শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা: হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, খালাস ৩

মাগুরার আট বছরের শিশুর ধর্ষণ ও হত্যার মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় দেন।

আলোচিত এই মামলায় আসামি ছিলেন, শিশুটির বড় বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, বোনের জামাতা সজীব শেখ, সজীবের ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগম।

আদালত মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া মামলার অন্য আসামিরা- বোনের জামাতা সজীব শেখ, সজীবের ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগমকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল আলোচিত মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২৭ এপ্রিল। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ২৯ জন। ছুটির দিন বাদে টানা শুনানি করে ১২ কার্যদিবসে শেষ হয় বিচার।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, মেডিকেল অ্যাভিডেন্স ও সাক্ষীদের জবানবন্দিতে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।

মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, এ মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি, মেডিকেল রিপোর্ট, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য এবং মামলার মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য দ্বারা রাষ্ট্রপক্ষ মামলা প্রমাণ করতে পেরেছে।

ফলে একটি নিষ্পাপ শিশুকে যেভাবে অমানবিক পাশবিক নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে, তার জন্য আসামিদের আদালত সর্বোচ্চ সাজা দেবে, যা বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

এর আগে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, মাগুরায় আট বছরের শিশুর সঙ্গে বর্বর পাশবিক ঘটনায় সারা দেশ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরাও এ ঘৃণ্য ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি জানায়।

মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসে গত ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশু আছিয়া। এ ঘটনার পর মাগুরাসহ সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। গত ৮ মার্চ পুলিশের অভিযুক্ত এ চারজনকেই আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন শিশুর মা আয়েশা আক্তার।

ধর্ষণের ঘটনার পর শিশুকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ফরিদপুর মেডিকেল এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ মারা যায় শিশুটি।

এ ঘটনার পর পুলিশের রিমান্ড চলাকালে মামলার মূল আসামি হিটু শেখ ১৫ মার্চ মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। যেখানে এ ঘটনায় সে একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয়।

গত ১৩ এপ্রিল চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আলাউদ্দিন সরদার শিশুটির মায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত চার আসামি আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোনজামাই সজীব শেখ ও সজীবের বড় ভাই রাতুল শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

২৩ এপ্রিল চার্জ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৭ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ২৭ এপ্রিল বাদীসহ তিনজনের সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে সাক্ষীর কার্যক্রম শুরু হয়ে ৭ মে অষ্টম কার্যদিবসের মধ্যে সাক্ষ্য পর্ব শেষ হয়।

৮ মে আসামিদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। এ ছাড়া ১২ ও ১৩ মে যুক্তিতর্ক শেষে ১৭ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদালত।




এবারের কোরবানির চমক মেহেরপুরের ‘কালামানিক’

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বিশাল আকৃতির একটি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে। নজরকাড়া ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির ওজন ২১/২২ মণ। দুই বছর ধরে গরুটিকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন ওই গ্রামের পূর্বপাড়ার শাহারুল ইসলাম। দেখতে কুচকুচে কালো এবং বড় হওয়ায় গরুটির নাম রেখেছেন ‘কালামানিক’।

দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কালামানিকের ঘরে চলে ফ্যান। গোসল করানো হয় দিনে দুই-তিন বার। কালামানিকের নিয়মিত খাবারে মধ্যে রয়েছে খৈল, কাঁচা ঘাস, বিচালি, ভুট্টার ময়দা, চালের কুড়া। পরম যত্নে পালিত কালামানিক জেলার সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি শাহারুল ইসলামের। ১৮ লাখ টাকা দাম উঠলেও তিনি গরুটির দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা।

শাহারুল ইসলাম বলেন, জেলার মধ্যে বড় গরু কালামানিক। দুই বছর ধরে গরুটিকে পালন করছি। কেমিক্যাল জাতীয় খাবার না খাইয়ে আমি ভুসি, গমের ছাল, কাঁচা ঘাস, বিচালি খাওয়াই। খাবারের দাম অনেক বেশি। তাই কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে গরুটি বিক্রি করে একটু লাভের আশা করছি। এতো বড় গরু একা পালন করা সম্ভব হয় না । তাই স্ত্রী ও ছেলে সব সময় আমাকে সহযোগিতা করে। প্রাণিসম্পদ অফিসও আমাকে সহায়তা ও বিভিন্ন পরামর্শ দেয়।

এদিকে কালামানিককে খাওয়ানো, গোসল করা থেকে শুরু করে পরম আদর যত্ন করেন শাহারুলের ছেলে সামিউল। আর এ কারণেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে মধুর সম্পর্ক।

সামিউল বলে, বাইরের কেউ গরুর কাছে গেলে রেগে যায়। তবে আমি গেলে শান্ত হয়ে যায়।
নিজের সন্তানের মতো যত্নে বড় করা কালামানিককে আসন্ন কোরবানিতে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চান শাহারুলের স্ত্রী বিলকিস খাতুন। তিনি বলেন, স্বামী বাইরে কাজে গেলে আমি কালামানিককে দেখাশোনা করি।

শাহারুলের ভাই জিনারুল বলেন, বড় ভাই দুই বছর ধরে যত্ন করে গরুটিকে বড় করেছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে অনেকেই গরুটিকে দেখত আসছে। অনেকে আশানুরুপ দাম বলেছে। আমিও এমন একটি গরু এবার পালন করতে চাই।

প্রতিবেশী দুলাল মিয়া বলেন, কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বা হরমোন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার না করে দেশীয় খাবার বিচালি, চালের কুড়া, খৈল, কাঁচা ঘাস খাইয়ে শাহারুল গরু লালন-পালন করেছেন। কোরবানি ঈদে দাম ভালো পেলে এলাকার অনেকেই কালামানিকের মতো এমন গরু পালন করতে চান।

মেহেরপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে শাহারুল যে গরুটি লালন-পালন করেছেন তা জেলার মধ্যে অন্যতম একটি বড় গরু। বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ২৬ হাজার ৪৭টি খামারে মোট ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৫৩টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ হাজার ২৯৭টি গরু, ১ লাখ ১৫ হাজার ছাগল, ২ হাজার ৬৯৪টি ভেড়া এবং ৭৬২টি মহিষ রয়েছে।




বিভাগীয় যৌথ সমাবেশ সফল করতে মেহেরপুরে বিএনপি’র পোস্টার বিতরণ

তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ সফল করতে দেশব্যাপী কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুরে পোস্টার বিতরণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। শুক্রবার (১৬ মে) সকাল ১১টায় জেলা পরিষদ চত্বর থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতৃত্বে এই প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। শহরের বড়বাজার, কোর্ট মোড়, মাদ্রাসাপাড়া, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সাধারণ মানুষের মাঝে পোস্টার বিতরণ করা হয়।

এ সময় অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, “বর্তমান সরকারের দুঃশাসন ও ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে তারুণ্যকে সংগঠিত করতেই এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু জনগণের সমর্থন নিয়েই বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। খুলনা-বরিশাল বিভাগীয় যৌথ সমাবেশ হবে তারই একটি শক্তিশালী বার্তা।”

পোস্টার বিতরণ কর্মসূচিতে বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।

বিএনপি নেতারা জানান, আসন্ন বিভাগীয় সমাবেশে মেহেরপুর জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবে। তারই অংশ হিসেবে জেলার সর্বস্তরের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।




