ফরিদপুরে কেরাম বোর্ড খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০, বাড়িঘর ভাঙচুর

ফরিদপুরের সালথায় কেরাম বোর্ড খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।

সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই-তিন দিন আগে রামকান্তপুর গ্রামের একটি বাজারে কেরাম বোর্ড খেলা নিয়ে স্থানীয় ওসমান তালুকদারের সমর্থক রাকিব নামে এক তরুণের সঙ্গে প্রতিপক্ষের কুদ্দুস তালুকদারের সমর্থক লায়েক নামে আরেক তরুণের মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তখন পুলিশ গিয়ে ওই কেরাম বোর্ডটি থানায় নিয়ে আসে; কিন্তু ওই দুই তরুণের মারামারি ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। এর জেরে সোমবার সকালে স্থানীয় চায়ের দোকানে দুইপক্ষের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

একপর্যায় উভয়পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা, টেঁটা, সড়কি, ভেলা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পালটাধাওয়া। সংঘর্ষের সময় ৪টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও বোয়ালমারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র: যুগান্তর ।




সাবেক চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের চার নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন , আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রানা হামিদসহ আওয়ামী লীগের  নেতারা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঝিনাইদহ সদর,  হরিণাকুণ্ডু ও কালীগঞ্জ আমলী আদালতে তাঁরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন।

তাদের বিরুদ্ধে ৪ আগষ্ট ২০২৪ সালে বিএনপি কার্যালয়, জেলা বিএনপি’র সভাপতির বাড়ি পোড়ান, বিএনপি নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ও জামায়াত নেতা হত্যাসহ একাধিক  মামলা রয়েছে।

আত্মসমর্পণকারী নেতারা হলেন, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান , জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি  জাহাঙ্গীর হোসাইন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক রানা হামিদ, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রাকিবুল হাসান রাসেল ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও  উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রাসেদ সমশের।




শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা নারীর অধিকার

নারীর অধিকার আজকের বিশ্বে আর কেবল একটি আলোচ্য বিষয় নয় বরং এটি মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়ের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শিক্ষা নারীর আত্মনির্ভরতার প্রথম শর্ত। আর সামাজিক নিরাপত্তা তার স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের প্রধান ভিত্তি। একজন নারী যখন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হন, তখন তিনি কেবল নিজের জীবনই নয়, পরিবার ও সমাজকেও উন্নতির পথে এগিয়ে নেন। একইভাবে, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাকে সহিংসতা, বৈষম্য ও অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা করে এবং সামগ্রিক উন্নয়নে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। তাই শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা নারীর অধিকার রক্ষার মূল ভিত্তি এবং টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত।

বিশ্বে নারী-পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান। সকল কাজে পুরুষের প্রাধান্য নারীকে পেছনে ফেলে দেয়। কিন্তু এই পৃথিবীর অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে কখনোই সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভবিষ্যৎ বিশ্বের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে হলে নারীকেও সমানতালে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। নারীর ন্যায্য অধিকারকে সমুন্নত করতে হবে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি জাতি সমৃদ্ধ হওয়ার পথে অগ্রসর হতে পারে। নারী শিক্ষিত হলে একটি গোটা জাতির উন্নয়ন সম্ভব। আর তাই নারী শিক্ষা হলো নারীদের অন্যতম প্রধান অধিকার। নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সরকার প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ছাত্রীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি এবং দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই বিতরণের মতো কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সরকারের এসকল নীতি ও উদ্যোগের ফলে শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতায়ন হয়েছে।

অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট স্বাক্ষরতার হার ৭৭.৯% এবং নারী ও পুরুষের সাক্ষরতার হার যথাক্রমে ৭৫.৮% এবং ৮০.১%। তবে বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থীর ৫০.৭%, মাধ্যমিক স্তরে মোট শিক্ষার্থীর ৫৩% ছাত্রী ও উচ্চ মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থীর ৪৮.৭৫% ছাত্রী। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণও দিন দিন বাড়ছে। উচ্চশিক্ষায় মোট ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী ভর্তির হার ৪৫.৫৭%, যা বিগত বছরগুলোর চেয়ে বেশ সন্তোষজনক।

