মেহেরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফুলসুরাত মন্ডলের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফুলসুরাত মন্ডলকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে আমদহ পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

দাফন পূর্ববর্তী আনুষ্ঠানিকতায় মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খায়রুল ইসলাম জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত মরহুমের কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটি চৌকস দল মরহুমকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। রাষ্ট্রের পক্ষে সালাম গ্রহণ করেন ইউএনও মোঃ খায়রুল ইসলাম। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর, এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দাফন কার্যক্রমে অংশ নেন মেহেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

রবিবার ভোরে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফুলসুরাত মন্ডল মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।




মেহেরপুর সদর থানার ওসিকে ইউএনও এর বিদায় সংবর্ধনা

মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ খায়রুল ইসলামের পক্ষ থেকে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেছবাহ উদ্দিনকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।

রবিবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়।




মুজিবনগরে জুলাই যুব উন্নয়ন ক্লাবের উদ্যোগে ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় জুলাই যুব উন্নয়ন ক্লাবের আয়োজনে এবং তানিশা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সার্বিক সহযোগিতায় ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বাগোয়ান ইউনিয়নের ভবেরপাড়া গ্রামের মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং সুবিধা দেওয়া হয়।

ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন জুলাই যুব উন্নয়ন ক্লাবের সভাপতি ও এনসিপি’র জেলা যুগ্ম-সমন্বয়কারী আরিফ খান, ক্লাবের সেক্রেটারি ও এনসিপি’র উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম, এনসিপি জেলা কমিটির সদস্য লালচাঁদ, মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামসহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। তানিশা ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ টিম ক্যাম্পেইনের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

জুলাই যুব উন্নয়ন ক্লাবের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয় সময়ে রক্তের গ্রুপ জানা নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।




ঝিনাইদহে ছোট ভায়ের বটির আঘাতে বড় ভাই নিহত

পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ছোট ভাই জুয়েলের বটির আঘাতে বড় ভাই সোহেল (৪০) নিহত হয়েছে।

বরিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গান্না ইউনিয়নের বেতাই গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল এবং জুয়েল ওই গ্রামের শফি মন্ডলের ছেলে।

স্বজনদের কাছ থেকে জানাযায়, নিহত সোহেলের ছোট ভাই জুয়েল দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। তিনি দীঘদিন যে টাকা পাঠিয়েছেন তা বড় ভাই সংসার চালাতে ও বড়-ঘর করে খরচ করে ফেলেছেন। গত দুইমাস আগে ছোট ভাই দেশে ফিরে এসব হিসাব নিয়ে বড় ভায়ের সাথে বাগ-বিতন্ডে জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে ছোট ভাই পৃথক হয়ে টাকা পয়সার হিসাব চাইতে গেলে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

এসব নিয়ে রবিবার সকাল থেকে দুই ভায়ের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।

পরে বড় ভাই সোহেল বটি দিয়ে ছোট ভাইকে আঘাত করার উদ্দ্যেশে ছুড়ে মারলে ওই বটি তুলে ছোট ভাই জুয়েল বড় ভায়ের উদ্দেশ্যে ছুড়ে মারে তখন বড় ভায়ের ঘাড়ে লেগে বড় ভাই রক্তাক্ত জখম হয়।

পরে তাকে ঝিনাইদহ সদর হসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেণ।

এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ঘটনা শুনার সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়েছি। এটা পারিবারিক ঘটনা এজন্য প্রথমত কেউ বুঝতে পারেনি। মামলার আলোকে আসামী গ্রেপ্তারসহ তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।




মেহেরপুরের আমঝুপিতে যুব সমাজের মাঝে ভলিবল সামগ্রী বিতরণ

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের চাঁদবিল গ্রামের তেতুলতলা এলাকার যুব সমাজের মাঝে ভলিবল ও ভলিবল খেলার নেট উপহার প্রদান করেছে মেহেরপুর জাতীয় নাগরিক পার্টি। তরুণদের সুস্থ বিনোদন, দলগত চেতনা এবং ইতিবাচক চর্চা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, নিয়মিত খেলাধুলা শুধুই বিনোদন নয় এটি তরুণদের জীবনে শৃঙ্খলা, আত্মবিশ্বাস ও সঠিক পথের দিশা তৈরি করে। মাঠমুখী যুব সমাজ স্বাভাবিকভাবেই মাদক, অনলাইন জুয়া ও অন্যান্য ক্ষতিকর প্রবণতা থেকে দূরে থাকে।

