ঝিনাইদহে বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নজরুল ইসলাম (৩৫) নামের এক পিকআপ চালক নিহত হয়েছে।

বুধবার (৪ অক্টোবর) সকালে কালীগঞ্জ-যশোর মহাসড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার আমতলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নজরুল ইসলাম শরিয়তপুর সদর উপজেলা কেয়ারপুর গ্রামের সিরাজুল হক খানের ছেলে।

কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদ জানান, সকালে কালীগঞ্জ থেকে ফুলঝরি সোহাগ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস যশোর যাচ্ছিলো। পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পিকআপ ভ্যানের চালক নজরুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সেখান থেকে নজরুলকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বারোবাজার হাইওয়ে থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম জানান, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছে।




ঢাকায় নিয়োগ দেবে আড়ং

আড়ং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ‘সিনিয়র ম্যানেজার/অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল (কোয়ালিটি কট্রোল) ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।

যোগ্যতা

প্রার্থীকে স্নাতক/বিএসসি (অ্যাপারেল/টেক্সটাইল) পাস হতে হবে। নারী ও পুরুষ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

কর্মস্থল

ঢাকা।

আবেদন প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীরা career.aarong@brac.net আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের সময়সীমা

১৫ অক্টোবর ২০২৩

সূত্র : বিডিজবস




ইউটিউবের অফিসিয়াল পেজে প্রথম বাংলাদেশি রাফসান

জনপ্রিয় ইউটিউবার ইফতেখার রাফসান ফুড ভ্লগিং দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ট্রাভেল ভ্লগিং, মডেলিংয়েও এখন তিনি বেশ পরিচিত। ইতিমধ্যে ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’ নামেই তাকে চেনে সবাই। সম্প্রতি রাফসানের ইউটিউবের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দুটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে। ওই পোস্টে বলা হয়েছে, দ্য ছোটভাই বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গা থেকে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এছাড়া মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে ওই পোস্টটিই নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন রাফসান। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ইউটিউবের ফিডে স্থান পেয়েছেন।

রাফসান দ্য ছোটভাই ফেসবুক পোস্টে বলেন, আমি কী স্বপ্ন দেখছি? ইউটিউব তাদের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রামে আমাকে নিয়ে পোস্ট করেছে! ইউটিউবের অফিসিয়াল ফিডে প্রথম বাংলাদেশি! আলহামদুলিল্লাহ।

পোস্টে তিনি আরও বলেন, যখন আমি ভিডিও বানানো শুরু করি, তখন থেকেই আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চেয়েছিলাম এবং এই পর্যায়ের স্বীকৃতি পেতে চেয়েছি! ছবির ক্যাপশনটিই আমার লক্ষ্য।

এসময় রাফসান আরও লেখেন, একজন ছোট মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য আপনাদের প্রত্যেককে অনেক অনেক ধন্যবাদ।




গাংনীতে দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

এক শিফটের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কর্মস্থলে হাজির থাকা নিয়ম শিক্ষকদের। কিন্তু এ নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রুহিনা খাতুন ও শাম্মীয়ারা দীপ্তি। শুধু নিয়মমত উপস্থিতিই না, ক্লাস না নেওয়া ও শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ক্ষমতা দেখিয়ে নিজের মত চাকরি করছেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে তারা এসকল অনিয়ম করলেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেন না কেউ।

সহকারি শিক্ষক রুহিনা খাতুনের স্বামী পাবনা জেলার ঈশ্বরদি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং শাম্মীয়ারা দীপ্তি বিদ্যালয়ের পাশেই একজন গ্রাম্য চিকিৎসকের স্ত্রী। দুজনই স্বামী ও আত্মীয় স্বজনদের ক্ষমতা দেখিয়ে মাসের পর মাস এ অনিয়ম করে চলেছেন।

বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গত রবিবার দুপুরে দিকে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান এ প্রতিবেদক। টিফিন টাইম শেষ করে স্কুলের পুরাতন ভবনের নিচতলায় তৃতীয় ও চতৃর্থ শ্রেণীর ক্লাস নিচ্ছেন দুই শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকসহ আরো ৪ জন শিক্ষক বসে গল্প করছেন । অথচ নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ৫ম শ্রেণীর নির্ধারিত শিক্ষক ছুটিতে থাকায় ক্লাস হচ্ছে না। ৫ম শ্রেণীতে ১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ওই দিন চারজন অনুপস্থিত ছিলো। শ্রেণী কক্ষ থেকে বের হয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিবেদককে উদ্দেশ্যে করে বলে স্যার আপনার সাথে কথা আছে। তাদের কথা শুনতে গিয়ে তারা দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ বলতে থাকে অবলিলায়। শিক্ষার্থীরা জানায়, শাম্মীয়ারা ম্যাডাম মাসে কয়েকদিন ক্লাস নেন। ঠিকমত বোঝাননা। কিছু বলতে গেলে শিক্ষার্থীদের অভিশাপ দেন আর বলেন, আমার ছেলের পা ধুয়ে পানি খাওয়া দরকার তোদের। অভিযোগের এক পর্যায়ে তারা সমাজ ম্যাডাম রুহিনা খাতুনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দেন। তিনিও মাসে কয়েকদিন ক্লাস নেন। এসে টেবিলের বেঞ্চের উপর পা তুলে বসে থাকেন। কোন কোনদিন টেবিলে ঘুমিয়ে নেন। বেশির ভাগ দিন স্কুলেও আসেননা বলে অভিযোগ তাদের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে নিচে নামতেই দেখা যায় টিফিনের পরে আড়াইটার সময় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করছেন সহকারী শিক্ষক শাম্মিআরা দীপ্তি। অথচ টিফিন সময় শেষ হয়েছে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে। জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আজকে একটু দেরি হয়ে গেছে বলে চুপ করে থাকেন। কিন্তু অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে ও শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলা জানা গেলো তিনি প্রায়ই দেরি করে আসেন। এমনকি মাঝে মাঝে টিফিনের পর আসেন না।

অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষককে নিয়ে একই অভিযোগ করে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাও। তারা জানায়, রহিনা খাতুন ম্যাডাম মাঝে মাঝে তার বোনকে নিয়ে আসেন ক্লাসে। বোনের সাথে মোবাইলে গেম খেলেন। পড়া নিয়ে কিছু বলতে গেলেও ধমক দেন।

অভিযুক্ত রহিনা খাতুনের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ঠিক না। আমি ঠিকমত ক্লাস নিয়ে থাকি। মাঝে মাঝে ছোট বোনকে নিয়ে আসি ঠিক, তবে গেম খেলিনা।

তবে প্রধান শিক্ষক মোছা: নুরুন্নাহার খাতুন অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, আমি কিছু বললেও আমার কথা কেউ শোনে না। কোন শিক্ষক ছুটিতে থাকলে আমি ক্লাস নিলে সেই ক্লাস হয়, অন্য কোন শিক্ষক ক্লাস নেননা।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আশরাফুল আলম খান বলেন, সহকারি শিক্ষক রুহিনা খাতুন ও শাম্মীয়ারা দীপ্তির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা আমিও কিছুটা জানি। গত মাসের মাসিক মিটিংয়ে এ নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

গাংনী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: নাসির উদ্দিন বলেন, সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের কর্মকর্তাকে নিয়ে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন প্রধানশিক্ষক সহ ৮ জন। কিন্তু এত কম শিক্ষার্থীদের জন্য ৮ জন শিক্ষক থাকলেও বিদ্যালয়টি ঠিকমত ক্লাস হচ্ছে না।




ছুটির দিনে কী করবেন? জানাবে মেটা এআই

মেটা তার মেসেঞ্জার পরিষেবায় ব্যবহার করার জন্য চ্যাটবট নিয়ে আসছে। এই চ্যাটবট হবে ‘ব্যক্তিত্বসম্পন্ন’। ছুটির দিনে কী করবেন? কী রান্না করবেন? বিশেষজ্ঞ হিসেবে এমন পরামর্শও দেবে এই চ্যাটবট। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মেটা’র এক ইভেন্টে জুকারবার্গ বলেছিলেন, ‘এআইয়ের জন্য একটি আশ্চর্যজনক বছর! চ্যাটবটগুলো এখনও ‘সীমাবদ্ধতার সাথে’ কাজ করছে।’

প্রতিষ্ঠানটি তার চ্যাটবটকে ‘মেটা এআই’ বলে পরিচিত করছে। যা মেসেজিংয়ে ব্যবহার করা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যবহারকারীরা ‘মেটা এআই’-এর কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারবেন।

জুকারবার্গ বলেছেন, ‘এটি কেবল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আসবে না। এটি বিনোদনের অনুষঙ্গ হবে।’

মেটা জানিয়েছে, এনএফএল তারকা টম ব্র্যাডি ‘ব্রু’ নামে একটি এআই চরিত্রে অভিনয় করবেন। ক্রীড়া বিতার্কিক এবং ইউটিউব তারকা মিস্টার বিস্ট ‘জাচ’ চরিত্রে অভিনয় করবেন। জুকারবার্গ বলেছেন, ‘বটগুলো কী উত্তর দিতে পারে সে সম্পর্কে এখনও ‘অনেক সীমাবদ্ধতা’ রয়েছে।’

খুব শিগগিরই এই চ্যাটবট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাথমিকভাবে চালু হবে। এদিকে মেটাভার্স নিয়েও কাজ করছেন মার্ক জুকারবার্গ। একটি ভার্চুয়াল বিশ্ব তৈরিতে এখন পর্যন্ত কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন তিনি। মেটা ইতোমধ্যেই তার নতুন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট-কোয়েস্ট ৩ ঘোষণা করেছে। আগামী ইভেন্টে এ নিয়ে আরও বিস্তারিত প্রকাশ করবে।




দুই রানের জয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে কোয়ার্টার ফাইনালে মালয়েশিয়াকে দুই রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার (৪ অক্টোবর) চীনের জিজিয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।

প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান সংগ্রহ করে সাইফ হাসানের দল। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় মালয়েশিয়া।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চরম ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ৩ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর সাইফ হাসান ও আফিফ হোসেন মিলে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।

তবে দলীয় ৪১ রানে ১৪ বলে ২৩ রান করে আউট হন আফিফ। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন শাহাদত হোসেন। সাইফের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তিনি।

এরপর ক্রিজে আসা জাকের আলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস শেষ করে আসেন সাইফ। জাকের ১৪ বলে ১৪ ও সাইফ ৫২ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। মালয়েশিয়ার পক্ষে বিজয় পাভনদিপ সিং নেন ২টি উইকেট।

১১৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটান ভালো করতে পারেনি মালয়েশিয়া। দলীয় ৩৮ রানের মধ্যে চার ব্যাটারকে হারায় তারা। এরপরও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে মালয়েশিয়া।

দলের পক্ষে একাই লড়াই করেন ভিরান্দিপ সিং। ৩৯ বলে ৫২ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রান করে মালয়েশিয়া। ফলে ২ রানের জয়ে শেষ চারে পা রাখে টাইগাররা।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে দুই ব্যবসায়ীর জরিমানা

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মেহেরপুর জেলা কার্যালয়ের পরিচালিত এক অভিযানে ২টি প্রতিষ্ঠানের মালিকে ২২ হাজার টাকা জরিমানা করা সহ জব্দকৃত মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নকল কসমেটিকস পণ্য জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়েছে।

বুধবার (৪ অক্টোবর) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মেহেরপুর জেলা কার্যালয় কর্তৃক সদর উপজেলার আমঝুপি ও চাঁদবিলে কসমেটিকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠানে তদারকিতে অভিযান পরিচালিত হয়।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক এবং মেহেরপুর পুলিশ লাইনের একটি টিমের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করেন মেহেরপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।

এসময় আমঝুপি বাজারে মেসার্স হালিমা স্টোর নামক একটি কসমেটিকসের দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ কসমেটিকস সহ আমদানিকারকের স্টিকার বিহীন অবৈধ কসমেটিকস পাওয়া যায়। পুর্বে সতর্ক করার পরও মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অবৈধ কসমেটিকস বিক্রয়ের অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক শিহাব উদ্দিনকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৭ ও ৫১ ধারায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং অপর একটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভাই ভাই কসমেটিকসকে শিশুদের নকল জনসন এন্ড জনসন তেল এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অবৈধ কসমেটিকস বিক্রয়ের অপরাধে মালিক আহসান হাবিবকে ৪১ ও ৫১ ধারায় ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এসময় জব্দকৃত মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নকল ভেজাল কসমেটিকস পণ্যগুলো জনসম্মুখে নষ্ট করা হয় এবং সবাইকে ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা সহ সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।




শেখ হাসিনায় আস্থা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ইস্যু। বলা হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকারের প্রশ্নে দেওয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ রক্ষা করেনি। পাশাপাশি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও দাবি আদায়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে কেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে হৈ চৈ? গেল ১৫ বছরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা কিছুই কী নিশ্চিত হয়নি? সনাতন ধর্মালম্বীরা কী সত্যিই ভালো নেই? ১৯৭৫ সাল থেকে ২০০৮ সালের মতো দলে দলে দেশান্তরি হচ্ছে? সংসদে কী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পর্যাপ্ত প্রতিনিধি নেই?

দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকারের প্রশ্নে দেওয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ রক্ষা করেনি—এমন অভিযোগ তুলেছেন সংখ্যালঘু নেতারা। অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন এবং সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতিও ছিল আওয়ামী লীগের ইশতেহারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। এপ্রসঙ্গে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের বক্তব্যে বলা হয়েছে, অবজ্ঞা, অবহেলা ও সংখ্যালঘুদের নাগরিক হিসেবে গণ্য না করার মানসিকতা থেকে এসব দাবি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল- একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করে সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা। এছাড়া প্রতিশ্রুতি ছিল – অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত স্বত্বাধিকারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা; বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন। এসব দাবি বহু দিন থেকে করে আসছিল বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা।

বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য করা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন অনেকে। এসব দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনও করছে কয়েকটি সংগঠন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আড়াই লাখ মানুষের স্বাক্ষরসংবলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছে। এছাড়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১২ এপ্রিল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে ১৭ জুলাই বৈঠক করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও তার নেতৃত্বে সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর ঐক্যমোর্চার নেতারা। পাশাপাশি সরকারকে চাপ দিতে আগামী ৪ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

আওয়ামী লীগ সরকার কী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কী কিছুই বাস্তবায়ন করেনি? আসুন পরিসংখ্যান দেখা যাক, বর্তমান সরকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য কী করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য দীর্ঘ ৬০ বছরের পুরানো সমস্যা মিটিয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরকে দেড় বিঘা জমি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি মালিকানা দেওয়ার ক্ষেত্রে হেবা আইনের নিয়মমাফিক নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে সম্পত্তি হস্তান্তর করার সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে। হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রি আইন; শত্রু সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন করা হয়েছে। মন্দির সংস্কার, মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম করছে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট। খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এবং সালের বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট একই ভাবে কাজ করছে।

আগে সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন মাত্র দুজন। এখন সংসদে সদস্য ২৩ জন। বিগত সরকারের সময়ে শুধু নামের কারণে অনেক যোগ্য ব্যক্তিকেও চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, নিয়োগ হলেও পদোন্নতি হয়নি। জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে অংশীদারত্ব ও প্রতিনিধিত্ব গত ১৪ বছরে এ ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। আগের চেয়ে প্রশাসনে সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য কেউ ছিলেন না, এখন হচ্ছেন। বর্তমান সরকারের সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে প্রধান বিচারপতি হয়েছেন।

