মেহেরপুরে বিশ্ব হার্ট দিবস পালন

মেহেরপুরে বিশ্ব হার্ট ডে ২০২৫ পালন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘ডোন্ট মিস আ বিট’ প্রতিপাদ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সাইন্টিফিক সেশনে উচ্চ রক্তচাপ বিষয়ে আলোচনা করেন ডা. কাজল আলী।

সেশনে তিনি বলেন, হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ আজকের বিশ্বের অন্যতম নীরব ঘাতক। অনেকেই জানেন না, তাদের রক্তচাপ ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে, অথচ শরীরে তেমন কোনো লক্ষণও দেখা দেয় না। কিন্তু এই নীরব শত্রু একসময় হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকল, এমনকি অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এখনই সময় সচেতন হওয়ার, নিজের ও পরিবারের যত্ন নেওয়ার।

উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি আমরা জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনি।
প্রথমেই বলব, খাদ্যাভ্যাসে নিয়ন্ত্রণ আনুন। অতিরিক্ত লবণ, তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন। প্রতিদিনের খাবারে বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল, দুধ ও আঁশযুক্ত খাবার রাখুন। খাবারে অতিরিক্ত লবণ দেওয়া অভ্যাস ত্যাগ করুন, কারণ লবণই উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ।

তিনি আরো বলেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ওজন বেড়ে গেলে হৃদয়ের ওপর চাপ পড়ে এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত হাঁটা, ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন। এগুলো শুধু রক্তচাপই বাড়ায় না, হৃদপিণ্ড ও রক্তনালীর ক্ষতি করে। নিজের ও পরিবারের সুস্থতার জন্য এখনই এই ক্ষতিকর অভ্যাস পরিহার করুন।

অনুষ্ঠানে প্রবীণ কার্ডিয়াক সার্জন প্রফেসর ড.এস.আর.খান, মেহেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম নজরুল কবীর, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল্লাহ আল আমিন, সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুস শহীদ, ডাঃ মোঃ খায়রুল আলম, মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. এ. কে. এম. আবু সাঈদ, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ শাহরিয়া শায়লা জাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




টাইফয়েড প্রতিরোধে আপনার শিশুকে টিকা দিন- সিভিল সার্জন

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। মেহেরপুরে এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৭ জন শিশু-কিশোরকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে বলে একটি প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. এ. কে. এম. আবু সাইদ।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ প্রেস কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

সিভিল সার্জন বলেন, ২০২১ সালের সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে ওই বছরে ৪ লাখ ৭৮ হাজার জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিলো।

যার মধ্যে মারা গিয়েছিলো ৮ হাজার জন। যার ৬৮ শতাংশ ছিলো শিশু। যে কারণে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের শিশুকে আমরা এ টিকার আওয়তা নিয়ে টাইফয়েড প্রতিরোধে কাজ করতে যাচ্ছি। এ টিকা দেওয়ার ফলে প্রতিটি শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। এ রোগে মৃত্যুহার কমে যাবে।

সিভিল সার্জন আরও বলেন, টাইফয়েড ব্যকটেরিয়া জনিত সংক্রামক রোগ। এ জ্বরে আক্রান্ত হলে আর্থিক ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদী শারিরীক জটিলতা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

প্রেস কনফারেন্সে অন্যদের মথ্যে বক্তব্য দেন মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি তোযাম্মেল আযম, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চান্দু, মেহেরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি ও মেহেরপুর প্রতিদিন-এর সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন, চ্যানেল ২৪-এর জেলা প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান, সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি বেন ইয়ামিন মুক্ত এবং বাসস প্রতিনিধি দিলরুবা খাতুন প্রমুখ। প্রেস কনফারেন্সে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ইনজামাম-উল-হক।

