কোটচাঁদপুর জীবন উন্নয়ন সংস্থার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা

কোটচাঁদপুরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘জীবন উন্নয়ন সংস্থা’র উদ্যোগে ২০২৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষা বৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার শহরের সানরাইজ প্রি-ক্যাডেট স্কুলে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষা ও মেধা বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত এ পরীক্ষায় ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জীবন উন্নয়ন সংস্থার শিক্ষা বৃত্তি কমিটির সভাপতি উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. বসির আহম্মেদ, শিক্ষা বৃত্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর ইসলাম এবং স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ।

কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তারা জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই এবং প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরির লক্ষ্যেই এ বৃত্তির আয়োজন করা হয়েছে। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় অভিভাবকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জীবন উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, অতি দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে এবং উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বৃত্তি ও সনদ প্রদান করা হবে।




মেহেরপুরে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সড়কে প্রাণ গেলো আরও একজনের, স্ত্রী ও শিশু সন্তান আহত

মেহেরপুরে কয়েকঘন্টার ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল আরও একজনের। আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে গাংনী-কুথিলী সড়কে ইটবোঝাই ট্রলির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তুহিন হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী তমা খাতুন ও শিশু কন্যা তানহা গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহত তুহিন হোসেন গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, তুহিন হোসেন তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে গাংনী শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ভাটপাড়া বাঙ্গালপাড়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির স্যালোইঞ্জিনচালিত ইটবোঝাই ট্রলি তাদের মোটরসাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তুহিন হোসেন মারা যান।

আহত তমা খাতুন ও শিশু তানহাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারুক হোসেন জানান, আহত মা ও শিশুর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার দাস জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে এবং এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার আশরাফপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক যুবকের মারা গেছেন।




নারী ও কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্যবিধি

মাসিক একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার অনেক সমাজের মতো বাংলাদেশেও মাসিক এখনো লজ্জা, ভ্রান্ত ধারণা ও নীরবতার আবরণে আবদ্ধ।

এই নীরবতা শুধু সামাজিক মনোভাবের কারণে নয়; এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অজ্ঞতা, দারিদ্র্য, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন সুবিধার অভাব এবং মাসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষা না থাকা। ফলে দেশের নারী ও কিশোরীদের একটি বড়ো অংশ আজও বৈজ্ঞানিকভাবে, নিরাপদ উপায়ে মাসিক সামলাতে পারে না।

একজন কিশোরীর প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা যতটা স্বাভাবিক হওয়ার কথা, বাস্তবে তা অনেক সময় ভয়, লজ্জা ও বিভ্রান্তির মিশ্র অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়। ফলস্বরূপ, মেয়েরা নিজের শরীরকে অবহেলা করতে শেখে, স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়াকেও লুকানোর বিষয় হিসেবে দেখে। এতে তাদের স্বাভাবিক আত্মবিশ্বাস কমে যায়, নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা সীমিত হয়।

অথচ মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা বা মেন্স্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট কেবল একজন নারী বা এক কিশোরীর ব্যক্তিগত গল্প হতে পারে না। মাইক্রো লেভেলে একজন নারী বা এক কিশোরীর স্বাস্থ্য সচেতনতা রাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার প্রকৃত চিত্রকে তুলে ধরতে পারে।

একটি দেশের নারী ও কিশোরীর মৌলিক অধিকার কতটা সংরক্ষিত, নারী ও কিশোরী কতটা মর্যাদাবান জীবনের অধিকারী হচ্ছে, সে বিষয়েও আলোকপাত করা যায়। এই প্রেক্ষাপটে এভাবে বলাটা অসত্য হয় না যে, যদিও দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তবুও বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারী ও কিশোরীদের জন্য নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব মাসিক স্বাস্থ্য পণ্য এবং সেবা নিশ্চিত করা এখনও একটি বড়ো চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। বিভিন্ন গবেষণা ও জাতীয় জরিপ এই সমস্যাগুলোর মূল কারণগুলো চিহ্নিত করেছে, যেমন সচেতনতার অভাব ও কুসংস্কার, অর্থনৈতিক বাধা ও সাশ্রয়ী পণ্যের অভাব, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও স্যানিটেশন সুবিধা ইত্যাদি।

ইউনিসেফ এবং অন্যান্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, দেশের স্কুলগামী কন্যাশিশুদের প্রায় অর্ধেকই প্রথম মাসিকের আগে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পায় না। ইউনিসেফের তথ্যমতে, প্রায় অর্ধেক স্কুলগামী কন্যাশিশু তাদের প্রথম মাসিকের আগে এ বিষয়ে কিছু শোনেনি। দেশের ৬৪ শতাংশ কিশোরী বয়ঃসন্ধিকালের আগে মাসিক সম্পর্কে জানে না, যার ফলে তারা প্রথম মাসিকের সময় অপ্রস্তুত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। পারিবারিক ও সামাজিক সংস্কারের কারণে মাসিক নিয়ে খোলাখুলি আলোচনার অভাব রয়েছে।

সামাজিক নীরবতা, কুসংস্কার আর ভুল তথ্যের ফাঁদে পড়ে নারী ও কিশোরীর স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক এক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা এই একুশ শতকে এসেও একটি ট্যাবু বা নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, নারী ও কিশোরীর জন্য মানসিক চাপ ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পণ্য কেনার সময় পুরুষ বিক্রেতাদের সাথে কথা বলার অস্বস্তিও একটি সামাজিক চ্যালেঞ্জ, যা তাদের জন্য এই সাধারণ কাজটিও লজ্জাজনক ও ভীতিকর করে তোলে। এই ট্যাবু মেয়েদের চলাচলের স্বাধীনতা সীমিত করে ফেলে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।

অর্থনৈতিক বাধা এবং সাশ্রয়ী পণ্যের অভাবও নারী ও কিশোরীর মাসিক স্বাস্থ্যবিধির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। ওয়াটারএইড বাংলাদেশের একটি গবেষণায় জানা যায়, স্যানিটারি প্যাডের উচ্চমূল্যের কারণে এটি অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। অনেকে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহাওে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও উচ্চ খরচের কারণে মাসিকের সময় কাপড় ব্যবহার করতে বাধ্য হন। অনেক দরিদ্র নারী বাড়ির বাইরে যেতে হলে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের সামর্থ্য রাখলেও, ঘরে থাকার সময় সাশ্রয়ের জন্য পুরোনো বা অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করেন। গার্মেন্টস এর নারী কর্মীরা দীর্ঘ শিফটে কাজ করেন, কিন্তু স্বল্প বেতনে প্রতি মাসে প্যাড কিনে ব্যবহার করা তাদের জন্য কঠিন। ফলস্বরূপ সাদা ¯্রাব, চুলকানি, এমনকি প্রজননক্ষমতার ক্ষতিও হতে পারে।

মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার পথে একটি বড়ো বাধা হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যথাযথ স্যানিটেশন অবকাঠামোর অভাব। দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাবান্ধব টয়লেট নেই। সেখানে জরুরি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সুযোগ থাকে না এবং ব্যবহৃত ন্যাপকিন ফেলার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা নেই। জাতীয়ভাবে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেখানে প্রতি ৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১টি করে টয়লেট থাকার কথা, সেখানে আছে ১৮৭ জনের জন্য ১টি। অনেক স্কুলে মেয়েদের জন্য পৃথক এবং ব্যবহারের উপযোগী টয়লেট না থাকায় প্রায় ৩০ শতাংশ ছাত্রীকে প্রতি মাসে ঋতুকালে স্কুলে অনুপস্থিত থাকতে হয়। ফলে তারা একদিকে ক্লাসে পিছিয়ে পড়ে, অন্যদিকে পরীক্ষার ফলাফলও খারাপ হয়, যা তাদের শিক্ষা জীবনকে ব্যাহত করে।