মূলত অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত স্বত্বাধিকারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ, সেটিই শুধু বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অনুন্নত সম্প্রদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বেশিরভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে। যেমন- তিন পার্বত্যজেলার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্য রাখা; ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জমি, জলাধার ও বন এলাকায় অধিকার সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ; ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত ও চা-বাগান শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা; ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও অন্য সম্প্রদায়ের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনধারার স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণ করা।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এখন প্রধান দাবি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা। যদিও এবিষয়ে মতামত জানতে সংগঠনটির নেতাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনাও দিয়েছেন। তখন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, অত্যন্ত হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐক্য পরিষদের পক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বিগত ১৪ বছরে দেশের যে প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে তার প্রশংসা করার পাশাপাশি ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যাসমূহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রিক জটিলতা থাকে। আর তার দুর্নাম বইতে হয় সরকারি দলকে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যে প্রতিশ্রুতি আছে, তার প্রতিটি বিষয় নিয়ে কাজ চলছে। যেমন আইনগুলো প্রণয়ন করা, কোনোটা সংসদে আছে, কোনোটা আইন মন্ত্রণালয়ে আছে, কোনোটা বিল আকারে পেশ হয়েছে, কোনোটা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পেন্ডিং (ঝুলে) আছে।

জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন না হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য কিছুই করেনি তা বলা ঠিক হবে না। কারণ জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন কীভাবে গঠন করা হবে, এর পরিধি বা কাজ কী হবে নানান বিষয় জড়িয়ে আছে। সবাই দাবি জানিয়েছে কিন্তু কেউ এর রূপরেখা দেয়নি যে কেমন হতে পারে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন। তাই সরকারকে নানা উপায় ও পথ দেখতে হচ্ছে।

ভারতে ১৯৯২ সালে ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটিস (এনসিএম) গঠন করা হয়। এই কমিশন সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের অগ্রগতি মূল্যায়ন করে। সংবিধানে প্রদত্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করে। কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার কর্তৃক সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কার্যকর সুপারিশ করে। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে কোনো বৈষম্যের কারণে তৈরি হওয়া সমস্যা নিয়ে গবেষণা করে এই কমিশন। এছাড়া সংখ্যালঘুদের আর্থ-সামাজিক ও শিক্ষাগত উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যয়ন, গবেষণা ও বিশ্লেষণ পরিচালনা করে। এছাড়া ভারতে রয়েছে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। যার অধীনে রয়েছে, সংখ্যালঘু জাতীয় কমিশন, জাতীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও অর্থ অধিদপ্তর, হজ কমিটি, মৌলানা আজাদ শিক্ষা ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ওয়াকফ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লি., দর্গা খাজা সাহেব আজমীর, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল, ভাষাগত সংখ্যালঘুদের কমিশনার।

পাকিস্তানেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের জন্য আলাদা কমিশন আছে। ২০১৪ সালে পেশোয়ার গির্জায় বোমা হামলার মামলার পর পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সংখ্যালঘুদের জন্য একটি জাতীয় কাউন্সিল গঠন করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল। পরে ২০২০ সালে গঠন করা হয় পাকিস্তান ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটিজ। তিন বছর মেয়াদের এই কমিশনে চেয়ারম্যানসহ ছয়জন সরকারি এবং ১২ জন বে-সরকারি সদস্য রয়েছে। বেসরকারি ১২ জনের মধ্যে রয়েছে ২ জন মুসলমান, ৩ জন হিন্দু, ৩ জন খ্রিস্টান, ২ জন শিখ, ১ জন পার্সি এবং ১ জন কালশা সম্প্রদায়ের। যদিও এই কমিশনের খুব বেশি ক্ষমতা নেই। কারণ এটি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন। এছাড়া সংখ্যালঘু কমিশনে দু’জন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সদস্য করায় সমালোচনাও হয়েছে।

আমাদের দেশে কীভাবে গঠন করা হবে সংখ্যালঘু কমিশন, তার ক্ষমতাই বা কী হবে, পাকিস্তানের মতো নখ-দন্তহীন সংখ্যালঘু কমিশন নাকি ভারতের মতো হবে এনিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে। সংখ্যালঘু কমিশনের ক্ষমতা-কর্মপরিধি ইত্যাদি বিষয়ে একটি রূপরেখা তুলে ধরা দরকার। এই কাজটি করতে পারে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ যে কোনো সংগঠন। পাশাপাশি তৈরি করতে হবে জনমত। এজন্য এগিয়ে আসতে হবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সব সংগঠনকে। পাশাপাশি সংসদে যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব করেন তাদেরও অনেক দায়িত্ব আছে। এছাড়া যারা দেশের মানুষের মধ্যে সাম্য চান, যারা বাংলাদেশের সম্প্রীতি চান তাদেরও সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। শুধু সরকারের গুণগান করলেই হিতৈষী হওয়া যায় না। সরকারের অঙ্গিকারগুলো স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং সেগুলো বাস্তবায়ন না হলে জনগণের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে দেওয়া হিতৈষীদের অন্যতম কর্তব্য।

সংখ্যালঘুদের জন্য কেউ যদি আন্তরিকতার সাথে কিছু করে থাকে যেটি আওয়ামী লীগ করেছে। এজন্য এখনো দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে নিজের যতটা অধিকার, ঠিক ততটাই অধিকার দেশের প্রতিটি ধর্মের মানুষের। তাই নিজেদের সংখ্যালঘু না ভেবে দেশের নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার নিয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




ফরহাদ হোসেনকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার দাবী

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপিকে আগামী সংসদ নির্বাচন েেদলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার দাবীতে একাট্টা ঘোষণা করেছেন নেতারা।

মঙ্গলবার বিকালে মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তিকে দূর্বলকারী, দল ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী চক্রের প্রধান পৃষ্ঠপোষক , আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভীতি প্রদর্শণ ও ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের কুশিলব ,দুর্নীতি , স্বজনপ্রীতি ও পারিবারিক করণের একমাত্র দলবিরোধী সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনকে আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার দাবী জানান নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে মিয়াজান আলী বলেন, মেহেরপুরে আওয়ামী লীগকে এক ব্যক্তি ঘরবন্দী করে রেখেছেন। তবে সময় এসেছে আওয়ামী লীগকে আবার রাজপথে সক্রিয় করার। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেনের হাতে নেতৃত্ব চলে যাওয়ায় দলের ত্যাগী নেতা–কর্মীরা ছিটকে পড়েছেন। এর সুযোগ নিয়েছে বিএনপি–জামায়াত। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। ফরহাদ হোসেনকে আবার মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁর পক্ষে কাজ করবেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, নৌকার মাঝি পছন্দ না হলে আমি ননৌকায় ভোট দেব না, আর যদি পছন্দ হয় তাহলে স্বর্বস্ব দিয়ে নৌকার বিজয় ঘরে তুলবো।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, ‘সারা জীবন আওয়ামী লীগের জন্য জেল–জুলুম, বোমা হামলার শিকার হয়েছি। এরপরও আমি নাকি আওয়ামী লীগের কেউ না। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজের পছন্দমতো লোকদের নিয়ে দল চালান। সেখানে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতারা ঠাঁই পান না। যখন নির্বাচন আসে তখন তিনি দল গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে কাউকে মনে রাখেন না। প্রধানমন্ত্রীর কছে আকুল আবেদন, এমন নেতাকে যেন মনোনয়ন না দেওয়া হয়। তাঁকে বাদ দিয়ে যে কাউকে মনোনয়ন দিলে তাঁর পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা এক হয়ে কাজ করবেন।’

সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক এম এ এস ইমন বলেন, যারা মেহেরপুরে আওয়ামী লীগকে দুর্দিনে ধরে রেখেছে তারা আপনার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছে। স্বসম্মানে আপনার সরে যাওয়া উচিৎ। মুজিবনগরকে শেখ হাসিনা উন্নয়নের জন্য ব্ল্যাঙ্ক চেক দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আপনি নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। সারাদেশে যে উন্নয়ন তারই রুটিন উন্নয়ন হয়েছে মেহেরপুরে।পৌর কলেজের ফান্ড থেকে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন সরকারি হয়নি। নিজের বাপের নামে কলেজের নামকরণ করেছেন।
আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী আমাদের মেহেরপুরকে দেখে যান , আপনার প্রাণের সংগঠনের কি অবস্থা করে রেখেছে দেখে যান।

মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন, দুসময়ে যারা আওয়ামী লীগকে বাঁচিয়েছিলো তারাই আজ এই মঞ্চে দাড়িয়েছে। মেহেরপুর পৌরসভা, সদর উপজেলা, মুজিবনগর উপচেলায় আওয়ামী ,লীগের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। নেতাকর্মীরা এই সকল জনপ্রতিনিধিদের সাথ্কেথা বললে তার মানরচলে যায়। বিএডিসির লেবারকে কমিটিতে নিয়ে আসা হয়েছে।
মেহেরপুর পৌরসভার দুর্দশাব শেষ নেই। মেহেরপুর পৌরসভার উন্নয়নে এখনো পর্যন্ত বাধা দিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা লাভলি ইয়সমিন বলেন, আপনারা স্বামী স্ত্রী ২০১৪ সালের আগে কোথায় ছিলেন। আমরা ভোট চেয়ে আপনাকে নির্বাচিত করেছি। আপনার মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের দুর দুর করে তাড়িয়ে দেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, ফরহাদ হোসেনের ভাই মৃদুল আমাদের সংখ্যালঘু যুবলীগ সদস্যর ১ কোটি ৮০ লাখ টাবি আত্মসাৎ করে তাকে পথের ভিখারি বানিয়েছেন।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য জেমস স্বপন মল্লিক বলেন, নারী জারেণের অগৃদুত সেজেছেন । আপনি তো মেহেরপুরের ক্যাসিনো রানি। ৬৩ জেলার ছেলেদের চাকরি হয়, মেহেরপুর জেলার ছেলেদের চাকরি হয় না।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুল, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আল মামুন, , সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, যুবলীগের সদস্য সাজেদুল ইসলাম সাজু প্রমুখ। বিশেষ মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
এদিকে ফরহাদ হোসেনের পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যলয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ফরহাদ হোসেন ভগ্নিপতি বাবলু বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গায় পূজা উদযাপন উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময়

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আলমডাঙ্গা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে থানার ওসির আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় আলমডাঙ্গা থানা চত্বরে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা হয়। সেইসঙ্গে পূজা উদযাপন কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের মতামত গ্রহণ করা হয়।

আলোচনা সভায় আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতে ও নিজ নিজ ধর্ম সুষ্ঠুভাবে পালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আলমডাঙ্গা থানাপুলিশ সবসময় সর্তক রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজামণ্ডপ এলাকায় সর্বোচ্চ আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি ৩ টি বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে পালনের নির্দেশ দিয়ে বলেন, পূজা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও প্রতিটি পূজা মণ্ডপে আলোকসজ্জা বৃদ্ধির পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা আওতাভুক্ত আনার পরামর্শ দেন ওসি। তবে পূজা মণ্ডপের সন্নিকটে নিকট কোন দোকান কিংবা ফাস্টফুডের দোকান না বসানোর জন্য নির্দেশ দেন।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিন্দ্র নাথ দ্ত্ত, উপজেলা পূজা উতযাপন পরিষদের সভাপতি ডা: অমল কুমার বিশ্বাস, বাহ্মন পুরহিত ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবেন্দ্র নাথ দোবে বাবুলাল,উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ- সাধারণ সম্পাদক সুধাংশ কুমার ব্যানর্জী, পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার ঘোষ,হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের পৌর সম্পাদক পলাশ কুমার আচার্য্য,পূজা উদযাপন পরিষদের পৌর সাধারণ সম্পাদক জয় কুমার বিশ্বাস।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আশোক সাহা,লিপন বিশ্বাস,সুশিল কুমার ভৌতিকা,কৃষ্ণ বিশ্বাস,বিশ্বজিৎ সাধুখা, বিজয় কুমার দাস,শিপন কুমার দাসসহ ৩৯টি মন্দির কমিটির সভাপতি সম্পাদক বৃন্দ।