ঝিনাইদহে জনবল নিয়োগে আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ

ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আয়োজনে আজ সোমবার সকালে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ।

এতে পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন, জেলা শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জিয়াবুল হকসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

পরে তাদের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবর পেশ করেন।




গ্রাম আদালত : স্থানীয় বিরোধের কার্যকর নিষ্পত্তি

গ্রামের প্রতিটি সাধারণ মানুষ নানা ধরনের দৈনন্দিন বিরোধ ও সমস্যার সম্মুখীন হয়। সেই সমস্যা যেমন ব্যক্তিগত সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ, গবাদিপশুর ক্ষতি, চুক্তি-দলিলের সমস্যা অথবা পারিবারিক সহিংসতার মতো অভিযোগ নিষ্পত্তি সাধারণ আদালতে দীর্ঘ সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ। এই সমস্যাগুলো দ্রুত ও সহজভাবে সমাধান করার উদ্দেশ্যে গ্রাম আদালত গঠিত হয়েছে। এটি এমন একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান যা ইউনিয়নের সীমিত এলাকায় সুনির্দিষ্ট ফৌজদাবি ও দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে গ্রামে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ আইনের আওতায় এসে সহজেই তাদের অধিকার আদায় করতে পারে। এই আদালতের কার্যক্রমের আইনগত ভিত্তি প্রবর্তিত হয়েছে গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ এবং পরবর্তীতে এর কার্যকারিতা আরও শক্তিশালী করতে গ্রাম আদালত সংশোধন আইন, ২০২৪ প্রণীত হয়েছে।

এই আইনের অধীনে গ্রাম আদালত দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে, স্থানীয় বিরোধ ও সমস্যার সমাধান করে এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য ন্যায্য ও সমতা ভিত্তিক আইনি সেবা প্রদান করে। এতে আদালতের জটিলতা কমে আসে, সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়। ফলে গ্রামের মানুষ ন্যায়বিচারের জন্য সহজেই সহায়তা পেতে সক্ষম হয়।

গ্রাম আদালতের মূল কাঠামোতে একজন চেয়ারম্যান এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক মনোনীত চারজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, মোট পাঁচজন। চেয়ারম্যান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্য বা নির্বাচিত ব্যক্তি হতে পারে যিনি আদালতের কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যদি ফৌজদারী বা দেওয়ানী মামলায় নারীর স্বার্থ বা শিশু বিষয় জড়িত থাকে তবে আদালতের গঠনে নিশ্চিতভাবে একজন নারী সদস্যকে মনোনয়ন প্রদান করতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে নারী ও শিশুদের স্বার্থের প্রতি যথাযথ সংবেদনশীলতা বজায় থাকবে।

তবে কোনো কারণে সদস্য মনোনয়ন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না হলে, আদালত নির্দিষ্ট সদস্যদের ছাড়াই কার্যক্রম বৈধভাবে চালাতে সক্ষম। অর্থাৎ, আদালতের কার্যক্রম স্থগিত হবে না, বরং স্থানীয় বিরোধ ও বিতর্ক দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে বিচার কার্যক্রম যথাযথভাবে চালানো সম্ভব। এই কাঠামো নিশ্চিত করে যে, গ্রাম আদালত দ্রুত, সহজ ও সমন্বিত বিচার সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং গ্রামের মানুষ দ্রুত তাদের আইনি অধিকার আদায়ে সহায়তা পাবে।

