মুজিবনগরে মনোনয়ন প্রত্যাশী আমিরুল ইসলামের গণসংযোগ অব্যাহত

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অব্যাহত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন মেহেরপুর-১ আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম।

মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের রতনপুর ও ঢোলমাড়ি গ্রামে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নসহ ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেলে কয়েক শত মোটরসাইকেল ও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রতনপুর ও ঢোলমাড়ি গ্রামে পৌঁছালে দুই গ্রামের নারী-পুরুষ, শিশু এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান।

তিনি বাগোয়ান ইউনিয়নের রতনপুর ও ঢোলমাড়ি গ্রামে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ, পথসভা ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ধানের শীষের পক্ষে ভোট দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) ক্ষমতায় নিয়ে এসে দেশ ও জাতির উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করতে হবে।

গণসংযোগ চলাকালে দুই গ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। আমিরুল ইসলাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে মা-বোনদের কাছে ধানের শীষের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন।

গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী মশিউর রহমান, বাগোয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইসলাম আলী, মোনাখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রায়হান কবীর, সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান টুটুল, দারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, মহাজনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ারুল হক কালু, সাধারণ সম্পাদক সোনা গাইন, জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক হাবিবুর রহমান ভিকু, মুজিবনগর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনারুল ইসলাম, দারিয়াপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, মেহেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফাহিম আহনাফ লিংকনসহ বাগোয়ান ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম বিএনপি নেতাকর্মী, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপি, যুবদল, কৃষক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীবৃন্দ।




মেহেরপুরের ৬ নং ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের গণসংযোগ

ধানের শীষের সমর্থনে মেহেরপুর পৌর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেছেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস।

মঙ্গলবার বিকেলে শহরের এশিয়া নেট এলাকা থেকে তিনি গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে ৬ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও মতবিনিময় করেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, আমরা একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সুন্দর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জাতীয় নির্বাচন সন্নিকটে, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, গত ১৬ বছর যারা রাজপথে ছিলেন, পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন, পালিয়ে থেকেও আন্দোলন চালিয়ে গেছেন আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের প্রতীক তাঁদেরই দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, মেহেরপুরে মাসুম অরুণের নেতৃত্বে আমরা ১৬ বছর শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে রাজপথে ছিলাম। আজ কিছু লোক ধানের শীষের কান্ডারী সাজছে আমরা তাদের চিনি, তাদের আমলনামা আমাদের জানা।

গণসংযোগ কর্মসূচিতে ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র নেতাকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুরে পৃথক মামলায় ৩ আসামির জেল-জরিমানা

মেহেরপুরে পৃথক তিন মামলায় মোঃ লিটনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, মোঃ মোতালেবকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং মোছাঃ ময়না খাতুনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে আরও ৩০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলী এ আদেশ দেন।

প্রথম মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামীদের সঙ্গে বাদীদের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন বাদী ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ওজু করতে ঘরের বাইরে বের হলে আসামিরা ওত পেতে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বাদীর ডাকচিৎকারে তার স্বামী বাইরে এলে আসামিরা ধারালো ও ভোতা অস্ত্র নিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। ১নং আসামী আধলা ইট দিয়ে বাদীর স্বামীর মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, ৩নং আসামী লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং ২নং আসামী গলা টিপে হত্যার চেষ্টা চালায়। বাদী ও তার মাতা ঠেকাতে গেলে তাদেরও মারধর করে আহত করা হয়।

দ্বিতীয় মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোঃ আকবর আলী মোটরসাইকেলে করে দারিয়াপুর বাজার এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব শত্রুতার জেরে আসামিরা তার গতিরোধ করে। আসামী লিটন লোহার হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মাথার হাড় ভেঙে যায় ও গুরুতর জখম হয়। পরে অন্যান্য আসামিরা লাঠি ও রড দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।

তৃতীয় মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে আসামীগণ বাদীর ওপর আক্রমণ চালায়। কিল-ঘুষি, বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বাদীকে গুরুতর আহত করে। বাদীর চিৎকারে তার দাদা এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করে রক্তাক্ত জখম করা হয়।

পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার নথি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে উপরোক্ত রায় দেন। রায় ঘোষনার পরে আসামীদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।




স্কুল মাঠে চরে হাঁস, গোসল করানো হয় গরু

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ১০৬ নম্বর কাছারী তোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি এবছরের জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এখনো পর্যন্ত জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠের পানিতে চরে বেড়াচ্ছে হাঁস আবার কেউবা গরুর গোসল করাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষকের দাবি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েও মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনে কোন ব্যবস্থা করতে পারেননি।

১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ১৯৯৬ সালে একটি ভবন নির্মিত হয়। এই ভবনে একটি অফিস কক্ষ ও ৩টি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে। ৩৩ শতক জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৮৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ৬ জন তার মধ্যে নারী ৪জন। গতবছর বিদ্যালয়ে একটি ওয়াশ ব্লকের কাজ শুরু হলেও অর্ধেক করে ফেলে রেখে গাঢাকা দিয়েছে ঠিকাদার। বিদ্যালয়টিতে কোন সীমানা প্রাচীর নেই। তবে বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংকট জলাবদ্ধতা। বর্ষার শুরু থেকেই বিদ্যালয়ের মাঠটি জলাবদ্ধ হয়ে থাকে। আগস্টের শুরুর দিকে বিদ্যালয়ের ভবনের বারান্দা পর্যন্ত পানির নিচে চলে যায়।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নুসরাত জাহান বলেন, আগস্ট মাসের শুরুর দিকে আমরা হাটু পানি ডিঙিয়ে বিদ্যালয়ে এসেছি। এখনতো পানি কমে গেছে। শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়েরা কোলে করে স্কুলে দিয়ে গেছে ও নিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) সরোজমিনে বিদ্যালয়ে যেয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে রাজহাস চরে বেড়াচ্ছে। মাঠের জমে থাকা পানিতে গরু গোসল করাচ্ছেন স্কুলের পাশে বসবাস করা এক বৃদ্ধ। বিদ্যালয় ভবনের বারান্দার গেটটি তালাবদ্ধ করে ভিতরে পাঠদান করছেন শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা থেকেই প্রধান শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই উপজেলার মধ্যে এই বিদ্যালয়টি সবচেয়ে অবহেলিত। উপজেলা শিক্ষা অফিসের গত মাসিক মিটিংয়েও বিদ্যালয়ের মাঠে পানি বেধে থাকার বিষয়টি অবহিত করেছি। সরোজমিনে শিক্ষা অফিসারেরা দেখে গেছেন। কিন্তু কোন ব্যবস্থা হয়নি। প্রতিষ্ঠার পরে ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়ে একটি বিল্ডিং পেয়েছি। পর্যাপ্ত রুম না থাকায় তিনটি ক্লাসরুমেই কষ্ট করে ক্লাস নিতে হয়। গতবছর একটি ওয়াশব্লকের কাজ শুরু করলেও অর্ধেক করে ফেলে রেখে চলে গেছে ঠিকাদার। বর্ষার শুরু থেকেই আমরা খুব শংসয়ের মধ্যে রয়েছি। কখন কোন বাচ্চা পানিতে ডুবে যায়। আগে ১৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে ৮৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে বাচ্চাদের খেলাধুলা করার জায়গা নেই সবসময় শ্রেণি কক্ষে আটকিয়ে রাখতে হয়। তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত মাঠ ভরাট ও প্রাচীর নির্মাণের দাবি জানানতারা।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জীবন। সে জানায় গত মাসে স্কুলে আসার সময় বই-খাতা নিয়ে সে একদিন পানির মধ্যে পড়েগেছিল। অন্যান্য শিক্ষার্থীর মাধ্যমে শিক্ষকরা খবর পেয়ে তাকে পানি থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তার বই-খাতা পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে অবস্থিত ছাত্তার স্টোরের মালিক রায়হান মাহমুদ জানান, বর্ষার শুরু থেকেই বিদ্যালয়ের মাঠে পানি বেধে রয়েছে। এখনতো আস্তে আস্তে কমছে। মাঠটি ভরাট করা হলে ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে এসে ঘুরে বেড়াতে পারবে। অন্যান্য স্কুল দুইতলা হয়ে গেলেও কেন এই স্কুলের কোন উন্নয়ন হলোনা তা বুঝতে পারিনা।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস. এম. আব্দুর রহমানের ফোন নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা বলেন এই বিষয়ে তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে খোজ-খবর নিয়েছেন স্কুলের সামনে একটি ডোবারমত সেখানে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম তারিক-উজ-জামান বলেন, এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে খোজ খবর নিয়েছি, এটা সাময়িক জলাবদ্ধতা নয়, এটা একটি স্থায়ী সমস্যা কারণ স্কুলের সামনে একটি বড় গর্ত যা ভরাট করতে আলাদা বরাদ্দের প্রয়োজন, সেই বরাদ্দের চেষ্টা কর হচ্ছে যদি পাওয়া যায় তাহলে সমাধান করা সম্ভব হবে। তাছাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।




