ঝিনাইদহের ৪টি আসনে মনোনয়ন যুদ্ধে আছেন যারা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ চুড়ান্ত না হলেও অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

সেই সময়কে সামনে নিয়েই ঝিনাইদহের ৪টি আসনের বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দলের প্রার্থী চুড়ান্ত হলেও বিএনপিতে রয়েছে বিভেদ, সেই বিভেদকে মাথায় নিয়েই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সংযোগ ও সম্পর্ক বজায় রাখছেন, পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে নিজ নিজ দলের হাইকমান্ডে জোর যোগাযোগ রাখছেন। ঝিনাইদহের চারটি সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভেতরে ভেতরে ভোটের মাঠ গোছাতে নেমে পড়েছেন। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি জনমত গঠন ও সমর্থন বাড়াতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রচারণা কমিটি করে নানা কৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য জাতীয় দিবস সামনে এলেই বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোট চাইতে ঢাকা থেকে গ্রামে ছুটে আসছেন। অনেকে এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন টাঙিয়ে প্রচার করে চলেছেন। থেমে নেই অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারণাও।

এদিকে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঝিনাইদহের চারটি আসনের মধ্যে হাই প্রোফাইল রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এখনো সামনে আনতে পারেনি। জেলার ছয়টি উপজেলায় এনসিপির দলীয় কর্মসূচিও তেমন একটা দেখা যায় না।

ছয়টি উপজেলা ও ছয়টি পৌরসভা নিয়ে ঝিনাইদহ জেলায় চারটি সংসদীয় আসন গঠিত। আসনগুলো হলো- ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা), ঝিনাইদহ-২ (সদর আংশিক – হরিণাকুন্ডু), ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর – মহেশপুর) ও ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদরের আংশিক)।

জানুয়ারি ২০২৪ সালে প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী ঝিনাইদহের চারটি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ এক হাজার ৩৮০ জন। সর্বশেষ এই ভোটার তালিকা অনুযায়ি এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর মধ্যে ঝিনাইদহ-১ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ছয় হাজার ৩৩৬ জন। এ আসনে নারী ভোটার এক লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৭ জন।

ঝিনাইদহ-২ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫৩৩ জন ও নারী ভোটার দুই লাখ ৩৮ হাজার ৭৬২ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন পাঁচজন।

এছাড়া ঝিনাইদহ-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ তিন হাজার ২২৪। এর মধ্যে নারী এক লাখ ৯৯ হাজার ২৭৭ ও পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৩ হাজার ৯৪৪ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন।

ঝিনাইদহ-৪ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১৫ হাজার ৫২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৯ হাজার ৬১৬ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন চারজন।

তবে এবছরের জানুয়ারিতে শেষ হওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলার চারটি আসনেই ভোটার সংখ্যা বেড়েছে।
ভোটের মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থী যারা

ঝিনাইদহ-১: এ আসনে বিএনপির একাধিক হাই প্রোফাইল সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। তারমধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে জাচ্ছেন, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে উপজেলায় তার অনুসারি নেতা কর্মীরা বেশ গুঞ্জন ছড়াচ্ছেন। তিনিও নিয়মিত শৈলকূপার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়ে চলেছেন। উপজেলা জুড়ে তার অনুসারি বিশ্বস্ত কর্মী সমর্থকও রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। দলেও রয়েছে তার ক্লিন ইমেজ। ভোটের মাঠে সেই ইমেজকে বেছে নিতে পারেন সাধারণ ভোটাররা।

একই আসনে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এরই মধ্যে দলীয় কর্মসূচিগুলোতে মাঠঘাট দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। নিজস্ব দলীয় কর্মী বাহিনীসহ নিজের স্বচ্ছ ইমেজকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে এগিয়ে যেতে চান তিনি। সাধারণ ভোটারদের কাছেও বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডুর বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দলীয় হাই কমান্ডেও রয়েছে তার শক্ত অবস্থান। এছাড়াও সাবেক এমপি আব্দুল ওহাবসহ আরও দু একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে বিএনপিতে তবে ধারণা করা হচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল, মো: আসাদুজ্জামান এবং কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডুর মধ্যেই যে কেউ পেতে পারেণ আসনটি।

এছাড়া এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন শৈলকূপা উপজেলা জামায়াতের আমির এএসএম মতিউর রহমান। নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চুড়ান্ত না হলেও জামায়াতের এ নেতাকে সম্ভব্য প্রার্থী ঘোষণা করায় তিনি সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে দলটির উপজেলা সভাপতি এ আসন থেকে আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। তবে আসনটিতে বিএনপির প্রভাব বেশি থাকায় তাদের জয়ের পাল্লা ভারি বলে জানা গেছে। এছাড়া গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি থেকে ঝিনাইদহ-১ আসনে তেমন কোনো জোরাল প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না।
ঝিনাইদহ-২: এই আসনটি ঝিনাইদহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন। জেলা সদরে এই আসনটি হওয়ায়, সব দলই এ আসনটিকে নিজেদের

ডেরায় রাখতে চায়। এ আসনে বিগত দিনে বিএনপির এক চেটিয়া আধিপত্য ছিল। তবে বিগত ১৬ বছরে বিতর্কিত একাধিক নির্বাচনে ভোট দিতে না পেরে ঝিমিয়ে পড়েছিলেন বিএনপির তৃণমূল সমর্থকরা। এবার তারা ভোটের অপেক্ষায় রয়েছেন।

ভোটাররা বলছেন, তারা এবার নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। এ আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে জেলা বিএনপির সভাপতি ও হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. এম এ মজিদ শক্ত অবস্থানে রয়েছে, তার মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেণ। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সাবেক এমপি মসিউর রহমানের বড় ছেলে কেন্দ্রীয় ড্যাবের নির্বাহী সদস্য ডা.ইব্রাহিম রহমান বাবু। এছাড়া ঝিনাইদহ-২ আসনে ভোটের মাঠে জোরেশোরে নেমেছেন গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, তিনি মাঝে মাঝে এলাকায় গণসংযোগ পথসভার মাধ্যমে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। বিএনপি কিম্বা অন্য কোন দলের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নির্বাচনী জোট হলে এ আসন থেকে রাশেদ খান কে মনোনয়ন দেওয়ার গুঞ্জুন শুনছেন অনেক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশ্লেষকগণ, তবে বিএনপি ছাড়দিলে এই আসন রক্ষা করা কষ্টকর হয়ে পড়বে তাদের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকরকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছেন, তিনি দলের একক প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দলীয় কর্মসূচি ও সামাজিক কার্যক্রমের পাশাপাশি ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীরা। জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে হরিণাকুন্ডু ও সদরের পশ্চিমাঞ্চলে। সে ক্ষেত্রে বিএনপিতে বিভাজন দেখাদিলে বা দলে বিদ্রহী কোন প্রার্থী থাকলে জামায়াত এ আসনটি দখলে নিয়ে নিতে পারে বলে ধারণা করছেন সাধারণ ভোটাররা।

অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যদি জোটগত নির্বাচন না করে তাহলে তাদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে আগামী নির্বাচনে দলটির জেলা সভাপতি এইচএম মোমতাজুল করীম লড়তে পারেন এ আসন থেকে। এছাড়া বাম জোটের প্রার্থী হিসেবে বাসদে’র এ্যাড. আসাদুজ্জামান আছাদ এই আসনে থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মাঝেই থাকবে ভোটের মূল লড়াই।

ঝিনাইদহ-৩: জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এ আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমর্থক সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নির্বাচনেও একচেটিয়া অবস্থান ধরে রেখেছে জামায়াত। তবে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোতে বদলে যায় এ আসনের ভোটের চিত্র।

