দর্শনা কেরু চিনিকল স্মরণকালের রেকর্ড ভেঙ্গে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন

চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকল। এবার ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে দর্শনা কেরুজ চিনিকলের স্মরণকালের রেকর্ড ভেঙ্গে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে।

বিগত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সরকারকে ১৪০ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েও ১৩০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে স্বরণকালের রেকর্ড ভেঙ্গেছে চিনিকলটি।কেরু এ্যাড কোম্পনীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এফসিএমএ রাব্বিক হাসান জানান, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর যোগদানের পর থেকেই আমি শ্রমিক কর্মচারী ও কৃষকদের পাশে থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করে কেরুকে লাভজনক অবস্থায় আনতে সক্ষম হয়েছি। আখচাষিদের সাথে সভা-সমাবেশ ও প্রশিক্ষণ কার্ অব্যাহত রেখে চলেছি। কৃষকদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করণের পাশাপাশি যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি আগামীতেও ৯টি চিনিকলের মধ্যে দর্শনা কেরু চিনিকল লাভজনক অবস্থায় আনতে সক্ষম হবো।কেরু অন্যান্য বিভাগে লাভজনক আনতে সক্ষম হয়েছি তেমনি চিনিকলকেও লাভজনক অবস্থায় আনতে সক্ষম হবো বলে আশাবাদী। এ দিকে বাংলাদেশ সরকার কৃষকদের কথা বিবেচনা করেই বারবার আখের মূল বৃদ্ধি করেছে।

চিনি কারখানার দশা যা হোক না কেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ শিল্প করপোরেশন থেকে প্রতি বছরের আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা বেধে দিতে কমতি করেন না কর্তাবাবুরা। দেশের সবগুলো চিনিকল যখন লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে গভীর জলে হাবুডুবু খাচ্ছে, তখন সরকারকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব দিয়েও মুনাফা অর্জন করছে কেরুজ কমপ্লেক্স। কেরুজ কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠাকালের সকল রেকর্ড ভেঙে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরেও মুনাফা অর্জন হয়েছে সর্বচ্ছ। সরকারের রাজস্ব খাতে ১৪০ কোটি ও চিনি কারখানার প্রায় সাড়ে ৬২ কোটি লোকসান পুষিয়েও মুনাফা অর্জন হয়েছে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। যা চিনিকল প্রতিষ্ঠার ৮৮ বছরের সকল রেকর্ড ভেঙ্গেছে। কেরুজ কমপ্লেক্স আরও লাভজনক করতে গ্রহণ করা হয়েছে নানামুখি পদক্ষেপ। আধুনিক প্রযুক্তিতে আখ চাষ করায় আগামী মাড়াই মৌসুমে চিনি কারখানায় লোকসানের বোঝা কমতে পারে অনেকাংশে। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কেরুজ কমপ্লেক্সের বয়স পেরিয়েছে ৮৮ বছর।

জোড়াতালি দিয়েই বারবার আখ মাড়াই মরসুমের কার্যক্রম চালু করা হয়ে থাকে। খানেকটা খুড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনোভাবে শেষ করা হয় আখ মাড়াই কার্যক্রম। লাগাতার যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়ে নাজেহালে হতে হয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। ভিন্নতায় ডিস্টিলারী কারখানা। ডিস্টিলারি বিভাগে ফরেণ লিকার উৎপাদনে অটোমেশিন স্থাপন করা হয়েছে গত বছরে। পূর্ণতা পাবে দেশীয় মদ বোতলজাতকরণে আধুনিক মেশিন স্থাপন করা হলে। এ ছাড়া মিলের প্রতিটি বিভাগেই উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। চিনি কারখানা বিএমআরই করণ প্রায় শেষের দিকে। তাছাড়া কয়েকটি বিভাগে উন্নয়নের কাজ হয়েছে সম্প্রতিকালে। চিনি কারখানা আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলেও কমতে পারে লোকসান।এর পাশপাশি কৃষকরা আখ চাষ বাড়াতে হয়তো লোকসানের রেকর্ড ভেঙ্গে লাভের মুখও দেখতে পারে চিনিকল কারখানা। গত আখ মাঁড়াই মৌসুমে ৫ হাজার ১শ একর জমিতে আখচাষ ছিলো।