গ্রাম আদালত স্থানীয় বিরোধ ও বিতর্ক দ্রুত ও সহজভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য নির্দিষ্ট ক্ষমতা রাখে। গ্রাম আদালত ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে গ্রামের অল্পমূল্যের সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ ও সাধারণ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ক্ষমতা রাখে। এর আওতায় আসে চুরি, মারামারি, আঘাত, ভয়ভীতি প্রদর্শন, অবৈধ জনসমাবেশ এবং অন্যের সম্পত্তি ক্ষতি বা দখল সংক্রান্ত বিষয়। এছাড়া, গবাদিপশুর ক্ষতি বা চুরি সংক্রান্ত ঘটনা, যেগুলোর মূল্য সীমিত সেসব এই আদালতে বিচার করা হয়। গ্রাম আদালত অল্পমূল্যের অর্থ বা সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রতারণা, জালিয়াতি, চুক্তিভঙ্গ এবং ক্ষতির জন্য মামলা দেখার ক্ষমতাও রাখে। এছাড়া, এসব অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা সহায়তা প্রদানের বিষয়ও আদালতের বিচারযোগ্যতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে, গ্রাম আদালত চুক্তি, রশিদ বা অন্যান্য দলিলের ভিত্তিতে প্রাপ্য অর্থ আদায়ের মামলা, অস্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা উহার মূল্য আদায়ের মামলা এবং কৃষি শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি বা ব্যক্তিগত অধিকারভুক্তদের বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা পরিচালনা করতে সক্ষম। তবে আদালতের এখতিয়ার সীমিত, যা অনুযায়ী দাবিকৃত অর্থ বা সম্পত্তির মূল্য সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে হবে। এই সীমাবদ্ধতা নিশ্চিত করে যে গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের ছোটো ও মাঝারি মামলার দ্রুত সমাধান পেতে পারবে যেখানে ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিতর্ক সহজভাবে এবং প্রথাগত জটিলতা ছাড়াই নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

গ্রামের একজন ব্যক্তি যদি গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করতে চায়, তবে সে সরাসরি তার ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম আদালতে আবেদন করতে হবে। আদালত অভিযোগ বা দাবি নথিভুক্তকরণের মাধ্যমে মামলা রেজিস্ট্রেশন করবে এবং প্রয়োজনীয় বিবরণ লিপিবদ্ধ করবে। এই প্রক্রিয়ার সময় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, গ্রাম আদালতে কোনো পক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে না। সকল মামলা নিজ উদ্যোগে বা প্রাথমিকভাবে বিচারকদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। এর ফলে আদালতের কার্যক্রম সহজ, দ্রুত এবং কম খরচে সম্পন্ন হয় যা সাধারণ গ্রামের মানুষের জন্য বিচারপ্রাপ্তি আরও সহজলভ্য করে তোলে।

গ্রাম আদালতে বিচার প্রক্রিয়া মূলত উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটি দ্বারা পরিচালিত হয়। চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে, সদস্যদের সমান ভোট হলে চেয়ারম্যান নির্ণায়ক ভোট প্রদান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। আদালতে মামলার উভয় পক্ষ সমানভাবে বিবেচনায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারে। এছাড়া শিশু, মহিলা বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি যদি আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের পক্ষে স্বাক্ষ্য প্রদান করতে অক্ষম হন তবে উক্ত ব্যক্তির পক্ষ থেকে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলা পরিচালনা করতে পারেন। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে, গ্রাম আদালতের বিচার সমতাপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপটে গ্রহণযোগ্য।

গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকরকরণ প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। আদালত যে কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ, সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা দখল প্রত্যার্পণের নির্দেশ প্রদান করলে, উক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি অর্থ প্রদান বা সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পন্ন না হয়, তবে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া, মামলার পক্ষগণ যদি মনে করেন যে গ্রাম আদালত যথাযথ বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা সংশ্লিষ্ট সহকারী জজ বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আপীল করতে পারেন, যেখানে পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত বাতিল বা পরিবর্তন বা গ্রাম আদালতে ফেরত পাঠানোর সুযোগ থাকে। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে, গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকর, যথাযথ ও ন্যায়সংগত।

গ্রাম আদালতের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা ও সতর্কতা মানা আবশ্যক। আদালত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় দলিল বা অপ্রকাশিত রেকর্ড প্রদানের জন্য কোনো ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে পারবে না। একইভাবে, ফৌজদারী মামলার তদন্তে পুলিশ যদি যুক্ত থাকে, তারা তদন্ত বন্ধ করতে পারবে না। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী ফৌজদারী আদালত মামলাটি গ্রাম আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারে। আদালতের কার্যক্রমে অনধিকার ক্রিয়াকলাপ বা অপমান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জরিমানা আরোপ করা হয় এবং জরিমানা আদায় না হলে আদালত সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে কারাদণ্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এসব বিধান নিশ্চিত করে যে, আদালতের সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমের প্রতি সম্মান রক্ষা করা হয় এবং বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়।

গ্রাম আদালতের সুবিধা নাগরিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এটি দ্রুত, সহজ এবং সুলভ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে, ফলে সাধারণ মানুষ কম সময় ও খরচে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। স্থানীয় সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধান হওয়ার কারণে এলাকার সামাজিক শান্তি বজায় থাকে। পাশাপাশি, আদালত নারীর এবং শিশুর স্বার্থ সংরক্ষণে বিশেষ মনোযোগ দেয়, ফলে নারী বা শিশু বিষয়ক মামলায় নারী সদস্য মনোনয়ন বাধ্যতামূলক। ফলে গ্রাম আদালত সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহজলভ্য বিচারব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।

লেখক: সহকারী তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর




গাংনীতে যুবদল নেতা মনি আটক, অস্ত্র উদ্ধার

মেহেরপুরের গাংনীতে মনিরুজ্জামান মনি (৩৮) কে একটি অবৈধ ওয়ান শুটারগান অস্ত্রসহ আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গাংনী ক্যাম্পের সদস্যরা। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ২ টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত একটানা অভিযানের মাধ্যমে তাকে আটক করা হয়।

আটক মনি গাংনী পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে।

গাংনী সেনা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মনিরুজ্জামান মনির বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির ছাদে তল্লাশি চালিয়ে বালিভর্তি একটি বালতির ভিতরে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় পরিত্যক্ত একটি ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করা হয়। পরে ওই অস্ত্রসহ মনিকে আটক করা হয়।

উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও আটক মনির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থার জন্য গাংনী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, আটক মনির বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




জীবননগরে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার ১১তম প্রতিষ্ঠাবাষিকী পালিত

“সততায় আমাদের শক্তি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে দৈনিক ‘সময়ের সমীকরণ’ পত্রিকার ১১তম প্রতিষ্ঠাবাষিকী পালন করা হয়েছে।

গতকাল রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টার সময় জীবননগর অফিসের আয়োজনে জীবননগরের হোটেল থ্রি স্টারে কেক কাটা ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এ প্রতিষ্ঠাবাষিকী পালন করা হয়। দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার জীবননগর ব্যুরো জাহিদ বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম.আর. বাবু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার সহকারী বার্তা প্রধান ফৈরদৌস ওয়াহিদ, জীবননগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, সাংবাদিক মাজেদুর রহমান লিটন, আকিমুল ইসলাম, এম.আই. মুকুল, একেএম মুজাহিদ, মুতাসিন বিল্লাহ, দৈনিক ‘সময়ের সমীকরণ’ পত্রিকার হাসদহ প্রতিনিধি রিপন হোসেন, উথলী প্রতিনিধি রাসেল হোসেন মুন্না, মহেশপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম, জীবননগর শহর প্রতিনিধি তুহিনুজ্জামান প্রমুখ।

উক্ত অনুষ্ঠানটি সার্বিকভাবে পরিচালনা করেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার জীবননগর অফিসের সহকারী ব্যুরো প্রধান মিঠুন মাহমুদ।




দর্শনায় বাবু খানের পক্ষে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দর্শনায় ধানের শীষ মার্কায় বাবু খানের পক্ষে গণসংযোগ ও বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনা পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ড, দক্ষিনচাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডে এ গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এ নির্বাচনী প্রচারণায় দর্শনা পৌর বিএনপির অন্যতম সমন্বয়ক, এনামুল হক শাহ মুকুলের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। এনামুল হক শাহ মুকুল বলেন, “চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে জননেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু ভাইকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত করলে স্বাধীনতার পরবর্তি অবহেলিত এ অঞ্চলে সামনের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এবং এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার উঠবে। এই চুয়াডাঙ্গা-২ এলাকা আশপাশের জেলার মধ্যে অন্যতম উন্নত এলাকা হয়ে উঠবে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশে সৃষ্টি হবে উন্নয়নের নবদিগন্ত। তাই সবাই আসুন দলে, দলে, বিএনপির পতাকা তলে।”

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর বিএনপি সমন্বয়ক ইকবাল হোসেন, দর্শনা পৌর বিএনপি সমন্বয়ক মালেক মন্ডল এবং দর্শনা পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।




জীবননগরে ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশের সতর্কতামূলক প্রচার

চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় সাম্প্রতিক সড়ক ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ প্রশাসন সতর্কতামূলক প্রচার চালিয়েছে।

গতকাল রোববার জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস জীবননগর বাসস্ট্যান্ড ও হাসদাহ এলাকায় বিভিন্ন পরিবহন কাউন্টারে চালক, সুপারভাইজার ও পরিবহন শ্রমিকদের হাতে নিরাপত্তাবিষয়ক লিফলেট বিতরণ করেন।

লিফলেট বিতরণকালে ওসি রাতে চলাচলের সময় নিরাপদ রুট ব্যবহারের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি অপরিচিত যাত্রী বা সন্দেহজনক ব্যক্তির বিষয়ে সতর্ক থাকা, চলন্ত যানবাহনে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা, জরুরি প্রয়োজনে পুলিশকে দ্রুত অবহিত করা এবং নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়া অন্য কোথাও বাস না থামানোর নির্দেশনা প্রদান করেন।

ওসি মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি সড়কে চলাচলকারী সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে। ছোট একটি সতর্কতা বড় ধরনের অপরাধ ঠেকাতে পারে। তিনি পরিবহন সংশ্লিষ্টদের যেকোনো সন্দেহজনক তথ্য দ্রুত পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানান।




আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সদস্য সচিব সাইফুদ্দিন আলম কনক আর নেই

আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সদস্য সচিব সাইফুদ্দিন আলম কনক (৪৮) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌর এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

পরিবার জানায়, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে হার্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কনক। ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও পুরোপুরি সুস্থ হননি। রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। কিছুক্ষণ পরই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সাইফুদ্দিন আলম কনক আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার কোর্টপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে তিনি স্টেশনপাড়ায় পরিবারসহ বসবাস করছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন।

তার মৃত্যুতে জেলা ও উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফ শোক প্রকাশ করে বলেন, “বাল্যকাল থেকেই তিনি বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তার মৃত্যুতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।”

এছাড়া গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আকতার হোসেন জোয়ার্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল রহমান রোকন, পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুল হক পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওলটুসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।




আলমডাঙ্গায় শিকারীর হাত থেকে ১৮টি দেশি ঘুঘু উদ্ধার 

আলমডাঙ্গায় শিকারীদের হাত থেকে ১৮টি দেশি প্রজাতির ঘুঘু পাখি উদ্ধার করেছে আলমডাঙ্গা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ যুব সংস্থা। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার হাড়গাড়ি এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংস্থার সদস্যরা অভিযান চালিয়ে পাখিগুলো উদ্ধার করেন।

গতকাল রবিবার সকাল আনুমানিক ১০টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘুঘু পাখিগুলোকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়। অবমুক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশীষ কুমার বসু।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সদস্য সাঈদ এম হিরোন, উপদেষ্টা সাদ্দাম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক আল রাব্বি, কোষাধ্যক্ষ আতিকুজ্জামান মেরাজ, সদস্য স্বাধীন আহমেদ, নাসিম, সিয়াম, রবিন, রাব্বি, তীব্র, বাদশা ও অন্যান্য সক্রিয় সদস্যরা।