সরকারি অফিস ও কর্মক্ষেত্রগুলোতেও নারীর জন্য ঋতুকালীন বিশ্রামের জায়গা এবং ডঅঝঐ (ডধঃবৎ, ঝধহরঃধঃরড়হ, ধহফ ঐুমরবহব) সুবিধাগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, সাবান এবং ডাস্টবিনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। এসবের ফলাফল হিসেবে নারী ও কিশোরীদের জীবনে বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যা তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামগ্রিক সামাজিক অবস্থানের ওপর প্রভাব ফেলছে। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা যদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি, শিক্ষার ক্ষতি, সামাজিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে, তাহলে তা কোনো দেশের জন্য উপকার বয়ে আনে না। অস্বাস্থ্যকর পুরোনো কাপড় ব্যবহারের ফলে নারী ও কিশোরীরা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ছয় ঘণ্টা অন্তর ন্যাপকিন না পাল্টালে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, যা থেকে নানা রোগ দেখা দিতে পারে। অস্বাস্থ্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে নারীরা ভুগছে প্রজনন ও মূত্রনালি সংক্রমণ সংশ্লিষ্ট মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যায়। এমনকি, মাসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার সঠিক পরিবেশ না থাকায় প্রতিদিন গড়ে ১৮ জন নারী জরায়ুু ক্যানসারে মারা যাচ্ছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়। ওদিকে স্যানিটারি প্যাডের ব্যাপক ব্যবহার এবং অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির কারণে পরিবেশগত উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবহৃত প্যাড ফেলার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ডাস্টবিনের অভাব পরিবেশের ক্ষতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), বেসরকারি খাত এবং স্থানীয় কমিউনিটির সমন্বিত প্রচেষ্টাতো অবশ্যই প্রয়োজন। তবে সবার আগে দরকার পরিবারের সহায়তা। বিশেষ করে মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে কিশোর মেয়েকে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জানানো। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ব্যাপারে সচেতন ও সংবেদনশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে মাসিক স্বাস্থ্য শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, যা ছেলে-মেয়ে সবার জন্যই প্রয়োজন। পরিবারগুলোতে খোলামেলা আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা এবং সমাজ-ভিত্তিক প্রোগ্রামে পুরুষদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে এ সংক্রান্ত আলোচনায় বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের উপস্থাপন ঘটানোর মাধ্যমে মাসিক সংক্রান্ত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করা জরুরি। এভাবেই মাসিক নিয়ে যেসব কুসংস্কার আছে, সেগুলো দূর করে সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে।

রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের স্যানিটারি পণ্যের দাম কমাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি করা এবং বিকল্প পরিবেশবান্ধব পুনঃব্যবহারযোগ্য পণ্যের প্রসারের জন্য প্রচারণা চালানোর কাজ গুরুত্বের সাথে এগিয়ে নিতে হবে। কাঁচামালের ওপর কর ছাড়ের সুবিধা যেন ভোক্তার কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করার জন্য স্পষ্ট আইনের প্রয়োজন। গ্রামীণ নারীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। স্বল্পমূল্যে কীভাবে দরিদ্র নারীদের জন্য ন্যাপকিন সহজলভ্য করা যায়, তা বিবেচনায় নিতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই সরকারি নির্দেশনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে মেয়েদের জন্য উন্নত, আলাদা টয়লেট বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যেখানে ময়লা ফেলার ঝুড়ি, সাবান ও পানির ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও, নারী শিক্ষকদেরকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মাসিক নিয়ে কথা বলতে এবং যথাযথ স্যানিটারি ন্যাপকিন যেন পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা একটি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ হলেও গত এক দশকে জনগণের মাঝে মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। স্কুলভিত্তিক স্বাস্থ্য শিক্ষা বাড়ানো হয়েছে। বহু এনজিও অল্প খরচে প্যাড তৈরি ও বিতরণ করছে। স্থানীয়ভাবে “রিয়ুজেবল ক্লথ প্যাড” তৈরি হচ্ছে, যা ধুয়ে বারবার ব্যবহার করা যায়। মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা প্রচার বেড়েছে। সরকার স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য উদ্যোগে মাসিক স্বাস্থ্যকে অন্তর্ভুক্ত করছে। নতুন প্রজন্মের মায়েরা এখন অনেক বেশি সচেতন। মেয়েরা ১০-১২ বছর বয়সেই মাসিক সম্পর্কে জেনে যাচ্ছে, যা আগের প্রজন্মে ছিল না। ডিজিটাল মিডিয়া থেকেও তথ্য মিলছে। তবে ভুল তথ্য যেন মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনাকে আরও চ্যালেঞ্জের ভেতর ফেলে না দেয়, সে ব্যাপারে সচেতনভাবে ব্যাপক প্রচারণার প্রয়োজন আছে।

মাসিক বা ঋতুস্রাবের সময় কিশোরীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। পরিমাণ মতো পানি (দিনে অন্তত ৮ গ্লাস) পান করতে হবে। এ কথা অনস্বীকার্য, যে সমাজ নারীকে সম্মান করে, সেখানে তার শারীরিক প্রয়োজনকেও মর্যাদা দেওয়া হয়। মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা মূলত নারীর সামগ্রিক ক্ষমতায়ন, যেখানে নারীর আছে নিজের শরীর নিয়ে কথা বলার অধিকার, মাসিকের সময় কর্মস্থলে সহযোগিতার পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা। মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা একটি দেশের উন্নয়ন পরিমাপের সূচক। বাংলাদেশের নারীরা বহু বাধা পেরিয়ে আজ শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, নেতৃত্ব প্রদান তথা সবখানে এগিয়ে যাচ্ছে। মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অবহেলা না থাকলে তাদের এই অগ্রগতি আরও তরাণি¦ত হবে। তখন জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের নারীর অবদানের পরিমাণও হবে অনেক বেশি।