যাঁর মধ্যে কৃষকের জমির পরিমান ৩ হাজার ৪৫৫ ও কেরুজ নিজস্ব জমিতে ছিলো এক হাজার ৬৪৫ একর আখ। ৬৫ মাড়াই দিবসে ৭০ হাজার মেট্রিকটন আখা মাড়াইয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারিত ছিলো। আখ মাড়াইয়ের গড় হার ছিলো এক হাজার ১৫০ মেট্রিকটন। চিনি আহরণের ‘গড় হার নির্ধারণ করা ছিলো ৬ দশমিক শূন্য শতাংশ। চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ৪ হাজার ২শ মেট্রিকটন। চিনি কারখানা বড় ধরণের তেমন কোন যান্ত্রিক ত্রুটির কবলেও পড়তে হয়নি। গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ৫২ মাড়াই দিবসে আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। সে সময় পর্যন্ত কেরুজ নিজস্ব সহ কৃষকদের প্রায় এক হাজার ৪শ একর জমিতে আখ ছিলো। ওই আখ ২৫ ফেব্রুয়ারিতে বিএমআরই (আধুনিকায়ন) চিনি কারখানায় মাড়াইয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন’ করার প্রস্তুতি মূলক রাখা হয়। অবশেষে সে গুড়ে বালি পড়ে। ২৫ ফেব্রুয়ারি আধুনিকায়নকৃত কারখানার পাউয়ার টার্বাইন সমস্যা জনিত কারণে তা সম্ভব হয়নি।

চিনিকল কর্তৃপক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যনুযায়ি গত মৌসুমে আখ মাড়াই করা হয়েছিলো প্রায় ৭২ হাজার মেট্রিকটন। চিনি উৎপাদন হয় ৩ হাজার ৬৮৪ মেট্রিক টন উৎপাদিত চিনির মধ্যে বিক্রি হয় ২ হাজার ৩৮২ দশমিক ৭৫ মেট্রিকটন। ফলে চিনি কারখানায়। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কর্তৃপক্ষের লোকশান হয়েছে ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এ দিকে ওই অর্থ বছরে কেরুজ ডিস্টিলারী বিভাগে ফরেণ লিকার উৎপাদন হয়েছে ২’ লাখ ৫ হাজার ২২০ কেচ। উৎপাদিত ফরেণ লিকারের মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৬৯৮ কেচ। সিএস (দেশীয় মদ) উৎপাদন হয়েছে ২৪ লাখ ৮৯ হাজার প্রুফি লিটার। বিক্রি হয়েছে ২৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩৬০ প্রুফ লিটার। ভিনেগার উৎপাদিত হয়েছে ২১ হাজার লিটার। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ফরেণ লিকার ও দেশীয় মদ উৎপাদন বিক্রির পরিমান অনেক গুনে বেশী হলেও গত অর্থ বছরে মুনাফা অর্জনের পরিমান বেশী। নেপথ্যে রয়েছে গত অর্থ বছরের শুরুর দিকেই ফরেণ লিকার ও দেশীয় মদের মূল্য বৃদ্ধি। এ ছাড়া দেশীয় মদ বোতলজাত করণের কারণেও অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন হয়েছে। অনিরিক্ষিত তথ্যনুসারে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কেরুজ ৬টি বিভাগের মধ্যে ৫টিতেঁই মুনাফা অর্জন হয়েছে। চিনি কারখানায় ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লোকসান হলেও ডিস্টিলারী কমপ্লেক্স বিভাগে মুনাফা অর্জন হয়েছে ১৯০ কোটি ২৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। বানিজ্যিক খামারগুলো থেকে মুনাফা অর্জন হয়েছে ৩৬ লাখ ৯ হাজার টাকা। আকন্দবাড়িয়া পরিক্ষামূলক খামার থেকে মুনাফা অর্জন হয়েছে ৩৩ লাখ ২ হাজার টাকা ও আকন্দবাড়িয়া জৈব সার কারখানায় ৭৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন হয়েছে।




মেহেরপুরে ভৈরবে গোসলে নেমে ১৭ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

মেহেরপুরের ভৈরব নদে গোসল করতে নেমে নিখোঁজের ১৭ ঘণ্টা পর মোহাইমিনুল ইসলাম (১৫) নামের এক নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল।

