চুয়াডাঙ্গায় আইডিয়া প্রদর্শনী ও অনুদান বিষয়ক আলোচনা

চুয়াডাঙ্গায় তরুণ সবুজ উদ্যোক্তাদের আইডিয়া প্রদর্শন ও অনুদান প্রদান বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের মালোপাড়ায় ওয়েভ ফাউন্ডেশন ট্রেনিং সেন্টারে সোমবার দিনব্যাপি এ অনুষ্ঠান হয়।

জেলার যুব উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে ‘ইয়ুথ গ্রিণ এন্টারপ্রেণারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে’র আওতায় সবুজ ব্যবসায়িক আইডিয়া বাস্তবায়নকারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ অনুষ্ঠান হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা তাদের উদ্ভাবিত সবুজ ব্যবসায়িক আইডিয়া ও পণ্য উপস্থাপন করেন এবং পণ্যের গুণগত মান ও প্রস্তুতপ্রণালী বর্ণনা করেন।

এতে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফিরোজ আহমেদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক জহির রায়হান। বিচারকগণ উপস্থাপিত প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব ও কার্যকারিতা যাচাই করেন। এ সময় বিচারকরা বলেন, উদ্যোগগুলো স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশ রক্ষায় এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

উল্লেখ্য, Youth Green Entrepreneurship Development Project টি ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে এই প্রকল্পটি চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তরুণদের পরিবেশবান্ধব ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যেই এই বিশেষ আয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলার সকল উপজেলা ও ঝিনাইদহ উপজেলার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং যুব উদ্যোক্তাসহ মোট ৫১০ জন প্রশিক্ষাণার্থী নিবিড় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তারা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে কীভাবে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে হাতে-কলমে জ্ঞান অর্জন করেছেন। এই প্রশিক্ষিত তরুণরা নিজ নিজ এলাকার বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যা চিহ্নিত করে মোট ৪৮টি সৃজনশীল সবুজ ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শরিফুল আলম লিটন, প্রকল্প কর্মকর্তা কানিজ সুলতানা, মাহবুব হোসেন আবির এবং জিল্লুর রহমান রাজা।




‘পরীক্ষায় উপযুক্ত নয়’ বলায় ঝিনাইদহে শিক্ষককে হাতুড়িপেটা

বছরে মাত্র ২৫ দিন ক্লাসে উপস্থিত থাকায় এক শিক্ষার্থীকে ‘পরীক্ষায় উপযুক্ত নয়’ বলে মন্তব্য করায় শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে হাতুড়িপেটা করেছেন শিক্ষার্থীর বাবা।

এই ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শোয়াইবনগর কামিল মাদরাসায়। শিক্ষার্থীর পিতা অভিযুক্ত শাহাজান কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার আড়পাড়া দরগা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী আহত শিক্ষক হাবিবুর রহমান কালীগঞ্জের শোয়াইবনগর কামিল মাদরাসার গণিতের শিক্ষক ও একই উপজেলার মাজদিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে।

মাদরাসার একাধিক শিক্ষক জানান, শোয়াইবনগর কামিল মাদরাসার নবম শ্রেণির এক ছাত্র গত ১১ মাসে মাত্র ২৫ দিন ক্লাসে উপস্থিত ছিল। এ কারণে তাকে ‘পরীক্ষার উপযুক্ত নয়’ বলে মতামত দেন শিক্ষকরা। এতে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পরিবারে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ দেয় ওই শিক্ষার্থী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই ছাত্রের বাবা শাহাজান। শনিবার কালীগঞ্জ পৌর এলাকার আড়পাড়া দরগা মোড়ে সামনে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষক হাবিবুর রহমান ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তার পথ রোধকরে শাহাজান। পরে তাকে হাতুড়িপেটা করেন। এবস্থায় স্থানীয়রা শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেণ।

শোয়াইবনগর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘ওই ছেলে নিয়মিত ক্লাস করে না। পড়াশোনার মানও সন্তোষজনক নয়। সে কারণে তাকে তো আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া যায় না। কিন্তু বিষয়টি তার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। এ কারণে শ্রেণি শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হাতুড়িপেটা করেছেন তার বাবা। বিষয়টি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শিক্ষা অফিসে জানানো হয়েছে। প্রশাসন এ ঘটনায় দোষীদের বিচার না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবো।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত শাহাজান এর আগেও সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশি তদন্তে শাহাজানের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে শাহাজান।

