কৃষিতে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য

২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ কোটি ৯৭ লাখ। যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখের কিছু বেশি। অর্থাৎ পাঁচ বছরে দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। কিন্তু এই সময়ে জমি বাড়েনি। এর ওপর করোনা পরিস্থিতি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা। অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করেছিলেন, বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে। কিন্তু বর্তমান সরকারের দূরদৃষ্টি পদক্ষেপ আর কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ্বের গড় কৃষি উৎপাদনকে পেছনে ফেলে উপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ২২টি ফসল উৎপাদনে বিশ্বসেরা ১০ দেশের মধ্যে অবস্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

কৃষিপণ্যে বিশ্বের শীর্ষ দশে বাংলাদেশ
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলমগ্নতা, নদী ভাঙ্গনসহ বৈরী আবহাওয়া; কৃষিজমি কমে যাওয়া; জনসংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বসেরা। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এর হিসেব মতে, আয়তনে বিশ্বে ৯৪তম দেশ হলেও বাংলাদেশ নিম্নোক্ত ২২ ধরনের ফসল উৎপাদনে শীর্ষ দশে অবস্থান করছে।

এফএও এর মোট ১৬২টি প্রাথমিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের তালিকায় বাংলাদেশের ৬৮ ধরনের কৃষিপণ্য স্থান পেয়েছে। এ তালিকায় যেমন একক পণ্য আছে, তেমনি সমজাতীয় ও মৌসুমভিত্তিক কয়েকটি পণ্যও আছে। এফএওর হিসাবে, ২০০১ সালে ১১টি পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ দশে ছিল বাংলাদেশ। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এ সংখ্যা আর বাড়েনি। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে ২০১১ সালে পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ দশে স্থান পায় ১৭টি কৃষি পণ্য। এরপর বিভিন্ন বছরে যোগ হয় আরও পাঁচটি কৃষিপণ্য – পেঁয়াজ, কুমড়া, ফুলকপি ও ব্রকলি, পাখির খাদ্য (বীজ) এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত শিমের বিচি। সব মিলিয়ে ২০২১ সালে ২২টি পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।

২২টি কৃষিপণ্যের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাট, সুপারি ও শুকনা মরিচ উৎপাদনে। চাল, রসুন। চিনি জাতীয় ফসলে (যেমন জোয়ার) বাংলাদেশ তৃতীয়। জাম, বরই, করমচা, লটকন ইত্যাদি বেরিজাতীয় ফল এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত সুগন্ধি মসলায় চতুর্থ। মসুর ডাল ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল (কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি) উৎপাদনে বাংলাদেশ ষষ্ঠ। সপ্তম অবস্থানে রয়েছে পেঁয়াজ, আলু, আদা, বেগুন, শিমের বিচি ও নারকেলের ছোবড়া উৎপাদনে। চা ও কুমড়ায় বাংলাদেশ অষ্টম। আম, পেয়ারা ও গাবজাতীয় ফল, ফুলকপি ও ব্রকলি এবং মটরশুঁটি ও পাখির খাদ্য (বীজ) শ্রেণিতে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।

সব মিলিয়ে এফএওর হিসেবে আয়তনে ছোট (বিশ্বের ৯৪তম) হলেও প্রাথমিক কৃষিপণ্য (শুধু ফসল) উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৪তম। শীর্ষে রয়েছে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। এফএওর তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের পরিমাণ ৯ কোটি ৩৩ লাখ টন যার বাজার মূল্য ছিল ৩ হাজার ৬১১ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় চার লাখ কোটি টাকার সমান।

প্রধান কিছু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ ভালো। আমন, আউশ ও বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনে বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। কৃষির এ সাফল্য সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বে গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় তিন টন। আর বাংলাদেশে তা ৪ দশমিক ১৫ টন। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ শ্রীলংকায় প্রথমবারের মতো চাল রফতানি শুরু করে সরকার। দুই দফায় প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা হয়। এছাড়া ৬ মে ২০১৫ বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প কবলিত নেপালে ১০ হাজার টন চাল সাহায্য হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এটা দেশের চাল উৎপাদনের সামর্থ্যরেই বহিঃপ্রকাশ।

দুই দশক আগে আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ ছিল ২০তম দেশ। এরপর কানাডা, তুরস্ক, পোল্যান্ডের মতো ১৩টি দেশকে একে একে পেছনে ফেলে ৭ নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এফএওর তথ্য বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে আলু উৎপাদিত হয়েছে ৯৮ লাখ টন। মরিচ (শুকনা) উৎপাদনে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এক দশকে চীন ও থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে মরিচ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে প্রায় ১১৩ কোটি মার্কিন ডলার। সবজি, শুকনা খাবার, মসলা, সুগন্ধি চাল ইত্যাদি কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১১৬ কোটি ডলারের বেশি। গেল ১৪ বছরে কৃষিতে যে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে এর অন্যতম কারণ সময়োপযোগী পদক্ষেপ। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেন।

কৃষি উপকরণ সহায়তা: বর্তমান সরকারের প্রবর্তিত কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড ১ কোটি ৮২ লাখ কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে, যা দেশে ও বিদেশে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের অনুসরণে ভারত সরকার কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।

সারের ভর্তুকি ও সরবরাহ: বর্তমান সরকার ভর্তুকি দিয়ে চার দফায় সারের দাম কমিয়েছে। গেল সাত বছরে ৪৫.৪৮ লাখ মেট্রিক টন সার আমদানির বিপরীতে ৪২.৪৭ লাখ মেট্রিক টন সার সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া সার গুদামের ধারণক্ষমতা ৯৮ হাজার মেট্রিক টন থেকে ১.৫৪ লাখ মেট্রিক টন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সেচ ভর্তুকি ও কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট: মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেচের পানির ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়।
কৃষি যন্ত্রপাতির ভর্তুকি: দেশের হাওড় ও চরাঞ্চলে ৭০ শতাংশ এবং অন্যান্য অঞ্চলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টরসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে।

কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম: কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। আউশে প্রণোদনা প্যাকেজও দিচ্ছে সরকার।

দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবন: বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনে শীর্ষে বাংলাদেশ। ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতাও বাড়ছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) বেশ কয়েকটি জাত ছাড়াও এরই মধ্যে পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীগণ মোট ১৩টি প্রতিকূল পরিবেশে সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে লবণসহিষ্ণু নয়টি, খরাসহিষ্ণু দুটি ও বন্যাসহিষ্ণু চারটি ধানের জাত। ২০১৩ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষকগণ। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এতগুলো প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনের দিক থেকেও বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম জেনেটিকেলি মোডিফাইড ফসল বিটি বেগুনের চারটি জাত অবমুক্ত করে। যার মধ্যে বেগুনের প্রধান শত্রু ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধী জীন প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মাধ্যমে আলুর নাবি ধসা রোগের প্রতিরোধী জিন প্রতিস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে।

সমন্বিত কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদান: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দক্ষ, ফলপ্রসূ, বিকেন্দ্রীকৃত, এলাকানির্ভর, চাহিদাভিত্তিক এবং সমন্বিত কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদানের মাধ্যমে সব শ্রেণির কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ, যাতে টেকসই ও লাভজনক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণসহ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, কৃষি তথ্য সংস্থা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন রেসরকারি প্রতিষ্ঠানও দক্ষ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা দিয়ে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নকে তরান্বিত করেছে।

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ই-কৃষি: তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ই-কৃষি এর মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবা কৃষকের জীবনযাত্রা উন্নয়নে খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার জানালা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সারাদেশে ৭২৭টি কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক) স্থাপনের মাধ্যমে কৃষকদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দিচ্ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিস দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে ২৪৫টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) স্থাপন করেছে। এছাড়া ২৮ অক্টোবর ২০১৫ ইনফো-সরকার ২৫৪টি উপজেলার ২৫৪টি আইপিএম/ আইসিএম কৃষক ক্লাবকে এআইসিসিতে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষি তথ্যকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনলাইনে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের ১৬১২৩ নম্বরে যে কোনো মোবাইল থেকে ফোন করে নামমাত্র খরচে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য বিষয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে। মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট অফলাইন/অনলাইনে সার সুপারিশ নির্দেশিকা প্রদান করছে। আখ চাষিরা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে ই-পুর্জি সেবা গ্রহণ করছেন। এমনকি ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেশ-বিদেশের কৃষি তথ্য সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ‘কৃষকের জানালা’ নামক মোবাইল এপস এর মাধ্যমে কৃষকগণ ছবি দেখে ফসলের রোগ ও পোকামাকড় সনাক্তকরে প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে। টেলিভিশন, রেডিও, কমিউনিটি কৃষি রেডিও এর মাধ্যমে কৃষকগণ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা পাচ্ছে।

শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি: দুই যুগ আগেও বাংলাদেশের অর্ধেক এলাকায় একটি ও বাকি এলাকায় দুটি ফসল হতো। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে দুটি ফসল হচ্ছে। সরকারের যুগোপোযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক এবং মেধাবী কৃষি বিজ্ঞানীদের স্বল্প আয়ুষ্কালসম্পন্ন জাত উদ্ভাবণ ও সম্প্রসারণবিদদের সম্প্রসারণ সেবা, ইত্যাদি যৌথ প্রয়াসে দেশে শস্যের নিবিড়তা এখন ১৯৭%, কোন কোন উপজেলায় শস্যের নিবিড়তা এখন ২৫০% এর বেশি।প্রতিবছর আবাদী জমির পরিমান কমে যাওয়া ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও বর্তমান জনগণবান্ধব সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১৩১৪ ডলার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ (এ যাবৎ কালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ)। কৃষিতে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন বিশ্বের যে কোনো উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ।

বাংলাদেশের কৃষির এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং এ দেশের কৃষি ও কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিতকাও অপরিহার্য।

লেখক: অধ্যাপক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।




হরিণাকুণ্ডুতে সুদকারবরীর তকমা লাগিয়ে চাঁদাবাজীর চেষ্টা; সংবাদ সম্মেলন

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু’র শ্রীফলতলা গ্রামের কৃষক আজিবর রহমান ওরফে আজি বক্সের নিকট থেকে অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজির খবর পাওয়া গেছে। নিরীহ এই গ্রাম্য কৃষকের গায়ে সুদ কারবারীর মিথ্যা তকমা লাগিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ভয় দেখিয়ে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইদুল ইসলাম ও সাহেব আলী নামের স্থানীয় দুইজন সাবেক ইউপি সদস্যসহ ইনসান আলী, আশরাফুল আলম, সিহাব আলী নামের কথিত ৩ জন সাংবাদিক। চাঁদার টাকা না পাওয়ায় তারা নানাভাবে হয়রানি করছেন বলে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐ গ্রাম্য কৃষক অভিযোগ তুলেছেন।

গতকাল সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটির কার্যালয়ে ঐ কৃষক এক সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি মোঃ আজিবর রহমান, গ্রাম- শ্রীফলতলা, উপজেলা হরিনাকুন্ডু, জেলা ঝিনাইদহ একজন সহজ-সরল চাষী। আমি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এ বাদে আমার আর কোন পেশা নেই। আমার কৃষিকাজের উপার্জন দিয়ে বহু কষ্টে আমার একটা ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানিয়েছি। আমার আরেক ছেলে বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করছে। সন্তানদের চাকুরীর সুবাদে আমি বর্তমানে অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটা সাবলম্বী।

আমাদের উপজেলাজুড়ে জমি বন্ধক / লিজ দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আমি বর্তমান অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় গ্রামের অনেকেই বিপদে পড়ে আমার কাছে জমি বন্ধক রাখতে আসে। তাদের বিপদের কথা শুনে আমি সরল মনে জমি বন্ধক/লিজ নিয়ে আসছি এটা সত্য। কিন্তু আমি আমার জীবদ্দশায় কখনো কোনদিন সুদের কারবারের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কিন্তু বর্তমানে জেলাজুড়ে সুদে কারবারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলমান থাকায় এর সুযোগ নিয়ে ২ জন জনপ্রতিনিধি ও তিনজন সাংবাদিক আমার গায়ে সুদে কারবারীর মিথ্যা তকমা লাগিয়ে সংবাদ প্রকাশের ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমার নিকট থেকে মোটা অংকের চাদা দাবি করে আসছে।

আনুমানিক ৭/৮ দিন আগে হঠাৎ করেই স্থানীয় সাবেক মেম্বার সাইদুল, সাবেক মেম্বার সাহেব আলী, আজিজুল শেখ ও জামালসহ সাংবাদিক পরিচয়ে ইনসান আলী,আশরাফুল, সিহাব ও শহিদুজ্জামান বাবু নামে কয়েকজন সাংবাদিক মোটরসাইকেল যোগে এসে আমার বিনা অনুমতিতে বাড়িতে প্রবেশ করে।

এসময়য় তারা বলেন,তাদের কাছে নাকি অভিযোগ আছে আমি সুধে কারবারি করে এলাকার মানুষদের নিঃস্ব করে ফেলেছি। আমি তাদের কাছে জমি বন্ধক রাখার বিষয়ে স্বীকার করলেও সাংবাদিক শিহাব, আশরাফুল ও বাবু আমাকে জোর করে সুদের কারবার করার কথা স্বীকার করার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমাকে সুদে কারবারী বানিয়ে নিউজ করা ও থানায় মামলা করার হুমকি দেন। এ সময় স্হানীয় সাবেক দুই ইউপি সদস্য সাইদুল ও বাবু আমাকে আমাকে বলেন, সাংবাদিকদের সাথে ঝামেলা করলে তোমার ক্ষতিই হবে। তার চেয়ে কম-বেশি করে বিষয়টা মিটমাট করে নাও। অপরাধ করা বা না করো সাংবাদিক আসলে তাদের খরচাপাতি দিতে হয়। এ সময় খরচা কত টাকা জানতে চাইলে সাংবাদিক ইনসান বলেন, তুমি মিয়া জাতে সুদে কারবারি। বহু উপর পর্যন্ত তোমার নামে রিপোর্ট আছে। তোমার ছাড় দিলে সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে লাখ দুয়েক টাকা হলে সব ম্যানেজ করে নিয়ে তোমাকে বাচানো যাবে।

