গাংনীতে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগে কন্যা শিশু দিবস পালিত

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট ও জাতীয় কন্যা শিশু এডভোকেসী ফোরামের যৌথ আয়োজনে একযোগে গাংনী উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে পালন করা হয় আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।

আজ সোমবার সকালে ধানখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান এর সভাপতিত্বে এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্টের ইউনিয়ন সমন্বয়কারী তানজীদ আহমেদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকতা নাছিমা খাতুন,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিএফজি সমন্বয়কারী সাংবাদিক রফিকুল আলম বকুল, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইকবাল হোসেন, সানঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক হযরত আলীসহ ধানখোলা ইউনিয়নের ৫ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা। আলোচনা সভা শেষে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।

সাংবাদিক রফিকুল আলম বকুল তার বক্তব্যে জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব নিয়ে মতবিনিময় সভায় বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরেন এবং কন্যাদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা বিষয়ক কর্মকতা নাছিমা খাতুন একজন কন্যা হিসাবে তাঁর নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন সমস্যার কিভাবে মোকাবিলা করেছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি কন্যা শিশুদের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ কন্যা শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন।

এছাড়া গাংনীর উপজেলার তেতুলবাড়িয়া ইউনিয়নে করমদি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হয় সভায় সভাপতিত্ব করেন করমদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মু. আলম হোসাইন । অতিথি ছিলেন করমদি কলেজের  প্রভাষক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম।

গাংনীর কাথুলি ইউনিয়নের ধলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতিত্ব করেন ধলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম । বিশেষ অতিথি ছিলেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এলাকা সমন্বয়কারী  হেলাল উদ্দিন।

গাংনীর সাহারবাটি ইউনিয়নের জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি করেন জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান আল নূরানী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কন্যাশিশু শিশুর অ্যাডভোকেসি ফোরাম, মেহেরপুর জেলা সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম  ও বিশেষ অতিথি বাঁশবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক দিলারা জামান।




চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার অভিযানে; গ্রেফতার ০১

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযানে ১০০০ (এক হাজার) পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সহ (এক) জন গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার( ডিবি) অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ নেতৃত্ব সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় এসআই(নিঃ) সুমন্ত বিশ্বাস সঙ্গীয় অফিসার এসআই(নিঃ)মুহিদ হাসান, এএসআই(নিঃ) বিজন কুমার ভট্টাচার্য, এএসআই(নিঃ) মোঃ আবেদুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে দর্শনা থানাধীন হঠাৎপাড়া (আনোয়ারপুর) গ্রামস্থ মোঃ আমিনুল ইসলাম, পিতা-মৃত সোনা মিয়ার মুরগির ফার্মের সামনে রেললাইনের উপর হতে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানা এলাকায় হতে আসামি  আব্দুল হাদি ওরফে হাদি (৩১), পিতা-আব্দুল মান্নান, সাং-ঝাঁঝাডাঙ্গা (বেলেমাঠপাড়া) গ্রেফতার পূর্বক তার হেফাজত হতে অবৈধ মাদকদ্রব্য ১০০০ (এক হাজার) পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।




এই প্রস্তাব দিতেই পারেন না আবিগেইল বয়েড

“বাংলাদেশকে ম্যাগনিটস্কি স্টাইল স্যাংশন দেয়া উচিত অস্ট্রেলিয়া সরকারের” গত ২১ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টে ‘অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস’ দলের এমপি আবিগেইল বয়েড এমপির এমন প্রস্তাব জানার পরপরই কয়েক দফা প্রশ্ন তুলেছেন নামী কূটনিতিকরা।

প্রথমত তারা বলছেন, ম্যাগনিটস্কি স্টাইল স্যাংশন দেয়ার শুরু হয়েছিল একটি বিশেষ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার মধ্য দিয়ে। মূলত, ২০০৯ সালে রাশিয়ার কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে সের্গেই ম্যাগনিটস্কির নামে এক রুশ ট্যাক্স আইনজীবী হয়। মৃত্যুর পর ২০১২ সালে ম্যাগনিটস্কি আইন পাস করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে তারা এই স্যাংশন দেয় ম্যাগনিটস্কির খুঁজে বের করা ৩৯ জন দুর্নীতিগ্রস্ত রাশিয়ানের ওপর। যারা ম্যাগনিটস্কির মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ছিল।

