দর্শনায় ৫২টি গাঁজার গাছসহ চাষি আটক

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় গাঁজা গাছসহ রেজাউল হক (৪৪) নামে এক চাষিকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (১৭ আগস্ট) ভোরে উপজেলার শৈলমারি গ্রাম থেকে তাকে আটক করে দর্শনা থানাধীন বেগমপুর ক্যাম্প পুলিশ। আটক রেজাউল হক একই গ্রামের আমজাদ মণ্ডলের ছেলে।

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ তিতুমির জানান, শৈলমারি গ্রামে মাদকদ্রব্য গাঁজার চাষ হয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। পরে বাড়ির পাশে তার নিজ বাগানের মধ্যে থেকে ছোট বড় ৫২টি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত গাছের আনুমানিক ওজন ১৫ কেজি।

আটক আসামির বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে।




ঝিনাইদহে ৬ লেন প্রকল্পের জমির মূল্য নির্ধারণে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

মংলা বন্দরের সাথে উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থয়ানে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বরে একনেক সভায় ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে যশোরের চাচড়া পর্যন্ত ৪৭.৪৮ কিলোমিটার সড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প পাস হয়। সেমসময় উইকেয়ার ফেজ-১: ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক (এন-৭) উন্নয়ন প্রকল্প’র প্রাক্কলিত ব্যয় মূল্য ধরা হয় ৪১৮৭.৭০১৭ কোটি টাকা, মেয়াদ নির্ধারিত হয় ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারি হতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ও মূল্য। তবে গতকাল রবিবার (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত একটি উপজেলারও ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করতে পারেনি ঝিনাইদহ ও যশোরের জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। অধিগ্রহণের তালিকাভুক্তদের নানা অভিযোগ ও আপত্তি উপেক্ষা করেই গত ৮ আগস্ট ভূমির দাম নির্ধারণ করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে ভুক্তভোগীরা তা প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছে। গত ১০ আগস্ট সকালে জেলার কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে তারা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন থেকে জমির সঠিক মূল্য দাবিসহ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনৈতিক টাকা দাবি, হয়রানি ও বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরেও প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে না পারার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে এই সড়কে খানা খন্দে ভরে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ পিচের উপর ফ্ল্যাট সলিং দিয়ে কোথায় ভাঙ্গা ইট দিয়ে দুই বছরে প্রায় ৪/৫ কোটি টাকার ক্ষুদ্র মেরামত ও সংস্কারের কাজ করেছে। কিন্তু তাতেও সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।

তথ্য অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় পাস হওয়া প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৪১৪৭.৭০১৭ কোটি টাকা। মেয়াদ ধরা হয় ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেসময় ভূমি অধিগ্রহণ ও পূনর্বাসন বাবদ ধরা হয় ৮৮৬.৮৯ কোটি টাকা। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং ব্যয় মূল্য বৃদ্ধি করে ধরা হয় ৬৬২৬.৭৩ কোটি টাকা। বর্ধিত ব্যয়ে ভূমি অধিগ্রহণ ও পূনর্বাসন বাবদ ধরা হয় ২৬৫০.২৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে মোট ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে ৩৭৩.১৩ একর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর (উইকেয়ার)। ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে যশোরের চাচড়া পর্যন্ত ৪৭.৪৮ কিলোমিটার সড়কটি ৩টি লটে ভাগ করে তত্ত্বাবধায়ন করছে উইকেয়ার। ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দিন সরকারি ডিগ্রি কলেজ গেট পর্যন্ত লট-১(১৫.৯ কিমি), কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দিন সরকারি কলেজ গেট থেকে যশোরের মান্দারতলা পর্যন্ত লট-২(১৫.৮ কিমি) এবং মান্দারতলা থেকে চাচড়া পর্যন্ত লট-৩(১৫.৮ কিমি)। লট-১ এর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এলআরবিসি-এমআইএলজেভি ৮৫৪.৭৭ কোটি টাকার চুক্তি মূল্যে কার্যাদেশ পায় ২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এএমএলকিউটিসিজিজেভি ৭৩৭.৮১ কোটি টাকা লট-২ ও ৮৯৭.৭৩ কোটি টাকার চুক্তিমূল্যে কার্যাদেশ পান ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ও ১৭ জানুয়ারি।

