মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার আর্থিক লেনদেনে ব্যবহৃত শতাধিক এজেন্ট সিম ব্লক

মেহেরপুর জেলায় একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের শতাধিক এজেন্ট সিম ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। মূলত অস্বাভাবিক লেনদেন ও অনলাইন জুয়ার আর্থিক লেনদেনে এজেন্ট সিম গুলো ব্যবহৃত হয় বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়াতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ফলে অনলাইন জুয়াতে ব্যবহৃত বিপুল অর্থ আটকে যাওয়াসহ সিম গুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা সিআইডি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ ইউনিটের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ২৭ মে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয়েছিল, সদ্য জারি হওয়া সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুসারে অনলাইন জুয়া ও বেটিংয়ের বিরুদ্ধে সারা দেশে জোরদার অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

মূলত গত ২১ জানুয়ারি মেহেরপুর প্রতিদিনসহ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রকাশের পর মেহেরপুর জেলা কেন্দ্রিক সারা দেশে অনলাইন জুয়া পরিচালনা নেটওয়ার্কের বিষয়টি সামনে উঠে আসে। এরপর থেকে অনলাইন জুয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করে বিভিন্ন মহলের মানুষ। এতে তৎপর হয়ে ওঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সরকারের একাধিক উপদেষ্টাও অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এরই ফলশ্রুতিতে সম্প্রতি পাশ হওয়া সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত ধারা যুক্ত করা হয়। অনলাইন জুয়াকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর মাঠে নামে সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম বিভাগের একাধিক বিশেষ টিম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা সিআইডির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘মেহেরপুর জেলাতে বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ব্লক করা এজেন্ট সিম গুলির অধিকাংশই বিকাশের। এর বাইরে আরো প্রায় সহস্রাধিক এজেন্ট সিম সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। জুয়ার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে তৎক্ষণাৎ সেগুলো বন্ধ করা হবে এবং সিমের মালিক ও পরিচালনাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। অতীতে আইনের দুর্বলতার কারণে দুষ্কৃতকারীরা ছাড় পেয়ে গেলেও এবার আর সেই সুযোগ পাবে না। ‘




দর্শনায় কেরুজ বাংলামদসহ একজন গ্রেফতার

দর্শনা থানা পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫১ লিটার কেরুজ বাংলা মদসহ ঈশ্বরচন্দ্রপুরের হাসিবুলকে (৩০) গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।

এ বাংলামদ উর্দ্ধারের পর জনমনে নানা প্রশ্ন জেগেছে হাসিবুলের নিকট ৫১ লিটার কেরুজ বাংলামদ কি ভাবে এল ? কোথায় পেল এত মদ ?

জানাযায়, গত মঙ্গলবার দর্শনা থানা পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযান চালায় দর্শনা বাসষ্ট্যান্ডপাড়া মদন মার্কেটের সৌখিন জুয়েলার্সের সামনে পাকা রাস্তার উপর।

এ সময় পুলিশ ৬টি প্লাস্টিকের কন্টেইনার ও মোটরসাইকেলসহ দর্শনা পৌরসভার ঈশ্বরচন্দ্রপুর দক্ষিন পাড়ার মৃত্য সামসুল ইসলামের ছেলে হাসিবুলকে গ্রেফতার করে।

পরে পুলিশ কন্টেইনার চেক করে ৫১ লিটার কেরুজ বাংলা মদ উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত হাসিবুলের বিরুদ্ধে মামলাদায়ের পূর্বক মালামালসহ আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। কেরুজ এ বাংলামদ উর্দ্ধারের পর জনমনে প্রশ্ন জাগে হাসিবুল কোথায় পেলো এত বাংলামদ?

কে তার কাছে বিক্রি করার জন্য দিয়ে ছিলো এসব মদ ? তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলামদের এচালান ময়মনসিংহ ওয়্যার হাউজ থেকে কেরুজ শ্রমিক নেতার হাত ধরে ঈদের বাজার সামনে রেখে হাসিবুলের নিকট এসেছে এসব অবৈধ্য মালামাল।

হাসিবুলকে রিমাণ্ডে নিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে পড়বে থলের বিড়াল। কারণ এত মদ ডিস্টিলারী থেকে বের হবার কোন সুযোগ নেই।

