মেহেরপুরের হরিরামপুর বিলে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার

মেহেরপুর সদর উপজেলার বাজিতপুর সীমান্তসংলগ্ন হরিরামপুর বিলে এক মাদকাসক্ত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম মিঠু ওরফে বাবু (৪০), তিনি মেহেরপুর পৌর শহরের পেয়াদাপাড়ার শুকুর আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে মিঠু মাদক ক্রয়ের উদ্দেশ্যে হরিরামপুর সীমান্ত এলাকায় গেলে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের টহল দল তাকে ধাওয়া করে। ওই সময় প্রাণ বাঁচাতে তিনি হরিরামপুর বিলে লাফ দেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় কৃষকরা তার লাশ ভেসে থাকতে দেখে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করে মেহেরপুর জেনারের হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, “যেহেতু ঘটনাটি সীমান্ত এলাকায় ঘটেছে, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় এবং স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।”

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন জানান, “মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তি একজন মাদকসেবী ছিল। তার মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”




গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা বিএনপির বিজয় মিছিল

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা বিএনপির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য বিজয়র্ যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে শহরের কলেজ মোড় থেকের্ যালিটি শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌর পাথর গেটে গিয়ে শেষ হয়।

এসময় নেতাকর্মীদের হাতে ছিল ব্যানার-ফেস্টুন, আর ঢাক-ঢোলের তালে তালে এগিয়ে যায় বিজয়ের মিছিল।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টনের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়েজ মোহাম্মদ, সদস্য আলমগীর খান ছাতু, হাফিজুর রহমান হাপি, ইলিয়াস হোসেন, আনছারুল হক, ওমর ফারুক লিটন, আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, মীর ফারুক হোসেনসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীরার্ যালিতে অংশগ্রহণ করেন।




মেহেরপুরে মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে বিএনপির গণমিছিল ও সমাবেশ

জুলাই-আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়া এবং জনতার বিজয়কে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গণমিছিল ও সমাবেশ করেছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি।

গতকাল বুধবার বিকালে মিছিলটি শহরের পন্ডেরঘাট থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক ঘুরে কাথুলী সড়কে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলটির নেতৃত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ। মিছিলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর বিশ^াস, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আহসান হাবীব সোনা, জেলা যুবদলের সভাপতি জাহিদুল হক জাহিদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাভেদ সেনজির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




প্রতি প্রকল্প থেকে পিআইও’র কমিশন ১৫ শতাংশ!( ২য় পর্ব)

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলাতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে টিআর, কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনসুর রহমানের বিরুদ্ধে।

প্রতিটি প্রকল্পে ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ কমিশন নিয়ে পিআইসি সভাপতিদের দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অধিকাংশ পিআইসিরা।

এ ধরণের অভিযোগের ভিত্তিতে মেহেরপুর প্রতিদিনের অনুসন্ধান টিম গত এক সপ্তাহ ধরে গাংনী উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নের প্রায় ২০টি প্রকল্প পরিদর্শন করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমান পেয়েছে। ১ম পর্বে ডিসি ইকোপার্কের ৬টি প্রজেক্টের বরাদ্দের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে গাংনী উপজেলার মটমুড়া, রাইপুর, সাহারবাটি, কাথুলী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শন, স্থানীয় জনগণ ও পিআইসি সভাপতির সাথে কথা বলে পিআইও মনসুর রহমানের আরও অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে।

কাবিটা-কাবিখা প্রকল্পের ১ম ও ২য় কিস্তির কাজ চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এবং ৩য় কিস্তির কাজ চলতি বছরের ১৫ মে’র মধ্যে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু গেল অর্থবছরে কোন কাজ না করে ১ম ও ২য় কিস্তির পুরোটাকা উত্তোলন করেছেন। তবে ৩য় কিস্তির টাকা উত্তোলন করার চেষ্টা করলেও ইউএনও’র হস্তক্ষেপে ৬৭টি প্রকল্পের টাকা পিআইসি সভাপতিদের নামে পে অর্ডার করে রেখেছেন।