সড়কে থাকবে একটি ফ্লাইওভার, চারটি সেতু, ৫৫টি কালভার্ট, পাঁচটি ভেহিকুলার ওভারপাস, আটটি পেডিস্ট্রিয়ান ওভারপাস ও একটি রেলওয়ে ওভারপাস। এছাড়াও প্রকল্প করিডোরকে স্মার্ট হাইওয়েতে রূপান্তর করার লক্ষ্যে ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম ও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ডিজাইন করা হবে। পৌর এলাকার মধ্যে ৪ লেন ও পৌর এলাকার বাইরে ৬ লেনে উন্নীত করা হবে রাস্তা।
ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি, ছোট কামারকুণ্ডু থেকে শুরু করে কালীগঞ্জের বারোবাজার ইউনিয়নের শেষ সীমানা পর্যন্ত ভূমি মালিকদের শতশত অভিযোগ ও আপত্তি থাকলেও সেগুলো আমলে না নিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো কাজ করছেন এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

জানাগেছে, এলএ(সাধারণ) ২/২০২২-২৩ ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ও এলএ(সাধারণ) ১/২০২২-২৩ মামলায় কালীগঞ্জ উপজেলায় জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। লট-১ অঞ্চলে ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে ৯১.৮৬ একর, সরকারি সংস্থার ১.৫২ একর, লট-২ অঞ্চলে ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে ১৩২.২২ একর এবং লট-৩ অঞ্চলে ব্যক্তিমালিকানা জমি রয়েছে ৭১.৫৭ একর এবং সেনানিবাসের ৮.০৮ একর জমি রয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার মধ্যে জেলা পরিষদের জমি রয়েছে ১৪৫.৪৬ একর। মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের জমির মধ্যে মিল এলাকায় ১.৬৬ শতক, সদর উপজেলার বিষয়খালী মৌজায় ১৩ শতক, কালীগঞ্জের বারোবাজারে ৪৩ শতক, সাত মাইলে ৬৩ শতক জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে। তবে ৩.১৫ শতক জমির মোট ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহণের জন্য গত শনিবার সুগার মিলে নোটিশ পাঠিয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। জেলা পরিষদের জমি বাবদ জেলা পরিষদের অনুকূলে টাকা দেওয়া হবে না এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।

রবিবার কালীগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত শহিদুল ইসলাম, আবু জাফর ও মোফাজ্জেল হোসেনসহ প্রায় দুইশতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সঠিক মূল্য চেয়ে মানববন্ধন করেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। তারা ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এক ঘন্টা তারা সড়কে কোন যানবাহন চলাচল করতে দেননি। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, যেই জমির বাজারমূল্য বর্তমানে ২০ থেকে ৩০ লাখ সেখানে সরকার তাদের ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা দিচ্ছে। জমিতে থাকা স্থাপত্যেরও সঠিক মূল্য নির্ধারিত হয়নি। সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলাম যাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা পেয়েছেন তাদের জমি ও ভবনের সঠিক শ্রেণিতে দাম নির্ধারিত হয়েছে।

কালীগঞ্জের আড়পাড়ার বাসিন্দা ও শহরের ঝরনা প্রিন্টিং প্রেসের মালিক আবু জাফর বলেন, আড়পাড়া মৌজার ১৮৫ নং খতিয়ানের ১১.১৫ শতক জমির মধ্যে ৩.১৫ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এই পুরো জমিতে তাদের একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে। নিচে প্রিন্টিং প্রেস, দোকান ও উপরে একটি ডিজিটাল ফটোল্যাব রয়েছে। ল্যাবটি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত। তিনি বলেন, প্রথম নোটিশ পেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় গেলে সার্ভেয়ার রিয়াজুল তাদের জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে না বলে তাকে ফিরিয়ে দেয়। পরে তিনি আবারও খোঁজ নিতে যান। তিনি বলেন, আমাদের এই জমি ও ভবন কালীগঞ্জ শহরের টপ পজিশনে অবস্থিত। কিন্তু সার্ভেয়াররা জ্বরাজীর্ণ ভবন ও নিম্ন শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করে আমাদের ঠকিয়েছে। আপত্তি দাখিল করতে গেলেও তারা বিভিন্ন অজুহাতে নেননি। ল্যাবের বিষয়ে রিয়াজুলের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি এমপি আনারের ভয় দেখান। চলতি বছরের ২৬ মে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (৯২৭৪/২০২৫ ) দায়ের করেন আবু জাফরের পরিবার। হাইকোর্টের বিচারক মোঃ আকরাম হোসেন চৌধুরী ও দেবাশীষ রায় চৌধুরী ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসককে আপত্তি গ্রহণের নির্দেশ দিলেও তারা গ্রহণ করেননি।

রবিবার সকালেও ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সামনে ২০ থেকে ৩০ জন অভিযোগকারীর সাথে কথা হয়।

