চুয়াডাঙ্গায় আফরোজা পারভীনের উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ

চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রবিবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজ পারভিন এর নেতৃত্ব এই উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে নৌকায় মনোনয়ন প্রত্যাশি চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভিন এর নেতৃত্ব এই উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করা হয়। এ সময় তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আবারো নৌকা মার্কায় ভোট চান এবং তিনি নৌকার মনোনয়ন পেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা বাসীর উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন ও শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্যও কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভপতি পূর্ণিমা হালদার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ,সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার , সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন ,আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন,সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন, আওয়ামী লীগ কর্মী সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ।




দর্শনার মদনায় প্রবীন সামাজিক কেন্দ্র সমৃদ্ধি কর্মসূচির উদ্যোগে ফ্রি চিকিৎসা প্রদান

দর্শনা পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের প্রবীন সামাজিক কেন্দ্রে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সমৃদ্ধি কর্মসূচির উদ্যোগে চর্ম ও যৌন রোগের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় এ মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন মোঃ সাজ্জাদ হাসান। বাংলাদেশ স্পালাইজড হাসপাতাল ঢাকা থেকে আগত ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের ১৫২ জন চর্ম ও যৌন রোগিকে চিকিৎসা প্রদান করেন।

এ মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দামুড়হুদা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতার্ ডাঃ হেলেনা আক্তার নীপা, পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন প্রবীন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিন, সহ-সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুনতাজ আলী, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, লোকমোর্চার সচিব কানিজ সুলতানা। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন,তরিকুল ইসলাম, লাল্টু রহমান, সাইফুল ইসলাম, মিলি ও জগৎনাথ।




জঙ্গিবাদ বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ করে দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা

নব্বইয়ের দশকের পর থেকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটতে শুরু করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সশস্ত্র জঙ্গিবাদের উত্থানের সর্ববৃহৎ আলামত দৃশ্যমান হয় ২০০৫ সালে জেএমবির ৬১টি জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে। এরপর সারা দেশে ছোট-বড় আরও অনেক সশস্ত্র জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয়। সেখানে ৫ জঙ্গিসহ ২৯ জনের প্রাণহানি ঘটে।

দুই দশকে এসব হামলার শিকার হয়েছেন খোদ বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশকে জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত থেকে রক্ষা করতে তিনি ঘোষনা দেন জিরো টলারেন্সের। এটা যে কোন মুখের কথা ছিলো না তা বাংলাদেশ বুঝতে শুরু করেছে। একের পর এক জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান, একের পর এক নৃশংস হামলার পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন জঙ্গিমুক্ত দেশে পরিণত হতে চলেছে।

নানা চড়াই উৎরাইয়ের পর বিশ্বে জঙ্গিবাদ দমনে যে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ তার ক্যাপ্টেন বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এই সাফল্য অর্জন করেছে। বৈশ্বিক ইনডেক্সে হাই রিস্কের (উচ্চ ঝুঁকি) দেশ থেকে লো রিস্কের (নিম্ন ঝুঁকি) দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তত্ত্বাবধানে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করলেও তা যৌথ বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের মুখে অনেকটা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে।

গোবাল টেররিজম ইনডেক্স (জিটিআই)-২০২৩ প্রতিবেদন অনুযায়ী এর সূচকে বাংলাদেশ তিন ধাপ উন্নতি করেছে। অর্থাৎ দেশে সন্ত্রাসবাদ আরও কমেছে, দেশ নিরাপদ হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ও ভারতের চেয়েও জঙ্গি দমনে ভালো করেছে বাংলাদেশ। জঙ্গিবাদ পুরাপুরি নির্মূল না হলেও জঙ্গি সংগঠনগুলোর মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এখনও অনলাইনে সক্রিয় রয়েছে বেশকিছু জঙ্গি সংগঠন।

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সাল থেকে ২০২৩ সাল গত ২২ বছরে সারাদেশে জঙ্গিবাদ বিষয়ক প্রায় ২ হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ হাজারেরও বেশি জঙ্গি। এসব জঙ্গিরা হচ্ছে জেএমবি, নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলাম, হরকত-উল-জিহাদ হুজি, হিযবুত তাহরির, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে যার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রণয়ন এবং প্রাসঙ্গিক আইন সংশোধন অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০০৯-২০১৩ সালে, ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ পুরোহিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মানবাধিকার কর্মী, ভিন্নমতের ইসলামী মতাদর্শের অনুসারী, আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা এবং বিদেশীদের ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ দেশে জঙ্গিবাদ বিরোধী কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছিল। তবে এখনো পুরনো জঙ্গি সংগঠন জএমবি, আনসার-আল ইসলাম ও হুজিবি সংগঠিত হওয়ার সময়ে অনেক জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। নব্য জেএমবির সর্বশেষ আমির মেহেদি হাসান জন তুরস্কে বসে সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

