১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী সাবিত্রি, হিমসাগর আম ও মেহেরসাগর কলা 

দেখতে অনেকটা চমচমের মতো, আকার লম্বা ও চ্যাপটা। খেতেও সুস্বাদু। নাম তার সাবিত্রি। সম্প্রতি মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের আবেদনে ভৈগলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ পেয়েছে মেহেরপুরের ১৫০ বছরের এতিহ্য এই সাবিত্রি মিষ্টি। অন্যান্য মিষ্টি চিনতে সমস্যা হলেও এক দেখাতে ‘সাবিত্রি’ চেনা যায়। এর গায়ে ‘সাবিত্রি’ লেখা থাকে। এটাই এ মিষ্টির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ঠ্য।

জেলার দেড়শ বছরের ঐতিহ্য সাবিত্রি মিষ্টি শুরু থেকেই ধরে রেখেছে স্বাদ ও মান। এর পেছনে জড়িয়ে আছে ব্যবসায়ী ও কারিগরদের মমতা ও পেশাদারিত্ব। তিন পুরুষ ধরে মেহেরপুর শহরে এই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি তৈরি করে বাজারজাত করছেন বাসুদেব সাহার উত্তরসূরিরা।  মিষ্ট্রির জনপ্রিয়তা দেখে এখন অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও সাবিত্রি মিষ্টি তৈরি করেন তবে তাদের মত মান ও স্বাদ করতে পারেন না।

সাবিত্রি মিষ্টির সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও জায়গা করে নিয়েছে অনেক আগেই। এ অঞ্চলে বিয়ে বাড়ি কিংবা অতিথি আপ্যায়ন যেন এই মিষ্টি ছাড়া বেমানান। শুরু থেকে আজও পর্যন্ত ‘সাবিত্রী’ মিষ্টি তৈরির কারিগররা বংশ পরম্পরায় ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন।

১৮৬১ সালে মেহেরপুর শহরের কাসারিবাজার এলাকার বাসুদেব সাহা নিজ বাড়িতে মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি শুরু করেন। বাসুদবে সাহাও পৈতৃক পেশা হিসেবে তিনি মিষ্টির ব্যবসায় আসেন। দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এ মিষ্টি। স্থানীয় জমিদার ও ইংরেজদের কাছেও এ মিষ্টি প্রিয়তা লাভ করে।

সাবিত্রী মিষ্টির প্রথম কারিগর ছিলেন বাসুদেব সাহা। পরে মিষ্টি তৈরির এ বিদ্যাটি রপ্ত করেন তার ছেলে রবীন্দ্রনাথ সাহা। রবীন্দ্রনাথ সাহা গত হওয়ার পর থেকে এ মিষ্টির হাল ধরেছেন তার দুই ছেলে বিকাশ সাহা ও অনন্ত সাহা। এখনও সইে বাড়রি ছোট একটি দোকানে বাসুদবে সাহা নামরে একটি ব্যবসা প্রতষ্ঠিানে বক্রিি করনে সাবত্রিি ও রসকদম । বাইরের কারিগর দিয়ে মিষ্টি তৈরির কাজ না করায় সাবিত্রীর গুণগত মান এবং স্বাদ আজও একই রকম। কদরও বাড়ছে দিন দিন। বাজারের অন্যান্য মিষ্টির তুলনায় এর দাম কম। সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় সবাই এটি কিনে খেতে পারে।

জানা যায়, মিষ্টি বিক্রির টাকা দিয়েই চলত বাসুদেবের সংসার। পৈরাণিক সাবিত্রি দেবীর নাম অনুসারে বাসুদেব সাহা মিষ্টির নামকরণ করেন ‘সাবিত্রী’। সে সময় ভোজনরসিক জমিদারদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে এ মিষ্টি। কালক্রমে স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়ে দেশজুড়ে পরিচিতি লাভ করে। ধীরে ধীরে মেহেরপুরের ‘সাবিত্রী’ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পরিচিতি পায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়িতে বিশেষ কোনো অতিথি আসলে তাদের নাস্তায় ‘সাবিত্রী’ মিষ্টি রাখাটা এ এলাকার রীতি। এ ছাড়াও আত্মীয়বাড়ি, ঘনিষ্ঠজনদের উপহার, বিয়ের অনুষ্ঠান ও নানারকম আয়োজনে এ মিষ্টি থাকবেই। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অনুষ্ঠানগুলোতেও ‘সাবিত্রী’ মিষ্টি পরিবেশন যেন একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।

