ঝিনাইদহে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সচেতনতা সপ্তাহ উদযাপন

বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে ঝিনাইদহে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রানিসম্পদ কার্যলয় হতে একটি র‌্যালি বের হয়।

র‌্যালিটি শহর প্রদক্ষিন করে একই স্থানে শেষ হয়। পরে জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যলয়ের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় অংশ গ্রহন করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এ এস এম আতিকুজ্জামান, অতিরিক্ত জেল প্রাণি সম্পদ অফিসার ডাঃ মীনাক্ষী নাগ, দৈনিক নবচিত্র পত্রিকার সম্পাদক আলাউদ্দীন আজাদ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম, সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ কামরুজ্জামান, ভেটেনারি অফিসার ডাঃসঞ্জীব কুমার বিশ্বাস ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাগণ ও ওষুধ পরিদর্শক মোঃ একরামুল করিম।




ঝিনাইদহে প্রবাসী মাহাবুব হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন

ঝিনাইদহে প্রবাসী মাহাবুব হোসেন হত্যা মামলায় আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার কালা গ্রামে ঝিনাইদহ-মাগুরা সড়কে এ মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।

এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী অংশ নেয়। মানববন্ধনে নিহতের পিতা সাব্দার বিশ্বাস, ভাই রুবেল হোসেন, স্ত্রী শম্পা খাতুন, খালা ছবেদা খাতুন, পদ্মাকর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি আতিক হোসেন মল্লিক, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহন জমাদ্দারসহ এলাকাবাসী বক্তব্য রাখেন।

সেসময় বক্তারা বলেন, প্রবাসী মাহাবুব হোসেন হত্যার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও মাত্র ১ জন আসামী গ্রেফতার হয়ে। বক্তারা দ্রুত বাকি আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানান। গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার কালা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন কম্বোডিয়া প্রবাসী মাহাবুবকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় রোববার রাতে নিহতের ভাই রুবেল হোসেন বাদি হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।




গাংনীর ঢেপা-পাঙ্গাসিপাড়ায় দুইটি গরু চুরি, উদ্বেগ-শঙ্কায় গ্রামবাসী

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ঢেপা-পাঙ্গাসিপাড়ায় দুইটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতে একটি গোয়ালঘরের তালা ভেঙে এইড়ে ও গাভিন জাতের দুইটি গরু চুরি করেছে চোরের একটি সংঘবদ্ধ দল।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আগের মতো রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিতে হবে, এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, গতকাল সোমবার দিবাগত গভীর রাতে মানিক মিয়ার গোয়ালঘরের তালা ভেঙে দু’টি গরু নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ভোরে মানিকের ছোট ছেলে গোয়ালে গিয়ে দেখতে পায় দরজা খোলা, আর ভেতরে গরু নেই। গোয়ালঘরে মোট তিনটি গরু ছিল। চোরেরা একটি ষাড় ও একটি গাভি গরু চুরি করে নিয়ে গেলেও বাছুরটিকে ফেলে গেছে। সকালে সবাই গিয়ে দেখে—বাছুরটি এক কোণে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে, নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে ফাঁকা গোয়ালের দিকে।

গরুর মালিক মানিক হোসেন বলেন, রাত ১০টার দিকে পাড়া থেকে বাড়ি ফিরে গোয়াল পরিষ্কার করে গরু বেঁধে তালা লাগাই। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। সকালবেলা ছেলে বলে—‘বাবা, গরু নেই’। তখন দেখি তালা ভাঙা। চুরি হওয়া দুই গরুর মধ্যে একটি ষাড় ছিলো, যার বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা, আর গাভি গরুটির মূল্য প্রায় ৭৫ হাজার টাকা বলে দাবি করেন তিনি।

মানিকের পরিবারের সদস্যরা জানান, যত্ন করে, কষ্ট করে গরুগুলো বড় করছিলাম। এভাবে যদি চুরি হয়, গরু পালবো কিভাবে? এ ধরনের বড় ধরনের ক্ষতি সামাল দেওয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন।

এ ঘটনায় গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম দুশ্চিন্তা দেখা গেছে। অনেকেই রাতের ঘুম হারাম করে পাহারার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে ভয় ও ক্ষোভের চিত্র।

সেলিম হোসেন নামের এক গ্রামবাসী বলেন, এভাবে যদি চুরি হতে থাকে তাহলে কেউই নিরাপদ থাকবে না। আবার কি আগের মতো রাতে লাঠিসোটা নিয়ে গ্রামের সবাইকে পাহারা দিতে হবে?

