গাংনী মডেল মসজিদের ইমামকে বরখাস্ত

যুদ্ধাপরাধ মামলায় আমৃত সাজাপ্রাপ্ত দেলোওয়ার হোসেন সাঈদীর জন্য দোওয়া ও মোনাজত করার অপরাধে গাংনী মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ঈমাম হাফেজ মাওলানা ইলিয়াছ হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তি ঈমাম নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মডেল মসজিদের মোয়াজ্জিনকে ইমামতির দায়ীত্ব দেওয়া হয়েছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, গত ১৫ আগষ্ট বরখাস্তকৃত ইমাম মাওলানা ইলিয়াছ হোসেন নামাজ শেষে আমৃত সাজাপ্রাপ্ত দেলোওয়ার হোসেন সাঈদীর জন্য দোওয়া ও মোনাজাত করেন। এঘটনায় গাংনী উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুনতাজ আলী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশ দেন। পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম তাকে দায়ীত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।

এব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক সিরাজুম মনির বলেন, গাংনী মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা ইলিয়াছ হোসেনর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা বির্তকিত মোনাজাতের জন্য গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন। এনিয়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে তার সত্যতা মেলে। পরে সেখান থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দিলে ইলিয়াছ হোসেনকে ইমামতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মাওলানা ইলিয়াছ হোসেন মডেল মসজিদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত নন। মডেল মসজিদ হওয়ার আগে সেখানে থাকা মসজিদের ইমাম তিনি। মডেল মসজিদের জন্য সামনের মাসে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু বলেন, বহিস্কৃত ইমামের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। সেই অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় ইমামকে ইমামতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মসজিদের মোয়াজ্জিনকে ইমামতির দায়ীত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।




কোন সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর কেউ নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না

বাংলাদেশের নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ করার লক্ষ্যে কেউ যেন বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতির আওতায় ফেলেছে বাংলাদেশকে। যদি এমন কেউ ভিসার জন্য আবেদন করে যিনি বাংলাদেশের নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করতে চায় বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনি ভিসা নাও পেতে পারেন।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ভালোর জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে। তবে একথা না বলে উপায় থাকে না যে- যুক্তরাষ্ট্র অন্যদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে এমন আমার জানা নেই। তারা যেকোন সিদ্ধান্ত নেয় নিজের স্বার্থ রক্ষায়। এই প্রক্রিয়ায় তাদের অন্যতম একটি অস্ত্র হলো ‘স্যাংশন’। যেকোন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কোন দেশকে শাস্তি দিতে হলে, বা যুক্তরাষ্ট্র কাউকে শাস্তি দেবে মনে করলে তখন এই অস্ত্র প্রয়োগ করে।

প্রশ্ন হলো, এইটা কোন রাষ্ট্র কখন পারে? বা আদৌ তারা কীভাবে পারে? একক কোন দেশ, অন্য কোন সার্বভৌম দেশের ওপর স্যাংশন দেয়া আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে কাজ করে। তথাকথিত চিন্তা হলো- বিশ্বের সব দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে একটি সংস্থা কাজ করে। সেটি হলো জাতিসংঘ। তাকে পাশ কাটিয়ে কোন একটা দেশ অপর দেশের ওপর যখন তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে চায়, তখন সে তার অস্ত্র হিসেবে স্যাংশনকে ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্র যখন সেই সিদ্ধান্ত নিতে চায় তখন সে খেয়াল করে ওই দেশের সঙ্গে মেজরিটি কান্ট্রি আছে কিনা? সেসব বিচার করে আমেরিকা সিদ্ধান্ত নেয়।

আমি মনে করি, বর্তমানে স্যংশনের নামে যেটা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা আসলে জনগনকে শাস্তি দিচ্ছে। বাংলাদেশের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আপনি স্যাংশন আরোপের কথা বলছেন বা বাস্তবায়ন করছেন ঠিকই, কিন্তু আসলে সেটা যখন করছেন তখন এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে কস্ট দেওয়া হচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশের মানুষের কস্টে থাকার অভিজ্ঞতা আছে। আর এই দেশের মানুষের এও জানা আছে যে, ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলো তা আমেরিকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে।

আমেরিকা আসলে কেন এমন পরিস্থিতি তৈরী করলো? এবার একটু পিছনের দিকে ফিরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে তারা বাংলাদেশের পক্ষ নেয়নি। শুধু তাই নয়, একটি যুদ্ধোত্তর দেশকে সামনে এগোতে নানা বাধা সৃষ্টি করেছিল। নিজের স্বাধীন দেশের জন্যে, বঙ্গবন্ধু যখন কিউবাতে গিয়ে তাঁর চটের বস্তা নিয়ে কাজ করতে চাইলেন তখন আমেরিকা বাধ সেধেছিলো। সেসময় তারা খাদ্য অনুদান দিতো, সেটি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশে চরম খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়। অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই মুহূর্তে খাদ্য ঘাটতি পূরণ করতে না পারায় খাদ্য সংকটে পড়েছিলো এই দেশ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছিল শ্রমজীবী মানুষ। লেখার শুরুতে যেটা বলছিলাম, আসলে শাস্তিটা পায় সাধারণ মানুষ।

অন্যান্য দেশের উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ভেনেজুয়েলাতে তাদের স্যাংশনের কারণে ৪০ হাজার শিশু মারা গিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর একক সিদ্ধান্তে মারা গেলো ৪০ হাজার শিশু! এমন পরিস্থিতি যখন শুধু একটি দেশের ইচ্ছায় হয়, তখন কোন সম্মিলিত বিশ্বব্যবস্থা তা মানতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে এই স্যাংশন অস্ত্র যেভাবে কাজে লাগাতে চাইছে, সেটা আগামীদিনে কতটা কাজে লাগবে তা নিয়ে আমার শঙ্কা রয়েছে। কারণ স্যাংশনে পড়া অনেক দেশ সেটা ভেঙে ফেলতে চাইছে। যেমন ধরা যাক, ইউক্রেনের জন্য রাশিয়াকে যে স্যংশন তারা দিয়েছে, তা কি রাশিয়া মানছে? কিংবা ধরা যাক, উগান্ডা কিংবা নাইজেরিয়ার কথা।

ঠিক একইভাবে, বাংলাদেশে তারা এখন অবাধ সুস্ঠু নির্বাচনের কারণ দেখিয়ে স্যংশনের হুমকি দিল। প্রশ্ন হলো, তারা ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের কথা বলছে বটে, কিন্তু অবাধ পরিবেশ তৈরী করছে কি? বরং দেখা যাচ্ছে, যারা আমেরিকার ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তাদের বশে আনার উপায় হিসেবে স্যাংশন দিচ্ছে। তারা কার ওপর হুমকি দেবে, সেটা নিশ্চিত বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে কারণ, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন অনেকের ভিসাও যে আমেরিকা দেয়নি সেই উদাহরণও আছে।

আরেকটি অমীমাংসিত প্রশ্ন হলো, কারা কী করছে যুক্তরাষ্ট্র কোথা থেকে সে তথ্য নিচ্ছে? সেই তথ্য একপেশে, না গ্রহণযোগ্য সেই বিবেচনা কে করবে? একজন তথাকথিত মানবাধিকারকর্মী আদিদুলের আইনের পথে বিচার হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাথা ব্যাথার কারণ হয় এবং তার পক্ষে সরব অবস্থান নেয়। কিন্তু সেই লোক যে ৬১ লাশের কথা বলে মিথ্যাচার করলো এবং সেই মিথ্যাচার যে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরী করলো, অরাজকতার চেষ্টা হলো, সেটা উল্লেখ না করে, বিবেচনায় না নিয়ে, প্রকারন্তরে সমর্থন দিলো! সেই বিষয়টা অন্ধকারে রেখেই কী বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন হবে?