কালীগঞ্জের বাদেডীহী গ্রামের আব্দুল মালেক বিশ্বাসের ছেলে জিনাত বলেন, আমার জমির রেট দেচ্ছে মাত্র ৪৫ হাজার টাকা শতক। এই জমি বর্তমানে ২০ লাখের উপরে শতক বিক্রি হচ্ছে। আমরা মাঠের জমি বিক্রি করে ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই জমিতে বিল্ডিং করেছিলাম। সরকার আমার জমি ও বিল্ডিং বাবদ যা দিচ্ছে তা দিয়ে আমার জমির চার ভাগের একভাগও কিনতে পারবো না।

একই গ্রামের গোলাম নবীর ছেলে রোকনুজ্জামান বলেন, ২০০৫ সালে বিদেশ থাকা অবস্থায় আমি বারোবাজারে ৩ লাখ টাকা শতক যে জমি কিনেছি সেই জমি সরকার এখন ৪৫ হাজার টাকা করে শতক দিতে চাচ্ছে। এই জমির বাজার মূল্য এখন ২০ লাখের উপরে। সরকার আমাকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে।

পিঠাপুকুর গ্রামের ভোলাই বিশ্বাসের ছেলে রবিউল ইসলাম বলেন, বাজারের উপরে আমার ২৩ শতক জমি আছে। এই জমিতে পাকা ভবনে ২২টি দোকান নির্মাণ করা রয়েছে। তার মধ্যে ৬ শতক জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে। আমার জমির দাম দিচ্ছে ৫৫ হাজার টাকা শতক ও মার্কেটের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৮ লাখ টাকা।

বাবুল আক্তার নামে একজন জানান, তাদের ২.৯৬ শতক জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে। এর মধ্যে ০.৯০ শতক জমি ডাঙ্গা শ্রেণি দেখানো হয়েছে। আমি ঝিনাইদহ ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় আপত্তি দাখিল করলে সরজমিনে তদন্তে আসেন কর্মকর্তারা। তারা সরজমিনে আমাদের ভূল স্বীকার করে সংশোধন করে দিবেন বলে জানালেও তা আর করেননি। আমি সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এলএ (সাধারণ) ১/২০২২-২৩ মামলায় জমির মালিকদের ২০২৩ সালের ২৬ জুন থেকে ভূমি অধিগ্রহণ আইনের ৪এর ১ ধারার নোটিশ দেওয়া শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে নোটিশ দেওয়ার সময় গ্রহণকারীদের তারিখ বিহীন স্বাক্ষর নেওয়া হয়। কয়েক মাস ধরে এই নোটিশ বিতরণ করা হয়েছে এক এনজিওর মাধ্যমে। আইন অনুযায়ী নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আপত্তি দাখিলের নির্দেশ রয়েছে। তারিখ বিহীন স্বাক্ষরের ফাঁদে পড়ে অনেকেই আপত্তি দাখিল করতে গিয়ে জানতে পারেন আপত্তি দাখিলের মেয়াদ নেই।
সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলামকে যারা অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন তাদের জমি সঠিকভাবে শ্রেণিবদ্ধ হয়েছে এমন অভিযোগও রয়েছে। ঝিনাইদহ ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের সাথে সখ্যতা থাকায় বেজায় দাপুটে ছিলেন সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলাম। রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ঘুরলেও তার দাপটের কারণে কেউ সুবিধা করতে পারেনি। রিয়াজুল ইসলাম কালীগঞ্জের ফারিস্ট কোল্ডস্টোরেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পূর্বের ধারণকৃত ভিডিও পরিবর্তন করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রিয়াজুল ইসলাম সাতক্ষীরার নীল ডুমুর এলাকায় বিজিবির একটি প্রকল্পে ১৫ লাখ টাকার ঘুষ কেলেংকারীতে ঝিনাইদহে শাস্তিমূলক বদলি হয়ে আসেন। ঝিনাইদহে এসে সাবেক এমপি আনারের দাপটে কালীগঞ্জ এলাকার ভূমি অধিগ্রহণে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কথা যারা বলছেন তাদের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বর্তমান সময়ে জমি অধিগ্রহণে শ্রেণি পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। সার্ভে করার সময় ম্যাজিস্ট্রেট ছিল। তিনি যেভাবে বলেছেন সেইভাবে লিখেছি।

ঝিনাইদহ ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আহমেদ সাদাত বলেন, এসব বিষয়ে আমাকে কেউ এখনো জানায়নি বা আমি কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি।

উইকেয়ার ফেজ-১ প্রকল্পের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ নিলন আলী বলেন, জমি অধিগ্রহণ শেষ করতে না পারায় আমরা কাজ করতে পারছি না। লট-১ অঞ্চলে ৭.২৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। তবে অন্যান্য লটে ২ শতাংশের নিচে। বিদ্যুতের পোল সরানো হয়নি। এই কারণে আমরা রোডস এন্ড হাইওয়ের জমিতেও কাজ করতে পারছি না। অধিগ্রহণ শেষ হলেই আমরা দ্রুত কাজ শেষ করবো।




বাংলাদেশে সবার অধিকার সমান : সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে সবার অধিকার সমান। এই দেশে ধর্ম-বর্ণের কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। আমরা সবাই সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রেখে চলছি, ভবিষ্যতেও চলব।’

গতকাল শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দেশে শত শত বছর ধরে হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, পাহাড়ি-বাঙালি, উপজাতি—সবাই মিলে আমরা অত্যন্ত শান্তিতে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হবে সম্প্রীতির এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আমরা সব সময় বজায় রাখব এবং একসঙ্গে সবাই শান্তিতে সুন্দরভাবে বসবাস করব। এখানে কোনো ধর্ম-জাতি, বর্ণ-গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এই দেশ সবার।

সবাই আমরা এই দেশের নাগরিক। প্রতিটা অধিকার আমাদের; সবার সমান অধিকার এবং সেভাবেই আমাদের সামনের সোনালি দিনগুলো দেখতে চাই।’
ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘এখানে নৌবাহিনীর প্রধান ও বিমানবাহিনীর প্রধান আছেন। সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন আছে।

আমরা সবাই মিলে আপনাদের পাশে থাকব। এক হয়ে আপনাদের সঙ্গে কাজ করে যাব।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ুক। এই আদর্শের ভিত্তিতে আমরা সুন্দরভাবে এ দেশে একসঙ্গে বসবাস করব।’

অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বলেন, ‘শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা শুধু অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসই জোগায় না, ন্যায়ের পথেও চলতে শেখায়।’

‘এই বাংলাদেশ আমাদের সবার। স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব। সবাই মিলে কাজ করলে বিশ্বের মানচিত্রে এই বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব’, যোগ করেন বিমানবাহিনীর প্রধান।

নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, ‘আসুন, পারস্পরিক সহনশীলতার মাধ্যমে দেশকে আরো শক্তিশালী করি। শ্রীকৃষ্ণ যেন সমাজে ন্যায় ও আলোর সত্য প্রজ্জ্বলিত করেন।’

পরে প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে তিন বাহিনীর প্রধান জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পলাশীর মোড় থেকে শুরু হয় জন্মাষ্টমীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে শেষ হবে।

সূত্র: কালের কন্ঠ ।




মেহেরপুরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন

মেহেরপুরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১২ দিনব্যাপী বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আশাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. তরিকুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সমাজের মূলধারার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে কর্মমুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা বর্তমান সরকারের অন্যতম উদ্যোগ। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হিজড়া জনগোষ্ঠী পেশাগত দক্ষতা অর্জন করে সমাজে মর্যাদার সাথে এগিয়ে যেতে পারবে।

এসময় সমাজসেবা অফিসার (রেজিঃ) কাজী মো. আবুল মনসুর, সরকারি শিশু পরিবারের (বালক) তত্ত্বাবধায়ক মো. তৌফিকুল রহমান, সমাজসেবা শহর কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. সোহেল মাহমুদসহ সমাজসেবা বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয় আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ চলবে আগামী ১২ দিনব্যাপী।




ঢাকায় আবুল কাশেম মাস্টারের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠান

হাটবোয়ালিয়া আঞ্চলিক কমিউনিটি ফোরামের আয়োজনে ঢাকায় আবুল কাশেম মাস্টারের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ক্যামব্রিয়ান কলেজে ঢাকাস্থ হাটবোয়ালিয়া অঞ্চলের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

ফোরামের সভাপতি নাজমুল হুদা নূরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান হেলালের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় ফোরামের উপদেষ্টা মনজুরুল হুদা, প্রফেসর আখতার হোসেন, সাবেক ডিআইজি ফজলুর রহমান, নুরুল হুদা ডিউক, আব্দুস সোবহান, তোফাজ্জেল হোসেন স্বপন, শরীফুল হুদা, সাবেক মেজর শহিদুল্লাহ, এ.কে. আজাদ, সুলতান বিশ্বাস, আবু হেনা, আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা করেন এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য নেছার উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান রেকর্ড, তারিকুল ইসলাম, আবু ইখতিয়ার হাশেমী রতন, মোজাম্মেল হক, খাদেমুল হক রাজু, সাকিল আহমেদ, ফকরুল ইসলাম সেলিম, এম এ হাসান, রাশেদুল ইসলাম, আব্দুল গাফফার, আল বাশার, সোহেল রানা, আল ইমরানসহ অনেকেই।




চালের বাজারে সিন্ডিকেট, শুল্ক কমানোর পর দাম বেড়েছে ভারতে

চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। চালের মজুতে রেকর্ড গড়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারেও চালের দাম নিম্নমুখী। এ ছাড়া বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমোদন, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণসহ সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও চালের বাজার ফের উত্তপ্ত। দাম বৃদ্ধির পেছনে ‘দেশের করপোরেট সিন্ডিকেটকেই’ দুষছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি বন্যাকেও অজুহাত হিসেবে দেখছেন অনেকেই।

তবে এটিকে অস্বাভাবিক বলছেন বাজার বিশ্লেষক ও ক্রেতা-বিক্রেতারা। সবমিলে অনেকগুলো পণ্যের দাম একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন। রাজধানীর কয়েকটি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে, টানা তিন মাস কমার পর ফের বেড়েছে মূল্যস্ফীতি।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন স্বল্প আয়ের মানুষ। সম্প্রতি বোরোর নতুন চাল বাজারে ওঠার পর যে সরু চালের দাম কমে ৭৫ টাকা হয়েছিল, এখন তা বেড়ে ৮০ থেকে ৮২ টাকায় পৌঁছেছে। এটি অস্বাভাবিক। মাঝারি ও মোটা চালের বাজারেও একই চিত্র। এই বাড়তি দামের পেছনে রয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছেন।

বাজারে চালের দামে ঊর্ধ্বমুখী:
মাস দেড়েক ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া বাকি সব চাল সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকার কাছাকাছি। তারা জানান, গরিবের কাবাব মোটা চালের দাম ঢাকায় স্থানভেদে গত ১৫ দিনে খুচরায় কেজিতে দাম বেড়েছে ৪-৬ টাকা। পাশাপাশি অন্য সবধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-৬ টাকা। শুল্কমুক্ত আমদানি হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাসে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে অন্তত ৪০০ টাকা। যার দাম গত বছরে ছিল মাত্র ২৯০০ থেকে ৩১০০ টাকা।

দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কৃষকের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কিনেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী ও করপোরেট কোম্পানির প্রতিনিধিরা। চাল উৎপাদনকারী মিলার ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের হাতে ধান-চাল নেই বললেই চলে।
কাওরান বাজারের কিচেন মার্কেটের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী খালেদ বলেন, চালের সরবরাহ ঠিক আছে, তবুও ঈদের পর থেকে দাম বাড়তে শুরু করেছে। একই মার্কেটের মেসার্স নূর রাইস এজেন্সির চাল ব্যবসায়ী বলেন, মোটা চাল এখন কম পাওয়া যায়। তবুও প্রতি কেজি ৫৮ টাকা। ৫০ কেজির বস্তা, চিকন- সব ধরনের চালের দামই এখন প্রায় ৩৯০০ টাকা। বস্তায় দাম বেড়েছে অন্তত ২০০ টাকা। খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে। খুব শিগগিরই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। দেশে খাদ্য মজুত বর্তমানে অত্যন্ত সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে।

বিশ্ববাজারে কম, দেশে বাড়ছে:
ট্রেডিং ইকোনমিকস বলছে, বিশ্ববাজারে চালের দাম এক মাসে কমেছে ৩.৮ শতাংশ। চলতি বছরের সাত মাসে কমেছে ৯.১৬ শতাংশ। আর এক বছরে একই সময়ের তুলনায় কমেছে ১৪.১৬ শতাংশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ীও চলতি বছরে সবধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। সংস্থাটির মতে, সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ ভারতের রেকর্ড উৎপাদন ও রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ধাপে ধাপে তুলে নেয়ায় বাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমেছে চালের দাম। এর পাশাপাশি উৎপাদন বেড়েছে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশগুলোতেও। বিশ্ববাজারে ক্রমেই নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশের বাজারে চালের দাম বেশি। রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর বাজার দরের তথ্য অনুযায়ী, গত একমাসে নতুন করে চালের দাম না বাড়লেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সরু জাতের নাজিরশাইল ও মিনিকেট ১৫.৯৪ শতাংশ, মাঝারি জাতের পাইজাম ও আটাশ ১৬.৭ শতাংশ এবং মোটা জাতের স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দাম ১০.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। টিসিবি’র ঢাকা মহানগরীর দৈনিক খুচরা বাজারদরের তথ্য অনুযায়ী, সরু চাল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, মাঝারি মানের চাল ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং মোটা চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাড়ছে মূল্যস্ফীতি:
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন বলছে, টানা তিন মাস কমার পর ফের বাড়লো মূল্যস্ফীতি। গত জুলাই মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮.৫৫ শতাংশ। এর আগে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে মূল্যস্ফীতি কমেছিল। জুলাই মাসে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত দুই খাতেই মূল্যস্ফীতি খানিকটা বেড়েছে। সামান্য বেড়েছে গ্রাম ও শহর দুই জায়গাতেই।