প্রাদেশিক সংসদে বাংলাদেশের উপর ম্যাগনিটস্কি স্টাইলে স্যাংশন আরোপের দাবি তোলার আগে, পূর্বে অস্ট্রেলিয়ান সরকার মাত্র একবার ২০২২ সালে এই স্যাংশনের প্রয়োগ করে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, ম্যাগনিটস্কি স্টাইলে আবিগেইল বয়েড যে স্যাংশন আরোপ করতে বলেছেন সেটা কী আইনত অস্ট্রেলিয়ার সরকার দিতে পারে? কারণ অস্ট্রেলিয়াতেই তো বৈধ নয় ম্যাগনিটস্কি স্টাইল স্যাংশন।

একটু পেছনে ফিরে তারা বলেন, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টির এমপি মাইকেল ড্যানবি সংসদে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও দুর্নীতি (ম্যাগনিটস্কি নিষেধাজ্ঞা) বিল ২০১৮ উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে ২০১৯ সালে সংসদ ভেঙে দিয়ে বিলটি বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে ৮ ডিসেম্বর, অস্ট্রেলিয়ান সংসদ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন, গুরুতর দুর্নীতি এবং সুশাসন ও আইনের শাসনকে ক্ষুণ্ণকারী কার্যকলাপের জন্য ম্যাগনিটস্কি স্টাইলের স্যাংশনের আইন আংশিকভাবে পাস করে।

যে আইন অস্ট্রেলিয়াতে সম্পূর্ণভাবে পাশই হলো না, সে আইনে কীভাবে আবিগেইল বয়েড স্যাংশন দাবি করলেন? কূটনীতিকরা বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুর মেলানো ছাড়া কিছুই নয়।

পরে আরও বলা হয়, প্রস্তাব উত্থাপনকারী আবিগেইল অস্ট্রেলিয়ার সংসদে কতোটুকু প্রভাব বিস্তার করেতে পারেন? তিনি তো অস্ট্রেলিয়ার প্রাদেশিক সংসদের সদস্য, মূল সংসদের নন। খোদ অস্ট্রেলিয়ান কর্মকর্তারা এব্যাপারে কথা বলার সময় বিষয়গুলো হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার এই মুহূর্তে এটা মানার কোনো যুক্তিই দেখছে না। কারণ এই আইনের আওতায় মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বড়ো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন প্রশাসন।

এ নিষেধাজ্ঞায় পড়লে ওই ব্যক্তির সম্পদ জব্দ করা হবে এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। যুত্তরাষ্ট্রের পর কানাডা, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বেশ কয়েকটি দেশ একই ধরনের আইন পাস করে।

তারা আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় যদি বাংলাদেশের ওপর ম্যাগনিটস্কি আইন প্রয়োগ করতে পারেও তাহলেও কী বাংলাদেশে সেই বাস্তবতা আছে? বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তো সৃষ্টি হয়নি যেখানে অস্ট্রেলিয়া ম্যাগনিটস্কি স্টাইলে স্যাংশন দেয়া যেতে পারে। এই দাবি উত্থাপনের পেছনে মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত উদ্বেগের চেয়ে ব্যাক্তি স্বার্থরক্ষাই মুখ্য মনে হচ্ছে।

