আলমডাঙ্গা হাটবোয়ালিয়া বাজারে ভাই ভাই ট্রেডার্সে চুরি

আলমডাঙ্গা হাটবোয়ালিয়া বাজারে ভাই ভাই ট্রেডার্সে চুরি হয়েছে। ৫০ হাজার টাকার মালামালসহ ড্রয়ারের তালা ভেঙে কিছু নগদ টাকাও চুরি গেছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের হাটবোয়ালিয়া বাজারে প্রধান সড়কের লালব্রিজ এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্সে দুর্‌সাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ২৬ নভেম্বর বুধবার দিনগত রাতে দোকানের পিছনের দিক দিয়ে টিন কেটে প্রবেশ করে চোরচক্র। পরে তারা দোকানে থাকা সিনজেনটা ও বায়ার কোম্পানির কীটনাশকসহ নগদ অর্থ চুরি করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, তিন মাস আগেও একই দোকানে একই কায়দায় চুরি হয়েছিল।

এই দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক সুজন আলী জানান, গোডাউনের টিনের চাল কেটে ভিতরে প্রবেশ করেছে চোরচক্র। ৫০ হাজার টাকার অধিক মালামাল ও ড্রয়ারে থাকা কিছু খুচরা টাকা চুরি গেছে। এব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানায় অভিযোগ করছি।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানা কর্তৃপক্ষ জানান, এই চুরির ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। তিনটি আন্তজেলা সংযোগস্থলের কেন্দ্র এই হাটবোয়ালিয়া বাজার। তাই চোরেরা চুরি সংঘটিত করে খুব সহজেই পার্শ্ববর্তী জেলায় লুকিয়ে পড়ে। আমরা এই সক্রিয় চোরচক্র ধরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।




গাংনীতে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে মেহেরপুরের গাংনীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আখেরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা ও সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির নেত্রী ফরিদা পারভীন, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম সোহাগ, মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন এডাম, ইমন হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম বিপ্লব, গাংনী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রিপন হোসেনসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

বক্তারা অভিযোগ করেন, জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার পর থেকেই গাংনীসহ জেলায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার প্রতি দলের নেতা-কর্মীদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন না দেওয়া অন্যায় হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চলবে বলে জানান নেতারা। তারা বলেন, দলের চূড়ান্ত মনোনয়নে জাভেদ মাসুদ মিল্টনের নাম অন্তর্ভুক্ত না করা হলে আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে।




দামুড়হুদা রেসিডেন্সিয়াল আইডিয়াল স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

দামুড়হুদা রেসিডেন্সিয়াল আইডিয়াল স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বৃত্তি প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা, ক্লাস পার্টি ২০২৫ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায় দামুড়হুদা মিনি স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠানগুলো অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই স্কুলের শিক্ষার মান দিনদিন উন্নত হচ্ছে। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএ) আয়োজিত পরীক্ষায় সারা দেশে চতুর্থ শ্রেণির ৩ জন শিক্ষার্থী প্রথম স্থান অধিকার করে বৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে অত্র প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী তাবাসসুম আফরিন বাংলাদেশে প্রথম স্থান অধিকার করায় আমি এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীসহ স্কুলের সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানাই।

অনুষ্ঠানে স্কুলের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রাফিজুল ইসলাম এবং দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক রুহুল আমীন, মোতাহের হোসেন, রায়হান হোসেন, আফিয়া, জিনিয়া, মাহমুদা, সুবর্ণা আক্তারসহ স্কুলের সকল শিক্ষকবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমণ্ডলী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পরে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এবং বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।




মুজিবনগরে গুড নেইবারস এর শিশু অধিকার বিষয়ক প্রচারাভিযান

“শিশু অধিকার জানি, অন্যকে জানাই” এই প্রতিপাদ্যে শিশু অধিকার রক্ষায় গুড নেইবারস বাংলাদেশ, মেহেরপুর সিডিপির বিশেষ প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং দুই শিশুকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গুড নেইবারস বাংলাদেশ, মেহেরপুর সিডিপির উদ্যোগে এই বিশেষ প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ানো।

এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা কমিউনিটির মানুষের মাঝে শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখে এবং সম্মিলিত উদ্যোগে দুই শিশুকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। এদের মধ্যে একজন জটিল কানের পলিপেক্টরি (আরটি) এবং কানের সংক্রমণে ভুগছে, অন্যজন ফিমারের উভয় মাথার ফ্র্যাকচার ও হিপ জয়েন্টের শক্ততায় আক্রান্ত। সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের চিকিৎসা ও অধিকার রক্ষায় সরাসরি অবদান রাখা হয়।