বাংলা ভাইয়ের সন্ত্রাস, হরকাতুল জেহাদের হুমকি ধামকির বিপরীতে বিশুদ্ধ বাংলাদেশ ও জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কারণে। দেশে এখনো পর্যন্ত জেএমবি, শাহাদাত-ই-আল-হিকমা, জেএমজেবি, হিজবুত তাহরির, হুজি-বি, এবিটি, আনসার আল ইসলাম এবং আল্লাহ দল নামে আটটি জঙ্গি সংগঠনকে বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকারের কঠোর ভূমিকার কারণে দেশের জঙ্গিবাদ নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে।

বলতে দ্বিধা নেই, জঙ্গিবাদ দমনে ২০১৬ সালে গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনার আগে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ পুলিশের তেমন দক্ষতা ছিল না। এরপর গঠন করা হয় পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট, ডিএমপির কাউন্টার-টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম, সাইবার ক্রাইম, ইনভেস্টিগেশন সেন্টার এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ইন্টারসেপশন ইউনিট জঙ্গিবাদ দমনে সরাসরি কাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে জঙ্গিদের তৎপরতা ঠেকাতেও সতর্ক রয়েছে এসব বাহিনী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।’ এ দেশের মানুষ ধর্মীয় উগ্রবাদিতা ও তাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। শিশুদের জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রেখে একটি আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক উন্নত জাতি গঠনে অবদান রাখতে হজযাত্রী এবং আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের (হজযাত্রীদের) এবং আলেম-ওলামাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের শিশুরা এটি থেকে দূরে থাকতে পারে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রস্তুত হতে পারে। শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করছে তারা সব ধর্মেই আছে। ‘যদি কেউ মনে করে যে তারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে, তা কখনোই হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা বলেননি এবং আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তা বলেননি।

তিনি এই কথাগুলো বিশ্বাস করেন বলেনই তার সরকারের প্রথম মেয়াদে (২০০৯-২০১৩) জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। অপরাধ দমন, অপরাধী শনাক্তকরণ, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, মাদকদ্রব্য চোরাচালান রোধ, মানবপাচার রোধ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।




হরিণাকুণ্ডুতে জুয়ার সরঞ্জামসহ ছয় জোয়ারী আটক

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চটকাবাড়িয়া এলাকা থেকে ছয় জুয়াড়িকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহীন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আটককৃতরা হলেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দরিবিন্নি গ্রামের মৃত ইউসুফ হোসেন মণ্ডলের ছেলে পারভেজ হোসেন, হরিশপুর গ্রামের মহিউদ্দিন সরকারের ছেলে আজিজুল হক, পার্বতীপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে এরশাদ আলী, জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের মৃত তোয়াজ আলী মণ্ডলের ছেলে সামছুল মণ্ডল, সদর উপজেলার পবহাটি গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে গোলাম আযম ও কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে সানোয়ার হোসেন।

ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহীন উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার বিকালে আমাদের একটি আভিযানিক দল হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চটকাবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে জুয়া খেলা অবস্থায় ৬ জন জুয়াড়িকে আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ বিশ হাজার ৪৩০ টাকাসহ জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।




আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে কর্মি সভা

আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে কর্মি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জেহালা ফুটবল মাঠে এ কর্মি সভার আয়োজন করা হয়। কর্মি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছেলুন জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন,আওয়ামীলীগের সরকার ক্ষমতায় আসলে উন্নয়ন হয়,আর বিএনপি,জামাত ক্ষমতায় আসলে সন্ত্রাস বাড়ে,তারা যদি আবারও ক্ষমতায় আসে তাহলে আজ ১৫ বছর ধরে আপনারা শান্তিতে ঘুমাচ্ছিলেন সেই ঘুম হারাম হয়ে যাবে,সন্তাস বাড়বে,চান্দা দিতে দিতে জান ক্ষারাপ হয়ে যাবে। শেখ হাসিনা বলেছিল প্রত্যেকটি গ্রামকে শহর করব,করেছে,যদি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন এবং ইলেট্রিসিটি থাকে তাহলে তাকে কি শহর বলবেন না।আজকে জেহালা ইউনিয়নের এমন কোন রাস্তা নেই যে রাস্তায় কাজ হয়নি,মনে করে দেখেন তো আজ থেকে ১৫ বছর আগে ঐ গড়গড়ি থেকে অন্য কোন গ্রামে যেতে গেলে কি অবস্থা হতো,এখন সেই রাস্তাগুলো দেখেন,সব পিচকরন রাস্তা হয়ে গেছে,।

এক সময় এখানকার সব রাস্তায় কাঁচা ছিল আজ সবই পাকা হয়েছে।আমি তো বল্লাম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মানুষের উন্নয়ন হয়, রাস্তা পাকা হয়।পাশে যে স্কুল দেখছেন স্কুলের বিল্ডিং করে দেওয়া হয়েছে,বালিকা বিদ্যালয়ে বিল্ডিং করে দেওয়া সহ ইউনিয়নের স্কুল গুলোতে বিল্ডিং হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সময় সন্ত্রাস ছিল, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাস দমন করা হয়েছে। মানুষ আজ সুখে শান্তিতে বসবাস করছে,রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারে। মনে রাখবেন তৃনমুলের নেতা কর্মিরাই দলের প্রান,তাই তৃনমুলের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে,আপনাদের শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে। সামনে ভোট, এখন অনেক নেতা আসবে ভোট চাবে,টাকা খরচ করবে,আপনারা চিন্তা করবেন না,অবৈধ পথে উপার্জন করা টাকা জনগনের মাঝে বিলাচ্ছে বিলাতে দেন,কারন ঐ টাকায় আপনাদের হক আছে।

আমরা আজ ৬০ বছর ধরে নেতা কর্মিদের পাশে আছি,তাই আজও অনেক গ্রামের নেতাকর্মিদের ঠিকমত নাম মুখস্ত করে রাখতে পারি নি,আর তুমি মিয়াতো বসন্তের কোকিল,দুদিন পর আর তেমাকে খুজে পাওয়া যাবেন। একটা গল্প মনে পড়ে গেল,একজন গরিব মানুষ ভোটের সময় ঐরকম বসন্তের কোকিলের বাড়ি গিয়েছে,পানি খাতি চায়েছে,তো তারা একটা বোতল নিয়ে মুখ খোলার পর ফস করে উঠেছে,ঐলোকতো একটু চমকিয়ে গেছে,যাহোক ঠান্ডা পানি খেয়ে সে চলে গিয়েছে,ভোটের পর একদিন আবার ঐলোক তার বাড়ী গিয়েছে,পানি খাতি চাইলে ওরা কলের পানি নিয়ে আসে দিয়েছে,লোকটা বলছে হাগো বাবারা এবার তো ফস করলো না,তো ওরা বলছে সবসময়কি ফসকরে বাবা। তে এরা হটাৎকরে আসে ফস করাবে, যতপারেন ফস করান,কারন ভোটের পর ওদের আর খুজে পাবেন না,আমি সেলুন আজিবন আপনাদের পাশে ছিলাম ভবিস্যতেও থাকব।

আপনারা যারা দলের কর্মি আছেন আপনারা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চান। ভোট চাওয়ার মত অনেক অর্জন রয়েছে আমাদের। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল তারা আবারও ষড়যন্ত্র করছে। বঙ্গবন্ধুর অপরাধ তিনি সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন,তাই বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকরা হত্যা করে,যারা মুক্তিযুদ্ধ চাই নি তারা স্বড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল,সেদিন মানবাধিকার কোথায় ছিল। আজকে মানবাধিকারের কথা বলেন। আমেরিকা আমাদের উপর ভিসা নিতি করে ভিসা বন্ধ করতে চাই,বঙ্গবন্ধু কন্যা আমেরিকায় বসে বলেছেন,তোমরা আমাদের উপর ভিসা নিতি প্রয়োগ করে ভিসা বন্ধ করলে তোমাদেরও বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে দেব।এর নাম বঙ্গবন্ধু কন্যা বিশ্বনেন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমেরিকা আপনারা বড় দেশ, আপনাদের মত থাকেন, আমাদের উপর লাঠি ঘোরানোর চেষ্টা করেন না। এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন,তৃণমূলের নেতা কর্মিদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ৭১ সালে আমরা তরুনরা যেভাবে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম, আজকে ছাত্রলীগ যুবলীগকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যে কোন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাসানুজ্জামান হান্নানের সভাপতিত্বে কর্মি সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি খুস্তার জামিল, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, মাসুদুজ্জামান লিটু বিশ্বাস,সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, শওকত মিয়া, জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আরেফিন আলম রঞ্জু,চুয়াডাঙ্গা সদর পৌর আওয়ামীলীগের ,সম্পাদক, আব্দুল কাদের, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহসভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা,হামিদুল ইসলাম, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুর রহমান পিন্টু,উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান সালমুন আহমেদ ডন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলম হোসেন,আতিয়ার রহমান, মাসুদ রানা তুহিন, জেলা পরিষদের সদস্য মাসুম,মজনুর রহমান,ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম,বীর মুক্তিযোদ্ধা উম্বাদ আলী,রেফাউল ইসলাম।

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হান্নান মাষ্টারের উপস্থাপনায় আরোও উপস্থিত ছিলেন নাগদাহ ইউপি চেয়ারম্যান এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল জোয়ার্দ্দার, নাগদাহ ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম সোনা জোযার্দার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল, বীর মুক্নুতিযোদ্ধা নুরুজ্জামান লাল্টু, ছাত্রলীগ নেতা গোলাম ছরোয়ার শামিম, বাদসা,রকি প্রমুখ।