ভুক্তভোগী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটা শিক্ষার্থী আমাদের সন্তানের মতো। দায়িত্ববোধ থেকেই শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিতি ও তাদের যোগ্যতার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়। ওই ছেলে গত ১১ মাসে মাত্র ২৫ দিন ক্লাসে উপস্থিত ছিল। আমি শ্রেণি শিক্ষক হওয়ায় তার পরিবার আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে তার বাবা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহাজানের বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী আদুরি বেগম বলেন, ‘শিক্ষকরা আমার ছেলেকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে বেড়াচ্ছে। আমাদের পরিবার নিয়েও শিক্ষক হাবিবুর রহমান বিভিন্ন জায়গায় বাজে মন্তব্য করেছেন। মানুষ আমাদের কাছে এসব কথা বলেছে। এসব কারণে রাগের জেরে হয়তো শিক্ষক হাবিবুরকে মারধর করেছে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে কি-না জানি না।




ঝিনাইদহে অনূর্ধ্ব ১৭ জাতীয় ফুটবল লীগের উদ্বোধনী ঘোষণা

ঝিনাইদহে অনূর্ধ্ব ১৭ জাতীয় ফুটবল লীগ‘চিত্রা ভেন্যু’র খেলার শুভ সূচনা করা হয়েছে।  সোমাবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে শহরের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে এই জাতীয় ফুটবল লীগের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সুবীর কুমার দাস প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এই খেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন।

এসময় লীগ কমিটির চেয়ারম্যার সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার কায়সার হামিদ, সাঈদ হাসান কানন, নাজমুল হাসান লোভন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, ঝিনাইদহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আহসানুজ্জামান ঝন্টুসহ স্থানিয় ও সাবেক ফুটবলারগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ বছর সারাদেশে ৮টি ভেন্যুতে এই ফুটবল লীগ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে ঝিনাইদহ ভেন্যুতে খুলনা বিভাগের ৮ জেলার ফুটবল দল দুইটি গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ঝিনাইদহ ভেনু্যুর দলগুলো হলো ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা দল।

উদ্বোধনী দিনে এ গ্রপের চারটি দল অংশ গ্রহন করে। প্রথম খেলায় নড়াইল অনুর্ধ্ব ১৭ দল ১-০ গোলে স্বাগতিক ঝিনাইদহ দলকে

পরাজিত করে এবং দ্বিতীয় খেলায় সাতক্ষীরা দল মাগুরা দলের বিরুদ্ধে ২-০ গোলে বিজয়ী হয়।

আগামী ৩১ ডিসেম্বর এই ভেন্যুর চুড়ান্ত খেলা অনুষ্ঠিত হবে।




হাদি হত্যার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে : আইন উপদেষ্টা

শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার পুলিশ রিপোর্ট আসার সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে এক পোস্টে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর ১০ ধারা অনুযায়ী পুলিশ রিপোর্ট আসার পর সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করা হবে।’

এদিকে, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি বিচারিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নেওয়ার দাবিও জানানো হয়।

সোমবার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এসব দাবি জানিয়েছেন।

ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ শুধু রক্ত দিয়ে যাবে সেটা শেষ। এখন থেকে রক্ত দেব না। যারা আমার ভাইকে হত্যা করছে, তাদের বের করার দায়িত্ব পালন করতে না পারলে বাংলাদেশের জনগণ কিন্তু রক্ত নেওয়া শুরু করে দেবে। রক্তপাত একবার শুরু হয়ে গেলে আপনারা কিন্তু সেটা থামাতে পারবেন না। আপনাদের হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, ওসমান হাদির হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করেন।’

তিনি বলেন, জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য এই হত্যাকাণ্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এ ঘটনায় দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে রাষ্ট্রের ওপর জনগণের আস্থা আরও ক্ষুণ্ন হবে। সেজন্য ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নিতে হবে রাষ্ট্রকে।

এর আগে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের পল্টন থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। ওসমান হাদির মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়।