তবে ঘটনার পর থেকে সাবেক শ্রমিক নেতা অধ্যাক্ষর ‘শ’ নামের একজন সাবেক শ্রমিক মেম্বরের নাম জোরেসোরে উচ্চারণ হচ্ছে। তাই সচেতন মহলের প্রশ্ন পুলিশ কি হাসিবুলকে রিমাণ্ডে এনে প্রকৃত মদরে মালিকের সন্ধান বের করবেন ? তবে পুলিশ এঘটনায় হাসিবুলসহ অজ্ঞাত কয়েকজন কেরুজ শ্রমিক ও কর্মচারী নামে মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় দর্শনা থানার এস আই মাসুদ বলেন,একজনের নাম উল্লেখ করে ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত মামলা দায়ের করা হয়েছে।তবে আমরা খুব শ্রীঘই মৃল আসামীকে গ্রেফতার করবো।




মুজিবনগরে শিশু অধিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

মুজিবনগরে গুডনেইবারস বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি এর আয়োজনে শিশু অধিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই শিশু অধিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।

গুডনেইবারস বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি এর ম্যানেজার বিপুল রেমার সভাপতিত্বে ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার হাসনাইন জাহিদ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিম রেজা, আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, শিশু অধিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইনে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিশু অধিকার, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার সুফল, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া উপদেশ মূলক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত থেকে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

শিশু অধিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইনে আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর ৩৬৫ জন ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




দামুড়হুদায় শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত

দামুড়হুদা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে দামুড়হুদা ব্রীজ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয়, দলীয় ও শোক পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিবসটির কর্মসূচির শুরু করা হয়।

পতাকা উত্তোলন করেন,উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও নতিপোতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও দামুড়হুদা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল হাসান তনু, উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালমা জাহান পারুল, দামুড়হুদা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম লিটন, উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতিয়ার রহমান চুন্নু, রোকনুজ্জামান তোতাম, শামসুল আলম প্রমুখ।

এছাড়া উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে দিনভর চলা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল, স্মরণ সভা ও দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

এসব অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মন্টু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক আবুল হাশেম, দামুড়হুদা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম, যুগ্নসাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, কার্পাসডাঙ্গা দামুড়হুদা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম লিটন, উপজেলা কৃষকদলের নেতা রোকনুজ্জামান তোতাম, শামসুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




পদের প্রলোভন দিয়ে অর্থ দাবীর অভিযোগ, যুবদল নেতা প্রিন্স ইমরানকে শোকজ

পদের প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে অর্থ দাবী করার অভিযোগে ইমরান আহমেদ প্রিন্স ওরফে ইমরান প্রিন্সকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। আগামী ৩দিনের মধ্যে কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে জানাতে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সন্মুখে ‍উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হয়েছে।

প্রিন্স আহমেদ ইমরান বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। তার বাড়ি মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামে।

আজ শুক্রবার (৩০ মে) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুইয়া স্বাক্ষরিত এক শোকজ পত্রে এ তথ্য জানা গেছে। শোকজ নোটিশটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভেরিফাইড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়েছে।

শোকজ পত্রে বলা হয়েছে, “আপনি (প্রিন্স আহমেদ ইমরান), যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক নেতা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতির সাথে তোলা ছবি এবং সভাপতির একান্তজন পরিচয় প্রদান করে, বিভিন্ন ব্যক্তিকে পদের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ দাবীর মতো গুরুতর অপরাধের মাধ্যমে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন মর্মে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

এমতাবস্থায়, সংগঠন বিরোধী এহেন হীন কর্মকান্ডের জন্য আপনাকে সংগঠন থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবেনা, তা আগামী ০৩ (তিন) দিনের মধ্যে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলো।”

এদিকে, জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভেরিফাইড অফিসিয়ার ফেসবুক পেজে নোটিশ টি পোস্ট করার পর কমেন্ট সেকশনে অধিকাংশ মন্তব্য প্রিন্স ইমরানের বিরুদ্ধে করা হয়েছে।  একই সঙ্গে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারেরও সুপারিশ করেছেন অনেকে। এবং এ ধরণের পদক্ষেপ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রশংসার করেছেন অনেকে।

 




দর্শনায় নিম্ন চাপের কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় গত দুই দিনের টানা নিম্ন চাপের কারণে বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ও নিম্নাঞ্চলে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

দর্শনা পৌরসভার পরানপুর নলগাড়ী মাঠে গিয়ে দেখা যায় এক কৃষক তার বীজতলাকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছে। পানিতে ডুবে থাকা বীজতলার চার পাশে বাঁধ দিয়ে পানি সেচে বীজতলা জাগিয়ে তুলার চেষ্টা করছে। পরানপুর গ্রামের কেসমত আলীর ছেলে কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, আমি ২ বিঘা ১০ কাঠা জমিতে রোপা আমন ধান রোপন করার জন্য ২ কাঠা জমিতে খাটোবাবু ও ৮৯ ধানের বীজতলা করেছি। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে পানির নীচে তলিয়ে গেছে।