তারা আরও বলেন, এ ধরনের সামাজিক উদ্যোগ তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি একটি সুস্থ, নিরাপদ ও সমন্বিত সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যুবকরাই আগামী দিনের শক্তি তাদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।




মেহেরপুর-১ আসনের জামায়াত এমপি প্রার্থী তাজউদ্দিন খানের গণসংযোগ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সুবিদপুর গ্রামে গণসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার বিকেল ৪টার দিকে সুবিদপুর গ্রামের প্রধান প্রধান সড়ক ও দোকানপাটে এ গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর-১ আসনের প্রার্থী তাজউদ্দিন খান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর শ্রমিক ফেডারেশনের জেলা সভাপতি আব্দুর রউফ মুকুল, মেহেরপুর সদর উপজেলা আমির সোহেল রানা, মেহেরপুর সদর উপজেলার সেক্রেটারি ও আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাব্বারুল ইসলাম মাস্টার, কুতুবপুর ইউনিয়নের তদাকারী মাওলানা জাবেরুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়নের আমির ইমদাদুল হক, সেক্রেটারি পারভেজ হুসাইনসহ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

গণসংযোগ কর্মসূচিতে আসন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সর্বাত্মক সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।




ঝিনাইদহে বসুন্ধরা শুভ সংঘের পরিচিতি সভা ও পিঠা উৎসব 

‘শুভ কাজে সবার পাশে’ এই শ্লোগানে ঝিনাইদহ বসুন্ধরা শুভসংঘের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি সভা ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৭ডিসেম্বর) বিকালে শহরের ফজর আলী গালর্স স্কুল এন্ড কলেজ মিলিনয়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা শুভসংঘের সভাপতি রেজাউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, আব্দুল মতিন, অধ্যক্ষ জয়া রাণী চন্দ, সিনিয়র সহ সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহানুর আলম, সহকারী অধ্যাপক (অব:) কে এম সালেহ প্রমূখ। এসময় আরও উপস্থিত চিলেন সহসভাপতি সরস্বতী সাহা, তাপস কুমার কুণ্ডু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ আহম্মেদ,দপ্তর সম্পাদক আল নাহিয়ান, নির্বাহী সদস্য খালিদ হাসান ও এখলাছুর রহমানসহ অন্যান্যরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কেয়া রাণী প্রামানিক।

অনুষ্ঠানে পরিচিতি পর্বের পরে আলোচনা সভা ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেন অতিতের ন্যায় আমাদের শ্লোগাণের সাথে সম্পর্ক রেখে আমাদের কাজ করতে হবে। শুভ কাজে সবাইকে পাশে নিয়ে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেণ তারা।




ঝিনাইদহে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উদযাপন

‘সুস্থ শহরের জন্য স্বাস্থ্যকর মাটি’- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস। রোববার সকালে সদর উপজেলার আলহাজ্ব মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এবং পিকেএসএফ-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আরআরএফ।

ইকড়া পরিবেশ ক্লাবের সভাপতি সবির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শারমিন রহমান এবং আলহাজ্ব মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা শাহিদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড আরইসিপি কর্মকর্তা বাপ্পী অধিকারী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে কলেজ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা মাটি সম্পদ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। চাষী পর্যায়ে জমি চাষের আগে মাটি পরীক্ষা করে জমির গুণগত মান নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী সার ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন তারা।

আলোচনা সভার শুরুতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।




ভূমিসেবার নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার কেন্দ্রে রয়েছে ভূমি। কৃষি, শিল্প, আবাসন ও অবকাঠামো প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভূমির সুবিন্যস্ত ব্যবহার জাতীয় অগ্রগতির অন্যতম শর্ত। ভূমি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়নও সামাজিক স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি। বাংলাদেশে ভূমি নিয়ে বিরোধও বেশি এর জন্য প্রয়োজন ভূমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। এ লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় হয়রানিমুক্ত, জনবান্ধব অটোমেটেড ভূমিসেবা নিশ্চিতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ভূমি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একটি সমন্বিত, Inter-operable ও ডাইনামিক ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে পুরো ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশনের রূপরেখা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

ভূমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় জনবান্ধব অটোমেটেড ভূমিসেবা নিশ্চিতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেম ২.১ চালুর মাধ্যমে ভূমিসেবায় হিউম্যান টাচ আরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে এবং ভূমিসেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপর নির্ভরতা অনেক কমে যাবে।