আদালতের স্বপ্রণোদিত মামলায় মীর কামরুজ্জামান কারাগারে

মেহেরপুরে আদালতের স্বপ্রনোদিত মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মীর কামরুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন মেহেরপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: তরিকুল ইসলাম।

রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে মীর কামরুজ্জামান সিনিৃয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আদালতের স্বপ্রনদিত মামলার শুনানিতে হাজির না হওয়ার কারনে ১৩ জুলাই মীর কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলো আদলত। এর পর থেকেই মীর কামরুজ্জামান হাইকোর্টের জামিনে ছিলেন। হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে ৩০ আগষ্ট তিনি মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন বৃদ্ধির আবেদন করেন। মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ শহীদুল্লাহ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত তার জামিন বৃদ্ধি করেন এবং জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রদান করে।

উল্লেখ্য, এর আগে মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় মীর কামরুজ্জামানের প্রতারণার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে মেহেরপুর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, শরিয়ত উল্লাহ্ স্বপ্রণোদিত হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এবং পিবিআই কে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।




বঙ্গবন্ধু ও কৃষি ভাবনা

বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে অধিকার আদায়ের নিরবচ্ছিন্ন প্রেরণা যুগিয়েছেন, সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি বিজয়ীর বেশে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসে, নিজেকে সঁপে দেন স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এবং অর্থনৈতিক মুক্তিলাভের সংগ্রাম। এক বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- “আমার চাল নাই, ডাল নাই, রাস্তা নাই, রেলওয়ে ভেঙে দিয়ে গেছে, সব শেষ করে দিয়ে গেছে ফেরাউনের দল”।

যুদ্ধপরবর্তী সময়ে যখন উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের মাঝে কোন আশার আলো দেখতে পাননি, তখন তিনিই সর্বপ্রথম অনুধাবন করেছিলেন, কৃষিনির্ভর এ দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হলে কৃষির উন্নতির বিকল্প নেই। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, বাংলার মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। তিনি দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে “কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও” স্লোগানে সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন।

কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭২-৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারের প্রথম বার্ষিক বাজেটে, ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে ১০১ কোটি টাকা শুধু কৃষি উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। প্রথম বাজেটেই কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে কৃষিখাতে ভর্তুকির ব্যবস্থা করেন। বাজেটে ভর্তুকি দিয়ে বিনামূল্যে কীটনাশক ও সার সরবরাহ করেন। এ ছাড়াও ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষিকর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। কৃষি পণ্য বিশেষ করে ধান, পাট, আখের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ন্যূনতম ন্যায্যমূল্য বেঁধে দিয়েছিলেন। ব্যবস্থা করেছিলেন গরিব কৃষকদের রেশনের।
সহায়-সম্বলহীন ২২ লাখ কৃষক পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন। তাদের পুনর্বাসনে স্বল্পমূল্যে এবং অনেককে বিনামূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশকসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ প্রদান করেন। ১৯৭২ সালে বাংলার ভূমিহীন কৃষকদের জন্য রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে পরিবার প্রতি জমির মালিকানা ৩৭৫ বিঘা থেকে কমিয়ে ১০০ বিঘায় করেন এবং ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করেন। ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নং-১৩৫ এর মাধ্যমে নদী কিংবা সাগরগর্ভে জেগে ওঠা চরের জমির মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে দরিদ্র কৃষকদের মাঝে বণ্টন করেন। বিলোপ করেন হাট-বাজারের ইজারা প্রথা।

কৃষিতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের জন্য ১৯৭৩ সালের ৭ নং আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেন কৃষি ব্যাংক, যাতে কৃষক সহজেই কৃষি ঋণ নিতে পারে। মহাজন ও ভূমিদস্যুদের হাত থেকে গরিব কৃষকদের রক্ষাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়াও কৃষিঋণ মওকুফ, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার ও খাস জমি বিতরণের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

