ঝিনাইদহে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের কর্মবিরতি

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন ঝিনাইদহে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। রোববার (৩০ নভেম্বর) সকালে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ জেলা শাখা। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। কর্মবিরতিতে ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

সেসময় ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি রেজাউল আলম, সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, প্রবীর কুমার কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামানসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা বেতন বৈষম্যের শিকার। অন্য ডিপ্লোমাধারীরা ১০ম গ্রেড পেলেও তাদের দাবী মানা হচ্ছে না। তাই দ্রুত তাদের দাবী মেনে নেওয়ার আহবান জানান তারা।

এদিকে কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা। সকাল থেকেই ফার্মেসী ও প্যাথলজির সামনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে ভূক্তবোগীদের।

জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়াও জেলার সকল সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও হাসপাতালগুলোতে এক যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।




কোটচাঁদপুরে এক রাতে সাতটি গরু চুরি, দিশেহারা কৃষক

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে একই রাতে সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে সাতটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল রবিবার গভীর রাতে পৌর এলাকার সলেমাপুর উত্তর পাড়ার কৃষক রমজান আলীর গোয়ালঘর ভেঙে পাঁচটি গরু চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

একই রাতে উপজেলার কাগমারী গ্রামের কালিতলা পাড়ায় রবিন হালদারের গোয়াল থেকেও দুটি গরু চুরি হয়। চুরি হওয়া সাতটি গরুর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় সাত লাখ টাকা বলে জানা গেছে।

গরুগুলোই ছিল কৃষক দুই পরিবারের চাষাবাদের প্রধান অবলম্বন। এক রাতেই সব হারিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর জানান, চোরচক্রকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।




মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না

মুজিবনগরের মতো ঐতিহাসিক স্থানে এসে নিজেকে ধন্য মনে করছি। মেহেরপুরের মুজিবনগরের জন্য প্রথমেই একটি উদ্যোগ নিতে চাই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। এই উপজেলায় কারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আমরা তাদের শনাক্ত করবো এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

রবিবার দুপুরে মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নবাগত মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবির।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আপনারা মুজিবনগরের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণ ও সম্ভাবনা নিয়ে যেসব মতামত দিয়েছেন, সেগুলোর সমাধান ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হবে। সর্বোপরি, আমি একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। তরুণ ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সে ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। এজন্য আপনাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেকোনো কাজ সফল করা সম্ভব।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল। সভায় মুজিবনগরের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে বক্তব্য দেন মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের পেশাজীবী বিভাগের সেক্রেটারি আল আমিন ইসলাম বকুল, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশিদ, উপজেলা জামায়াতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাসার, জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মেহেরপুর জেলা মুখ্য সংগঠক শাওন শেখ, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক রকিব উদ্দীন, মুজিবনগর প্রেসক্লাব সভাপতি ওমর ফারুক প্রিন্স, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান আলী খান, মুজিবনগর উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, গোপালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, দারিয়াপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলিয়া।

অনুষ্ঠানের শুরুতে একাডেমির সুপারভাইজার হাসনাইন করিমের সঞ্চালনায় মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করেন উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার মাসুদ রানা।

অনুষ্ঠান শেষে অসহায় ব্যক্তি ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মাঝে টিন ও সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।




খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ঝিনাইদহে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ঝিনাইদহে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার রাত ১০টার দিকে শহরের চাকলাপাড়া সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট এ প্রার্থনার আয়োজন করে।

প্রার্থনা সভায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কীর্তন পরিবেশন, গীতা পাঠ ও বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন। তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ নাগরিকরা এককভাবে ও সম্মিলিতভাবে প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক তপন বিশ্বাস, সদস্য সচিব প্রহ্লাদ সরকার, জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক দীপঙ্কর কুমার ঘোষ, সদস্য সচিব বিজন কুমার ঘোষ, যুগ্ম আহ্বায়ক দিবস দেবনাথ, প্রদীপ রায়, জেলা আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নীলকান্ত বিশ্বাসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।




ঝিনাইদহে খুচরা সার বিক্রেতাদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ঝিনাইদহে খুচরা সার বিক্রেতা আইডি কার্ডধারীদের বহাল রাখা, টি.ও লাইসেন্স এবং সার সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৫ সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

রোববার সকালে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে খুচরা সার বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

এতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জেলার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের খুচরা সার বিক্রেতারা অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি সায়েদুল আলম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি তরিকুল ইসলাম টিপু, কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি জিল্লুর রহমান, হরিণাকুন্ডু উপজেলা শাখার সভাপতি শামীম আহমেদ (চাঁন), শৈলকুপা উপজেলা শাখার সভাপতি বাবুল আক্তার, মহেশপুর শাখার সভাপতি উজ্জ্বল হোসেন, কোটচাঁদপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুল মিয়াসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

এসময় বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ে খুচরা সার বিক্রয়ের অনুমতি ও অনুমোদন (টি.ও লাইসেন্স) দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে এ নীতিমালার খসড়া অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৬ সালের মার্চ মাসে এ সুবিধা সম্পূর্ণ স্থগিতের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এই নির্দেশনার ফলে খুচরা সার ব্যবসায়ী ও ডিলাররা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাই ২০০৯ সালের নীতিমালা বহাল রাখার দাবি বর্তমান সরকারের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরেন বক্তারা।




প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শেষ দিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে হাসি ফুটালো শুভসংঘ

প্রাথমিক বিদ্যালয জীবনের শেষ দিনে অশ্রু সিক্ত বিদায় বেলায শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফোটালো মেহেরপুর শুভসংঘ।

আজ রবিবার সকালে মেহেরপুর সদরের বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ১৮ শিক্ষার্থীদের মাঝে পরীক্ষা সহায়ক উপকরণ সামগ্রী তুলে দেন সংগঠনটির সদস্যরা।

বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষা উপকরণ পেয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে ‍উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। শিশুদের হাতে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে খাতা, কলম, হার্ডবোর্ড, স্কেল,ফাইল ও জ্যামিতি বক্স তুলে দেওয়া হয়েছে।

বসুন্ধরা শুভসংঘ মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি এস এম রফিকুল আলম বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কালের কণ্ঠ জেলা প্রতিনিধি ও বসুন্ধরা শুভসংঘ মেহেরপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা ইয়াদুল মোমিন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফৌজিয়া আফরোজ তুলি, সহকারী শিক্ষক স্বামীমা ইয়াসমিন সাথী।

কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি ইয়াদুল মোমিন বলেন, আজকে তোমাদের প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের শেষ দিন। শেষ দিন অর্থাৎ এই স্কুল থেকে বিদায়। এরপরে তোমরা যাবা নতুন কোন স্কুলে, নতুন কোনো পরিবেশে। এই বিদায় উন্নতির জন্য বিদায়, ভালোর জন্য বিদায়। এই বিদায সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো একটি জায়গা ছেড়ে দেওয়া। তোমাদের এই বিদায় ক্ষণে আমরা বসুন্ধরা শুভ সংঘের মাধ্যমে তোমাদের মুখে একটু হাসি ফুটাতে চাই, যে হাসিটা তোমাদের এই বিদায়কে একটু স্বস্তি দেবে, একটু আনন্দ দেবে।

তিনি আরো বলেন, বসুন্ধরা শুভ সংঘ এমন উদ্যোগ সারা দেশে নিচ্ছে। যারা খুবই অসহায় গরিব, তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। মেহেরপুরে কয়েকবার শত শত কম্বল বিতরণ করেছি। যারা একেবারে অসহায়, তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য দোকান করে দিয়েছি। একটা মেয়েকে তার পড়ালেখা করানোর জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেছি। এভাবে আমরা অনেক কাজ করি, কিন্তু নীরবে নিভৃতে।

সভাপতির বক্তব্য এস এম রফিকুল আলম বকুল বলেন, তোমাদের উপহারে একটা কথা লেখা আছে শুভ কাজে সবার পাশে। আমরা আসলে কি করতে চাই সেটা লেখা আছে। আমরা ভালো কাজের সবার সাথে থাকতে চাই, সবার সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চাই উদ্দেশ্য আমাদের এটাই। উপহার যদি একটি চকলেটও হয়, আমার কাছে মনে হয় ওটাও একটি উপহার। আমাদের এটা খুবই সামান্য একটি উপহার, কিন্তু আমার কাছে মনে হয় আমাদের সমাজের প্রত্যেককে যদি এই কাজটা করতে থাকি, তাহলে এই কাজটা আর সামান্য থাকবে না, অসামান্য হয়ে যাবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফৌজিয়া আফরোজ তুলি বলেন, বসুন্ধরা শুভ সংঘ তোমাদের হাতে একটি উপহার তুলে দিয়েছে। কালকে তোমাদের পরীক্ষা, পরীক্ষায় একটু সাহায্য হবে। শুভ সংঘ যেহেতু শুভ কাজে আছে, বাংলাদেশে মাদক, বাল্যবিবাহ এবং হানাহানি আমরা যেন অসহিষ্ণু জাতি হিসেবে সারা পৃথিবীতে পরিচিত হতে যাচ্ছি। এগুলো নিয়ে কাজ করলে আমার মনে হয় আরো ভালো হবে।
আর আমার শিশুদের কাছেও আমার অনুরোধ থাকবে তোমরা যেন মারামারি, হানাহানি বা অসহিষ্ণুতা পরিহার করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সহযোগিতামূলক আচরণ করো।