আমি দিতে অস্বীকার করায় তারা নিউজ করে দেবে বলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। ঘটনার পরে গত ২/৩ দিন আগে ইনসান সহ আরো ২/৩ জন এসে আবারো ঐ পরিমান চাঁদা দাবি করে।

আমি দিতে অস্বীকার করায় তারা আবারো নিউজ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। সেদিমই ইনসান ০১৯১০৮১৩৫৯৯ নম্বর থেকে কল দিয়ে বলে এই নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা পাঠাও।

আমি তাদের দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ না করায় গত শনিবার হরিণাকুন্ডুতে অভিনব কৌশলে আজি বক্সের সুদের ব্যবসা” শিরোনামে দৈনিক এই আমার দেশ, দৈনিক গড়ব বাংলাদেশ” সহ বিভিন্ন শিরোনামে লাইভ বিডি ঝিনাইদহ (Live BD jhenada) তালাশ টাইমস্ নামে বিভিন্ন আইডি থেকে অনলাইনে তারা মিথ্যা নিউজ প্রকাশ করে।

তাঁরা আমার কাছে কোন অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে, উদ্যেশ্য প্রনোদিত ভাবে এই সংবাদ প্রচার করেছে। তাদের কাজে সামাজের কাছে আমার সম্মান নষ্ট হয়েছে বলে আমি মনে করছি।

এমতাবস্থায় আমি সমাজের কাছে মুখ দেখাতে না পেরে কয়েকবার আত্মহত্যার মত জঘন্যতম পাপ কাজ করার জন্য ইচ্ছে পোষণ করেছিলাম। বিষয়টি আমার পরিবার টের পাওয়ায় যদিও তা সফল হয়নি।

তবে পরিস্থিতির কারণে যদি এমন পথ বেছে নিতে হয় তবে এর জন্য দ্বায়ী থাকবে সাইদুল মেম্বার, কথিত সাংবাদিক ইনসান, শহিদুজ্জামান বাবু, আশরাফুল ও শিহাব।

আমি আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি আমি অ-শিক্ষিত মানুষ হিসেবে সুদে কারবারী বলে যা জানি তা হলো, নগদ টাকা দিয়ে তার লাভ নেওয়া।

আমি তা কখনোই করিনি বা করবোও না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, তার সত্যতা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে সঠিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। এটা আপনাদের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ। আপনাদের আরো অবগত করাতে চাই-আমার নামে যে নিউজের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, সেই ভিডিওতে যাহারা সাক্ষাৎকার দিয়েছে তাদের একজনের কাছ থেকে আমার ৬ শতক জমি বন্ধক রাখা আছে। ভিডিওতে দেখানো বাকিদের সাথে আমার কোন দিন কোন লেন দেন হয় নাই।

আমি গ্রামের একজন পাট ও তামাক চাষি। আমি সারাজীবন চাষ করে আসছি। এই সাবেক মেম্বার সাইদুল ও কথিত সাংবাদিক ইনসান আমার কাছ থেকে চাঁদা নিতে না পেরে,আমি একজন সুদে কারবারি বলে অভিযোগ দিয়ে হরিনাকুন্ডু থানা থেকে পুলিশ এনে আমাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করেছিল।

পরে থানা থেকে আসা পুলিশ সদস্যরা তদন্ত করে আমাকে দোষী প্রমাণিত করতে না পারাই পুলিশ আমাকে গ্রেফতার না করে চলে যায়। আমি এই সাবেক মেম্বার সাইদুল এবং কথিত সাংবাদিক ইনসানের সড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচতে চায়। সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা আমার বিরুদ্ধে করা প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করে এই কথিত সাংবাদিকদের হাত থেকে আমাকে বাঁচতে দিন।




চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ,গ্রেপ্তার শিক্ষক

চুয়াডাঙ্গায় ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীর অভিভাবক চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে পুলিশ শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে গ্রেপ্তার করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান জানান, শিক্ষক শাকিল আরাফাত ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ফরাশপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

তিনি তার চুয়াডাঙ্গার ভাড়া বাড়িতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই বাড়িতে পড়তে গেলে শিক্ষক শাকিল আরাফাত ওই শিক্ষার্থীকে কৌশলে তার বেডরুমে ডেকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। এসময় শিক্ষার্থী শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে চলে আসে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

