অবৈধভাবে ভৈরব নদের মাটি বিক্রির মচ্ছব, প্রশাসন নিরব

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের বাবুপুরে অবৈধভাবে ভৈরব নদের খননকৃত মাটি বিক্রির ধুম পড়েছে। রাতের আধারে এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ড্রাম ট্রাকে করে ওই মাটি বিক্রি করা হচ্ছে এলাকার ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

তবে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে মাটি বিক্রির কোন নিলাম হয়নি। যারা মাটি কাটছেন তারা অবৈধভাবে এ মাটি বিক্রি করছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মাটি বিক্রির কিছু ভিডিও ও ছবি শেয়ার করা হলে বিষয়টি নতুন ভাবে আলোচনায় আসে। তারা জেলা প্রশাসন ও উপজেলার প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগও তোলেন।

গত শনিবার সকালে সরেজমিনে মহাজনপুর ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, প্রায় বছর খানেক ধরে ভৈরব খননের এ মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগের আমলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলুর লোকজন এ মাটি বিক্রি করতেন। ৫ আগষ্টের পর বিএনপির কিছু প্রভাবশালী এ মাটি বিক্রি করছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করছেন। ক্ষমতার পালাবদল হয়ে মাটি বিক্রির লোকজনও পালাবদল হয়েছে, তবে মাটি বিক্রি থামেনি। তবে দিনের বেলায় তাদের দেখা মেলেনি, তাদের সাথে যোগাযোগ করাও যায়নি। স্থানীয়দের চোখে মুখে ক্ষোভ ও অসন্তোষ থাকলেও তারা ভয়ে কথা বলতে চাননা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, লাল্টু, গবাসহ বেশ কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ী ক্ষমতার দাপটে রাতের আধাঁরে মাটি কেটে ইটভাটাসহ এবং বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন। ভৈরব নদের মহাজনপুর তীরে মাটির স্তুপ দিয়ে পাড় তৈরি হলেও অপরদিকে বাবুপুরে প্রায় এক কিলোমিটার জমির মাটি কেটে নিয়ে ভৈরব নদের পাশে ওয়াক ওয়ে পর্যন্ত সমতল করা হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে ওই এলাকা ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

মশিউর রহমানের মালিকনাধীন এসএমবি ইটভাটায় দেখা যায়, যে পরিমান মাটির স্তুপ করা হয়েছে, সে মাটি কয়েকবছর ইট প্রস্তুতের জন্য ব্যবহার করা যাবে।

এ ব্যাপারে মুজিবনগর উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি, বিএনপি নেতা ও এসএমবি ইটাভাটার মালিক মশিউর রহমান বলেন, ‘এলাকার লাল্টু ও গবা নামের কয়েকজন দালাল মাটি কেটে বিক্রি করছেন। আমাদের ইউনিয়নে ৬টি ইটভাটা। কিন্তু মাটিগুলো বাইরে চলে গেলে আমাদের ইটভাটা চালানো কঠিন হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার সময় সাবেক চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু টেণ্ডার করে মাটি বিক্রির ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই সময় আমরা মাটি কিনে রেখেছি। নতুন করে কোন টেণ্ডার না হওয়ায় ওই মাটি আমরা কিনতে পারছি না। কিন্তু মাটি ঠিকই ওই দালালরা কেটে বাইরে বিক্রি করছে। এ বিষয়ে ইউএনও সাহেবকে বলেছি মাটি টেণ্ডারের ব্যবস্থা করতে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন এবং গত শুক্রবারে তিনি ওই এলাকা পরিদর্শনও করেছেন’।

মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হান্নান প্রধান বলেন, মহাজনপুর এলাকায় ভৈরব নদ খননের ফলে নদের মাটি ভৈরবের পাশে রাখা হয়েছে। সে মাটি স্থানীয় কৃষকদের জমিতেও রাখা হয়েছে। তবে ওই এলাকায় কোন কৃষক কিংবা কেউই মাটি ক্রয়ের জন্য বা সরিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন করেননি। এমনকি এখনো পর্যন্ত মাটি বিক্রির কোন নিলাম হয়নি।

মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার আমি টিম নিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। মাটি বিক্রির চিত্র দেখতে পাই। ওখানে গিয়ে জানতে পারি কিছু অসাধু লোক রাতে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেখানে ইনফর্মার লাগিয়ে রেখেছি। রাতে হলেও আমরা তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ওই সকল মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।




মেহেরপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র কমিটি ঘোষণা

মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র আওতাধীন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৮টায় জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে এই আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এবং জেলা বিএনপি’র সদস্য আনছার-উল-হক।

জেলা নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত এ কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা সিরাজুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আসাদুজ্জামান জনি। এছাড়া তিন জন সহ-সভাপতি মনোনীত হন— আব্দুর রফিক, আব্দুল হামিদ এবং আজিজুল হক।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন:- সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: কামরুজ্জামান কামরু, যুগ্ম সম্পাদক: হারুন-অর-রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক: আসলাম আলী, সদস্য: জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, আলমগীর হোসেন, নাজিম উদ্দিন। দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কাজী মিজান মেনন জানান, “খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।”

উক্ত সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ নবগঠিত কমিটির প্রতি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সকলকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন।




দামুড়হুদায় জমিজমা সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার-২

দামুড়হুদায় জমিজমা সংক্রান্ত মারামারি মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ। আজ রবিবার সকালে ও বিকালে তাদের দুইজনকে আলাদা ভাবে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আরিফুল দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। এরই প্রেক্ষিতে দুইজন এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো জয়রামপুর গাতিরপাড়ার মৃত লালু মন্ডল এর ছেলে মোঃ আজিত (৪৫) এবং আজিত এর ছেলে মোঃ নাঈম হোসেন (১৯)।

জানাগেছে, গত ০৮/০৫/২০২৫ইং তারিখে জয়রামপুর মালিথা পাড়ার মোঃ আক্তার হোসেন (৫৫) এর ছেলে আরিফুল মোটরসাইকেল যোগে তার পিতাকে নিয়ে জয়রামপুর ইস্টিশন থেকে বাড়ি ফিরছিলো। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের মোটরসাইকেল রোধ করে এবং পিতা পুত্রকে এলো পাতাড়ি মাথাই কুপিয়ে মারাত্মক যখন করে।

যার ফলে আক্তার হোসেন এখন রাজশাহী মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গতকাল লাইফ সাপোর্টে আক্তার হোসেন এর মাথায় একটা বড় ধরনের অপারেশন করা হয়েছে। শুধু তাইনা তার শরীরে নাকি এসিড মারা হয়েছে। যার কারণে যেখানে এসিড লেগেছে সেখানে পুড়ে গেছে। শরীরে এসিডের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আরিফুল নিজেও আক্রমণের স্বীকার হয়ে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছে।

এ ঘটনাই ভুক্তভোগী আরিফুল দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি এজাহাদার করে। বিষয়টি আমলে নিয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ দুইজন এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেফতার করে।

এবিষয়ে দামুড়হুদা মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ের মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল একজনকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং আজ একজনকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।




গাংনীতে অস্ত্র, বোমা ও গাঁজা উদ্ধার, ডাকাতদের পলায়ন

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চোখতোলা মাঠে অভিযান চালিয়ে ১টি পিস্তল, ৫টি ককটেল বোমা ও ৪০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।

রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেহেরপুর সেনা ক্যাম্পের মেজর ফারহান এবং লেফটেন্যান্ট মিনহাজের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান পরিচালনা করে।

সেনা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনা ক্যাম্প জানতে পারে, গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের চোখতলা মাঠে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ককটেল বোমা প্রস্তুত করছিল একদল দুষ্কৃতীকারী। এমন সংবাদের পেয়ে সেনাবাহিনীর অভিযানিক দলটি সেখানে অভিযান চালায়। অভিযান দলের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতিকারীরা ২টি মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় তল্লাশি করে ১টি পিস্তল, ৫টি ককটেল বোমা এবং ৪০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

সেনা ক্যাম্প থেকে জানানো হয়, দুষ্কৃতিকারীরা ওই স্থানে ডাকাতি ও ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উদ্ধারকৃত পিস্তল, বিস্ফোরক ও গাঁজা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়।




দামুড়হুদায় সমাবেশ সফল করতে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত

তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে দামুড়হুদায় যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ৩টায় দামুড়হুদা উপজেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আগামী ১৬ মে “শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা” শীর্ষক সেমিনার এবং ১৭ মে “তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ” সফল করার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিবলু, শফিকুল ইসলাম পিটু এবং খালিদ মাহমুদ মিল্টন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সভাপতি শরীফুজ্জামান সিজার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শরিফুল আলম বিলাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হাসান টুটুল, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান মমিন মালিতা।

উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল ওয়াহেদ, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মন্টু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর আবুল হাসেম।

এছাড়াও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান বাচ্চু, সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান মিল্টন, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইকরামুল হক, সদস্য সচিব জাকির হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের, যুগ্ম আহ্বায়ক রকিবুল হাসান তোতা, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আফজালুল রহমান সবুজ, সদস্য সচিব এম. ডি. কে. সুলতান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইনজামামুল হকসহ উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্তভাবে সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান আলী।




দর্শনায় বিপুল পরিমাণ চোলাই ও বিদেশি মদসহ গ্রেফতার ১

দর্শনা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে ৬৭ লিটার চোলাই (বাংলা) মদ ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৮ বোতল বিদেশি (ফরেন) লিকারসহ আকাশ (২৩) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আকাশ দর্শনার কেরু কোম্পানির দারোয়ান লাইনপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল মোতালেবের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীরের নেতৃত্বে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অংশ নেন দর্শনা থানার চৌকস কর্মকর্তা এসআই মাসুদুর রহমান ও সঙ্গীয় ফোর্স। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা আনোয়ারপুর কেরু কোম্পানির স্টাফ মেসের পেছনে দারোয়ান লাইনের সামনে অব্যবহৃত একটি বাথরুমে অভিযান চালান।

সেখানে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৮ বোতল বিদেশি মদ এবং ৬৭ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে আকাশকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় আকাশসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দর্শনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।




ভারতে যাওয়ার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের নেতা গোলাম মতুর্জা গ্রেপ্তার

ভারতে যাওয়ার সময় দর্শনা চেকপোস্টে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মতুর্জাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (১১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে দর্শনা থানা হেফাজতে পাঠায়।

গ্রেপ্তার গোলাম মর্তুজা (৭২) চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার মিনাজপুর গ্রামের মৃত মেহের আলীর ছেলে। তিনি জীবননগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মতুর্জাকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।




ঝিনাইদহে হামলা ও গ্রেফতার আতংকে বাড়িছাড়া অর্ধশত পরিবার

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় চরম আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার। ফাঁকা হয়ে যাওয়া এসব বাড়িতে চলছে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি সংঘর্ষে দু’জন নিহত হওয়ার পর থেকে নিহতদের অনুসারীরা প্রতিশোধের নামে নিরীহ মানুষের বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে। সংঘবদ্ধভাবে ভাঙচুর করা হচ্ছে আসবাবপত্র, লুটে নেওয়া হচ্ছে ঘরের মালামাল। এমনকি গৃহপালিত পশু-গরু, ছাগল পর্যন্ত জোর করে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এই তাণ্ডবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওই গ্রামের সামাজিক নেতা আলিম উদ্দিন, নায়েব আলী ও শহিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল সুরী। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হামলায় অংশ নিচ্ছেন মজিদ সর্দার, মস্ত সর্দার, রুবেল, মারুফ, আতর বিশ্বাস, সবেদ আলী, বিল্লাল মোল্লা, মাজেদ বিশ্বাস, সাইদুল বিশ্বাস, মিহির বিশ্বাস, সামারুল বিশ্বাস, সোহান, বল্টু, সাহেব, শিমুল, টিকারী গ্রামের শিপন, রিয়াজ ওরফে চন্নু এবং বনকুমড়া এলাকার ইমরোজ।

ভুক্তভোগীদের দাবি, বর্তমানে গ্রামের পরিস্থিতি ভয়াবহ রকমের অস্থিতিশীল। বহু পরিবার নারীদের সন্তানসহ নিরাপত্তাহীনতার কারণে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
একাধিক পরিবার অভিযোগ করেছে, যারা নিরীহ তারা আজও হামলা ও গ্রেফতারের আতঙ্কে বাড়িতে ফিরতে পারছে না। অথচ