আসলে খোদ যুক্তরাষ্ট্র দেখতে পাচ্ছে যে এই স্যাংশন নিয়ে রাশিয়া, ইরান, উত্তর কোরিয়া ভাল আছে। মার্কিন নিয়ন্ত্রিত যে অর্থব্যবস্থা, তার বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গড়ে উঠতে শুরু করেছে। ফলে এধরনের অস্ত্রের ব্যবহার, মার্কিনবিরোধী জোট তৈরীতে সহায়ক হবে। এই বোধ আমেরিকার থাকতে হবে। যদিও এ নিয়ে আমি তাদের উপদেশ দিতে চাই না। শুধু বলতে চাই, একপেশে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে, কোন বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেবার জন্য স্যাংশনের মত কোন উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য না। বাংলাদেশের জন্যে ভিসানীতি ঘোষণার পর দেখা গেছে, একপক্ষ আনন্দ নিয়ে উগ্রীব হয়ে আছে। এতেই বোঝা যায় এটি একটি রাজনীতি বিভাজন প্রক্রিয়া। যে কারণে এক পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জেনে খুশি হয়ে যাচ্ছে অন্যপক্ষ।

সেটা কি অবাধ নিরপেক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টিতে সহায়ক? এই পরিস্থিতি সংঘাতের কারণ হতে পারে। সেই দায় কে নেবে? ভুলে গেলে চলবে না যে, আরেক দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কারণে কোন সংঘাত হলে, এর দায় তাদের নিতে হবে। স্যাংশন বিষয়ে ঘোষণা আসার পরে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আবার সুনির্দিষ্ট করে বলছেন, এরমধ্যে গণমাধ্যমও পড়বে। আবার এরপর স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, গণমাধ্যম পড়বে এমনটা এখনও না। এ ধরনের আলাপ তোলা, কোন রাষ্ট্রদূতের জন্যে কতটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার? এই প্রশ্ন আমরা এখন তুলতেই পারি। আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কথা বলার এখতিয়ার বিদেশি রাষ্ট্রের নেই। কিন্তু তারপরেও তারা এটা করছে, কেনো? এক কথায় এর জবাব হতে পারে, তারা এটা করছে শক্তি দেখানোর জন্যে।

তাদের শক্তি দেখানোর আরও একটি উদাহরণ আছে। সেটা হচ্ছে, পিটার হাস আরও বলেছেন, তারা বাংলাদেশের বিচার বিভাগ পযবেক্ষণ করবে। কী অদ্ভুত! তারা কি জানে না, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন? আপনি বিচারককে কীভাবে পযবেক্ষণ করবেন? তিনিতো কাজ করেন আইনের বিধিতে। বাংলাদেশ চলবে বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র বা সংবিধানে। আমেরিকার নিয়মে তো চলবে না। পর্যবেক্ষণের মতো বিষয়গুলো সামনে এনে এরা এসব প্রতিষ্ঠানে রিতীমত বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরী করতে চাচ্ছে।

এখন আমাদের অবস্থান কী হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সে অনুযায়ী অ্যাক্ট করা দরকার। সত্যিকথা বলতে, আমেরিকা মনে করে ভারত মহাসাগরে তার অবস্থান শক্ত করতে হলে বাংলাদেশকে তার লাগবে। কিন্তু বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক ভারসাম্যপূর্ণ, পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী সে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষার কথা বলে। এখন সেটা ভাঙতে চাইলে বাংলাদেশকে নানারকম চাপ দেয়ার বিকল্প নেই। এখন এই অবস্থা বিবেচনা করে করণীয় ঠিক করাটা বাংলাদেশের জন্যে জরুরি।

লেখক: নিরাপত্তা বিশ্লেষক।




মেহেরপুর ও গাংনীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৬

মেহেরপুর সদর ও গাংনী থানা পুলিশের ১২ ঘন্টার নিয়মিত অভিযানে বিভিন্ন মামলা ও আদালতের পরোয়ানাভূক্ত ৬ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন।

এদের মধ্যে সদর থানা পুলিশের অভিযানে আদালতের পরোয়ানাভূক্ত জিআর মামলার ১ ও চুরির মামলায় ২ জন আসামি। এছাড়া গাংনী থানা পুলিশের অভিযানে আদালতের পরোয়ানাভূক্ত জিআর মামলায় ২ ও নিয়মিত মামলায় ১ আসামি রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতের পৃথক সময়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব আসামি গ্রেফতার করেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের পৃথক টিম অভিযান চালিয়ে এসব আসামি গ্রেফতার করেন। পুলিশের সংশ্লিষ্ট থানা সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গ্রেফতারকৃতদের আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।




মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত

“তথ্যের অবাধ প্রবাহে ইন্টারনেটের গুরুত্ব “ প্রতিপাদ্য নিয়ে র‌্যালী ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত হয়েছে।

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা ও র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হাসানের সভাপতিত্বে ও আরডিসি মোছা: রনী খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত “তথ্যের অবাধ প্রবাহে ইন্টারনেটের গুরুত্ব “শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ শামীম হোসেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী কাদের মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, মেহেরপুর তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন ।

এর আগে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র‌্যালী বের হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়ক প্রদক্ষিন শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।




বিশ্বকাপের ১০ দলের স্কোয়াড

ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাকী মাত্র সাতদিন। ১০ দলের এই টুর্ণামেন্টের জন্য ৯ দল আগেই তাদের দল ঘোষণা করেছে। বাকি ছিল শুধু বাংলাদেশ। গতকাল একেবারেই শেষ মুহুর্তে দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ। তার আগে সারাদিন ধরে চলল নানান নাটকীয়তা। দেশ সেরা ব্যাটার তামিম ইকবাল দল নিয়ে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে এই স্কোয়াড নিয়ে নাখোশ ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্ত এখন আর কেউ ইনজুরি ছাড়া দল পরিবর্তনের সুযোগ নেই। দেখে নেওয়া যাক এবারের আসরের ১০ দলের স্কোয়াড।

বাংলাদেশ স্কোয়াড
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত (সহ-অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব।

ভারত স্কোয়াড
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া (সহ-অধিনায়ক), শুবমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল, ইশান কিশান, সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল, মোহাম্মদ সিরাজ, মোহাম্মদ শামি, শার্দুল ঠাকুর, জাসপ্রিত বুমরাহ।

শ্রীলঙ্কা স্কোয়াড
দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুসল মেন্ডিস (সহ-অধিনায়ক), কুসল পেরেরা, পাথুম নিসাঙ্কা, দিমুথ করুনারত্নে, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, দুশান হেমন্থ, দুনিথ ভেলালাগে, মাহিশ থিকশানা, কাসুন রাজিথা, মাথিশা পাথিরানা, লাহিরু কুমারা, দিলশান মাদুশাঙ্কা।

স্কোয়াডের সঙ্গে রিজার্ভ খেলোয়াড় : চামিকা করুনারত্নে।

পাকিস্তান স্কোয়াড
বাবর আজম (অধিনায়ক), ফখর জামান, ইমাম উল হক, আবদুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সৌদ শাকিল, ইফতিখার আহমেদ, আগা সালমান, শাদাব খান, উসামা মীর, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, হাসান আলী।

স্কোয়াডের সঙ্গে রিজার্ভ খেলোয়াড় : মোহাম্মদ হারিস, আবরার আহমেদ, জামান খান।

অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াড
প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ, ট্রাভিস হেড, স্টিভেন স্মিথ, মার্কাস স্টয়নিস, ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স ক্যারি, জন ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যাশটন অ্যাগার, অ্যাডাম জ্যাম্পা, জশ হ্যাজেলউড, মিচেল স্টার্ক ও শন অ্যাবট।

ইংল্যান্ড স্কোয়াড
জস বাটলার (অধিনায়ক), মঈন আলী, গাস অ্যাটকিনসন, জনি বেয়ারস্টো, স্যাম কারান, লিয়াম লিভিংস্টোন, ডাভিড মালান, আদিল রশিদ, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, রিস টপলি, ডেভিড উইলি, মার্ক উড, ক্রিস ওকস।

নিউজিল্যান্ড স্কোয়াড

কেইন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ট্রেন্ট বোল্ট, মার্ক চাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, লোকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, টম ল্যাথাম, ড্যারিল মিচেল, জিমি নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি, টিম সাউদি, উইল ইয়ং।

দক্ষিন আফ্রিকা স্কোয়াড
টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), জেরাল্ড কোয়েটজি, কুইন্টন ডি কক, রেজা হেনড্রিকস, মার্কো ইয়ানসেন, হেইনরিখ ক্লাসেন, আন্দিল ফেলুকওয়ায়ো, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, লুঙ্গি এনগিদি, ডেভিড মিলার, লিজাড উইলিয়ামস, কাগিসো রাবাদা, তাবরাইজ শামসি, রাসি ফন ডার ডুসেন।

আফগানিস্তান স্কোয়াড
হাশমতুল্লাহ শহিদি (অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রিয়াজ হাসান, রহমত শাহ, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, ইকরাম আলিখিল, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, আব্দুল রহমান ও নাভিন উল হক।

নেদারল্যান্ডস স্কোয়াড
স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক), বিক্রমজিত সিং, কলিন অ্যাকারম্যান, শারিজ আহমেদ, ওয়েসলি বারেসি, লোগান ফন বিক, আরিয়ান দত্ত, সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট, রায়ান ক্লেইন, বাস ডি লিডি, পল ফন মিকেরেন, রোলফ ফন ডার মারওয়ে, তেজা নিদামানুরু, ম্যাক্স ও’ডাউড ও সাকিব জুলফিকার।

আগামী ৫ অক্টোবর পর্দা উঠবে ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের। এবারের বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করছে ভারত। ১০ দলের অংশগ্রহণে ১০ ভেন্যুতে ৪৬ দিনে অনুষ্ঠিত হবে ৪৮ ম্যাচ। আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, ধর্মশালা, হায়দারাবাদ, কলকাতা, লখনউ, মুম্বাই ও পুনেতে ব্যাটে-বলে মুন্সিয়ানা দেখাবেন বিশ্বের নামীদামী ক্রিকেটাররা।

৫ অক্টোবর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি হবে আহমেদাবাদে। একই ভেন্যুতে ফাইনাল হবে ১৯ নভেম্বর।

সূত্র: ইত্তেফাক




গুগলের ২৫তম জন্মদিন আজ

বিশ্বের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের ২৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৯৮ সালের এই দিনে স্ট্যানফোর্ডের দুই পিএইচডির ছাত্র ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিনের হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিল সার্চ ইঞ্জিন প্ল্যাটফর্মটি। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভিজিটেড ওয়েবসাইট এটি। শতাধিক ভাষা ও ফি বছর কয়েক হাজার কোটি সার্চের উত্তর দেয় গুগল।

গুগল এখন শুধু একটি সার্চ ইঞ্জিন নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), স্ট্রিমিংভিত্তিক গেম খেলা, এমনকি চালকবিহীন গাড়ি নিয়েও কাজ করছে প্ল্যাটফর্মটি।

জন্মদিন উপলক্ষে গুগল বিশেষ ডুডল প্রকাশ করেছে। এতে তুলে ধরা হয়েছে গুগলের ২৫তম জন্মদিন এবং গুগলের শুরুর দিককার কথা।

শুরুতে এর উদ্যোক্তারা চেয়েছিলেন এমন একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে, যার মাধ্যমে অন্য ওয়েব পেজগুলোর একটা তুলনামূলক তালিকা করা যাবে। এর ভিত্তি হবে অন্য ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে কতগুলো তাদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে।

মজার ব্যাপার হলো- শব্দের বানান ভুল থেকে গুগল নামের উৎপত্তি। গুগল নামটি এসেছে গাণিতিক হিসাবের গোগল (googol) ভুল করে লেখার মাধ্যমে, যার মানে হলো ১ এর পর ১০০টি শূন্য।

এ নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে যে, একজন প্রকৌশলী বা ছাত্র প্রকৃত নামের বদলে এই ভুল বানানটি লিখেছিলেন। সেই ভুল নামই বেছে নিয়েছিলেন ল্যারি ও সের্গেই।

যখন গুগল প্রতিষ্ঠা করা হয় তখন পেজ ও ব্রিন দুজনই ছিলেন তরুণ। পেজের বয়স ছিল ২২ বছর, ব্রিনের ২১।

গুগলের হেডকোয়ার্টার পরিচিত গুগলপ্লেক্স নামে। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত। ২০০১ সালে চালু করা হয় গুগল ইমেজ সার্চ। গুগলের নিজস্ব ই-মেইল সেবা জি-মেইলের কথা ঘোষণা করা হয় ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল। এছাড়া, ২০০৬ সালে গুগল পরিবারের সদস্য হয় ইউটিউব।