তবে, বাজারে মিষ্টির কদর ও চাহিদা বাড়লেও পর্যাপ্ত দুধ ও জনবলের অভাবে এখন ৩০ থেকে ৪০ কেজির বেশি মিষ্টি তৈরি করা সম্ভব হয় না বলে জানান, সাবিত্রী মিষ্টির কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

বাসুদেব গ্র্যান্ড সন্সের বর্তমান মালিকদের দুই ভাই এক ভাই অনন্ত সাহা বলেন, ‘সাবিত্রী’ মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহৃত দুধ কিংবা মিষ্টি ফ্রিজে রাখা হয় না। ফ্রিজে রাখলে স্বাদ আর মান ঠিক থাকে না। প্রতিদিন সংগ্রহ করা দুধ ভারী কাঠ দিয়ে চুলায় জ্বাল করানো হয়। দিনের পুরো সময় ধরে দুধ জ্বাল দিতে হয়। সন্ধ্যার দিকে জ্বাল দেওয়া শেষ হলে তা ঠান্ডা করার জন্য রেখে দেওয়া হয়। পরের দিন সকালে ‘সাবিত্রী’ বানিয়ে বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন মিষ্টির যে পরিমাণ অর্ডার পাই, সে অনুযায়ী দুধের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।

তিনি বলেন, ‘দুধ-চিনি আর কাঠের দাম বেড়ে যাওয়া এবং সময়মতো দুধের জোগান না পাওয়ায় মাঝে মাঝে সংকট তৈরি হয়। বাপ-দাদার হাতের মিষ্টি তৈরির স্বত্ব অন্য কাউকে দিতে চাই না। যদি কেউ ভেজাল করে, তাহলে দেড়শ বছরের সুনাম ক্ষুন্ন হবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই বহিরাগত কাউকে কাজে নেওয়া হয় না।’

অনন্ত সাহা বলেন, আমরা ‘সাবিত্রী’ ও ‘রসকদম’ মিষ্টি তৈরি করে থাকি। দুটোই মেহেরপুরের ঐতিহ্য বহন করে। প্রতিকেজি ‘সাবিত্রী’ ও ‘রস কদম’ ৫৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

সাবিত্রী মিষ্টির নিয়মিত ক্রেতা ইয়াসির রহমান বলেন, শুধু আত্মীয়-স্বজনদের জন্য না, বাড়িতে প্রতিনিয়ত খাওয়ার জন্যও এ মিষ্টি কিনে থাকি। এর মত স্বাদ আর অন্য কোন মিষ্টিতে পাই না।

মেহেরপুরের সিনিয়র সাংবাদিক ও জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চান্দু বলেন, মেহেরপুরের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে গেলে ‘সাবিত্রী’ মিষ্টির নাম চলে আসে। আমরা ছোট থেকেই এই মিষ্টির সাথে পরিচিত। ব্যবসায়ী ও কারিগরের হাত বদল হলেও জৌলুস আর সুনাম এখনো ধরে রেখেছেন কারিগররা। বাসুদেব সাহা এ মিষ্টির আবিস্কারক হলেও তার দেখাদেখি এখন অনেকেই এ মিষ্টি তৈরি করে, তবে বাসুদেবের মত স্বাদ ও মান অন্যরা করতে পারে না।

জিআই সনদ প্রাপ্তি নিয়ে মাহাবুব চান্দু বলেন, সাবিত্রি, আম বা কলাই নয় মেহেরপুরের আর ও কিছু ঐতিহ্যবাহী পণ্য রয়েছে যেগুলোও জিআই সনদ পাওয়ার উপযুক্ত।