আমি গত দুই দিন ধরে বৃষ্টি থামলেই থালা নিয়ে চলে আসছি বীজতলার পানি সেচতে। শেষ পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে বীজতলা। আজ আবার শেষ চেষ্টা করছি জানি না বীজতলা রক্ষা করতে পারবো কিনা। এছাড়া পারানপুর গ্রামের নবাই মন্ডলের ছেলে মহসিন আলী জানান, আমি ৬ বিঘা পেঁপের চাষ করেছি। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে পেঁপে গাছগুলো মরে গেছে।

এভাবে বৃষ্টি হলে জমির সকল পেঁপে গাছ মারা যাবে। ফলে আমার মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকতার্ কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা এর নিকট এলাকায় কি কি ফসলের ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষ করে নিম্ন অঞ্চলের জমিতে পেঁপে, সধ্য বিজতলা, সদ্য লাগানো রোপা আমন ধান, মরিচ, কলা বাগান, পাট ও আখের ক্ষেত পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে আর যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে ক্ষতির পরিমান কিছুটা কম হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এছাড়া দর্শনা থানাধীন দর্শনা পৌর এলাকার মোহাম্মদপুর ও বিজিবি ক্যাম্প পাড়ার কিছু নিম্নাঞ্চল জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মমতার্ আবহাওয়া বিদ মোঃ জামিনুর রহমান জানান গভীর সাগরে নিম্নচাপের ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আজ শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনাসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৮ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামিকাল শনিবার পর্যন্ত আরো বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বৃষ্টিপাত কুমে আসবে বলে আসা করা হচ্ছে।




মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে আহত বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে আহত বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

গত ১৭ মে মহেশপুর সীমান্তের শ্যামকুড় “চেয়ারম্যান ঘাট” এলাকায় এই গুলির ঘটনা ঘটে। নিহত বাংলাদেশী যুবকের নাম নাসির উদ্দীন (৪৪)। নাসির উদ্দীন মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় পশ্চিমপাড়ার লুৎফর রহমানের ছেলে। ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (৩০ মে) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

নাসির উদ্দীনের প্রতিবেশীরা জানান, গত ১৭ মে শ্যামকুড় গ্রামের নাসির, একই উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের বর্ডার রিপন ও অনন্তপুর গ্রামের সোহাগ ভারত সীমান্তে গেলে পাখিউড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে প্লাস্টিক বল এ্যামিনেশন (ছররা গুলি) নিক্ষেপ করে। গুলিতে নাসিরসহ তার দুই সহযোগী আহত হন। বিষয়টি গোপন রেখে গুলিবিদ্ধরা গোপনে চিকিৎসা নেন। অন্য দুইজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও নাসির মারা যান।

স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর শহিদুল ইসলাম জানান, গত ১৭ মে সীমান্তের “চেয়ারম্যান ঘাট” এলাকায় নাসির গুলিবিদ্ধ হন। সীমান্ত এলাকায় গেলে ভারতের পাখিউড়া বিএসএফ’র সদস্যরা তাকে গুলি করে। পেটে ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নাসির অত্যান্ত গোপনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (৩০ মে) ভোরে তিনি মারা যান।

নিহত নাসিরের প্রতিবেশি চাচা শ্যামকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহানুর বলেন, ভাতিজা মারা গেছেন এটা সত্য, তবে কিভাবে মারা গেছেন তা আমি জানিনা। শুক্রবার জুম্মাবাদ তার দাফন হয়েছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রফিকুল আলম বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমরা সেখানে বিজিবি পাঠিয়েছিলাম কিন্তু নাসির উদ্দীন বিএসএফের গুলিতে আহত হয়েছিল কিনা তার সত্যতা পাওয়া যায়নি এবং পরিবারের পক্ষ থেকে এমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য এর আগে গত ১১ এপ্রিল বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ওয়াসিম ও ২৭ এপ্রিল একই উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে ওবাইদুর রহমান বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হন। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও বিএসএফ দুই বাংলাদেশীর লাশ এখনো ফেরৎ দেয়নি। তবে বিজিবি বলছে নিহত দুই বাংলাদেশীর লাশ বিএসএফ ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ কারণে লাশ ফেরৎ পেতে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।