গাংনীতে জুমার নামাজের সময় ৪টি মোটরসাইকেল চুরি, এলাকায় চাঞ্চল্য

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় জুমার নামাজের সময় দুটি মসজিদের প্রাঙ্গণ থেকে ৪টি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে উপজেলার শহরের সন্ধানী স্কুলপাড়া ও উত্তরপাড়ার দুটি মসজিদে এই চুরির ঘটনা ঘটে। মুসল্লিরা নামাজ আদায়ে মসজিদে অবস্থানকালে দুর্বৃত্তরা এই সুযোগে মোটরসাইকেলগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিদিনের মতো মুসল্লিরা মোটরসাইকেল মসজিদে যান। কিন্তু নামাজ শেষে তারা বেরিয়ে এসে দেখেন, পার্কিংয়ে রাখা মোটরসাইকেলগুলো নেই। সন্ধানী স্কুলপাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে দুটি এবং উত্তরপাড়া জামে মসজিদ থেকে আরও দুটি মোটরসাইকেল চুরি হয় বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ করেন, ধর্মীয় স্থানে এমন চুরির ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ধরনের দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।

এ বিষয়ে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, “ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলগুলো উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।”
ঘটনার পর স্থানীয়রা মসজিদে ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।

এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।




মেহেরপুরে সেনা অভিযানে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর গ্রামে সেনা অভিযানে একটি ভারতীয় ওয়ান শুটারগান, ৫২ রাউন্ড গুলি ও ১২ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে মেহেরপুর সেনাবাহিনীর একটি টহল দল এ অভিযান চালায়।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে—রাধাকান্তপুর গ্রামের কবরস্থানে একটি ডাকাতদল নাশকতা ও ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর পাওয়ার পর মেজর ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে সেনা সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছায়।

সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ১টি ভারতীয় ওয়ান শুটার পিস্তল, ৩৩ রাউন্ড ০.২২ মিমি গুলি, ৭ রাউন্ড ১২ গেজ গুলি এবং ১৮টি ব্যবহৃত ১২ গেজ গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।




দামুড়হুদায় গরু চোর আটক; থানায় সোপর্দ

দামুড়হুদার ডুগডুগী গ্রামে গভীর রাতে গরু চুরি করতে এসে কৌশলে জনতার হাতে পাকড়াও হয়েছে, তাকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ডুগডুগী কলোনি পাড়ায় মৃত হামিদুলের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা নুরনগর গ্রামের মৃত মুরশিদ শেখের ছেলে রফিকুলকে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয়রা।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ডুগডুগী কলোনি পাড়ায় মৃত ভ্যান চালক হামিদুল আনুমানিক ৬-৭ বছর আগে হঠাৎই মৃত্যুবরণ করেন, তার মৃত্যুর পর থেকে তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসার নিয়ে খুবই দিশেহারা হয়ে পড়ে মৃত হামিদুলের স্ত্রী মাহফুজা বেগম(৪৫)। তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো এই ভুক্তভোগী মাহফুজা বেগম।

মাহফুজা বেগমের ৩ মেয়ের বিয়ের পর থেকে ছোট ছেলেকে নিয়ে দিন পার করতে থাকে। এরই মধ্যে অনেক কষ্টসাধ্য করে একটি বকন গরু কেনেন আর এই গরু লালন পালন করতে থাকেন, এরই একপর্যায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২ঃ০০ টার দিকে সঙ্ঘবদ্ধ চোরের দল গরু চুরি করতে তার বাড়িতে ঢোকে, গোয়াল ঘরে।

গরুর দড়ি খোলার সময় ভুক্তভোগী মাহফুজা বেগম কোন ভাবে টের পেয়ে যায় এ সময় তিনি বুদ্ধি করে গোয়াল ঘরের গেট আটকিয়ে দেয়, তিনি বুঝতে পারেন কেউ তার গরু চুরি করতে এসেছে, তারপর গোয়াল ঘরের গেট আটকিয়ে দিয়ে চিৎকার করতে থাকে, তখন সঙ্ঘবদ্ধ চোরের হোতা রফিকুল গোয়াল ঘরে আটকে পড়লে বাকি সদস্যরা পালিয়ে যায়, তখন মাহফুজা বেগমের চিৎকারে স্থানীয় প্রতিবেশীরা ছুটে এসে গরু চোর হোতা রফিকুলকে গোয়াল ঘরের ভেতর থেকে আটক করে।এ সময় গোয়াল ঘরে আটকানোর পর গরু চোর হোতা রফিকুল গোয়াল ঘরের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু শেষ চেষ্টা বৃথা হয়।

এলাকাবাসী গরু চোর হোতা রফিকুলকে পাকড়াও করে উত্তম মধ্যম দিয়ে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই বিধবা মাহফুজা বেগমের বুদ্ধিমত্তার কারণে তার গরুটি রক্ষা পেলো। এদিকে গ্রাম্য ভাষায় একটা প্রবাদ আছে চোরের মার বড় গলা তেমনটাই দেখালেন এই গরু চোর হোতা রফিকুলের স্ত্রী, গতকাল বৃহস্পতিবার দিনের বেলা ডুগডুগী কলোনি পাড়ায় এসে উল্টো স্থানীয় প্রতিবেশীদেরকে মামলার ভয় দেখিয়ে যায়, বলে আমার স্বামীর যদি কিছু হয়ে যায় তোদের একটা কেউ ছাড়বো না, এটাই হলো প্রকৃতির নিয়ম। চোরের মার বড় গলা।

এবিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রফিকুল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকালই তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।




মেহেরপুরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া: সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান

মেহেরপুরে বিদ্যুতের বিল বকেয়ার কারনে সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চালাচ্ছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ওজোপাডিকো)।

বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় মেহেরপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে বিল বকেয়া থাকার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন সুলতানা ও আবীর আনসারী।

মেহেরপুর ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ওজোপাডিকোর আওতায় যেসকল গ্রাহক বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে না, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে এবং বাড়ির লাইন দিয়ে বাণিজ্যিক লাইন চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে তাদেরকে বিল পরিশোধের বারবার অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি তারা গুরুত্ব সহকারে না নেওয়ায় আজকে এই অভিযান। এই অভিযান আগামী মাস পর্যন্ত চলমান থাকবে।

এসময় সহকারি প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




মুজিবনগরে মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এনজিও কর্মী নিহত

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে গোলাম রাব্বানী (৩২) নামে এক এনজিও কর্মী নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মুজিবনগর-গোপালনগর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত গোলাম রাব্বানী যশোর সদর উপজেলার নরসিংহকাটি গ্রামের আবু বক্কর সরদারের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, গোলাম রাব্বানী মোটরসাইকেলযোগে মুজিবনগরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।




গাংনীতে বজ্রপাতে নারীর মৃত্যু, আহত এক

মেহেরপুরের গাংনীতে বজ্রপাতে রিতা খাতুন (৩৮) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। অপর এক স্থানে বজ্রপাত আহত হয়েছেন ফাতেমা খাতুন (৩৫) নামে আরেক গৃহবধূ।

বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার রায়পুর ও সাহারবাটি গ্রামে পৃথক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিতা খাতুন রায়পুর গ্রামের কিয়াম আলীর স্ত্রী। আহত ফাতেমা খাতুন সাহারবাটি গ্রামের বেগুলের স্ত্রী ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টির সময় রিতা খাতুন মাঠে ধান কুড়াতে গেলে বজ্রপাতের শিকার হন। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। একই সময়ে ফাতেমা খাতুন বাড়ির পাশে পুকুর থেকে পানি আনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হন।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার জাহিদ হাসান বলেন, ‘রিতা খাতুনকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। আহত ফাতেমা খাতুন চিকিৎসাধীন এবং তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।




মেহেরপুরে বিএনপির গণমিছিল

‘দল-মত-বিশ্বাস-দর্শন যার যার, দেশটা আমাদের সবার। সবার আগে বাংলাদেশ।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই আহ্বানে মেহেরপুরে এক গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকালে মেহেরপুর পৌর ও সদর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ মিছিলের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ। মিছিলটি সড়ক বিভাগের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ শামসুজ্জোহা পার্কে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, যুবদলের সভাপতি জাহিদুল হক জাহিদ, ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাভেদ সেনজিসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামা সময়ের দাবি।