সম্পাদকীয় ।। জাল সনদে বেতন নেওয়া শিক্ষকদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে

শিক্ষা জাতীর মেরুদণ্ড, একটি জাতির ভিত্তি বলা হয়। শিক্ষকদের নৈতিকতা, সততা ও আদর্শই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনের মূলে থাকে।

সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচ শিক্ষক দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে জাল বিএড সনদ ব্যবহার করে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণ করেছেন। এ খবর শুধু দুঃখজনকই নয়, বরং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ও সম্মানকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এবং একই সঙ্গে সরকারি টাকা আত্মসাতের মধ্যে ফৌজদারী অপরাধও বটে। যা চাকরিবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

২০১৯ সালে বিদ্যালয়টি এমপিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে জাল সনদ দেখিয়ে তারা উচ্চতর স্কেলে বেতন গ্রহণ করে আসছেন। অথচ বাস্তবে তারা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যশোর কেন্দ্র থেকে এখনো বিএড অধ্যয়নরত এবং মাত্র প্রথম সেমিস্টার শেষ করেছেন। এই তথ্য নিজেই প্রমাণ করে তারা সুস্পষ্ট প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সরকারি তহবিল থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

অধিকতর উদ্বেগজনক হলো, বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক আখি তারা খাতুন জাল সনদ দিয়ে চাকরি নেওয়ার অপরাধে জেল খেটে এসেছেন, তবুও হাজিরা ছাড়া তাকে বেতন প্রদান করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের পদে থেকে এ ধরনের অনিয়মে সমর্থন দেওয়া কেবল নৈতিক অধঃপতন নয়, বরং প্রশাসনিক ক্ষমতার স্পষ্ট অপব্যবহার।

একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন শিক্ষকই অনিয়মের মাধ্যমে সুবিধা গ্রহণ করেন, তখন শিক্ষার্থীদের কাছে সততা ও নৈতিকতার যে শিক্ষাটি দেওয়ার কথা, তা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এই ধরনের ঘটনা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা, নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও আর্থিক শৃঙ্খলা—সবই প্রশ্নবিদ্ধ করে।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। তিনি বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অতিরিক্ত বেতন সরকারি কোষাগারে ফেরত আনা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এই অনিয়ম পাঁচ বছর ধরে কীভাবে চললো? পর্যবেক্ষণ, অডিট ও তদারকি ব্যবস্থায় কি কোনো ঘাটতি ছিল? ইতিপূর্বে যারা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এমনকি শিক্ষা কর্মকর্তারা কি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেননি এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রধান শিক্ষকসহ ওই পাঁচ শিক্ষকের নিয়োগের ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা পালন করেছেন তাদেরও এ জবাদদিহীতার মধ্যে আনতে হবে।

এই ঘটনার দ্রুত, নিরপেক্ষ ও কঠোর তদন্ত হওয়া জরুরি। কেবল অতিরিক্ত টাকা ফেরত আদায়ে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না; বরং এমন উদাহরণ তৈরি করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক বা প্রশাসনিক ব্যক্তি জাল সনদ বা প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার সাহস না পায়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নৈতিকতার চর্চার জায়গা। এখানে ভুয়া সনদ, বেতন জালিয়াতি এবং কর্তৃপক্ষের গাফিলতি—সব মিলিয়ে যে অস্থির চিত্র ফুটে উঠেছে, তা এখনই সংশোধন না হলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।




দোয়েলের চিমনিসহ গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আর দুটি ভাটার ইট

মেহেরপুরের গাংনীতে অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। গতকাল সোমবার সকাল থেকে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একযোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানসূত্রে জানা যায়, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন–২০১৩ লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া বেশ কয়েকটি ভাটায় ইট উৎপাদন চলছিল। এসব ভাটা পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলায় কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মাঠে নামে।

সকালের অভিযানে গাংনী পৌর এলাকার ধানখোলা রোডে অবস্থিত ‘দোয়েল ব্রিকস’ নামের অবৈধ ইটভাটাটি ভেঙে দেওয়া হয়। ভাটার চিমনি, ভাটা কাঠামোসহ উৎপাদন–সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেয় অভিযাত্রী দল।

অভিযান পরিচালনা করেন খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর টিপু সুলতান,জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং যৌথ বাহিনীর একটি বিশেষ টিম।

এছাড়া রিপন ইটভাটা ও সুপার ইটভাড়ার সাজানাে ইট ভেঙ্গে দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে অবৈধ ভাটাগুলোতে অভিযান চালানো হবে বলেছেন জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা । তবে প্রাথমিকভাবে ড্রাম চিমনি ব্যবহারকৃক ভাটাগুলোতে অভিযান শুরু হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, ইটভাটায় ড্রাম চিমনি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার।কিন্তু কিছু ভাটামালিক অবৈধভাবে এই চিমনি ব্যবহার করে আসছে।তাই অবৈধ ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।১টি ইটভাটা ভাঙা হয়েছে।২টির রাউন্ড ভাঙা হয়েছে। আরও একটিতে অভিযান চালানো হবে।পর্যায়ক্রমে এ অভিযান চলমান থাকবে।

অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন, “পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো ইটভাটা চলতে দেওয়া হবে না। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।”

এসময় পরিবেশ অধিদপ্তরের মেহরপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শেখ কামাল মেহেদী, পরিদর্শক টিপু সুলতানসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।




দামুড়হুদায় দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

দামুড়হুদা উপজেলা সদরে বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করেছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান।

এ সময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ব্যবসা পরিচালনার দায়ে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এ তদারকি অভিযান পরিচালিত হয়।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা সদরে বাজার তদারকি অভিযানে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান নেতৃত্ব দেন।

অভিযানকালে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এর ৫২ ধারায় নিয়ম বহির্ভূত ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে মেসার্স আলমগীর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ক্রোকারিজ গার্ডেন প্রোপাইটার মো. আলমগীর হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ২০০৯-এর ৫১ ধারায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে মেসার্স জননী ফার্মেসির মো. মেজবাউদ্দীনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ সময় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ত্রুটি সংশোধন করে ব্যবসা পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। অভিযানে সহায়তায় ছিলেন ক্যাব প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি টিম।

সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান জানান, জনস্বার্থে এমন তদারকি অভিযান অব্যাহত থাকবে।




আলমডাঙ্গায় সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান

জামজামি বাজারের ব্রিজ এলাকায় সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় ফাঁড়ি–পুলিশের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশিষ কুমার বসু।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জামজামি বাজারের ব্রিজের দুই পাশ এবং আশপাশের সরকারি জায়গাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তি দোকান, স্থাপনা ও অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করে দখল করে রেখেছিলেন। এতে ব্রিজের মুখে জায়গা সংকুচিত হয়ে বাজারের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। বিশেষ করে ব্যস্ত সময়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হতো এবং ছোটখাটো দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার দখল সরানোর মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হলেও দখলদাররা তা উপেক্ষা করেন। পরবর্তীতে সরেজমিনে যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে বেশ কয়েকটি স্থাপনা অপসারণ করা হয় এবং সরকারি জমিটি সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করা হয়। এতে ব্রিজের দুই পাশের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি পায় এবং বাজার এলাকায় স্বাভাবিক চলাচল পুনরায় নিশ্চিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দখলদারির কারণে বাজারের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ব্রিজ এলাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিল বেশি। উচ্ছেদ অভিযানে তারা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশিষ কুমার বসু বলেন, সরকারি খাসজমিতে কোনো ধরনের অবৈধ দখল বরদাস্ত করা হবে না। নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজন হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং জনসাধারণের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ।




আলমডাঙ্গার দুই প্রতিষ্ঠানে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা

আলমডাঙ্গার বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে ভেজাল জৈব সার উৎপাদনের দায়ে দুই কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এ সময় উৎপাদিত প্রায় ১০০ বস্তা জৈব সার বাজারজাত না করার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশিষ কুমার বসুর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার বারাদি এলাকার হাফিজুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান এবং ইদ্রিস আলীর ছেলে রকিবুল ইসলাম জৈব সার কারখানা নির্মাণ করে জৈব সার উৎপাদন করে আসছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, এ দুটি কারখানায় নানা অনিয়মের মাধ্যমে সার উৎপাদন ও বিপণন করা হচ্ছিল।

উৎপাদিত নিম্নমানের এসব জৈব সার পরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর এলাকার এগ্রোসেল কারখানায় নিয়ে পুনরায় প্যাকেজিং ও ম্যানুফ্যাকচারিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হতো। এ অভিযোগের ভিত্তিতে দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান ও রকিবুল ইসলামকে ৮ হাজার টাকা করে মোট ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় উৎপাদিত প্রায় ১০০ বস্তা জৈব সার বাজারজাত না করার নির্দেশ দেওয়া হয়।




জীবননগরে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ধানবীজ ও সার বিতরণের উদ্বোধন

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বোরো হাইব্রিড, বোরো উফশী ধানবীজ ও রাসায়নিক সার সহায়তা প্রদানের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এসব ধানবীজ ও বিভিন্ন প্রকার সার বিতরণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমে বোরো হাইব্রিড ও বোরো উফশী ধান ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে জীবননগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ধানবীজ ও রাসায়নিক সার সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমীন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দজাদী মাহাবুবা মঞ্জুর মওনা, কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জুয়েল শেখ, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা জামিল আকতার, সমাজসেবা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. পারভেল রানা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বীরেন্দ্র, শাহ আলম, দেলোয়ার হোসেন, শিমুল পারভেজসহ কৃষকবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৬৪০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিঘা প্রতি ৫ কেজি বোরো উফশী ধানবীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়। এছাড়া ২০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিঘা প্রতি ২ কেজি করে বোরো হাইব্রিড ধানবীজ প্রদান করা হয়।