১৯৭২ সালের শেষের দিকে স্বল্পমূল্যে কৃষকদের জন্য ৪০ হাজার অগভীর, ২ হাজার ৯শ গভীর এবং ৩ হাজার শ্যালো টিউবওয়েল স্থাপনের ব্যবস্থা করেন। এর ফলে ১৯৬৮-৬৯ সালের তুলনায় ১৯৭৪-৭৫ সালে সেচের জমি এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩৬ লাখ একরে। সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের পাশাপাশি কেবল ১৯৭২ সালেই ১৭ হাজার ৬১৬ টন উচ্চ ফলনশীল ধান ও গমের বীজ বিতরণের ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও বিশ্ব বাজারের তুলনায় কম মূল্যে সার সরবরাহ করা হয়। এসব পদক্ষেপের ফলে রাসায়নিক সার ৭০ শতাংশ, কীটনাশক ৪ শতাংশ এবং উচ্চ ফলনশীল বীজের ব্যবহার ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বঙ্গবন্ধুর সরকার কৃষকদের মাঝে দেড় লাখ গবাদিপশু ও ৩০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করেন। ১৯৭৩ সালে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প পুনঃউদ্যোমে চালুর ব্যবস্থা করেন। সরকারিভাবে খাদ্য মজুতের জন্য ১৯৭২ সালের মধ্যে ১শ গোডাউন নির্মাণ করেন। কৃষিজ পণ্যের ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের শুল্ক থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে। কৃষি গবেষণা ছাড়া যে কৃষির উন্নতি সম্ভব নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এদেশে কৃষি গবেষণাধর্মী কাজ পরিচালনার জন্য তেমন কোনো সমন্বয়ধর্মী প্রতিষ্ঠান ছিল না। তাই তো ১৯৭৩ সালেই কৃষিতে গবেষণা সমন্বয়ের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। সেই সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে পুনর্গঠিত ও সম্প্রসারিত করেন।

সরকারের কৃষি গবেষণা বিভাগকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনর্গঠনের জন্য তিনিই উদ্যোগ নেন। ১৯৭৩ সালে ১০ নং আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে পুনর্গঠন করেন। সেই সময় তিনি ঢাকার আণবিক গবেষণা কেন্দ্রে কৃষি পারমাণবিক গবেষণা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (ইনা) প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন, যা ১৯৭৫ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (বিনা) হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্থানান্তরিত হয়।

স্বাধীনতার পর জুট অ্যাক্ট-এর মাধ্যমে প্রাক্তন জুট এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউট নামে পুনর্গঠন করেন। তাছাড়া, তিনি ঈশ্বরদীতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট। একই সঙ্গে হর্টিকালচার উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, তুলা উন্নয়ন বোর্ডসহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন শুধুমাত্র কৃষকদের নিকট সম্প্রসারণ সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য। তিনি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের বিদ্যমান কার্যক্রম ও অবকাঠামো সম্প্রসারিত করেন। মৎস্য ও পশুসম্পদের উন্নতির জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়। এছাড়াও দুগ্ধ উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাকে তরান্বিত করতে গড়ে তোলেন মিল্ক ভিটা। একইসাথে ভর্তুকি মূল্যে তিনি কৃষকদের মাঝে ১ লাখ হালের বলদ ও ৫০ হাজার গাভী সরবরাহ করেন। গরিব কৃষকদের মাঝে তিনি সহজ শর্তে ১০ কোটি টাকার ঋণ ও ৫ কোটি টাকার সমবায় ঋণ বিতরণের ব্যবস্থাও করেন।

১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐ নির্বাচনী জোটের অংশীদার হয়ে প্রার্থী হন কোটালিপাড়া-গোপালগঞ্জ আসনে। ঐ জোটের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ২১ দফা কর্মসূচির মধ্যে প্রধান ছয়টি দফাই ছিল কৃষি ও কৃষক শ্রমিকদের ভাগ্যোন্নয়ন ও স্বার্থের কথা। দফাগুলো আরও বিশ্লেষণ করলে নিঃসন্দেহে বলা যায়, ২১ দফা কর্মসূচিই ছিল দেশের কৃষক-শ্রমিক ও কৃষির উন্নয়নের প্রথম রাজনৈতিক দলিল। কৃষি ও কৃষকদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাাভাবনা বেশ তীক্ষ্ম ও প্রকট ছিল বলেই তাঁকে যুক্তফ্রন্ট সরকারের কৃষি, বন, সমবায় ও পল্লীমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

কৃষির প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে অকৃত্তিম ভালবাসা এবং উপলব্ধি তা প্রস্ফুটিত হয়েছিলো ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এক বিশাল জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে। সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- “আমার দেশের এক একর জমিতে যে ফসল হয় জাপানের এক একর জমিতে তার তিনগুণ ফসল হয়। কিন্তু আমার জমি দুনিয়ার সেরা জমি। আমি কেন সেই জমিতে দ্বিগুণ ফসল ফলাতে পারব না, তিনগুণ করতে পারব না? আমি যদি দ্বিগুণও করতে পারি তাহলে আমাকে খাদ্য কিনতে হবে না। আমি চাই বাংলাদেশের প্রত্যেক কৃষক ভাইয়ের কাছে, যারা সত্যিকার কাজ করে, যারা প্যান্টপরা, কাপড়পরা ভদ্রলোক তাদের কাছেও চাই জমিতে যেতে হবে, ডবল ফসল করুন। প্রতিজ্ঞা করুন, আজ থেকে ওই শহীদদের কথা স্মরণ করে ডবল ফসল করতে হবে। যদি ডবল ফসল করতে পারি আমাদের অভাব ইনশাআল্লাহ হবে না”।

