আলমডাঙ্গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলো যুবক

আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের পারলক্ষ্মীপুর ঘোষপাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন এক যুবক। তবে চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত হয়ে সুস্থ জীবনে ফিরেছেন।

ঘটনাটি ঘটে গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঞ্জুরুল ইসলাম (২৮) নামের ওই যুবক এলাকায় ডিস লাইনের কাজ করার সময় অসতর্কভাবে বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনি খুঁটির সাথে ঝুলে পড়েন। মুহূর্তেই এলাকাবাসীর চিৎকারে সহকর্মীরা তাকে নিচে নামিয়ে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, “মঞ্জুরুলকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার ফলে তার জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।” বর্তমানে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত। সুস্থ হওয়ার পর মঞ্জুরুল সাংবাদিকদের বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বেঁচে গেছি। ভবিষ্যতে আর কখনো ঝুঁকি নিয়ে কাজ করব না।”

এই ঘটনায় এলাকাবাসীও শিক্ষাগ্রহণ করেছে। তারা জানান, বিদ্যুৎ ও ডিস লাইনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।




আলমডাঙ্গার দুর্গাপূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করলেন এসপি 

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আলমডাঙ্গা থানার বিভিন্ন দুর্গাপূজা মণ্ডপ আকস্মিক পরিদর্শন করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা।

পুলিশ সুপার মণ্ডপগুলোতে উপস্থিত পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য, ভক্ত ও স্থানীয় সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয়, এটি বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসব। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা বা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে কেউ যাতে না পারে, সেদিকে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে।”

তিনি আরও জানান, আলমডাঙ্গা থানার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পুলিশ মোতায়েন থাকবে, পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে আনসার ও গ্রাম পুলিশদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা, মেটাল ডিটেক্টর এবং টহল টিম। জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে প্রতিটি মণ্ডপকে সংযুক্ত রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দকে উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানান এবং দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “সকলের সহযোগিতায় দুর্গাপূজা আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।” এই আকস্মিক পরিদর্শনে আরও উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ মাসুদুর রহমান, পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) বিকাশ চন্দ্র সরকার, বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধীজন।

জানা গেছে, এ বছর আলমডাঙ্গা উপজেলায় মোট ৩৫ টি দুর্গাপূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১২টি মণ্ডপকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে নির্দিষ্ট সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

স্থানীয়রা জানান, পুলিশ সুপারের আকস্মিক এ পরিদর্শনে পূজা উদ্যাপন কমিটি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা মনে করছেন, প্রশাসনের এ ধরণের তৎপরতা দুর্গোৎসবকে আরও নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে পরিণত করবে।




আলমডাঙ্গায় জামায়াতের পথসভা অনুষ্ঠিত 

আলমডাঙ্গা উপজেলার  ফরিদপুর গ্রামে জামায়াতে ইসলামের পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার মাগরীবের নামাজের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রাম কমিটির উদ্যোগে স্কুল মোড়ে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফরিদপুর গ্রাম কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নাগদাহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দারুস সালাম।

প্রধান অতিথি তার আলোচনায় বলেন, সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির এবং দেশ পরিচালনার জন্য আমাদের সবায়কে ভালো মানুষের হাতে দায়িত্বভার তুলে দিতে হবে। এর জন্য প্রতিটি মানুষের কাছে গিয়ে দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে ইসলামের সুমহান আদর্শ তুলে ধরতে  হবে। তিনি আরো বলেন, একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের দেশের সকল দলকে আদর্শভিত্তিক কাজের প্রতিযোগিতা করতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন সভাপতি আমান উদ্দিন, সহ-সভাপতি মাওলানা শহিদুল হক, ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা শওকত আলী, ইউনিয়ন নির্বাচন বিভাগের পরিচালক জহিরুল ইসলাম মজনু, ইউনিয়ন সহকারি সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার, ডামোশ গ্রাম কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, ফরিদপুরের সহ-সভাপতি মানোয়ার হোসেন, সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন মন্ডল। আরো উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মনি, ২নং ওয়ার্ড সভাপতি আহসান হাবীব, সহকারি সেক্রেটারি জুড়ন আলী মালিতা, সদস্য হিসেবে ইব্রাহিম হোসেন, হাবিবুর রহমান, লাল মিয়া, খলিলুর রহমান, খয়বার আলী। সভাটি উপস্থাপনা করেন, ২ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারী রুহুল আমীন।




মুজিবনগরে বিশেষ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন

মুজিবনগরে গুড নেইবারস বাংলাদেশ, মেহেরপুর সিডিপি’র  আয়োজনে, বিশেষ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতা মূলক  ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১০ থেকে সারা দিন এই ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন সিডিপির হেলথ অফিসার, মেডিকেল অফিসার ও এডমিন অফিসার।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. সুরাইয়া শারমিন পুষ্প এবং মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও সহকারী অধ্যাপক (ট্রান্সফিউশন মেডিসিন) ডা. এম এম জাহিদুল ইসলাম।