চাল আমদানি করবে সরকার:
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখা ও মূল্যস্ফীতি থেকে ভোক্তাদের স্বস্তি দেয়ার লক্ষ্যে ৪ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত বুধবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনীতিসংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এদিকে, ভারতের ইকোনমিক টাইমস বলছে, বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত ৫ লাখ টন চাল আমদানির ঘোষণায় ভারতে গত দুই দিনে চালের দাম ১৪ শতাংশ বেড়েছে।

পর্যাপ্ত মজুত:
চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারের কাছেও চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। দেশে বছরে চালের চাহিদা ৩ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৩ কোটি ৮০ লাখ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। একই সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত ২১ লাখ ৪৩ হাজার ১৮৭ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৪ টন চাল ও ১ লাখ ১ হাজার ৫৩০ টন ধান মজুত রয়েছে। সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, উৎপাদন ও মজুতের দিক থেকে চালের তেমন ঘাটতি নেই। তার পরও তিন মাস ধরে অর্থাৎ বোরোর ভরা মৌসুমেই চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক জানিয়েছেন, সরকারি হিসাবেই ধানের উৎপাদন খরচ ১২ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে, বোরো ধানের ভরা মৌসুমের আড়াই মাস পার না হতেই চালের বাজারে এমন অস্থিরতার জন্য মিল মালিক ও করপোরেট সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে মিল মালিকদের দাবি চালের দাম বাড়ার জন্য করপোরেট গ্রুপগুলো একমাত্র দায়ী। বাজারে সুষ্ঠু তদারকি নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।

রাজধানীর বড় পাইকারি বাজার বাবুবাজারের ইসলাম রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন বলেন, চালের বাজার করপোরেট হাউজগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ কোম্পানিগুলো চালের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ালে সরকার অজ্ঞাত কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, করপোরেট হাউজগুলোর রহস্যময় ভূমিকা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সরকার যতই উদ্যোগ গ্রহণ করুক না কেন, বাজার স্থিতিশীল হবে না।

কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পর্যাপ্ত আমদানি থাকার পরও পরিস্থিতি কারা অস্বাভাবিক করলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের অসাধু সিন্ডিকেট আগের মতোই দাম বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাজারে কেন মনিটরিং নেই। ‘সরকারের সঠিক মনিটরিং না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা করছে।

তবে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ করপোরেট কোম্পানিগুলোর মালিকরা। তাদের মতে, চাল উৎপাদনে দেশ এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। ফলে সময়মতো আমদানির অনুমতি না দেয়ায় চাহিদা বেড়ে চালের বাজারে আলাদা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। নাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম স্বপন বলেন, চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য না থাকলে সংকট তৈরি হবেই। যেখানে আরও দুই মাস আগে ব্যবসায়ীদের চাল আমদানির অনুমতি দেয়া উচিত ছিল, তা দেয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সংগ্রহ বিভাগ) মনিরুজ্জামান বলেন, রেকর্ড পরিমাণ বোরো সংগ্রহ এবং মজুতও ভালো। বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবেও চাল আমদানি করা হচ্ছে। ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এতে আশা করা যায়, চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।

বাংলাদেশ অটো রাইস-মিলমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর দেশে উৎপাদিত ফলনের প্রায় অর্ধেক ধানই করপোরেট ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত হয়েছে। তারা মূলত ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ধানের হাট থেকে অধিক দরে ধান সংগ্রহ করে মজুত করে। এতে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ‘চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মহানগরে ১০টি এবং প্রতি জেলায় একটি করে টিম কাজ করছে। সারা দেশের চালের আড়তে অভিযান চালাচ্ছি। কেউ যদি বলে মনিটরিং নেই তাহলে সেটি সঠিক নয়।

সূত্র: মানবজমিন ।




মেহেরপুরে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠান

মেহেরপুরে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৫ দিনব্যাপী টেক কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন অ্যান্ড ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে সমাজসেবা কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আশাদুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। তাই সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকেও আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জনে এগিয়ে আসতে হবে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা কর্মসংস্থানের নতুন পথ খুঁজে পাবে। ফ্রিল্যান্সিং এবং কম্পিউটার দক্ষতা এখন যে কোনো ক্যারিয়ারের জন্য অপরিহার্য। আমরা আশা করি, এই প্রশিক্ষণ তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। সমাজসেবা অধিদপ্তর সব সময় পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে থাকবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অফিসার (রেজিঃ) কাজী মো. আবুল মনসুর, প্রশাসনিক যুক্ত জুনিয়র হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. এ. কে. ছায়েদুজ্জামান, সমাজসেবা শহর কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. সোহেল মাহমুদ, প্রশিক্ষক এস. এম. রাসেল প্রমুখ।

শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট ও অনুদানের টাকা বিতরণ করা হয়।




বঙ্গোপসাগরে ফের লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস

আগামী সোমবারের (১৮ আগস্ট) মধ্যে আবারও উত্তরপশ্চিম এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর ফলে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (১৬ আগস্ট) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হকের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ১৩ আগস্ট বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যার মধ্যে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সংস্থাটি জানায়, এই সময়ের মধ্যে ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বুধবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সূত্র: কালের কন্ঠ ।




জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল

প্রায় দুই মাসের টানা বর্ষণে ডুবে গেছে মেহেরপুরের বিস্তীর্ণ কৃষিজমি। জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাজার হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধান, কলা, মরিচ ও শীতকালীন সবজির ক্ষেত। ভেসে গেছে মাছের ঘেরও। এতে যেমন দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে বড় ধাক্কা খেতে হচ্ছে কৃষকদের।

কৃষকরা বলছেন, মাঠের পানি দ্রত না নামলে শুধু এবারের নয়, আগামী মৌসুমের ফসলও বুনতে পারবেনা কৃষকরা। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন তারা। সেই সাথে দেখা দিতে পারে জেলার খাদ্য ঘাটতি।”দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এখন সরকারি সহায়তার অপেক্ষায়।

মেহেরপুর জেলার সর্ব বৃহৎ ধলার মাঠ। যতদুর দৃষ্টি যায় শুধু ফসল আর ফসল। সেই মাঠে এখন শুধুই পানি। পাকা ধানসহ বিভিন্ন ফসল এখন পানওে নিচে। দুই মাসের অধিক সময় ধরে অবিরাম বর্ষণ হয়েছে।

এতে জেলার বিভিন্ন স্থানের মতো গাংনী উপজেলার ধলার মাঠটিতে কোথাও হাটু পানি, কোমর পানি, আবার অনেক জায়গায় বুক পানি। এই পানি না গেলে কৃষক ফসলও তুলতে পরবেননা, আগামি মৌসুমেও ফসল বুনতেও না পারার আশংকা করছেন তারা।

মেহেরপুর জেলার সর্ববৃহত ধলার মাঠে গিয়ে স্বরেজমিনে দেখা গেছে-সবজিক্ষেতের অধিকাংশ গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাকা ধান পানির নিচে ডুবে থাকায় আগাম কেটে ফেলতে হচ্ছে কৃষকদের। আর কলাক্ষেতে পানি আরও কিছুদিন থাকলে সেটিও মারা যাবে বলে আশঙ্কা। পানি জমে থাকায় ফসল তোলা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। যেখানে আগে গরু বা মহিষের গাড়িতে ফসল আনা যেত, সেখানে এখন ডিঙি নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে কৃষকদের।

সময়মতো পানি না কমলে এ অঞ্চলে তীব্র খাদ্য সংকটের শঙ্কা করছেন তারা। খাল খনন ও কাজলা নদীতে পানি প্রবাহের জন্য কালভার্ট নির্মানের মাধ্যমে পানি নিস্কাশন করে কৃষিতে সহায়তা করা এখন সময়ের দাবী।

