মেহেরপুর লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ওটিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

মেহেরপুরে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে রাশিয়া খাতুন (৪৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত রাশিয়া খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি মীর পাড়ার কাবাদুল ইসলামের স্ত্রী।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে মেহেরপুর শহরে অবস্থিত লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় করেন এবং বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা হাসপাতাল বন্ধের দাবিতে হাসপাতালের সামনে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেন এবং হাসপাতালে কর্মী সুমন নামের একজনের উপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে রাশিয়া খাতুনের এক হাত ভেঙে যায়। সে সময় অপারেশনের মাধ্যমে হাতে রড (ফরেন পার্টিকেল) সেট করা হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর হাতটি স্বাভাবিক হয়ে উঠলে চিকিৎসকের পরামর্শে রডটি অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এজন্য রাশিয়া খাতুন শুক্রবার সকালে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসক মনজুর উল আলামের কাছে অপারেশনের জন্য যান। অপারেশনের জন্য প্রায় ৪০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়।

রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর তাকে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয় এবং অজ্ঞান করা হয় বলে অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। এরপর রাশিয়া খাতুনের আর জ্ঞান ফিরে পাননি। অপারেশনের জন্য নির্ধারিত চিকিৎসক অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশের আগেই রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তাকে কুষ্টিয়া রেফার্ড করা হয়েছে বলে একটি বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে।

রাশিয়া খাতুনের ছেলে রাসেল অভিযোগ করে বলেন, “আমার মাকে প্রথমে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়, পরে আবার অজ্ঞান করা হয়। এরপর তার জ্ঞান ফেরেনি। এক পর্যায়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে বলে, কুষ্টিয়ায় নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমার মা তখনই মারা গিয়েছিলেন। আমি নিজ গাড়িতে অক্সিজেনসহ দ্রুত কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। শহরের ওয়াপদা মোড় পেরোনোর আগেই বুঝতে পারি মা আর নেই। পরে গাংনী উপজেলা হাসপাতালে ইসিজি করালে দেখা যায়, ঘণ্টাখানেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ মৃত অবস্থায়ই আমাদের মাকে হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয়েছিল।

ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে লাইফ কেয়ার ডি ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালটি বন্ধ রয়েছে। এদিকে, এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খালিদ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেসবাহ উদ্দিন বলেন, “রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। যেন কেউ আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার সময় মৃতের স্বজনদের সঙ্গে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আহসান হাবিব সোনা, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানসহ স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং পরিবারকে শান্ত করেন।




মেহেরপুরের ছাত্র শিবিরের নতুন সভাপতি সালাম, সেক্রেটারি সাইদুর

ইসলামী ছাত্র শিবির সারাদেশে ষান্মাসিক সেশনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্থানে নতুন কমিটি ঘোষণা করছে।

সেই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় মেহেরপুর জেলা কার্যালয়ে এক জরুরি সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সদ্য বিদায়ী জেলা সভাপতি মু. সাখাওয়াত হোসেন।

২০২৫ সালের চলমান (ষান্মাসিক) সাংগঠনিক সেশনের বাকি সময়ের জন্য মেহেরপুর জেলা শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান আব্দুস সালাম (সাবেক সেক্রেটারি) এবং সেক্রেটারি হিসেবে মনোনীত হন মু. সাইদুর ইসলাম (সাবেক অফিস সম্পাদক)।

কেন্দ্রীয় সভাপতির প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক মু. গোলাম জাকারিয়া। তিনি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে আব্দুস সালামকে সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা করেন এবং তাঁকে সাংবিধানিক শপথ পাঠ করান। পরে নবনির্বাচিত সভাপতির পরামর্শক্রমে মো. সাইদুর ইসলামকে সেক্রেটারি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক জেলা সভাপতি সোহেল রানা ডলার, ইকবাল হোসাইনসহ অন্যান্য জেলা নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তাজ উদ্দিন খান।

অনুষ্ঠান শেষে অতিথির বক্তব্য, দোয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।




গাংনীর তেরাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারি নিহত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোহাম্মদ মন্টু নামের এক পথচারি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের দুই আরোহী।

আজ শুক্রবার বিকাল ৩ টার দিকে তেরাইল ব্রিজ সংলগ্ন অলিনগর নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ মন্টু তেরাইল গ্রামের কাতল আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বামুন্দির দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথচারী মন্টুকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণ পরই তাঁর মৃত্যু হয়। মোটরসাইকেলের দুই আরোহীও আহত হন। তাদের উদ্ধার করে বামুন্দি বাজারের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

খবর পেয়ে বামন্দি ফায়ার সার্ভিস ও গাংনী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করেছে।




মেহেরপুরে ছাত্র-জনতার শহীদদের স্মরণে বিএনপি’র মৌন মিছিল

২০২৪ সালের ২৪ জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে এক মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে মৌন মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আলহাজ্ব জাভেদ মাসুদ মিল্টন, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়েজ মোহাম্মদ, সদস্য ইলিয়াস হোসেন, আনসারুল হক, আলমগীর খান ছাতু, ওমর ফারুক লিটন, আখেরুজ্জামান, মকবুল হোসেন মেঘলা, রেজাউল হকসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছিলেন, তারা ছিলেন গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষার সাহসী যোদ্ধা। শহীদদের স্মরণ করেই বর্তমান প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কারের আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়।




গাংনী চিৎলা পাট বীজ খামারের অনিয়মের সংবাদ করায় সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিৎলা পাটবীজ খামারে ‘নাজিম বাহিনীর’ দখলদারি, সরকারি সম্পদ লুট ও দুর্নীতির বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাহাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি দৈনিক দেশতথ্য ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রতিনিধি এবং গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য।

গত সোমবার “সময়ের সমীকরণ” পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে চিৎলা সরকারি পাটবীজ খামারে চলমান অনিয়ম, সম্পদ লুট, শ্রমিক হয়রানি ও একটি প্রভাবশালী চক্রের কর্তৃত্বের বিষয়টি প্রকাশিত হয়। এর দুই দিন পর নাজিম, বকুল ও এক অজ্ঞাত ব্যক্তি মিলে, খামারের যুগ্ম পরিচালক (জেডি) মোর্শেদুল ইসলামের ইন্ধনে, সাংবাদিক মাহাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে মেহেরপুর আমলী আদালতে (গাংনী) একটি মানহানির মামলা করেন।

ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় সাংবাদিক মহল, মানবাধিকারকর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়।

গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী কানন বলেন, “যে সাংবাদিক সাহসের সঙ্গে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন, তাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা হচ্ছে। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি হামলা।”
অভিযোগ উঠেছে, চিৎলা পাটবীজ খামারের অনিয়ম নিয়ে লিখলেই সেই সাংবাদিককে হুমকি ধামকি দেয়া হয়।

সাংবাদিক মাহাবুল ইসলাম জানান, “চিৎলা পাটবীজ খামারে বর্তমান জেডি মোর্শেদুল যোগদানের পর তার দেহরক্ষী নাজিম উদ্দিন, তার সহযোগী বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বকুল, জাব্বার আলী, আঃ সালাম, মো. মুছা, জুগিন্দা গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও তার ভাই আমজাদসহ কয়েকজন মিলে সরকারী এই বীজ খামারটিকে পৈতৃক সম্পতি মনে করে গড়ে তুলেছেন এক নয়া রাজত্ব।

তিনি জানান, এই চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের আগের দিন মামলার ২ নম্বর বাদী বকুল তাকে নিউজটি না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং সন্ধ্যায় কফি হাউজে দাওয়াত দেন। কিন্তু তিনি দাওয়াত গ্রহণ না করে সংবাদটি প্রকাশ করেন। এর ফলেই ওই চক্রটি প্রতিশোধমূলক এই মামলা করে।

মাহাবুল আরও জানান, প্রতিবেদন প্রকাশের পরের দিন শ্রমিক শফিকুল ইসলাম তার গ্রামের বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে, চিৎলা পাটবীজ খামারে চলমান লুটপাট ও অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।




জেলায় দাখিলে পাশের হার ৩২.৮৯ শতাংশ, জিপিএ মাত্র একজন

মেহেরপুর জেলায় মাদ্রাসা শিক্ষা মান বেহাল অবস্থায় পরিণত হচ্ছে। দাখিল পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় এ বছর পাশের হার কমেছে ৪২ শতাংশ। ৩৩ পেয়ে পাশ করার মত ফলাফলও হয়নি ২০২৫ সালের দাখিল পরীক্ষায়। জেলায় ২৫টি মাদ্রাসা থেকে ৬৯০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ২২৭ জন। পাশের হার মাত্র ৩২.৮৯ শতাংশ। যেখানে পাশ মার্ক নির্ধারণ হয় ৩৩ এ।

এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১১টি মাদ্রাসা থেকে ৩২৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ১০৫ জন। জিপিএ ৫ পায়নি কেউ। এ উপজেলায় পাশের হার ৩২ শতাংশ। গাংনী উপজেলার ১০ টি মাদ্রাসা থেকে ২৮০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ৮৮ জন। এ উপজেলায় জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ জন। পাশের হার আর কম ৩১.৪২ শতাংশ। এ উপজেলায় শতভাগ ফেল করেছে এমন মাদ্রাসাও আছে একটি। তুলনামূলক ভালো অবস্থানে মুজিবনগর উপজেলা। এ উপজেলায় ৪টি মাদ্রাসা থেকে ৮৪ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ৩৪ জন। জিপিএ ৫ না পেলে পাশের হার ৪০.৪৭ শতাংশ।

গত বছর ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায় জেলা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলো ৬৫৩ জন। পাশ করেছিলো ৪৮৫ জন। পাশের হার ছিলো ৭৪.২৩ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছিলো ১১ জন।

মেহেরপুর জেলার ২০২৪ ও ২০২৫ সালের দাখিল পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। ফলাফল বিপর্যয় ঠেকাতে শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ, অভিভাবকদের সচেতনতা ও শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মাদ্রাসা ভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে সদর উপজেলার মেহেরপুর দারুল উলুম আহম্মদিয়া কালিম মাদ্রাসায় ৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ জন পাশ করেছে। পাশ এর হার ৪৪ শতাংশ। আমঝুপি ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসায় ৪৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ২৭ জন। পাশের হার ৬০ শতাংশ। গোভীপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২৮ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ৮ জন। পাশের হার মাত্র ২৯ শতাংশ। নতুন দরবেশপুর দাখিল মাদ্রাসায় ৩৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৫ জন। পাশের হার মাত্র ১৩ শতাংশ। রাজনগর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৬ জন। পাশের হার ১৭ শতাংশ। তাঁতীপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩ জন। পাশের হার ১৩ শতাংশ। ইসলামনগর হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৩ জন। পাশের হার ৬৫ শতাংশ। কুলবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৩ জন। পাশের হার ১৪.২৯ শতাংশ। কোলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৮ জনের মধ্যে পাস করেছে ২ জন। পাশের হার ১১ শতাংশ। পিরোজপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৩৩ জনের মধ্যে পাস করছে ১৪ জন। পাশের হার ৪২ শতাংশ। আশরাফপুর দারুল সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৫ জন। পাশের হার ২৪ শতাংশ।

মুজিবনগরের মানিকনগর ডিএসএ আলিম মাদ্রাসা থেকে ২৯ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ১৩ জন। পাশের হার ৪৪.৮২ শতাংশ। দারিয়াপুর গাওছিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ১৪ জন। পাশের হার ৫১.৮৫ শতাংশ। শিবপুর দারুল কুরআন দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৯ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৩ জন। পাশের হার ৩৩.৩৩ শতাংশ। আয়েশা নগর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৯ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ৪ জন। পাশের হার ২১.০৫ শতাংশ।

গাংনী উপজেলার কাজীপুর দাখিল মাদ্রাসায় ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৬ জন। পাশের হার ২০ শতাংশ । সাহারবাটি কলোনিপাড়া আল মারকাজুল মাদ্রাসায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ২১ জন। পাশের হার ৫৬.৭৫ শতাংশ । গাংনী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৫ জন। পাশের হার ৩৭.৫ শতাংশ । হাড়াভাংগা দারুল হাদি ফাজিল মাদ্রাসায় ৩১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৬ জন। এ প্লাস প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ১ জন। পাসের হার ১৯.৩৫ শতাংশ। করমদি দারুস সুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১০ জন। পাশের হার ৪৭.৬১ শতাংশ। বাদিয়াপাড়া মহসিনা দাখিল মাদ্রাসায় ২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৬ জন। পাশের হার ২৮.৫৭ শতাংশ। মানিকদিয়া আগারপাড়া আলিম মাদ্রাসায় ৩২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৫ জন। পাশের হার ৪৬.৮৭ শতাংশ । পীরতলা দাখিল মাদ্রাসায় ১৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কেউ পাশ করে নি। আইদা কলিম দাখিল মাদ্রাসায় ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৮ জন। পাশের হার ২৬.৬৬ শতাংশ। বামুন্দী দাখিল মাদ্রাসায় ২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১ জন। পাশের হার ৫ শতাংশ।