সর্বশেষ ২৪ এর ৭ জানুয়ারি নির্বাচনেও কারচুপি করার পরও এ আসনে সর্বসাকুল্যে ভোট পোল হয়েছিল ৩০% এর মতো। এ আসনে জামায়াতে ইসলামী একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে আগেই। অধ্যক্ষ মতিয়ার রহমান এ আসন থেকে লড়বেন। ইসলামী বক্তা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় মতিয়ার রহমানের বাড়তি ইমেজ রয়েছে। এছাড়া নির্বাচনকে সামনে রেখে আগেভাগেই প্রচার-প্রচারণা উঠান বৈঠক, ফেস্টুন ব্যানার লাগিয়ে শুভেচ্ছা বার্তা পৌছে দিচ্ছেন জামায়াতের এ প্রার্থী।

গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপির একাধিক হাই প্রোফাইলের প্রার্থী রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে বিএনপির একাধিক নেতা কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এ আসন থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, ঝিনাইদহ- ৩ আসনের সাবেক জনপ্রিয় এমপি প্রয়াত শহিদুল ইসলাম মাস্টারের সন্তান মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদি হাসান রনি ও সাবেক জাসাস নেতা ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী মনির খান এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে মনোনয়ন যেই পান না কেন, লড়াই হবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর সঙ্গে। বিএনপি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে লড়াইটা সমানে সমান হবে। অন্যথায় জামায়াতের পাল্লাই ভারি হবে।
এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ এবং বাসদ তাদের একক প্রার্থী দিতে পারেন বলেও শুনা যাচ্ছে।

ঝিনাইদহ-৪: জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আসন কালীগঞ্জ। এ আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। দলীয় কর্মসূচি পালনেও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোটের মাঠের হিসাব নিকাশ কষছেন। নিজ নিজ প্রভাব ও অবস্থান জানান দিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের শোডাউন। এমনকি তাদের সমর্থকরা একাধিকবার সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন।

এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। বিএনপির তৃণমূলে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক নেতা হওয়ায় তার রয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। এছাড়া এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হামিদুল ইসলাম। তিনিও ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জোরেশোরে, স্থানীয় ভাবে তার রয়েছে নিজস্ব কর্মী সমর্থক ও জনপ্রিয়তা, বহু হামলা মামলার শিকার হওয়া মানুষের ডাকে সাড়াদিয়ে যেকোন সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন এই নেতা। এছাড়া সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টুর স্ত্রী মুর্শেদা জামান এই আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছে। এদিকে এই আসন থেকে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলাম। উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবু তালেব এ আসন থেকে লড়বেন। তিনি প্রতিনিয়তই নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে। এছাড়া এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মুফতী আব্দুল জলিল।

এ আসনে ভোটের মাঠে লড়বেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন। ক্লিন ইমেজের তরুণ রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজ নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও ঝিনাইদহ শহরে তিনি বেশ পরিচিত জনপ্রিয় মুখ। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ায় তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছেন।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য করছেন তার মধ্যে কিছু সংখ্যক ভোটারের কাছে প্রশ্ন করলে তারা জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তাদের বিশ্বাস। ভোটাররা আগামী নির্বাচনে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে ক্লিন ইমেজের সৎ, যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের ভোট দিতে চান। ভোটাররা পেশীশক্তি প্রদর্শনকারী, ভয়ভীতি দেখানো, টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ ও অসৎ প্রভাব বিস্তারকারীদের ভোটের মাধ্যমেই জবাব দিতে চান।

নির্বাচনে অংশ গ্রহন এবং প্রস্তুতি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা জাময়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক আলী আজম মোহা.আবু বকর বলেন, আমাদের ঘোষিত ৫দফা দাবি মানলেই আমরা যেকোন সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার, জাতীয় পার্টিসহ ১৪দল নিবন্ধন বাতিল, জুলাইসনদ বাস্তবায়ন করলে আমরা নির্বাচনের জন্য সর্বদা প্রস্তুত আিছ। আর ঝিনাইদহের নির্বাচন সম্পর্কে বলেন আমরা যেখানেই যাচ্ছি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি আশাকরি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের সংখ্যা গরিষ্ট আসনে আমরা জয়লাভ করব।

নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড. এম.এ মজিদ বলেন আমরা এই নির্বাচনকে বাংলাদেশের ভবিষ্যত গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মৌলিক অধিকার, সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত, ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপিকে বিজয়ী করতে হবে। আর এ লক্ষ্যে আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে আলাদা কমিটি করে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। তিনি বলেন, বিগত দিনে ঝিনাইদহ-২সহ ঝিনাইদহের প্রতিটি আসন থেকে আমরা বার বার জয়লাভ করেছি। এই নির্বাচনেও ইনশাল্লাহ আমরা প্রতিটি আসন থেকে জয়লাভ করব।

তরুন, যুবসমাজ ও মহিলা ভোটাররা এবার নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবেন, কারণ এর আগে তারা সঠিক ভাবে ভোট দিতে পারেনি। সবার মধ্যেই ভোট দেওয়ার আকাঙ্খা কাজ করছে, তবে তারা সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেবেন বলে জানান। যায়হোক ব্যালটের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চাই সবাই।




দর্শনায় জামায়াতের স্মার্ট টিম সদস্যদের সমাবেশে 

দর্শনায় স্মার্ট টিম সদস্যদের সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা আমির রুহুল আমিন বলেছেন, জুলাই বিপ্লব ধারণ করেই আগামী রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হতে হবে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় দর্শনা অডিটরিয়ামে স্মার্ট টিম সদস্যদের সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা আইটি বিভাগের সভাপতি মাসুম বিল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিবের আপত্তি আছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাহলে বুঝতে হবে বিএনপি জুলাই বিপ্লব কতটুকু ধারণ করে এদেশে রাজনীতি করছে। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের মতো ফলাফল দিতে আগামী ত্রয়োদশ নির্বাচনে দেশের জনগণ জামায়াতে ইসলামিকেই বেছে নেবে।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আমিরুল ইসলাম, তালিমুল কুরআন বিভাগের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দিন এবং দর্শনা পৌর শাখার আমির সাহিকুল ইসলাম অপু।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা আইটি বিভাগের সভাপতি হারুন অর রশিদ, দামুড়হুদা উপজেলা আইটি বিভাগের সভাপতি মাওলানা আব্দুল খালেক, দামুড়হুদা উপজেলা স্মার্ট টিমের সদস্য ইকরাম, শাহাদাত আলী, সাদিক হোসেন, হাউলী ইউনিয়ন স্মার্ট টিম লিডার, দামুড়হুদা ইউনিয়ন টিম লিডার আমিনুল ইসলাম জিহাদ, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের মেহেদী হাসান, নাটুদাহ ইউনিয়নের বনি আমিন, জুড়ানপুর ইউনিয়নের আবু সাঈদ, নতিপোতা ইউনিয়নের নাইম হোসেন রানা, জীবননগর উপজেলা প্রচার বিভাগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, জীবননগর স্মার্ট টিমের সদস্য হাসানুজ্জামান, উপজেলা আইটি সদস্য সুজাউল হক জিহাদ প্রমুখ।




মেহেরপুরে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে মেহেরপুরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের কলেজ মোড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কাথুলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার আমির মাওলানা তাজউদ্দিন খান।

জেলা সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা মহবুবুল আলম, জেলা রাজনৈতিক সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি আব্দুর রউফ মুকুল, উপজেলা আমির মাওলানা সোহেল রানা, পৌর আমির সোহেল রানা ডলার প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা জানান, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা কেন্দ্রীয় ঘোষিত ৫ দফা দাবির মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জোরালোভাবে উপস্থাপন করেন। নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন ও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এ সময় সদর উপজেলা সেক্রেটারি মাস্টার জাব্বারুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মো. আব্দুস সালামসহ মেহেরপুর ও মুজিবনগর জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন হবে না