অনুষ্ঠানে শিশু অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিশুশ্রমের নেতিবাচক প্রভাবসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে নাটিকা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
গুড নেইবারস বাংলাদেশ, মেহেরপুর সিডিপির ম্যানেজার বিপুল রেমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মণ্ডল।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, বিদ্যুৎ বিহারী নাথ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, মেহেরপুর, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মাহবুবুল হক, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন উদ্দিন আল আজাদ, সিডিসি সভাপতি জহিরুল ইসলাম।

এছাড়াও গুড নেইবারস বাংলাদেশ হেড অফিস থেকে উপস্থিত ছিলেন মি. তুষার লিও ত্রুজ (টিম ম্যানেজার, গ্রান্ট রাইটিং টিম)।

গুড নেইবারস বাংলাদেশ, মেহেরপুর সিডিপির ম্যানেজার বিপুল রেমা বলেন, গুড নেইবারস বাংলাদেশ বিশ্বাস করে স্থানীয় উদ্যোগ ও তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণই শিশু অধিকার সুরক্ষায় টেকসই পরিবর্তন আনতে পারে।

উল্লেখ্য, গুড নেইবারস বাংলাদেশ ১৯৯৬ সাল থেকে শিশু অধিকার সুরক্ষা, শিশু উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও যুব উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ১৩টি জেলায় ১৭টি প্রকল্প পরিচালনার মাধ্যমে কমিউনিটির উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।




ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০, বাড়ি-ঘর ভাংচুর

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। সেসময় ভাংচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই গ্রামের শাহাবুল মোল্লা ও হায়দার মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। সম্প্রতি দু-গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারির ঘটনাও ঘটে।

এরই জের ধরে আজ বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। ভাংচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

‎ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।




জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় আপসহীন থাকবে প্রশাসন

ড. সৈয়দ এনামুল কবির বলেন, “নির্বাচনে ভোটারের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। কোনো অনিয়ম, প্রভাব বা চাপ সৃষ্টির চেষ্টা বরদাশত করা হবে না। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সবাই যেন নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”

মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ সকাল ১১টায় উপজেলা হল রুম কর্মকর্তাবৃন্দ ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মেহেরপুর জেলার নবযোগদানকৃত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. সৈয়দ এনামুল কবির এসকল কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, মেহেরপুরের মানুষ শান্তিপ্রিয়। মানুষের কল্যাণে প্রশাসন সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলভাবে কাজ করে যাবে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ খায়রুল ইসলাম। সভাপতিত্ব বক্তব্য তিনি বলেন, “বাল্যবিবাহ ও মাদক নির্মূলে প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে। পাশাপাশি শীতের শুরু থেকেই অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ চলছে। সমাজের দুর্বল শ্রেণির মানুষের যেন কোনো কষ্ট না হয় সেদিকে সর্বোচ্চ নজর রাখা হচ্ছে।”

এছাড়াও সভায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুর সরকারি কলেজে নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক উৎসব

রঙিন সাজ, আনন্দ উল্লাস আর মধুর আবহে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী মেহেরপুর সরকারি কলেজের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

নবীণবরন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার কলেজ ক্যাম্পাসজুড়ে সকাল থেকেই ছিল উৎসবের আমেজ-রঙিন ব্যানার, ফুলের মালা। এসময় নবীন-প্রবীণের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সহকারী (ঐকমত্য) ও সাংবাদিক মনির হায়দার। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন-‘নতুন পথচলা শুধু বইয়ের জ্ঞান নয়, মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠারও পথ দেখায় কলেজ জীবন। স্বপ্ন বড় হবে, পথ চলা হোক আলোকিত।’

কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম নজরুল কবীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক খেজমত আলী মালিথা।

অতিথিরা বলেন, তারা নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধে বড় হয়ে ওঠার আহ্বান জানান। এছাড়া কো-কারিকোলাম অ্যাক্টিভিটিস, সামাজিক কার্যক্রমসহ মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে কলেজকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরার পাশাপাশি একটি মানবিক সমাজ গঠন করার আহ্বান জানান।

নবীনদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র বিধান শেখ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র উলফাতুন নেছা পূর্ণিমা।

অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মুহূর্ত ছিল ফুল ছিটিয়ে নবীনদের বরণ করে নেওয়া। প্রবীণ শিক্ষার্থীরা হাতে রঙিন পাপড়ি ছিটিয়ে নবীনদের স্বাগত জানালে ক্যাম্পাসজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর এক আবহ।