কোটচাঁদপুরে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি,র প্রতিষ্ঠাতা, বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি, স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা ও পৌর এলাকা মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সকালে কোটচাঁদপুরের মেইন বাজার পুরাতন কলেজ হোস্টেলে পৌর বিএনপি দলিও কার্যালয়ে জাতীয় ও দলিও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানের সুচনা করেন।

সে সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল। জেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুবকর বিশ্বাস, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, পৌর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক মেয়র এস কে এম সালাহউদ্দিন বুলবুল সিডল, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক ফারুক হোসেন খোকন, পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা টিপু, জেলা বিএনপি’র সদস্য আশরাফ আলী, উপজেলা বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভুইয়া, ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র নেতা জুলফিকার আলি রাজা, পৌর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, পৌর বিএনপি নেতা দুলু, উপজেলার যুবদলের আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান খান মুকুল, সদস্য সচিব মাহফুজ আলম মামুন, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান সিদ্দিক, সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ তুফান, সদস্য সচিব সেলিম রেজা মধু, পৌর ছাত্র দলের সদস্য সচিব ফজলে রাব্বি, কলেজ ছাত্র দলের আহ্বায়ক শাওন প্রমূখ।

দুপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র আয়োজনে জুম্মার নামাজ শেষে মসজিদে মসজিদে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, সেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, শ্রমিক দল সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনা, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া শেষে মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।




বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করার অভিযোগ

বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন কোটচাঁদপুরের রামচন্দ্রপুর সিঙ্গিয়া সড়কে এ কাজ করেন প্রতিষ্ঠানটি। এক বছরের সিকিউরিটি আছে, সড়ক নস্ট হয়ে গেলে মেরামত করে দেয়া হবে বললেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার মিরাজুল হাকিম।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর এন্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম উইকেয়ার ফেস-১ প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহে ৮৪.৯৯ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এর অধীনে কোটচাঁদপুরেও সড়ক ও মার্কেট নির্মানের কাজ এগিয়ে চলেছে। কাজটি যৌথভাবে করছেন রানা বিল্ডার্স ও মিজানুর রহমান নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

গেল ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ সালে কাজটি শুরু হয়। যা সম্পন্ন হবে ১৮ জানুয়ারি ২০২৬ সালে। এর তদারকিতে আছেন কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন ছিল বৃষ্টির দিন। ওই বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেন বলুহর ইউপি অফিস, গোবিন্দপুর বাজার সড়ক ভায়া রামচন্দ্রপুর সিঙ্গিয়া,সড়কে। যা আইডি নাম্বার – ২৪৪৪৪২৩০০৯।

খবর পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করতে লিখিত ভাবে জানান প্রতিষ্টানটিকে। এরপরও বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে ওই সড়কের কাজ করেন তারা।

সিঙ্গিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, মমরেজ মন্ডল ও আতিয়ার রহমান বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিনই ছিল বৃষ্টি। ওই বৃষ্টির মধ্যেই দেখলাম বড় বড় ট্র্যাকে পিচ ও মেটেরিয়াল আসছে। এরপর দেখলাম বৃষ্টির মধ্যেই তারা কাজ করছেন। আপনারা বাধা দেননি, এমন প্রশ্নে তারা বলেন, আমরা গ্রামের উমি মানুষ। এ কাজ সম্পর্কে কি জানি, আর বলেই বা কি হবে। তাদের কাজ তারা করেই যাবেন। গ্রামবাসী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ রাস্তাটি নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এ জন্য অনেক কিছু জানার পরও গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করেনি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার মিরাজুল হাকিম বলেন, ১১ টার সময় মেটেরিয়াল সড়কে চলে আসে। আর বৃষ্টির সময় আমরা কাজ বন্ধ রেখে ছিলাম। বৃষ্টির পর পানি পরিস্কার করে,মেশিন দিয়ে ব্যাচমেন্ট শুকিয়ে কাজ করা হয়েছে। বৃষ্টি মধ্যে কাজ করা ঠিক হচ্ছে কি, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বৃষ্টির মধ্যে কাজ করলে কোন সমস্যা নাই। এছাড়া এক বছরের সিকিউরিটি আছে, সড়ক নষ্ট হয়ে গেলে মেরামত করে দেয়া হবে।

প্রজেক্ট ম্যানেজার শামসুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির পানি বেশি হলে সমস্যা হয়। বেশি বৃষ্টি তো হয়নি। এরপরও যদি রাস্তার সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে রাস্তা আবারও করে দেয়া হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্ধার্থ কুমার কুন্ডু বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিনই বৃষ্টি হচ্ছিল। এই বৈরী আবহাওয়া মধ্যে কাজ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে লিখিত ভাবে নিশেধ করা হয়। এরপরও তারা কোন কথা না শুনে বৃষ্টির মধ্যেই ওই সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিবেন কি, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘটনাটি উদ্ধোতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যা ব্যবস্থা নেবার ওনারা নিবেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মোবাইল যোগাযোগ করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলাম সঙ্গে। তবে ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।




হরিণাকুণ্ডুতে সরকারি জমি দখল!

