ওসমান হাদি আর নেই

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবেলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেন হাদি।

এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওই দিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আজ মারা যান।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তদন্তে জানা গেছে, হামলার আগে কয়েক মাস ধরে হাদির নিয়মিত চলাচল, বাসা ও অফিসের রুট এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল।

তদন্তে আরো উঠে এসেছে, গুলিবর্ষণের পর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান আগারগাঁওয়ে তার বোনের বাসায় আশ্রয় নেন। পরে শ্যুটার ফয়সাল ও মোটরসাইকেলচালক আলমগীর শেখ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

র‌্যাব ও ডিবির যৌথ তদন্তে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের কর্নেল গলিতে একটি বাসার নিচ থেকে দুটি ম্যাগাজিন ও ১১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে নরসিংদী থেকে আরো পাঁচটি অস্ত্র ও ৪১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। মামলাটি তদন্ত করছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

এ পর্যন্ত র‌্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বিভিন্ন মেয়াদে তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।

সূত্র: কালের কন্ঠ




জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় খুলনা বিভাগে তৃতীয় উযায়ের আযমান

সসাস আয়োজিত জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় পর্যায়ে খুলনা বিভাগ থেকে কবিতা আবৃত্তিতে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে উযায়ের আযমান।

উযায়ের আযমান মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আবু সালেহ মো. শুভর ছেলে এবং জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।

অল্প বয়সেই তার এই সাফল্যে পরিবার, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দ ও গর্বের অনুভূতি বিরাজ করছে।




টানা তৃতীয়বার ব্র্যাক মাইগ্রেশন আওয়ার্ড পেলেন তালাশের নাজমুল সাঈদ

অভিবাসন খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে করা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য টানা তৃতীয়বারের মতো ‘ব্র্যাক মাইগ্রেশন মিডিয়া আওয়ার্ড’ পেলেন ইনডিপেনডেন্ট টে‌লি‌ভিশ‌নের অনুসন্ধানীমূলক অনুষ্ঠান তালাশের সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল সাঈদ। এর আগে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ব্র্যাক মিডিয়া আওয়ার্ড পান নাজমুল সাঈদ।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের এম্বাসেডর মাইকেল মিলার।

তালাশের সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল সাঈদের করা ‘শিক্ষার নামে মানব পাচার’ প্রতিবেদনটি অনুসন্ধান ক্যাটাগরিতে সেরা হয়।

আওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, নানা উদ্যোগ নেবার পরও মানবপাচার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করে যাচ্ছে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীরা। প্রতারণা কমাতে সরকারের পাশাপাশি বিদেশ গামীদের আরও সচেতন আহ্বান জানানো হয়।

এ সময় প‌ত্রিকা, টে‌লি‌ভিশন ও অনলাই‌ন ক্যাটাগ‌রি‌তে আ‌রও ১৫ জন‌ সাংবা‌দিক‌কে অ‌ভিবাসী খা‌তে অবদান রাখার জন‌্য পুরস্কৃত করা হয়।

টানা তৃতীয়বার ব্র্যাক মাইগ্রেশন অ্যাওয়ার্ড জেতা নাজমুল সাঈদ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রথম আলো মাদকবিরোধী পুরস্কার-২০১৮, আহ্ছানীয়া মিশন মাদকবিরোধী পুরস্কার-২০২০, টিআইবি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার-২০২৩, ক্র্যাব বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ ও ২০২৪ পান। এছাড়া বেস্ট আরবান রিপোর্টিং-২০২৪ ও ২০২৫ পেয়েছেন তিনি।

ছাত্র অবস্থায় মেহেরপুরে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন নাজমুল সাঈদ ৷ উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি যুক্ত থাকেন সাংবাদিকতায়। কাজের ধারাবাহিকতায় আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি, শীর্ষ নিউজ ডটকম, বাংলামেইল টুয়েন্টিফোর ডটকম, দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম, দীপ্ত টেলিভিশন, বৈশাখী টেলিভিশন, যমুনা টেলিভিশনের পর বর্তমানে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান তালাশের সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছেন।




দামুড়হুদায় জাতীয় প্রবাসী ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় জাতীয় প্রবাসী দিবস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রথমে পরিষদ চত্বর থেকে একটি র‍্যালি বের হয়। র‍্যালি শেষে পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান, দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুলতান মাহমুদ, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হারুন অর রশীদসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

আলোচনা সভায় বক্তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, বিদেশে যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা এবং যে কাজে যাবেন সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা জরুরি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলে ভালো বেতন পাওয়ার পাশাপাশি মালিক পক্ষের সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হয়।

বক্তারা আরও বলেন, বিদেশগামীদের কোনোভাবেই দালালের খপ্পরে পড়া যাবে না। বিভিন্ন দালাল লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে মানুষকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে নানাভাবে হয়রানির শিকার করছে, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক ও বৈধ পথে বিদেশ যাওয়া প্রয়োজন।

এ জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে বৈদেশিক মন্ত্রণালয় ও জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরোকে আরও শক্তিশালী করে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।




