত্র এবং স্বর্ণাংকার তৈরি করেছেন। এখন তিনি হুট করে ১৬ নভেম্বর আমাকে ডিভোর্স দিয়ে আমার অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন। আমি ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসি এবং ১৭ ডিসেম্বর কোটচাঁদপুরে এসে পাখির পরিবারের লোকজন এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি এবং ডিভোর্স এর বিষয়ে আমি পাখির কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে কোটচাঁদপুর ছেড়ে চলে যেতে বলেন এবং এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন আর কখনও কোটচাঁদপুর আসলে আমাকে খুন করে লাশ গুম করে দেয়ার হুমকি দেন।

এর পর আমি এলাকার বিভিন্ন গনমান্য ব্যক্তির সাথে কথা বলেও কোন প্রতিকার না পেয়ে ১৮ ডিসেম্বর আমি কোটচাঁদপুর মডেল থানায় হামিদা খাতুন পাখি, পাখির বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। তারা সবাই আমার পরিশ্রমের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আপনি এখন কি চাচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি জানান হয় পাখি আমার স্ত্রী হিসেবে থাকবেন না হলে আমার দেয়া সকল অর্থ ফেরত দিবেন।

অভিযুক্ত পাখির সাথে কথা বললে তিনি জানান ৭ বছর আগে মাহবুবুর এর সাথে ৫০ হাজার টাকা দেনমহরে আমার বিয়ে হয়। গেল এক বছর যাবত আমার কোন খোজ খবর তিনি রাখেন না, সে কারণে আমি ঝিনাইদহ কোর্টে তাকে তালাক দিয়েছি। স্ত্রী হিসাবে সে আমার ভোরণপোষণ দিয়েছে এর বাইরে আমি কোন টাকা আত্মসাৎ করিনি।

অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রহিম সাথে কথা বললে তিনি জানান আপোষ মিমাংসার জন্য বিবাদীদেরকে ডাকলে তারা হাজির না হওয়ায় বাদীকে বিচারিক আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।




মেহেরপুরে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা

মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবির। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল হক, সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রশিদ, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. রফিকুল হাসান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক পার্থ প্রতিম শীল, মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সুপার বুলবুল কবীর এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতিকুল হক।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক খেজমত আলী মালিথা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল হুদা, ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাহিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এ. জে. এম. সিরাজুম মুনির, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক আব্দুস সাত্তার, জেলা তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সঞ্জীব কুমার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুকুমার মিত্রসহ জেলার বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সভায় মেহেরপুর জেলার চলমান ও প্রস্তাবিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনায় জেলার সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে আন্তঃদপ্তর সমন্বয় আরও জোরদার করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।

সভায় অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা জেলার উন্নয়নকে গতিশীল করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।




মেহেরপুরে বিএনপি নেতা আমিরুল ইসলামের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আমিরুল ইসলামের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের কাছ থেকে তাঁর প্রতিনিধি দল এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানজারুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড: আব্দুল আলিম, বাগোয়ান ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপি’র সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করবেন। তারা বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

সরকার ও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। তফসিল অনুসারে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।




মেহেরপুরে বিএনপি নেতা কামরুল হাসানের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর) আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসানের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের কাছ থেকে তাঁর প্রতিনিধি দল এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মোহাম্মদ। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক লিটন ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেননসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করবেন। তারা বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

সরকার ও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। তফসিল অনুসারে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।




গাংনীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, মরদেহ উদ্ধার

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা হাজিপাড়া মাঠের পেঁপে বাগান থেকে তপন (২৮) নামে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে ভবানীপুর ক্যাম্প পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। নিহত তপন হাড়াভাঙ্গা মোল্লাপাড়ার মজিবর রহমানের ছেলে। তার একটি ১২ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন সকালে কৃষকরা জমিতে কাজ করতে গিয়ে পাশের পেঁপে বাগানে এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর মর্গে পাঠায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তপন মাদক পাচারকারী হিসেবে এলাকায় চিহ্নিত। মাদক ব্যবসার বিরোধের জের ধরে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে বলে জানান তারা।

নিহত তপনের স্ত্রী রুপা খাতুন বলেন, একটি ফোন পেয়ে রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। রাতে অনেকবার ফোন দিলেও ফোন বন্ধ ছিল। পরে সকালে তার লাশের খবর পায়।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার আকাশ বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। লাশ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, কে বা কেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত চলছে। নিহত যুবক মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।