আমন ধান চাষি ধলাগ্রামের ইয়াকুব আলী জানান, এবার তিনি ৪ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। এখন ধান কাটা মাড়াইয়ের সময়। এমন মুহুর্তে পানিতে আমার জমির সব ধান ডুবে গেছে। বেশিদিন পানির নিচে থাকলে ওই ধান আর ঘওে তোলা যাবেনা। মাইলমারি গ্রামের কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, দ্রত পানি না সরলে এবার যেমন ফসল ঘওে তুলতে পারছিনা,তেমনি আগামী ফসলও লাগাতে পারবোনা । ফলে পরিবারে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। নওপাড়ার কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ধালার মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল খনন করা হয়েছেছিল। কিন্তু কালভার্ট না দেয়ায় মাঠের এক দিকের পানি নিস্কাশন হয়,অন্যদিকে পানি নিস্কাশন হতে পারেনা। এছাড়া খালে পাট জাগ দেয়ার কারনে পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় দির্ঘদিন জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে পুরো মাঠ। যা অন্তত ১০ গ্রামের মানুষের আবাদ নস্ট হচ্ছে।

” তবে, কৃষি বিভাগের দাবি “ বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন কৃষি বিভাগ। কৃষকদের অভিযোগ হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে থাকলেও এমন দুর্যোগে পাশে নেই কৃষি বিভাগ।

জেলার এবছর ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ও ২৬ হাজার জমতে আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি আউশ ও আমানের আবাদ হয়ে থঅকে এই ধলার মাঠে। ফসল তলিয়ে যাওয়ায় জেলায় খাদ্য সংকটের আশঙকা করছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন কৃষি বিভাগ। সেই সাথে পানি নিস্কাশনের জন্য খাল খনন কিংবা কালভার্ট নিমানের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপন অধিদপ্তরকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।




আলমডাঙ্গায় উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র জনসভা

আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে নির্বাচন, সেই নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এনে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র উদ্যোগে বিকেল সাড়ে ৪ টার সময় আলমডাঙ্গা উপজেলা মঞ্চে বিশাল জনসভায় বক্তব্যকালে এ কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনের পর দেশ ত্যাগের ঘটনায় সারাদেশে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর ও নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর হুশিয়ারী দেয় নেতাকর্মীদের।

আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আক্তারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান শরীফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরিফুজ্জামান শরীফ বলেন, ধ্বংস প্রতিহিংসা নই, সকলকে ঔক্যবদ্ধ ভাবে শান্তির সমাজ গড়তে হবে। তরুণরা যে স্বপ্ন নিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে জ্ঞান ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র উত্তরণে চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। শক্ত হাতে আইনশৃঙ্খলা রুখতে হবে। ধর্ম, বর্ণ পরিচয়ে কেউ যেনো নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন।

তিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, তাঁরা এদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন। ছাত্র জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী শৈরাচার সরকারকে উৎখাত করেছে। আপনারা সকলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে দলকে সুসংগঠিত করুন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে ধানের শীষে ভোট দিতে অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র অন্যতম সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম পিটু, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওফুন নাহার রিনা, জেলা জাসাসের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম সেলিম, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, পৌর বিএনপি’র সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আলি আজগর সাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল মাস্টার, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ন সম্পাদক হাজী মকবুল হোসেন। উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মীর উজ্জল, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব সাইফুদ্দিন আলম কনক, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের।

এছাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান রাসেল, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি আতিক হাসান রিঙ্কু, সদস্য সচিব মাহমুদুল হক তন্ময়, উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা গোলাম, পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর হাসান লিমন।

উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হিমেল, পৌর সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক জাকারিয়া শান্ত, ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আবদার আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, বেলগাছী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজেদ হোসেন, সম্পাদক কামাল হোসেন, জামজামি ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আলম শাহ, সম্পাদক পলাশ উদ্দীন, কালিদাসপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আইনাল হক, সম্পাদক লালন, কুমারী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দীক, হারদি ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মনির হোসেন, সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ভাঙবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি টিপু সুলতান, গাংনী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল রহমান রেজু, খাদেমপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি শেরেকুল ইসলাম, জেহালা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি শহিদুজ্জো মিল্টুন, সম্পাদক আলাউদ্দিন, খাসকররা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আব্দুর রশিদ, সম্পাদক রাজাবুল ইসলাম, বাড়াদি ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আশাদুজ্জামান বকুল, চিৎলা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রাজিব ফেরদৌস পাপন, নাগদাহ ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি বোরহান উদ্দীন, সম্পাদক শাহিনুজ্জামান।

আরও উপস্থিত ছিলেন, পৌর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রহিদুল হক, হাফিজুর রহমান চমক, আব্দুল জব্বার, মাসুদ সালেহিন লিপু, আব্দুর রশিদ মালিতা, আব্দুর রাজ্জাক, বরকত উল্লাহ, আলিমুদ্দীন, আনজান আলী প্রমূখ।