কুষ্টিয়া-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী রাগীব রউফ চৌধুরীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। মনোনয়ন সংগ্রহের সময় ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরীর সাথে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ফরম সংগ্রহ শেষে ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। এই আসনের মানুষ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মানুষ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য, মানুষের বাকস্বাধীনতা ও অধিকার আদায়ের জন্য এই নির্বাচন। আমরা বিশ্বাস করি সুনামগঞ্জ-২ আসনের মানুষ ধানের শীষের পক্ষে রায় দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করবে ইনশাআল্লাহ।

ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী আরও বলেন, “এখন সময় ঘরে ঘরে যাওয়ার, প্রতিটি ভোটারের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়ার। আমাদের প্রতীক ধানের শীষ—এটা শুধু একটা প্রতীক নয়, এটা গণতন্ত্রের প্রতীক, মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার প্রতীক।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা দেশের মানুষকে ভালোবাসি, এই মাটি ও মানুষের পক্ষে কথা বলি, তাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। ভোটারদের বোঝাতে হবে, পরিবর্তনের জন্য ধানের শীষে ভোট দিতে হবে।”

এসময় ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব শাহজাহান আলী, মিরপুর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বানী, পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার সিরাজুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব খন্দকার তসলিম উদ্দিন নিশাত, কুষ্টিয়া জেলা মৎস্যজীবি দলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম রেজা, মিরপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম শাহিন, মিরপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম আলী, পোড়াদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মেহেদী হাসান পলাশ, বারুইপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রাশেদুজ্জামান রঞ্জুসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া-২ আসনটি জেলার রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিচিত। ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ায় নির্বাচনী এলাকার সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।




মেহেরপুরে বিএনপি নেতা জাকির হোসেনের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন

মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর) আসনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেনের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের কাছ থেকে তাঁর প্রতিনিধি দল এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন যুবনেতা মো. আলমগীর হোসেন, মো. পারভেজ ও মো. শীলন।

এ ছাড়া এ সময় জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হক, জেলা নবীন দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান সোহাগ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মনোনয়নপত্র উত্তোলন শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করবেন। তারা বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।




এনসিপির খুলনা বিভাগীয় প্রধানের মাথায় গুলি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির পর এবার এনসিপির খুলনা বিভাগীয় প্রধান এবং এনসিপি শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মোতালেব শিকদারের মাথায় গুলি করা হয়েছে।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু।

পোস্টে মাহমুদা মিতু বলেন, ‘এনসিপির খুলনা বিভাগীয় প্রধান এবং এনসিপি শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মোতালেব শিকদারকে একটু আগে গুলি করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে।

সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মোশাররফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কারা হামলার করেছে সে বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।




মেহেরপুরে মাদক সেবনের অপরাধে যুবকের কারাদণ্ড  

মেহেরপুরে গাজাঁ সেবনের অপরাধে আবির হোসেন নামের এক যুবককে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

গতকাল রবিবার রাতে শহরের ঘাট পাড়ায় জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৫ গ্রাম গাজাঁ উদ্ধার করে। আটক আবির হোসেন ঘাট পাড়ার আশাদুল ইসলামের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঘাটপাড়ায় আবির হোসেনের বাড়িতে যৌথ অভিযান চালিয়ে গাঁজা সেবন অবস্থায় তাকে আটক করে।

এ সময় তার কাছ থেকে ৫ গ্রাম গাজাঁ উদ্ধার করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে আবিরকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: হাবিবুর রহমান। অভিযানে মেহেরপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই মতিয়ার রহমানসহ জেলা আনসার ভিডিপির সদস্যরা অংশ নেয়।‌




আলমডাঙ্গায় ক্যাবলের তার চুরি সিন্ডিকেটের দুই সদস্য আটক

আলমডাঙ্গা শহরে দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কের নাম হয়ে ওঠা একটি চোর সিন্ডিকেটের দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। বিশেষ অভিযানে শহরের আলোচিত চোর চক্রের সদস্য বিশ্বজিৎ অধিকারী ও সঞ্জয় কুমারকে আটক করা হয়।