ওই মামলায় শিক্ষক শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে।




দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম: ইআইইউ’র তথ্য

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম বলে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। সংস্থাটি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দুর্বল অবস্থানে আছে।

সম্প্রতি ইআইইউ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এশিয়ায় আর্থিক ঝুঁকি কমে এলেও পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এখনো উচ্চঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে সে তুলনায় কম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

’নো রিটার্ন টু চিপ মানি’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সুদহারের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এর ফলে ২০২২ সালে ছয়টি দেশ ঋণখেলাপি হয়েছে। চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরও কিছু দেশ ঋণখেলাপি হতে পারে। এর পেছনে অন্যতম কারণ উচ্চ সুদহার।

বাংলাদেশ নিয়ে পূর্বাভাসে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বহির্বিশ্বের অর্থায়নের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। এর পাশাপাশি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি হতে পারে।

তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশের বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ১ শতাংশের বেশি হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে দেশের সরকারি ঋণ কিছুটা পরিমিত হতে পারে, যা হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ শতাংশের কম। এ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারি ঋণ হবে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে পণ্য রপ্তানি, প্রাথমিক আয় ও রেমিট্যান্সের শতাংশ হিসাবে মোট বৈদেশিক ঋণ পরিষেবা ১০ শতাংশের কম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এতে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।

এর আগে ইআইইউয়ের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির একটি হবে। এই তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়াও স্থান পাবে। ফলে চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে।

তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজারের আকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ইলেকট্রনিক ভোগ্য পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি সেবা, টেলিযোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও গাড়ির কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে কোন দেশগুলো চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হতে পারে, তাদের নিয়ে একটি র্যাংকিং করেছে ইআইইউ। সেই র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বাদশ। এক দশক আগে ২০১৩ সালেও এমন একটি র্যাংকিং করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫২তম। অর্থাৎ গত এক দশকে চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ১০ বছরে ৫২তম স্থান থেকে ১২তম স্থানে উঠে আসা এর প্রমাণ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ বছর এবং সামরিক সরকারের পরবর্তী বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ মন্দার কবলে পড়েছিল। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি৷ ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা দেশকে সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমরা স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে দেশ গঠনের কাজে মনোনিবেশ করি। গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারের ধারাবাহিকতা এবং পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির একটি। জিডিপিতে আমরা বিশ্বের ৩৫তম, ২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২০তম জিডিপির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আমরা আশা রাখি।




কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের মাদক বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৩

কার্পাসডাঙ্গা ক্যাম্প পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ১ কেজি গাঁজা ও ইজিবাইকসহ গ্রেফতার ৩। আজ সোমবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের সময় দামুড়হুদা উপজেলা কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্প কতৃক দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে একটি মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্প।

এসময় কার্পাসডাঙ্গা-সুবলপুর রোডে একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারেন একটি ইজিবাইকে একদল মাদককারবারী ইজিবাইকযোগে গাঁজা নিয়ে যাচ্ছেন। এসময় মালেক মিয়ার রায়সা ইট ভাটার সন্নিকট এলাকা থেকে পাকা রাস্তার উপর হইতে ইজিবাইক তল্লাশি করে ১ কেজি গাজা সহ একটি ইজিবাইক ও ৩ জন মাদককারবারীকে গ্রেফতার করেন পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার বেলগাছি গ্রামের মো: রহিম আলী ছেলে মো: জহুরুল ইসলাম(৩৮), জহুরুল ইসলামের স্ত্রী হীরা খাতুন (৩৫), মুক্তার আলীর ছেলে চান মিয়া(২২)।

এই অভিযানে অংশ নেন কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই মো: ইমরান হোসেন সহ এ এস আই মোসলেম উদ্দিন ও এ এস আই সাইদুর রহমান সহ সঙ্গীয় ফোর্স। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গতকালই গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।

বারবার এই মাদকবিরোধী অভিযানে সফল হওয়ায় এলাকায় সুধী মহল ধন্যবাদ জানিয়েছেন কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্প’কে।




চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সাথে হাউলী ইউপি সদস্যদের সাথে মতবিনিময়

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা’র সাথে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সকাল ১১ টার সময় হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবা গ্রহীতারা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়। সে বিষয়ে তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন সেবামূলক কাজ বাল্যবিবাহ মাদক ইভটিজিং থেকে বিরত থাকার জন্য জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে নিজ নিজ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরীর নির্দেশ প্রদান করেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও ইউনিয়নে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ দেন। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য চেয়ারম্যান, সচিব এবং ইউপি সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান করেন।