ঝিনাইদহে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক যুবক নিহত, আহত ১

ঝিনাইদহ শহরের ক্যাডেট কলেজের সামনে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তানভির হাসান (২৬) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা অপর আরোহী আকাশ হোসেন (২২) গুরুতর আহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তানভির হাসান ঝিনাইদহ শহরের কালিকাপুর এলাকার আবুল বাসারের ছেলে এবং আহত আকাশ হোসেন সদর উপজেলার ঘোড়শাল গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক তানভীর হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তানভির হাসান বন্ধু আকাশ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঝিনাইদহ শহর থেকে শৈলকুপার দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ক্যাডেট কলেজের সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের গতিরোধক (স্পিড ব্রেকার)-এর সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে তারা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তার পাশে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তানভির হাসানের মৃত্যু হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আকাশ হোসেন গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত আকাশ হোসেনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং নিহতের মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

ছেলের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে তার বাবা আবুল বাসার ভেঙে পড়েন। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “ছেলেটা বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছিল, আমার বুক খালি করে লাশ হয়ে ফিরল।”

পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটি একটি অনিবন্ধিত ১৬০ সিসির এনএস পালসার।




আলমডাঙ্গায় আনন্দধাম রোডে ড্রেন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর শহরের আনন্দধাম এলাকায় সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সঠিকভাবে কাজ বাস্তবায়নের দাবিতে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

মানববন্ধনে আনন্দধাম নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি মো. বাবলু মাস্টার, সোহরাব উদ্দিন, রেজাউল মাস্টার, আবুল কাশেম, বিপ্লব, রাসেল, শান্ত, শহিদ মোল্লা, সোহাগ, মাহাবুল মাস্টার, জাহিদ হাসান শুভ, রবিউল ইসলাম, মাহাবুল হক, আব্দুস সালাম ও মো. ওয়ালিদসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ: ড্রেন নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের ইটসহ মানহীন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করছে। কাজ শুরুর সময় এসব নিম্নমানের ইট সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা হলে স্থানীয়রা তা অপসারণের দাবি জানান। তবে ঠিকাদারি কর্তৃপক্ষ সেই দাবিতে কর্ণপাত করেনি। বরং তারা নির্ধারিত নকশা ও পরিমাপ উপেক্ষা করে ইচ্ছামতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী ড্রেনের উচ্চতা ৯ ইঞ্চি নির্ধারিত থাকলেও কোথাও কোথাও ১৮ থেকে ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত উঁচু করে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে সড়কের পাশের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াতে মারাত্মক ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট। এ নিয়ে একাধিকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মানববন্ধন থেকে দ্রুত তদন্ত করে অনিয়ম বন্ধ, মানসম্মত সামগ্রী দিয়ে ড্রেন নির্মাণ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।




দর্শনা প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা

শরীফ ওসমান বিন হাদীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীর শোক প্রকাশ, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে এবং সাম্প্রতিক পত্রিকা অফিস ভাঙচুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নের দাবিতে দর্শনা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এক জরুরি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার বাদ মাগরিব দর্শনা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল হক পিপুল। সভায় বক্তারা বলেন, শরীফ ওসমান বিন হাদী হত্যাকাণ্ড শুধু একটি হত্যাই নয়; এটি একটি বিপ্লবকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র এবং দেশ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত। রাষ্ট্রকে দুর্বল করে আধিপত্যবাদ কায়েম করার উদ্দেশ্যেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন। বক্তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

বক্তারা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পত্রিকা অফিস ভাঙচুর, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হুমকির ঘটনা বেড়ে চলেছে, যা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য চরম উদ্বেগজনক। তারা অবিলম্বে সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন কার্যকর করা, দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং সাংবাদিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

সভা থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঘোষণা করা হয়, সাংবাদিকদের ওপর যেকোনো হামলা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে দর্শনা প্রেসক্লাব সবসময় সোচ্চার থাকবে এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

শেষে শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদীর রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুমন, সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আওয়াল হোসেন, আহসান হাবীব মামুন, ওয়াসিম রয়েল, ইমতিয়াজ রয়েল, ফরহাদ হোসেন, আব্দুল হান্নান ও শুকোমল চন্দ্র বাধন।




আলমডাঙ্গায় নাশকতা মামলার তিন আসামি গ্রেপ্তার

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে নাশকতা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন উপজেলার ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নের বগাদি গ্রামের মৃত জব্বার আলী বিশ্বাসের ছেলে সাজিবুর রহমান (৭২)।

তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বাড়াদি ইউনিয়নের অনুপনগর গ্রামের মৃত মরজেম হোসেনের ছেলে শরীয়ত আলী (৫৫)। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। এছাড়া ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নের খোরদ গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে ওয়াদুদ আলী (৫০)। তিনি ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ বানী ইসরায়েল জানান, খাদিমপুর ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রায় হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।