শফিকুল ইসলাম নামের আর একজন বলেন, কয়েক বছর আগে চোরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় পুরো গ্রাম পালা করে পাহারা দিতাম। এখন আবার সেই দিন ফিরে আসবে কিনা, এই চিন্তায় সবাই।

ঘটনার খবর পেয়ে সকালে গাংনী থানার এস আই শিমুল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা গোয়ালঘরের ভাঙা তালা, গরু রাখার স্থান ও আশপাশ ঘুরে দেখেন।

এস আই শিমুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আশেপাশের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে চোর সনাক্তকরার চেষ্টা চালাচ্ছি। চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার ও চোরদের আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চলছে।




তথ্য বাতায়নের বিভ্রান্তি ও অসামঞ্জস্যতা দূর হোক

মেহেরপুর, বাংলাদেশের এক প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জনপদ, যার রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি। ব্রিটিশ আমল থেকেই এই অঞ্চলের সংবাদচর্চার ঐতিহ্য বিদ্যমান।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের সম্পাদনায় ১৯৪৮ বঙ্গাব্দে ‘ইসলাম প্রচারক’ এবং ১৯১২ বঙ্গাব্দে ‘সুলতান’ নামে দুটি পত্রিকা প্রকাশিত হওয়ার তথ্য এর ঐতিহাসিক গুরুত্বকেই তুলে ধরে। অথচ, বর্তমানে জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “মেহেরপুর একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এলাকা হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে এখানে কোন দৈনিক বা পাক্ষিক পত্রিকা চালু নেই।”

এই বাক্যটির ঠিক নিচেই আবার ‘দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন’ এবং ‘দৈনিক আমাদের সূর্যোদয়’ নামের দুটি পত্রিকার তালিকা, তাদের সম্পাদক, ঠিকানা এবং যোগাযোগ নম্বরসহ দেওয়া আছে, যা বর্তমানে সক্রিয় হিসেবে প্রতীয়মান। এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য কেবল বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করে না, বরং স্থানীয় সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের গুরুত্বকে খাটো করে।

জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইট, সরকারি তথ্যের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচিত। এমন একটি স্থানে পরস্পরবিরোধী তথ্য থাকা পেশাদারিত্বের অভাব এবং তথ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকে নির্দেশ করে। একদিকে বলা হচ্ছে, কোনো দৈনিক বা পাক্ষিক পত্রিকা চালু নেই, অন্যদিকে দুটি সক্রিয় দৈনিকের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দেওয়া হচ্ছে। এই অসঙ্গতি থেকে দুটি প্রশ্ন উঠে আসে: প্রথমত, উল্লেখিত পত্রিকা দুটি কি সত্যিই চালু আছে নাকি নেই? দ্বিতীয়ত, যদি চালু থাকে, তবে কেন ওয়েবসাইটে এমন ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে?

সংবাদপত্র একটি সমাজের দর্পণ। এটি স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং জনজীবনের প্রতিচ্ছবি বহন করে। মেহেরপুর জেলায় বর্তমানে দুটি দৈনিক পত্রিকা চালু আছে, যা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। এর একটি ‘দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন’ এবং অপরটি ‘দৈনিক আমাদের সূর্য়োদয়’। পত্রিকা দুটি নিয়মিত প্রকাশিত হয় এবং মানুষের তথ্য চাহিদা পূরণ করে চলেছে, অথচ তাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা বা ভুলভাবে উপস্থাপন করা গুরুতর ত্রুটি।

এই ধরনের তথ্যের অসামঞ্জস্যতা কেবলমাত্র স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের হতাশ করে না, বরং সাধারণ মানুষ, গবেষক এবং জেলার বাইরে যারা মেহেরপুর সম্পর্কে জানতে চান, তাদের মধ্যেও ভুল ধারণা তৈরি করে। এটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গুরুত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। একটি জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব হলো তার আওতাধীন সকল তথ্য নির্ভুল ও হালনাগাদ রাখা, বিশেষ করে যখন তা জনগুরুত্বপূর্ণ হয়।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই অসামঞ্জস্যতা দূর করা। ওয়েবপেজের প্রথম বাক্যটি সংশোধন করে সত্য তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। এর ফলে তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং সরকারি ওয়েবসাইটের প্রতি জন আস্থা বাড়বে।

প্রশাসনিক দুর্বলতা, তথ্য ব্যবস্থাপনার ত্রুটি অথবা অসাবধানতা – যে কারণেই এই অসামঞ্জস্যতা থাকুক না কেন, এটি দ্রুত নিরসন হওয়া জরুরি। মেহেরপুরের গণমাধ্যম ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে এবং বর্তমানের সংবাদমাধ্যমগুলোকে সঠিক মূল্যায়ন করতে নির্ভুল তথ্যের কোনো বিকল্প নেই।

এই ছোট অসঙ্গতি হয়তো অনেকের চোখে নাও পড়তে পারে, কিন্তু এটি একটি বৃহত্তর চিত্রের অংশ যা তথ্যের সঠিকতা ও স্বচ্ছতার গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই বিষয়ে নজর দেবেন এবং মেহেরপুরের সংবাদপত্রের সঠিক চিত্র জনসম্মুখে তুলে ধরবেন।




মেহেরপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন সম্পন্ন

মেহেরপুর মটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি সোনা, সম্পাদক মতিয়ার পুননির্বাচিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। ভোট গণনা শেষে আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয় সুত্রে নির্বাচনের এ ফলাফল জানাগেছে।

নির্বাচনে ১৫ টি পদের বিপরীতে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ২ হাজার ৯৯৮ জন ভোটারের মধ্যে ২ হাজার ৪৯৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি আহসান হাবীব সোনা (চেয়ার) ১ হাজার ৭১৯ ভোট পেয়ে পুননির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী বকুল হোসেন (ট্রাক্টর) পেয়েছেন ৬৮৮ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান (ডাব) ১ হাজার ২৩৪ ভোট পেয়ে পুননির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী সাখওয়াত হোসেন সবুজ (মোবাইল) পেয়েছেন ১ হাজার ১৯৬ ভোট।

কার্যকরী সভাপতি পদে সাজেদুর রহমান সাজু (গাভী) ৮৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী সৈয়দ রাকেশ হাসান (ফুটবল) পেয়েছেন ৭১১ ভোট।

সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী শাহিন আলী টুটুল (ঈগল পাখি) ১২২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী আলমগীর হোসেন (ছাতা) পেয়েছেন ৭৮৬ ভোট।

যুগ্ম সম্পাদক পদে এরশাদ আলী (ঘোড়া) ১ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী নাসিম ইসলাম (কলস) পেয়েছেন ৪৮৭ ভোট ।

সহ সাধারণ সম্পাদক পদে ফরহাদ হোসেন তুষার (গরুর গাড়ি) ১ হাজার ১২০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী সেন্টু শেখ (মাইক) পেয়েছেন ৯৭২ ভোট।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রমেজ উদ্দীন (সেলাই রেঞ্জ) ১২১৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী আফসারুল ইসলাম (হারিকেন) পেয়েছেন ৮৮৫ ভোট।

সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চাঁদ আলী (মাছ) ১ হাজার ৮৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী চঞ্চল শেখ (মই) পেয়েছেন ১ হাজার ৫২ ভোট।

কোষাধ্যক্ষ পদে মাহাবুব এলাহী (গোলাপ ফুল) ৯৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী মোফাজ্জেল হোসেন (চাঁদতারা) পেয়েছেন ৬২২ ভোট।

শ্রমিক কল‍্যাণ সম্পাদক পদে মাহাবুব হোসেন রিপন (হরিণ) ১২৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী খাইরুল ইসলাম (টায়ার) পেয়েছেন ৮৮৭ ভোট।

লাইন সম্পাদক পদে মুন্না ( টুপি) ৭৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী মুরসালিন (পানি জাহাজ) পেয়েছেন ৭২৪ ভোট।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রমিজ উদ্দিন (সেলাই রেঞ্জ) ৯২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তার নিকটতম প্রার্থী শাহিন আলী (হাতি) পেয়েছেন ৭৯৫ ভোট।

সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বকুল শেখ (ট্রাক্টর) ৭৬২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী চাঁদ আলি (মাছ) পেয়েছেন ৬৯১ ভোট। শ্রমিক কল্যাণ সম্পাদক পদে রেজাউল হক (কবুতর) ৫৪৭ ভোট নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী মাহবুব হোসেন রিপন (হরিন) পেয়েছেন ৫২২ ভোট।

প্রচার সম্পাদক পদে ইয়ারুল ইসলাম (রিক্সা) ১ হাজার ৩৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী সুমন (টেলিভিশন) পেয়েছেন ৬৩৩ ভোট। লাইন সম্পাদক পদে সোহেল রানা সজিব (মোটরসাইকেল) পদে ৮০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী মুরছালিন (পানি জাহাজ) পেয়েছেন ৭৪৫ ভোট।

এবং সদস্য পদে শরিফুল ইসলাম (খেজুর গাছ) ৯৭৫ ভোট, মহিন শেখ (টিউবয়েল) ৭২৮ ভোট এবং খবিরুল ইসলাম (ভ‍্যান) ৫৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।




জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধানের শীষে ভোট দিন

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শালদহ গ্রামে বিএনপি কর্তৃক মহিলাদের নিয়ে এক উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে আয়োজিত এ বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আমজাদ হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান গাড্ডু, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি উপাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন, গাংনী উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান বুলবুল, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আতাউল হক আন্টু, গাংনী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা ও তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, গাংনী পৌর জাসদের সাধারণ সম্পাদক সুলেরী আলভী, রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগীদুল আলম, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুসাইন, যুবদলের সদস্য ফারুক হোসেন, যুবদল নেতা মাহফুজ আলম রহিদুল।

বক্তারা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

উঠান বৈঠক শেষে আমজাদ হোসেন এলাঙ্গী, রায়পুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বিএনপির ঘোষণা করা ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করেন এবং আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে পুরো এলাকায় নির্বাচনী আমেজ আরও জোরদার হয়ে ওঠে।

লিফলেট বিতরণকালে রাস্তার দু’ধারে শতশত নারী ভোটার ধানের শীষের এমপি প্রার্থী আমজাদ হোসেনকে হাত তুলে অভিবাদন জানান।




গাংনীর মফিজ ফল ভাণ্ডার ভাঙচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুরের গাংনী বাজারে ‘মফিজ ফল ভাণ্ডার’ ভাঙচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দোকানটির স্বত্বাধিকারী মফিজুর রহমান।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাই রফিকুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত শনিবার বিকেলে গাংনী বাজারের আমিরুল মার্কেট ও এস এম প্লাজা মার্কেটের একদল লোক দোকানের ভেতরে ঢুকে জোরপূর্বক ভাঙচুর চালায়। প্রায় ৪০ বছর ধরে গাংনী বাজারে ফলের ব্যবসা করে আসছেন মফিজুর রহমান। জেলা পরিষদের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেওয়া দোকানঘরটিতেই তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাজারে চলমান রাস্তা নির্মাণ কাজকে কেন্দ্র করে ‘ম্যাপে না থাকা’ অজুহাতে অভিযুক্তদের একটি চক্র গত ৪-৫ মাস ধরে তাকে দোকান ভাঙার হুমকি দিয়ে আসছিল। এমনকি দোকান অক্ষত রাখতে তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তিনি সেই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ১৫ নভেম্বর দুপুর ২টার দিকে অভিযুক্তরা লোহার রড, লাঠিসহ একটি সংঘবদ্ধ দল নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। তারা দোকানের মালামাল লুটপাটের পাশাপাশি প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

রফিকুল ইসলাম আরও জানান, হামলার সময় আসামি সালাউদ্দিন শাওন দোকানের ক্যাশ ড্রয়ার থেকে মহাজনকে দেওয়ার জন্য রাখা ১৫ লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে মফিজুর রহমানকে মারধর করে দোকান থেকে বের করে দেয় হামলাকারীরা।

