আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গুজব

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন।

গত ৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়ন পাওয়া দেশের সব জেলার পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই নির্বাচন আমাদের নতুন বাংলাদেশের দরজা খুলে দেবে। কাজেই নতুন বাংলাদেশের যে জন্ম হবে, এখানে যারা (এসপি) উপস্থিত আছি তাদের ভূমিকা হলো ধাত্রীর ভূমিকা। আমরা যেন সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে সেই জন্মটা দিতে পারি।

নির্বাচনকালীন দায়িত্বপালন ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসপিদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিলো।

এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছিলেন নির্বাচন পরিদর্শন করতে বাইরের যারা পর্যবেক্ষক দল আসবে, তারা আমাদের খুঁত ধরার চেষ্টা করবে। আমাদের এটা হয়নি, ওইটা হলে ভালো হতো- বলবে। এবারের নির্বাচন হলো এমন নির্বাচন, তারা (পর্যবেক্ষক) স্মরণ করবে, বাংলাদেশের নির্বাচন আমরা দেখেছিলাম, এটা এমন। তারা নানা দেশে এটা বলবে। তারা একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে নিয়ে যাবে তাদের মাথায়।

তারা বারেবারে বলবে, এই নির্বাচনের মতো নির্বাচন আমরা কখনো দেখিনি। এখানে যে নির্বাচন আমরা দেখে গেলাম, এটা আমাদের একটি স্মরণীয় নির্বাচন। সেই ধরনের একটি নির্বাচন আমরা করে রেখে যেতে চাই। এটা সাধারণ নির্বাচন নয়। যে পাঁচ বছর পর পর একটি নির্বাচন হয়, দেশের সরকার পরিবর্তন হয়। এটা রুটিন একটা কাজ। এবারের নির্বাচনে যেটা বারবার আন্ডারলাইন করা দরকার, এটা গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। গণঅভ্যুত্থানে যারা শরিক হয়েছিল, আমরা যারা যুক্ত আছি, তাদের আদর্শ, স্বপ্ন বাস্তবায়ন আমরা এই নির্বাচনের মাধ্যমে করে যাবো। যে স্বপ্ন দেখার মাধ্যমে তোমরা আত্মত্যাগ করেছ, সেই স্বপ্নকে আমরা স্থায়ী রূপদান করতে যাচ্ছি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুরোদমে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করে বাস্তবায়ন শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। মোট কথা সমগ্র দেশ এখন নির্বাচনমুখী। এসব প্রস্তুতিসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বারবার দ্যার্থহীন ভাষায় বলার পরও কিছু কিছু মহল থেকে নির্বাচনের বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সম্প্রতি জরিপ পরিচালনাকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ডিজিটালি রাইট’ বলছে, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের সময় শারীরিক হুমকির পাশাপাশি ডিজিটাল হয়রানি বাড়ারও আশঙ্কা করছেন জরিপে অংশ নেয়া সাংবাদিকেরা। জার্নালিস্ট সেফটি ইন ২০২৬ ইলেকশন’ শিরোনামের এ গবেষণা ১৯টি জেলার ২০১ জন সাংবাদিকের ওপর জরিপ চালানো হয়েছিলো এবং ১০টি ‘ইনডেপথ’ সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিলো। এ জরিপে ৭৫ শতাংশ সাংবাদিক বলেছেন, তাদের বা তাদের সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপতথ‍্য বা ‘ডিসইনফরমেশন’ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি। উত্তরদাতাদের অর্ধেকেরও বেশি মনে করেন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে মানহানিকর প্রচারণাও চালানো হতে পারে। গবেষণায় উঠে এসেছে, বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমেরই এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন‍্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই।