দ্বিতীয় প্রজন্মের অটোমেটেড নামজারি ও ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেম এবং খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ সরবরাহ সিস্টেম বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ভূমিসেবা আরও জনবান্ধব করেছে। land.gov.bd ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক ভূমি সংশ্লিষ্ট সকল সেবা একই প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন ও প্রোফাইল তৈরি করে single sign-onএর মাধ্যমে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, নামজারি, খতিয়ান বা পর্চা ও ম্যাপ প্রাপ্তির আবেদন এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমে নগদ অর্থ ছাড়া ফি পরিশোধ করে সহজেই দাখিলা, নামজারি খতিয়ান, খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি ও ম্যাপ সংগ্রহ করা যাচ্ছে। ডাক-বিভাগের মাধ্যমে খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ নাগরিকদের ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

দ্বিতীয় প্রজন্মের অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেমের ফলে নামজারির জন্য নাগরিকদের মাত্র একবার উপজেলা ভূমি অফিসে আসতে হবে মূল দলিল যাচাই ও শুনানির জন্য। এটাও করা হয়েছে ভূমি জালিয়াতি রোধ করার জন্য। নামজারি হওয়ার সাথে সাথে পূর্ববর্তী মালিকের খতিয়ান হতে জমি কর্তন হয়ে নূতন মালিকের খতিয়ানে চলে আসবে। এর ফলে তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে একই জমি দ্বিতীয়বার বা বারবার বিক্রয় করার সুযোগ বন্ধ হবে। এছাড়া নামজারির সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হোল্ডিং তৈরি হয়ে যাবে এবং ভূমি মালিক ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারবেন। হোল্ডিং তৈরির জন্য ভূমি মালিকদের আর ভূমি অফিসে ধর্ণা দিতে হবে না। এতে দুর্নীতি ও জন-হয়রানি অনেক কমে যাবে।

একই সাথে ভূমিসেবায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে “ভূমি” অ্যাপ, হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা। ভূমি অ্যাপ এর মাধ্যমে নাগরিক ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান ও দাখিলা সংগ্রহ, নামজারির ফি প্রদান, ডিসিআর ও খতিয়ান সংগ্রহ এবং খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি ও মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ করতে পারবেন ঘরে বসে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ভূমিসেবা ভূমি অ্যাপ এর মাধ্যমে প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

ভূমি অ্যাপ নিজে ব্যবহার করার পাশাপাশি জনগণকে ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় জনগণকে ঝামেলাহীন সেবা প্রদানে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি ভূমিসেবার জন্য নাগরিকদের সহজবোদ্ধ সফ্‌টওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। ভূমি সেবার ইন্টিগ্রেটেড মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের সময় সার্ভার নিরাপদ রাখা ও ডেটা সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। ফলে দিনশেষে আমরা পেপারলেস ভূমি ব্যবস্থাপনার স্বপ্ন দেখতে পারি।

ডিজিটাল যুগ আমাদের জীবনযাত্রা,সকল সেক্টরে কর্মপদ্ধতি এবং সেবাগ্রহণের পদ্ধতিকে আমূল বদলে দিয়েছে। কিন্তু এ পরিবর্তনের গতি ও সুবিধা সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছায়নি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা এখনো সীমিত। ফলে সরকারি সেবা গ্রহণ, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কাজ, অনলাইন লেনদেন কিংবা মৌলিক নিরাপত্তা বিষয়ে তারা পিছিয়ে পড়ছেন। এই অসচেতনতা কমানো রাষ্ট্র ও সমাজ উভয়েরই জরুরি দায়িত্ব। ভূমিসেবা সহায়তা কেন্দ্র নামে সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সারা দেশে ৮৪০ টি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং আরো করা হবে। ভূমি সেবা প্রাপ্তি সহজ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে এই সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এই কেন্দ্রের হতে নাগরিকরা অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, মিউটেশন, খতিয়ান ও জমির নকশা প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে পারে এবং ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে পারে।

ইতোমধ্যে ২য় প্রজন্মের ভূমিসেবা সিস্টেমের উপর প্রায় প্রাথমিকভাবে ৬০০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সারাদেশের সকল কর্মকর্তাদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য Training for Trainers (ToT)প্রায় শেষ পর্যায়ে। পাশাপাশি সারাদেশে জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে।ঢাকা মহানগর ও জেলার ১৯টি সার্কেল/উপজেলায় এবং নারায়নগঞ্জ জেলার ১টি সার্কেলে সফলভাবে পাইলটিং সম্পন্ন করে সারা দেশে (৩ পার্বত্য জেলা ব্যতীত) এই সেবা চালু করা হয়েছে।