সাক্ষাৎকার বাসুদবে সাহার নাতি অনন্ত সাহা

১৮৬১ সালে স্থাপিত হয় বাসুদেব সাহা প্রতিষ্ঠাতা তিন পুরুষ মিলে দোকান চালাচ্ছেন,  প্রথমে বাসুদেব সাহা, তারপর রাবিন্দ্রনাথ সাহা, এখন বিকাশ সাহা ও  অনন্ত সাহা।  শুক্রবার সকালে পাওয়া যায় অনন্তসাহাকে । তিনি ক্রেতাদের কাছে মিষ্টি বিক্রি করছিলেন। মিষ্ট্রির বিক্রি ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় অনন্ত সাহার সাথে।

মেহেরপুর প্রতিদিন: দিনে কত কেজি মিষ্টি তৈরি করেন? কত কেজি দুধ ও ছানা প্রয়োজন হয়?

অনন্ত সাহা: প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কেজি মিষ্টি তৈরি করি। এর মধ্যে সাবিত্রি ও রসকদম৷ এই মিষ্টি তৈরি করতে ১৮০ কেজি থেকে ২০০ কেচি দুধ প্রয়োজন হয়।

মেহেরপুর প্রতিদিন: অনেকে এই মিষ্টি তৈরি করার চেষ্টা করে কিন্তু আপনাদের মতো টেষ্ট হয় না। এবিষয়ে আপনাদের কোন অভিযোগ আছে কি-না?

অনন্ত সাহা: কারো কাছে কোন অভিযোগ নেই , যে যেভাবে কাজ করছে করুক। অনেকেই চেষ্টা করছে কিন্তু আমাদের মত পারেনি ।

মেহেরপুর প্রতিদিন: চাহিদা থাকা সত্বেও বেশি তৈরি করেন না কোনো.?

অনন্ত সাহা: কাঁচামালের সমস্যা, দক্ষ লোকজনের সমস্যা। এর থেকে বড় সমস্যা হলো বেশি করে তৈরি করতে গেলে মান ভালো থাকে না।

মেহেরপুর প্রতিদিন: সাবিত্রি মেহেরপুরের মিষ্টি হিসেবে জি আই সনদ পেয়েছে, আপনাদের কেমন লাগছে?

অনন্ত সাহা:  অবশ্যই ভালো লাগছে, এটা শুধু আমাদের জন্য না মেহেরপুরবাসীর জন্য গর্বের বিষয় । মিষ্টি নিয়ে সারা দেশে আমাদের সুনাম রয়েছে, এবার সুনামের সাথে সরকারি স্বীকৃতও মিলল।

হিমসাগর আম

সাবিত্রি মিষ্টির সাথে মেহেরপুরের দুটি কৃষি পণ্য হিসেবে হিমসাগর আম ও মেহেরসাগর কলাও পেয়েছে জিআই সনদ। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আবদনে এ দুটি কৃষিপণ্যকে জিআইসনদ দেওয়া হয়েছে। স্বাদে গন্ধে মেহেরপুরের হিমসাগর আম সারাদেশে আমপ্রেমিদের মন জয় করেছে অনেক আগে। একটি স্বাভাবিক আমের ওজন ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম হয়ে থাকে যার ৭৭ শতাংশই হল রসালো অংশ, বাকি ২৩ শতাংশ আঁটি। আঁশবিহীন আম হিসেবেও এর কদর অনেক। বাগানে বাগানে হিমসাগর আম গাছের ছড়াছড়ি। গত কয়েকবছর ধরে মেহেরপুরের হিমসাগর আম মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। রপ্তানিযোগ্য করে উৎপাদন করতে পারলে হিমসাগর আম রপ্তানিতে গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ সনজীব মৃধা কালের কণ্ঠকে বলেন, মেহেরপুর জেলা ২৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। এসকল আমচাষ থেকে ফলন হয় ৪০ হাজার  মেট্রিক টন। টাকার মূল্যে ১২০ কোট টাকার আম উৎপাদন হয় প্রতিবছর।

তিনি আরও বলেন, মেহেরপুরের হিমসাগর আম অন্যরকম বৈশিষ্ঠ হলো এটিতে কোন আঁশ নেই এবং খুবই সুস্বাদু। যা অন্যান্য জেলার হিমসাগর আম থেকে আলাদা করে চেনা যাবে। চলতি বছর থেকে যাতে আমাদের হিমসাগর আম রপ্তানিতে ভালো বাজার পেতে পারে সে ব্যাপারে চাষীদের সাথে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি।

মেহেরপুরের সব থেকে বড় হিমসাগর আম চাষী শহরের মহিলা কলেজ পাড়ার সাইদুর রহমান শাহিন সদর উপজেলার সুবিধপুরে তাঁর ৩০ বিঘা জমিতে ১৭৭টি হিমসাগর আমের বাগান রয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আমি হিমসাগর আম রপ্তানি করার লক্ষ্যে কৃষি অফিসসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সাথে কাজ করছি। ২০১৭ সালে আপনি কালের কণ্ঠ পত্রিকায় আমাদের হিমসাগর আম নিয়ে বড় প্রতিবেদন করেছিলেন।  এছাড়াও বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন হয়। এসকল প্রতিবেদন গুলো সাবেক কৃষি সম্প্রসারণ উপপরিচালক বিজয় কষ্ণ হালদার অফিসিয়াল খরবে জিআই সনদের জন্য আবেদন করেছিলেন। অবশেষে আমরা সেই জিআই সনদ পেলাম। এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত আনন্দের। আমরা এই হিমসাগর নিয়ে আরও কাজ করতে পারবো।

মেহেরসাগর কলা

মেহেরপুর সবজির পাশাপাশি চাষীরা ব্যাপকভাবে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করে থাকেন। তার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী কলা হচ্ছে মেহেরপুর সাগর। জেলা প্রতিবছর গড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে অধিকাংশ কলা মেহের সাগার জাতের। সুস্বাদু জাতরে কলা যার গাছ মজবুত, ফলন ভালাে হয় এবং রোগবালাই কম হওয়ায় মহেরেপুর সাগর কলা চাষীদরে কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।ে এবং এটি লাভজনক ফসলে পরণিত হয়ছে।

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের কলাচাষী সানোয়ার হোসেন বলেন, মেহের সাগর কলা সুস্বাদু এবং এটি লাভজনক ফসল। এ ফসল চাষের পাশাপাশি সাথি ফসল চাষ করা হয়। তিনি বলেন, আমি ৭ বিঘা জমিতে মেহেরসাগর কলা চাষ করেছি। শুরু থেকে ফসল হার্ভেস্টিং পর্যন্ত এক বছর সময় লাগে। এর মধ্যে ৬ মাসের একটি সাথী ফসল চাষ করা যায়। সব মিলিয়ে যে খরচ হয় তা সাথী ফসলে উঠে আসে। আশা করছি ৭ বিঘা জমি থেকে বছর শেষে আনুমানিক ১০ লাখ টাকা লাভ হবে।

সানোয়ার হোসেন বলেন, মেহেরপুরের কলা উৎপাদন দেখে আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের কাছে থেকে চারা নিয়ে যাচ্ছেন কয়েকবছর ধরে। কিন্তু আমাদের মত তারা ফলন পাচ্ছে না। যে কারণেই মেহেরপুরের জন্য মেহের সাগর বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। নতুন করে জিআই সনদ পাওয়ায় এর কি সুফল আমরা পাবো সেবিষয় এখনো পরিস্কার হতে পারিনি । তবে আশা করছি চাষীরাও উপকৃত হবে।

মেহের সাগর কলা নিয়ে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ সনজীব মৃধা বলেন, মেহেরপুরে কলা চাষের একটি বড় বাজার রয়েছে। বছরের ১৫০ কোটি টাকা কলা বাজার জাত হয়েছে। ৩০০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয় যা থেকে উৎপাদন হয়  ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন কলা।