গাংনী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কাবিটাতে ৭৮টি প্রকল্পের অনুকুলে ২ কোটি ৪০ লাখ ৫৩৭২ টাকা, টিআরের ১২৫টি প্রকল্পের অনুকুলে ২ কোটি ১৬ লাখ ৬৭২৪ টাকা এবং কাবিখার ৪৭টি প্রকল্পের অনুকুলে ১৩৬ মেট্রিক টন চাল এবং ১৩৬ মেট্রিক টন গম, যার বাজার মূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে গাংনী উপজেলায় তিন প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার চেংগারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ৭.৭৭৩৪ মেট্রিক টন গম যা টাকার পরিমাণে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, কোন মাটি এখানে দেওয়া হয়নি। অথবা এ প্রকল্প সম্পর্কে তিনি কিছু জানেনও না।

কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের রোজীবালার বাড়ি হতে রশিদের বাড়ি পর্যন্ত এইচবিবিকরণ ও মাটি দ্বারা মেরামত বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। কিন্তু কোন কাজ হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় আব্দুল নামের এক ব্যক্তি। প্রকল্পের খইরুদ্দিনের বাড়ি থেকে ভৈরব নদী পর্যন্ত এইচবিবিকরণসহ মাটি ভরাট বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা।

এ দুটিসহ তিনটি প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য জিনারুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে একটা কাজ এখনো শুরু হয়নি। তবে বাকি ২ টা কাজ হয়েছে। কাথুলী ইউনিয়নের সব কাজে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ১৩ শতাংশ টাকা কেটে নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কমিশন কাটা নিয়ে কাথুলী ইউনিয়নের মেম্বারদের সাথে পিআইও’র সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। তবে অন্যান্য ইউনিয়নের ১৫ শতাংশ ও তার বেশি কেটেছে বলে শুনেছি।

৩য় কিস্তিতে গাড়াবাড়িয়া হলদেপাড়া ঈদগাহে ওয়াল প্লাস্টার, রংকরণ ও টাইলসের কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা। তবে প্রকল্পের সভাপতি আকতারুজ্জামান বলেন, এখনো স্টিমেট হাতে পায়নি বলে কাজ বন্ধ আছে।

কাথুলী গ্রামের ঈদগাহ পাড়ার সবাফতের বাড়ির সামনের পুকুরের প্যালাসাইডিং নির্মাণ ও মাটি ভরাটের কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ লাখ টাকা। প্যালাসাইডিংয়ের কাজ হলেও মাটি ভরাট করা হয়নি।

মটমুড়া ইউনিয়নের হোগলবাড়িয়া গ্রামের শামসুলের বাড়ি হতে কবরস্থান মুখী রাস্তা এইচবিবি সহ মাটি ভরাট কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ টাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ ১৫০ ফুট থেকে ১৮০ ফুট হেয়ারিং এর কাজ হয়েছে তিন নম্বর ইট দিয়ে, এবং রাস্তার দুই পাশে মাটির কাজ থাকলেও বাইরে থেকে কোন মাটি দেওয়া হয়নি, আশেপাশের মাটি কেটে ভরাট করা হয়েছে। তবে এ প্রকল্পের সভাপতি আইজুদ্দিন মেম্বার কাজ হয়েছে বলে জানালেও কতটাকার কাজ সেটা জানাতে পারেননি।

রায়পুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সালদহ গ্রামের ফজলুর বাড়ি থেকে ঠান্ডুর বাড়ি অভিমুখী এইচবিবিকরণ, প্যালাসাইডিং ও মাটি ভরাট ৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কোন কাজ করা হয়নি।

প্রকল্পের সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান সারজিদুল ইসলাম বলেন, পিআইও অতি চালাক মানুষ। সময় শেষের দিতে ইউএনও স্যারকে বলে টাকাটা তুলে নিয়েছে যাতে ফেরৎ না যায়। সেই টাকা আমরা পেয়েছি ২৬ তারিখে। যে কারণে কাজ করতে পারিনি। তবে টাকা দেওয়ার আগে প্রতিটি কাজের জন্য ১৪ পার্সেন্ট করে কেটে নিয়েছে। বৃষ্টি ছাড়লেই কাজটা শুরু করবো।

মটমুড়া ইউনিয়নের মটমুড়া গ্রামের ঈদগাঁ পাড়া ঈদগাঁয়ের ব্রিকসাইডিং নির্মাণ ও মাটির কাজ বরাদ্দ ১২ মেট্রিক টন চাউল, ওই হিসেবে ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এ প্রকল্পে শুধুমাত্র প্যালাসাইডিংয়ের কাজ হয়েছে মাটি দেওয়া হয়নি।

তবে, এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনসুর রহমানের সাথে। কাজ হয়নি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করতে পারবো।’

কাজ না করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুনের মধ্যে টাকা তোলার নিয়ম আছে তাই ২৬ জুন টাকা উত্তোলন করেছি। ৩য় কিস্তির ৬৭টি প্রকল্পের বিলের চেকও দেখান তিনি। তবে ১ম ও ২য় কিস্তির বিল উত্তোলনের কথা বলতে তিনি পিআইসির মাধ্যমে বিল উত্তোলন করা হয়েছে।” তবে ১৫ শতাংশ কমিশন নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আনোয়ার হোসেন মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি মে মাসে জয়েন করেছি। তার আগে এ প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় হচ্ছে এমন কিছু অভিযোগ পেয়ে আমি পিআইওকে বলেছি পুরো কাজ বুঝে নেওয়া হবে। ৩য় কিস্তির টাকা উত্তোলন করে পে-অডার করে রাখার নির্দেশে আমি দিয়েছি এবং পিআইসি সভাপতিদের বলেছি সরকারি টাকা তছরুপাত করা যাবে না। তবে, প্রকল্পের কাজ স্টিমেট অনুযায়ী বুঝে নেওয়া হবে। বুঝে না পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আগামী পর্বে পড়ুন পিআইসি মনসুর রহমান এই প্রকল্পগুলো থেকে কমিশন নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে কি করেছেন, কাকে কাকে কমিশনের ভাগ দিতে হয়েছে। এমনকি পিআইও কিছু পিআইসিকে নাম মাত্র সভাপতি কেন পুরো কাজ নিজেই করছেন। এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি টাকা এভাবে লুটপাট করায় সংশ্ষ্টি কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত পিআইও’র বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন তাও দেখতেও চাই সাধারণ মানুষ। আমরা এমন কিছু মানুষের বক্তব্যও তুলে ধরার চেষ্টা করবো।




দর্শনায় বিশেষ শিক্ষা প্রতিবন্ধীদের স্কুল পরিদর্শন

দর্শনায় বিশেষ শিক্ষা প্রতিবন্ধীদের স্কুল পরিদর্শন করলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিবন্ধী সাহায্য বিষয়ক সেবা সংস্থার কর্মকর্তা আনােয়ারুল ইসলাম। গতকাল বুধবার বেলা ১১ টার দিকে তিনি দর্শনা বিশেষ শিক্ষা প্রতিবন্ধীদের স্কুল পরিদর্শন করেন।

এ সময় তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানায়, বিশেষ শিক্ষা প্রতিবন্ধীদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকা শিরিনা আক্তার, বিদ্যালয়ের সভাপতি আঃ কাদের ও শিক্ষকবৃন্দরা। বিশেষ অতিথী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, দর্শনা পৌর বিএনপি’র প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট। সেবা সংস্থার কর্মকর্তা আনােয়ারুল ইসলাম বিদ্যালয়টি ঘুরে ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়টি চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আমি বিদ্যালয়টির কাগজপত্র সব পাঠিয়ে দিয়েছি খুব তাড়াতাড়ি সরকারি তালিকাভুক্ত হবে বলে আশা করছি।

এ স্কুলে প্রায় ২ শতাধিক প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। এ স্কুলের মান অনেক ভালো। তিনি সন্তুষ্ঠ প্রকাশ করে চলে যান।




গাংনীতে মাদককান্ডে এক ব্যাক্তির জেল ও জরিমানা

মাদক সেবন ও সংরক্ষণ করার অপরাধে গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামে আবু সাঈদ (৪৫) নামের এক মাদকাসক্তকে ২০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন।

গতকাল বুধবার বিকালে তেরাইল গ্রামে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে এই দন্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আবু সাঈদ তেরাইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। এর আগে মেহেরপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম অভিযান চালিয়ে ১ পুরিয়া গাঁজাসহ আবু সাঈদকে আটক করেন।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৪২(১) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অর্থদন্ড ও কারাদন্ড প্রদান করা হয়। বিকালেই তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়।




গাংনীতে বিএনপি’র বিজয় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত

গণ-অভ্যুত্থান দিবসের বছরপূর্তি উপলক্ষে মেহেরপুরের গাংনীতে বিশাল বিজয় শোভাযাত্রা ও পথসভা করেছে উপজেলা ও পৌর বিএনপি।

গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় গাংনী উপজেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বড় বাজারে গিয়ে শেষ হয়।

সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনের নির্দেশে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে একত্রিত হয় মূল শোভাযাত্রায়।

শোভাযাত্রা শেষে বড়বাজার এলাকায় সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান বুলবুল, বিএনপি নেতা

মোস্তাফিজুর রহমান, পৌর বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি সুজন মাহমুদ, আবুল কালাম আজাদ, সিরাজুল ইসলাম, ইয়ামিন বাবলু প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।




মেহেরপুরে জেলা বিএনপির দুই পক্ষের বিজয় মিছিলে উত্তেজনা

মেহেরপুরে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা বিএনপির দুটি পৃথক গ্রুপের উদ্যোগে বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) বিকালে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি শহরের কলেজ মোড় থেকে বের হয়। অন্যদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল পন্টের ঘাট থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় কাথুলি বাসস্ট্যান্ডে।

দুটি মিছিল একযোগে শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে এক পর্যায়ে তারা মহিলা কলেজ রোড এলাকায় এসে পরস্পরের মুখোমুখি পড়ে যায়। এতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বড় কোনো সংঘাত এড়ানো সম্ভব হয়।




কোটচাঁদপুরে সাপের কামড়ে ১ সপ্তাহে ৩ জনের মৃত্যু

অতি বর্ষণে চারিদিকে থই থই পানি, ভরে গেছে গেড়ে গর্ত, মাটির নিচের সাপ আশ্রয়ের খোঁজে চলে আসছে মানুষের বসত ঘরে। বাড়ছে সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা। অসচেতনতা আর অবহেলায় হচ্ছে মৃত্যু।

গত ১ সপ্তাহে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা তিনজন রোগীকেই এন্টিভেনম না দিয়ে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে রেফার্ড করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। রেফার্ডকৃত তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দুইজনই শিশু। ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম সাপ আতঙ্ক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোটচাঁদপুর বলুহর মাঠপাড়ার মাহতাব উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা বেগম (৪৫) গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

একই রাত্রে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার পাকা গ্রামের আসিবুল হকের মেয়ে শিশু রশ্মি খাতুন (৫) কে সাপে কামড়ে দেয়। তাঁকেও কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে দ্রুত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই তার মৃত্যু হয়।

গত সোমবার রাতে সুতি দুর্গাপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের দুই বছর বয়সী মেয়ে শিশু সাদিয়া খাতুন রাতের খাবার শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকার সময় তাকে সাপে কামড় দেয়। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই তিনটি মৃত্যুই ঘটেছে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসার পর রেফার্ড বা চিকিৎসার অভাবে। অথচ এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনাম মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশরাফুল ইসলাম। এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এন্টিভেনাম দেওয়ার পর শতকরা দশ থেকে পনেরো ভাগ রোগীর শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
তখন প্রয়োজন হয় আইসিইউ বা নিবিড় পর্যবেক্ষণের। কিন্তু আমাদের এখানে সে সুবিধা না থাকায় জটিলতা এড়াতে রোগী রেফার্ড করে দিতে হয়।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমানুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনম আছে। তাহলে ১ সপ্তাহে ৩ জন মারা গেলো তাদের এন্টিভেনম দেয়া হয়েছিলো কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ফোনে কিছু বলা যাবে না। হাসপাতালে এসে তথ্য নিতে হবে বলেই ফোন কেটে দেন।




গাংনীতে গণছিনতাই ও পৃথক মামলায় গ্রেফতার-৮

মেহেরপুরের গাংনী-ধানখোলা সড়কে গণছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সন্দেহভাজন ৫ জন এবং অপর একটি ছিনতাই মামলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে আরও ৩ জনসহ মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এবং গাংনী থানা পুলিশের একাধিক টিম পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে এই আটজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন—গাংনী উপজেলার মাঠপাড়া এলাকার কামরুজ্জামান শিহাব, সাকিব হোসেন, মুরছালিন, সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের মিকাইল হোসেন এবং জাহিদ হোসেন। অপরদিকে গাংনীর তেরাইল গ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হন রুবেল হোসেন, ফিরোজ হোসেন এবং সোহাগ হোসেন।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, গ্রেফতারকৃতরা সকলেই গাংনী-ধানখোলা সড়কের গণছিনতাই এবং পৃথক আরেকটি ছিনতাই মামলার সন্দেহভাজন আসামি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯ টার সময় গাংনী-ধানখোলা রাস্তায় গণছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।