ডিজিটাল সেবার পাশাপাশি আইন-বিধি-নীতিমালা সংস্কারের মাধ্যমে ভূমিসেবা সহজ ও জনবান্ধব করার কাজ চলমান আছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভূমি মন্ত্রণালয় বেশকিছু আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করেছে:ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিধিমালা ২০২৪ প্রণীত হয়েছে। এর মাধ্যমে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে প্রকৃত ভূমি মালিকদের ভূমি সুরক্ষায় ৬১ জেলায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভূমি আপীল বোর্ড বিধিমালা ২০২৫; হাটবাজার ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২৫। বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন উল্লেখযোগ্য আইন ও বিধিমালাসমূহের মধ্যে ভূমি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫; স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম-দখল বিধিমালা, ২০২৫; বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২৫; জলমহাল আইন, ২০২৫ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যন্ত্রের পিছনের মানুষটার মানসিকতা। সেই মানুষটার উন্নত মানসিকতাই নিশ্চিত করবে জনবান্ধব ভূমিসেবা। সারাদেশে ভূমিসেবা সিস্টেমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি করা এবং ভুল সংশোধনের জন্য ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর মাধ্যমে কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট ২০২৫ ফেনী জেলায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। বর্তমানে ৮টি জেলায় পাইলটিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। পর্যায়ক্রমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি এবং ভুল সংশোধনের এ কার্যক্রম সারা দেশে বাস্তবায়িত হবে। ডেটা এন্ট্রি সম্পন্ন হলে ভূমিসেবা সিস্টেমে আরও সহজ, জনবান্ধব ও স্বয়ংক্রিয় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইউএনডিপি-এর সহায়তায় ভূমিসেবা সিস্টেমে জয়পুরহাট জেলার শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এর নির্ভুল তথ্য সম্পন্ন করেছে।

ডিজিটাল সেবার পরিধি প্রতিনিয়ত বাড়লেও সচেতনতা ও দক্ষতার উন্নয়ন ততটা দ্রুত হচ্ছে না। ভূমি সেবার ক্ষেত্রে এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এসব সেবার প্রয়োজনীয়তা বুঝলেও অনেকেই জানেন না কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। ডিজিটাল রূপান্তরের প্রকৃত সফলতা তখনই আসবে যখন দেশের প্রতিটি মানুষ নিজে ব্যবহার করতে পারবে।

ডিজিটাল ভূমিসেবা কেবল স্লোগান নয় এটি নাগরিকের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার। তাই সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল বিষয়ে সচেতন ও দক্ষ করে তোলাই এখন সময়ের দাবি। পরিষেবা প্রদানের প্রতিটি ধাপলগইন থেকে আবেদন, পেমেন্ট থেকে সনদপ্রাপ্তিসবই হতে হবে সহজ, সংক্ষিপ্ত ও বোধগম্য। সহজবোদ্ধ ডিজিটাল সেবা হলো আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অপরিহার্য উপাদান।

স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সময়সাশ্রয় নিশ্চিত করতে সহজ, দ্রুত ও ব্যবহারবান্ধব সেবা গড়ে তুলতে হবে। তবেই ডিজিটাল ভূমিসেবা সত্যিকার অর্থে নাগরিকবান্ধব হবে।

লেখক: তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা, ভূমি মন্ত্রণালয়।




নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কুষ্টিয়া ২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেছেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

রবিবার সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুরে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম ভেড়ামারা এবং মিরপুর উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা শুধু একটি ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। এই সমস্যা সমাধানে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ফোরামগুলো সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। আমি তাদের পাশে আছি এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি।

সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

রাগীব রউফ চৌধুরী সমাজে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্রস্তাব ও কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন এবং ভবিষ্যতে সমন্বিতভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইকবাল খান, জেলা শাখার সদস্য সচিব কাউছার আজম, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ইশতিয়াক মাহমুদ, যুগ্ন আহবায়ক রাজিবুল ইসলাম,মাসুমা খাতুন, মাহির আলী, ভেড়ামারা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আসিফ হাসান,সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস, যুগ্ন আহবায়ক , যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম রওনক, জিনিয়া খাতুন, ফয়সাল আহমেদ রানা, সদস্য রুবেল আলম, ফারুক হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারা স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম, আইনি সহায়তা এবং পুনর্বাসনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে রাগীব রউফ চৌধুরীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা সহ সমাজে নারী ও শিশু অধিকার নিশ্চিত করনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।