ইউনিয়ন পরিষদে আগত সেবা গ্রহীতাদের সাথে সর্বদা সদ্ব্যবহার ও দ্রুত সময়ে সেবা দান করার পরামর্শ দেন তিনি। পরে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে আগত সমস্ত সেবা গ্রহীতাদের সাথে কথা বললেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা, জেলা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল আলম মিনহাজ, হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত নিজাম উদ্দিন, ইউপি সচিব নাঈম উদ্দিন সহ পরিষদের সকল সদস্য ও সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




একবার হলেও সত্যের কাছে আসুন

গত তিন/চার দিনের পত্র-পত্রিকা দেখে মনে হচ্ছে আমাদের দেশটা একটা উদ্বেগের দেশ। ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ দায়ে অধিকার নামে একটি সংগঠনের সম্পাদক আদিলুর রহমান এবং পরিচালক নাসির উদ্দিন এলানের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয়ার পর একটা দেশি-বিদেশি চক্রে ঘুরছে এই উদ্বেগ। সময়টা আর্ন্তজালের । তাই তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে ঘৃণা আকারে। মনে হচ্ছে এই শাস্তি ঘোষণার চেয়ে গর্হিত কাজ আর কখনও হয়নি। এর প্রভাব পরিকল্পিতভাবে আরও দূরে নেয়া হচ্ছে।

পাঠক চলেন, আলোচনার শুরুতে যে ঘটনায় আদিলুর এবং এলানের শাস্তি হল সেটা দেখে আসি। ২০১৩ সালের ৫ মে। ওই দিন এবং এর পর দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, হেফাজতে ইসলামীর ব্যানারে সেদিন রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী এসে জড়ো হয় মতিঝিলে। সমাবেশ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় পরেও হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বর ছাড়েনি।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সমাবেশ থেকে শুরু হয় তাণ্ডব। মতিঝিল থেকে শুরু করে পল্টন, বায়তুল মোকাররম, প্রেস ক্লাব, গুলিস্তানসহ অন্যান্য এলাকায় শুরু হয় জ্বালাও-পোড়াও। সরকারের কাছে তথ্য ছিলো, পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করতে হেফাজতের সমাবেশ শেষেও শাপলা চত্বরে থাকতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমান্ড নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশেই হেফাজতের নেতারা মাদ্রাসার ছোট ছোট বাচ্চাদের রাস্তায় বসে থাকার নির্দেশ দেয়। এক পর্যায়ে গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হেফাজত কর্মীদের সরিয়ে দেয় শাপলা চত্বর থেকে। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শাপলা চত্বরের একদিক খোলা রেখে বাকি তিন দিক ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কোনো ধরণের হামলা না করে শুধু সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে তাদের থামিয়ে দেয়।

এই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ে শুরু হয় নানা বিভ্রান্তি। বিএনপি-জামায়াতের নেতা এবং হেফাজতের নেতারা মিথ্যা প্রচার শুরু করেন। তারা বলতে থাকেন মতিঝিল চত্বরে লাশের স্তুপ হয়ে গেছে। হাজার হাজার হেফাজত কর্মীকে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী হত্যা করে লাশ গুম করেছে। তাদের এই অভিযোগের সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আদিলুর ও এলানের ‘অধিকার’।

পুলিশের দাবি, মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ৬১ জন নিহত হওয়ার যে তালিকা প্রকাশ অধিকার দিয়েছে, তা অসম্পূর্ণ অসত্য এবং বিকৃত। গোয়েন্দা পুলিশের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে, যে ৬১ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে, এরমধ্যে পাঁচজনের নাম দুই বার করে এসেছে। চারজন নারায়ণগঞ্জ এবং দুজন চট্টগ্রামের হাটহাজারির গণ্ডগোলে মারা গিয়েছিলেন। একজন মারা যান অসুস্থ হয়ে। নাম আছে কিন্তু ঠিকানা নেই ১১ জনের। নাম এবং ঠিকানা ভুয়া সাত জনের। ১০নম্বর ক্রমিকে কারো নাম নেই। এছাড়া চারজন জীবিত আছেন, তাদের মধ্যে কেউ জেলখানায়, কেউ মাদ্রাসায় পড়ছেন, আবার কেউ চাকরি করছেন।

এমনিতেই ৩৫ জনের নাম বাদ পড়ে, যে ২৬ জন বাকি থাকে, তাদের কারোরই শাপলা চত্বরে পুলিশি অভিযানে মারা যাওয়ার কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তথ্য অনুযায়ী তারা কেউ রাজনৈতিক দলের কর্মী, অফিস কর্মচারী, পথচারী ও পরিবহন শ্রমিক। তাদের পরিবারের কেউ আইনশৃংঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে এসে কোন অভিযোগ করেনি।