পরে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, নৃত্য, কবিতা আর নাট্য পরিবেশনায় মাতিয়ে রাখেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।




মেহেরপুরে এসডিসি এনজিও’র বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ

মেহেরপুরের বাড়াদী বাজারের ব্যবসায়ী রোকেয়া খাতুন সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি) মেহেরপুর শাখার বিরুদ্ধে ঋণ প্রদানে অনিয়ম, জোরপূর্বক পণ্য বিক্রি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন।

বিষয়টি নিয়ে তিনি সম্প্রতি মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

অভিযোগে রোকেয়া খাতুন উল্লেখ করেন, তিনি গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে এসডিসি মেহেরপুর শাখা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তবে ঋণ নেওয়ার শর্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা তাকে বাধ্যতামূলকভাবে একটি টেলিভিশন ও একটি ওয়াটার হিটার কিনতে বলেন। পণ্য দুটির মূল্য ধরা হয় ৫৪ হাজার টাকা, যা বাজারদরের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি বলে দাবি তার।

ঋণমূল্য ও পণ্যমূল্য মিলিয়ে তার নামেই মোট ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ দেখানো হয়।

রোকেয়া খাতুন অভিযোগ করেন, এসডিসির ম্যানেজার জিনারুল ইসলাম তাকে আশ্বাস দেন ঋণের টাকা সুদসহ অগ্রিম পরিশোধ করলে তাকে পুনরায় নতুন লোন দেওয়া হবে। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি ধার-দেনা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋণের পুরো টাকা পরিশোধ করেন।

কিন্তু টাকা পরিশোধের দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও তাকে নতুন লোন দেওয়া হয়নি। বরং বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

এর ফলে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মারাত্মক ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে তিনি অভিযোগে করেছেন।

এদিকে, এ অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন এসডিসির মেহেরপুর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার সময় কোন না কোন ইলেকট্রিক পণ্য জোর করে দেওয়া হচ্ছে। অফিসের একটি কক্ষ শুধুমাত্র এসকল মালামালের স্টোর হিসেবে রাখা হয়েছে।

এসডিসির মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার জিনারুল ইসলামের কাছে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার সাথে এ ব্যবসা করার কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এমনকি একদিন পর লাইসেন্স সহ কাগজপত্র মেহেরপুর প্রতিদিন অফিসে পৌছে দেওয়ার কথা দিলেও তিনি তা দেননি।

এ ব্যপারে মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, এসডিসির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




যে প্রতিশ্রুতি পূরণ সম্ভব নয়, তা দেব না

ওই প্রতিশ্রুতি আমরা দেব না যেটা পালন করতে পারব না বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি এবং চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবু। গতকাল বুধবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের ১০টি স্থানে পথসভা করেন তিনি। এসময় বাবু খান এ কথা বলেন।

মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ওই প্রতিশ্রুতি আমরা দেব না যেটা পালন করতে পারব না। যেমন বেহেশতের টিকিট দেওয়া। এই প্রতিশ্রুতি আমরা দেব না। কারণ আমরা জানি, এখানে যারা নেতারা আছেন, আমিসহ আমার কর্মী-সমর্থক এবং আপনারাও অনেকেই জানেন এটা পালন করা সম্ভব না। আমরা ওই প্রতিশ্রুতি দেব না। আমরা কী প্রতিশ্রুতি দেব?… আপনার সন্তান লেখাপড়া শেষ করলে বেকার থাকবে না এই প্রতিশ্রুতি আমরা দেব। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দেব যে এখানে অনেক দিন ধরে হাসপাতাল হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে, তবে হয়নি। আপনাদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এখানে যাতে ৫০ শয্যার হাসপাতাল করা যায় সেই উদ্যোগ আমরা নেব। এছাড়া রাস্তা-ঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করব। আমরা কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়েও কাজ করব।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী আরও বলেন, যতগুলো কৃষি প্রধান জেলা আছে, তার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা অন্যতম। এখানে শুধু ধান, পাট, ভুট্টা, আখ এসব সাধারণ ফসলই হয় না; হয় ব্যতিক্রমী ফসলও। ফুলের চাষ হয়, ফলের চাষ হয়। পেয়ারা তো আমাদের কাছে পুরোনো বিষয়। এখন কমলা, মাল্টা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি এমনকি আঙুরেরও চাষ হচ্ছে। এটা সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনার ফল। অন্য কোনো জেলায় এভাবে হয় না। এটাকে আরও উন্নত করতে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি চুয়াডাঙ্গায় পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে, উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এসময় বিএনপির ৩১ দফার প্রসঙ্গ টেনে মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যা যা প্রয়োজন সবই বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। ভবিষ্যতে যদি এমন কোনো প্রয়োজনীয় বিষয় আসে যা ৩১ দফার মধ্যে নেই সেটিও যোগ করা হবে। বিএনপি জনগণের কথা ভাবে। জনগণের কথা ভাবার কারণেই আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েও কখনো পিছিয়ে যাননি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলী, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, সিনিয়র সহসভাপতি আক্তার হোসেন, সহসভাপতি আব্দার আলী, দর্শনা থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম যুদ্ধ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক আসলাম উদ্দীন, বেগমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আশাবুল হক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক, বিএনপি নেতা মো. জিল্লুর রহমান প্রমুখ।