এ ঘটনায় মফিজুর রহমান গাংনী সাবেক পৌরমেয়র আমিরুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিন শাওন, কাপড় ব্যবসায়ী রেজাউল হক, মানিক, সৌখিন বস্ত্রালয়ের মালিক রাশেদুল ইসলাম, কাপড় ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবি, ওয়ালটন শোরুমের স্বত্বাধিকারী সাজু এবং ইমন টেইলার্সের মালিক ইমনের নামে অভিযোগ দিতে গাংনী থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।




গাংনীতে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি এবং শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার বিকেলে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে এ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আখেরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা ও সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির নেত্রী ফরিদা পারভীন, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম সোহাগ, মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন এডাম, ইমন হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম বিপ্লব, গাংনী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রিপন হোসেনসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার পর থেকেই দলের একাংশের নেতাকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।




ঝিনাইদহ-২ আসনে নির্বাচন নিয়ে নতুন মেরুকরণ, মাঠে থাকছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী

যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ত্রয়োদশ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মঝে বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ২০২৬ সালেরঝিনাইদহ ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে সম্ভাব্য সময় ঘোষণা দিয়েছেন। এলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তুতি নিতে রাতদিন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে।

গত ৩নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে ২৩৭ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। সেই তালিকায় ঝিনাইদহ জেলার মাত্র ১টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকী ৩টি অসনের প্রার্থীর নাম চুড়ান্ত না করায় বিএনপির মধ্যে বিষন্নতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির মধ্যে এই বিষন্নতা বেশি দানা বেধেছে। অনেকে মনে করছেন হাসিনা সরকারের পতনের সময় যুগপথ আন্দোলনের শরিক বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে এই আসনটি ছেড়ে দিতে পারে। আবার বিএনপি তৃনমূল নেতা কর্মীরা মনে করেণ ঝিনাইদহ-২ আসনটি জেলার রাজনীতিতে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে, ফলে নমিনেশন যদি অন্য দলকে দেয়া হয় তাহলে জেলার রাজনীতিতে বিএনপির উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ঝিনাইদহ সদরের ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা একাধিক থাকলেও কেন্দ্র কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। মনোনয়ন দৌড়ে এ আসন থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ প্রচার প্রচারনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে, তাছাড়া ড্যাব নেতা সাবেক এমপি মসিউর রহমানে ছেলে ডা: মো: ইব্রাহীম রহমান (বাবু)’র প্রচারণাও লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া এই আসনে আরও মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম মশিউর রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর রবিউল ইসলাম লাভলু। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জোটের প্রার্থী হবে বলে জোর আলোচনায় রয়েছে। তাছাড়াও জাতীয় নাগরিক পাটি’র (এনসিপি) তারেক রেজা এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। অন্য দিকে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলটির জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকর নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে দলের নেতা কর্মীরা প্রত্যাশা করে। এদিকে জাতীয় পাটির প্রার্থী হিসেবে জেলা জাতীয় পাটির সভাপতি মেজর (অব:) মাহফুজুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পাটি একটি নির্বাচনমূখী অবাধ গণতাতিন্ত্রক রাজনৈতিক দল। দেশে অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন অনুষ্টিত হলে জাতীয় পাটি অবশ্যই অংশ গ্রহন করবে এবং আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দিলে আমি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে নির্বাচন করবো।

তাছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হচ্ছেন জেলা সভাপতি ডা. মমতাজুল ইসলাম। এছাড়া দ্বাদশ সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি মো: নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বছরাধিকাল ধরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচিত সহসভাপতি হিসেবে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন বলে সমালোচনাও রয়েছে। বর্তমানে তিনি বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকেন।

এ প্রসঙ্গে টেলিফোনে জানতে চাইলে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মূলত মহুল সাহেব নামমাত্র সহসভাপতি থাকলেও দলের কার্যক্রমে তিনি কখনো সক্রিয় ছিলেন না। ওনার সামাজিক কার্যক্রমে সুনাম আছে এ কথা সত্য, একটা ভালো ভাবমর্যাদাও আছে, এসব কারণেই তাকে সহসভাপতি করা হয়েছিল; তবে নামমাত্র সহসভাপতির পদ থাকলেও তিনি সেভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধারণ করেননি এবং সাংগঠনিক কোনো কাজে অংশগ্রহণ করেননি। জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথেও তার ছিল বিরাট দূরত্ব। এসব কারণেই মহুল সাহেবের সাথে আওয়ামী লীগের একটা রাজনৈতিক টানাপড়েন সব সময়ই ছিল।

এছাড়া ২০২২ সালের পৌরসভার নির্বাচনে মহুল সাহেব নৌকার বিপক্ষে মেয়র পদে ওনার ছোট ভাইকে দাঁড় করান, যা দলের কেউই মেনে নিতে পারেনি। ওনার ভাই পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় নির্বাচনের আগে ওনাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়, ওনার যে ভাই প্রার্থী ছিলেন তার প্রচারণা কলে তিনি এবং তার আরেক ভাই আক্রমণের শিকার হয়ে মারাত্মকভাবে জখম হলে মহুল সাহেব ২০২২ সালের জুন মাসে দল থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরে তিনি ২০২৪ সালে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয়লাভ করেণ।

আওয়ামী লীগের নানা সমালোচিত কর্মকান্ডের বিরোধীতার কারণে তাকে সবাই একজন ভালো মানুষ হিসেবে জানে। তাছাড়া তার পরিচালিত জাহেদী ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন দাতব্য কর্মকান্ড পরিচালনা করায় সবাই তাকে দানশীল হিসেবে জানেন, আওয়ামী লীগের একজন হিসেবে তিনি কখনো বিবেচনায় ছিলেন না। তিনি হয়তো ওই বিবেচনায় পরিচিত হতেও চাননি। এসব কারণেই আগামী নির্বাচনে মহুল সাহেব নির্বাচনে আসলে জনগণের সাড়া পাবেন বলে বিশ্বাস করেণ।

এবিষয়ে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেন, ভোট গণতান্ত্রিক অধিকার রাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ছাড়া সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারে, জনগণ যাকে বেছে নিবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন।

তিনি আরও বলেন আমি অনেক আগেই আওয়ামী লীগ ছেড়েছি। ২০২২সালে যখন আমার ভাই স্বতন্ত্র মেয়র নির্বাচন করে তখন আওয়ামী যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করে এবং প্রচার প্রচারণায় বাধা দেয় তাছাড়া প্রচারণার সময় আমার দুই ভাইসহ আমার ভায়ের কর্মী অনুসারীদের উপরে আক্রমন করে মারাত্মক ভাবে জখম করে, তারপর আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে নিজেকে ইস্তফা দিয়। পরে ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বহু হামলা মামলার মধ্যে জনগণের ভালবাসায় ভোটে জয়লাভ করি। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ এই সরকারের কাম্য তাই আশাকরি নির্বাচন অংশগ্রহন মূলক এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে।




নতুন কুঁড়ির দেশসেরা শিশুশিল্পী টাঙ্গাইলের প্রিয়সী চক্রবর্তী

একটি প্রতিভা, একটি কণ্ঠ ও একটি মঞ্চ—এই তিনের অপূর্ব মেলবন্ধনে প্রিয়সী চক্রবর্তী এখন নতুন কুঁড়ির দেশসেরা শিশুশিল্পী। গান যেন তার সঙ্গী, আর মঞ্চ যেন তার নিজের ঘর। সেই আলোকিত ঘরে দাঁড়িয়ে আট বছর বয়সি এই শিশুশিল্পী প্রমাণ করেছে—মন থেকে সংগীতচর্চা করলে বয়স কখনো বাধা হতে পারে না। নতুন কুঁড়ির রঙিন মঞ্চে তার গান লক্ষ শ্রোতার হৃদয় স্পর্শ করেছে।

প্রিয়সী চক্রবর্তী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শাহিন ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রিয়সী ২০২৫ সালের নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ‘ক’ শাখার সেরা পুরস্কার বিজয়ী শিশুশিল্পী। সে আধুনিক গান ও রবীন্দ্রসংগীত— উভয় বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এবারের নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় কোনো প্রতিযোগী দুটি বিভাগে প্রথম হতে পারেনি। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে পরিবারের উৎসাহ ও সহযোগিতা।

একদিন প্রিয়সীর বাবা টাঙ্গাইল শিল্পকলা একাডেমির ওয়ালে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন দেখতে পান। বিজ্ঞাপন দেখে মেয়েকে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর শুরু হয় প্রিয়সীর নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার যাত্রা। আঞ্চলিক বাছাই অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহে। নতুন কুঁড়ির মঞ্চে প্রিয়সীর প্রথম গান ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে চুপি চুপি বলে যায়…’। আঞ্চলিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রিয়সীকে নিয়ে পরিবারের স্বপ্ন বড় হতে থাকে।

প্রিয়সীর জন্ম ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল সদর উপজেলার আকুর টাকুর পাড়ায়। তার পিতা সঞ্জয় চক্রবর্তী সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা। আর মা রাখী চক্রবর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। দুই বোনের মধ্যে প্রিয়সী ছোট। বড় বোন শ্রেয়সীর কাছ থেকে সে সংগীতের প্রথম পাঠ গ্রহণ করে। শ্রেয়সী এখন দিল্লীতে সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করছেন। পরিবারের স্বপ্ন শ্রেয়সী ও প্রিয়সী দুজনই একদিন গুণী শিল্পী হবে। পরিবারের এই স্বপ্ন প্রিয়সীর মানসিক দৃঢ়তাকে আরও শক্তিশালী করছে।

দেশসেরা প্রিয়সীকে গানের শিক্ষা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসীত রায়। প্রিয়সীর সফলতার পিছনে গুণী এই শিক্ষকের অনেক অবদান রয়েছে। প্রিয়সী সম্পর্কে ড. অসীত রায় বলেন, ওর সংগীত প্রতিভা অসাধারণ। এই বয়সের কোনো শিশুশিল্পীর মধ্যে সংগীতের যে বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবে থাকা উচিত, ওর মধ্যে তার থেকে একটু বেশিই আছে। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় সে প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। ড. অসীত রায় আশাপ্রকাশ করে বলেন, প্রিয়সী একদিন বাংলাদেশের গর্ব করার মতো একজন গুণী শিল্পী হবে।

নতুন কুঁড়ির প্রতিটি ধাপেই প্রিয়সী তার নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সংগীতের প্রতি গভীর ভালোবাসার পরিচয় দিয়েছে। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় প্রিয়সীর পরিবেশিত গানের মধ্যে রয়েছে—‘ওই ঝিনুক ফোটা সাগর বেলা…’, ‘তুমি মিষ্টি করে দুষ্টু বলো…’, ‘মন তো ছোঁয়া যাবে না…’, ‘আমি কি তোমার মতো এত ভালোবাসতে পারি…’ প্রভৃতি। তার কণ্ঠ, সুর ও গায়কি দর্শক-শ্রোতার মন ছুঁয়েছে। প্রতিযোগিতার বিচারকগণও তার অনবদ্য প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছেন। প্রিয়সীর গান শুনে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্বে থাকা কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা বলেন, ‘‘প্রিয়সীর অনবদ্য একটা কণ্ঠ রয়েছে। ওর গান শুনলে যেন ওর গানের ওপর ঘুমাতে ইচ্ছা করে। ওর গানে কোনো ভুলভাল নেই।’’ প্রিয়সীর গানের প্রশংসা করে প্রতিযোগিতার বিচারক কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম বলেন, ‘‘সে অনেক সুন্দরভাবে সংগীত পরিবেশন করেছে। তার গানের সুর ও উচ্চারণ—দুটিই ভালো।’’ বিচারক ময়নুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘আমি প্রিয়সীর সংগীত পরিবেশনায় অনেক বেশি সন্তুষ্ট হয়েছি। বয়স অনুযায়ী সে যথেষ্ট ভালো করেছে।’’ বিচারক মকসুদ জামিল মিন্টু বলেন, প্রিয়সী প্রতিটি গান সুন্দরভাবে গেয়েছে। ওর সুর ও এক্সপ্রেশন ভালো ছিল। গানের ভুবনে সে একদিন আলো ছড়াবে।’’ প্রিয়সীর গান শুনে বিচারক সাজ্জাদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘‘অসাধারণ, অসাধারণ এবং অসাধারণ। ওর গায়কি, উচ্চারণ—সবকিছু ভালো লেগেছে।’’ নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালনকারী কণ্ঠশিল্পী আগুন ও ন্যান্সিও প্রিয়সীর গানের প্রশংসা করেছেন।

গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকার চেক ও ট্রফি গ্রহণ করেন নতুন কুঁড়ির ‘ক’ শাখার দেশসেরা শিশুশিল্পী প্রিয়সী চক্রবর্তী। পুরস্কার গ্রহণের পর প্রিয়সী বলেন, ‘‘সরকারপ্রধানের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই পুরস্কার আমার সংগীতজীবনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। … আমি বড় হয়ে একজন গুণী শিল্পী হতে চাই।’’

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বিশেষ সংযোজন। নতুন কুঁড়ির মঞ্চ শিশুদের শৈল্পিক বিকাশের পাশাপাশি তাদের দায়িত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলে। ১৯৭৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা উপমহাদেশের বৃহত্তম রিয়েলিটি শো। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২০ বছর পর নতুন উদ্যমে শুরু হয় নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই প্রতিযোগিতা বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এ বছর ‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতায় প্রায় ৩৯ হাজার প্রতিযোগী অংশ নেয়। ৬৪ জেলাকে ১৯টি অঞ্চলে ভাগ করে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক পর্ব থেকে ‘ক’ ও ‘খ’ শাখা মিলিয়ে সকল ক্যাটাগরিতে প্রায় ১৪ হাজার প্রতিযোগী বিভাগীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়। দেশের আট বিভাগে একযোগে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার মোট বিষয় ছিল ১২টি। এগুলো হলো : অভিনয়, আধুনিক গান, আবৃত্তি, উচ্চাঙ্গ নৃত্য, কৌতুক, গল্পবলা, দেশাত্মবোধক গান, নজরুলসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, লোকসংগীত, সাধারণ নৃত্য ও হামদ-নাত। বিভাগীয় পর্যায় শেষে শুরু হয় চূড়ান্ত পর্ব। আট বিভাগ থেকে ১ হাজার ৪০ জন প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ ২৭৯ জন প্রতিযোগী সেরা ১০ পর্বে অংশগ্রহণ করে। এই পর্ব থেকে সেরা ৫ জন বাছাই করা হয়। এরপর ফাইনালে ‘ক’ বিভাগ থেকে ৩৬ জন এবং ‘খ’ বিভাগ থেকে ৩৭ জন প্রতিযোগীকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। দীর্ঘ এই প্রক্রিয়ায় ‘ক’ বিভাগে সেরাদের সেরা অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন হয় প্রিয়সী চক্রবর্তী।

এ বছর স্বচ্ছ ও ন্যায্য প্রক্রিয়ায় সারা দেশ থেকে নতুন কুঁড়িদের বাছাই করা হয়েছে। ২৯৩ জন বিজ্ঞ বিচারক এই বাছাই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত ছিলেন। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এবারে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে সকল শ্রেণির শিশু-কিশোর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। বিটিভিতে প্রচারিত নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার প্রতিটি পর্ব বিটিভির ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলেও প্রচার করা হয়েছে। এর ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই প্রতিযোগিতার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিটি শিশুর কোনো না কোনো বিশেষ প্রতিভা থাকে। শিশুদের বিশেষ প্রতিভা খুঁজে বের করাই নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা প্রিয়সীর মতো অসংখ্য প্রতিভা আবিষ্কার করেছে, যা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। ‘নতুন কুঁড়ি’ শিশু-কিশোরদের কাছে শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং শিল্পজীবনের প্রথম পাঠশালা। অল্প বয়সে মঞ্চে দাঁড়িয়ে গানের সুর তোলা, কবিতার ছন্দে ভেসে যাওয়া কিংবা নাটকের সংলাপ উচ্চারণ করার অভিজ্ঞতা শিশু-কিশোরদের সারাজীবনের আত্মবিশ্বাস গড়ে দেয়।

প্রিয়সীর সেরা হওয়া শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার অর্জন। প্রিয়সীর সাফল্য প্রমাণ করেছে—শিশুপ্রতিভা যথাযথ সুযোগ ও উৎসাহ পেলে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করতে পারে। তার এই সাফল্য অন্য শিশু-কিশোরদেরও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করবে। প্রিয়সীর মতো অসংখ্য প্রতিভাবান শিশু আগামী দিনের নতুন কুঁড়ির মঞ্চে প্রতিভার আলো ছড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা।

লেখক : বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সদস্য এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে কর্মরত