আমরা চাই, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ একটি সভ্য দেশে পরিণত হোক। আর কে না জানে, একটি সমাজ তখনই সভ্য হয়, যখন তারা নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে তখনই, যখন প্রতিটি কিশোরী ও নারী তাদের মাসিককে নিরাপদ, স্বাভাবিক ও মর্যাদাপূর্ণভাবে পরিচালনা করতে পারবে। আশা করি সে-ই বাংলাদেশ আমরা অর্জন করতে পারব।

লেখক: উপ প্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদপ্তর।




নোয়াখালীর হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৫

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৫ জন। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সুখচর ইউনিয়নের জাগল্লার চরে এ ঘটনা ঘটে।

হাতিয়া থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, মঙ্গলবার সকালের দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের জাগলার চরে এই সংঘর্ষের ঘটে।

ওসি ঘটনাস্থলে আছেন জানিয়ে বলেন, এর মধ্যে একটি মরদেহ জেলা শহরে রয়েছে। বাকি চারটি মরদেহ ঘটনাস্থলে আছে।

সূত্র: bdnews 24.com




ঝিনাইদহে সহিংসতা প্রতিরোধে অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত

ঝিনাইদহে নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্ব জোরদার করণে অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার দিনব্যাপী ঝিনাইদহ ব্র্যাক আঞ্চলিক কার্যালয়ে ব্র্যাক জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি আয়োজনে এই অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়।

অ্যাডভোকেসি ডায়ালগে নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে স্থানীয় পর্যায়ে রেফারেল ম্যাকানিজম ও সরকারি- বেসরকারি উদ্যোগ সমন্বয়ের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করার উপর সকল আলোচক আলোচনা করেন এবং প্রত্যেকেই তাদের অবস্থান থেকে করণীয় নির্ধারণ করেন। ব্র্যাক ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর শিপ্রা বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে এডভোকেসি ডায়ালগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুর রহমান ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের , উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সি ফিরোজা সুলতানা ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও পরিচালনা করেন জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির রিজিওনাল ম্যানেজার জনাব মালবিকা সরকার চৈতী।




মেহেরপুরে বিএনপির চিফ এজেন্ট অ্যাড. মারুফ আহমেদ বিজন

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর-মুজিবনগর) আসনে বিএনপি মনোনীত চিফ এজেন্ট হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন।




মেহেরপুরে গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র উত্তোলন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীরা মেহেরপুরের দুটি আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

মেহেরপুর-১ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে মেহেরপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন।

অন্যদিকে, মেহেরপুর-২ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের মেহেরপুর জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাইসুল হক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মিনারুল ইসলাম এবং মেহেরপুর জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আলমগীর হোসেন।

গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানান, দলটি আসন্ন নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহকে তারা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।




মেহেরপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. সজিবুল হকের মনোনয়নপত্র উত্তোলন

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর-মুজিবনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ডা. সজিবুল হক।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার অনুপস্থিত থাকায় সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলামের কাছ থেকে তিনি এ ফরম সংগ্রহ করেন।

মনোনয়নপত্র গ্রহণের পর ডা. সজিবুল হক বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আমি মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করব। অসহায়, গরিব ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াব। বেকারত্ব দূরীকরণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেব এবং রাস্তাঘাটসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করব।’

এ সময় তার সঙ্গে স্থানীয় সমর্থক, নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর। মেহেরপুর-১ আসনটি এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।




নারী প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রোমানা আহমেদ

মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাবেক শিশু বিষয়ক সম্পাদক রোমানা আহমেদ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ সংসদীয় আসন থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন।

একজন নারী প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়ন উত্তোলনকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলামের কাছ থেকে রোমানা আহমেদের প্রতিনিধি দল আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে।

দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় রোমানা আহমেদ তৃণমূল পর্যায়ে একজন পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখ। তিনি এর আগে টানা দুইবার মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় তাঁর এই অভিজ্ঞতা তাঁকে শক্তিশালী নারী নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মেহেরপুর-১ আসনে একজন অভিজ্ঞ নারী প্রার্থীর মনোনয়ন উত্তোলন বিএনপির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এতে নারী ভোটারদের পাশাপাশি তরুণ ভোটারদের মধ্যেও ইতিবাচক সাড়া পড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