ব্যক্তি বা সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কারণ ম্যাগনিটস্কি স্টাইল স্যাংশন দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। এরই মধ্যে রাশিয়া, চীন ও ইরানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ওয়াশিংটন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এখন্ও সেই পথে হাঁটবে না। কারণ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সরকারগুলির তুলনায় এক বৈচিত্র্যময় পার্লামেন্টের সূচনা করেছে। দীর্ঘ ৯ বছর পর, ২০২২ সালের ২৩ মে অস্ট্রেলিয়ায় সরকার গঠন করে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন এমন একটা অবান্তর দাবি তুললেন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য আবিগেইল বয়েড? বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশে বিদেশের নানা অপপ্রচারের উদাহরণ টেনে কূটনীতিকরা বলছেন, এটাও বাংলাদেশ সরকারবিরোধী লবিস্টদেরদের সেই পুরোনো স্টাইল। আমেরিকা ব্রিটেন বা অস্ট্রেলিয়ার মত দেশে কোন দলের ফান্ডে টাকা দিলেই তাদের দিয়ে অনেক কিছু বলিয়ে নেয়া যায়। এটা তাদের দেশে খুবই বৈধ বিষয়। আবিগেইল বয়েড একজন ব্রিটিশ বংশোদ্ভুদ আইনজীবী। বিদেশি লবিং প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত এরাই চালায়। সুতরাং তার পক্ষে গ্রিন দলে কিছু ফান্ড নেয়ার বিনিময়ে এরকম একটি প্রস্তাব তুললে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




মানুষের কল্যাণে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার করছে বাংলাদেশ

যেকোনো রাষ্ট্রের শক্তি জানান দেয় পারমাণবিক সক্ষমতার উপর। পারমাণবিক অস্ত্র পৃথিবীর অনেক দেশেই মজুত আছে। সেটি বরং সংঘাতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র মজুতের শীর্ষে আছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়াও, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, ভারত, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়াসহ ৯ দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। দুটো দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েনের কারণে পারমাণবিক শক্তির মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চলে আসছে বহুদিন ধরে। বাংলাদেশ এদিক থেকে ব্যতিক্রম ভুমিকা পালন করছে। কারো সঙ্গে বৈরিতার পথে না গিয়ে নিজ দেশের মানুষকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। এরইমধ্যে তা কড়া নিরাপত্তার মধ্য নিয়ে রূপপুরে পৌঁছাছে। আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুরে ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরে এক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। এটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁরা দুজন অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হতে পারেন।

ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ইউক্রেন, জার্মানি, জাপান, স্পেন, সুইডেন, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ভারত, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, পাকিস্তান, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, রোমানিয়া, আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলারুশ, স্লোভেনিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইরান ও আর্মেনিয়া।

পাবনার ঈশ্বরদীতে নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেই প্রকল্পটি দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হওয়ার আগেই আশপাশের এলাকার মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করেন প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি কর্মী। তাদের বেশিরভাগই রুশ নাগরিক। তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে রূপপুরে এসেছে পরিবর্তন। আগে যেখানে সন্ধ্যা হলেই গাঢ় অন্ধকার নেমে আসতো এখন সেখানে গভীর রাতেও ঝলমল করে নানা রঙের আলো।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরুর পর গত কয়েক বছরে সেখানে গড়ে উঠেছে নানা অবকাঠামো। পাশাপাশি রুশভাষাভাষী কয়েক হাজার বিদেশি কর্মীদের অবস্থানে সেখানকার অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে রাশিয়ার ভাষা ও সংস্কৃতির। সেখানে প্রায় প্রতিটি দোকানেই রাশিয়ার ভাষা সম্বলিত সাইনবোর্ড দেখা যায়। স্থানীয়রা বিদেশি নাগরিকের দৈনন্দিন পণ্য বিক্রি করে হচ্ছেন স্বাবলম্বী।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে রাশিয়ার সেরা কর্মকৌশল চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ ইউনিটের অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ ব্যবস্থার অনন্য সংমিশ্রণ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পিত মাত্রার নিশ্চয়তা দেবে। আশা করা যায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেবল বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের সমস্যার সমাধানই করবে না, দেশবাসীর সার্বিক জীবনমানের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

নির্মাণ কাজ শেষ হলে রূপপুর কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর ৩০টি দেশে ৪৫০টির মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমাণ মোট উৎপন্ন বিদ্যুতের প্রায় ১২ শতাংশ। এসব বিষয় বিবেচনা করে বর্তমান সরকার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এটা নিশ্চিতভাবে বর্তমান সরকারের উত্তম প্রয়াসগুলোর অন্যতম একটি এবং জাতি হিসেবে বিশ্বে গর্ব করার মতো একটি প্রকল্প।