কন্যা শিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ 

আজকের কন্যা-শিশুর মাঝেই সুপ্তভাবে বিরাজ করছে আগামী দিনের আদর্শ মা। যেকোনো কল্যাণমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র সৃষ্টির জন্য নারী পুরুষের অবদান অনস্বীকার্য। লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে কন্যা শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিবছর ৩০ সেপ্টেম্বরকে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
গৃহ-পরিবেশে একজন পুত্রসন্তানকে যেভাবে গুরুত্ব সহকারে আদর-যত্নে লালনপালন, শিক্ষার প্রতি যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেভাবেই একজন কন্যা-শিশুর মানসিক নিপীড়নের হাত থেকে মুক্ত করার কথাই উচ্চারিত হয়ে থাকে এ দিবসে। সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মক্ষেত্রসহ সমস্ত স্থানে নারী-পুরুষের ভেদাভেদ দূরীকরণ হলেও কন্যা-শিশু দিবস অন্যতম উদ্দেশ্য থাকলেও এ বছর থেকে ০৮ অক্টোবর দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের এবারে প্রতিপাদ্য হলো আমি কন্যা শিশু স্বপ্নে গড়ি সাহসে লড়ি দেশের কল্যাণে কাজ করি। উল্লেখ যে এবারের কন্যা শিশু দিবস ৩০ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ৮ অক্টোবর পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বর্তমান নারী অধিকারের যুগে, সুশাসনের ও মানবাধিকারের যুগে কন্যা সন্তানের প্রতি অবহেলা আগের তুলনায় অনেক কমলেও তা যে একেবারে নেই, তা বলা যাবে না। এ ধরনের মানসিকতা এখনো আমাদের সমাজ থেকে পুরোপুরি দূর হয়নি। ক্ষেত্র বিশেষে কন্যা সন্তানের প্রতি আগ্রহ বাড়লেও সামাজিকভাবে কন্যা সন্তানের অভিভাবকরা কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে থাকেন। বিশ্বজুড়ে নারী ও কন্যা-শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও নৃশংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু, যাদের বয়স আঠারো বছরের কম। আর শিশুদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ কন্যা-শিশু যাদের পিছনে রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। কন্যা-জায়া-জননীর বাইরেও কন্যা-শিশুর বৃহৎ জগত রয়েছে। স্বাধীনভাবে নিজের মতামত ব্যক্ত করা ছাড়াও পরিবার, সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন করা সম্ভব। এজন্য কন্যা-শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তাসহ বেড়ে ওঠার সব অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
বাল্যবিবাহ নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানতম অন্তরায় এবং আমাদের সমাজ কন্যা শিশুদেরকে বোঝা মনে করে। কন্যা শিশুদের পড়াশোনার পেছনে টাকা খরচ করতে চায় না। তারা মনে করে বিয়ে দিতে পারলে বোঝা দূর হয়ে গেল। তবে সময় অনেক বদলেছে। কন্যা শিশুরা এখন আর বোঝা নয়। বরং কন্যা শিশুরা হলো সর্বোত্তম বিনিয়োগ ও সমাজের আলোকবর্তিকা। জাতিসংঘের শিশু-বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষ স্থানীয় দেশগুলোর একটি৷ বাংলাদেশে ১৮ শতাংশ মেয়ের ১৫ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে হয়৷ ১৮ বছর বয়সের মধ্যে ৫২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়৷ সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য অনুসারে, ১০ বছর বয়সি কন্যা শিশুদের অনেক বেশি বয়সি পুরুষদের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়৷ শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী, মধ্যবিত্ত, গরিব নির্বিশেষে আমাদের সমাজে এমনকি নিজের পরিবারেও লক্ষ্য করলে দেখা যায়, মেয়ে শিশুর প্রতি অন্যরকম দৃষ্টিভঙ্গি ও বৈষম্যমূলক আচরণ। ফলে অনেকাংশেই দরিদ্রতার প্রথম শিকার হয় কন্যা শিশুরা। কিছু সামাজিক কথিত নীতির কারণে শিশুকাল থেকেই কন্যা শিশুদের এমনভাবে গড়ে তোলা হয় যাতে করে তারা প্রতিবাদী হতে না শেখে। তাদের প্রতি করা বৈষম্যমূলক আচরণকে অন্যায় হিসেবে না দেখে বরং সহজাত ও সমঝোতার সঙ্গে গ্রহণ করতে শেখানো হয়। যা পরবর্তী সময়ে নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার পথটিকে প্রশস্ত করতে সাহায্য করে।