সচেতনতামূলক কার্যক্রম শেষে চিকিৎসক রোগী দেখা শুরু করেন এবং স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। একই সঙ্গে কমিউনিটির মধ্যে স্বল্প মূল্যে নিউট্রিশন প্যাকেজ (আটা ৩ কেজি, ডাল ১ কেজি, চিনি ২ কেজি, বাটার বাইট বিস্কুট ১ প্যাকেট এবং রিন ওয়াশিং পাউডার ২ কেজি) ৪৫০ জন পরিবারের মাঝে বিতরণ করান।

এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় শতাধিক রোগী স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া, ৪৫০ পরিবারের মধ্যে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয়েছে, যা পরিবারগুলোর পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে পুষ্টিহীন শিশু ও পরিবারের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছে।




আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপনে মেহেরপুর জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে পালনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় মেহেরপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়। মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনছারুল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আলমগীর খান ছাতু, আবু সালেহ নাসিম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক লিটন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মোহাম্মদ, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা।

এছাড়াও এ মতবিনিময় সভায় পূজা উদযাপন পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সভায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মেহেরপুরের আহ্বায়ক সঞ্জীত পাল বাপ্পি, বাংলাদেশ হিন্দু-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা আহ্বায়ক মাধব চন্দ্র ভাস্কর এবং পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিশ্বনাথ সাহা। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মন্দির কমিটির নেতারাও মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, মেহেরপুর জেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে, শান্তি ও স্বস্তির পরিবেশে পালনে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

পরিশেষে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২১ টি পূজা মণ্ডপে অর্থ প্রদানের মধ্যে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।




কোটচাঁদপুরে সাবেক চেয়ারম্যানসহ পরিবারের ৬ সদস্যের জেল-জরিমানা

ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক এমপি শফিকুল আযম চঞ্চলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও আওয়ামী লীগের দোসর কোটচাঁদপুর বলুহর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম নজুসহ তার পরিবারের ৬ সদস্যকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন আদালত।

নজরুল ইসলাম নজু কোটচাঁদপুর থানার হাড়ভাঙা বিদ্যাধরপুর গ্রামের মৃত লালচাঁদ মিয়ার ছেলে। আদালত সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার ঝিনাইদহ জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক আবজাল হোসেন এ রায় প্রদান করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নজরুল ইসলাম নজুর নির্দেশে আসামিরা ২০২৪ সালের ২৬ মার্চ একই গ্রামের বাবলু রহমানের স্ত্রী তাসলিমা খাতুনকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর থানা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানালে ভুক্তভোগী আদালতের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে বিচারক নজরুল ইসলাম নজুসহ তার পরিবারের ৬ সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা ১ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।

বাদী বাবলু রহমান জানান, “এক সময়ের সন্ত্রাসী ও নানা অপকর্মের হোতা নজুর দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। তার ভয়ে কেউ কথা বলতে পারত না। নানা হুমকি-ধামকির মধ্যেও আমি মামলা চালিয়ে গেছি। তবে এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই, উকিলের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেব।”

বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আশরাফুল আলম মালিতা বলেন, “আসামিরা একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় বিশেষ বিবেচনায় আদালত শাস্তি কম দিয়েছেন। তবে এ রায়ে প্রমাণিত হলো অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক, আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”

অন্যান্য আসামিরা হলেন ইয়ারুল ইসলাম, তাসলিমা খাতুন, সাদ্দাম হোসেন, কল্পনা খাতুন ও পাখি খাতুন।




আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে সিভিল সার্জন হাদী জিয়াউদ্দিন

আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হারদী নূরানী মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ।

বুধবার সকাল ১০টার সময় সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি অন্তঃবিভাগে সিনিয়র স্টাফ পরিচালিত স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।

অবশেষে তিনি হারদী নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে টিসিভি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনের নিবন্ধন উদ্বুদ্ধকরণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। উভয় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শারমিন আক্তার।




মেহেরপুরে গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ

মেহেরপুরে ৫২তম বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষার গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবারের প্রতিযোগিতার মূল প্রতিপাদ্য ছিল “তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে”।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খায়রুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ মেসবাহ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম।

দিনব্যাপী নানা ইভেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। আয়োজনে ছিল বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি, মেহেরপুর সদর।




দামুড়হুদায় টিসিবি পণ্য বণ্টনে অরাজকতা; হাউলীতে উত্তেজনা চরমে

দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে টিসিবির পণ্য বিতরণকে ঘিরে দেখা দিয়েছে চরম অরাজকতা। সীমিত বরাদ্দে শত শত কার্ডধারী খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হওয়ায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। গতকাল বুধবার ভোর থেকেই কার্ডধারীরা এসে জড়ো হতে থাকে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদে।