এই তালিকার ১ নম্বরে সিদ্দিকুর রহমান নামে একজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তিনি পুলিশের রিক্যুজিশন করা গাড়ির চালক। ৫ মে দুপুরে বায়তুল মোকাররম এলাকায় হেফাজতে ইসলামের হামলায় তিনি মারা যান। হেফাজতে ইসলামের হামলার শিকার হয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা মারা গেলেও অধিকারের তালিকায় তার নাম ছিল না। হেফাজত কর্মীরা ৫ মে সারাদিন যে তাণ্ডব করেছিল, প্রতিবেদনে তার কোনো বর্ণনাও ছিল না।

অধিকারের কাছে এনিয়ে তথ্য চাওয়া হলে তারা কারো ব্যাপারে তথ্য দিতে রাজি হয়নি। পরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ২০১৩ সালে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই ঘটনার প্রায় এক দশক পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
এর পর থেকেই দেশি বিদেশি বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ চলছে। ওইদিন রাতেই ইইউ পার্লামেন্ট , অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকার মার্কিন দূতাবাস উদ্বেগ জানায়। সবার কথায় একই রকম সুর। “মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিবদ্ধ করাটা কোন অপরাধ নয়” “আদিলুর এবং এলানকে অতিদ্রুত মুক্তি দেয়া হোক”। কিন্তু কেউ সরকারি তদন্তের পয়েন্টগুলো উল্টেও দেখছে না। আদিলুরের দেয়া রিপোর্ট মুহূর্তে মহা সত্য হয়ে গেলো।

এত বড় বড় সংস্থা শুধুই উদ্বিগ্ন হলো, তারা যে কেউ একটি রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত রিপোর্ট এবং একটি সংগঠনের রিপোর্টের অমিলগুলো মিলিয়ে দেখলো না? কী অদ্ভুদ! কেউ একটি প্রশ্ন্ও তুললো না! নাম ঠিকানার প্রসঙ্গ না হয় বাদ দিলাম। এই প্রশ্নটা কী উঠতে পারতো না যে, জীবিত চারজনের নাম কেন মৃতের তালিকায়? যে পাঁচ জনের নাম দুইবার এসেছে তারা কেন ৬১তে যুক্ত হয়েছেন? পাঠক আপনারাই বলুন, যারা একটি সত্যিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করবে তাদের জন্যে এসব জবাব দেয়া কী কঠিন?

এখন আমার প্রশ্ন, তাহলে কেন এমন সব সরল প্রশ্নবিদ্ধ রিপোর্ট? কেউ প্রশ্ন তুলবে না নিশ্চিত হলেই কেবল এমন রিপোর্ট আসেতে পারে। এই এক রিপোর্ট ধরেই এখন আমরা নানা সরল কথা বলে ফেলতে পারবো। যেমন দেশ বিদেশে নিন্দার ঝড় তোলার জন্যেই এমন রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। কারা কবে কখন নিন্দা জানাবে সবই ছক কষা ছিলো। যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন এতে আদিলুরের কী লাভ ? তিনি তার দলের প্রতি আনুগত্য থেকে এই মিথ্যাচারের সোপান সাজিয়েছেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি।

কিন্তু যে বিষয়টি একটু চিন্তা করে বের করতে হবে, সেটা হচ্ছে শুধু আনুগত্য প্রকাশই কী আদিলুর চক্রের উদ্দেশ্য? এ জন্যে তো একটা ব্যানার নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ালেই হতো। তাহলে কেন এতো আয়োজন? পাঠক আমাদের আবারও ২০১৩তে ফিরতে হবে। হেফাজতের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? চিন্তা করুন। নিশ্চয়ই আপনারা আমার সঙ্গে একমত তারা আসলে নানা অজুহাতে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করতে চাইছিলেন। ১৯৭১এ যে পাহাড় সমান মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল তার বিচার শুরু করেছিল সরকার। আদিলুররা এসব চক্র সাজিয়ে সেই বিচার বন্ধ করতে চাইছিল। যে রুদ্ররোষ তারা পুষে রেখেছে আজও। আজ আমাদের যেসব বিদেশি বন্ধু বাংলাদেশ নিয়ে একতরফা মন্তব্য করছেন, তাদের জেনে রাখা দরকার, এই আদিলুরদের শেকড় অনেক গভীরে। প্রকাশ্যে বক্তৃতা বিবিৃতি তারা কম আসেন। তাদের মূল অস্ত্র অপপ্রচার অথবা মিথ্যাচার।