কৃষির সার্বিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর যে দূরদর্শী চিন্তাভাবনা ছিল এবং কতটুকু গুরুত্ব দিয়েছিলেন তা ১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া তার ভাষণেই ফুটে ওঠেছিল যা একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে আজও সাক্ষ্য দেয়।

তিনি বলেছিলেন- “কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। সবুজ বিপ্লবের কথা আমরা বলছি। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের যে অবস্থা, সত্য কথা বলতে কী বাংলার মাটি, এ উর্বর জমি বারবার দেশ-বিদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে ও শোষকদের টেনে এনেছে এই বাংলার মাটিতে। এই উর্বর এত সোনার দেশ যদি বাংলাদেশ না হতো, তবে এতকাল আমাদের থাকতে হতো না। যেখানে মধু থাকে, সেখানে মধুমক্ষিকা উড়ে আসে। সোনার বাংলা নাম আজকের সোনার বাংলা নয়। বহু দিনের সোনার বাংলা। বাংলার মাটির মতো মাটি দুনিয়ায় দেখা যায় না। বাংলার মানুষের মতো মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। বাংলার সম্পদের মতো সম্পদ দুনিয়ায় পাওয়া যায় না”।

তিনি আরও বলেছিলেন- “যেভাবে মানুষ বাড়ছে যদি সেভাবে আমাদের বংশ বৃদ্ধি হতে থাকে, তবে ২০ বছরের মধ্যে বাংলার মানুষ বাংলার মানুষের মাংস খাবে। সে কারণেই আমাদের কৃষির দিকে নজর দিতে হবে। আপনাদের কোট-প্যান্ট খুলে একটু গ্রামে নামতে হবে। কেমন করে হালে চাষ করতে হয়, এ জমিতে কত ফসল হয়, এ জমিতে কেমন করে লাঙল চষে, কেমন করে বীজ ফলন করতে হয়। আগাছা কখন পরিষ্কার করতে হবে। ধানের কোন সময় নিড়ানি দিতে হয়। কোন সময় আগাছা ফেলতে হয়। পরে ফেললে আমার ধান নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো বই পড়লে হবে না। গ্রামে যেয়ে আমার চাষি ভাইদের সঙ্গে প্র্যাকটিক্যাল কাজ করে শিখতে হবে। তাহলে আপনারা অনেক শিখতে পারবেন”।

বঙ্গবন্ধু খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছিলেন যে, কৃষিশিক্ষায় মেধাবী শিক্ষার্থী না আসলে এই খাতের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই কৃষিশিক্ষায় আকৃষ্ট করার জন্য ১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু) কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন মঞ্চে আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াদের মতো কৃষিবিদদের চাকরিক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা ঘোষণা করেন। সাথে সাথেই “বঙ্গবন্ধুর অবদান, কৃষিবিদ ক্লাস ওয়ান” ¯স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় সেই সমাবর্তন স্থলটি। তার সেই ঐতিহাসিক ঘোষণার পথ ধরে আজ কৃষিবিদরা সরকারি চাকরিক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন।

শুধু তাই নয়, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষি গ্র্যাজুয়েটদের তিনি কৃষি বিপ্লব সফল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন- “খাদ্য শুধু চাল, আটা নয়; মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, তরিতরকারিও আছে”। কৃষি উন্নয়ন বলতে তিনি শস্য, মৎস্য, পশুপাখি ও বনসম্পদ অর্থাৎ সার্বিক কৃষি খাতের উন্নয়নকে বুঝিয়েছেন। তিনি তার বিভিন্ন বক্তৃতায় আমাদের উর্বর জমি, অবারিত প্রাকৃতিক সম্পদ, পশু-পাখি, মৎস্য, বনাঞ্চল ও পরিবেশের কথাও উল্লেখ করেছেন। এসবের ওপর গবেষণা ও সম্প্রসারণ কর্মসূচির সুষ্ঠু সমন্বয় সাধন করে তিনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের নিদের্শনাও দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন- “খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। আমরা কেন অন্যের কাছে খাদ্য ভিক্ষা চাইব। আমাদের উর্বর জমি, আমাদের অবারিত প্রাকৃতিক সম্পদ, আমাদের পরিশ্রমী মানুষ, আমাদের গবেষণা সম্প্রসারণ কাজে সমন্বয় করে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করব। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার”।

কৃষি উপকরণের বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাচেতনা যা ছিল তা আজ এত বছর পরেও আমাদের আশ্চার্যন্বিত করে। মানসম্মত বীজ উৎপাদন এবং বিতরণ, সুষ্ঠু সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা, বালাই ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা, খামারভিত্তিক ফসল ব্যবস্থাপনা, সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদ, বীজবিষয়ক কার্যক্রম এসবের ওপর সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কেননা তিনি উপলব্ধি করেছিলেন এগুলো যথাযথভাবে না করতে পারলে আমরা অনেক পিছিয়ে যাবো।