নির্বাচনী মৌসুম সবসময় গুজব ও প্রোপাগান্ডার জন্য উর্বর ভূমি। অতীতে প্রার্থীদের নিয়ে ভুয়া খবর বা মনগড়া কেলেঙ্কারি ছড়ানো হয়েছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এধরনের অপতথ্য ছড়ানোর হচ্ছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন থাকতে হবে এবং জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই অনলাইন গুজব সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। আমাদের সবচেয়ে বড়ো ক্ষতি হলো আস্থার অবক্ষয়। যখন নাগরিকরা সত্য মিথ্যা আলাদা করতে পারে না, তখন তারা সত্য বা বৈধ সংবাদকেও সন্দেহের চোখে দেখে। ফলে শুরু হয় বিভ্রান্তি। ওইসব বিভ্রান্তি থেকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, নাগরিক মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমাদের দেশে ডিজিটাল লিটারেসি অনেক কম; তাই এআই সৃষ্ট কনটেন্টগুলো মানুষ সহজে বিশ্বাস করে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ পোস্টই এআই রিকমেন্ডশনে তৈরি।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজবের হিড়িক পড়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ কেউ সেসব মিথ্যা খণ্ডনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মিথ্যা যে গতিতে ছড়ায়, সেই গতিতে সত্যকে ছড়ানো সত্যিই কঠিন। ‘ফ্যাক্টচেক’ করা প্রতিষ্ঠানগুলোও জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় তথ্য যাচাই করে। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের কোনো তথ্য যাচাইয়ের দরকার হলে সেটি যাচাইয়ের সহজ কোনো উপায় অতীতে না থাকলেও বর্তমানে আছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে ছড়ানো অপতথ্য বা গুজব নির্ণয়ের জন্য প্রযুক্তির সাহায্যের বিকল্প নেই। তার আগে জানা দরকার নির্বাচন সংক্রান্ত গুজব কেন ছড়ানো হচ্ছে? আর কেনই বা ছড়াচ্ছে? একটি অসাধু চক্র পরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে দেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে নিতে বাধাগ্রস্ত করতে গুজব ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন রকম ফটোকার্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। সে সব ফটোকার্ডে নির্বচন নিয়ে নানারকম অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে। কিছু কিছু মিডিয়ার নামে ভুয়া ফটোকার্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এআই এর এই রেভুলেশনের পিরিয়ডে এমন জেনারেটেড ছবি নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে করা কাজ হরহামেশাই ঘটছে। তাই এআই জেনারেটেড ছবি কীভাবে শনাক্ত করা যায় তার কৌশলের নির্ভরযোগ্য উপায় হচ্ছে মেটা ডেটা বিশ্লেষণ। প্রতিটি ছবির সাধারণত কিছু প্রযুক্তিগত তথ্য থাকে। যাকে বলা হয় মেটা ডাটা। যেমন কবে, কখন, কোথায় কোন ডিভাইস দিয়ে ছবিটি তোলা হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য এখানে পাওয়া যায়। যে কোনো ছবির মেটা ডেটা বিশ্লেষণ করলেই অনেকটা ক্লিয়ার হওয়া যায়। এআই জেনারেটেড ছবিতে এমন তথ্য থাকে না। অনেক সময় কোন সফ্‌টওয়্যার দিয়ে ছবিটি তোলা হয়েছে তাও চলে আসে। wasit ai image detector, sightengine ai image detector, Photo-Me ও metadata2go -এর মতো ওয়েব সাইডগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই ছবির মেটা ডেটা বিশ্লেষণ করা সম্ভব। এছাড়াও মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও মেটা ডেটা বিশ্লেষণ করা সম্ভব। এনড্রয়েড ফোনের জন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে Photo Exit Editor Metadata -APPS টি ডাউনলোড করে এর মাধ্যমে ছবির বিস্তারিত জানা সম্ভব। আবার আইফোনের ক্ষেত্রে এক্সিট ভিউয়ের মাধ্যমে ছবি যাচাই করা সম্ভব। ছবি যাচাইয়ের আর একটি পদ্ধতি হলো রিভার সার্চ। এজন্য যে ছবিটির সত্যতা যাচাই করা হবে সেটি আবারও গুগল সার্চ করতে হবে। এআই জেনারেটেড ছবি হলে পালটা সার্চে সে ছবি কম দেখা যাবে। আবার নাও দেখা যেতে পারে। আবার আসল ছবি হলে অন্যান্য অথিন্টিক সোর্স বা ওয়েব সাইড পাওয়া যাবে। এর বাইরে এআই সনাক্ত করার কিছু টুলস রয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করে ছবি আসল না নকল সহজেই বের করা যায়। এসব এর বাইরে নিজের চোখ ও বিবেচনা বোধকে কাজে লাগাতে হবে। কোনো ছবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটু সময় নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে। ছবির হাতের আঙুলগুলো স্বাভাবিক আছে কি না? স্ক্রিন অতিরিক্ত নিখুঁত কি না? ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অতিরিক্ত ঘোলা কি না? এসব বিশ্লেষণ করে ছবির সত্যতা অনেকাংশে নিরূপণ করা সম্ভব।