জুলাই ঘোষণা, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দর্শনা থানা শাখার উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বাদ আসর দর্শনায় এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দর্শনা বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি রেলবাজার, রেলগেট, পুরাতনবাজার, থানা মোড়, ইসলামবাজার, রেলইয়ার্ড হয়ে রেলবাজারস্থ শহীদ শাহরিয়ার মুক্ত মঞ্চে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। দর্শনা থানা আমির মাওলানা রেজাউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আজিজুর রহমান এবং জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. আব্দুল কাদের।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মাজলিসুল মুফাসসিরিনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবু জার গিফারী, অধ্যাপক খলিলুর রহমান, দর্শনা থানা নায়েবে আমির মাজহারুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, দামুড়হুদা যুব জামায়াতের সভাপতি মাওলানা আব্দুল খালেক, দর্শনা পৌর আমির মো. সাহিকুল আলম অপু, মদনা ইউনিয়ন আমির হাফেজ শহিদুল ইসলাম, কুড়ুলগাছী ইউনিয়ন আমির সদেকীন, বেগমপুর ইউনিয়ন আমির মোশারফ হোসেন, নেহালপুর ইউনিয়ন আমির লিটন মল্লিক, তিতুদহ ইউনিয়ন আমির মো. রাফিজুল ইসলাম, গড়াইটুপি ইউনিয়ন আমির মো. ইউনুচ আলীসহ সকল ইউনিয়নের সেক্রেটারি ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মো. আজিজুর রহমান পিআর পদ্ধতির ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপির বিরোধিতার কারণ হিসেবে ৩টি প্রধান কারণ উল্লেখ করে বলেন, পিআর বাস্তবায়ন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য হবে না, ভোটের সময় একবার ভোটারের পা ধরলেও পরবর্তী ৫ বছর ভোটারকে ধরতে হবে এবং পেশিশক্তি প্রদর্শন করে ভোট নেয়ার সুযোগ থাকবে না। এজন্যই তারা বলে, “পিআর খায় না, গায়ে মাখে বুঝি না।” এক সময় তারা জামায়াতের দেয়া কেয়ারটেকার সরকার বুঝত না, পরে আন্দোলনের মুখে বুঝেছিল; এবারও ইনশাল্লাহ বুঝবে।

বিক্ষোভে দর্শনা থানা সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী যোগ দেয়ায় ক্ষণিকের জন্য দর্শনা মিছিলের শহরে পরিণত হয়। পথচারীরা মন্তব্য করেন, বহু বছর পর এত বড় রাজনৈতিক মিছিল দর্শনাবাসী দেখল।




পিআর পদ্ধতিসহ ৫ দফা দাবিতে আলমডাঙ্গায় জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ

আলমডাঙ্গায় জামায়াতের পিআর পদ্ধতিসহ ৫দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় উপজেলা মঞ্চে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা গেট থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

মিছিলটি চারতলা মোড়, হাজী মোড়, আলিফ উদ্দিন রোড, হাই রোড হয়ে এরশাদ মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। উপজেলা জামায়াতের আমির প্রভাষক শফিউল আলম বকুল-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের যুব বিভাগের সভাপতি শেখ নূর মোহাম্মদ হুসাইন টিপু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা জামায়াতের সমাজকল্যাণ সম্পাদক আলতাফ হুসাইন, আইন ও আদালত বিষয়ক সম্পাদক দারুস সালাম। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হবে না।

উদ্বোধনী বক্তব্য দেন পৌর শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি সাহিন শাহিদ, পৌর আমীর মাহের আলী। আরও বক্তব্য রাখেন, কুমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, পৌর যুব সভাপতি সাইফুল্লাহ হুসাইন, পৌর নায়েব আমীর জুলফিকার আলী, উপজেলা দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জিএ সেক্রেটারি কামরুল হাসান সোহেল, উপজেলা যুব সভাপতি তরিকুল ইসলাম।