মেহেরপুরে সিপিবি প্রার্থী অ্যাড. মিজানুর রহমানের মনোনয়নপত্র উত্তোলন

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত মেহেরপুর-১ আসনের (মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর) এমপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহা. মিজানুর রহমান মনোনয়নপত্র ও সিডি সংগ্রহ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তিনি এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি মেহেরপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শহিদুল ইসলাম কাননসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।




দামুড়হুদায় প্রযুক্তিনির্ভর যুবশক্তি গঠনে জনসচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ

“প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি” প্রতিপাদ্যে শান্তি, শৃঙ্খলা, উন্নয়ন ও সামাজিক সচেতনতায় যুবদের ভূমিকা শীর্ষক জনসচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার যুবক-যুবতীরা অংশগ্রহণ করেন।

চুয়াডাঙ্গা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফিরোজ আহমেদ-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ঢাকা’র উপপরিচালক (বাস্তবায়ন) ফারিহা নিশাত। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহজাহান আলী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার এবং দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ।

প্রশিক্ষণে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ যুবশক্তি গড়ে তুলতে হলে সামাজিক সচেতনতা, শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় যুব সমাজকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। যুবকরাই আগামীর নেতৃত্ব, তাই বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে তাদের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল।




জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম আনিসা বুশরা

সমন্বিত সাংস্কৃতিক সংসদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সেরাদের সেরা সিজন ৬ এ বিভাগীয় পর্যায়ে আবৃত্তি (ক গ্রুপ) বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে আনিসা বুশরা।

আনিসা বুশরা মেহেরপুর শহরের ফুলবাগান পাড়ার বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ খাঁনের কন্যা ও এস.এম. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আনিসা বুশরার এই সাফল্যে পরিবার, শিক্ষকবৃন্দ ও স্থানীয় শুভানুধ্যায়ীরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন।




দামুড়হুদা ও দর্শনা থানার যৌথ অভিযানে ২ আসামি গ্রেপ্তার

দামুড়হুদা ও দর্শনা থানা যৌথ অভিযান চালিয়ে নাশকতা মামলার এক আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে দর্শনা পৌরসভার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় দর্শনা থানার এএসআই শামীম হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে আবুল হোসেনের ছেলে ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মিলনকে (৪০) গ্রেপ্তার করেন।

পরে দামুড়হুদা ও দর্শনা থানা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে নাশকতা মামলার আসামি দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের লোকনাথপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে জসিম উদ্দীনকে (৪৫) তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, গত এক মাস আগে দর্শনা পুরাতন বাজার এলাকায় ট্র্যাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুইজনকে গতকাল চুয়াডাঙ্গা আদালতে হাজির করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।




 তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানে নতুন উদ্যোগ

কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই, শুধু একটি বায়োডাটা জমা দিয়েই মিলতে পারে চাকরি, এমন আশাতেই জেলার তিনটি উপজেলা থেকে হাজারো তরুণ-তরুণী ছুটে এসেছেন চাকরি মেলায়। আর চাকরি দিতে প্রথমবারের মতো চাকরি প্রত্যাশীদের দোরগোড়ায় এসেছে বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠান।

“এই চাকরি মেলার মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার তরুণরা চাকরির সুযোগ পাচ্ছে, পাশাপাশি কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে ব্যবহারিক ধারণাও অর্জন করছে।” চাকরির আশায় চোখে স্বপ্ন, হাতে বায়োডাটা—এমন দৃশ্যই দেখা গেছে মেহেরপুরের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) ক্যাম্পাসজুড়ে।

‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ উপলক্ষে মেহেরপুরে দুই দিনব্যাপী এই চাকরি মেলায় ভিড় জমিয়েছেন জেলার হাজারো বেকার তরুণ-তরুণী। গতকাল বুধবার সকালে মেলার উদ্বোধনের পর থেকেই চাকরি প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রাণ, আরএফএল, এসিআইসহ দেশের স্বনামধন্য ৯টি বেসরকারি চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলে গিয়ে তরুণরা নিজেদের বায়োডাটা জমা দেন। আয়োজকদের তথ্যমতে, মেলার প্রথম দিনেই জমা পড়েছে প্রায় হাজারেরও বেশি বায়োডাটা। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান সরাসরি ৭০ জন চাকরি প্রত্যাশীর চাকরি নিশ্চিত করেছে। যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিত অন্যান্য প্রার্থীদেরও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে দক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে।

মেলার প্রথম দিনে প্রাণ-আরএফএল, এসিআইসহ তিনটি কোম্পানী থেকে ৭০ জন আবেদনকারীকে চাকুরি দিয়েছেন। আগামীকাল সকাল থেকেই অন্যান্য প্রার্থীদের ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীর প্রতিনিধিরা।

চাকুরি প্রত্যাশী জুলেখা আক্তার, শাহাজান আলী ও আব্দুর রহমান জানান, “চাকরি মেলার মাধ্যমে বেকারদের জন্য একটি ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। অনেকেই এখান থেকে চাকরি পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের মেলার সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত।” তারা এধরনের মেলা প্রতিবছরই করার আহবান জানিয়ে বলেন, এধরণের আয়োজন বেকার যুবক যুবতীদের মাঝে নতুন আশা জাগাবে।

মেহেরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) জব রিপ্লেস অফিসার মেহফুজ আহমেদ বলেন, “মেহেরপুরের প্রত্যন্ত এলাকার তরুণদের জন্য এই চাকরি মেলা নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। শুধু চাকরির সুযোগ নয়, কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্রও তৈরি হয়েছে এমেলার মাধ্যমে।”

আতিথেয়তা, আইটি, নির্মাণ, তৈরি পোশাক, কেয়ারগিভিংসহ বিভিন্ন খাতের ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। আয়োজকেরা বলেন, এই মেলা দক্ষ তরুণুতরুণীদের সঙ্গে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

আয়োজকদের আশা, এই চাকরি মেলার মাধ্যমে অন্তত সাড়ে ছয় হাজার তরুণ-তরুণী তাদের কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে বলে আশা ব্যক্ত করে মেহেরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) অধ্যক্ষ ড. প্রকৌশলী মো. শামীম হোসেন বলেন, “চাকরি মেলার মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। এই মেলা চাকরির পাশাপাশি দক্ষতা ও সুযোগের মধ্যে একটি কার্যকর সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থ’ান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। এছাড়া আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন—দক্ষতাকে টেকসই জীবিকায় রূপান্তরিত করার পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য মেহেরপুরের তরুণসমাজকে কর্মমুখী ও উদ্যোক্তায় পরিণত করা।’




চুয়ান্নটা বিজয় দিবস পেরোলেও বদলায়নি স্বামী সন্তানহীনা মনোয়ারার কষ্টের জীবন

আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি গ্রামের এক কোণে নীরবে বেঁচে আছেন মনোরা। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি আজ সম্পূর্ণ একা। নেই স্বামী, নেই কোনো সন্তান— আপন বলতে কেউ না থাকায় বোনের বাড়িতে মাথাগোজার ঠাঁই হলেও পাইনি ক্ষুধার জ্বালা নিবারন করার দিশা। মানুষের দয়ার ওপর ভর করেই কাটছে তার প্রতিটি দিন। ভিক্ষাই হয়ে উঠেছে জীবনের একমাত্র অবলম্বন।

বার্ধক্যের ভারে নুয়ে পড়া ক্লান্ত শরীর নিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পথে পথে ঘুরে বেড়ান দু’মুঠো খাবারের খোঁজে। কারও দরজায় দু’মুঠো চাল, কারও কাছে সামান্য টাকা —এই সামান্য নিয়েই কোনোরকমে চলে তার দিন। ক্ষুধা, অসুস্থতা আর অনিশ্চয়তা যেন তার নিত্যসঙ্গী। অসুখে পড়লে পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই, রাত নামলেই মাথা গোঁজার মতো নির্ভরতার আশ্রয় বলতে বাঁশ ঝাড়ের নিচে অন্যের জমিতে একটি কুঁড়ি ঘর।

চোখে জমে থাকা অব্যক্ত কষ্ট আর মুখের নীরব দীর্ঘশ্বাস যেন বলে দেয়—এই জীবনে কত না পাওয়া আর বঞ্চনার গল্প লুকিয়ে আছে। সমাজের আলো–ঝলমলে উন্নয়নের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া এমন অসহায় মানুষগুলোর বাস্তব চিত্রই মনোরার জীবনগাথা।

জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও হয়নি বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতা।

মনোরার মতো আরও কত অসহায় স্বামী সন্তানহীন নারী আজও আমাদের চারপাশে নীরবে কষ্ট বয়ে চলেছেন। যাদের জীবনের শেষ সম্বল শুধু মানুষের করুণা আর মানবিকতার অপেক্ষা। প্রশ্ন থেকেই যায়—এই মানুষগুলোর দায় কি শুধুই তাদের নিজের? নাকি সমাজ ও রাষ্ট্রেরও কিছু দায়িত্ব আছে?

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই নামে কোনো বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কোন আবেদন আমার দপ্তরে জমা পড়েনি, আবেদন জমা পড়লে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী শরাফত হোসেন রাসেল বলেন, সমাজে এমন অসংখ্য অসহায় মানুষ আছে প্রায় প্রায় অনাহারে থাকে। এই অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এছাড়াও সমাজের যারা ধনাত্নক ব্যাক্তি আছে তারাও এর দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। প্রতিবেশী অনাহারে থেকেও, যদি আমরা নিজের পেট ভরে শান্তিতে ঘুমাতে পারি—তবে সেটা আসলে ঘুম নয়, ওটা বিবেকের গভীর অচেতনতা। কারণ মানুষের ক্ষুধা শুধু পেটের নয়, মানুষের ক্ষুধা ভালোবাসা, সহমর্মিতা আর মানবিকতারও। পাশের ঘরে কেউ না খেয়ে কাঁদছে, আর আমরা চোখ বন্ধ করে নিশ্চিন্তে ঘুমাই—এই নীরবতাই সবচেয়ে ভয়ংকর।