ভিসানীতি: বিএনপিকে নির্বাচনে আসতেই হচ্ছে

লেখাটি শুরু করি ২০১৪-২০১৫ সাল থেকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশময় তাণ্ডব করেছিল। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনের আগে পরের সেই তাণ্ডবে মারা গিয়েছিল ২৩১ জন নিরীহ মানুষ। এদের মধ্যে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল ১৬৫জনকে। ওই সময় আহত হয়েছিল ১ হাজার ১৮০ জন। যাদের অনেকে আজও শরীরে ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। সেসময় ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি ট্রেন ও ৮টি লঞ্চে আগুন দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট।

কারণ কী ছিল সেই সহিংসতার? সরকার বলছিল নির্বাচন হবে পৃথিবীর আর ১০টা গণতান্ত্রিক দেশের মত। আর বিএনপি জোটের দাবি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এখনও সরকারে আছে আওয়ামী লীগ এবং নির্বাচন নিয়ে তাদের দর্শন থেকে সরে আসেনি। তত্ত্ববধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসেনি বিএনপি-জামায়াত। নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না ঘোষণা দিয়ে সব নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছে তারা।

ঠিক এই মুহূর্তে রাজনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশি কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত জারি করলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের বরাত দিয়ে তিনি বললেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বাধা দেয়ায় বাংলাদেশি কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কারও নাম না উল্লেখ করে তিনি বললেন, যাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তারা বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচারবিভাগের সদস্য এবং নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য।

যাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে সেসব ব্যক্তি তা তাদের পরিবারের সদস্যরা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। ভবিষ্যতে আরও কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষুণ্ন করা বা এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তারাও এই নীতির আওতায় আসবেন। এই পদক্ষেপ বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সমর্থক।

এর আগে চলতি বছরের ২৫শে মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র। তখন বলা হয়েছিলো যে, এই নীতির আওতায় যে কোন বাংলাদেশি যদি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী হন বা এরকম চেষ্টা করেছেন বলে চিহ্নিত হন। তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।

এই বিধিনিষেধ ঘোষণার পর থেকে নানামুখি প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে নানা মতের মানুষ। এই মুহূর্তে আমেরিকা সফররত খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভিসা নীতি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আওয়ামী লীগেরও চাওয়া। তবে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি বাংলাদেশের বাইরে থেকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে এ দেশের জনগণ ওই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতিও নিষেধাজ্ঞা দেবে। তিনি বলেন, ‘মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগের ঘোষণায় বিরোধীদের কথাও বলা হয়েছে। এবার বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করতে পারবে না। এতে জনগণের জীবন বাঁচবে।’

ভিসানীতি নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু হয়েছে মাত্র। বর্তমান সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি। এই সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, নিজেরা নিজেদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন। এবার ২০২৪ সালে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তারা একইভাবে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। সরকারের লক্ষ্য বিরোধীদলকে বাদ দিয়ে আবারও একটি নির্বাচন করা। বর্তমান সরকার যদি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দেয়, সেই নির্বাচন কখনও সুষ্ঠু হতে পারে না এবং সেটা কখনোই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।”

যুক্তরাষ্টের নতুন ভিসা নীতির নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কিছু বিরোধী দলের নেতার নাম আছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৮ বছর ধরে বিরোধী দলের তো কোন ভূমিকা নেই, তারা এমন কোন কাজ করেনি, যে কাজের জন্য একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে। যেহেতু বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন সরকার গণতন্ত্রকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা বারবার বলছেন বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে হবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী হলে গণতন্ত্র সুষ্ঠু হয়? আজকের নিষেধাজ্ঞাদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পদ্ধতি কী? তারা কী তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানেন? এখানে আরেক দফায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণায় আসতে হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘোষণাটি তিনি দিয়েছিলেন, গত মে মাসের ৩ তারিখে বাংলাদেশ সরকারকে এই ভিসা নীতি আরোপ করার সিদ্ধান্ত জাননোর পর।