২০২৫ সালে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তিকৃত মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৬৩% ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। কারিগরি শিক্ষাতেও নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কারিগরি শিক্ষাতে ২০২৩ সালে মোট শিক্ষার্থীর ২৯.৫৩% নারী ছিল, যা ২০২২ সালে ছিল ২৭.১২%। যদিও উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ এখনো তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে বাড়ছে, তবে নারী শিক্ষার প্রসার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এবং নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শিক্ষিত নারীরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেশি করে অংশ নিচ্ছেন। ১৯৯০-এর দশকে যেখানে কর্মসংস্থানে নারীর উপস্থিতি ছিল ২৪.৬৫%, বর্তমানে তা বেড়ে প্রায় ৩৭% হয়েছে। এটি দেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতেও সহায়ক।

এছাড়া দেশে পোশাকশিল্পে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০-৭৫%। শুধু শিক্ষাই নারীর একমাত্র অধিকার নয়। নারীর পূর্ণাঙ্গ শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে সমান অংশগ্রহণ করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(৩) নং অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ২৮(২) নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী, পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবে বলে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২৮ (৪) অনুচ্ছেদে নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়নের সুযোগও রাখা হয়েছে। এছাড়া ২৯ নং অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিক অর্থাৎ নারী ও পুরুষ সমান সুযোগ লাভ করবেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীদের অগ্রযাত্রাকে সুষম করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে নারীদের জন্য বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বয়স্ক ভাতা কর্মসূচিতে মাসিক ৬৫০ টাকা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা মাসিক ৬৫০ টাকা এবং দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা ৮৫০ টাকা করা হয়েছে। এসকল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সঠিক ব্যক্তি যাতে উপকারভোগী হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেন, সে জন্য ‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি (ডিএসআর)’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নারীদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে করে নারীর আর্থিক সক্ষমতা পূর্বের তুলনায় আরও বেগবান হবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।

বাংলাদেশে নরীরা বর্তমানে নানা ক্ষেত্রে এগিয়ে গিয়েছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শ্রমবাজারে প্রবেশ, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তবে প্রকৃত সমতা অর্জনের জন্য এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন- পারিবারিক সহিংসতা, সামাজিক অবস্থান, কর্মক্ষেত্রে আর্থিক বৈষম্যসহ নানারকম সমস্যা। বাংলাদেশে নারীর অধিকার রক্ষা ও নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনে সাংবিধানিক মর্যাদার পাশাপাশি বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য আইন রয়েছে। এই আইনগুলো নারীর সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রণীত হয়েছে। এগুলো মূলত সংবিধানের সমতা ও মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত ধারাগুলোর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।

পারিবারিক অধিকার নিশ্চিত করতে মুসলিম পরিবার আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১; পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনগুলোর মাধ্যমে নারীর বিবাহ, ভরণ-পোষণ, তালাক, দেনমোহর, সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ও অভিভাবকত্ব বিষয়ে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা হয়। নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, নারী ও শিশু পাচার, অপহরণ ইত্যাদি বন্ধ ও কঠোর শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ ( ২০০৩, ২০২০, ২০২৫ সালে সংশোধিত)। এই আইনের ২০২৫ সালে সংশোধিত অধ্যাদেশের মাধ্যমে ধর্ষণের মামলা তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন এবং মামলার বিচার কাজ শেষ হওয়ার সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে। ফলে নারী নিপীরণের মামলার রায় প্রদান ত্বরান্বিত হবে পাশাপাশি এধরনের অপরাধও কমে আসবে। ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মেয়েদের বিবাহ দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিশেষ পরিস্থিতি বাদে বাল্যবিবাহ সম্পাদন করলে শাস্তির বিধান রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ প্রণয়ন করা হয়। এছাড়াও এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২; সমান মজুরি, মাতৃত্বকালীন ছুটি (৬ মাস),কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা ও বৈষম্যহীন পরিবেশের নিশ্চয়তা প্রদানে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮), স্বামী বা পারিবারিক সদস্য কর্তৃক সহিংসতার শিকার নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতে গার্হস্থ্য সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০; জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা, ২০১১; মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২; যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ ইত্যাদি।

নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ও নিপীড়ন দমন করতে আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীদের সুরক্ষাজনিত সেবা আরও সহজীকরণ করা যেতে পারে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কলসেবা নম্বর ১০৯ সম্পর্কে নারীদের সচেতন করা যেতে পারে। নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আইসিটি, ই-কমার্স ও ডিজিটাল কর্মসংস্থানে নারীদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা আরও বৃদ্ধি করা যেতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি নীতি ও সামাজিক উদ্যোগে বাংলাদেশ নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। বর্তমান সরকার, সুশীল সমাজ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া যদি যৌথভাবে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে আইন প্রয়োগ, অর্থনৈতিক সমতা, সচেতনতা আর প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি বৈষম্যহীন নারীবান্ধব রাষ্ট্রে পরিণত হবে। পাশাপাশি ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এর দারিদ্র্য দূরীকরণ, ক্ষুধামুক্তি, সুস্থ জীবন, মানসম্মত শিক্ষা ও লিঙ্গ সমতাসহ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে।

নারীর ক্ষমতায়ন শুধু কোনো লিঙ্গভিত্তিক বিষয় নয় বরং এটি একটি রাষ্ট্রের সামগ্রিক অগ্রগতি ও মানবিক বিকাশের সূচক। শিক্ষার মাধ্যমে নারীরা যেমন জ্ঞানে ও দক্ষতায় সমৃদ্ধ হয়, তেমনি সামাজিক নিরাপত্তার মাধ্যমে তারা পায় বাঁচার নিশ্চয়তা ও সামাজিক মর্যাদা। তাই নারী যেন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং সমাজে নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে তার দায়িত্ব রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের সকলের। নারী যখন নিরাপদ ও শিক্ষিত, তখনই একটি জাতি প্রকৃত অর্থে আলোকিত ও উন্নত হয়।

লেখক: সহকারী তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর




প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগ বন্ধ রাখার নির্দেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ নিয়োগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পদে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে নিয়োগ হবে।

সোমবার (৫ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান, সহকারী প্রধান (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সুপার ও সহকারী সুপার)-এর নিয়োগ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর মাধ্যমে করা হবে মর্মে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান না করা পর্যন্ত সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান সহকারী প্রধান (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সুপার ও সহকারী সুপার)-এর পদে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো।




ঝিনাইদহে ইসলামী ব্যাংকের চাকুরী প্রত্যাশী ও গ্রাহকদের মানববন্ধন

ইসলামী ব্যাংকসহ ব্যাংকিং সেক্টরে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে ইসলামী ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার সামনে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে গ্রাহক ও চাকুরী প্রত্যাশীরা। সেসময় ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে ওই শাখার গ্রাহকসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচীতে গ্রাহক আল মাহমুদ, হাদি মহাম্মদ, জিয়াউল ইসলাম খান, কাজী রফিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুস সবুরসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সেসময় বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এস আলম কর্তৃক অবৈধভাবে হাজার হাজার কর্মী ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তাই দ্রুত অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেওয়া কর্মীদের ছাটাই করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার দাবী জানান বক্তারা।




মেহেরপুরে শিশু-কিশোর টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মশালা

মেহেরপুরে শিশু, কিশোর ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের জন্য ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকাল ১১টার সময় মেহেরপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল সালাম।

গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও জেলা তথ্য অফিসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তারেক মোহাম্মদ, সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ, জেলা তথ্য অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক একেএম সিরাজুম মুনির।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় দিনব্যাপী কর্মশালায় জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে দেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুকে দেওয়া হবে এক ডোজ টিকা। মেহেরপুরে ১ লাখ ৬৭ হাজার শিশুকে এই টিকার আওতায় আনা হবে। এতে টাইফয়েডের ঝুঁকি কমবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এছাড়াও, টিকাদানের মাধ্যমে টাইফয়েড প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়। শিশু-কিশোরদের টাইফয়েড টিকাদানে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান সাংবাদিক, শিক্ষক, ইমাম, রাজনীতিবিদসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।




গাংনীতে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

ইসলামী ব্যাংকসহ দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে বিশেষ অঞ্চলের একচ্ছত্র নিয়োগ বাতিল করে অবিলম্বে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে গাংনীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ইসলামী ব্যাংকের গাংনী শাখার সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যমুক্ত চাকরি প্রত্যাশী পরিষদ।

হাফেজ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আলামিন হোসেন, আবু সায়েম, রোমান মল্লিক, সিহাব হোসেন, মাহবুব রহমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকসহ দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওই এলাকার হাজারো মানুষকে নিয়োগ দিয়েছে যাদের অনেকেরই একাডেমিক যোগ্যতা নেই। অবিলম্বে এসব নিয়োগ বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।