তিনি বলেন, আমরা জেলায় ১লাখ ৬৮ হাজার ২৯৭ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করার লক্ষ্যেমাত্রা নির্ধারণ করেছি। যার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৭৯ এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ৫২ হাজার ৪১৮ জন । আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ৩৬ শতাংশ রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। আপনারাসহ সমাজের অংশীজনদের সহায়তায় শতভাগ রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা প্রদান সম্পন্ন করতে চাই। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিক-শিক্ষকসহ সমাজের সকল স্তরের মানুসের সহযোগীতার আহবান করেন তিনি।

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে টাইফয়েড ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এ ভ্যকসিন দিতে অনলাইনে শিশুর জন্ম সনদ দিয়ে রেজিষ্ট্রশন করতে হবে।




দামুড়হুদায় ফারিয়ার নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করলেন ডা. মশিউর রহমান

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমানের সাথে মতবিনিময় করেছেন দামুড়হুদা ফারিয়ার নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা গত মাসে বদলি হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছিলেন আরএমও ফারহানা ওয়াহিদ (তানি)। দীর্ঘ এক মাস দায়িত্ব পালনের পর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডা. মশিউর রহমান।

যোগদানের পর ফারিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা ফারিয়ার সভাপতি, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি ও ইউরোফার্মা কোম্পানির প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক; সহ-সভাপতি ও অপসোনিন কোম্পানির প্রতিনিধি ফিরোজ আহমেদ; কোষাধ্যক্ষ ও সিনা ল্যাবরেটরিজ কোম্পানির প্রতিনিধি ডালিম উদ্দিন; পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও একমি কোম্পানির প্রতিনিধি গৌতম; রেনেটা কোম্পানির প্রতিনিধি মেহেদী হাসান; স্কয়ার কোম্পানির প্রতিনিধি শহীদুজ্জামান, জনি ও ইমরান; বেক্সিমকো কোম্পানির প্রতিনিধি শ্রী সিমান্ত কুমার এবং অপসোনিন কোম্পানির প্রতিনিধি জুয়েল রানা প্রমুখ।

এ সময় ডা. মশিউর রহমান বলেন, “আমি এখানে যোগদানের পর হাসপাতালের সব বিভাগ ঘুরে দেখেছি এবং সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তাতে মনে হয়েছে খুব সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হাসপাতালটি পরিচালনা করা সম্ভব। আমি যতদিন এই হাসপাতালে কর্মরত থাকব, সততা ও নিষ্ঠার সাথে সরকারি সব সেবামূলক কাজ করার চেষ্টা করব। আপনাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।




মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের সমাবেশ ও মিছিল

“আমার প্রথম ভোট বাংলাদেশের পক্ষে হোক, আমার প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সমবেশ ও মিছিল করেছে মেহেরপুর জেলা ছাত্রদল।

বৃহস্পতিবার বিকালে মেহেরপুর সড়ক বিভাগের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাথুলি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।

আগে সেখানে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাভেদ সেনজির।

সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম রাজন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস।

বক্তারা বলেন, ছাত্রদলের স্লোগান আমার প্রথম ভোট বাংলাদেশের পক্ষে হোক, আমার প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক। একটি মহল জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এর আগে স্বৈরাচার হাসিনা একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা চেতনা নিয়ে জনগণের সাথে ধোঁকাবাজি করেছে। আরেকদল ধর্মকে পুঁজি করে মানুষের কাছে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। আমাদের সকলকে ঐক্য থাকতে হবে। সমস্ত ষড়যন্ত্রকে রুখতে হবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়াটা বাংলাদেশের জন্য একটি দলিল।




পুষ্টি গুণ ও খাদ্য নিরাপত্তায় ডিমের গুরুত্ব

বিশ্ব খাদ্যব্যবস্থায় প্রোটিন অন্যতম অপরিহার্য উপাদান। এ ক্ষেত্রে ডিমকে বলা হয় সবচেয়ে সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও পুষ্টিকর উৎস।

মানবজাতির সুস্বাস্থ্য, শিশুর বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের বিকাশে ডিমের গুরুত্ব অপরিসীম। ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) গঠিত হয়। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্য সংখ্যা ৮০। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস। এ বছর বিশ্ব ডিম দিবসের প্রতিপাদ্য “শক্তিশালী ডিম- প্রাকৃতিক পুষ্টিতে ভরপুর”-প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়াপসা-বিবি যৌথভাবে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৫ পালন করছে। বিশ্ব ডিম দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো- বিশ্বজুড়ে মানুষকে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন করা, সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের প্রোটিন ও অপরিহার্য পুষ্টি সরবরাহে ডিমের ভূমিকা তুলে ধরা এবং সব বয়স ও শ্রেণির মানুষের খাদ্য তালিকায় ডিমকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।

ডিম সুস্বাদু আর সহজলভ্য এক খাবার, যাকে একটি পরিপূর্ণ খাবার হিসেবে গণ্য করা হয় । এতে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ১৩টি পুষ্টিগুণ। ডিম সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে অন্যতম। ডিমকে বলা হয় ‘গরিবের প্রোটিন’। আবার টেকসই প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে এর স্থান সবার উপরে।এজন্য একে “নিউট্রিয়েন্ট পিল” বলেও অভিহিত করা হয়। ডিমে থাকা উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের সুষম বিকাশে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। এটি শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে না, বরং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। তাই দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ডিমকে যুক্ত করা মানে এক সহজলভ্য ও প্রাকৃতিক পুষ্টির উৎস নিশ্চিত করা। বর্তমানে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার, মা ও নবজাতকের মৃত্যু হার কমেছে। পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে খর্বাকায় ও কম ওজনের শিশুর সংখ্যাও কমেছে। এর বিপরীতে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। আজ থেকে ৩০-৪০ বছর আগে আমাদের দেশে মাথাপিছু ডিম খাওয়ার সংখ্যা ছিল বছরে গড়ে মাত্র ১০ থেকে ১৫ টি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে এ সংখ্যা ১৩৭টি। দেশে দৈনিক ডিম উৎপাদিত হচ্ছে বছরে প্রায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ। ২০৩১ সাল নাগাদ ডিম খাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বছরে জনপ্রতি ১৬৫টি।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এ খাতের জিডিপিতে অবদান ১.৮১ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৩.১৯ শতাংশ। কৃষিজ জিডিপির মধ্যে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১৬.৫৪ শতাংশ, যা সামগ্রিক কৃষি অর্থনীতিতে এর গুরুত্ব প্রতিফলিত করে। বর্তমানে দেশে প্রায় আড়াই কোটি গরু, ১৫ লক্ষ মহিষ, ৩ কোটি ছাগল-ভেড়া এবং ৪০ কোটি হাঁস-মুরগি রয়েছে। এ সকল গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির উৎপাদনের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ১৫৫ লক্ষ মেট্রিক টন দুধ, ৮৯.৫৪ লক্ষ মেট্রিক টন মাংস এবং ২ হাজার ৪ শত ৪০ কোটি ডিম উৎপাদিত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ খাতের ধারাবাহিক উন্নতির ফলে গত এক দশকে ডিম উৎপাদনে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪–২৫ অর্থবছরে দেশে মোট ডিম উৎপাদন হয়েছে ২৪৪০ কোটি, যা এক দশক আগের তুলনায় প্রায় ২.১৬ গুণ বেশি। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে গত ৯ অর্থবছরের উৎপাদন প্রবণতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১,৪৯৩.৩১ কোটি থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৪৪০ কোটি ডিম উৎপাদিত হয়েছে। ডিম উৎপাদনের এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের মানুষের পুষ্টি ও প্রোটিন চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে জনপ্রতি ডিম প্রাপ্যতা বছরে ১৩৭টি, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। ডায়েটিশিয়ানদের পরামর্শ অনুসারে, একজন পুরুষ সুস্থ জীবনযাপন এবং পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য প্রতিদিন ১টি ডিম খেতে পারেন। ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির এই সফলতা এসেছে সরকারি নীতিসহায়তা, আধুনিক খামারব্যবস্থা, বাচ্চা মুরগি ও খাদ্য উৎপাদনে বিনিয়োগ এবং কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে। বর্তমানে ডিম শুধু একটি পুষ্টিকর খাবার নয়, বরং এটি গ্রামীণ অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্যমোচনে বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ভূমিকা রাখছে। এই উৎপাদন প্রবৃদ্ধি শুধু দেশের পুষ্টি নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করেনি, বরং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন ও দারিদ্র্যমোচনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশে এ খাতে বর্তমানে প্রায় ৬০ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে – যার প্রায় ৪০ শতাংশই নারী। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, দারিদ্রমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প। মাত্র চার যুগের ব্যবধানে সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর এ খাতটি এখন অনেকটাই আত্মনির্ভরশীলতার দ্বারপ্রান্তে। বর্তমানে পোল্ট্রি মাংস, ডিম, একদিন বয়সি বাচ্চা এবং ফিডের শতভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প। সাধারন গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে প্রাণিজ আমিষের যোগান দিচ্ছে পোল্ট্রি শিল্প। বাংলাদেশের প্রান্তিক খামারিরা এখনো মোট ডিম উৎপাদনের বড়ো অংশ যোগান দিয়ে থাকে। বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্প বিকাশে অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে পোল্ট্রি ফিডের উচ্চ মূল্য। এ কারনে অনেক প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারী আশানুরুপ মুনাফা করতে না পারায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রলায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে।