বসুন্ধরা শুভসংঘ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. নাফিউল ইসলামের সঞ্চালনায় এসময় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ অনিক হাসান, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ সম্পাদকঃ আব্দুল্লাহ আল নোমান, কার্যকরী সদস্যঃ লামইয়া, আলিফ খান , লিখন আলী, মোঃ মনিব, আলিফ হাসান, নাসিম রানা, জুনাইদ ইকবাল, সাকিব হাসান রুদ্র, ইয়াছির ইউসুফ ইমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




কনডেম ঘোষিত ভবনগুলোতে সরকারি অফিসের কার্যক্রম

মেহেরপুর শহরের বুকে দীর্ঘ বছরের জীর্ণ শীর্ণকায় দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি পুরোনো ভবন। এসব ভবনগুলোতে সরকারি বিভিন্ন অফিস। হাসপাতাল ভবন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস, জেলা কারা কর্মকর্তার বাসভবন, জেলা সমবায় ব্যাংক ও জেলা সমবায় অফিস, জেলা প্রশাসকের পুরাতন কার্যালয়, ওয়াবদা অফিস ভবন, গাংনী উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অফিস অন্যতম। ভবনগুলো বয়সে সেঞ্চুরি অতিক্রম করেছে।

কোনটিবা ষাটোর্ধ্ব, দীর্ঘ বছরের ইতিহাস ছুঁয়ে গেছে তাদের শরীর। দেড় থেকে দুই যুগের বিভিন্ন সময়ে গণপূর্ত বিভাগ নোটিশ দিয়ে বলেছিল তোমরা আর বাসযোগ্য নও। তারপরও ভবনগুলো ঠিক মানুষের মতোই আজও দাঁড়িয়ে আছে- ভঙ্গুর, চিন্তিত, অথচ প্রাণের স্পন্দন নিয়ে।

পুরাতন সরকার হাসপাতালটি যেন এক বৃদ্ধ অভিভাবক। বহু রোগীর কান্না, ডাক্তারদের ছুটে চলা, কিংবা অপারেশন থিয়েটারের আলো সে দেখেছে একসময়। এখন তার করিডোরে শোনা যায় পুলিশের ওয়াকিটকির শব্দ। ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে মেঝেতে সাদা ধুলোর মতো জমে থাকে অতীতের স্মৃতি। অথচ প্রতিদিন এক ডজন পুলিশ সদস্য সেখানে ডিউটি করেন ব্যস্ততা আর ভয় মিলেমিশে তাদের সকাল-বিকেল তৈরি করে। ভবনটি যেন নীরবে বলেÑ আমার দেওয়ালে ফাটল আছে!

ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসের অবস্থা আরও আলাদা। সে যেন প্রতিদিনের ভিড় আর ভাঁজে ভাঁজে জীবনের হিসাব লেখা এক ক্লান্ত লেখক। দলিল লেখকরা জানালার ধারে বসে একেকটা চুক্তি লিখছেন, আর দেয়ালের ফাটলগুলো স্বাক্ষী দিচ্ছে সময়ের নিঃশব্দ ক্ষরনের। প্রতিদিন দুই শতাধিক মানুষের আনাগোনায় ভবনটি কেঁপে ওঠে।

তবুও কাগজে-কলমে জমির হিসাব থামে না, মানুষের আগমন থামে না। পাশেই নতুন ভবনে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ দায়ীত্ব পালন করলেও পুরাতন ভবনে দলিল সম্পাদনার কাজ করেন দলিল লেখিয়ে মুহরীরা। ভবনটিতে নব্বই দশকেও সাবজজ আদালত ছিল।