আমাদের দেশে ফ্যাক্টচেকিংয়র কাজ অনেকেই করে থাকে। এআইভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং ওয়েবসাইট ‘খোঁজ’ এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী নিজেই যে-কোনো তথ্য যাচাই করে নিতে পারবেন। কোনো মানুষের সাহায্য লাগবে না। তথ্য যাচাইয়ের সম্পূর্ণ কাজটিই করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। খোঁজ-এ কোনো কিছু যাচাই করতে দেওয়া হলে প্রথমে এটি ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, নিউজ আর্কাইভ এবং মাল্টিমিডিয়া উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর উৎসগুলোর নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করে। প্রাসঙ্গিকতা ও ভাষাগত মিল পরীক্ষা করে টেক্সট এবং ছবি বিশ্লেষণ করে ফলাফল দেয়। নির্ভরযোগ্য উৎস উল্লেখ করে খোঁজ জানায় দাবিটি সত্য, বিভ্রান্তিকর, নাকি সম্পূর্ণ ভুল। ফলাফলের সঙ্গে একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ দেয় খোঁজ, সেখানে উল্লেখ থাকে কোন কোন উৎস থেকে তথ্য যাচাই করা হয়েছে। ব্যবহারকারী চাইলে নিজেও উৎসগুলোতে গিয়ে তথ্যটি ফের যাচাই করতে পারবেন। কোনো তথ্য যাচাই করতে না পারলেও খোঁজ সেটি জানিয়ে দেয়, কিন্তু ভুল তথ্য দেখায় না। খোঁজ বর্তমানে ওয়েবসাইটভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম। এটিকে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) হিসেবে আনার কাজ চলছে।

ভুল তথ্য চিহ্নিত করার জন্য যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে তার একটি হলো SIFT। এখানে S মানে হলো স্টপ; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনও খবর দেখামাত্র তাৎক্ষণিকভাবে তা শেয়ার করা যাবে না। এমনকি সেখানে কোনও মন্তব্যও করা যাবে না। I দিয়ে বুঝানো হয়েছে- ইনভেস্টিগেট দ্য সোর্স (উৎস যাচাই); একটি তথ্যের উৎস কী, এ প্রশ্ন নিজেকে প্রতিনিয়ত করতে হবে। ‘F দিয়ে বুঝানো হচ্ছে ফাইন্ড বেটার কাভারেজ; উপরের ধাপের মাধ্যমে বিশ্লেষণের পর যদি সোর্সের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে আরেকটু ভাবতে হবে। T মানে ট্রেস দ্য ক্লেইম টু ইটস অরিজিনাল কনটেক্সট। উপরের তিনটি ধাপ-ই অনুসরণ করার অর্থ হলো, আরও ভালো এবং নিখুঁত সংবাদের খোঁজ করতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তির এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সময়ে সত্য আর বিভ্রান্তির সীমারেখা আগের চেয়ে অনেক বেশি ঝাপসা হয়ে গেছে। তাই দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রতিটি তথ্য, ছবি ও দাবির পেছনে একবার হলেও প্রশ্ন তোলা জরুরি। যাচাই ছাড়া শেয়ার নয় এই সচেতন অভ্যাসই পারে গুজবের বিস্তার রুখে দিতে। প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার, এআইভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং টুলের সহায়তা এবং ব্যক্তিগত বিবেচনাবোধ একসঙ্গে কাজে লাগাতে পারলেই তথ্যের জগতে সত্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা, খাদ্য মন্ত্রণালয়




মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত

বাংলাদেশ তথ্য ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, মেহেরপুর শাখার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ তথ্য ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন (বিআইএইচআরএফ) মেহেরপুর শাখা বুধবার সকালে র‌্যালি ও সেমিনারের আয়োজন করে।

মেহেরপুর বিআইএইচআরএফের সভাপতি রফিকুল আলমের নেতৃত্বে শহরের কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের সামনে থেকে র‌্যালি বের করা হয় এবং র‌্যালি শেষে নজরুল স্কুলে একটি প্রাণবন্ত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

২০২৫ সালের এই দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল “মানবাধিকার, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য বিষয়।” এর মাধ্যমে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মানবাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং মানবাধিকার কীভাবে আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলে তা প্রদর্শনই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

বিআইএইচআরএফ মেহেরপুরের সভাপতি রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পরিচালক এম. এ. মুহিত মানবাধিকার বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য প্রদান করেন এবং মানবাধিকার কী তা ব্যাখ্যা করেন। উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন সানজিদা ইসলাম, প্রধান শিক্ষক নজরুল হাই স্কুল।

মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে কয়েকজন গরিব ছাত্রীকে শীতবস্ত্র ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।

পরিশেষে আলোচনা সভার সভাপতি বলেন, প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।