দামুড়হুদায় দায়সারা গোছের প্রাণীসম্পদ মেলার উদ্বোধন

দামুড়হুদায় দায়সারা গোছের জাতীয় প্রাণীসম্পদ মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। “দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি প্রাণিসম্পদ হবে উন্নতি” এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে দামুড়হুদায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলা দায়সারা ভাবে উদ্বোধন করা হয়। মেলার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উদ্যোক্তা ও খামারিদের উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করা হলেও, উপজেলার বড় বড় খামারিদের কেউই মেলা সম্পর্কে অবগত নন।

উদ্বোধনী র‍্যালীতে অংশ নেন আয়োজক কমিটিসহ সরকারি কয়েকজন কর্মকর্তা। সেখানে খামারী ও উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আয়োজনে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খামারী, উদ্যোক্তা ও সচেতন মহল। এছাড়াও মেলার স্টলগুলো ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। গুটি কয়েকটি স্টলে রুগ্ন পশু-পাখি প্রদর্শন করা হয়, যা নিয়েও অতিথিদের মুখে নানা সমালোচনা শোনা গেছে।

গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল দামুড়হুদার বাস্তবায়নে এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রাণিসম্পদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্রের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. আ. হা. ম. শামীমুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। পুষ্টি ও দরিদ্র বিমোচনে এবং গ্রামীণ জীবিকায় এ খাতটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দামুড়হুদা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হারুনুর রশিদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার হ্যাপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিআরডিবি কর্মকর্তা লুৎফর নাহার, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক মহালদার, আইসিটি কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রদর্শনী দেখতে আসা অনেকেই বলেন, সত্যিকার অর্থে প্রাণিসম্পদ খাতকে উন্নত করতে হলে তৃণমূল পর্যায়ের খামারিদের যথাযথ মূল্যায়ন করা উচিত। তাদের অভিযোগ বছরে এক-দুই দিন মেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না; প্রকৃত ও সক্রিয় খামারিদের মূল্যায়ন করা হয় না।

কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের এক ভেড়া খামারী জানান, ৮/১০ বছর ধরে তিনি ভেড়া পালন করছেন এবং তার খামারে প্রায় ৫০টি ভেড়া রয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি সরকারি প্রাণিসম্পদের কোনো সেবা পাননি। পিপিআরসহ নানা রোগের টিকার জন্য নিজ খরচে বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “সরকারি কোনো সেবা পেলাম না, মেলা হলেও জানতে পারি না।”

হাউলী ইউনিয়নের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনকারী এক নারী খামারী বলেন, তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ছাগল পালন করছেন। বর্তমানে তার বাড়িতে ২৮টি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল আছে। কিন্তু কেউ কখনো খোঁজ নেয়নি। তিনি বলেন, “প্রাণিসম্পদ কী—তারা কী করে, আমি জানি না। ছাগলের পিপিআর টিকাও আমাকে নিজের টাকা দিয়ে সংগ্রহ করতে হয়।”

দামুড়হুদা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ বিন ফয়সাল বলেন, সরকার প্রতিটি খাতকে উন্নত করতে প্রচারণা ও সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এ মেলা সম্পর্কে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদেরও জানানো হয়নি। তিনি বলেন, “সরকারের উদ্দেশ্য প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর মাধ্যমে মানুষকে উন্নত জাতের পশুপাখি লালন-পালনে উদ্বুদ্ধ করা। কিন্তু দামুড়হুদায় তার ঠিক উল্টোটা দেখা গেছে।”

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র বলেন, “আমাকে শুধু অনুষ্ঠানের সভাপতি করা হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু আমার জানা নেই।”