ওই সময ভবনটি ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সাইনবোর্ড লটকে দিলে আদালতটি পাশেই স্থানান্তর হয় বহুতল ভবনে। তারপর থেকেই এখানে ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়। সরেজমিনে ভুমি রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখা যায় ভবনের শরীরে গণপুর্ত বিভাগের লটকে দেয়া ‘এই ভবনটি পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ন’। দেয়ালে লটকানো সতর্কতা কানে না তুলেই প্রতিদিন চলতে থাকে দলিল সম্পাদনের কাজ। যেন ভয় নেই, সময় নেই। যেন চোখের সামনে ছুরি ঝুলছে, তবুও মানুষ হাসে, কাজ করে, ঘরে ফেরে।

আর জেলা কারা কর্মকর্তার পুরোনো বাসভবন সে যেন নিঃসঙ্গ বুড়ো কাকাবাবু। একসময় গাম্ভীর্যে দাঁড়িয়ে থেকেছে, এখন ভরে গেছে দাগে, ভয়ে আর অস্থিতে ইঁট-পাথরের কণ্ঠস্বর। তবুও জেলা প্রশাসনের চতর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী রাতে ঘুমিয়ে পড়েন ঠিক সেই ঘরেÑ যেখানে ছাদের ফাটল অন্ধকারে যেন হুহু করে চিৎকার করে। ঘরের ভিতরে তাদের নিঃশ্বাস চাপা; ভয় আছে, তবুও কর্তব্যের বাঁধনে জীবন থামে না।

জেলা সমবায় ব্যাংক ভবনটি নির্মিত হয় বৃটিশ শাসনামলের ১৯১৯ সালে। ভবনটি ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়লে পাশেই টিনশেড করে সেখানে ব্যাংকের কার্যক্রম চালু আছে। ইতোমধ্যে ভবনের সামনের অংশ ২০২৪ সালে ধ্বসে পড়েছে। ধ্বসেপড়া ভবনের মধ্যেই ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত ক্যাশিয়ার মো. সামসদ্দীন মিয়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। সামসদ্দীন জানান- কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় তিনি মৃত্যুভয় উপক্ষো করে স্বামী স্ত্রী বসবাস করছেন। সংস্কার করে একটি অংশে জেলা সমবায় অফিসের কার্যক্রমও চালু আছে।

বৃটিশ শাসনামলের কালেকটর ভবন বৃটিশ শাসনামলের পর মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয় হয়। ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে মেহেরপুর জেলা হলে নতুন ভবনও তৈরী হয়। সেই কারেকটর ভবনে এখন অফিসার্স ক্লাব ও বিআরটিএ অফিস পরিচালিত হচ্ছে। অবিভক্ত বাংলার মেহেরপুর থানা ভবনও বহুবছর আগে নির্মিত। নতুন ভবনের দরপত্র আহবান হয়েছে। ঠিকেদার চলতি সপ্তাহেই নতুন ভবন নির্মানের কাজ শুরু করবেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামিলুর রহমান খান।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদ ভবনে উপজেলার সরকারি বিভিন্ন অফিস। দীর্ঘ বছরের এই ভবনে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাঝে মধ্যে ছাদের প্লাষ্টার খসে পড়ে কারোবা মাথায় কিম্বা অফিসের চেয়ার টেবিলে। এই ভবনের বিভিন্ন দফতরেরকর্মকর্তা কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়ীত্ব পালন করছেন।

গণপূর্ত বিভাগের নথিতে কোন পরিসংখ্যান নেই কতটি ভবন ব্যবহারযোগ্য নয়। গণপূর্তের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল উদ্দীন বলেন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অফিস আদালতের ভবন ব্যবহার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ফলে সেসব ভবনের তালিকা করা হয়নি। ব্যবহার অযোগ্য ভবনে যদিও অফিসের লোকবল গা ছমছম করা দিন পার করছে। বিষয়টি গণপূর্তের দেখার দায়ীত্ব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি ভূকম্পনের পর বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেন এই অঞ্চল ভূমিকম্পের মাঝারি ঝুঁকিতে। একটু দোলনামাত্র ভবনগুলো হয়তো আর দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায় ঝুঁকির ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষেরা কি শুধুই সংখ্যার অংশ? নাকি অবহেলার ভারে নুইয়ে পড়া ভবনগুলো কেবল ইট-পাথরের শরীর নয় সময়ের কাছে ফেলনা হয়ে যাওয়া জীবন্ত কাহিনি?