যেকোনো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুতের ব্যবহার অপরিহার্য। উন্নয়ন অব্যহত রাখতে হলে প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিদ্যুতের সরবরাহ। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের ফলাফল হিসেবে এদেশের বিদ্যুৎখাত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে সে অবস্থা থেকে তুলে এনে আজকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু ধারাবাহিক উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিশ্চয়তায় আরও বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজন। তার জন্য পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে বর্তমানে বিশ্বে টেকসই শক্তি উৎপাদনে যেসব উৎসের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে পারমাণবিক শক্তি তার অন্যতম একটি উৎস।

আশা করা হচ্ছে, অর্থনীতিতে একটি শক্ত ভীত গড়বে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। একে ঘিরে তৈরি হবে আরও নতুন নতুন কর্মসংস্থান, সম্ভাবনা। পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ হওয়ার সাথে সাথে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ বোর্ডের সদস্য হল বাংলাদেশ, যা দেশের ইতিহাসে নতুন একটি মাইলফলক। জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ বোর্ড পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ উপায়ে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত ব্যবহার নিশ্চিত করতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আন্তঃসরকারি ফোরাম হিসেবে কাজ করে। সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে নানা সুবিধা প্রাপ্ত হবে।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




কুষ্টিয়ায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহের আলোচনা সভা

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: এহেতেশাম রেজা বলেছেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমেই শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব। তিনি বলেন, শিশুদের কল্যাণ, সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করে তাদের জাঁতি গঠনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তাই শিশুশ্রম বন্ধে ১৪ বছরের কম শিশুদের সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করতে হবে বলেও জানান তিনি।

সোমবার সকালে (২ অক্টোবর) কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যত। আর তাই শিশুদের সুন্দর আগামী প্রতিষ্ঠার কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই কাজ করতে হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এএইচএম আব্দুর রকিব, জেলা শিশু একাডেমী কুষ্টিয়ার কর্মকর্তা মখলেসুর রহমান ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) র সভাপতি হাজী রফিকুল আলম টুকু প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিশুরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রকারীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন।

এরআগে “শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, ভবিষ্যতের বিশ্ব গড়ি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্র শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।




অক্টোবরে ফয়সালার নামে বিএনপি কী করতে চায়?

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বর্তমান সরকারের পতন ঘটবে, আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে এমন গুজব ছড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিল দলটি। সাধারণ মানুষের মনেও অজানা আতঙ্ক বিরাজ করেছিল- কী যেন হয় ১০ ডিসেম্বর। আবারও সেই পথে হাঁটছে সেনা ছাউনি থেকে থেকে জন্ম নেওয়া দলটি। এবার তারা এমাসেই অর্থাৎ অক্টোবরেই বর্তমান সরকারের পতন ঘটবে বলে দেশবাসীকে বিশ্বাস করাতে চাইছে।

নভেম্বরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর আগেই চূড়ান্ত আন্দোলনে দফারফায় পৌঁছাতে চায় বিএনপি। এজন্য অক্টোবরে রাজপথেই ফয়সালা করতে চায় বিএনপি, এবং সেটা রাজপথেই। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে, ফয়সালা বলতে আদতে কি চায় বিএনপি?

কয়েক সপ্তাহ ধরে বর্তমান সরকার পতনের একদফা দাবিতে সরব হয় বিএনপি। কিন্তু এর মাঝে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করছে। দাবি ও দফার ক্ষেত্রে বিএনপ স্পষ্ট করতে পারেনি যে তাদের দফা আসলে কয়টি। কখনও ৩১ দফা, কখনও ১০ দফা, এরপর এখন একদফার আন্দোলনেও একই অবস্থা। সর্বশেষ দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্রে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল গত ২৪ সেপ্টেম্বর। ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বিএনপি কিছুই করতে পারেনি। আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর দলের মহাসচিব আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বলেছিলেন। অর্থাৎ, আল্টিমেটামের মধ্যে কাজ না হলে কি করা হবে সেই সিদ্ধান্তই তাদের ছিলনা। ফলে কোনো আন্দোলনেই জনসম্পৃক্ততা পায়নি দলটি। সিদ্ধান্তহীনতা, নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব, সমন্বয়হীনতার কারণে কোনো আন্দোলনেই যেমন দৃশ্যমান সফলতা আসেনি। তেমনি বারবার দলের নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে।