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার টাওয়ার পাড়া এলাকায় সরকারি ৯৬ শতক জমি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্র। অভিযোগ রয়েছে, মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে শিমুল হোসেন ও তার সহযোগীরা এ জমি দখল করে নিয়েছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, হরিণাকুকুণ্ডু মৌজার ১০৯ ও ৮১ নম্বর খতিয়ানের ৯২২ নম্বর দাগে অবস্থিত ওই জমির মধ্যে ৫২ শতক জায়গায় একসময় একটি দাতব্য চিকিৎসালয় পরিচালিত হতো। স্থানীয় প্রবীণদের মতে, ১৯৯০ সালের আগে পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসক সেখানে বসতেন এবং এলাকাবাসীকে চিকিৎসা সেবা দিতেন।

পরে উপজেলা সদরে নতুন হাসপাতাল স্থাপিত হলে পুরনো ভবনটি বন্ধ হয়ে যায় এবং তা জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ১৯৯০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের এক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পরিত্যক্ত ওই ভবনটি হরিণাকুন্ডু লালন শাহ কলেজের ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সেখানে একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কয়েক বছর কলেজ শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাস হিসেবে ভবনটি ব্যবহারও করেছেন। তবে পরবর্তীতে ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বদর আলী নামের এক ব্যক্তি ওই জমির ওপর নজর দেন এবং জাল দলিল তৈরি করে জমিটির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বদর আলীর মৃত্যুর পর মামলা চালান তার ছেলে আফজাল হোসেন। পরে তার মৃত্যুতেও মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন আফজালের ছেলে শিমুল হোসেন। আদালতের একতরফা রায় দেখিয়ে বর্তমানে তারা জমিটি দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, যেখানে সবার চোখের সামনে সরকারি চিকিৎসালয় ও কলেজের ছাত্রাবাস পরিচালিত হয়েছে, সেখানে হঠাৎ করে কেউ কাগজ দেখিয়ে ব্যক্তিমালিকানা দাবি করতে পারে এটা অবিশ্বাস্য।

স্থানীয় মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা নিজের চোখে দেখেছি এখানে চিকিৎসক বসতেন, রোগী দেখা হতো। পরে কলেজ ছাত্ররা থেকেছে। এখন কেউ কাগজ দেখিয়ে বলছে এটা তাদের জমি, এটা কীভাবে সম্ভব?”

শফি উদ্দিন নামে আরেকজন বলেন, “হাসপাতাল চলে যাওয়ার পর ভবনটি হোস্টেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখনও দালানের দরজায় ‘কলেজ হোস্টেল’ লেখা রয়েছে। তাহলে এই সম্পত্তি তাদের হলো কীভাবে? সরকার পরিবর্তনের সুযোগে তারা ভুয়া কাগজ দিয়ে আদালতে নিজেদের পক্ষে রায় নিয়েছে। এখন জমি দখল করে নিয়েছে।”

মেহের আলী নামের একজন বাসিন্দা বলেন, “পুরনো সিএস রেকর্ডে অমূল্য কুমার জোয়াদার নামে এক ব্যক্তির নাম রয়েছে। আর নতুন আরএস রেকর্ডে জমিটি কলেজের হোস্টেল ও ডোবা হিসেবে উল্লেখ আছে। যাদের নামে কোনো রেকর্ড নেই, তারাই এখন বলে জমি কিনেছে! যদি কিনেই থাকে, তাহলে রেকর্ডে তাদের নাম নেই কেন? আমরা চাই সরকারি সম্পত্তি সরকারের দখলেই থাকুক।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিমুল হোসেন বলেন, “আমাদের সকল বৈধ কাগজ আছে বলেই তো আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে।” তবে তাদের কাছে দলিল দেখতে চাইলে বলেন, দলিল আদালতে জমা আছে। কোন ফটোকপিও তাদের কাছে নেই।

জমির বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু সরকারি লালন শাহ কলেজের অধ্যক্ষ মো. শরিফুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি জানার পর কলেজের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। এ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।”