এই বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি বিলাল হোসাইন, যুব বিভাগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কুমারী ইউনিয়ন আমির আবুবকর সিদ্দিক  বাবলু, কালিদাসপুর আমির আসাদুল হক, ডাউকি আমির সজিবুর রহমান, জামদানি আমির ফজলুল হক, বেলগাছি ইউনিয়ন সভাপতি আমান উদ্দিন, নাগদাহ ইউনিয়ন আমের ডাক্তার রিপন বিশ্বাস, আইলহাস ইউনিয়ন আমির লিয়াকত আলী, খাসকররা ইউনিয়ন আমির মাওলানা আব্দুল লতিফ, জেহালা ইউনিয়ন আমির প্রভাষক হুমায়ুন কবির, হারদি ইউনিয়ন আমির গিয়াস উদ্দিন ও বাড়াদি ইউনিয়ন আমির জাহাঙ্গীর আলমসহ ইউনিয়নের অন্যান্য দায়িত্বশীলবৃন্দ। সঞ্চালনায় ছিলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা আলমডাঙ্গা উপজেলা সেক্রেটারি মুহা. মামুন রেজা।




আলমডাঙ্গা দুর্গাপূজার আর্থিক সহোযোগিতায় শরিফুজ্জামান শরিফ

সত্য সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু মানবজাতির সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব হলো দুর্গাপূজা। বিপদতারিণী মাতা দশ হাতে দশ অস্ত্র নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন অসুর দমনে। মহিষাসুরকে বধ করে অশুভ শক্তির বিনাশ করে জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। জগৎ সংসার তার প্রতিদানস্বরূপ আবহমানকাল ধরে অখণ্ড জনপদে তার পূজা-অর্চনা করে আসছে। বাংলাদেশ সেই অখণ্ড অংশের সনাতনী হিন্দুগণের উপাস্য দেবী দুর্গার পূজা হয়ে থাকে প্রতিবছর।

আলমডাঙ্গা উপজেলায় সংখ্যালঘু এই সনাতনী হিন্দুগণের আরাধনায় স্থান পেয়েছে মাতা জগদ্ধাত্রী অভিন্নরূপে দুর্গা মাতা। আলমডাঙ্গা উপজেলায় এ বছর মোট ৩৫টি পূজামণ্ডপ আলোকসজ্জায় মা দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তি বিভিন্ন রূপের ডালি সাজিয়ে আগমন ঘটেছে ঘোড়ার পিঠে চড়ে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ আর্থিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রতিটি মণ্ডপে প্রতি ছয় হাজার টাকা অনুদান হিসেবে সকল মণ্ডপের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের হাতে তুলে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে নির্বিঘ্নে পূজা সম্পন্নকরণে সকল সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।




মুজিবনগরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করলেন শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন

মেহেরপুরের মুজিবনগরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন শিক্ষক ঐক্য জোটের মহাসচিব ও মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য জাকির হোসেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন তিনি।

এ সময় তিনি সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। জাকির হোসেন বলেন,“আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে পালনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রাখা আমাদের অঙ্গীকার।”

মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর, বাবুপুর, মহাজনপুর, রতনপুর, বল্লভপুর, দারিয়াপুর ও মোনাখালীসহ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ তিনি পরিদর্শন করেন।

এ সময় মুজিবনগর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ধীরেন বাবু, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠা কালীন সাবেক অধ্যক্ষ ড, গাজিউর রহমান, জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইসরাইল হোসেন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আসাদুল হক, জেলা নবীনদল সভাপতি আনোয়ার শেখ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান সোহাগসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে তিনি পথচারী, ব্যবসায়ী ও সর্বস্তরের মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।