২০১১ সালে খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে ঈদের পরে তীব্র আন্দোলন হবে, সে বছর ঈদ এসেছিল ঠিকই কিন্তু জনসমর্থন না পেয়ে আন্দোলন করতে পারেনি বিএনপি। একইভাবে ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ সালেও ঈদের পরে তীব্র আন্দোলন ঘোষণা করেছিলেন খালেদা জিয়া। প্রতিবছর ঈদ এলেও খালেদা জিয়ার সেই আন্দোলন আর আসেনি। বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ২০২২ সালে ঘোষণা করেছিলেন ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। গেল ১০ ডিসেম্বর, কিন্তু ঈদের পর আন্দোলনের মতোই আবারও শুভংকরের ফাঁকি দিলো বিএনপির আন্দোলন।

বিএনপির চলমান কর্মসূচি শেষ হবে ৫ অক্টোবর। এরপর পরবর্তী ধাপের আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে। তাদের পরিকল্পনা সেই আন্দোলন ২০ তারিখ পর্যন্ত চালানোর পর ২৪ তারিখের থেকে চূড়ান্ত কর্মসূচি দেওয়া হবে। দলটির এমন বিশ্রাম-বিরতি দিয়ে আন্দোলন করার প্রবণতায় বেজায় নাখোজ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এজন্য দলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নেতা আন্দোলনে নিষ্ক্রিয়তা দেখাচ্ছেন, যারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন তাদের মাঝেও উৎসাহের অভাব দেখা যাচ্ছে। অনেককেই তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিতেও দেখা যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, দলটির নেতা কে? প্রতি মুহূর্তে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছ থেকে। চেয়ারপারসেন খালেদা জিয়া বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং শারীরিকভাবে রাজনীতি করতে অক্ষম। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ফেরারি আসামি হয়ে দেশের বাইরে। মহাসচিবসহ অন্য নেতারাও ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেন। একারণে আন্দোলন কর্মসূচিতে ঠিকমতো সমন্বয় হচ্ছে না। এই সুযোগটি নিচ্ছে সরকারি দল।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পতনের আন্দোলনে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই লড়াইয়ে সবাইকে থাকতে হবে এবং এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের র্যা বের ওপর স্যাংশন এবং ভিসানীতির কারণে সরকার কিছুটা চাপে আছে বলে মনে করে বিএনপি। এজন্য মাঠের আন্দোলনের চেয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপে দিকে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা অপেক্ষায় আছে বিএনপি নেতৃত্ব।

রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার মনে করেন, বিএনপি বিগত এক বছর ধরে যে আন্দোলন চালিয়ে আসছে তাতে তাদের দাবি আদায় বা লক্ষ্য পূরণ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিদেশি চাপের কথা বলে ও ষড়যন্ত্র করে যে চাপ দিতে চাইছে তাতে আওয়ামী লীগ বিচলিত নয়। এ অবস্থায় যদি সমঝোতার কথা সামনে আসে, তাহলে প্রশ্ন হলো, সমঝোতা হবে কোন বিষয়ে?, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি উচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল হয়েছে। অর্থাৎ, ২০১৮ সালের মতো বিদ্যমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ছাড়া কোনো সমঝোতার পথ বিএনপির সামনে খোলা নেই।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ‘সব বিষয়ে জনসমর্থন হারিয়ে দিশেহারা বিএনপি আন্দোলনের নামে খালি কলশি বাজিয়ে যাচ্ছে। নিজের ঘর গুছিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার মতো প্রস্তুতি দলটির নেই। প্রধান বিরোধীদল হিসেবে দাবি করলেও এখন দলটির অবস্থান অত্যন্ত নড়বরে। অক্টোবরেই ফয়সালা করার মতো সক্ষমতা দলটির নেই। যেকোনো উপায়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে দলটি।’




বাংলাদেশ অগ্রযাত্রার গৌরবগাথা শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল

চোখ ধাঁধানো দৃষ্টিনন্দন সব কাজ। স্বচ্ছ গ্লাসে মোড়ানো পুরো ভবন। যেখানে সূর্যের আলো প্রবেশের অবারিত সুযোগ। ভিতরের চিত্রটা আরও দৃষ্টিনন্দন। ছাদের দিকে তাকালে যাত্রীদের চোখ এক নিমিষেই হারিয়ে যাবে সেই দিকটায়। বিশাল পরিসর। যাত্রীদের মন জয় করার মত এক স্থাপনা। সেখানে প্রবেশ করলে সবার অনুভূতিই বদলে যাবে। বাইরে থেকেও মানুষের নজর কাড়বে- এমন অপররূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত স্থাপনা- হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। যেখানে ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই যাত্রীরা অবাদে যাতায়াত করতে পারবেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানা গেছে, শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মাণ হচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের এপ্রিলের মধ্যে। ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিত্সুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং- এই তিন প্রতিষ্ঠান মিলে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ করছে।

প্রকল্পে কিছু খাতে টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সাশ্রয়কৃত এই টাকা দিয়ে সরকার ও জাইকার সম্মতি এবং অন্যান্য বিধিগত প্রক্রিয়া নিষ্পত্তিসাপেক্ষে তৃতীয় টার্মিনালে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজের জায়গায় অতিরিক্ত আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ বোডিং ব্রিজের মোট সংখ্যা এখন ২৬ টি।

তৃতীয় টার্মিনালের আয়তন হচ্ছে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। থার্ড টার্মিনালে মোট ৩৭টি অ্যাপ্রোন পার্কিং থাকছে। ফলে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে ট্যাক্সিওয়ে আছে চারটি। নতুন করে আরও দুটি হাই স্পিড ট্যাক্সিওয়ে যোগ হচ্ছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজকে যাতে বেশি সময় থাকতে না হয়, সেজন্য তৈরি করা হচ্ছে নতুন দুটি ট্যাক্সিওয়ে। এছাড়া পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আরও থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবন।

বেবিচকের তথ্যানুযায়ী, থার্ড টার্মিনালে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে প্রথম ধাপে চালু করা হবে ১২টি। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার এলাকায় ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেকইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেকইন কাউন্টার থাকবে। এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ থাকবে ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার। আগমনের ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেকইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেকইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। থাকবে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। যেখানে এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

বহুরকম সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন থার্ড টার্মিনালে প্রবেশ ও বাহিরের ক্ষেত্রে থাকবে না কোনরকম ঝক্কিঝামেলা। সহজেই বিমানবন্দরে ঢুকা যাবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি লুপ থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত হবে। থাকবে মেট্রোরেলের সংযোগও। হাজি ক্যাম্পের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য থাকবে টানেল। টানেলটি বিমানবন্দরের অদূরে অবস্থিত মেট্রোরেলের স্টেশনের সঙ্গেও। ফলে বিদেশ থেকে যেসব যাত্রী আসবেন তারা খুব সহজেই বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবেন। আবার যারা বিদেশ যাবেন, তারাও রাজধানীর যানজট এড়িয়ে খুব সহজে বিমানবন্দরে যেতে পারবেন।

বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য স্থাপনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ৭ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই ভবনটি উদ্বোধন করবেন। সোমবার (২অক্টোবর) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক থার্ড টার্মিনালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়সহ সবার সহযোগিতায় করোনাভাইরাসের মহামারীর সময়েও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ চলমান রাখতে পেরেছিলাম। আমাদের শ্রমিকদের মনোবল অনেক কঠোর ছিল। করোনা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট আসা বন্ধ হয়ে গেয়েছিল। গুণগত মান বজায় রেখে সেসব ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এগুলো আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। তারপরও আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে গেছি। এর ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।’




থানকুনি পাতা খেলে কী স্মৃতিশক্তি বাড়ে

আয়ুর্বেদশাস্ত্রে থানকুনি পাতার বেশ সুনাম। তবে অনেকে থানকুনি পাতা নিয়মিত খান স্মৃতিশক্তি বাড়াতে। এমনকি জনপ্রিয় আয়ুর্বেদিক মেডিসিনের ক্ষেত্রেও থানকুনি পাতার কিছু মেডিসিন পাওয়া যায়। কিন্তু থানকুনি পাতা খেলে কি স্মৃতিশক্তি আদৌ বাড়ে?