যে শহর তার স্মৃতি রক্ষা করতে জানে না, সে শহর কি ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে? মেহেরপুরের বাতাসে এই প্রশ্নটাই আজ সবচেয়ে ভারী হয়ে ভাসছে।




দর্শনায় স্বাদ ও সংস্কৃতি মিলনে ৬ষ্ঠ বার্ষিকী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত 

দর্শনায় “শীতের দুয়ার, লাগলোরে ধুম, পিঠা খাওয়ার” শ্লোগানকে সামনে রেখে ৬ষ্ঠ তম পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি গতকাল সকাল ১০টায় দর্শনা পুরাতন বাজার সোসাইট চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। দর্শনা ওমেন্স ক্লাবের আয়োজনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন তানজিনা মিলি, দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটি সদস্য ও দর্শনা সরকারি কলেজের সাবেক জিএস এনামুল হক শাহ (মুকুল), প্রথম আলোর সাংবাদিক শাহ আলম সনি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম ফিট্টু।

দ্বিতীয় পর্বে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, স্টল প্রদর্শনী, নৃত্য, দেশাত্মবোধক গান এবং লোক সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ভিড় জমে। পুরস্কার বিতরণ করেন দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন, দর্শনা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল তরফদার, পিন্টু শাহ, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দেব নাথ, ওমেন্স ক্লাবের সভাপতি কামরুনাহার রাণী শাহ এবং সাধারণ সম্পাদক শাহিনা আজাদ স্বপ্না।

উৎসবে বক্তব্য রাখেন ওমেন্স ক্লাবের সভাপতি রাণী শাহসহ অন্যান্য অতিথিরা। দিনব্যাপী উৎসবে মোট ১৫টি স্টল অংশগ্রহণ করে। প্রদর্শিত পিঠার মধ্যে সাদের আঙ্গিনা প্রথম স্থান অর্জন করে, পল্লী পিঠা ঘর দ্বিতীয় স্থান এবং সায়ন পিঠা ঘর তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

সন্ধ্যায় আচঁল ব্যান্ডের সংগীত পরিবেশনায় লোক সংগীত উপভোগ করা যায়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দামুড়হুদা আব্দুল ওয়াদুদ শাহ ডিগ্রী কলেজের উপ-সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম মারুফা, প্রভাষক মিল্টন কুমার সাহ এবং ওমেন্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহিনা আজাদ স্বপ্না খাতুন।




খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মেহেরপুরের বারাদিতে বিএনপির দোয়া মাহফিল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় গতকাল শনিবার বিকালে মেহেরপুরের বারাদি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বারাদি ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে এ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান।

বারাদি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আফারুল ইসলাম ডাবলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, আনসারুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মোহাম্মদ, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকাবিল্লাহ, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক লেয়াকত আলীসহ বারাদি ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ-সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন। তাঁর আশু রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় দল-মত নির্বিশেষে সকলে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।

অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।




জীবননগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৭ সেশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় জীবননগর প্রেসক্লাবের আয়োজনে রেস্টুরেন্ট থ্রি স্টারের কনফারেন্স রুমে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজিব হাসেন কচি আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির সভাপতি এমআর বাবু ও সাধারণ সম্পাদক নূর আলমকে শপথ পাঠ করান। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানিক আকবর।

অনুষ্ঠানে বক্তারা সাংবাদিকতার মূল আদর্শ সত্য, ন্যায় ও নিরপেক্ষতা অটুট রেখে জনস্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানান।

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে কনফারেন্স প্রাঙ্গণে ছিল প্রাণবন্ত পরিবেশ। উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আজকের চুয়াডাঙ্গা পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক বিপুল আশরাফ, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ডিবিসি টিভির জেলা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিম, দৈনিক চুয়াডাঙ্গা প্রত্রিকা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান।

শপথ গ্রহণ করেন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার মামুনউর রহমান, আন্দোলনের বাজার পত্রিকার মুন্সী রায়হান উদ্দিন, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার মাজেদুর রহমান লিটন, মাথাভাঙ্গা পত্রিকার নারায়ণ ভৌমিক, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার হুমায়ুন কবির, আকাশ খবর পত্রিকার বশির উদ্দিন বিশ্বাস, সকালের সময় পত্রিকার এম আই মুকুল, দৈনিক দেশের বানী পত্রিকার জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক এই আমার দেশ পত্রিকার মুন্সী খোকন, দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার মিঠুন মাহমুদ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আকিমুল ইসলাম, দৈনিক জনবানী পত্রিকার জামাল হোসেন খোকন, মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।