মানববন্ধনে বিপুল সংখ্যক চাকরি প্রত্যাশী যুবক অংশ নেন।




সাবেক মেয়র মতুর দায়ের করা মামলায় আইনজীবীসহ চার জনের জামিন

মেহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোঃ মোতাছিম বিল্লাহ মতুর দায়ের করা চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলায় আইনজীবীসহ চারজন জামিন পেয়েছেন।

গতকাল রবিবার মেহেরপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাঃ নাসির উদ্দিনের আদালতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। জামিন পাওয়া চারজন হলেন আইনজীবী অ্যাড. মিজানুর রহমান, কসারীপাড়ার মৃত আছাব আলীর ছেলে মোঃ মহব্বত, বন্দর গ্রামের মৃত নূর আলীর ছেলে মোঃ ঝন্টু এবং পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়ার মৃত তমাল খাঁর ছেলে মোঃ মিঠন।

মামলায় আসামি পক্ষের হয়ে আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন সেলিম রেজা কল্লোল।

জানা গেছে, দুই নম্বর আসামি মোঃ মহব্বত বাদী হয়ে মামলার এজাহারকারী মোতাছিম বিল্লাহ নতুন নামে ২০০৭ সালে জি.আর-১০৪/২০০৭ (মেহেরপুর থানার মামলা নম্বর: ১০, তারিখ: ১০/৬/২০০৭ ইং) মামলা দায়ের করেছিলেন। যা খুলনা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২৭, ২০০৭ নং মামলা হিসেবে বিচারাধীন আছে।

উক্ত মামলায় মোতাছিম বিল্লাহ মতু জেল হাজতে আটক ছিলেন এবং বর্তমানে জামিনে আছেন। মামলাটি চলমান আছে এবং আগামী ১৪-১০-২৫ ইং তারিখে চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

ওই মামলা থেকে রেহাই পেতে মোতাছিম বিল্লাহ মতু উক্ত মামলার সাক্ষী ও বাদীকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এবং হয়রানির উদ্দেশ্যে বর্তমান এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ ছিল, গত ২৫ বছর ধরে মেয়রসহ বিভিন্ন পদে জন প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে নানা দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে দায়িত্ব পালন করেছি। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে এক শ্রেণির লোক আমাকে নানা উপায়ে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

গত ২ জুন সকাল ১১টার দিকে জেলা জজ আদালত থেকে ফেরার পথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে স্টেডিয়াম পাড়ার মোঃ শাহাবুদ্দীনের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান (৩৮), কসারীপাড়ার মৃত আছাব আলীর ছেলে মোঃ মহব্বত, বন্দর গ্রামের মৃত নূর আলীর ছেলে মোঃ ঝন্টু এবং পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়ার মৃত তমাল খাঁর ছেলে মোঃ মিঠন পথরোধ করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

চাঁদা না দিলে ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদদাতা’ ও ‘জামায়াত নেতা তারিক হত্যা মামলায় আসামি বানিয়ে মৃত্যুদণ্ড দাবি করা হবে’ বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরে গত ৬ জুলাই সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে মেয়র মোতাছিম বিল্লাহ মতুর বিকৃত ছবি ব্যবহার করে অপমানজনক পোস্টার সাঁটানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিসিটিভি ফুটেজে কয়েকজনকে পোস্টার সাঁটাতে দেখা যায় এবং তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, ১নং আসামি মিজানুর রহমান মিজানের নির্দেশে তারা কাজ করেছে।




গাংনী হাসপাতালের চিকিৎসক ফারুকের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ

দীর্ঘদিন ধরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ তুলেছেন রোগী ও তার স্বজনরা। তবে অদৃশ্য কারণে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা।

ইতোপূর্বে মেহেরপুর প্রতিদিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ডাঃ ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে টেস্ট বাণিজ্য, রোগী ও তার স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার সহ নানান বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু ৩ সদস্য বিশিষ্ট সেই তদন্ত কমিটিতে থাকা ব্যক্তিরা অভিযোগকারী না পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন।

তবে ডাঃ ফারুক হোসেন ভবিষ্যতে আর কখনো এমন কাজ করবেন না সেটিও উল্লেখ ছিল ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। কিন্তু সেই তদন্তের কয়েক মাস না ঘুরতে আবারো তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডাঃ ফারুক হোসেন এর বিরুদ্ধে তার পছন্দের মোল্লা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করে না নেওয়াই রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার, প্রেসক্রিপশন ছিড়ে ফেলা, ভুল চিকিৎসা দেওয়া, চেম্বারের মধ্যে ধূমপান করা সহ নানান বিষয়ে অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগীরা।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে আদিল নামের এক শিশু রোগীর অভিভাবকের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন আদিলের মা ইসমোতারা। ইসমোতারা তার অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন।

অভিযোগে জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে অভিযোগকারী তাঁর ছেলে আদিলকে নিয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোর বিভাগে যান। সেখানে তিনি নির্ধারিত ফি দিয়ে টিকিট কেটে ডা. ফারুক হোসেনের চেম্বারে প্রবেশ করেন। চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন এবং জানান, নির্দিষ্ট একটি স্থান মোল্লা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু অভিযোগকারী তাঁর পরিচিত রবি ক্লিনিকে পরীক্ষাগুলো করান এবং রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে ফেরত আসেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, রিপোর্ট হাতে নিয়ে ডা. ফারুক হোসেন বলেন, “আমি যেখানে যেতে বলেছি সেখানে না গিয়ে দালালদের পাল্লায় পড়ে রবি ক্লিনিকে পরীক্ষা করালে কেন?” এরপর চিকিৎসক ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর আউটডোর টিকিট ছিঁড়ে ফেলেন।
তিনি অভিযোগে আরও বলেন, “আমি মানসিকভাবে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। একজন সরকারি চিকিৎসকের কাছ থেকে এমন আচরণ । ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্যই আমি এই অভিযোগ করেছি।”

গতকাল রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে নওপাড়া গ্রামের ইসমোতারা উপরোক্ত লিখিত অভিযোগ করেন।

এছাড়াও অসংখ্য ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ডাঃ ফারুক হোসেন মোল্লা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবসরে চেম্বার করেন। গাঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটির সময় তিনি সকল রোগীকে মোল্লা ডায়াগনস্টিকে টেস্ট করতে যেতে বলেন। মোল্লা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট না করলেই তিনি রোগীদের সাথে দুরব্যবহার ও অমানবিক আচরণ করেন। অনেকেই বলেন মোল্লা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তিনি একটি মোটা অংকের টেস্ট বাণিজ্য করেন। সেজন্যই তিনি এমন আচরণ করেন রোগী ও তার স্বজনদের সাথে।

অভিযোগের বিষয়ে ডাক্তার ফারুক হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। আমার বিরুদ্ধে কেউ কেউ মিথ্যা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহ আল আজিজ বলেন “লিখিত অভিযোগ পেয়ে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”




চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি’র অভিযানে মাদক ও চোরাচালান পণ্যসহ আটক ২

চুয়াডাঙ্গার ৬ বিজিবি বিভিন্ন সীমান্ত থেকে ৭৪ লক্ষ টাকার মাদক ও চোরাচালানপণ্যসহ দু’জনকে আটক করেছে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ০৪ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত চলমান অভিযানে তারা সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানপণ্য জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। এ অভিযানে মহিলাসহ দুজনকে আটক করেছে।

আটককৃতদের কাছ থেকে ৩টি স্বর্ণের বার (ওজন: ৩৫০.১২ গ্রাম), ভারতীয় মদ ১৮২ বোতল, হেরোইন (৩৯ গ্রাম), গাঁজা (১.০৪ কেজি), ২২৮ পিস টেপেনটাডল ট্যাবলেট, ২ বোতল বিয়ার, ১৩৫ বোতল ফেন্সিডিল, ২০০ পিস ইয়াবা, ২০৮ প্যাকেট পাতার বিড়ি, ১২ পিস ভারতীয় শাড়ি, ১৩৪১ পিস কসমেটিক্স, ১টি ভারতীয় মোবাইল ফোন, বিভিন্ন প্রকার ক্রীম ৩৪৬ পিস, পেঁয়াজের বীজ (১৪ কেজি), ভারতীয় পেঁয়াজ (৪৯৮ কেজি) উদ্ধার করে এবং দুজন চোরাচালানীকে দর্শনা ও দামুড়হুদা থানায় হস্তান্তর করেছে।