গত শনিবার গভীর রাতে আলমডাঙ্গা পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো—পৌর এলাকার ক্যানেলপাড়ার প্রেমনন্দ অধিকারীর ছেলে বিশ্বজিৎ অধিকারী (২৪) এবং মাদ্রাসাপাড়ার শ্রী গনেশ কুমারের ছেলে সঞ্জয় কুমার (৩২)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা দুজনই শহরের চিহ্নিত চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে শহরের বাসাবাড়ি, দোকান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তালা ও জানালা ভেঙে, টিন কেটে দুঃসাহসিক চুরি চালিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় একাধিক চুরি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বজিৎ অধিকারীর বিরুদ্ধে ৭টি এবং সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে ৮টি চুরি মামলা নথিভুক্ত রয়েছে। এর আগেও তারা একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে তাদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পৌর এলাকার আরও কয়েকজন চোর ও চোর সিন্ডিকেট সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চোর সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।




আলমডাঙ্গায় মাদকের ছোবলে আক্রান্ত যুব সমাজ

আলমডাঙ্গায় মাদকের ছোবলে আক্রান্ত যুব সমাজ। প্রশাসনিক গাফিলতি, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বিস্তার ঘটছে মরণ এই নেশার।

অপার সম্ভাবনাময় আলমডাঙ্গার যুব সমাজ আজ যেন নীরবে মুর্তিতে পরিণত হচ্ছে মাদকের এক ভয়ংকর অভয়ারণ্যে। মরণনেশার ছোবলে প্রতিদিনই দিকভ্রান্ত হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। স্কুল–কলেজপড়ুয়া থেকে শুরু করে কর্মক্ষম যুবক—কেউই রেহাই পাচ্ছে না এই সর্বনাশা আসক্তি থেকে। পরিবার ভাঙছে, ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে, অথচ দেখার যেন কেউ নেই।

মাকড়সার জালের মতো সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে মাদক। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চোখে পড়লেও তা অনেকটা দেখানো কার্যক্রমেই সীমাবদ্ধ—এমনটাই অভিযোগ সচেতন নাগরিকদের। পাশাপাশি  মাদকাসক্ত ব্যক্তি আটক হলেও বড় বড় মাদক ব্যবসায়িরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে।

এছাড়াও অধিকাংশ মাদক মামলাই শেষ পর্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে সাক্ষীর অভাবে। আবার যেসব ঘটনায় সাক্ষী পাওয়া যায়, তারা নিরাপত্তাহীনতা, হুমকি ও প্রভাবশালী মহলের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না। ফলে গ্রেপ্তার হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই জামিনে বেরিয়ে আসে মাদক কারবারিরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রহস্যজনক নীরবতা এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় অনীহা। এসব কারণে বারবার অভিযোগ উঠলেও কার্যকর ও টেকসই কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। কিছু কিছু জায়গায় প্রকাশ্যে বিক্রি, প্রকাশ্যেই সেবন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার স্টেশন মোড় ও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড বর্তমানে মাদক বিক্রির অন্যতম প্রধান হটস্পট হিসেবে পরিচিত। এখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে মরণনেশা উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে।

এছাড়া প্রতিদিন নিয়মিত মাদক কেনাবেচা ও সেবনের অভিযোগ রয়েছে—উপজেলা নতুন ভবন এলাকা, পৌরসভার সামনে স্টেডিয়ামের ওপর, থানাপাড়া পুকুরপাড়, রেলস্টেশনের ওপর ও ঢালে, লালব্রিজ সংলগ্ন কালভার্টের ওপর এবং ফকট এলাকায়। দিনের আলো কিংবা গভীর রাত—সময় যেন কোনো বাধা নয় মাদক কারবারিদের জন্য।

মাদকের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের উদ্বেগ জানিয়ে আলমডাঙ্গা শাখার মাদক ও নিরাময় বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন— “মাদক আজ আলমডাঙ্গার জন্য শুধু আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়, এটি একটি মানবিক ও সামাজিক বিপর্যয়। তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে। আমরা যদি এখনই শক্ত হাতে প্রতিরোধ গড়ে না তুলি এবং মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করি, তাহলে ভবিষ্যতে এর ভয়াবহ পরিণতি আমাদের সবাইকে ভোগ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, সাক্ষী সুরক্ষা, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত অভিযান, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম ছাড়া মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে আলমডাঙ্গার তরুণ সমাজ শুধু মাদকাসক্তই নয়—একটি হারিয়ে যাওয়া প্রজন্মে পরিণত হবে। সময় এসেছে দায় এড়ানোর নয়, সময় এসেছে দায়িত্ব নেওয়ার। সময় এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার।