মেহেরপুর-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন বলেছেন, “আপনারা আমাকে নিজের সন্তান মনে করে আকালের আমলে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এমপি বানিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের সেই আমলে আমাকে দু’টা গম আর জেলা পরিষদের সামান্য বরাদ্দ ছাড়া কিছুই দেয়নি। তারপরও আমি আমার বরাদ্দকৃত সেই সামান্য অর্থ দিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি জানি, আপনারা এখনো আমাকে সন্তান হিসেবে ভালোবাসেন। সেই ভালোবাসা দিয়ে এবারও ধানের শীষে ভোট দিয়ে এই আসনটি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতে তুলে দেবেন। আমি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে নিজেকে সেবক হিসেবে আপনাদের পাশে রাখব।”
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চেয়ে গণসংযোগকালে জনতার উদ্দেশ্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
সেই সময় তিনি গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করেন। এর আগে তেঁতুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোরাদ আলী, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান গাড্ডু, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান, গাংনী উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান বুলবুল, তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম, কাথুলী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান বাবলু, পৌর জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সুরেলী আলভী, বিএনপি নেতা আবু সাদাত মো. সায়ম পল্টু, কাথুলী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হোসাইন, বিএনপি নেতা আবদুস সাত্তার, গাংনী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হোসেন, গাংনী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল হান্নান, জেলা যুবদলের সদস্য ফারুক হোসেনসহ বিএনপির নারী নেত্রী ও স্থানীয় বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
পথসভা শেষে বিশাল বহরের একটি মিছিল তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ, ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা ও কুশল বিনিময় করেন। এ সময় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। গণসমাবেশ ও মিছিলে বিপুল সংখ্যক নারী কর্মীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সমাবেশে সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন আরও বলেন, “ছাত্র বয়স থেকে আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। ছাত্র জীবন থেকে ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়েছি, যুবদলের নেতৃত্ব দিয়েছি। দীর্ঘদিন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। বিগত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মেহেরপুর ও গাংনীর নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতাকর্মীদের আপদে-বিপদে পাশে থেকেছি।”
এদিকে বিএনপি প্রার্থী আমজাদ হোসেনের গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু।
তিনি অভিযোগ করেন, এলাকার এক ক্যাসিনো ব্যবসায়ীর টাকায় ধানের শীষের প্রার্থীকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন পলাশ নামের এক অনলাইন জুয়াড়ি। কয়েক মাস আগে ঘোষিত বিএনপির নতুন কমিটি থেকে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই সুযোগে কিছু অনলাইন ক্যাসিনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে জাভেদ মাসুদ মিল্টনের অনুসারীরা বিক্ষোভ ও মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, “গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন পলাশ ঢাকায় আওয়ামী লীগ, মেহেরপুরে জামায়াতের সমর্থক আর গাঁড়াবাড়িয়ায় বিএনপির পরিচয় দেয় এবং মিল্টন সাহেবের সঙ্গে চলাচল করে। ক্যাসিনো সম্রাটরা মিল্টন সাহেবকে টাকা দিয়ে আমজাদ সাহেবের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসবের দাঁতভাঙা জবাব আমাদের সবাইকে দিতে হবে।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, “আমজাদ সাহেব সৎ ও যোগ্য নেতা, তাকে নিয়ে অপসংবাদিকতা করবেন না।”
গণমিছিল ও পথসভায় তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রবীণ বিএনপি নেতাকর্মী, তরুণ ভোটার ও বিপুল সংখ্যক নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল।