শৈলকুপায় ট্রাক চাপায় নারীর মৃত্যু, পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কানাপুকুরিয়া নামক স্থানে ট্রাক চাপায় বন্যা খাতুন (১৯) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

রোববার সকালে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের কানাপুকুরিয়া এলাকায় এ ঘটরা ঘটে। নিহত বন্যা খাতুন উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের পদমদি গ্রামের সোহান আলীর স্ত্রী। তবে বন্যার বাবার বাড়ির লোকজনের দাবী তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা এক ব্যক্তি জানায়, অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মোটরসাইকেলের পেছনে বসে বন্যা খাতুন ঝিনাইদহের দিকে যাচ্ছিলো। তার পেছনে একটি ট্রাক ছিলো। কিছুদির যাওয়ার পর তারা এতে দেখে বন্যার লাশ পড়ে আছে। আর যে মোটরসাইকেলে বন্যা যাচ্ছিলো সেটা আবার ফিরে যায়।

নিহতের পিতা জাহাঙ্গীর হোসেন দাবী করেন, বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ের শশুর বাড়ির লোকজন তার উপর নির্যাতন করত। দুই দিন আগেও তাদের নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বন্যা। আমরা মনে করছি তাকে এখানে এনে ট্রাকের নিচে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ আরাপপুর হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, প্রাথমিক ভাবে সড়ক দুর্ঘটনা মনে হলেও আমরা লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট এলে আর তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ সঠিক ভাবে বলা যাবে।




কালীগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত দুই জনকে নিয়ে জামায়াত-বিএনপির ঠেলাঠেলী

সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুইপক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয় দুই ভাই। নিহতরা জামায়াত নাকি বিএনপি কর্মী তা নিয়ে চলছে দল দুদলের ঠেলাঠেলী।

বিএনপি বলছে নিহতরা জামায়াত কর্মী আর জামায়াত বলছে তারা কোনদিনও তাদের কর্মী ছিলো না। ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালা ইউনিয়নের।

জানা যায়, সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জামাল ইউনিয়নের বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিএনপির অপর পক্ষ আরিফ, লিটন, বুলু ও আশরাফের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে পহেলা জুন সকালে ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে অন্তত ৫ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে মহব্বত হোসেন নামের একজনের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরে নেওয়ার পথে তিনি মারা যায়। আহত হয় তার ভাই ইউনুছ আলীসহ আরও ৪ জন। ঘটনার ৩ দিন পর মহব্বত আলীর বড় ভাই ইউনুছ আলী রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

এ ঘটনার পর থেকেই নিহত দুই ভাইকে নিয়ে দায় এড়াতে শুরু হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের ঠেলাঠেলি। নিহতদের জামায়াত কর্মী বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও, শনিবার সকালে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা জামায়াত সেই দাবি সাফ উড়িয়ে দিয়েছে।

গত ১১ জুন উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে দাবী করা হয় নিহতরা জামায়াত কর্মী। দীর্ঘদিন তারা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রমাণ হিসেবে জামায়াতের একটি অনুষ্ঠানে নিহত ইউনুছ আলীর উপস্থিতির ছবি তুলে ধরা হয়।

শহরের নলডাঙ্গা সড়কের কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজের দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু।

এদিকে শনিবার সকালে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা জামায়াত সেই দাবি সাফ উড়িয়ে দিয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের বাকুলিয়ায় জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল হক মোল্লা স্পষ্টভাবে বলেন, “নিহত মতব্বত আলী ও ইউনুছ আলী কখনও জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এ হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি জানিয়েছে জামায়াত নেতা বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কখনোই হত্যার রাজনীতি করে না।

কিন্তু গত ১১ জুন উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যগ্ম আহবায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু নিহত ইউনুছ আলীকে জামায়াত কর্মী ও সন্ত্রাসী বলে দাবি করেন। অথচ বিএনপি কর্মী হত্যাকান্ডের পর বিএনপির জেলা ও উপজেলার একাধিক শীর্ষ নেতা নিহত ইউনুছ আলীকে বিএনপির কর্মী বলে উল্লেখ করেন। যার ভিডিও আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিবাদ সমাবেশে নিহতের ভাই ইয়াকুব আলী বিশ্বাস বলেন, আমার ভাই বিএনপি কর্মী হওয়ায় আওয়ামী লীগের ভয়ে ১৬ বছর পালিয়ে ছিলেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর দেশে এসে তার দল বিএনপি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হলো।

লিখিত বক্তব্যে উপজেলা জামায়াতের আমির জোর দিয়ে বলেন, একজন ব্যক্তি ইচ্ছা করলেই জামায়াতের কর্মী হতে পারে না। জামায়াতের কর্মী হওয়ার জন্য নিদ্দিষ্ট সিলেবাস ও কর্ম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে আসতে হয়। কোন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বা এমন কোন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ আছে এমন ব্যক্তি জামায়াতের কর্মী হওয়ার ন্যুনতম কোন সুযোগ নেই। অথচ সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস রহমান মিঠু বার বার তাদের দলীয় কর্মীকে জামায়াতের কর্মী বলে প্রচার করার চেষ্টা করেন। এরমধ্যে দিয়ে জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে বিএনপির এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান উপজেলা জামায়াত।




স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে বলায় মায়ের সামনেই ছেলের আত্মহত্যা

দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই মাস পূর্বে স্ত্রীকে বাবার বাড়ি তাড়িয়ে দেন স্বামী। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ দেওয়াতেই বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বাদল মল্লিক (৩৪) নামের এক দিনমজুর।

বাদল মল্লিক গাংনী পৌর শহরের চৌগাছা ভিটাপাড়া এলাকার পচা মল্লিকের ছেলে।

বাদল মল্লিকের মা ঘিনা খাতুন জানান, আমার ছেলে ও তার স্ত্রীর মধ্যে কলহের জেরে প্রায় দুই মাস পূর্বে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিই। এরপর তাকে বারবার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে বলি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আমার সামনেই বিষপান করে।

এসময় বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদল মল্লিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।




গাংনীতে গাঁজা সেবনে নিষেধ করায় একজনকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জালশুকা গ্রামে উমেদুল ইসলাম (৩০) নামের এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার শাফায়েত হোসেন (২৬) এর বিরুদ্ধে।

গতকাল শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে জালশুকা গ্রামের উত্তরপাড়ার মাঠে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত উমেদুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত গোলাম রসুলের ছেলে এবং অভিযুক্ত শাফায়েত হোসেন একই গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, উমেদুল ইসলামকে কৌশলে বাড়ির পাশ থেকে ডেকে মাঠে নিয়ে যায় শাফায়েত। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায়। আহত অবস্থায় উমেদুল কোনোমতে পালিয়ে এসে স্থানীয়দের ঘটনার কথা জানায়।

পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাণী ইসরাইল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।




মেহেরপুরে তাপদাহে হাসপাতালে বেড়েছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা

মেহেরপুরে তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাস্তা কিংবা মাঠে কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করেই কাজ করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে। এতে করে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা। এ সময় রোদে না বের হওয়া, ছায়াযুক্ত স্থানে চলাফেরা করা, তরল খাবার খাওয়া এবং শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু নিয়ে লাইনে দাঁড়ানো ধানখোলা গ্রামের জোসনা খাতুন জানান, তার ১৪ মাস বয়সী শিশু রায়ান দুই দিন যাবৎ জ্বর-সর্দিতে ভুগছে। গত রাতে শুরু হয় পাতলা পায়খানা। আউটডোরে টিকিট কেটে চিকিৎসক দেখালে ভর্তি করে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

ধর্মচাকী গ্রামের সুমাইয়া এসেছেন তার শিশু কন্যা হুজাইফাকে নিয়ে। তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বমি করতে থাকে, পরে শুরু হয় পাতলা পায়খানা। চিকিৎসক ভর্তি লিখেছেন। এমন অর্ধশতাধিক শিশু শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে।

শুধু শিশুই নয়, বেশ কয়েকজন বৃদ্ধকেও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা গেছে।

এদিকে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত মেহেরপুরে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ফলে বেড়েছে রোদের তীব্রতা ও ভ্যাপসা গরম। চরম বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কৃষকদের খুব সকালে মাঠের কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। আর রাস্তায় উপার্জনক্ষম মানুষদের আয় কমে গেছে। ভ্যান ও অটোচালকরা রাস্তায় ঘুরলেও যাত্রী পাচ্ছেন না বলে জানান।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ যাবৎ মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেড়েছে। শনিবার বেলা ১২টায় ৩৫ ডিগ্রি এবং বিকেল ৩টায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫২ থেকে ৬৩ শতাংশ। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র শিশু কনসালট্যান্ট ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে সব বয়সের মানুষ জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। সেক্ষেত্রে শিশুদের বেশি করে তরল খাবার, মায়ের দুধ, শাকসবজি খাওয়াতে হবে এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। এছাড়াও অপ্রয়োজনে রোদে না বের হওয়া ও বেশি পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।