সম্প্রতি রিউমার স্ক্যানার নামে একটি আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্ক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে তথ্য উপাত্ত দিয়ে বলা হয়েছে গণমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্যের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণ বলছে, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় চলতি বছর ইন্টারনেটে রাজনৈতিক বিষয়ক ভুল তথ্যের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন জড়িয়ে গত আট মাসে ৭৪টি ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি গণমাধ্যম, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তাদের নেতৃত্বকে উদ্ধৃত করে বা জড়িয়ে ভুয়া মন্তব্য বা তথ্য প্রচারের প্রবণতাও লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার। যার সংখ্যা ২৪টি।

লেখা বড় হচ্ছে । কিন্তু একটি কথা না বলে উপায় নেই। কথাটি আবারো সেই ইইউ ইপি বা অ্যামোনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মত সংগঠনের উদ্দেশ্যে বলা। বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশের উন্নত দেশের সহায়তা সবসময় দরকার। আপনাদের মত প্রতিষ্ঠান যদি কোন বাছ বিচার না করে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন দেয়া প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করে তাহেলে সত্য লজ্জা পায়। আদিলুরের রিপোর্টটি কোন সাধারণ রিপোর্ট নয়। এরকম একটি সত্য রিপোর্ট একটি দেশে অথবা জাতির ভাবমূর্তি মাটিতে মিশিয়ে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট। শুধু তাই নয় এতে আদিলুরদের মত কূটবুদ্ধির মানুষেরা আরও ভয়ঙ্কর মিথ্যাচারে উৎসাহিত হয়। তাই আপনাদের উচিতে একবার হলেও সত্যের কাছাকাছি আসা।

লেখক: গণমাধ্যম কর্মী




গাংনীতে ট্রাকের ধাক্কায় একজন নিহত

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের গাংনীতে ট্রাকের ধাক্কায় আতিয়ার রহমান (৪০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহি নিহত হয়েছেন।

নিহত আতিয়ার রহমান গাংনী পৌর এলাকার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের টেপিপাড়ার আব্দুল আজিজের ছেলে।

সােমবার মাগরিব এর সময় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের গাংনী উত্তরপাড়ার তেঁতুলতলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, আতিয়ার মোটরসাইকেল চড়ে নিজ বাড়ি থেকে গাংনী খানকাহ শরিফ মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। তিনি গাংনী শহরে ঢুকতেই তেঁতুলতলা নামক স্থানে পৌঁছালে, সড়কের পাশে রাখা পাথরের উপর বাইসাইকেলের চাকা উঠে রাস্তার উপর পড়ে যায়।

এসময় পিছন দিক থেকে আসা একটি প্লাস্টিকবাহী ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। ওই ধাক্কায় তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
গাংনী থানার তদন্ত ওসি মনোজিৎ নন্দি এই তথ্য নিশ্চিত করেন। নিহতের মরদেহ থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে




দামুড়হুদা হাউলী ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা 

সেবা ও উন্নতির দক্ষ রুপকার, উন্নয়নে উদ্ভাবনে স্থানীয় সরকার” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৩ উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ  সোমবার বেলা ১২ টার দিকে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে পরিষদ চত্বরে র‌্যালি ও পরিষদের সভা কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সচিব নাঈম উদ্দিন, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম, রিকাত আলী, আব্দুল হান্নান পটু, শাহজামাল, সেলিম উদ্দিন সহ ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সেবা গ্রহীতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে বাংলাদেশে এই প্রথম স্থানীয় সরকার দিবস পালিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সাধারণ জনগণকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ১৭,১৮,১৯ তারিখ এই তিন দিন স্থানীয় সরকার উন্নয়ন মেলা উপজেলা চত্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে আমাদের হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের স্টল রয়েছে। ওই স্টলেও নিরবিচ্ছিন্ন হবে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।




দামুড়হুদায় মাদক বিরোধী অভিযানে ৩০পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক ১

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ৩০পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক সম্রাট কসাই কাজলকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃত আসামি হলেন উপজেলার জয়রামপুর নওদাপাড়ার মোঃ ফজলুল হকের ছেলে খবির উদ্দিন ওরফে কসাই কাজল(৩৮)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে আজ সোমবার বিকাল ৪টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে এস আই আরমান হোসেন ও এএসআই বিপ্লব কুমার দাস সঙ্গীয় ফোর্স সহ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা কালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দামুড়হুদা থানাধীন হাউলী ইউনিয়নের লোকনাথপুর ডিএস আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সামনে চুয়াডাঙ্গা টু দর্শনা গামী পাকা রাস্তার উপর থেকে ৩০পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে আসামি খবির উদ্দিন ওরফে কসাই কাজলকে।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,আটককৃত আসামীর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা পূর্বক আজ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দামুড়হুদা মডেল থানা এলাকায় কোন প্রকার মাদকদ্রব্য কারবারি থাকবে না। জেলা পুলিশের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় মাদক বিরোধী অভিযান চলমান থাকবে।