শতভাগ ফেল করা গাংনীর পীরতলা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী শরিফুল ইসলাম বলেন, “কেন যে কেউ পাশ করলো না বুঝতে পারছি না। গতবছর ১৮ জন পরীক্ষা দিয়ে ৭ জন পাশ করেছিলো। আমাদের আশা ছিলো এবারও ৬/৭ জন পাশ করবে। ”
সদর উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আমঝুপি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী মোহাম্মদ আলী লাল্টু বলেন, “সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত, দুর্বল সন্তানকে অভিভবাবকরা মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। মাদ্রাসা শিক্ষার বিষয়ে অভিভাবকরা অসচেতন। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার সিলেবাস বেশি। ফলে একেতো দুর্বল শিক্ষার্থী তার উপরে সিলেবাসের চাপ যে কারণেই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এর মধ্যে থেকেও শিক্ষকরা দুর্বল শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়ে চেষ্টা করছেন তাদের লেখাপড়ার মান উন্নয়ন করার। তবে কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর রেজাল্ট বেশি খারাপ বলেও তিনি স্বীকার করেন।”

মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, “ যশোর বোর্ডে সবনিম্ম পাশের হার মেহেরপুরে। মাদ্রাসার অবস্থা আরও খারাপ। যা দেখে মেহেরপুর জেলার সার্বিক শিক্ষার মানের অবস্থা প্রতিফলিত হচ্ছে। শুধু শিক্ষকদের দায়ই নয়, অভিভাবক এবং শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ তৈরিতে আমাদের সমাজকেও এর দায় নিতে হবে। না হলে শিক্ষার এ বিপর্যয় থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারবো না। পাশের জেলাগুলোতে ভাল ফলাফল হচ্ছে অথচ মেহেরপুরে কেন হচ্ছে না, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে, তবেই মাদ্রাসাসহ সবক্ষেত্রে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে।”

মেহেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: হযরত আলী বলেন,“শুধু মাদ্রাসা না জেলাতেই এবার এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে। আমি সকল মাদ্রাসা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সুপারদের ডাকবো। কিভাবে আগামী বছর থেকে ভালো ফলাফল করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।”




মেহেরপুরে জেলা যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততায় সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মেহেরপুর জেলা যুবদল।

বৃহস্পতিবার(১৭ জুলাই) বিকালে মেহেরপুর পাথর গেটের সামনে থেকে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাওসার আলীর নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজ মোড়ে এসে শেষ হয়।

এ সময় বিক্ষোভ মিছিলে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোশাররফ তপু, এস এ খান শিল্টু, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল ইসলাম, সদর থানা যুবদলের আহ্বায়ক লেয়াকত আলী, সদর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাহিদুল ইসলাম, যুবদল সদস্য মেহেদী হাসান রোলেক্স সহ গাংনী উপজেলা, মুজিবনগর উপজেলার সকল ইউনিটের যুবদলের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততায় সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন সেই সাথে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন, এবং অতিদ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবী জানান।




মেহেরপুরের গাংনীতে জামায়াতের মিছিল

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবি আদায় ও গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে, ঢাকায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় সমাবেশকে স্বাগত জানিয়ে মেহেরপুরের গাংনীতে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে গাংনী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে মিছিলটি গাংনী হাইস্কুল মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, মেহেরপুর-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী নাজমুল হুদা, পৌর জামায়াতের বাইতুল মাল সম্পাদক জিল্লুর রহমান, কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা মো. আলম হোসাইন, গাংনী পৌরসভার কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনসহ জামায়াতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।




মেহেরপুরে জেলা যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততায় সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মেহেরপুর জেলা যুবদল।

বৃহস্পতিবার বিকালে মেহেরপুর সড়ক বিভাগের সামনে থেকে জেলা যুবদলের সভাপতি জাহিদুল হক জাহিদের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মেহেরপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি বাবু সাবের, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সুজন, সহ-সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব নওশেল আহমেদ রনি সহ জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দরা।

এর আগে মেহেরপুর সড়ক বিভাগের সামনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততায় সারাদেশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনীতির কারণে সমাবেশ করা হয়।




ঝিনাইদহ আইএইচটি’র পলাতক ডেন্টাল ইন্সট্রাক্টর কার্ত্তিক গোপালের চাকরী এখনো বহাল !

অর্ধশত ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, রাসুল পাক (সাঃ) কে নিয়ে কটুক্তি এবং মেয়েদের পর্দা নিয়ে বাজে মন্তব্য করা ঝিনাইদহ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আই.এইচ.টি) ডেন্টাল ইন্সট্রাক্টর ইসকন সদস্য কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাস এখনো চাকরিতে বহাল রয়েছেন।

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলেও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর তাকে চাকরীচ্যুত করতে পারেনি। এ নিয়ে ঝিনাইদহ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে নতুন করে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে পারে বলে নতুন করে আশংকা দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ঢাকার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও ঝিনাইদহ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি স্বৈরাচারের দোসররা ইসকন সদস্য কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাসকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে বিনা ছুটিতে প্রায় এক বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। তিনি এখনো চাকুরীতে বহাল রয়েছেন।

আইএইচটি’র একটি সুত্র জানায় ছাত্রীদের যৌন নির্যাতন ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠায় কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাস পালিয়ে যান। ২০২৪ সালের ২ সেপ্টম্বর তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে পদত্যগপত্র পাঠিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র ছাত্র নাইমুল হাসান মারুফ কার্ত্তিক গোপালকে একমাত্র আসামী করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন, যার মামলা নং ঝিসিআর-৮০৯/২৪। মামলাটি আমলে নিয়ে বিজ্ঞ বিচারক ফারুক আযম ঝিনাইদহ ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এদিকে বিষয়টি তদন্তের জন্য গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টম্বর পাঁচ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন ১৯৩৯ নং স্মারকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ডেন্টাল ইন্সট্রাক্টর ও ইসকন সদস্য কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দোষ প্রমানিত হয়। এ খবর নিশ্চিত করেন আইএইচটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাঃ রেজিনা আহম্মেদ।

এদিকে ২০২৫ সালের ১৪ মে ডেন্টাল ইন্সট্রাক্টর কার্ত্তিক গোপালের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করলেও এখনো তার কোন সন্ধানে পুলিশের দৃশ্যত কোন তৎপরতা নেই বলে মামলার বাদী অভিযোগ করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ডেন্টাল ইন্সট্রাক্টর কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাস ডেন্টালের ছাত্রীদের শহরের ব্যাপারীপাড়াস্থ তার চেম্বারে ডেকে এনে হাতে কলমে প্রশিক্ষনের নামে যৌন নির্যাতন চালাতেন। যৌন কর্মে লিপ্ত না হলে মৌখিক পরীক্ষায় ফেল ও লিখিত পরীক্ষায় কম মার্ক দিতেন। এভাবে লম্পট কার্ত্তিক গোপাল একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন।

তাছাড়া কার্তিক গোপাল ক্লাসে নারী শিক্ষার্থীদের পর্দা করার বিষয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে মানহানীকর বক্তব্য দিতেন। তিনি রাসুল পাক (সাঃ) ও আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) কে নিয়েও ক্লাসে কটুক্তি করতেন। হাসিনা ক্ষমতায় থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা কোন প্রতিবাদ করতে পারতেন না। লম্পট কার্ত্তিক গোপাল বিশ্বাসের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় গত ৫ আগষ্টের পর তিনি সহজেই ভারতের পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র অধ্যক্ষ ডাঃ রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি ঢাকার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরকে আগেই লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর অফিসিয়ালি অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এ কারণে হয়তো অধিদপ্তর এই চিঠি নাও পেতে পারে। তিনি জানান, কার্ত্তিকের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারী পরোয়ানার বিষয়টি উল্লেখ করে দ্রুতই অধিদপ্তরকে জানানো হবে।

ঢাকার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (শৃংখলা) ডাঃ মিছবাহ উদদীন আহমদ জানান, তার দপ্তর এ বিষয়ে কিছুই জানে না। নতুন করে তিনি ঝিনাইদহ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি কর্তৃপক্ষকে আবার চিঠি দিতে পরামর্শ দেন।