মেহেরপুরের বিখ্যাত হিমসাগর আমসহ আম-দই-চিঁড়া-মিষ্টি উৎসব

ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাড়ি ফিরে আসা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মেহেরপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে গত পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত ‘আম-দই-চিঁড়া-মিষ্টি উৎসব’ উদযাপন করেছেন।

শনিবার (১৪ জুন) প্রাণবন্ত এই মিলনমেলায় তারা পুরোনো স্মৃতি ভাগাভাগি করেন এবং আনন্দ-উৎসব করেন।

এবারের আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ ছিল মেহেরপুরের বিখ্যাত হিমসাগর আম। এই আম তার রসালো স্বাদ, গন্ধ ও মিষ্টতার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রশংসিত। সঙ্গে পরিবেশিত হয় খাঁটি দই, ভেজানো চিঁড়া, দেশি মিষ্টান্ন, পিঠা ও মৌসুমি ফল।

উৎসবে তরুণ ও প্রবীণ প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা একে অপরের সঙ্গে কলেজ জীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “হিমসাগর আমের রসালো স্বাদ আর পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে এই আয়োজনটি আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।”
অন্য একজন তরুণ অংশগ্রহণকারী যোগ করেন, “কলেজ জীবনের বন্ধুত্ব নতুন করে জেগে উঠেছে, আর এই মিলনমেলা আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।”

আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন স্টুডেন্ট কেয়ার একাডেমির পরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান হীরা, কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং উদ্যোক্তা রাজু আহম্মেদ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জজ কোর্টের পেশকার হাসানুজ্জামান মিলন, জারাফাত, নাফিউল, আল-আমিন, রোকুনুজ্জামান তুষার, নোমানসহ আরও অনেকে।

আয়োজকরা জানান, “আগামী বছর আরও বৃহৎ ও সংগঠিতভাবে এই উৎসবটি আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।”

এভাবে প্রতিবারের মতো এবারও মেহেরপুর সরকারি কলেজে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা হয়ে উঠেছে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে।




দর্শনা সীমান্তে ৬ বাংলাদেশিকে পুশব্যাক

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার ঠাকুরপুর সীমান্ত দিয়ে রাতের আধারে ৬ বাংলাদেশিকে পুশব্যাক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

১৩ জুন শুক্রবার দিবাগত ভোর ৪ দিকে ঠাকুরপুর সীমান্তের ৮৭ নং পিলালের কাছ দিয়ে তাদেরকে পুশব্যাক করে ভারতীয় বিএসএফ।

শুক্রবার ভোরেই চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির ঠাকুরপুর ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার আনোয়ার হোসেন ৬ জনকে আটক করে দর্শনা থানায় সোপর্দ করে।এরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার মৃত্য কিতাব আলীর ছেলে শাহাজান (৪০) মৃত্য নজির হোসেনের মেয়ে ও শাহাজানের স্ত্রী (কহিনুর (৩৫)সাবিহা খাতুন (১৮)শারমিন (১৫) সাথী খাতুন (৮) নাজমুল (১)।এ বিষয়ে শাহাজান বলেন, গত ১৯/২০ বছর আগে আমরা কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যায়।কিন্তু হঠাৎ করে ভারতীয় লোকজন আমাদেরকে জোর পূর্বক তাড়িয়ে দিচ্ছে। কোন বাংলাদেশী লোক ভারতে থাকবে না।

এ ঘটনায় দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন,বিজিবি আমাদের কাছে একই পরিবারের ৬ জনকে হস্তান্তর করেছে।আমরা তাদের কাছে শুনে তাদের আত্নীয় স্বজনকে খবর দিয়ে কুড়িগ্রাম থানাকে একটি বার্তা প্রেরন করেছি।এ ঘটনায় দামুড়হুদা উপজেলার ভৃমি এসিল্যান্ড এ এইচ এম তাসফিকুর রহমান জানান,দর্শনা থানার ওসি আমাকে জানালে আমি তাদের ৬ জনকে পূর্ব রামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখছি এবং তাদের দুপুরের খাবারের ব্যাবস্থা করে দিয়েছি।

তবে তাদের আত্নীয় স্বজনকে খবর দেওয়া হয়েছে তারা আসলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।




১৬বাংলাদেশী নাগরিককে হস্তান্তর করলো বিএসএফ

ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৬ জন বাংলাদেশী নাগরিক বিএসএফ কর্তৃক আটকের পর বিজিরি নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবি সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গতকাল রাত ১২টার সময় ১৯৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন অধীনস্থ ভারতের কুমারিপাড়া বিএসএফ কোম্পানী কমান্ডার মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর অধীনস্থ বাঘাডাংগা কোম্পানীর খোসালপুর বিওপি কমান্ডার’কে অবগত করেন যে, ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৬ জন বাংলাদেশীকে (পুরুষ-৪, নারী-৪ এবং শিশু-৮) বিএসএফ কর্তৃক আটক করা হয়েছে।