আরেকটু সরল করে যদি জিজ্ঞেস করি কেন ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন কেন অংশগ্রহণমূলক হলো না? এর দায় কী শুধু সরকারের? নির্বাচন করা তো সাংবিধানিক দায়িত্ব। সরকার সেই দায়িত্ব পালন করেছে। ২০০৮ সালে জনগণ আওয়ামী লীগকে সংবিধান রক্ষার ম্যান্ডেট দিয়েছিল। ভাঙার দায়িত্ব তো দেয়নি। সেই সময় থেকে বিএনপি-জামায়াত গো ধরেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। তত্ত্বাবধায়ক সরকারতো কোন স্বীকৃত নির্বাচন ব্যবস্থা নয়। পৃথিবীর কোথাও তো এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়নি।

নির্বাচনে বাধা দেয়ার প্রশ্ন যদি ওঠে, সেই কাজটি করেছে বিএনপি-জামায়াত। তারা নির্বাচনে আসেনি। দেশময় জ্বালাও পোড়াও করে মানুষের মধ্যে নির্বাচন ভীতি সৃষ্টি করেছে। যে ভীতি আজও কাজ করে মানুষের মধ্যে। সেসব নিয়ে আজকাল কথা বার্তা কম হয়। কিন্তু প্রশ্ন আসা উচিত ছিল, কেন বন্ধকী গণতন্ত্র জিইয়ে রাখতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত? কেন তারা সুষ্ঠু গণতেন্ত্রে ফিরতে চায় না? কেন তারা ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টে শেখ হাসিনাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করতে চেয়েছিল? চক্রটি চেনার পরেও শেখ হাসিনা কী বার বার তাঁকে হত্যার অস্ত্র হত্যাকারীদের হাতে তুলে দেবে?

যাই হোক, আগামী নির্বাচন এবং নতুন ভিসা নীতির কাছে ফিরে আসি। বিএনপি-জামায়াতের প্রিয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা কোথাও বলেননি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বার বার বলেছেন, একটি অংশগ্রনমূলক নির্বাচনের কথা। বিএনপি নির্বাচনে আসলেই তো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়। সেটা সুষ্ঠু করার দায়তো সরকারের। সেই প্রতিশ্রুতিতো সরকার বার বার দিচ্ছে। নির্বাচনে কী হবে? সুষ্ঠু হবে কী না সেটা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তো মন্তব্য করা যাবে না। কারো বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের উপরতো একটি সংবিধান বা রাষ্ট্র ভর করতে পারে না। যত শক্তিধরই হোক যুক্তরাষ্ট্রতো বাংলাদেশকে সংবিধান ভাঙার পরামর্শ দিতে পারে না নৈতিকভাবে।

ভিসানীতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন কেমন হচ্ছে তা দেখার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে। এখন বিএনপির ভয় পাওয়ার কিছু দেখছি না। আসলে ভিসানীতি দিয়ে নির্বাচনের বল বিএনপির কোটে ঠেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন নির্বাচেনে আসা তাদের দায়িত্ব। এর পরেও যদি তারা না আসে তাহলে ব্লিংকেনের ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া দুর্বল’ করার অপরাধে পড়বে বিএনপি। ফখরুল সাহেবরা নিশ্চয়ই আর সেই অপরাধ করবেন না।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




মেহেরপুরে মাদক মামলায় দুই ব্যক্তির দণ্ড

মেহেরপুর পৃথক দুটি মাদক মামলায় অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদন্ড প্রদান করেছে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহ’র আদালত। একই সাথে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির নির্দেশ প্রদান করেন আদালত।

দণ্ডিতরা হলেন, মেহেরপুর পৌরসভার চক্রপাড়া আঃ জলিলের ছেলে মোঃ রাজু ও নতুন পোস্ট অফিসপাড়া এলাকার মৃত ইউনুসের ছেলে মোঃ জনি।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মেহেরপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ’র আদালত এই রায় দেন।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, জি,আর ৪০০/২১ নম্বর মামলার আসামি মো. রাজুকে ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায় আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর একটি জি,আর ১৬/১৮ মামলার আসামী মো. জনি কে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।