প্রতিপক্ষরা লুটপাট, তাণ্ডব চালালেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখনো পুলিশ মোতায়েন করা আছে। কোন প্রকার লুটপাট বা ভাংচুর রোধে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।




অল্প উপকরণ দিয়ে বাড়িতেই বানান আইসক্রিম

ভ্যাপসা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। বাইরে বেরোলেই ঠান্ডা পানীয় ছাড়া কিছুই মুখে রুচছে না। বাইরে থেকে ফিরেই হাত চলে যাচ্ছে ফ্রিজের দিকে। মাঝেমাঝে আইসক্রিমও অর্ডার করে ফেলছেন। তবে বাইরে থেকে অর্ডার না করে বরং বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন আইসক্রিম। কম উপকরণ দিয়ে অল্প সময়ে বানিয়ে নিন চকোলেট, পিনাট, বাটার আইসক্রিম। চলুন জেনে নেই এর প্রণালীর বিষয়ে।

উপকরণ:

১. ৪টি পাকা কলা

২. আধকাপ পিনাট বাটার

৩. আধ কাপ কোকো পাউডার

৪. ১ টেবিল চামচ চকোলেট প্রোটিন পাউডার

৫. আধ চা চামচ খাঁটি ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট

৬ পরিমাণ মতো লবণ

৭. সামান্য দুধ

এবার উপরের সব উপকরণগুলো ব্লেন্ডারে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মসৃণ হয়েছে কি না একবার দেখে নিন। কলা ঠিকভাবে না মিশলে সামান্য দুধ দিয়ে আবার মেশান। এরপর মিশ্রণটি ১ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন। তার পর জমে গেলে আইসক্রিম স্কুপ দিয়ে খেতে পারেন।

সূত্র: যুগান্তর




সীমান্তের জমিতে কৃষকদের না যাবার জন্য মাইকিং

মেহেরপুর জেলার সীমান্তে কৃষকদের জমিতে ফসল তোলার ক্ষেত্রে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা প্রদান করছে। ওপারে নিজ ভূখন্ডে বিএসএফের প্রহরা ও টহল জোরদার করেছে।

ভারত ভুখন্ডে কাঁটাতারের বেড়ার এপারে ১৫০ গজের মধ্যে থাকা ভারতীয় কৃষকদের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ বন্ধ, ভারতীয় কৃষকদের জমির আইল কাটাতেও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিএসএফ মাইকিং করছে।

বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীও (বিজিবি) সীমান্তে না যাবার জন্য নিজ দেশের কৃষকদের আহবান জানিয়েছেন মসজিদের সাউন্ড সিস্টেমে। যা উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে কৃষকদের জন্য উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

মেহেরপুর সীমান্তে কাঁটাতারের এপারে ১৫০ গজের মধ্যে ভারতীয় জমিতে বাংলাদেশী কৃষকরা বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছে বহুবছর ধরে। কাঁটাতারের বেড়া দুই বাংলার মানুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে পারলেও ভাঙ্গেনি তাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন।

ভারতীয়রা তাদের অনাবাদি জমি বাংলাদেশি কৃষকদের লিজ দিয়ে চাষাবাদ করতে সহায়তা করে আসছেন। গত মঙ্গলবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বোমা হামলার পর ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। যার অংশ হিসেবে সীমান্তের কাটাতারের বেড়ার এপারে ১৫০ গজের মধ্যে ভারতীয় কৃষকদের ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের কৃষকদের জমিতে প্রবেশে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। যা তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে প্রভাব ফেলছে।

গতকাল সরেজমিনে বেলা ১০টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার ঝাঁঝা সীমান্তে গিয়ে দেখা যায় সীমান্ত এলাকায় চাষাবাদের কৃষকদের চোখে মুখে আতংকের ছাপ।

ঝাঁঝাঁ ক্যাম্প এলাকার সামাদ আলী জানান, ওপারে বিএসএস ক্যাম্প থেকে মাইকিং করা হয়েছে সীমান্তের এপারে ভারতের ১৫০ মিটারের জমিতে বাংলাদেশের কোন কৃষককে না যাওয়ার জন্য। ফলে কেউ জমিতে চাষাবাদে যেতে সাহস পাচ্ছে না। একই গ্রামের দাউদ হোসেন জানান- সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডে ভারত অংশের কাাঁটাতারের বেড়ার এপারে ১৫০ মিটারের মধ্যে ভারতের কৃষকদের প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমি এপারের কৃষকরা বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে। প্রতিবিঘা জমিবাবদ বার্ষিক ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বর্গা নেয়া হতো। বিএসএফের নিষেধাজ্ঞার পর আবাদি জমির ফসল তুলতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে।