বিএসএফ উক্ত ১৬ জন বাংলাদেশিকে ফেরত নেয়ার জন্য বিজিবি’কে অনুরোধ করে এবং ১.৩০ মিনিটের সময় ওই ১৬ জন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সম্বলিত বিস্তারিত বিজিবি’কে প্রেরণ করে। বিজিবি কর্তৃক উল্লেখিত ১৬ জন ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত কওে সন্ধ্যা ৬টার দিকে (বিএসটি) সীমান্ত পিলার ৬০/৮৫-আর (পিলার) এর নিকট শূন্য লাইন বরাবর কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ এর নিকট থেকে গ্রহন করে।

হস্তান্তরকৃত ব্যক্তিদের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মাধ্যমে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।




মুজিবনগরে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ১

মেহেরপুরের মুজিবনগরে বিশেষ অভিযানে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ জুন) রাত থেকে শনিবার (১৪ জুন) ভোর পর্যন্ত মুজিবনগর থানা পুলিশের পরিচালিত ২৪ ঘণ্টার বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের মৃত সাত্তারের ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম (৪৫)।

তার বিরুদ্ধে মুজিবনগর থানায় দায়েরকৃত এফআইআর নং-০৯, তারিখ ১০ জুন ২০২৫; জি.আর. নং-৬৩, তারিখ ১০ জুন ২০২৫ অনুযায়ী রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে মামলা রুজু করা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে পেনাল কোড ১৮৬০-এর ধারা 143/324/325/323/307/379/34/506(2) অনুযায়ী অভিযোগ আনা হয়েছে।

গ্রেফতারের পর আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, জেলার সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ ধরনের বিশেষ অভিযান চলমান থাকবে।




মেহেরপুর সীমান্তে সাড়ে তিন মাসে ৮৬ পুশ ইন

সাড়ে তিন মাসে মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে ৮৬ বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে এসব বাংলাদেশি বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে যায়। কেউ ১৫ বছর আগে, কেউ ১০ বছর আগে, কেউবা চার-পাঁচ বছর আগে ভারতে যায়। ভারতে তারা বিভিন্ন ইটভাটা, কলকারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ভারতীয় অবৈধ বাংলাদেশিদের আটক করে হাজত পাঠায়। সেখান থেকে বের করে রাতের আঁধারে তারা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে (পুশ ইন)।

এ নিয়ে সীমান্তবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। পুশ ইন ঠেকাতে বিজিবিকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাস পর‌্যন্ত মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৮৬ জন বাংলাদেশিকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে। বিভিন্ন সময়ে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এসব ব্যক্তি আটক ও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ১০ জুন ভোরে মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস সীমান্ত দিয়ে ১২ জনকে, ৪ মে ভবেরপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে, ২৫ মে সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে এবং ২৭ মে সোনাপুর সীমান্ত পিলার ১০১ কাগমারী মাঠ দিয়ে আরও ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

পুশ ইন হওয়া বাংলাদেশিদের অধিকাংশের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। এর পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, লালমনিরহাট, কক্সবাজার, ফরিদপুর, পিরোজপুরের নাগরিক রয়েছেন।

ফেব্রুয়ারি মাসে যাদের পুশ ইন করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন, পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের শিবাস হালদার (৫০), তাঁর ছেলে হরিদাস হালদার (২৪), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (২০), নরেন্দ্রপুর থানার আক্কাস আলী (২৮), রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সারেংপুর গ্রামের শাহিন আলী (২৭), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কাজীব আলী (২৩), হরিশপুর গ্রামের আবদুল্লাহ (২৭), পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের ইসাহাক আলী, তাঁর ছেলে আজিল আলী (৪৫), কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা-১৬ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করা তরুণ রিয়াজ (২৪)। বাকি পাঁচজনের নাম প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