বঙ্গবন্ধুর মতোই তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান করেন যে- “এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যে যেভাবেই পারেন, প্রতিটি ইঞ্চি জায়গার সদ্ব্যবহার করবেন”। তিনি আরও বলেন- “বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। তার পরেও বসে থাকলে চলবে না”। কৃষিবিদদের মর্যাদা নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে, কৃষিবিদ ও কৃষকের মর্যাদার প্রতীক পেশাজীবী সংগঠনের প্রাণকেন্দ্র কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন বাংলাদেশ-এর নান্দনিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে জমি বরাদ্দসহ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। সময়ের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারই কৃষক-কৃষিবিদ সহায়কনীতি ও প্রণোদনায় ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩য়, সবজি উৎপাদনে ৩য়, আম উৎপাদনে ৭ম, আলু উৎপাদনে ৮ম, পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম এবং মৎস্য উৎপাদনে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে। আবাদি জমি কমেছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে কৃষি উন্নয়নের এক অনুকরণীয় রোল-মডেলে পরিণত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু আজ নেই, তিনি আছেন বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের মনিকোটায়। পূর্বের ন্যায় সেই খাদ্যের অভাব এখন আর দৃষ্টিগোচর হয় না। কৃষি উৎপাদন ডাবল, ক্ষেত্রবিশেষে তার চেয়েও বেশি হয়েছে। নেই কোন খাদ্য সংকট। খাদ্যশস্যও এখন উদ্বৃত। এ দেশের কৃষক এখন আর শোষিত ও বঞ্চিত নন বরং তারা সম্মানিত। যেমনটি চেয়েছিলেন আজকের এই কৃষি উন্নয়নের অগ্রদূত “বঙ্গবন্ধু”।

ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম (সোহাগ): প্রফেসর, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।




আলমডাঙ্গা আওয়ামীলীগের কর্মি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রুখে দিতে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন মূলক কাজগুলো গণ মানুষের মাঝে তুল ধরতে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ ও সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে আলমডাঙ্গায় কর্মি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় আলমডাঙ্গা টকিজ সিনেমা হলে এ কর্মি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মি সমাবেশে প্রধান অতিথির হিসিবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

প্রথান অতিথির বক্তব্যো দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন,আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকাকে আবারও বিজয়ী করতে কাজ করে যাচ্ছি।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে যে উন্নয়ন করেছেন তা জনগণের মাঝে তুলে ধরতে আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি নৌকা যার আমরা সবাই তার, শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে যে উন্নয়ন করেছে ,আমরা তা জনগণের মাঝে তুলে ধরতে মানুষের কাছে যাচ্ছি। যারা ভোট কেন্দ্রে যায় না,আগামী নির্বাচনে তাদের ভোট কেন্দ্রে যাবার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। ভোট আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার,সেজন্য ভোট দিতে যাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয় তাহলে আমরা ক্ষমতায় যাবো।

তিনি বলেন,আসন্ন নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করবে,তাদের সেই চক্রান্ত আমাদের রুখ দাঁড়াতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই কথাগুলোই আমরা বলছি।
নৌকা মঞ্চের আহবায়ক জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ বাবলুর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অগ্নিসেনা মঈনদ্দীন পারভেজ,পদ্মবিলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, মোমিনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার,কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন টাইগার,খাদিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মন্ডল, গাংনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান ।

জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক চিৎলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কালিদাসপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আবু তালেব,আওয়ামীলীগ নেতা দেবেন্দ্র নাথ দোবে বাবুলাল, বেলগাছি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, জেলা যুবলীগের সদস্য তপন কুমার বিশ্বাস, আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগেরর যুগ্ম আহবায়ক একেএম রাসেল পারভেজ রাজু, বেলগাছি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রেজাউল হক, সাইদ মেম্বার প্রমুখ।




রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইজরা জেয়ার এতো আবদার কেন?

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইজরা জেয়ার আবদার ও বাংলোদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যৌক্তিক অবস্থান। আবদারটি কী ছিলো? আবদার হলো, তিনি বলছেন বৈঠকে তাঁরা রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর তিনটার পরে উজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠকের খবর প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারসংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারির দুটি প্রধান বিষয়ে আলাপ হয়েছে। একটি হলো রোহিঙ্গা সমস্যা ও আরেকটি হলো আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বৈঠকের ঘন্টা দুয়েক পরে বাংলাদেশের মিডিয়ার খবরে ভেসে আসে যে সংবাদ তাহলো- মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার ঘোষণা। বুঝতে সমস্যা হয় না, ঘোষিতভাবে এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন ভিসা নীতির ধারাবাহিকতারই অংশ। বলা হয়, এই নীতি মূলত প্রযোজ্য হবে গণতান্ত্রিক এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর। এরপরে যে প্রশ্নটি সামনে আসে- তবে কী উজরা জায়ার সঙ্গে বৈঠকে এমন কিছু ঘটেছে যা ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণা ত্বরান্বিত করেছে।