আজ শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মোহাইমিনুল সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের শুভরাজপুর গ্রামের শিমুল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪ বন্ধু ভৈরব নদে গোসল করতে যায়। তাদের মধ্যে মোহাইমিনুল সাঁতার জানত না। সে নদীর কূলে বসে থাকলেও এক পর্যায়ে পানিতে পড়ে যায়। তার বন্ধুরা সাথে সাথে স্থানীয়দের খবর দিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। টানা সাড়ে ৬ ঘণ্টা চেষ্টা করেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালালেও ব্যর্থ হয়ে খবর দেন খুলনার ডুবুরি দলকে।

আজ সকালে খুলনা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ রেসকিউ (ডুবুরি) টিম নদীতে তল্লাশি চালিয়ে ভাসমান অবস্থায় মোহাইমিনুলের মরদেহ উদ্ধার করে।

মেহেরপুর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।




পিআরসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে ঝিনাইদহে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবীতে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বর থেকে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পোস্ট অফিস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল আওয়ালের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকর।

এ সময় বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আব্দুল আলিম, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা তাজুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি কাজী সগির আহমদ, শহর শাখা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে বক্তারা জুলাই সদন বাস্তবায়ন করে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ কেন্দ্রীয় ঘোষিত ৫ দফা দাবী তুলে ধরেন। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।




গাংনীতে ভারতীয় ওয়ান শুটার গান ও গুলিসহ যুবক আটক

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে একটি ভারতীয় ওয়ান শুটার গান ও দুই রাউন্ড গুলিসহ সুমন আহম্মেদ সৌমিক (৩০) নামের এক যুবককে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১২ ক্যাম্পের সদস্যরা। আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আটককৃত সুমন আহম্মেদ সৌমিক কাজিপুর গ্রামের বাদিয়াপাড়ার তাইজেল ইসলামের ছেলে।

মেহেরপুর সিপিসি-৩ র‍্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার ওয়াহিদুজ্জামান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সৌমিক নিজ বাড়িতে অস্ত্র রেখে অবস্থান করছে। পরে র‍্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর ভিত্তিতে একটি ভারতীয় ওয়ান শুটার গান ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।




শৈলকুপায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক দুধ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলা শহরের কবিরপুর রামকৃষ্ণ মন্দিরের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও কাঁসা-পিতলের থালা-বাসন লুট করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক প্রতাপ কুমার সরকার জানান, রাত ১টার দিকে ক্রিকেট খেলা দেখা শেষ করে ঘরের মধ্যে খাবার খাচ্ছিলেন তারা। সে সময় একদল ডাকাত বাড়ির তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা প্রতাপ কুমারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ৭০ হাজার টাকা, আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার ও কাঁসা-পিতলের থালা-বাসন লুট করে নিয়ে যায়।

প্রতাপ কুমার বলেন, ডাকাতদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল। তাদের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হবে। আমি চাই দ্রুত এই অপরাধীদের যেন গ্রেফতার হয়।

শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, ঘটনার পর রাতেই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুতই এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব।




গত ১৭ বছর কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ছিল রাজনৈতিক আশ্রয়কেন্দ্র

মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, সবার জন্য স্বাস্থ্য নয়, মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে হবে। আর এই দায়িত্ব নিয়েছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি। সকলের কাছে আমরা স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেব ইনশাআল্লাহ। প্রতিটি মানুষের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা আমরা করব।

ইতিমধ্যেই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছে। আশা করছি যে কোনো স্বাস্থ্যসেবা আপনারা সেখানে গেলে পাবেন। বিএনপির ৩১ দফার আলোকে ২৬ নম্বর পয়েন্টে যে কথা বলা রয়েছে সবার জন্যই স্বাস্থ্য এবং মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে হবে।

আজ শুক্রবার সকালে মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসকল কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যেগুলো স্থাপন করেছিলেন জিয়াউর রহমান, পরবর্তীতে পুনরায় সেগুলো স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এই ১৭ বছরে সেই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। সেই সমস্ত ক্লিনিকগুলো হয়ে গিয়েছিল পলিটিকাল আশ্রয়কেন্দ্র। সেগুলো কোনো স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে পড়ে না।

এই নির্বাচনের আগে আমরা ২০ থেকে ৩০টা মেডিকেল ক্যাম্প করব। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে আমাদের জেলা বিএনপির সকল সদস্য আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করবেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি আনছারুল হক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আলমগীর খান ছাতু, আবু সালেহ নাসিম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রুমানা আহম্মেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মোহাম্মদ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেন, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকাবিল্লাহ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমুল হোসেন মিন্টু, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা প্রমুখ।

জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান আরো জানান, আজ দিনব্যাপী মেহেরপুরের অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে, পাশাপাশি তাদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করা হবে। এছাড়াও প্রতি মাসে এই মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা জানান চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ পেয়ে খুশি তারা।




রাতের আঁধারে গাংনীর মোহাম্মদপুর মাঠ থেকে দুটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি

রাতের আঁধারে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের ঘাট পাড়ার মাঠ থেকে দুটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার (কেভি) চুরি করেছে চোরের দল। ওই মাঠে এখন ধান, কলাই সহ বিভিন্ন সবজি ফসলের চাষাবাদের মৌসুম চলছে। ফসল চাষে কৃষকদের একমাত্র ভরসা বৈদ্যুতিক মোটর।

রাতের আঁধারে মোটরের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় চিন্তিত কৃষকেরা। আজ শুক্রবার রাতের কোন এক সময় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরির এ ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, ঘাটপাড়ার এই মাটিতে প্রায় ৩০০ বিঘা জমির চাষাবাদ হয় বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে। মোটরের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার রাতের আঁধারে চোরেরা চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষকরা।

ওই মাঠের কৃষক সোহেল রানা বলেন, আমার পাতাকপি, ধানসহ ১০ বিঘা জমিতে আবাদ রয়েছে এই মাঠে। এভাবে রাতের আঁধারে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ছোট ভাবে না দেখে এটির গভীর তদন্ত দরকার। একটি ট্রান্সফরমার পল্লী বিদ্যুৎ থেকে নিয়ে আসতে হলে পায়ের জুতা ক্ষয় হয় তারপর পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বামন্দী সাবজোনাল অফিসের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।




তোপের মুখে অফিস ছেড়ে পালালেন তহশিলদার!

জমির খাজনা ও নামজারিসহ ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা নিতে আসা ভূমি মালিকদের দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে। কাজ করে নিতে হাতে পায়ে ধরতে হচ্ছে তহশিলদারের। অনিয়মিত অফিসে আসা-যাওয়া ও সরকারের নির্ধারিত সময়ে অফিস না করা তহশিলদারের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগ নিত্যদিনের। স্থানীয় এসিল্যান্ড ও ইউএনওকে বলেও কোন সুরাহা না পাওয়া ভুক্তভোগীরা ফুঁসে উঠলে অফিস ছেড়ে পালালেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা তহশিলদার। গোপনে মাইক্রোবাস ডেকে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমানের। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্য ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ ঘটনার পর থেকে অফিস করছেন না এই কর্মকর্তা।

আতিকুরকে সরিয়ে দক্ষ একজন তহশিলদারকে এ অফিসে যোগদান করানোর দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার জাকির হোসেনের মৃত্যুর পর অফিসের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। ১৫ দিন পরে চুয়াডাঙ্গার আতিকুর রহমান নামের একজন যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় ভূমি মালিকদের হয়রানি ও দুর্ভোগ। জেলার সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন খ্যাত সাহারবাটীতে এসে ভূমি সেবা দিতে হিমশিম খেয়ে ওঠেন আতিকুর রহমান।

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে ভূমি সংক্রান্ত কাজে নানা অজুহাতে হয়রানি করে আসছিলেন। ভূমি উন্নয়ন করের অনুমোদন কিংবা নামজারি কেসের রিপোর্ট দিতে গড়িমসি করতেন তিনি।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর একাধিক ভূমি মালিক জমি-জমা সংক্রান্ত কাজে অফিসে গেলে তিনি নামজারি কেসের রিপোর্টসহ অন্যান্য সেবা দিতে ব্যর্থ হন। এ সময় সাধারণ মানুষ তার কাছে কাজ সম্পন্ন না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

এ সময় উপস্থিতরা তাকে প্রশ্ন করেন এটা সরকারি অফিস, আমরা যদি না আসি তাহলে আপনারা অফিস খুলে বসে আছেন কেন? আপনারা তো আছেন জনগণের সেবার জন্য। জবাবে আতিকুর রহমান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, না, আমি জনগণের সেবার জন্য নই, আমি আছি সরকারি অফিস রক্ষা করার জন্য।

এমন পরিস্থিতির পর কাজের চাপে ও জনগণের তোপের মুখে তিনি হঠাৎ অফিস ছেড়ে পালিয়ে যান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এখনো অফিসে আসেননি।

ভুক্তভোগী নাসির উদ্দিন, ইয়ারুল ইসলাম, আলী হোসেন, লিয়াকত, আব্দুল হামিদ, আনিসুর রহমান, শহিদুল, মুকুল মহরী, নজরুল মাস্টার, আনিস মাস্টার, তোফাজ্জেল, সাইফুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম ও এনায়েত আলীসহ অসংখ্য সেবাপ্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান যোগদানের পর থেকেই ভূমি মালিকরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জমির হোল্ডিং খোলা, নামজারি কেসের রিপোর্ট প্রদান, খাজনা পরিশোধসহ প্রতিটি কাজে ইউনিয়নবাসীকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে দক্ষ একজন তহশিলদারকে এ অফিসে যোগদান করানোর দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাবিদ হোসেন বলেন, অফিসে একটু ঝামেলা হয়েছিল এমন কথা শুনেছি। তিনি মৌখিকভাবে অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। যদি তিনি আর সেখানে যোগদান না করেন, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি কেন অফিসে আসছেন না, সে বিষয়ে আমি জানি না। তবে বিষয়টি আমাদের কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেছি।




এক আইনজীবীসহ চার জনের বিরুদ্ধে সাবেক মেয়রের মামলা

এক আইনজীবীসহ চারজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী ও মানহানির অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মেহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোঃ মোতাছিম বিল্লাহ মতু।

গতকাল বৃহস্পতিবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তিনি এ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক সদর থানাকে এফআইআর এর নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামীরা হলেনে আইনজীবী অ্যাড. মিজানুর রহমান, কসারীপাড়ার মৃত আছাব আলীর ছেলে মোঃ মহব্বত, বন্দর গ্রামের মৃত নূর আলীর ছেলে মোঃ ঝন্টু ও পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়ার মৃত তমাল খাঁর ছেলে মোঃ মিঠন

মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, গত ২৫ বছর ধরে মেয়রসহ বিভিন্ন পদে জন প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে নানা দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে দায়িত্ব পালন করেছি।

দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে এক শ্রেণির লোক তাকে নানা উপায়ে হয়রানি করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

গত ২ জুন সকাল ১১টার দিকে জেলা জজ আদালত থেকে ফেরার পথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পৌছালে স্টেডিয়াম পাড়ার মোঃ শাহাবুদ্দীনের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান (৩৮), কসারীপাড়ার মৃত আছাব আলীর ছেলে মোঃ মহব্বত, বন্দর গ্রামের মৃত নূর আলীর ছেলে মোঃ ঝন্টু ও পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়ার মৃত তমাল খাঁর ছেলে মোঃ মিঠন পথরোধ করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদদাতা ও জামাত নেতা তারিক হত্যা মামলায় আসামি বানিয়ে মৃত্যুদণ্ড দাবি করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

পরে গত ৬ জুলাই সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুর বিকৃত ছবি ব্যবহার করে অপমানজনক পোস্টার সাঁটানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সিসি ফুটেজে কয়েকজনকে পোস্টার সাঁটাতে দেখা যায় এবং তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে ১নং আসামি মিজানুর রহমান মিজানের নির্দেশে কাজ করেছে।




মেহেরপুরে দুর্গোৎসবের ঢেউ: অতীতের আলো, বর্তমানের আশ্বাস 

পঁচাত্তর বছরেরও আগে, মেহেরপুরের গ্রামের মাঠে, কলার খুঁটির ছায়ায় গড়া হত দুর্গামণ্ডপ। প্রতিমা তখন মাটির নয়নজুড়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বিশ্বাসের দীপ্তি ছিল অপার। ধানের খেত থেকে ফিরে আসা কৃষকেরা যেমন হাতে মাটির ঢেলা নিয়ে দেবীর সামনে দাঁড়াতেন, তেমনি সন্ধ্যার আলোয় গ্রামের শিশুরা আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে থাকত রঙিন কাগজের ঝালর আর মাটির প্রদীপে।

কালের পরিক্রমায়, সেই মণ্ডপে এখন উঠে এসেছে থার্মোকল-তুলির বাহার, বৈদ্যুতিক আলো আর ডিজিটাল ঢাকের শব্দ। তবে, রয়ে গেছে একটি অদৃশ্য সুতো যা ধর্মকে ছাপিয়ে মানুষে মানুষে মিলনের উৎসবে পরিণত করেছে দুর্গাপূজাকে।

চলতি বছর, মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলায় (সদর, গাংনী ও মুজিবনগর) মিলিয়ে ৪৩টি দুর্গাপূজার মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। মণ্ডপগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে কোথাও রঙতুলির শেষ আঁচড়, কোথাও লাইটিংয়ের পরীক্ষামূলক চালনা।

শহর থেকে গ্রাম সবখানেই যেন দেবী পূজাকে ঘিরে ছুটে চলেছে উৎসবের বাতাস। হালদারপাড়া,  ভবেরপাড়া, আনন্দবাস, দারিয়াপুর, ভবানীপুর প্রতিটি জায়গাতেই আলাদা আবহ, আলাদা আয়োজন। তবে এক জায়গায় সবার মিল, ভক্তি আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন।

পূজাকে ঘিরে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে জোরদার পদক্ষেপ। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভা, যাতে অংশ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তারা, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সভায় নিশ্চিত করা হয় প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তা দিতে থাকবে আনসার সদস্য, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিজিবির সহায়তা। যা ইতোমধ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

স্থানীয় রাজনীতিকদের মধ্যে বেশ ক’জন ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। মণ্ডপ উদ্বোধন, দান বা শুভেচ্ছা জানানোর ঘটনা একাধিক। যদিও সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে অর্থায়নের তথ্য মেলেনি, তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহানুভূতি ও উপস্থিতি সমাজে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এবারই প্রথম পূজোর একটি উল্লেখযোগ্য দিক রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে একযোগে অংশগ্রহণ।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অশোক চন্দ্র বিশ্বাস  বলেন, দলের চেয়ে বড় উৎসব, ধর্মের চেয়ে বড় মিলন। এখানে আসলে সবাই এক, আমরা শুধু দেবী দুর্গার আশীর্বাদ চাই সব মানুষের মঙ্গল হোক। তবে, আশার পাশে ছিলো কিছু চ্যালেঞ্জও। শহর এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও অতিরিক্ত ভিড় সামলানো এক সমস্যা, আবার গ্রামাঞ্চলে রয়েছে প্রতিমা পরিবহন ও বাজেট সংকট। যা প্রশাসন ও  রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সব ধরণের সহায়তা করছে।

মেহেরপুর জেলা কালি মন্দিরের পুরোহিত তপন বন্দোপাধ্যায় বলেন পূজা মানে শুধু ধর্ম নয়, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর সামাজিক বন্ধন। যত দিন যাচ্ছে, ততই অর্থসঙ্কটে পূজার মহিমা   হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। যদিও এবার সে সমস্যা নাই।   প্রতিমার চোখে এখনো দেখা যায় এক ধরনের শান্ত বিশ্বাস যেন সব কিছুর পরেও, মানবতা ও শুভবোধের জয় হবেই। ঢাকের তালে তালে, সিঁদুরের উজ্জ্বলতায়, সন্ধ্যার আরতিতে, আজও জেগে থাকে সেই চিরচেনা মেহেরপুর যেখানে উৎসব মানেই একসঙ্গে থাকা, ভেদাভেদের দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া।

গৃহবধূ পল্লবী সাহা বলছেন, পুজো মানেই নতুন শাড়ি, সিঁদুর, মিষ্টি, আর নতুন আলপনার ছোঁয়া। সন্তানদের খুশি করতেই এখন একটু হিসেব করে চলতে হয়। তবুও উৎসব থেমে থাকে না। কারণ পুজো তো শুধু কেনাকাটা নয়, এ এক আবেগ, এক ঐতিহ্য।

মেহেরপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী জানিয়েছেন প্রতিটি মণ্ডপে থাকবে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক। ট্রাফিক ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও মণ্ডপে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে যানজট নিরসনে কাজ করছে অতিরিক্ত ফোর্স।

জেলা প্রশাসক মো. আবদুল সালাম বলেন, উৎসব যেন নির্বিঘ্নে, শান্তিপূর্ণভাবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। দেবীর দশভুজায় যেন স্থান পায় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, যেন তাঁর অস্ত্র শুধু মহিষাসুর নয় বিভেদের কালো ছায়াকেও নির্মূল করে এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের।