ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস চাকরি করেন পোস্টমাস্টারের

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক তারকা ইমরুল কায়েস এখন মেহেরপুরের উজলপুর ডাকঘরের কাগজে-কলমে কর্মচারী। তার মাসিক সম্মানী মাত্র চার হাজার চারশত নব্বই টাকা। কিন্তু যে ডাকঘরে তিনি কর্মরত বলে সরকারি রেকর্ডে দেখা যায়, সেই অফিসের অস্তিত্বই মেলে না বাস্তবে।

বিষয়টি জানাজানি হতেই মেহেরপুর জুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকে অবাক হয়ে বলছেন, জাতীয় দলের ক্রিকেটার কি সত্যিই সাড়ে চার হাজার টাকার সরকারি চাকরিজীবী? নাকি এটি প্রভাব খাটিয়ে নেওয়া এক নামমাত্র নিয়োগ?

উজলপুর গ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক চিঠি ও নথিপত্র ফেরত যাচ্ছে প্রেরকের কাছে। ফয়সাল নামের একজন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার ভিসা সংক্রান্ত কাগজ পাননি, সে চিঠি আবার যুক্তরাষ্ট্র ফেরত গেছে। আবার কেউ চাকরির সাক্ষাৎকারের ডাক হারিয়েছেন। এমন অভিযোগ পেয়ে সরজমিনে উজলপুর গ্রামে গেলে দেখা যায়, গ্রামটিতে ডাকঘরের কোনো অস্তিত্বই নেই। কোথাও কোনো সাইনবোর্ড নেই, নেই পোস্ট অফিসের কোন চিহ্ন।

চায়ের দোকানে জিজ্ঞেস করতেই কেউ বললেন, এই এলাকায় তো কোনো পোস্ট অফিস নাই। অন্য কেউ বললেন, ইমরুল কায়েসের বাবা ও দাদা নাকি আগে কাজ করতেন।সে সময় তাদের বাড়িতেই ডাকঘর ছিল। এখন কে বা কারা কাজ করছে সে সম্পর্কে তাদের ধারণা নাই।

মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরের রেকর্ডে দেখা যায়, উজলপুর ডাকঘরে ইমরুল কায়েস ও আব্দুল জলিল ইডিএ পদে এবং রাজু আহমেদ ইডিএমসি পদে কর্মরত। কিন্তু গ্রামের মানুষ জানে না, তারা কারা বা কোথায় আছেন। জলিল নামে একজন চিঠি বিলি করতেন, পরে তিনি বিদেশে চলে গেছেন বলে জানা যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইমরুল কায়েস বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার একটি ক্রিকেট একাডেমিতে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।

মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘চার-পাঁচ বছর হলো ইমরুল কায়েস ডাক বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। বিস্তারিত জানতে হলে বিভাগীয় ডাক পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তবে ইমরুল আমাদের এলাকার ছেলে, তারকা ক্রিকেটার, মেহেরপুরের গর্ব। তাকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু না লিখলেই ভালো।’

বিভাগীয় ডাক পরিদর্শক অলক কুমার বিশ্বাস মুঠোফোনে প্রতিবেদককে বলেন, ‘২০২১ সালে তৎকালীন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ডিও অনুযায়ী ইমরুল কায়েসকে উজলপুর ডাকঘরের ইডিএ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। মাসিক সম্মানী ৪৫০০ টাকা। এটি লাভজনক কোনো পদ নয়।’

তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, যে ডাকঘর বাস্তবে নেই, সেখানে কীভাবে সরকারি নিয়োগ কার্যকর থাকে?

অস্ট্রেলিয়া থেকে মুঠোফোনে ইমরুল কায়েস বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন প্রতিবেদকের সাথে। তিনি ডাক বিভাগে তার সম্পৃক্ততা এবং সাম্প্রতিক সময়ে চিঠি ফেরত যাওয়ার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে নেন।

তিনি বলেন, ‘গ্রাম পোস্টমাস্টারদের কাজ চিঠি বিলি করা না। আমি পোস্ট অফিসের অনুরোধে তাদের সাথে আমার নামটি যুক্ত করেছি, যাতে বাংলাদেশের ডাক বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি চিঠি ফেরত যাওয়ার বিষয়টি পোস্টম্যানের ভুল, আমার নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জলিল সাহেব এখন ওমরাহ করতে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। দেশে ফিরলেই সমস্যা সমাধান করবেন।’
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল সালাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখব, সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় করণীয় পদক্ষেপ অবশ্যই গ্রহণ করা।’

স্থানীয়রা বলছেন, ইমরুল কায়েস দেশের একজন সফল ক্রিকেটার, তার পরিবারও প্রভাবশালী। ইমরুলের শ্বশুর জহুরুল ইসলাম মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এছাড়াও তিনি দেশের শীর্ষ একজন ঠিকাদার ও পরিবহন ব্যবসায়ী। তাদের অনেকেরই প্রশ্ন, গ্রামের কোনো দরিদ্র ছেলেকে এই পদে সুযোগ না দিয়ে এমন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়াটা কতটা ন্যায্য?

উল্লেখ্য, ইমরুল কায়েসের দাদা কায়েম বিশ্বাস পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া থেকে পঞ্চাশের দশকে মেহেরপুরে এসে বসতি গড়েছিলেন। তার দাদা ও পিতার দুজনেই দুপুরবে গ্রাম পোস্টমাস্টার হিসাবে কাজ করেছেন। তার পিতা বনি আমিন বিশ্বাস ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

তবে, যে গ্রামে ডাকঘরের অস্তিত্বই নেই, যেখানে কর্মচারীরা দেশের বাইরে, সেই অফিসের মূল পদে একজন সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার, এই নিয়োগ কতটা নিয়মতান্ত্রিক আর কতটা প্রভাবের ফল, সেটিই এখন মেহেরপুর জুড়ে আলোচনার বিষয়।




আ.লীগের লকডাউন প্রতিরোধে মেহেরপুরে জেলা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল 

আওয়ামী লীগের ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের লকডাউন কর্মসূচির বিরুদ্ধে এবং মেহেরপুর-১ আসনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি।

গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে বিএনপির কার্যালয় থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

মিছিলে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা “স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন জিন্দাবাদ” এবং “মেহেরপুর-১ আসনের মনোনয়ন বাতিল করো” ইত্যাদি স্লোগান দেন।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ইলিয়াস হোসেন, আলমগীর খান ছাতু, আবু সালেহ নাসিম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক লিটন, রোমানা আহমেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফায়েজ মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা প্রমুখ।

এছাড়াও এসময় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমুল হোসেন মিন্টু, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকা বিল্লাহ, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন তপু, জেলা শহীদ সংসদ জিয়া মঞ্চের সভাপতি আলিফ আরাফাত খান, বিএনপি নেতা নাহিদ আহমেদ এবং জেলা যুবদলের সদস্য মেহেদী হাসান রোলেক্সসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।




দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নে বাবু খানের নির্বাচনী পথসভা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড থেকে বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিকেলে হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে জয়রামপুর চৌধুরীপাড়া ঈদগাহ মাঠে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা-০২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, জেলা বিএনপির সভাপতি, বিজিএমইএ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “অনেক দিন পর এ দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্মীয় স্বাধীনতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নসহ মোট ৩১ দফা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা দয়া করে নারীদের, বাড়ির মহিলাদের বিএনপির ধানের শীষের কথা বলবেন। একটি দল জান্নাতের কথা বলে মা-বোনদের বিভ্রান্ত করছে। কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়, সে বিষয়ে পুরুষদের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ভোট জনগণের অধিকার সবাই যে ধানের শীষে ভোট দেবে, তা নয়। কিন্তু কেন ধানের শীষে ভোট দিতে হবে, তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচির কথা মানুষকে বুঝাতে হবে। তারা যদি বুঝতে পারে, তাহলে অবশ্যই ধানের শীষে ভোট দেবে। কারণ এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে সব মানুষেরই কোনো না কোনোভাবে উপকার হবে, ইনশাআল্লাহ।”

হাউলী ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আক্কাস আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হাসান মিল্টন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, সহসভাপতি সোলেমান মল্লিক, যুগ্ম সম্পাদক মন্টু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর আবুল হাসেম, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী, সহসভাপতি মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আক্তার সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক মালেক রুস্তম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান ঝন্টু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক একরামুল হক, সদস্য সচিব জাকির হোসেন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান মিল্টন, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাজাহান খান, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আফজালুল হক সবুজ, হাউলী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফারুক হোসেন বাবু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তামিম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক মল্লিকসহ হাউলী ইউনিয়নের বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান।

সভায় বক্তারা বলেন, এলাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে আছে। বিশেষ করে চৌধুরীপাড়া, তারিনিপুর, ডুগডুগিসহ আশপাশের এলাকার কৃষকরা ফসল পরিবহনে ভোগান্তিতে পড়ছেন। এ সমস্যা সমাধানসহ জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান বক্তারা।

পথসভা শেষে প্রধান অতিথি মাহমুদ হাসান খান বাবু দামুড়হুদা পুড়াপাড়া সার্বজনীন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দিরে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে একে একে জয়রামপুর ইয়ুথ ক্লাব, ডুগডুগি, ছোট দুধপাতিলা ও বড় দুধপাতিলা গ্রামে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।




মেহেরপুর পুলিশ সুপারের বাসভবনে আগুন

মেহেরপুর পুলিশ সুপারের বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে শহরের কোর্ট মোড় এলাকায় অবস্থিত পুলিশ সুপারের বাসভবনের ভেতর থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন সেখানে জড়ো হন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের একটি দল দ্রুত সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, বাসভবনে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটির বিস্ফোরণের ফলে এ ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাসভবনের ডাইনিং স্পেসে রাখা ফ্রিজ, সোফা সেট, চেয়ার, টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে দমকলের দল।

বাসভবনে একা থাকেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসভবনে এসে দেখি আগুন জ্বলছে। এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক সাকরিয়া হায়দার।

উল্লেখ্য, এ সময় সংবাদকর্মীরা ভেতরের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ ধারণ করতে গেলে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবলরা গণমাধ্যম কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।




ঝিনাইদহ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট ঝিনাইদহ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ফ্রন্টের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও কেক কাটা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফন্ট্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি স্বাধীন অধিকারী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল মাখন, সাধারন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন, পূজা উদযাপন ফন্ট্র ঝিনাইদহ জেলা শাখার সদস্য সচিব সমির হালদার, সদর উপজেলা শাখার আহবায়ক গনেশ চন্দ্র বিশ্বাস, সদস্য সচিব অচিন্ত রায়, হরিণাকুন্ডু শাখার আহবায়ক কাত্তিক দেবনাথসহ ফন্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন ফন্ট্র ঝিনাইদহ জেলা শাখার আহবায়ক মিলন কুমার ঘোষ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এক বছর আগে আজকের এই দিনে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেররা নির্বিঘ্নে নিরাপদে উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট এর যাত্রা শুরু হয়। আমরা সফলভাবে এক বছর অতিক্রম করেছি। সামনের দিনগুলোতে মিলেমিশে সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যবক্ত করা হয়। আলোচনা শেষে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়।




ঝিনাইদহে আইনজীবী ঐক্যপরিষদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

সারাদেশে চলমান নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন আইনজীবীরা। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঝিনাইদহ আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সকাল ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

জেলা আদালত প্রাঙ্গণে মিছিলটি প্রদক্ষিণ করে। পরে আইনজীবী বার ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আইনজীবী রাশেদ হাসান জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ও বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এসএম মশিউর রহমান।

আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী একরামুল হক আলম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ বিশ্বাস, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি দবির হোসেন, ইসলামী লইয়ারস কাউন্সিলের সভাপতি এ্যাডভোকেট শফিউল আলম, আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব আকিদুল ইসলাম, সাবেক সম্পাদক শামছুজ্জামান লাকি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি ইশারত হোসেন খোকন, আইনজীবী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক রাশিদুল হাসান জাহাঙ্গীর, আইনজীবী ফোরামের রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, আব্দুল আলিম ও এ্যাডভোকেট রাকিবুল হাসান।

এসময় বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সারাদেশে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ সহ নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও দোসররা। বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের দাঁত ভাঙা জবাব দেবে। এসময় বক্তারা আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য প্রতিহত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।




পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমাতে মেহেরপুরে সাঁতার প্রশিক্ষণের উদ্বোধন

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম বলেন, প্রতি সপ্তাহে অন্তত একজন-দু’জন বাচ্চা পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। নদীতে ডুবে বা পুকুরে ডুবে মারা যাচ্ছে। আমার মনে হয়েছে, তাদের সাঁতারটা জানা নেই। তাদেরকে যদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, অন্তত তারা যদি সাঁতারটা জানে, তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনাগুলো এড়ানো সম্ভব হবে। সে দৃষ্টিকোণ থেকেই আমরা প্রতিটি উপজেলায় একটি করে সাঁতার প্রশিক্ষণের প্রকল্প হাতে নিয়েছি।

বুধবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদে নবনির্মিত সুইমিং পুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল সালাম।

তিনি আরও বলেন, আজ মেহেরপুর সদরে সাঁতার কাটার এই প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হলো। অন্য উপজেলাতেওনির্দেশনা দেওয়া আছে, আজ থেকে সব উপজেলায় সাঁতার প্রশিক্ষণ চালু হবে। ক্লাস সিক্স থেকে শুরু করে ক্লাস টেন পর্যন্ত আপাতত পর্যায়ে প্রত্যেককে প্রশিক্ষিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে আমাদের ছেলে-মেয়ে যারা সাঁতার জানে না, তাদের এই পুকুরে বা নদীতে যেতে না দিই। সকলে একটু সচেতন থাকি, সতর্ক থাকি।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, মেহেরপুরে প্রায়ই দেখা যায়, সাঁতার না জানার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যোগদানের পর থেকেই এই ধরনের দুর্ঘটনায় অনেক বাচ্চা মারা যাওয়ার খবর শোনা গেছে। আমরা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানিয়েছি, যেসব শিক্ষার্থী সাঁতার জানে না তাদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে, যাতে কোনো বাচ্চা প্রশিক্ষণ না পাওয়ার কারণে অথবা সাঁতার না জানার কারণে মারা না যায় কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।

এছাড়াও এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, উপজেলা বিআরডিবি অফিসার রকিবুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আনিসুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




জীবননগরে একতারপুর ইকো পার্ক ও নীলাম্বরী ভিউ পয়েন্টের উদ্বোধন

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে নির্মিত একতারপুর ইকো পার্ক ও পার্কের মনোরম ‘নীলাম্বরী ভিউ পয়েন্ট’ এর বর্ণাঢ্য উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা যৌথভাবে উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমীন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দজাদী মাহবুবা মঞ্জুর মৌনা, জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস, উপজেলা প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জুয়েল শেখ, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাকির উদ্দিন মোড়ল, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. নূর আলম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখানে একটি ছোট কিন্তু সম্ভাবনাময় ইকো পার্ক তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে কিছু ফ্যাসিলিটি ডেভেলপমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে আরও উন্নত করা হবে। ‘নীলাম্বরী ভিউ পয়েন্ট’ এর মাধ্যমে দর্শনার্থীরা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এটি জীবননগরের মানুষের জন্য এক নতুন বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।

তিনি আরও জানান, এই ইকো পার্ক ও ভিউ পয়েন্ট ভবিষ্যতে চুয়াডাঙ্গা জেলার পর্যটন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।




দর্শনায় দুস্থ ও পথচারীদের মাঝে খাবার বিতরণ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দুস্থ ও পথচারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দর্শনা পৌর যুবদলের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ড থেকে রেলবাজার ও পুরাতনবাজার এলাকায় দুস্থ ও পথচারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এই খাবার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে দর্শনা পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ জালাল উদ্দীন, যুবদলের সংগ্রামী সদস্য রকিবুল হাসান ব্রাইট, যুগ্ম আহবায়ক অপু সুলতান (আপু), যুবদল নেতা মোহন, মোঃ তহিরুল ইসলাম, সদস্য শরীফ, শাহিন ইসরাফিল, নাজমুল, আশিক, সজীব, সোহেল, আকাশ, মাসুম, শফি, ইখলাস, মমিন, ডাবলু সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




দর্শনায় ঘরের তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ঈশ্বরচন্দ্রপুরে রাতের আধারে ঘরের তালা ভেঙে নগদ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে। এ চুরির ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে।

জানাগেছে, দর্শনা পৌর এলাকার ঈশ্বরচন্দ্রপুর বাগানপাড়া এলাকার পিরুর ছেলে সোহাগের আত্মীয়ের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর সোমবার দুপুরে তার বাড়ির লোকজন ঘরে তালা দিয়ে সেখানে চলে যান। পরে তারা বাড়িতে ফিরতে না পারায় সোহাগ রাত ৯টার দিকে বাড়িতে গিয়ে ঘর-বাড়ি দেখে আবার বাজারে তার দোকানে চলে যান।

এই সুযোগে অজ্ঞাতনামা চোররা রড দিয়ে ঘরের তালা ভেঙে প্রবেশ করে এবং সবকিছু তছনছ করে। ঘরে থাকা নগদ টাকা ও রুপার এবং স্বর্ণালংকার- চেইন, আংটি, কানের দুল এবং নুপুর চুরি করে নিয়ে যায়। পরে দোকান বন্ধ করে সোহাগ বাড়িতে ফেরার সময় দরজার সামনে একটি রড পড়ে থাকতে দেখে। ঘরে ঢুকে তিনি দেখতে পান তালা ভাঙা এবং সব জিনিসপত্র তছনছ করা।

বাড়ির মালিক সোহাগ জানান, চোররা ঘরের তালা ভেঙে নগদ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের আংটি, ১টি স্বর্ণের চেইন, ১টি রুপার আংটি ও ১ জোড়া রুপার নুপুর চুরি করেছে।