মনোনয়নপত্র উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমল হোসেন মিন্টু, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৌরভ হোসেন, জেলা মহিলা দলের সহসভাপতি সাবিয়া সুলতানাসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নারী নেতাকর্মীরা।

রোমানা আহমেদের মনোনয়ন উত্তোলনের খবরে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও প্রত্যাশা দেখা দিয়েছে। নারী নেতৃত্বের অগ্রযাত্রায় তাঁর এই পদক্ষেপ মেহেরপুরের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।




সহকারী অধ্যাপক হলেন ঝিনাইদহের মানবিক চিকিৎসক প্রসেনজিৎ পার্থ

ঝিনাইদহে গরিবের বন্ধু, মানবিক চিকিৎসক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন কার্ডিওলজি স্পেশালিষ্ট ডাঃ প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ। প্রাইভেট চেম্বারেও বিনামূল্যে অসহায় দরিদ্র রোগী দেখে শুধু জেলা সদরে নয় পুরো জেলার মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদন্নোতি পেয়েছেন। অহংকারের লেশ মাত্র নেই এ চিকিৎসকের মনে। সদালাপী সাদা মনের মানুষ হয়ে তিনি সব সময় নিজেকে আড়াল রাখতেই পছন্দ করেন। ব্যতিক্রমী এ মানুষটি ঝিনাইদহে দীর্ঘদিন চিকিৎসা সেবা দিয়ে সহকর্মী, রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন ও সুশীল সমাজের প্রশংসা আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন।

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী আব্দুল আজিজ বলেন,বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসক প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের চেম্বারে এসেছিলাম। তার রোগী দেখার ফিস দেওয়ার মত টাকা আমার কাছে ছিলো না। পরে ডাঃ বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে চেম্বারে ডেকে বিনা টাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। এমনকি শারীরিক যত্নে নানা পরামর্শ দেন।

সেই সাথে আমাকে আশ্বস্ত করেন তার চেম্বারে টাকার অভাবে কোন রোগী চিকিৎসা সেবা না নিয়ে ফিরে যাবে না। তার এমন মহতি উদ্যোগে আমরা ঝিনাইদহবাসী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। এমন চিকিৎসক যেন প্রতিটি জেলায় জেলায় তৈরি হয় সেই কামনা করি। তাহলে কোন অসহায় দ্ররিদ্র মানুষ আর বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না।

এ বিষয়ে ডাঃ প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ বলেন, বাবার ইচ্ছে ছিলো আমাকে ডাক্তারি পড়ানো। ছোট বেলা থেকেই সেভাবে লেখাপড়ার সহযোগীতা করেছেন আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা। আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই মনে হয়েছে আমি দেশ ও সমাজের মানুষের সেবা করবো। সেই থেকে বাবার ইচ্ছে আর আমার স্বপ্ন নিয়ে ডাক্তার হবার প্রাণপন চেষ্টা করি। প্রথমে আমি বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ করে ৩২ তম বিসিএস এ সুপরিশ প্রাপ্ত হই। পরে ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করে দীর্ঘ ৫ বছর দায়িত্ব পালন করি।

এরপর উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের জন্য শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-কার্ড কোর্সে ভর্তি হয়ে পাস করি। পরে কার্ডিওলজি তে এফসিপিএস পার্ট-১ পাস করে বাংলাদেশ জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্টার হিসেবে ৩ বছর চাকুরি করি। কিন্তু নিজের এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবার কথা চিন্তা করে ঢাকার লোভনীয় পদ ও উন্নত সুযোগ সুবিধা থাকা স্বত্বেও আমি ঝিনাইদহে ফিরে এসেছি।

বর্তমানে আমি এখন ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ও সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছি। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে জাতীর শ্রেষ্ঠসন্তান তথা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমার কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে কোন টাকা লাগবেনা।

তিনি আরো বলেন, চিকিৎসক এমন একটা পেশা যা সহজেই মানুষের কাছাকাছি এসে প্রত্যক্ষভাবে সেবা করা যায়। তাই জীবনে যতদিন বেচে থাকবো মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করে যাবো। চিকিৎসক ঠিকই আমি হয়েছি কিন্তু কতটুকু মানুষ হতে পেরেছি সেটা আপনারাই মূল্যায়ন করবেন।