স্বামী প্রধান শিক্ষক হওয়ায় স্কুলে যাননা সহকারী শিক্ষক

স্বামী প্রধান শিক্ষক তাই দিনের পর দিন স্কুলে অনিয়মিত সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন। স্কুলে তার দেখা মিলে শুধুমাত্র অনুষ্ঠানে। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক স্বামীর সাহায্যে বাড়িতে বসে নিয়মিত শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেন। বাড়িতে বসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে এভাবেই বিদ্যালয়ে শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে বেতন তুলে নিচ্ছেন তিনি।

ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার এইচ এস কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা খাতুনের। তাঁর স্বামী ওই একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান। স্বামী প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এমন অনিয়ম দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন আনোয়ারা খাতুন। স্কুলের ক্লাস রুটিনে সপ্তাহে মাত্র দুটি ক্লাসে তার নাম থাকলেও সেসব ক্লাস নিচ্ছে ওই স্কুলের অন্য শিক্ষকরা। এ নিয়ে অন্য শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও আনোয়ারা খাতুনের স্বামী আসাদুজ্জামান প্রধান শিক্ষক হওয়ায় তাদের দাপটে মুখ খুলতে ভয় পায় শিক্ষকরা।

আর শিক্ষার্থীরা আনোয়ারা খাতুন নামের একজন শিক্ষকের কথা জানলেও তাকে শেষ কবে দেখেছে তা সঠিক ভাবে মনে করতে পারেনা। অষ্টম শ্রেণির একজন ছাত্রী জানান, আনোয়ারা ম্যাডাম ক্লাস সিক্সে আমাদের ক্লাস নিয়েছে কয়েকদিন তারপর তাকে স্কুলে আমরা সেভাবে দেখিনি।

নবম শ্রেণির একজন ছাত্র জানান, আনোয়ারা ম্যাডাম শুধুমাত্র অনুষ্ঠানে আসেন। তিনি আমাদের কোন ক্লাসও নেয়না।

দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি মাঝেমধ্যে স্কুলে আসেন কোন প্রয়োজন হলে। আনোয়ারা ম্যাডাম নিয়মিত স্কুলে আসেনা কেন এরকম কথা হলে হেডস্যার বলেন অসুস্থার জন্য ছুটিতে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তার অনিয়মিত স্কুলে আসা নিয়ে কোন ছাত্রছাত্রী মুখ খুললেই তার জন্য কঠিন শাস্তি হবে এরকম ভয়ে প্রকাশ্য আমরা কেউ বলতেও পারিনা।

স্কুলে না আসার বিষয়ে জানতে আনোয়ারা খাতুনের সঙ্গে মুঠোফোনে দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ও আনোয়ারা খাতুনের স্বামী আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে টিফিন পিরিয়ডে ক্লাসে থাকার অজুহাতে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন অফিস থেকে তাকেও একাধিকবার ফোন ও পরিচয় দিয়ে বিষয়টি জানতে চেয়ে এসএমএস পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি এবং অভিযোগ শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। সরকারের বেতন নিবে সে কিন্তু স্কুলে যাবেনা এটা কোন কথার মধ্যে পড়ে না। আমিও জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি বলবো।

মেহেরপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আব্বাস উদ্দিন বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।




ঝিনাইদহে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সংবাদ সম্মেলন

ঝিনাইদহে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি বিভিন্ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলিনায়তনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া আদায়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তাদের দাবি আদায় না হলে আগামী ২ অক্টোবর সারা দেশে একদিনের কর্মবিরতি পালন করবেন। এরপরও তাদের দাবি মানা না হলে ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে।

এ কর্মসুচিতে সারাদেশে সকল সরকারি কলেজ, মাদ্রাসাসহ সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডাররা অংশগ্রহণ করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ঝিনাইদহ জেলা ইউনিটের সভাপতি সরকারী কেশব চন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অশোক কুমার মৌলিক, সহ-সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মাসুদ ইসলাম, সহযোগি অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী, সহকারী অধ্যাপক আবু তাহের, কেন্দ্রীয় নেতা সহকারী অধ্যাপক ইমরান আলী। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় ৭০-৮০ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।