দেশে মাংস, দুধ ও ডিমের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এবং পোল্ট্রিশিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজনের অংশগ্রহণে একাধিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভার আলোচনার ভিত্তিতে একটি বহুমুখী সিদ্ধান্তে উপনীত হয় সরকার। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং পোল্ট্রি শিল্পের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরামর্শে ২০২৪ সালের জন্য মুরগি ও ডিমের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে কৃষি মন্ত্রণালয় সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত মূল্য বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়। একদিন বয়সি বাচ্চা মুরগির উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রয়মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে একটি কৌশলপত্রের নির্দেশনা অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পোল্ট্রি ফিডের মূল্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে প্রতি কেজি ফিডের দাম ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত হ্রাস করা হয়েছে, যা প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ কমাতে সহায়তা করছে।

প্রাণিজ প্রোটিনের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি ও গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে সরকার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, ভিরুলেন্ট নিউক্যাসেল ডিজিজ ও ইনফেকশাস ব্রঙ্কাইটিসসহ নতুন রোগের ঝুঁকি কমাতে ভ্যাকসিন উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। খামারিদের উৎপাদন ব্যয় কমাতে বিদ্যুৎ বিলে কৃষির ন্যায় ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে সারা বছরব্যাপী সুলভ মূল্যে নিরাপদ ডিম সরবরাহের জন্য সংরক্ষণাগার স্থাপনের লক্ষ্যে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালা যুগোপযোগী করার নির্দেশনাও দিয়েছে সরকার। এছাড়া, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সয়াবিন তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সয়াবিন ও এর উপজাতের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ প্রেরণ করেছে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দেশের প্রাণিজ আমিষ উৎপাদনে স্থিতিশীলতা, ন্যায্যমূল্য এবং প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে-যা পুষ্টি নিরাপত্তা ও গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য এক ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মেধাবী ও সবনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং ধনী-দরিদ্রের পুষ্টির বৈষম্য নিরসণকল্পে গরিবের প্রোটিনখ্যাত ডিম উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমাদেরকে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ খাতসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের সার্বিক সহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব।

লেখক: সিনিয়র তথ্য অফিসার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।




ঝিনাইদহে পুলিশের তাল গাছের চারা রোপণ

 

বজ্রপাত প্রতিরোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ঝিনাইদহে মহাসড়কের পাশে তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কে বোরায় মাঠে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এ চারা রোপণ কার্যক্রমের উব্দোধন করা হয়।

আরাপপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি থেকে ১০ মাইল পর্যন্ত মহাসড়কের পাশে ২০০ তাল গাছের চারা রোপণ করা হবে।

বজ্রপাত প্রতিরোধ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং সড়কের নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে ওসি বলেন, এ কার্যক্রমের মাধ্যমে একদিকে যেমন মানুষ বজ্রপাতের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকবে, তেমনি সবুজে ঘেরা পরিবেশ সৃষ্টি হবে সড়কজুড়ে। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণের এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। কর্মসূচীতে হাইওয়ে পুলিশের সেকেন্ড অফিসার, এস আই ইয়াছির আরাফাত, সার্জেন্ট হোসাইন আহম্মেদ তুর্য, এ এস আই রবিউল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।




ডাকসুর হল সংসদের ভিপি আবু নাঈমকে ঝিনাইদহে সংবর্ধনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ফজলুল হক মুসলিম হলের নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) খন্দকার মো. আবু নাঈমকে ঝিনাইদহ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতে ইসলামী’র কার্যালয়ে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আব্দুল আলিম, সহকারী সেক্রেটারি কাজী ছাগীর আহম্মেদ, জেলা উলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মুহাদ্দিস রবিউল ইসলাম, শহর শিবিরের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা পারভেজ।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল। আলোচনা সভা শেষে ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর এলাকার সন্তান আবু নাঈমকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।

বক্তারা নবনির্বাচিত ভিপি আবু নাঈমের সাফল্যের জন্য শুভকামনা জানান এবং তার ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে সফলতা




মেহেরপুরে কালো বাজারে পাচারের সময় সার জব্দ, খুচরা ব্যবসায়ীকে জরিমান

মেহেরপুরের গাংনীতে কালো বাজারে সার পাচারের অভিযোগে মের্সাস আলীম ট্রেডার্সের মালিক বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মাহাবুব হাসানকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। একই সাথে উদ্ধার হওয়া ১২ বস্তা টিএসপি সার স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সরকারি মূল্যে তাৎক্ষণিক বিক্রি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে সার ডিলারকে এ দন্ড দেয়া হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: আনোয়ার হোসেন।

ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: আনোয়ার হোসেন জানান, গাংনী উপজেলার বিএডিস’র ডিলারের সার খুচরা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামে পাচারের সময় জনতা সারসহ একটি ভ্যান আটক করেন এবং গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসকে খবর দেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে আসেন।

পরে সার ব্যবস্থাপনা সংশোধনী আইন ২০১৮ এর ৪ ধারায় দোষী সাবস্থ হওয়ায় খুচরা সার ব্যবসায়ী মের্সাস আলীম ট্রেডার্সের মালিক বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মাহাবুব হাসানকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও উদ্ধার হওয়া ১২ বস্তা টিএসপি সার স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সরকারি মূল্যে তাৎক্ষণিক বিক্রি করেন।

এদিকে স্থানীয় কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত সার অন্য স্থানে কালো বাজারীর মাধ্যমে পাচার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভক্সপপ- ৬ জন (প্রথমজন- মাহাবুব হোসেন খুচরা সার ব্যবসায়ী, দ্বিতীয় ব্যক্তি- মালবহনকারী, পরের গুলো স্থানীয় বিএনপি নেতা ও কৃষক)।

সার কালোবাজারী সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে বলে জানান, গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন।




আলমডাঙ্গায় রাস্তা পারের সময় ইজিবাইকের ধাক্কায় প্রাণ গেল শিশু রাহেনের

আলমডাঙ্গার রোয়াকুলি গ্রামে রাস্তা পারাপারের সময় অটোরিকশার ধাক্কায় শিশু রাইহানের করুণ মৃত্যু। আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের রোয়াকুলি গ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু রাইহান উদ্দিনের করুণ মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, রোয়াকুলি গ্রামের প্রবাসী শামিম হোসেনের ছেলে রাইহান উদ্দিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাস্তা পার হয়ে মুদির দোকানে চিপস কিনতে যায়। চিপস কিনে ফেরার পথে রাস্তা পার হওয়ার সময় মুন্সিগঞ্জ থেকে দ্রুতগতিতে ছুটে আসা একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দেয়।