তিনি আরও বলেন, এ বছরের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী, যার লক্ষ্য মানবাধিকারের মূল্যবোধ পুনরুজ্জীবিত করা এবং মানুষকে মানবাধিকারকে জীবনের অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে উৎসাহিত করা। তিনি দৈনন্দিন জীবনে মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বানও জানান।




মেহেরপুরের সাবিত্রী, হিমসাগর আম ও কলাসহ ৭ পণ্যকে জিআই সনদ

মেহেরপুরের সাবিত্রী, হিমসাগর আম ও কলাসহ ৭ পণ্যকে জিআই সনদভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ পেল দেশের আরও সাতটি পণ্য। নতুনভাবে স্বীকৃতি পাওয়া পণ্যগুলো হলো- মেহেরপুরের সাবিত্রী মিষ্টি, হিমসাগর, কলা, নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি, ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি, কালীগঞ্জের তোয়ালে ও ফরিদপুরের পাট। এ নিয়ে বাংলাদেশে জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৬২টি।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই মেলাকে ঘিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের হাতে জিআই সনদ তুলে দেন শিল্পসচিব মো. ওবায়দুর রহমান। একই অনুষ্ঠানে জিআই পণ্য ব্যবহারে ‘জিআই ট্যাগ’ লোগোও উন্মোচন করা হয়। এখন থেকে জিআই স্বীকৃত পণ্যের ওপর এ লোগো ব্যবহার করতে পারবেন উদ্যোক্তারা।

এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই মেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছেন। মেলাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় ‘এসএমই শিল্প বিকাশে মেধাসম্পদের গুরুত্ব ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। এতে সভাপতিত্ব করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাকসুদা নূর।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধে শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘এসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে হলে মেধাসম্পদ সৃষ্টির পাশাপাশি এর সুরক্ষা অত্যন্ত জরুরি। উদ্যোক্তাদের মেধাসম্পদের বাণিজ্যিকীকরণ করতে হবে, তা না হলে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে না।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।




দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়কদের সাথে এমপি প্রার্থী খান বাবুর নির্বাচনী বৈঠক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবু দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়কদের সঙ্গে নির্বাচনী বৈঠক করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দর্শনা ডাকবাংলোর কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সমন্বয়কদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। দর্শনা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সমন্বয়কদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দায়িত্বও তাদের হাতে তুলে দেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবু।

সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ডাকবাংলো চত্বরে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজেদের এলাকায় সুস্থ, শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “নেতা-কর্মীরা কে কী করছেন, সব খবরই আমার কাছে রয়েছে। আমি দেখতে চাই, পৌর এলাকার সব নেতা-কর্মী মাঠে থেকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন কি না।”

তিনি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বজায় রেখে এখন ধানের শীষ প্রতীকের ভোটের লিফলেট বিতরণ করতে হবে। কেউ হুড়োহুড়ি করবেন না। সারিবদ্ধভাবে সিনিয়র নেতারা সামনে এবং অন্যরা পিছনে থেকে লিফলেট বিতরণ করবেন।

পরে তিনি দর্শনা পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দর্শনা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দর্শনা পৌর সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট, শ্রমিক দলের নেতা শফিকুল ইসলাম সাবু তরফদার, দর্শনা পৌর সমন্বয়ক ও সাবেক দর্শনা সরকারি কলেজের জিএস এনামুল হক শাহ মুকুল, সমন্বয়ক ইকবাল হোসেন, নাহারুল ইসলাম মাস্টার, প্রভাষক মশিউর রহমান, লুৎফর রহমান, জালাল হোসেন লিটনসহ ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যরা।




দামুড়হুদায় নবাগত ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা 

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে নবাগত সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, তরুণ ও উদ্যমী প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান সাহেল কে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৪টায় উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পেলেও তিনি এর আগে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সভায় উপজেলার সর্বত্র বিরাজমান নানা সমস্যা, সম্ভাবনা ও উন্নয়নচিত্র তুলে ধরেন সাংবাদিকরা। বিশেষ করে মাদক ও চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিতকরণ, দামুড়হুদা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যা, প্রধান সড়কের পাশে যত্রতত্র আবর্জনার স্তুপ (বিশেষত ডুগডুগি হাসপাতালের সামনে ও দর্শনা রেলগেট এলাকায়), কার্পাসডাঙ্গায় সহ উপজেলায় কমপক্ষে ২-৩ টি উপযুক্ত স্থানে ধানের হাট স্থাপন এবং উন্নয়নমূলক কাজের তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো, এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সাংবাদিকরা বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্য সাধারণ মানুষ জানতে না পারায় অনেক ইতিবাচক কাজ আড়ালেই রয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তথ্য সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মত দেন তারা।

সভায় ইউএনও উবায়দুর রহমান সাহেল বলেন, আমার দায়িত্বের প্রথম দিন থেকেই আমি চাই আপনাদের সাথে নিয়ে কাজ করতে। পরিবারে মূল্যবোধ না থাকলে সমাজের শৃঙ্খলা আসবেনা, এই মূল্যবোধকে ধরে রেখে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, সার, প্রাণী সম্পদ, সমাজসেবা, এসব বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে সেগুলো নিয়ে আমি কাজ করব।

তিনি আরও বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, আপনাদের মাধ্যমে আমি এই উপজেলার প্রকৃত চিত্র জানতে পারলাম। সমস্যার পাশাপাশি এখানে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সম্ভাবনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করবো। সরকারের নির্দেশনার ভেতরে থেকে যতটুকু করা সম্ভব আমি আন্তরিকভাবে করব। আমি কাজ করলে আপনারা আমাকে মনে রাখবেন। আগামী ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়।

নির্বাচনকে সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করে ইউএনও আরও বলেন আমার বদলি মূলত নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে। নির্বাচনের আগে ও পরে যেন সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে, এটা নিশ্চিত করতে চাই।

দামুড়হুদা উপজেলার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় নবাগত ইউএনও উবায়দুর রহমান সাহেল এর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ, সহসভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল হাসান তোতা, নির্বাহী সদস্য তাছির আহাম্মেদ, হাবিবুর রহমান হবি, আরিফুল ইসলাম মিলন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল বাবু, সহসভাপতি মোজাম্মেল শিশির। প্রেসক্লাব সদস্য শেখ হাতেম, জহিরুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন।

আরো উপস্থিত ছিলেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল হক পিপুল, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুমন, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আওয়াল হোসেন, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মামুন, সাংবাদিক কামরুজ্জামান যুদ্ধ প্রমূখ।




দামুড়হুদায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন

দামুড়হুদায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি, অদম্য নারীদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় “নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে প্রথমে পরিষদ চত্বর থেকে র‌্যালি বের হয়। পরবর্তীতে পরিষদের সভাকক্ষে অদম্য নারীদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে জাহানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএইচ তাসফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান, আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কামাল উদ্দিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হাসান, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিলিমা আক্তার হ্যাপী, সমবায় কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হক, একাডেমিক সুপারভাইজার রাফিজুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আব্দুল মান্নান, দামুড়হুদা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ধর্মীয় উপাসনালয়ের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুধী সমাজের ব্যক্তিবর্গ, রোভার স্কাউটের সদস্য এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা।

আলোচনা সভা শেষে অদম্য নারী পুরস্কার কার্যক্রমের আওতায় অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জন, সফল জননী, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন, নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবন সংগ্রামে জয়ী নারী এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখা এই ৫টি ক্যাটাগরিতে উপজেলার ৫ জন গর্বিত নারীকে ফুলের শুভেচ্ছা, ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী দিয়ে সংবর্ধনা ও পুরস্কৃত করা হয়।




আলমডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালন

“দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের ঐক্য, গড়বো আগামীর শুদ্ধতা” এবং “রুখতে দুর্নীতি, গড়বো দেশ হবে সোনার বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস ২০২৫ পালন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রোভার স্কাউট, এনজিওর সদস্যদের নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের ব্যানারসহ একটি র‌্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা চত্বরে মিলিত হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডা. আলহাজ্ব লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সহকারী অধ্যাপক একে এম ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার আশীষ কুমার বসু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, দুর্নীতি শুধু দেশ ও মানুষের ক্ষতি করে না, যে ব্যক্তি দুর্নীতি করে সেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু সরকারি কর্মকর্তা নয়, বর্তমানে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেউ নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করলেও সেটি দুর্নীতির মধ্যে পড়ে। তিনি আরও বলেন, শুধু আইনের ভয়ে নয়, নৈতিকতার জায়গা থেকেও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উদয় রহমান, ওসি তদন্ত আসগার আলী, হারদী এমএস জোহা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক একে এম ফারুক, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হক, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মামুন হোসেন, আইসিটি কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস, আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের প্রভাষক ড. মাহবুবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার ইমরুল হক।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইলিয়াস হোসেন, পল্লী উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন, এরশাদপুর একাডেমির প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক শামিম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার দে, আলমডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম, রোভার স্কাউটসের সদস্য এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সভা শুরুর আগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক।




আলমডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে “অদম্য নারী পুরস্কার” শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় আলমডাঙ্গায় অদম্য নারীদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

“নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি” এই প্রতিপাদ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলমডাঙ্গার নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব পান্না আকতারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশীষ কুমার বসু, সমাজসেবা অফিসার সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার হিরোজ কবির, তথ্য কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকসুরা জান্নাত।

উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার সেলিম রেজার উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মন্টু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হামিদুল ইসলাম আজম, নারী উদ্যোক্তা হেলেন আক্তার কামনা, নার্গিস খাতুন, জান্নাতুল ফেরদৌস, হোসনেয়ারা গোলাপি, বন্দনা দত্ত প্রমুখ।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য প্রতি বছরের মতো এবারও আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৫ নারীকে জয়ীতা সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী: বন্দনা দত্ত, সফল জননী: ফেরদৌসী খাতুন, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী: নার্গিস খাতুন, নির্যাতনের শিকার দুঃস্বপ্ন মুছে জীবনসংগ্রামী জয়ী নারী: হোসনেয়ারা, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানকারী: জান্নাতুল ফেরদৌস।




মুজিবনগরে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালন

“নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি” এই প্রতিপাদ্যে মুজিবনগরে আলোচনা সভা এবং অদম্য নারীদের পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস।

উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে মঙ্গলবার সকাল ১১টার সময় উপজেলা পরিষদ হলরুমে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

মুজিবনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক নয়নতারা নিশাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মামুন উদ্দিন আল আজাদ, মুজিবনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা গৌতম কুমার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক প্রফেসর বাকের আলী এবং মুজিবনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি মুন্সি ওমর ফারুক প্রিন্স।

আলোচনা সভা শেষে সমাজে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ‘অদম্য নারী’ ক্যাটাগরিতে ৫ জন নারীকে সম্মাননা স্মারক ও পুরস্কার দেওয়া হয়।

বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত অদম্য নারীরা হচ্ছেন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী: উপজেলার ভবেরপাড়া গ্রামের গাবু মন্ডল ও পাউমিলা মন্ডলের মেয়ে সন্ধ্যা মন্ডল। শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনকারী নারী: উপজেলার মোনাখালী গ্রামের রেজাউল মির ও ফুলমালা খাতুনের মেয়ে ঈশিতা পারভীন রিক্তা। সফল জননী নারী: উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের আলিমুদ্দিন মন্ডল ও জোবেদা খাতুনের মেয়ে রোকেয়া খাতুন। নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবনসংগ্রামে জয়ী নারী: উপজেলার ভবেরপাড়া গ্রামের বুধন মন্ডল ও লক্ষ্মী মন্ডলের মেয়ে ভেরুনিকা মন্ডল।

সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানকারী নারী: উপজেলার ভবেরপাড়া গ্রামের লিয়াকত আলী খান ও সনাতন বিবির মেয়ে রেহেনা খাতুন।
অদম্য নারীদের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁদের হাতে সম্মাননা স্মারক এবং পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।




হরিণাকুণ্ডুর নবগত নির্বাহী অফিসারের সাথে মতবিনিময় সভা

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসার দিদারুল আলমের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা মিলনায়তনে এসভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঈশিতা আক্তার, উপজেলা জামায়াতের আমীর বাবুল আক্তার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাইজাল হোসেন, উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক আমর বিন মারুফ জিতু, জামায়াতের সেক্রেটারী ইদ্রিস আলী, উপজেলা রিপোর্টাস ইউনিটের সভাপতি মখলেছুর রহমান লাড্ডু, প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুস সামাদ, সিনিয়র সাংবাদিক মাহবুব মুর্শেদ শাহীন, ইত্তেফাক প্রতিনিধি শাহানুর আলম, ফলসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. বজলুরর রহমান, কাপাশহাটীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত দৌলা, ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা তুষার, জোড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবু মিয়া, তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুনজুর রাশেদ, দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বসির উদ্দীন প্রমূখ। এসময় বক্তারা উপজেলার সমস্যা, বাল্যবিবাহ, মাদকের ভয়াবহতা, চুরি ডাকাতি ও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি সম্পর্কে তুলে ধরেণ। এছাড়া উপজেলার কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে বক্তাগণ বক্তব্য রাখেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন, মাদক ও বাল্যবিবাহ রোধসহ সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে সকলের সহযোগীতা কামনা করেণ।