জানা গেছে, হাউলী ইউনিয়নে মোট কার্ডধারীর সংখ্যা ২২০৬ জন। এর মধ্যে ডিজিটাল এক্টিভেট কার্ড রয়েছে ১৪৮৯টি। অথচ সর্বশেষ চালানে এসেছে মাত্র ১১০৬ কার্ডের বিপরীতে পণ্য। ফলে কয়েকশ’ কার্ডধারী কোনো বরাদ্দই পাননি।

পূর্বে নিয়মিতভাবে সব কার্ডের বিপরীতে পণ্য আসলেও সাম্প্রতিক সময়ে ঘাটতি সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল আগে আসলে আগে পাওয়া যাবে। এ ঘোষণার পর ভোর থেকেই পরিষদ প্রাঙ্গণে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকেই খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, আগে ডিলাররা পণ্য প্যাকেট করে নিয়ে এসে বিতরণ করতেন, তখন ভোগান্তি কম হতো। কিন্তু বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদে এসে প্যাকেট তৈরি করায় ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। প্রচণ্ড রোদে অপেক্ষা করতে গিয়ে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের অভিযোগ, গরিব মানুষের কষ্ট দেখার কেউ নেই। মুখেই সবাই বলে অথচ কার্ড থাকতেও পণ্য পাচ্ছিনা।

ক্ষুব্ধ কার্ডধারী রমেলা খাতুন বলেন, আমার বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো পণ্য পাইনি। শুধু আমি নই, আরও অনেকে খালি হাতে ফিরেছেন।

স্থানীয়দের প্রশ্ন সরকারি পণ্য যখন সীমিত আসে, তখন কেন সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হয় না? তাদের দাবি, ন্যায্য বণ্টন ব্যবস্থা না চালু করলে এ ধরনের অনিয়ম-অবিচার চলতেই থাকবে।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সীমিত বরাদ্দের কারণে তারা চরম অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের দাবি, সরকারের পাঠানো বরাদ্দ অনুযায়ীই বিতরণ করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগ প্রশাসন শুধু দায় এড়াচ্ছে, সমস্যার সমাধান করছে না।

এলাকার সচেতন মহল সতর্ক করে বলেছেন, এভাবে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চলতে থাকলে পরিস্থিতি যেকোনো সময় মারামারি থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। সরকারি পণ্য বণ্টনে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত না হলে গ্রামীণ জনজীবন আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এবিষয়ে ইউনিয়নবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এবিষয়ে টিসিবির পণ্য বিতরণ ট্যাগ অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, সরকারিভাবেই বরাদ্দ কম আসছে, যার ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে কেউ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না। যারা আগে আসছে তারা পাচ্ছে, কারণ কার্ডের সংখ্যা বেশি বরাদ্দ সংখ্যা কম।




মুজিবনগরে যত মানুষ, রোপণ হবে তত গাছ

মুজিবনগরের মত একটি জায়গায় আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি মেহেরপুরের মুজিবনগরের জন্য প্রথমেই একটি উদ্যোগ নিতে চাই। সেটা হলো মুজিবনগর উপজেলায় যত জনবল রয়েছে, তাদের মাথাপিছু একটি করে গাছ রোপণ করা। তখন আমরা বলতে পারবো মুজিবনগরে যত মানুষ রয়েছে, তার অনুযায়ী গাছ রয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসকল কথা বলেন নবাগত মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল সালাম।

তিনি আরো বলেন, মুজিবনগরের প্রতিটি মানুষ যাতে নিজের স্বাক্ষর করতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো। যে কোন ধরনের সেবা নিতে গেলে যারা স্বাক্ষর জানে না তাদের স্বাক্ষর শেখিয়ে তারপর সেবা দেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করবো। এছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ে তিনি বলেন, যে গর্ভবতী মা সিজার অপারেশন এড়িয়ে নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান প্রসব করবে, আমাদের কাছে খবর আসা মাত্র প্রশাসন থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।

তিনি বলেন, আপনারা মুজিবনগরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে যে সকল মতামত দিয়েছেন, সেগুলো সমাধানসহ উন্নয়নের জন্য যাবতীয় কাজ করতে আমি উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

এ জন্য আপনাদের সকলকে যার যার স্থান থেকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। কারণ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সব কিছুর উন্নয়ন সম্ভব।

মতবিনিময় সভার আগে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মণ্ডলের সভাপতিত্বে মুজিবনগরের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর তাজ উদ্দিন খান, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, জনপ্রতিনিধি আব্দুর রশিদ, নাগরিক পার্টির জেলা যুগ্ম সমন্বয়ক আরিফ হোসেন, মুজিবনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ওমর ফারুক প্রিন্স, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান আলী খান, মুজিবনগর উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন, গোপালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ও ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে একাডেমির সুপারভাইজার হাসনাইন করিমের সঞ্চালনায় মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করেন মুজিবনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুস সাদাত রত্ন।