স্থানীয়রা রাইহানকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।




হংকংয়ের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার সামনে বাংলাদেশ

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকং চায়নার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ১৪৬ নম্বরে থাকা হংকংয়ের বিপক্ষে তা কী সম্ভব ১৮৪ নম্বরে থাকা লাল-সবুজের দলটির পক্ষে, তা জানা যাবে আজ। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচ।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে এটি ঘরের মাঠে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ। এর আগে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ঢাকা স্টেডিয়ামে গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছেন হামজা-শমিতরা। হংকং ‘সি’ গ্রুপের অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ।

আগের দিন রাতে ঢাকা এসেছেন বাংলাদেশ দলের কানাডা প্রবাসী ফুটবলার শমিত সোম। কাল প্রথম দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন তিনি। হংকংয়ের বিপক্ষে ভালো করার আশা করছেন শমিত। হামজাও হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। দলের আরও চার প্রবাসী ফুটবলার ফাহামিদুল ইসলাম, জায়ান আহমেদ, তারিক কাজী, জামাল ভূঁইয়ারাও জয়ের কথা বলছেন। এই ম্যাচে আরেক প্রতিপক্ষ ইনজুরি। ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন দলের দুই ফরোয়ার্ড সুমন রেজা ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। হালকা ইনজুরি নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে গেছেন মোহাম্মদ আল আমিন।

দুই দেশের লড়াইটা বিদেশিদেরও। হামজা চৌধুরীর লাল-সবুজের জার্সিতে এটি চতুর্থ ম্যাচ। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবেন শমিত। হংকংয়ের বিপক্ষে এ ম্যাচে আরেক প্রবাসী জায়ান আহমেদের অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই ডিফেন্ডার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলে খেলে সবার নজর কেড়ে জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় দলে। ইতালির ওলবিয়া কালসিও’র ফরোয়ার্ড ফাহামিদুল ইসলাম এরই মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে।

হামজা, শমিত, ফাহামিদুল, জামাল, জায়ান, তারিকদের মতো হংকং দলেও কয়েকজন প্রবাসী ফুটবলার আছেন। তাদের মধ্যে অন্তত পাঁচ ফুটলারের জন্ম ব্রাজিলে। এর মধ্যে আলোচিত নাম দুদু। একসময় তার নেতৃত্বে বয়সভিত্তিক অ-১৭ দলে খেলেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। বলিভিয়া, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, ক্যামেরুন, জাপানি বংশোদ্ভূত ফুটবলারদেরও রেখেছে হংকং। ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফের্নান্দো অগুস্তো। ২০২২ সাল থেকে হংকংয়ের হয়ে খেলছেন তিনি। ২৩ ম্যাচে একটি গোল করেছেন এই লেফটব্যাক। বাংলাদেশের জন্য আতঙ্ক হতে পারেন এভেরতন কামারগো। ২০২৩ সালে অভিষেক হওয়ার পর ১৯ ম্যাচে ১০ গোল করেছেন এই উইঙ্গার।

এটি দুই দেশে বাছাইয়ের তৃতীয় ম্যাচ। বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি। একটি ড্র করে আরেকটি হেরেছে। হংকং এক জয় এক ড্রয়ে ঝুলিতে ভরেছে চার পয়েন্ট। টিকে থাকার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। আগের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য এশিয়ান কাপের পথ কঠিন হয়ে গেছে। কাগজ-কলমে যে সম্ভাবনাটুকু রয়েছে তা বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের কোনো বিকল্প নেই। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া তাই ম্যাচটিকে উল্লেখ করেছেন ‘ডু অর ডাই’ হিসাবে।