প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনায় বসলে সবার আগে যেটি সামনে আসে তাহলো রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইজরা জেয়ার আবদার ও বাংলোদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যৌক্তিক অবস্থান। আবদারটি কী ছিলো? আবদার হলো, তিনি বলছেন বৈঠকে তাঁরা রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তিনি পাশাপাশি এও বলছেন, রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবিকা নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির করতে হবে। এবং পাশাপাশি পাদটীকা হিসেবে যুক্ত করছেন যে, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করার আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দফতরের দ্বিপাক্ষিক কক্ষে ২০ মিনিটের এ বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উজরা জেয়া জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পরিস্থিতি এখনও প্রস্তুত নয়।

আচ্ছা, উজরা জেয়ার যদি মনে হয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পরিস্থিতি প্রস্তুত নয়, সেক্ষেত্রে এককভাবে বাংলাদেশের করণীয় কি? রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা? একটা দেশে বিশেষ পরিস্থিতিতে যে রিফ্যুজি জনগোষ্ঠীকে জায়গা দেওয়া হলো, সাত বছর ধরে তাদের ভালোভাবে টিকে থাকার ব্যবস্থাদি দেখভাল করা হলো, তাদের একার দায়িত্ব সেই জনগোষ্ঠীকে ‘অ্যাবজর্ব’ করে নেওয়া? বাংলাদেশের জন্য সেটা হুমকিরা কিনা, নিরাপত্তাহীনতা আছে কিনা সেসব বিবেচনায় নিবে কে?

জেয়ার সাথে ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বরাবরই বলছেন, যদি প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হয় তবে এ অঞ্চল নিরাপত্তা–হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ, রোহিঙ্গারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান ও মাদক ব্যবসা। রোহিঙ্গারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ‘তারা কি আমাদের ভুলে গেছে?’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক ইভেন্ট আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা কমছে, অন্যদিকে তাদের প্রত্যাবাসনে ধীরগতিতে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বানও জানান তিনি। বাংলাদেশের এই অবস্থানের জন্য কি তাকে চাপে ফেলা যায়? আশ্রয় দিয়ে এতো মানুষের জীবন বাঁচিয়ে বিশ্বমোড়লদের কাছ থেকে এই পরামর্শ কীভাবে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।

২২ সেপ্টেম্বর জেয়ার সঙ্গে বৈঠকে আরেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অংশ না নিয়ে বিএনপিসহ বিরোধীরা দেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। কিন্তু অশান্তি সৃষ্টি না করে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সবার সহযোগিতা জরুরি। এবং প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলেও দৃঢ়তা দেখান। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক এই আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এরপরপরই ভিসানীতি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ঘোষণা আসে। দুটো ঘটনার ধারাবাহিকতায় প্রশ্ন তৈরী হয় এই ভিসানীতি সরকারকে প্রত্যক্ষ চাপে ফেলার কৌশল হিসেবে ছিলো কিনা। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আভ্যন্তরীণ দুই ইস্যুকে ধরে নিষেধাজ্ঞার আওতায় ফেলার প্রতিক্রিয়াও সেকারণে ছিলো বেশ কড়া। ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশও জানে কীভাবে নিষেধাজ্ঞা দিতে হয়, ওরা হয়তো তা জানেন না। তাই আগামী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হলে বাংলাদেশের জনগণও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। আমরা দেখতে চাই, দেশের বাইরে থেকেও যেন কোনো চেষ্টা না হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ফলে সেখানে বলা প্রধানমন্ত্রীর কয়েকটি বাক্য স্মরণ রাখা খুব জরুরি। শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কোনো সুযোগ নেই। আইন লঙ্ঘনকারীদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সংবিধান লঙ্ঘন করে কেউ যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এটি ভুলে গেলে চলবে না। শুধু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্য কেউ বিকল্প উপায়ে ক্ষমতায় আসতে চাইলে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।




মেহেরপুরে বিএনপি’র সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল 

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা বিএনপি।

আজ রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর বিকালে শহরের কলেজ মোড়ে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিলটি এক কথায় জনসমুদ্রের পরিণত হয়।

সমাবেশে মাসুদ অরুণ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া প্রয়োজন। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশের প্রেরণের অনুমতি দিতে হবে। নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। সমাবেশে যে লোক সমাগম হয়েছে, তারা এসেছে ভালোবাসা থেকে। মাসুদ অরুন কখনো টাকা দিয়ে মানুষ আনে না।’

বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুণ। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, সাংগাঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মারুফ আহম্মেদ বিজন, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।