এসময় কৃষকদের বীজ ও রাসায়নিক সারের যথাযথ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় এবং বোরো ধান চাষাবাদ ও বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়।




জীবননগরে খুচরা সার ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা

সার নীতিমালা ২০২৫ অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন জীবননগর উপজেলার খুচরা সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ীরা।

গতকাল সোমবার দুপুর বারোটায় জীবননগর উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নতুন সার নীতিমালা ২০২৫ বাস্তবায়ন হলে খুচরা সার ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা অস্তিত্ব সংকটে পড়বেন এবং সার বিপণন ব্যবস্থায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে বলেও দাবি করেন তারা। এ সময় বক্তারা নীতিমালা বাতিল করে মাঠপর্যায়ের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় যুক্তিযুক্ত বিকল্প নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

পরে ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয় বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

সার ব্যবসায়ী নেতা আলমগীর হোসেন, আব্দুল কাদের, বাবুল আক্তার, জহুরুল ইসলামসহ অন্যান্য বক্তারা জানান, কৃষকদের কাছে সঠিক সময়ে সার পৌঁছে দিতে খুচরা ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে নতুন নীতিমালা চাপিয়ে দিলে মাঠপর্যায়ে সার সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কর্মসূচিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শতাধিক সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গায় ৯’শ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তায় সরকারের প্রণোদনা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আলমডাঙ্গায় রবি/২৫–২৬ মৌসুমে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় চত্বরে এ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মাসুদ হোসেন পলাশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিষ কুমার বসু।

তিনি বলেন, সরকার কৃষকদের শক্তিশালী করতে বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে। আপনারা এ সহায়তার সঠিক প্রয়োগ করলে কৃষি উৎপাদন বাড়বে। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. উদয় রহমান, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আব্দুস সামাদ, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আহসান উল হক শাহীন, মো. আব্দুর রফিক, মো. নাজমুল হোসেন, মো. আশরাফুল আলম এবং উচ্চমান সহকারী মো. আমির সোহেল।

অনুষ্ঠান শেষে মোট ৯০০ জন কৃষকের মধ্যে প্রত্যেককে ৫ কেজি উফশী ধানের বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়। সব মিলিয়ে বিতরণ হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ কেজি উফশী ধানের বীজ, ৮ হাজার ১০০ কেজি ডিএপি সার এবং ৮ হাজার ১০০ কেজি এমওপি সার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এ প্রণোদনা রবি মৌসুমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং কৃষিতে ব্যয়ের চাপ কমাবে।




গাংনীতে ট্রাক্টরের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মানিকদিয়া গ্রামে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিহাব হোসেন (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে নিজ বাড়ির পাশে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিহাব উপজেলার মানিকদিয়া গ্রামের মাঠ পাড়ার কৃষক ওসমান আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, শিশু শিহাবসহ তার কয়েকজন বন্ধু রাস্তার পাশের একটি ছোট্ট প্রাচীরের উপর বসে খেলাধুলা করছিল। পার্শ্ববর্তী একটি কৃষি জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা হচ্ছিল। খেলাধুলার একপর্যায়ে শিশু শিহাব আকস্মিকভাবে প্রাচীর থেকে নিচে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়ার পরই তার উপর দিয়ে ট্রাক্টরের চাকা উঠে যায় এবং পিষ্ট হয়ে শিহাব গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার আগেই শিশুটি মারা যায়।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হেমায়েতপুর পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




গাংনীতে অভ্যন্তরীণ আমন ধান ও চাউল সংগ্রহের উদ্বোধন

মেহেরপুরের গাংনীতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে।

‎‎সোমবার সকাল ১১ টায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের আয়োজনে খাদ্য গুদাম চত্বরে আমন ধান ও চাউল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়।

‎‎চলতি মৌসুমে গাংনীতে আমন ধান সংগ্রহের প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৩ মেট্রিকটন, চালের লক্ষ্যমাত্রা ৩২৬ মেট্রিকটন। ধানের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি ৩৪ টাকা এবং চাল ৫০ টাকা। এর মধ্যে উপজেলা কৃষি অফিসের আওয়াতাভুক্ত   কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ করা হবে এবং চুক্তিবদ্ধ চাল কল মালিকদের নিকট থেকে চাউল সংগ্রহ করা হবে।

‎‎এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন,  সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাবিদ হোসেন, উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোছাঃ ইশরাত জাহান,উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ, কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক ইকবাল হোসেন, ওসি এলএসডি মোঃ মাহমুদুল হাসান, উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ ফাহিম ফয়সাল, উপজেলা চাল কল মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শহিদুল হক সহ উপজেলা বিভিন্ন কৃষক এবং চাল কল মালিকেরা।