গাংনীতে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ ও সমাবেশ

পিআর পদ্ধতি চালু, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিতকরণসহ ৫ দফা দাবিতে গাংনীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার বিকেলে একই দাবিতে গাংনী উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল গাংনী মডেল প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু হয়ে হাসপাতাল ঘুরে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে এসে শেষ হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গাংনী উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. রবিউল ইসলাম। এ সময় বক্তব্য রাখেন জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য নাজমুল হুদা, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, পৌর জামায়াতের আমির আহসানুল হক প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য প্রার্থী নাজমুল হুদা বলেন, বিগত দিনে কালো টাকা, পেশিশক্তি দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন কায়দায় ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়েছে। তাই আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের জোর দাবি জানিয়ে আসছে। এই পদ্ধতিতে প্রার্থীর কোনো ছবি থাকবে না, শুধু প্রতীক থাকবে। এতে প্রার্থী কোনোভাবে কালো টাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব খাটাতে পারবে না। এজন্য দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনের জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবি জানিয়ে আসছে। সরকার এই দাবি মানলে আলহামদুলিল্লাহ, না মানলে রাজপথেই এই দাবির ফয়সালা হবে। জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায় করেই আগামীতে ঘরে ফিরবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গাংনী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দেশকে যদি সুন্দর করতে হয়, বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিতে হয়, তবে জামায়াতের পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবি মেনে নিয়ে কার্যকর করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের আদর্শ দেখে সারা দেশে জোয়ার উঠেছে, সাড়া পড়েছে। এদেশের ঘরে ঘরে জামায়াতের দুর্গ গড়ে উঠেছে। জামায়াতের ভোটের এই দুর্গ থেকে একটি পক্ষ নানাভাবে আবোল-তাবোল মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বুঝতে পারছে।




মুজিবনগরে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

মুজিবনগরে কেন্দ্র ঘোষিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৬-দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মুজিবনগর উপজেলা শাখার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কেন্দ্র ঘোষিত নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ ৫-দফা দাবির লক্ষ্যে সমাবেশে মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি খাইরুল বাসার এর সঞ্চালনায়, মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর (ভারপ্রাপ্ত) আমির হাফেজ মাওলানা ফিরাতুল ইসলাম নাঈম এর সভাপতিতত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার আমির ও মেহেরপুর-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা তাজউদ্দীন খান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, দারিয়াপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মাও.আব্দুল হালিম, বাগোয়ান ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী আমির মাওলানা ফারুক হোসেন, মহাজনপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমীর আবদুল হামিদ, মোনাখালি ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মোঃ মুখলেছুর রহমান, মুজিবনগর উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আবু তালহা এবং মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মুজিবনগর উপজেলা সভাপতি ফজলুল হক গাজী, উপজেলা পেশাজীবি বিভাগের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন, উপজেলা জামায়াতের বাইতুলমাল সেক্রেটারি আমির হোসেন।

সমাবেশ শেষে মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির হাফেজ মাওলানা ফিরাতুল ইসলাম নাঈম এর নেতৃত্বে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি কেদারগঞ্জ বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেদারগঞ্জ বাজার চার রাস্তার মোড়ে এসে শেষ হয়।




কোটচাঁদপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে কোটচাঁদপুর পৌর পাঠাগারের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কোটচাঁদপুর বাজারের পায়রা চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশের শূরা সদস্য, বিভিন্ন ভাষার গবেষক এবং ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রফেসর মতিয়ার রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আমীর মাওলানা তাজুল ইসলাম, উপজেলা সেক্রেটারি শাহাবুদ্দিন খান, পৌর আমীর মুহাদ্দিস আব্দুল কাইয়ুম, পৌর সেক্রেটারি মাহফুজুল হক মিন্টু প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুয়াবিয়া হুসাইন, সাবেক আমীর মাস্টার আজিজুর রহমান, মাস্টার মশিয়ার রহমান, মাস্টার রেজাউল ইসলাম, সাফদারপুর ইউনিয়ন আমীর মাওলানা নুরুন্নবী, দোড়া ইউনিয়ন আমীর ও সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, কুশনা ইউনিয়ন আমীর মাওলানা আতিকুল ইসলাম, বলুহর ইউনিয়ন আমীর ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম, এলাঙ্গী ইউনিয়ন আমীর জাহিদুল ইসলাম আওয়াল সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মতিয়ার রহমান বলেন, জামায়াতের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া দেশে শান্তি ফিরবে না। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় এ দাবি জনগণের দাবি।” তিনি জামায়াতের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

সমাবেশ শেষে প্রফেসর মতিয়ার রহমান নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।