সনজীব মৃধা বলেন, যেহেতু আমরা কলা নিয়ে জিআই সনদ পেয়েছি। এখন এটা নিয়ে যাতে কৃষকরা ভালো বাজার পান সে বিষয়ে কাজ করা হবে।




চুয়াডাঙ্গায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্মরণে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আলোচনা সভা

“তোমাদের যা বলার ছিল, বলছে কি তা বাংলাদেশ?” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের একত্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে শহীদ আলাউল ইসলাম অ্যাসোসিয়েশন হলে এই সভা হয়।

এ আয়োজন করে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা, জেলা শিল্পী কল্যাণ পরিষদ চুয়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা আবৃত্তি পর্ষদ, প্রগতি লেখক সংঘ চুয়াডাঙ্গা এবং চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য চর্চা কেন্দ্র- চর্চায়ন।

চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ইকবাল আতাহার তাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিরন-উর-রশিদ শান্ত ও চুয়াডাঙ্গা আবৃত্তি পরিষদের পরিচালক মনোয়ারা খুশি।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও দর্শনা সরকারি কলেজ সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মুন্সী আবু সাইফ, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি নজির আহমেদ, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্যচর্চা কেন্দ্র-চর্চায়নের কার্যকরী পরিচালক পিন্টু রহমান, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি হাবিবি জহির রায়হান প্রমুখ।




মেহেরপুরে উদীচীর উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মোমবাতি প্রজ্বালন

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বীর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় উদীচী মেহেরপুর জেলা সংসদের উদ্যোগে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

রবিবার সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে শহীদ ড. শামসুজ্জোহা পার্কের শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উদীচী মেহেরপুর জেলা সংসদের সভাপতি সুশীল চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম কানন, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, রমা ব্যানার্জী, রাজন, রাজিয়া সুলতানা, আরাত্রিকা চক্রবর্তী, মাহফুজসহ উদীচীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা।




দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এসিল্যান্ড তাসফিকুর রহমানের বিদায় সংবর্ধনা

দামুড়হুদা যেন এক জনবান্ধব, কর্মদক্ষ ও মানবিক এসিল্যান্ডকে হারালো। বদলিজনিত কারণে দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে. এইচ. তাসফিকুর রহমানের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় উপজেলা সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে এ বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই দামুড়হুদা উপজেলায় যোগদান করেন। তিনি প্রশাসনের ৩৮তম বিসিএস ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। অল্প সময়ের কর্মকালেই তিনি সততা, দক্ষতা ও জনবান্ধব আচরণের মাধ্যমে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের আস্থা অর্জন করেন।

অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি কেবল একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নয়, বরং সাধারণ মানুষের একজন আপন মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর সততা, আন্তরিকতা ও নিরলস পরিশ্রমে বদলে যায় উপজেলা ভূমি অফিসের চিরচেনা চিত্র। তাঁর কর্মকালীন সময়ে ভূমি অফিসে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০ হাজারেরও বেশি জমির খারিজ সম্পন্ন করেন এবং প্রায় ৭ শতাধিক মিসকেস নিষ্পত্তি করেন। পাশাপাশি তিনি অসংখ্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ভূমি-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও সেবামুখী ভূমি অফিস গড়ে তুলতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বিদায় সংবর্ধনায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান একজন ব্যতিক্রমধর্মী ও মানবিক কর্মকর্তা ছিলেন। সাধারণ মানুষের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং দ্রুত সেবা নিশ্চিত করাই ছিল তাঁর কাজের মূল লক্ষ্য। তাঁর অদম্য কর্মদক্ষতা ও আন্তরিকতায় তিনি দামুড়হুদা উপজেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।

বিদায় বক্তব্যে কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান বলেন, দামুড়হুদা আমার কর্মজীবনের একটি স্মরণীয় অধ্যায়। এখানকার মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা ও সহযোগিতা দিয়েছেন, তা আমি আজীবন মনে রাখব। আপনাদের সবাইকে আমি খুব মিস করব। আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

সংবর্ধনা শেষে তাঁর সুস্বাস্থ্য, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও কর্মজীবনে সাফল্য কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। বিদায়ের মুহূর্তে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং অনেকের চোখে অশ্রু ঝরে পড়ে।

দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, একজন দক্ষ, সৎ ও জনবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে কে. এইচ. তাসফিকুর রহমানের অবদান দীর্ঘদিন এ উপজেলায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ, সাধারণ সম্পাদক তানজির ফয়সাল, দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান কাজল, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল হাসান তোতা, প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য তাছির আহমেদ, হাবিবুর রহমান হবি, মেহেদী হাসান, আরিফুল ইসলাম মিলন এবং সদস্য আব্দুল খালেক, শেখ হাতেম, জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।




লাশ দেখতে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন কোটচাঁদপুরের কলেজ ছাত্রী তামান্না

ঝিনাইদহে মেস মালিকের লাশ দেখে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হলেন মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছুক তামান্না খাতুন (২০)।

রবিবার ( ১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার সময় এ দূর্ঘটনা ঘটে। তামান্না ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের সারুটিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের কন্যা।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, তামান্না সরকারী কেসি কলেজে পড়ার সময় ঝিনাইদহ উপশহর পাড়ার আব্দুল মতলেব নামে এক বাসা মালিকের মেসে থাকতেন। রবিবার সকালে ওই মেস মালিকের মৃত্যু সংবাদ শুনে তামান্না তার বাবার সাথে তাকে দেখতে আসেন।

লাশ দেখে ফেরার পথে শহরের পাগলা কানাই এলাকায় পার হওয়ার সময় তার গলার উড়না মোটর সাইকেলের চাঁকায় পেচিয়ে তামান্না রাস্তায় পড়ে যায়, এসময় পিছন থেকে একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে সাথে সাথে তার মৃত্যু ঘটে। পরে তামান্নাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেন।

তামান্না এবছর এইচএসসি পাশ করে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। মেধাবী এই ছাত্রীর মৃত্যু সংবাদ শুনার সাথে সাথে পরিবার জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।




ঝিনাইদহে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

ঝিনাইদহে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রবিবার সকাল ১০ টায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুর রহমানের সভাপত্বি অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাসউদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মাহফুজ আলফাজ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা পিএএ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রথীন্দ্রনাথ রায় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসনে আরা।

বক্তব্য রাখেন, পিপি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এ এস মশিউর রহমান,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামালুজ্জামান, ডাঃ মিথিলা ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এম এ কবীর, শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আয়ূব হোসেন রানা, জামায়াতের জেলা আমীর আলী আজম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর এ এইচ এম মোমতাজুল করিম, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন এবং ছাত্র প্রতিনিধি সাইদুর রহমান।

প্রধান অতিথি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান শহিদ বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের জীবন দিয়ে আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেছেন,তাদের অবদান কখনও ভুলবার নয়।




দর্শনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

দর্শনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় দর্শনা সরকারি কলেজের আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দর্শনা সরকারি কলেজের তিনজন শিক্ষক অধ্যক্ষ মোঃ লতাফত হোসেন জোয়ার্দ্দার, অধ্যাপক মোঃ রফিকুল ইসলাম ও অধ্যাপক মোঃ নাসীর উদ্দিনকে কলেজ থেকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আজও ওই তিনজন শিক্ষক নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের স্মরণে আজ শনিবার দর্শনা সরকারি কলেজের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শুরুর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাহমুদুল হাসান এবং গীতা পাঠ করেন অন্তর। আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দর্শনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে পরাজিত শত্রুরা এ দেশকে মেধাশূন্য করতে আমাদের সূর্যসন্তানদের বাড়ি বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। একইভাবে দর্শনা সরকারি কলেজের তিনজন শিক্ষককেও কোথাও নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, কিন্তু আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দর্শনা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যক্ষ মফিজুর রহমান, সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল কাদের, দর্শনা পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমন্বয়ক ইকবাল হোসেন, দর্শনা সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি হারুন অর রশিদ, বিএনপি সমন্বয়ক মাহবুবুল ইসলাম খোকন, দর্শনা থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান টুকু, দর্শনা পৌর আমির সাইকুল ইসলাম অপু এবং বিএনপির অন্যতম নেতা খন্দকার আব্দুল মুন্নাফ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মোফাজ্জেল হোসেন মোফা, ছাত্রশিবিরের সভাপতি হামজা ফরাজি, সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দর্শনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক মুকুল হোসেন।




মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত, এক ক্লিকেই জানুন ফলাফল

অবশেষে প্রকাশিত হয়েছে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল প্রকাশ করে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ।

এর আগে ফলাফল চূড়ান্ত করতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় বসেন। সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় ওএমআর মেশিনে খাতা মূল্যায়ন শেষে মেধা ও পছন্দক্রম অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থীদের কলেজ নির্ধারণ করা হয়েছে।

ফলাফল দেখুন:শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজে ফলাফল জানতে পারবেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dgme.gov.bd), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dghs.gov.bd) এবং সরাসরি (https://result.dghs.gov.bd/) লিংকে ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। ওয়েবসাইটে ‘MBBS Result 2025-2026’ অপশনে গিয়ে রোল নম্বর সাবমিট করলেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেখা যাবে। এছাড়া ওয়েবসাইটের নোটিশ বোর্ডে মেধাতালিকার পিডিএফ কপিও প্রকাশ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই ভর্তি পরীক্ষায় ১ লাখ ২২ হাজার ৬৩২ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ছেলে ৪৯ হাজার ২৮ জন এবং মেয়ে ৭৩ হাজার ৬০৪ জন। পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ছিল ৯৮.২২ শতাংশ।

এ বছর সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজ মিলিয়ে মোট আসন রয়েছে ১৩ হাজার ৫১টি। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৫ হাজার ১০০টি এবং ডেন্টাল ইউনিটে ৫৪৫টি আসন রয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ৬ হাজার ১টি এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ১ হাজার ৪০৫টি আসন রয়েছে।

সূত্র: DUAA NEWS




ঝিনাইদহে কাবাডি প্রতিযোগিতার সমাপনী ও ফুটবল প্রশিক্ষণের উদ্বোধন

তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঝিনাইদহে প্রমীলা কাবাডি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে ঝিনাইদহ সদরের ফজর আলী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। দিনব্যাপী খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উক্ত খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয় ফজর আলী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ এবং রানার্সআপ হয় মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।

একই দিনে ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০২৫-২০২৬ এর আওতায় ঝিনাইদহ জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে মাসব্যাপী ফুটবল প্রশিক্ষণের (অনূর্ধ্ব-১৫) উদ্বোধন করা হয়।

উক্ত কাবাডি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও ফুটবল প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জেলা ক্রীড়া অফিসার আমানুল্লাহ আহমেদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসনেয়ারা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুজ্জামান ঝন্টু, ছাত্র প্রতিনিধি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, দর্শনার্থীবৃন্দ। মাসব্যাপী (২১ টি সেশনে) ফুটবল প্রশিক্ষণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০ জন বালক ফুটবলার অংশগ্রহণ করে।




দামুড়হুদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দামুড়হুদায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  রবিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের সভাকক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাহী কর্মকর্তা উবায়দুর রহমান সাহেল ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও মত প্রকাশ করেন।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উবায়দুর রহমান সাহেলের সভাপতিত্বে নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট পরে অনুষ্ঠান শুরু করা হলেও হাতে গোনা মাত্র ৬/৭ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মেজবাহ উদ্দিন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মশিউর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হাসান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিলীমা আক্তার হ্যাপী, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে জাহান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠান হয়তো শুরু করাই সম্ভব হতো না। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ।

সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই বাংলাদেশ আজ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের আদর্শ ও দেশপ্রেম নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান বক্তারা।

আলোচনা সভায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয় এবং তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

সভায় উপস্থিত সবাই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। উল্লেখ্য, প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।

অনুষ্ঠান শেষে দোয়া পরিচালনা করেন মডেল মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মামুনুর রশিদ।