মে মাসে যাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার কাঠগিরি গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে মোমেনা খাতুন এবং তার ৩ ছেলে মোজাম্মেল হক (২৩), মোস্তাক আহমেদ (১৯) ও কাবিল (১১)। কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার জয় মঙ্গল (১১), মাথা গ্রামের জালালউদ্দিনের ছেলে মইনুল ইসলাম, স্ত্রী কাঞ্চন বেগম এবং ছেলে কারণ (১৪), রবিউল (৭) এবং মেয়ে মরিয়ম (৪), লালমনিরহাট জেলার সদর থানার চুঙ্গগাড়া গ্রামের মৃত গণেশ চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল, তার স্ত্রী গীতা রানী পাল, মেয়ে পার্বতী পাল (১৫), পূজা রানী পাল (৭) ও আরতী পাল (৩), কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুঠিচন্দ্রখানা গ্রামের খলিলের ছেলে আমিনুল ইসলাম, স্ত্রী পারুল, দুই মেয়ে আমেনা (৪) ও আরফিনা (১১ মাস), কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার টগরপাড়া গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে বজলে (৪০), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৩৫), মেয়ে মর্জিনা খাতুন (৯), মিম (৪), ছেলে রাসেল (২১) এবং ববিতা (১৫), নাতি ওবায়দুল (৮)।

কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শাহানুর (২৯), তার স্ত্রী কল্পনা (২৭) এবং ছেলে নুর ইসলাম (৯)। কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার বালাসিপাড়া গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে ইচা আলী (৪৪), তার স্ত্রী আকলিমা বেগম (৪০), ছেলে আরিফ (১৯), ইব্রাহিম (১৫), ইসমাঈল (৮) এবং ছেলে আরিফের স্ত্রী সুমনা (১৫)। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার নগরাজপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে আলিমুদ্দিন (৫৫), তার স্ত্রী আমিনা (৩৫), ছেলে আতিকুল (২৫), আতিকুলের স্ত্রী ইয়াসমিন (২০), ছেলে ইয়াসিন (৫), ইয়ানুর (২) এবং মেয়ে ফাতিমা (১)। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার ঘোগারকুঠি গ্রামের বাটালের ছেলে হুজুর আলী (৪০), তার স্ত্রী মনিরা (৩৫), ছেলে মনির হোসেন (৭), মেয়ে আদুরি (৩), হালিমা (১৮) ও নাতি হামিম (২)।

জুন মাসে পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন:
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার ফুলমতি গ্রামের রহমত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪২), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শাহাজাদী খাতুন (৩০), ছেলে মিরাজ আলী (১৫), একই থানার কবুরামাবুদ গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী লাভলী খাতুন (৪২), ছেলে হাসেন আলী (২০), বাবুল হোসেন (২৪), বাবুল হোসেনের স্ত্রী জেনমিন খাতুন (২০), ছেলে জহিদ হোসেন (৩), জাকির হোসেন (১), হাসেন আলীর স্ত্রী জান্নাতী খাতুন (১৮), ১০ দিন বয়সী মেয়ে হাসিনা খাতুন, শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আজিজুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন হোসেন (২৫)।
প্রশাসনের মতে, এসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। অনেকেই পারিবারিক বা কাজের কারণে ভারতে গিয়ে সেখানে আটক হন। নির্দিষ্ট কোনো চুক্তি বা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই বিএসএফ এসব বাংলাদেশিকে মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করছে।

ভারত থেকে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানকার পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের সীমান্তে এনে কাঁটাতারের গেট খুলে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

কক্সবাজারের রিয়াজ আলী বলেন, প্রায় চার বছর হলো জীবিকার আশায় চোরাইপথে ভারতে গিয়েছিলাম। নয়ডা জেলার একটি লোহার কারখানায় চাকরি করতাম। ২ মে পুলিশ এসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা আমাকে নদীয়া জেলার কারাগারে পাঠায়। সেখান থেকে একটি ট্রাকে সীমান্তে এনে ফেলে দেয়।

কুড়িগ্রাম জেলার জাহাঙ্গীর আলম ও বাবুল হোসেন বলেন, তারা দুজনই পরিবার নিয়ে প্রায় এক যুগ আগে ভারতে গিয়েছিলেন। গত বছরের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বহরমপুর বাজারে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। ভারতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি। গত মাসে পরিবার নিয়ে দেশে ফেরত আসার সময় বিএসএফ আটক করে তাদের জেলে পাঠায়। জেল থেকে হৃদয়পুর সীমান্ত এলাকায় ট্রাকে করে এনে তাঁদের জড়ো করে এবং কাঁটাতারের মাঝখানে যে দরজা আছে, সেটা খুলে আমাদের বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দেয়।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের বিজিবি থানায় হস্তান্তর করলে আমরা আইনানুগভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। কোনো ব্যক্তি যাতে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে দেশে ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। পাশাপাশি, যেসব ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পুশ ইন-এর চেষ্টা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিতভাবে বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন পর‌্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।