দুলাল শেখ নামের এক কৃষক বলেন, বর্গা নেয়া দেড়বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছিলাম। লুকিয়ে লুকিয়ে ভুট্টা সংগ্রহ করেছি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীর ভয়ে ওইসব জমিতে চাষাবাদের আগ্রহ হারিয়েছি।

ঝাঁঝা ক্যাম্পের কমান্ডার হারুন অর রশিদ বোন তথ্য দিতে অপরাগত প্রকাশ করলেও তিনি জানান গ্রামের মসজিদ থেকে কৃষকদের বর্গা নেয়া জমিতে না যাবার জন্য আহবান করা হচ্ছে প্রতিদিন।

মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী ইচাখালী সীমান্তে ৫৬টি দাগে ৭৪ বিঘা ৫ কাটা জমির মালিক ২৮ জন মালিক বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে বেশীর ভাগই বুড়িপোতা ইউনিয়নের গোভিপুর গ্রামের বাসিন্দা। এই জমিগুলোর মালিকানা নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও এখনও কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি। এসব জমি দেশভাগের সময় ভারতের অংশে চলে যায়। তবে বাংলাদেশী কৃষকরা সেগুলো বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিষেধাজ্ঞার কারণে কৃষকরা তাদের জমিতে ফসল তুলতে পারছেন না। আবার ভারতের কৃষকরাও ওই জমিতে আসতে পারছে না। কারণ বাংলাদেশের অনেক জমি অতিক্রম করে ওই ৫৬ দাগের জমিতে তাদের আসতে হবে।

মেহেরপুর জেলার তিনদিক ভারত সীমান্ত বেষ্টিত। সীমান্তের মোটদৈর্ঘ প্রায় ৮৯ কিলোমিটার। এই সীমান্তটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সংযুক্ত।

মেহেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী তিনটি উপজেলা মুজিবনগর, গাংনী ও মেহেরপুর সদর। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নবীননগর, শিকারপুর, তাজপুর, ভাদুপাড়া, নবচন্দ্রপুর, লালবাজার, করিমপুরসহ অনেকগুলো গ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত।

এই সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। মেহেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী কাঁটাতারের বেড়ার মধ্যে ৭৪টি সীমান্ত গেট রয়েছে। যেগুলো দিয়ে প্রতিদিন অন্তত সহস্রাধিক ভারতীয় কৃষক কৃষিকাজ করতে কাঁটাতারের বেড়ার এপারে নিজ জমিতে আসেন। অজানা আতংকে তারাও এপারে তেমন আসছে না। যারা আসছে তারাও বিএসএফের প্রহরায়।
ভারতের নিকটবর্তী বিজিবির ইচাখালী সীমান্তে গিয়ে দেখা যায়-ইচাখালী বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হারুন অর রশিদ দুজন সিপাহী নিয়ে সীমান্তের ভারতের নবচন্দ্রপুর বিএসএস ক্যাম্পর নিকটবর্তী বাংলাদেশ অংশে একটি বাগানে অবস্থান করছেন। তিনি নোম্যান্স ল্যান্ডে যেতে বারণ করেন।

তিনি বলেন, ওপারে ভারতের নবচন্দ্রপুর বিএসএফ ক্যাম্প সদস্যরা অস্ত্র তাক করে অবস্থান করছেন। আমরা গ্রামের মসজিদ থেকে প্রতিদিনই মাইকিং করছি সীমান্তের কোন জমিতে না যাবার জন্য। কারণ ভারতীয় কৃষকদের জমি বর্গ নিয়ে চাষাবাদ করা আইনত দণ্ডনীয়।

এই পরিস্থিতিতে, সীমান্তবর্তী কৃষকদের জমিতে প্রবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানো প্রয়োজন। এবং কৃষকদের মধ্যে সচেতনতাবৃদ্ধির এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে।