চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী পালন

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের আয়োজনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। সোমবার সকাল দশটার সময় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের আয়োজনে এই জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়।

রবীন্দ্র-নজরুলের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে কবিতার দুই ধ্রুবতারা রবীন্দ্র-নজরুলের কাব্যদর্শনের উপর শীর্ষক সেমিনার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরুষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড.মুন্সি আবু সাইফ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বাংলাদেশের জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রত্যেকটা বাঙালি এবং মানুষের হৃদয়ে আছেন। তারা তাদের কাজের মাধ্যমে কবিতা মাধ্যমে উপন্যাস মাধ্যমে ছোটগল্প এবং সংগীতের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে বসে আছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন তারা অমর হয়ে থাকবেন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। তাদের রচিত প্রত্যেকটা কবিতার মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যায়। শিক্ষা সাহিত্য এবং রসে ভরা তাদের রচিত কবিতা উপন্যাস ছোটগল্প এবং সংগীত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ ফারজানা কেতকী, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক সফিকুল ইসলাম। প্রবন্ধিক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক আজিম হোসেন। অনুষ্ঠানে আলোচনা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মাহমুদুল হাসান।

সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে রবীন্দ্র-নজরুলের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয় অর্জনকারীদের হাতে পুরুষ্কার তুলে দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ ও অনান্য অতিথিবৃন্দ। পুরুষ্কার বিতরণী শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মুন্সি আবু সাইফ উপস্থিত সকলের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করেন।




মুজিবনগরের মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইউপি প্রশাসক রকিব উদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে এ বাজেট ঘোষণা করেন। ঘোষিত বাজেটে মোট আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯২ হাজার ১৭৮ টাকা।

বাজেট ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, ইউপি সদস্যবৃন্দ, মুজিবনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুন্সী ওমর ফারুক প্রিন্স, মেহেরপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আজিমুদ্দীন গাজী, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আরমান আলী, উপজেলা আমির মাওলানা খানজাহান আলী, উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল বাসার, উপজেলা সমাজকল্যাণ সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণের সহ-সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

অনুষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পরিষেবা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি খাতে বাজেটের সুষম বণ্টনের বিষয়েও আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণ সরাসরি মতামত ও পরামর্শ প্রদানের সুযোগ পান।




মুজিবনগরে শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস পালিত

গুডনেইবার্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি’র আয়োজনে মুজিবনগরে পালিত হয়েছে শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস।

সোমবার সকালে গুডনেইবার্স মেহেরপুর সিডিপি বল্লভপুর প্রজেক্ট অফিস প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে গুডনেইবার্স মেহেরপুর সিডিপি’র ম্যানেজার বিপুল রেমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিম রেজা।

গুডনেইবার্সের প্রোগ্রাম অফিসার রাসেল শেখের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিএমসি’র সভাপতি রেহেনা পারভিন, শিশু পরিষদের সভাপতি প্রত্যাশা মণ্ডল, সদস্য জুনায়েদ, সিডিসি সদস্য দীপ্তি কীর্তনিয়া, ‘নেইচার অ্যান্ড পিস ক্লাব’-এর সদস্য সুস্মিতা খাতুন প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে শিশু শ্রম প্রতিরোধ বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।




ঝিনাইদহে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে দখলে রেখেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

ঝিনাইদহ শহরের শেরে বাংলা সড়কে দোকান হস্তান্তর নিয়ে ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে আদালত ও সেনাবাহিনীর আদেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ভবনের বর্তমান মালিক একেএম মাসুদুল আলম লিপনের কাছে দোকানঘর হস্তান্তর করতে দীর্ঘদিন ধরে তালবাহানা করছেন ভাড়াটিয়া কাজী দাউদ হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একেএম নুরুল আলম তার মালিকানাধীন জমিতে একটি ভবন নির্মাণ করেন এবং তাতে তিনটি দোকানঘর স্থাপন করে তা ভাড়া দেন কাজী দাউদ হোসেনকে। সেখানে তিনি ‘জাকির হার্ডওয়ার’ নামে ব্যবসা চালু করেন। ২০০১ সালে একেএম নুরুল আলমের মৃত্যু হলে তার ছেলে একেএম মাসুদুল আলম লিপন ওয়ারিশ সূত্রে ভবনটির মালিক হন।

পরবর্তীতে মালিক লিপন দোকানঘর হস্তান্তরের জন্য দাউদ হোসেনকে একাধিকবার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অভিযোগে আরও বলা হয়, দাউদ হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নাম ব্যবহার করে মালিককে ভয়ভীতি দেখান।




শৈলকুপায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার নাকোইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাকোইল গ্রামের মহিউদ্দিনের সাথে একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে সুরমান মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। রোববার বিকেলে মহিউদ্দিনের সমর্থক মিঠুর সাথে সুরমান মন্ডলের সমর্থক বিপুলের কথা কাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবারো সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শৈলকুপা থানার এস আই সম্রাট বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছে। আমরা সংবাদ শুনে সাথে সাথে সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়েছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।




ঝিনাইদহে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের কোদালের আঘাতে বাবা খুন

ঝিনাইদহে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের কোদালের আঘাতে এক কৃষক পিতা নিহত হয়েছে।

সোমবার (১৬জুন) সকালে সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের স্বজনরা জানায়, শংকরপুর গ্রামের কৃষক শাহাদত হোসেন (৬৫) তার ছেলে ফয়সাল হোসেন (২৫) সাথে নিয়ে গ্রামের মাঠে মরিচের ক্ষেতে কাজ করতে যান। কাজ করার সময় ফয়সাল আকষ্মিকভাবে কোদাল দিয়ে তার বাবা শাহাদত হোসেনের মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই শাহাদত হোসেন মারা যান। পরে মৃত বাবাকে মাঠে রেখে বাড়িতে ফিরে গিয়ে নিজেই তার মাকে ঘটনা জানান ছেলে ফয়সাল। এসময় স্থানীয়রা ও স্বজনরা মাঠে গিয়ে শাহাদতের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ফয়সাল ছোট বেলা থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী ।

সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করেছি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।




মুজিবনগরে পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ গ্রেফতার ৬

মেহেরপুরের মুজিবনগরে বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

রবিবার (১৫ জুন) রাত থেকে সোমবার (১৬ জুন) ভোর পর্যন্ত মুজিবনগর থানা পুলিশের পরিচালিত ২৪ ঘণ্টার বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন দর্শনার মৃত আনছার আলী বিশ্বাসের ছেলে মো. আতিয়ার রহমান (৪৩), মোনাখালী পূর্বপাড়ার মো. তুফান মণ্ডলের ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম (৪২), রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের হানিফ মণ্ডলের ছেলে আজিজুল হাকিম, মো. আক্কাছ আলীর ছেলে মো. রবিউল আউয়াল (২৫), সুনীলের ছেলে শান্ত কুমার (২৮), মো. আলমাছ হাওলাদারের ছেলে আলিম হাওলাদার (২০)।

গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে বিশেষ অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।




তুলা চাষের সংকট ও সম্ভাবনা

স্বাধীনতা পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে এ দেশের বৈদেশিক আয়ের অন্যতম খাত ছিল পাট। ক্রমান্বয়ে পাটের চাহদিা নানাবিধ কারণে কমতে থাকে। মোটামুটি ৮০’ দশক থেকে আমাদের দেশে পোষাক শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে দেশের পুরাতন সুতাকল গুলোর উৎপাদন নুতন করে বাড়তে থাকে, সেইসাথে তুলাচাষের ব্যপক সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু সমস্যা হল দেশের উৎপাদিত তুলা স্থানীয় তাঁত শিল্পের চহিদাই ঠিকমত পূরণে সক্ষম ছিল না তার উপরে মানও তেমন উন্নত না হওয়ায় দেশে তুলা উৎপাদনে ব্যপক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভ’ত হয়।

১৯৭২ সনে তুলা চাষের উন্নয়নের জন্য এদেশে “ কটন বোর্ড” গঠিত হয় যা ছিল মূলত পাকিস্থান কটন বোর্ডের নতুন সংস্করণ। এই বোর্ড দেশের তুলা উৎপাদনকারী অঞ্চল সমুহের মধ্যে সঠিক পদ্ধতীতে তুলা চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। সেই সময় ঢকার গাজীপুর ছাড়াও রঙপুর,বান্দরবন প্রভিতি স্থানে কটন বোর্ডের স্যাটেলাইট কেন্দ্র গড়ে ওঠে। কিন্তু এইসব কেন্দ্রে মটিভেসনাল কাজ বেশি হলেও গবেষণা কাজ তেমন ছিল না।

৮০’ দশকে পোষাক শিল্পের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য আমদের দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ৮০% এই খাত থেকে অর্জিত হতে থাকে। গড়ে ওঠে নুতন নুতন আধুনিক স্পিনিং মিল বাড়তে থাকে কাচাঁতুলার চাহিদা। কিন্তু দেশে সে হারে তুলা উৎপাদিত না হওয়ায় প্রচুর পরিমান তুলা আমদানি করতে হয়। এবং বলতে গেলে আমরা এখনও আমদানি নির্ভর। বিশেষজ্ঞদের মতে সঠিক পরিচর্যা করলে দেশের চহিদার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ তুলা দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। এবং এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ১৯৮০ সনে দেশে আধুনিক মানের “ তুলা উন্নয়ন গবেষণা ও বীজ উৎপাদন খামার” প্রতিষ্ঠিত হয়।

মূলত এই প্রতিষ্ঠান সমতলে তুলাচাষ,বীজ উন্নয়ন, কৃষকদেও প্রশিক্ষণ সহ উন্নত জাত উদ্ভাবনে ব্যাপক ভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে থাকে। এবং দেশের বিভিন্নস্থান যেমন রংপুর, শ্রীপুর, দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি প্রভৃতি অঞ্চলে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে ব্যাপকভাবে কাজ করতে থাকে। গবেষণায় দেখা যায় দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের পদ্মা অববাহিকা তুলাচাষের জন্য স¤ভাবনাময় এলাকা। এই সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে দেশের বৃহত্তর তুলা উন্নয়ন গবেষণা ও বীজ উৎপাদন কেন্দ্রটি স্থাপিত হয় যশোরের চৌগাছাতে। প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮২ থেকে ২০২৪ সন পর্যন্ত এই কেন্দ্র ১টি হায়ব্রিড (ঈই-১) সহ ৬টা উন্নত জতের তুলাবীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছড়াও এই প্রতিষ্ঠান চিন থেকে একটি উন্নত জাত আমদানি করে কৃষক পর্যায়ে বাজার জাত করে থাকে।

বর্তমানে দেশে প্রায় ৫০০ স্পিনিং মিল আছে এবং এই সব মিলের চাহদা মেটানোর জন্য প্রতি বছর ভারত, পাকিস্থান, মিশর সহ বিভিন্ন দেশ থেকে সরকার তুলা আমদানি করে। তবে পরিতাপের বিষয় এ খাত যখন ক্রমাগত উন্নতির দিকে হাটছিল তখনি অসম বানিজ্যনীতির কারণে আমাদের এই সম্ভাবনাময় খাতটি হঠাৎ করেই ধ্বসে পড়ে। আমাদের পার্শবর্তি দেশ ভরতে সুতার মুল্য কম, এবং রঙ ও মান ভাল হওয়াই পোষাক শিল্প মালিক ও স্পিনিং মিল মালিকরা ব্যপক হারে কম শুল্কে স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানি করতে থাকে।

বাংলাদেশ হয়ে পড়ে কাচাঁ তুলা ও সুতার ভারতীয় বাজার। এতে আমাদের স্পিনিং শিলগুলো যেমন ক্রমেই বন্ধ হতে থাকে তেমনি অকার্যকর হতে থাকে সম্ভাবনাময় তুলা উন্নয়ন ও গবেষণা কাজ। ক্রমেই প্রতিষ্ঠানটির কার্যকলাপে নেমে আসে স্থবিরতা এবং পর্যাপ্ত বরাদ্ধের অভাবে চলতে থাকে জনবল ছাটায়। গবেষণা ও মটিভেশনাল কাজও এক সময় প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি ভারতের সাথে আমাদেওর দেশের বানিজ্যনীতির টান পোড়েনের জন্য ভারত সরকার আমাদের দেশে তুলা, সুতা ও তুলাজাত পন্য স্থলপথে রফতানী সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। এতে সংকট আরো ঘনিভ’ত হতে থাকে। ভারত সরকারের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হঠাৎ করেই বর্তমান কারখানাগুলো বড় ধরণের বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। কিন্তু সরকারের সময়চিত হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি দ্রুতই সমাধান হয়।

এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সরকার নিকটবর্তী দেশ ছাড়াও আফ্রীকা, মার্কিনযুক্তরাষ্ঠ্র ও দক্ষিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ থেকে জরুরী তুলা আমদানীর অনুমতি দেন। সাথে সাথে সরকার অনুধাবন করেন যে, দেশের পোষাক শিল্প ও আনুসঙ্গিক তুলাজাতদ্রব্য উৎপাদন টিকিয়ে রাখার জন্য দেশে ব্যাপক তুলাচাষ ও উৎপাদন বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাকে সামনে রেখে সরকার সমতলের তুলাচাষের ব্যাপক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যশোরের ”তুলা উন্নয়ন গবেষণা ও বীজ উৎপাদন খামারের” প্রতি নুতন কওে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। এবং এর উন্নয়নের জন্য যথাপুযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের উদে¦্যগ নেন, সংশ্লিষ্ঠ বিষেষজ্ঞরা ভারতের এই সিদ্ধান্তকে দেশের তুলাচাষের জন্য মঙ্গল বলেই মনে করছেন।

তবে এক্ষেত্রেও সরকার পরিচালিত অন্যান্য খামারের মত কিছু সমস্যার কথা উঠে আসে। সর্বত্র সক্ষমতার অভাব ও প্রকট জনবল সংকট ও সম্বয়হীনতা। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম লোকবল দিয়ে এখানে কাজ করা হয়, ফলে সঠিক গবেষণা ,মাঠপর্যায়ে কাজ করা কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মটিভেষনাল কাজগুলো যথাযথভাবে করা সম্ভব হয় না। মাঠপর্যায়ে এখানকার উৎপাদিত বীজ কৃষদেও মাঝে বন্ঠন এবং ফলাফর সংরক্ষনের জন্য যে ধরণের শিক্ষীত কর্মী প্রয়োজন তেমনটা না থাকায় সব সময় সঠিক রেজাল্টও পাওয়া যায় না। তার পরেও এখানকার উৎপাদিত জাাত গুলোর চাহিদা অনেক বেশি বলে জানা যায়। হাই ব্রীড অপেক্ষা উন্নত জাত গুলোর চহিদা কৃষক পর্যায়ে বেশি। একইভাবে হাইব্রীড তুলা চাষের বাড়তি পরিচর্যা ও অতিরিক্তি খরচ ও কিছুটা ঝুকির বিষয়ও মাঠপর্যায় থেকে জানা যায়।

তুলাচাষের সম্ভাবনার মাঝেও বেশ কিছু সমস্যা চাষিদের কাছ থেকে উঠে আসে। চাষিদেও বক্তব্য থেকে জানা যায়, তুলার বলওয়র্ম একটা মারাত্তক বালায়, তাছাড়া পরিচর্য়ার অভাব, জিনিং অসুবিধা সহ বাজারজাত করণের অভাব ও সঠিক মুল্য না পাওয়াতে চাষিরা তুলাচাষে অনেক সময় আগ্রহ দেখান না। অথবা তুলা চাষে লাভবান হন না। তবে আশার কথা বিশেষজ্ঞগন এই সমস্যা সমাধানের জন্য যশোর কেন্দ্র থেকে তুলার সাথে সাথী ফসল চাষের বিশেষ পদ্ধতি আবিস্কার করেছেনে। ইতোমধ্যে এই পদ্ধতি কুষ্টিয়া সহ দেশের অন্যান্য এলাকাতেও বেশ আগ্রহের সৃস্টি হয়েছে।

বর্তমানে তুলা চাষে আবার গতি ফিরেছে। দেশে প্রায় ১০ জেলার ৬০০ হেক্টও জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। এবং র্বমান সরকার তুলা চাষের উপরে কৃষকদের আগ্রহ সৃস্টির জন্য যশোর কেন্দ্্কে ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। তুলা রবি ফসল এটা তামাক মৌসুমে ফলে থাকে। দরকার হলে তামাক চাষ সীমিত করে হলেও কৃষকদের তুলা চাষে উদ্বুদ্ধ করা দরকার বলে অনেকেই মনে করেন।

তুলাচষে ব্যপকতা সৃস্টি ও অধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর কেন্দ্রের এই উজ্জীবনকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সেই সাথে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বেশকিছু সরকারী কৃষি খামারকেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ করার বিষয়ে ভেবে দেখার অনুরোধ এলকাবাসির। ইতোপূর্বে মেহেরপুরের মাটি ও জলবায়ু তুলাচাষের জন্য যথেষ্ঠ উপযোগী বলে কৃষি আধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল এবং ’৯০ দশকে বেশ কাজও হয়েছিল।

মেহেরপুরের যে ৩/৪ টা কৃষি খামার আছে সেগুলোতে বর্তমান বাজার চাহিদা ও জাতীয় অর্থনীতিতে পোষাক শিল্পের অগ্রগতির কথা মাথায় রেখে মাঠ-ফসলের পাশাপাশি তুলা চাষের দিকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেয়া দরকার বলে এলাকাবাসি মনে করে। বিপুল সম্ভাবনাময় এই খাতকে কোন ক্রমেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।

প্রয়োজনে দক্ষজনবল, প্রশিক্ষণ ও যান্ত্রিক কাঠোমো উন্নয়নের মাধ্যমে তুলাচাষে আগ্রহী চাষিদেও আগ্রহী ও দক্ষ করে তুলতে পারলে একদিকে যেমন ক্ষতিকর তামাক চাষ কমে আসবে তেমনি দেশ আমদানি কৃত ৮০ লক্ষবেল তুলার বিপরিতে ৪০ থেকে ৬০ লক্ষ বেল তুলা দেশেই উৎপাদন করতে সক্ষম হবে; এবং দেশের প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

এক্ই সাথে পুঃনজাগরিত হবে স্পিনিং মিল, সুতা ও কাপড়কল। তুলাবীজ থেকে উৎপাদিত হবে উন্নত মানের ভেজ্যতেল ও পুষ্ঠিগুন সম্পন্ন খৈল যা উন্নত পশুখাদ্যের জন্য আমরা আমদানী করে থাকি। জাতীয়সার্থেই আমাদের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে এমনটাই আশাবাদ সকলের।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও পরিবেশবিদ




মেহেরপুর বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ বাবাদের দিন কাটছে সন্তানদের প্রতিক্ষায়

মেহেরপুরের একটি বৃদ্ধাশ্রমে চোখে মুখে হতাশা আর ছেলে মেয়ে স্বজনদের প্রতিক্ষায় দিন কাটছে সাতজন বৃদ্ধ বাবার। চাকুরিজিবি ছেলে মেয়েরা বৃদ্ধ বাবা মায়েদের সময় দিতে না পেরে অবশেষে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে গেছেন।

কবে দেখতে আসবেন সে কথা সন্তানরা কখনো বলেনি। তবে কোনো এক সময় হঠাৎ বৃদ্ধাশ্রমে এসে বাবাকে সারপ্রাইজ দেবে ফ্রান্স প্রবাসি মেয়ে গ্লোরিয়া লিপি হালদার। আর সে প্রত্যাশায় বৃদ্ধাশ্রমে দিন কাটছে ৮৬ বছর বয়সি বাবা রবার্ট রঞ্জিত হালদারের। শুধু রবার্ট রঞ্জিত হালদারই নয়, ৯০ বছর বয়সি এ্যাডমিন মনিময় সর্দার,৭৮ বছর বয়সি পল মিত্রের। বিয়ে না করায় জগতে আপন কেউ না থাকায় বৃদ্ধাশ্রমে টেলিভিশন দেখে সময় কাটাতে হয় ৯৫ বছর বয়সি শুসেন সরকারের। তিনিও দিন কাটাচ্ছেন স্বজনদের আশায়।

কষ্টের মাঝেও পরম মমতায় ঘর বাঁধেন যে বাবা মা, এক সময়ে সন্তানের কারণে আপন নিবাস ছেড়ে যেতে হয় তাদের। নিজ ঘরে তখন তারা হয়ে ওঠেন পরবাসী। যে বয়সে নাতি নাতনি আর আপনজনদের সাথে হেসে খেলে একান্তে সময় কাটানোর কথা, সেই বয়সে কাটে তাদের প্রবীণ নিবাস বা বৃদ্ধাশ্রমের ছোট্ট কামরার বিছানায়। ঝাঁপসা চোখে আপনজনদের কথা ভেবে ভেবেই কাটে তাদের সময়।

মেহেরপুর মুজিবনগরের এই বৃদ্ধাশ্রমের অনেক বাবার গল্পই এমনি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এমন বাস্তব জীবনের মুখোমুখি হতে হবে কোনোদিন ভাবতেও পারেনি বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এসব মানুষগুলো। মুজিবনগরের বল্লভপুরের এই বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা হয়েছে ২৫ জন বৃদ্ধ মানুষের। এদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। যাদের থেকেও নেই আপনজন, নেই মাথা গোঁজার ঠাই।

বার্ধক্যের কারণে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন অনেক আগেই। ঢাকা থেকে আসা রবার্ট রঞ্জিত হালদারের একমাত্র মেয়ে থাকেন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস শহরে। উচ্চবৃত্ত পরিবারের এই ব্যক্তিটিই ছিলেন একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ। স্ত্রী মারা যান, আর একমাত্র মেয়ে গ্লোরিয়া লিপি হালদারের বিয়ের পরে চলে যান ফ্রান্সে। তাকে দেখা শোনার আর কেউ নেই। পরে ঠাই হয় মুজিবনগরের এই বৃদ্ধাশ্রমে।

সারাদিনই তার সময় কাটে একমাত্র মেয়ের মুখটি দেখার আশায়। মেয়ে দিনে দুবার কল দেন। রাতে গুড নাইট আর সকালে গুড মর্নিং বলেন। অনেক আকুঁতি জানালেও মেয়ে কবে আসবে তার নির্দিষ্ট সময় বলেনা। শুধু বলে কোনো একদিন হঠাৎ এসে তোমাকে সারপ্রাইজ দেবে বাবা। আর ৯০ বছর বয়সি এ্যাডমিন মনিময় সর্দারের খুব মন চাই নাতি নাতনিদের সাথে ফুটবল খেলে আর খুনসুটি করে কাটাতে।

কিন্তু সেই ভাগ্য তার হয়ে ওঠেনি। কানাডা প্রবাসী ছেলে তার সন্তানদের বৃদ্ধ দাদুর কাছে আসতে দেননা, সময় নেই তাদের। আশ্রমের এসব বৃদ্ধদরা নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তারপরেও বৃদ্ধাশ্রমে নি:সঙ্গ জীবন যাপন করছেন এসব বৃদ্ধরা। জৈষ্ঠ সেবিকা আন্না মন্ডল বলেন, পরিবারের চেয়ে এখানেই ভাল আছেন তারা। তবুও স্বজনদের প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে হয় তাদের। এটাই সংসার জগত,এটাই মায়া। নিজের দাদা,বাবাদের মতই আদর যত্ন আর খুনশুটি করেন প্রশিক্ষনার্থী সেবিকা প্রিয়া মন্ডল,পিউ মল্লিকসহ অনেকে।

তবে পিএসকেএসএর নির্বাহী পরিচালক মুহাঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, মানুষ বৃদ্ধ হয়ে পড়লে শিশুর মত অসহায় হয়ে পড়ে। তখন পরিবার সন্তানদের সঙগ খুবই জরুরী। প্রতিটি বাবা মায়ের জন্য পরিবারই হয়ে উঠুক সহায় আমরা এটাই প্রত্যাশা করি। শেষ বয়সে পিতা মাতার এবমাত্র ভরসা সন্তান সন্ততি।




দামুড়হুদায় স্কুল শিক্ষিকাকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা, দুই সন্তানের জননী, পরকীয়ার জেরে ভাসুরের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় একজন শিক্ষিকার এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর উদ্যোগে স্কুলের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নিয়ে ইউএনও, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং দামুড়হুদা মডেল থানার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

রোববার সকাল ১০টার দিকে কোষাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে জালালের সঙ্গে দীর্ঘ ২৩ বছর আগে চুয়াডাঙ্গা ঈদগা পাড়ার রবিউলের মেয়ে সানজিদা খাতুন পলির বিয়ে হয়। ২০০৫ সালে জালালের পিতা শুকুর আলী ছেলে ও পুত্রবধূর সুখের কথা চিন্তা করে কোষাঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ বিঘা জমি দান করেন। এই জমির বদৌলতে বউমা সানজিদা খাতুন পলির চাকরি হয়।

দীর্ঘ আট বছর ওই স্কুলের কোনো শিক্ষকের বেতন হতো না। পরে ২০১৩ সালে কোষাঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার পর থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন চালু হয়। এরপর থেকে প্রতিমাসে বেতন তুলে সংসার ভালোভাবেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন দম্পতি। তাঁদের ঘরে জন্ম নেয় দুটি ছেলে সন্তান বড় ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র এবং ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণির ছাত্র।

তাদের রেখে ২০২৪ সালের শুরু থেকে সানজিদা খাতুন পলি, জুরানপুর গ্রামের আত্তাব মল্লিকের ছেলে, তিন সন্তানের জনক হাসিবুরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত ২১/০২/২৫ তারিখে সানজিদা খাতুন পলি স্বাক্ষরিত তালাকনামা গোপন রেখে জালালের সঙ্গে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে ০২/০৫/২৫ তারিখে তিনি ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান হাসিবুরের সঙ্গে।

এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের দাবি তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণ করতে হবে। কোনো শিক্ষক বা শিক্ষিকা যেন এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত না হন, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চান তারা।

এ বিষয়ে জালাল উদ্দিন বলেন, “আমার বাবার নিজের জমি দিয়ে আমার স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছিলাম। আর সে এখন আমার ঘর থেকে টাকা ও আমার মায়ের গয়না নিয়ে অন্য পুরুষের হাত ধরে পালিয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

কোষাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সানজিদা খাতুন পলির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “এই ধরনের ঘটনা শোনার পর স্কুলে আসতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। এলাকার মানুষ নানা ধরনের কথা বলছে। স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার হওয়া প্রয়োজন। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু হাসান বলেন, “বর্তমানে আমাদের স্কুল ছুটিতে রয়েছে। এই অবস্থায় কে কোথায় যাচ্ছে, তা আমাদের জানা নেই। তবে ঘটনা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”