শিক্ষা নারীর ক্ষমতায়নের চাবিকাঠি। শিক্ষা কন্যা শিশুর উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ রোধ এবং শিশু মৃত্যুর হার কমানোর নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং প্ল্যান বাংলাদেশের এক যৌথ জরিপ মতে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করা ২৬ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়েছে ১৮ বছরের আগে। নিরক্ষর নারীদের বেলায় এই সংখ্যা ৮৬ শতাংশ। সরকার বিগত বছরগুলোতে ছাত্রী ও নারীদের শিক্ষায় অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার জন্য নারীবান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। যার ফলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলসমূহে ছাত্রী অনুপ্রবেশ এবং লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতকরণে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।
কন্যা-শিশু সুরক্ষা পেলে সব বৈষম্য দূর হবে। কন্যা-শিশুদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করেছে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে নেওয়া হয়েছে কঠোর আইন। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার অনেক কমে গেছে। অভিভাবকদের সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হতে হবে কন্যা-শিশুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। কন্যা-শিশুর অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে পুরুষকে। আর আমাদের দেশে আগে কোনো পরিবারে কন্যা সন্তান হলে খুশি না হওয়ার একটা ব্যাপার ছিল সেটা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। আগের মতো এখন আর সেই আক্রোশগুলো নেই যেটা আগে কন্যা সন্তান হলে দেখা যেতো। তবে এখন দেখা যাচ্ছে একটা কন্যা সন্তান হলে বাবা মা যতটা খুশি হয়, তো পরবর্তীতে তারা বড়ো হওয়ার সাথে সাথে সামাজিক প্রেক্ষাপটে তারা অনেক বেশি কোণঠাসা হয়। সামাজিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়, নির্যাতনের শিকার হয় ও অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তো সেইদিক থেকে এখনো কন্যা-শিশুরা পিছিয়ে আছে। আমাদের সমাজে এখনও কন্যা সন্তানকে বোঝা মনে করা হয়। আর আমাদের দেশের শিশুকন্যা সন্তানরা একেবারেই নিরাপদে নেই।
শিশুদের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রণীত হয় শিশু আইন-১৯৭৪ যা যুগোপযোগীকরণের মাধ্যমে শিশু আইন-২০১১ রূপে প্রণয়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ, ১৯৮৯-এ স্বাক্ষর ও অনুসমর্থনকারী প্রথম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এরপরেও শিশুর প্রতি বৈষম্য আর অধিকারের বিষয়টি আমরা ভুলে যাই। শিশু নীতি অনুসারে শিশু বলতে আঠারো বছরের কম বয়সি সকল ব্যাক্তিকে বুঝায়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভিষ্ট : ০৫ এ লিঙ্গ সমতা অবস্থান করছে। অর্থাৎ সমতার ব্যাপারটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। মেয়েদের পুষ্টির চাহিদা, শিক্ষার অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা, বৈষম্য দূরীকরণ নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া মেয়েদের বিরুদ্ধে হিংসা, বলপূর্বক বাল্যবিবাহ, ধর্ষণসহ যেসব ঘৃণিত কাজকর্ম রয়েছে সেগুলোর নির্মূল করা ছাড়া উপয়ান্তর নেই। কন্যাশিশুদের সার্বিক উন্নতির জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ গণমাধ্যম কাজ করে যাচ্ছে, এসব কাজকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বাজেটের ২ শতাংশ শিশুদের জন্য বরাদ্দ রাখেন যা কন্যা ও পুত্র সকল শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়। তবে সমতা বিধানের লক্ষ্যে সরকার কন্যা শিশুদের জন্য নিয়মিত স্কুল, নিরাপত্তা, স্যানিটারি ব্যবস্থা, খেলাধূলার সুযোগ, হেল্পলাইন, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, মাধ্যমিক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষাসহ নানা ধরণের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। তবুও পরিতাপের বিষয় এই যে এখনো কন্যা শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হলে তারা বিষয়টি চেপে রাখে সমাজে লোকলজ্জার ভয়ে। খুবই পীড়াদায়ক হলেও এটাই সত্য আমাদের সমাজে কেউ ধর্ষিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ষিতার ছবি ভাইরাল হয়ে যায়, ফলে সেই ধর্ষিত নারীর জীবন আরও দুর্বিসহ হয়ে যায়। যদিও এখন এই বিষয়ে কিছুটা সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো কাজে গভীর রাতে একই বয়সি একটি ছেলে ও মেয়ে যদি রাস্তায় থাকে তখন ছেলেটির ভয় থাকে তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা ইত্যাদি হারানোর ভয়। বিপরীত দিকে মেয়েটির থাকে সম্ভ্রম হারানোর ভয়। মেয়েদের এই ভয় শিশুকাল থেকে শুরু করে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত থেকে যায়। এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে না বেরুতে পারলে সামগ্রিক উন্নতি অসম্ভব।
অনেক কন্যাশিশু বাবার বাড়িতে ঠিকমতো খাবারও পায় না। পরিবারে খাবারে টান পড়লে সেই টানটা কন্যার উপরই বর্তায়। ঠিক তেমনি বিয়ের পরও প্রয়োজনীয় খাবার পায় না। সুষম খাবার তো অকল্পনীয় বিষয়। ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অপুষ্টির শিকার হওয়া কন্যাশিশুরা শারীরিক সমস্যায় ভোগে। জন্ম দেয় অপুষ্ট শিশু, রোগাক্রান্ত শিশু।আর নিজের পরিবারে যেমন, স্বামীর পরিবারেও অবদমনের শিকার তারা। ফলে তাদের মানসিক সমস্যাও আশঙ্কাজনক। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় এক কোটি মেয়ে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের প্রায় অর্ধেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট নাই।অথচ বিদ্যালয়ে মেয়েদের উপস্থিতির জন্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। নির্যাতনের শিকার মেয়েদের মধ্যে দেখা গেছে, ৭২শতাংশ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। অপরদিকে নির্যাতনের শিকার ছেলেদের মধ্যে ৬৬শতাংশ প্রধানত জোরপূর্বক শ্রমের শিকার হয়। অনেক কন্যা শিশু শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।সারা বিশ্বে মেয়েরা শিক্ষাগ্রহণ, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা এবং নির্যাতন বা সহিংসতামুক্ত জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। প্রতিবন্ধী মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের সহায়তা এবং পরিসেবাগুলো পেতে অতিরিক্ত বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে।আর জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে মেয়েদের অধিকারসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সকলের মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেক উন্নতি সাধন করেছে।
আজকের কন্যা শিশুই আগামীর পরিপূর্ণ নাগরিক তাই তাদের বেড়ে ওঠা ও বিকাশের প্রতিটি ধাপেই সমান গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য। প্রথমত কন্যা শিশুদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরও সচেতন করতে হবে। অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দক্ষতা অর্জন, সুযোগের সঠিক ব্যবহার এবং জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সোচ্চার হয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করতে শেখা—এসবই তাদের এগিয়ে যাওয়ার মূল শক্তি। পরিবারের ভূমিকাও এখানে সবচেয়ে বড়। মাুবাবা ও অভিভাবকদের উচিত কন্যা শিশুর প্রয়োজনগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা, বোঝা এবং যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকা। তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই মেয়েদের মতামত শুনতে হবে, গুরুত্ব দিতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে উৎসাহ দিতে হবে। ঘরে-বাইরে সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে কারণ ছেলে ও মেয়ের অধিকার এক ও অভিন্ন। শিক্ষা গ্রহণ থেকে মত প্রকাশ সবক্ষেত্রেই সমান সুযোগ দেওয়ার দায়িত্ব পরিবারকেই নিতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ করণীয়। কন্যা শিশুকে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নেতৃত্ব বিকাশ ও সম্ভাবনা উন্মোচনে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং সব ক্ষেত্রে মেয়েদের সক্রিয় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কন্যা শিশুকে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার বিকল্প নেই। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত উদ্যোগেই কন্যা শিশুরা হয়ে উঠবে আগামী আত্মবিশ্বাসী নাগরিক।
লেখক: সহকারি তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর



মেহেরপুরে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল উদ্ধার ও বিনষ্ট

মেহেরপুর সদর উপজেলার কালাচাঁদপুর ভৈরব নদ থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল উদ্ধার করে আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করেছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে ভৈরব নদীর কালাচাঁদপুর অংশে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে প্রায় দুই হাজার মিটার অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল উদ্ধার করা হয়। পরে সেখানে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে উদ্ধারকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

অভিযান চলাকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফাতেমা কামরুন নাহার আঁখি, সিনিয়র সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মীর জাকির হোসেন এবং সদর থানার এসআই উজ্জ্বল হোসেন প্রমুখ।

প্রশাসন জানায়, অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে যাতে মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা যায়।




গাংনীতে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন

মেহেরপুরের গাংনীতে পিএসকেএস এর উদ্যোগে পালিত হলো আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস।

মঙ্গলবার সকালে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় পলাশী পাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির (পিএসকেএস) বাস্তবায়িত সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন করা হয়।

“একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গড়ব, স্বযত্নে তোমায় রাখব আগলে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদ্‌যাপিত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে কাজিপুর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক প্রবীণ নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা শেষে ৫ জন প্রবীণ নারী ও ৫ জন প্রবীণ পুরুষকে তাদের চলাফেরার সুবিধার্থে লাঠি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কাজিপুর ইউনিয়ন প্রবীণ কমিটির সভাপতি মো. আনজুমান ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আলম হুসাইন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পিএসকেএস এর পরিচালক মো. কামরুল আলম, উপজেলা কর্মসূচি সমন্বয়কারী মো. জামিদুল ইসলাম এবং সহকারী উপজেলা কর্মসূচি সমন্বয়কারী মো. রাকিবুল ইসলাম।




গাংনীতে নানা দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন ও সমাবেশ

বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকদের বাড়িভাড়ার নামে ৫০০ টাকার ন্যাক্কারজনক ও দূরভিসন্ধিমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মেহেরপুরের গাংনীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক পরিষদ ফেডারেশন, গাংনী উপজেলা শাখা।

বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক পরিষদ ফেডারেশন গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক শিক্ষক পরিষদের গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি মোমিনুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খান, পৌর শাখার সভাপতি আজিজুল হক, বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদুল আলম স্বপন, গাংনী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার ভাইস-প্রিন্সিপাল শফিকুল ইসলাম এবং হোগলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

মানববন্ধনে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সমান শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কাজ করলেও সরকারি শিক্ষকরা নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের বিরাট বৈষম্য রয়েছে। সরকার বাড়িভাড়া বাবদ মাত্র ৫০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে আমাদের সঙ্গে তামাশা করেছে। অবিলম্বে এটি বাতিল করে ন্যূনতম ২০,০০০ টাকা বরাদ্দ না দিলে শিক্ষকদের অধিকার আদায়ে আমরা মাঠে নামব।




মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন

“একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গড়বো, সযত্নে তোমায় রাখবো আগলে” প্রতিপাদ্যে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেহেরপুরে পালিত হলো ৩৫তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস।

আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল দশটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের হয়। র‍্যালিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

এরপর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শতাধিক প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আশাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ আবদুল ছালাম।

এসময় তিনি বলেন, যারা প্রবীণ, তাঁদের সহায়তা না দিয়ে আমরা তাঁদের সাথে থাকতে চাই। প্রবীণদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিচ্ছিন্নতা, একাকীত্ব ও অসহায়ত্ব। আমরা চাই, প্রবীণদের জীবন থেকে এই তিনটি জিনিস দূর করে দিতে।

প্রবীণরা সমাজের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ভাণ্ডার, অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা ও মূল্যবোধের ধারক। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও যত্ন প্রদর্শনের মধ্য দিয়েই আমরা একটি মানবিক সমাজ গঠন করতে পারি। তাঁদের সম্মান ও যত্ন নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

সমাজসেবা অফিসার (রেজিঃ) কাজী মো. আবুল মনসুরের সঞ্চালনায় এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ, সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম. আবু সাঈদ, মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ইনজামাম-উল-হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আব্দুল মালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




জীবননগরে ইসলামী ব্যাংকের সামনে কর্মজীবী ও কর্ম প্রত্যাশীদের মানববন্ধন

জীবননগরে ইসলামি ব্যাংক সহ সকল ব্যাংকিং সেক্টরে বিশেষ অঞ্চলের একগুচ্ছ অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে অবিলম্বে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী পরিষদ।

গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে জীবননগর চ্যাংখালী রোডে ইসলামী ব্যাংকের সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ইসলামি ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মো.ইব্রাহিম খলিল।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এস আলম কতৃক সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতে হবে। মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য লোক নিয়োগ দানের ব্যবস্থা করতে হবে। এস আলম কতৃক বিদেশে পাচার কৃত সকল অর্থ ফেরত আনতে হবে। যেসকল ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিবর্গ অপপ্রচার ছড়িয়ে ব্যাংকের সুনাম নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।