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের সংকটও বদলেছে। স্মৃতিশক্তি লোপের সমস্যাও অনেক গাঢ় হচ্ছে। সব মিলিয়ে থানকুনি পাতা খেলে এখন আদৌ কাজ হবে কি-না এটি বড় প্রশ্ন।

ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থানকুনি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। আর থানকুনি পাতা খেলে রক্তে অক্সিডেন্ট প্রবাহ বাড়ে। তাছাড়া অক্সিজেন প্রবাহ বাড়লে মস্তিষ্ক কার্যকারিতা ফিরে পায়। থানকুনি পাতা আমাশয়, পেটের পীড়া ও চর্মরোগের ক্ষেত্রেও কার্যকরী।

তবে থানকুনি পাতা নিয়ম মেনে খেতে হবে। অতিরিক্ত থানকুনি পাতার রস বমি, পেট গোলানো ও মাথাব্যথা বাড়ায়। তাই ভেবেচিন্তে খেতে হবে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ কারো সঙ্গে আলোচনা করে থানকুনি পাতা খাওয়ার চর্চা করা ভালো।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস




উড়ন্ত চুমুতে প্যারিস ফ্যাশন উইক মাতালেন ঐশ্বরিয়া

‘প্যারিস ফ্যাশন উইক’-এর ‘ল’ওরিয়াল শোতে অংশ নিয়েছেন সাবেক মিস ইউনিভার্স ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। সোনালি রঙের ঝলমলে গ্ল্যামারাস গাউনের সঙ্গে মানিয়ে অভিনেত্রীকে সোনালি আভাযুক্ত চুলে আকর্ষণীয় দেখাচ্ছিল।

র‌্যাম্পে হাঁটার সময় মঞ্চ থেকেই উড়ন্ত চুমুতে ভক্তদের মন জয় করেন এই বিশ্বসুন্দরী। ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে গিয়ে চোখও মেরেছেন তিনি। রোববার রাতে অভিনেত্রীর অনেক ছবি সামনে এসেছে; যা আলোড়ন তুলেছে ভক্তদের মাঝে।

প্রতি বছর এই ইভেন্টে অংশ নেন ‘ল’ওরিয়াল-এর ভারতীয় শুভেচ্ছাদূত ঐশ্বরিয়া। সেখানে সঙ্গে নিয়ে গেছেন মেয়ে আরাধ্যা বচ্চনকেও।

এবার একজন নয়, বচ্চন পরিবারের দুই সদস্য এই ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন। অমিতাভ বচ্চনের নাতনি নভ্যা নাভেলি নন্দাও ‘প্যারিস ফ্যাশন উইক’-এ অংশ নিয়েছেন।

নভ্যা ‘প্যারিস ফ্যাশন উইক’-এ ল’অরিয়াল প্যারিসের কজ অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তার ইনস্টাগ্রামে প্যারিসের কিছু ছবি শেয়ার করেছেন, সাদা পোশাকে তাকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে।

সূত্র: যুগান্তর




মেহেরপুরে জেলা কমান্ড্যান্টের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, মেহেরপুরের বিভিন্ন উপজেলার কর্মকর্তা-কর্র্মচরী, ভাতাভোগী সদস্য-সদস্যা ও ইউনিয়ন দলনেতা/দল নেত্রীদের সাথে নব যোগদানকৃত জেলা কমান্ড্যান্ট প্রদীপ চন্দ্রদত্ত এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার জেলা কার্যালয়ের প্রশিক্ষণ কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কমান্ড্যান্ট প্রদীপ চন্দ্রদত্ত তার বক্তব্যে বলেন, জেলা কমান্ড্যান্ট বাহিনীর সুনামকে বৃদ্ধি কল্পে অধিকতর তৎপর হওয়া এবং অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালনের মাধ্যমে জেলার কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নে সকলের সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এছাড়াও গতকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাহিনীর মহাপরিচালক কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা ও গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ সম্পর্কে উক্ত সভায় সকলকে অবহিত করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সার্কেল অ্যাডজুটান্ট মোঃ আল-মামুন, মুজিবনগর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোঃ মিরাজুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) টিআই ফেরদৌসী বানু প্রমুখ।