স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, যশোর এলাকার একটি শিকারী চক্র বাঁশের লাঠির মাথায় ঝুলন্ত খাঁচায় মা ঘুঘুকে আটক করে রাখে। মা ঘুঘুর করুণ ডাক শুনে অন্য ঘুঘু পাখি খাঁচার ভেতরে প্রবেশ করলেই আটকা পড়ে যায়। শনিবার দুপুরে তিনজন শিকারী একই কৌশলে ঘুঘু শিকার করছিল।

হাড়গাড়ি গ্রামের সচেতন নাগরিক জাহিদুল ইসলামের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংস্থার সদস্যরা শিকারীদের ধরতে গেলে শিকারীরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। ধাওয়া দিলে দুইজন শিকারী ১৮টি ঘুঘু পাখি ও শিকারের সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে যায়। অপর শিকারী তার ধরা ঘুঘু ও সরঞ্জাম নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

উদ্ধার করা ঘুঘু পাখিগুলোকে সংস্থার সদস্যরা রাতভর সুরক্ষায় রেখে পরদিন উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবমুক্ত করেন।

সংস্থার সদস্যরা বলেন, “বন্যপ্রাণী আমাদের পরিবেশের অংশ। শিকারী চক্রকে থামাতে সমাজের প্রতিটি মানুষের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।”




দামুড়হুদায় মহিলা দলের নির্বাচনী সমাবেশ

দামুড়হুদায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।গতকাল রবিবার বিকেলে উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে কয়েক হাজার নারী কর্মী অংশগ্রহণ করেন।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল দামুড়হুদা উপজেলা শাখার আয়োজনে সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

দামুড়হুদা উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ছালমা জাহান পারুলের সভাপতিত্বে নির্বাচনী মহিলা সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রওফুল নাহার রীনা, সহ-সভাপতি শেফালি খাতুন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির এবং সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু।

মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথি বলেন, “বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার মধ্যে নারীর উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের মূল জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারীসমাজ যাতে পিছিয়ে না পড়ে, সেজন্য দেশনায়ক তারেক রহমান ৩১ দফা প্রণয়ন করেছেন। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে নারীদের মাধ্যমে পরিবারের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে।”

তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে বিএনপি কাউকে বেহেশতের টিকিট দিতে পারবে না; তবে জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। তাছাড়া চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নে যা যা করণীয়, বিএনপি তা-ও নিশ্চিত করবে।”




জীবননগরে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে জীবননগর উপজেলায় নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ১১টায় উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজিত সমাবেশে নারীর সচেতনতা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাতৃস্বাস্থ্য এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য কর্মকর্তা শিল্পী মন্ডল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সজীব পাল, সরকারি শিক্ষক রবিউল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষক প্রতিনিধি ফারুক হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকবৃন্দ।

সমাবেশের বক্তব্যে জেলা তথ্য কর্মকর্তা শিল্পী মন্ডল বলেন, “মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে, কিন্তু বাল্যবিবাহের কারণে তাদের শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে যায়। এ এলাকায় বাল্যবিবাহ এখনো ব্যাপক হারে প্রচলিত। নিরাপদ মাতৃস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে নর্মাল ডেলিভারি অবশ্যই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে করানো উচিত।”

সভাপতির বক্তব্যে ইসমাইল হোসেন বলেন, “পুরুষ সমাবেশের পরিবর্তে নারী সমাবেশ আয়োজনের কারণ হলো মায়েদের সন্তান প্রতিপালনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে। সন্তান সবচেয়ে বেশি সময় তার মায়ের কাছেই থাকে। তাই দায়িত্ববান ও সচেতন মা হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নানা উদ্যোগ রয়েছে, কিন্তু এসব বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় বাধা বাল্যবিবাহ।”

তিনি বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে তা প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি নারীদের স্বাবলম্বী করতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির কথাও জানান।

পরিশেষে সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।