ঝিনাইদহে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত

ঝিনাইদহে সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার কলামনখালী বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ও কলামনখালী গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা মাসুদ জোয়ার্দারের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বেশ কয়েকদিন যাবত কলামনখালী গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর জের ধরে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আসাদ চৌধুরীর ৮ জন এবং মাসুদ জোয়ার্দারের পক্ষের ৭ জনসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।




গাংনীতে ৬ লাঠিয়াল দলের নজরকাড়া রণকৌশল ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা

মেহেরপুরের গাংনী বাজার উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে দিনব্যাপি লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকে গাংনী ফুটবল মাঠে খেলার উদ্বোধন করেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন।

কালের বিবর্তনে সামন্ত প্রভুদের খাজনা আদায়ের লাঠিয়ালদের সেই নিষ্ঠুরতা এখন মানুষের বিনোদন যোগাচ্ছে। লাঠিয়ালদের কলা-কৌশলও বেশ নজরকাড়া। প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে নানা কৌশলে লাঠি চালাচ্ছেন একপক্ষ। অন্যপক্ষও আত্মরক্ষার্থে অবলম্বন করছেন নানা কৌশল। এ যেন আনন্দদায়ী পাতানো এক যুদ্ধ! হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী পাতানো যুদ্ধে মুগ্ধ হয়েছেন গাংনীর হাজারও দর্শক।

খেলার শুরুতেই বাদ্যের তালে তালে লাঠিয়ালদের নাচ, আক্রমণ ও প্রতিরক্ষামূলক কসরত যেন দর্শককে বিমোহিত করেছে। লাঠিখেলাকে কেন্দ্র করে গাংনীতে যেন সৃষ্টি হয়েছে এক লোকজ উৎসবের আমেজ, যেখানে জড়ো হয়েছে হাজারও বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ ও শিশু। এ যেন আনন্দদায়ী পাতানো এক যুদ্ধ! হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী পাতানো যুদ্ধে মুগ্ধ হয়েছেন গাংনীর হাজারও দর্শক।

খেলার আয়োজকরা জানিয়েছেন, ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলাকে পুনরুদ্ধার করে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা এবং সুস্থ ধারার সামাজিক বিনোদন প্রদান, মাদক ও জুয়ামুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে এই খেলাটির আয়োজন করা হয়েছে।

গাংনী বাজারপাড়া উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, জনপ্রিয় এই খেলাটি এখন বিলুপ্তপ্রায়। তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও মোবাইল আসক্ত থেকে মুক্ত রেখে শরীরচর্চায় আগ্রহী করতে খেলাটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও তিনি খেলাটি টিকিয়ে রাখতে সকলকে পৃষ্ঠপোষকতার আহ্বান জানান।

স্কুল ছাত্রী রোমানা খাতুন বলেন, আমি কখনো লাঠিখেলা দেখিনি। আজকে এই খেলাটি দেখে আমি মুগ্ধ। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এই খেলা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। লাঠিখেলা চর্চা করলে আত্মরক্ষায়ও সহায়ক হতে পারে।

চাঁন্দামারী গ্রামের দর্শক আয়ূব হোসেন বলেন, হারিয়ে যাওয়া খেলাটিকে বারবার আয়োজনের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে হবে। খবর শুনে আমি সেই দশ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে লাঠিখেলা দেখতে ছুটে এসেছি। ছোটবেলায় আমরা দল বেঁধে বিভিন্ন এলাকায় লাঠিখেলা দেখতে যেতাম। এখনকার ছেলে-মেয়েরা শুধু মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে তারা সামাজিকতা, ভদ্রতা, বড়দের সম্মান ও ছোটদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন করতে ভুলে যাচ্ছে। পুরানো খেলাধুলার মধ্যেই আমাদের আসল সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। সেগুলোকে আবারও ফিরিয়ে আনতে হবে।

শিশিরপাড়া লাঠিয়াল দলের টিম লিডার আনিছুর রহমান বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই খেলায় যেমন দর্শকরা আনন্দ পায়, তেমনি এ খেলার মাধ্যমে আত্মরক্ষার নানা কৌশলও শেখা যায়।

খেলার আয়োজক কমিটি গাংনী বাজারপাড়া উন্নয়ন সংস্থার উপদেষ্টা মকবুল হোসেন মেঘলা বলেন, যুব সমাজকে খেলা-ধুলার মাধ্যমে মাদকমুক্ত ও জুয়ামুক্ত করতে এই আয়োজন করা হয়েছে। মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘকাল ধরে বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে এই লাঠিখেলা। জুয়া, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নতুন প্রজন্ম গড়তে এ ধরনের খেলা টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য এটি বিনোদন হলেও একসময় লাঠিখেলাটি আত্মরক্ষার রণকৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আগে জেলার বিভিন্ন গ্রামে অন্তত একটি লাঠিয়াল দল থাকত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই খেলাটি প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে। অনেকদিন পর গাংনীতে লাঠিখেলার আয়োজন হয়েছে। এমন আয়োজনের জন্য আয়োজক কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।

এর আগে সকাল ১০টার সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে খেলাটির উদ্বোধন করেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন। গাংনী বাজারপাড়া উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল হক, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দাল হক এবং মেহেরপুর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আলী।

খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের মধ্যে প্রধান অতিথি পুরস্কার বিতরণ করেন।




মেহেরপুরের বারাদীতে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সদর উপজেলার বারাদী গ্রামে গণসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকাল ৫টার দিকে বারাদী বাজারে প্রধান সড়ক ও দোকানপাটে এ গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংযোগে নেতৃত্ব দেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর-১ আসনের প্রার্থী মাওলানা তাজউদ্দিন খান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুব আলম, মেহেরপুর জেলা সেক্রেটারি ইকবাল হুসাইন, মেহেরপুর সদর উপজেলা আমির সোহেল রানা, মেহেরপুর সদর উপজেলার সেক্রেটারী ও আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাব্বারুল ইসলাম মাষ্টার, মেহেরপুর শ্রমিক ফেডারেশনের সদরের সভাপতি আব্দুল হোসেন, বারাদী ইউনিয়নের আমির মাওলানা আসাদুজ্জামান , সেক্রেটারি আব্দুর রাজ্জাক, রারাদী ওয়ার্ডের সভাপতি মাওলানা মজিবুর রহমানসহ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।গণসংযোগ কর্মসূচিতে আসন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সর্বাত্মক সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।




মেহেরপুরে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের জামায়াতে যোগদান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সদর উপজেলার বারাদী ইউনিয়নের ২৭টি  পরিবার জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৬টার সময় বারাদী ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর অফিসে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা আমির ও মেহেরপুর-১ আসনের প্রার্থী মাওলানা তাজউদ্দিন খান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুব আলম, মেহেরপুর জেলা সেক্রেটারি ইকবাল হুসাইন, মেহেরপুর সদর উপজেলা আমির সোহেল রানা, মেহেরপুর সদর উপজেলার সেক্রেটারী ও আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাব্বারুল ইসলাম মাষ্টার, বারাদী ইউনিয়নের আমির মাওলানা আসাদুজ্জামান, সেক্রেটারি আব্দুর রাজ্জাকসহ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নতুন যোগদানকারীদের হাতে ফুল ও মিষ্টি খাওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে ইসলামীতে স্বাগত জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে মাওলানা তাজউদ্দিন খান বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়ের সমাজ গঠনের আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী সবসময় জনগণের পাশে আছে। এই যোগদান আমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জানান, নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের জামায়াতে যোগদান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে বলে জানান।




দামুড়হুদায় বাবার কাছে নেশার টাকা না পেয়ে ঘরের টিন ও ইট বেঁচে দিলেন নেশাগ্রস্ত ছেলে

দামুড়হুদা উপজেলার বড়দুধপাতিলা পৃর্ব পাড়ায় বাবার কাছে নেশার ৫ হাজার টাকা না পাওয়ায় ঘরের টিন ও ইট বেঁচে দিলেন ছেলে সুমন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত শনিবার দামুড়হুদা উপজেলার বড়দুধপাতিলা পূর্বপাড়ার ভ্যানচালক ইউনুসের কাছে নেশাগ্রস্ত ছেলে সুমন (৩৫) ৫ হাজার টাকা চাই। বৃদ্ধ বাবা টাকা দিতে না চাইলে বাবা ও মা ‘কে হত্যার হুমকি দেয়। মা আগেই বাড়ি থেকে পাশের এক বাড়িতে অবস্থান নেয়। বাবা ইউনুস ভ্যান নিয়ে চলে যায় দামুড়হুদা।পরে নেশাগ্রস্ত ছেলে সুমন শোভার ঘরের টিন ও ঘরের ইট বিক্রি করে দেয়। এতেও ক্ষ্যন্ত হয়নি নেশাগ্রস্ত ছেলে সুমন। রান্না করে খাওয়া চুলাও ভেঙ্গে দেয়।

ভ্যান চালক বাবা ইউনুস জানায়, বর্তমানে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। তারপর কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় পুলিশের কাছে বিষয়টি জানালে পুলিশ বলে আপনি চুয়াডাঙ্গা কোর্টে চলে যান, ওখানে মামলা করেন। এখানে এ মামলা হবে না।

বৃদ্ধ বাবা কোনো দিক না তাকিয়ে সোধা শাপটা বাসায় চলে আসে। এসে সাংবাদিকদের নিকট ফোন দেয়। সাথে সাথে সাংবাদিকরা হাজির হয় ঐ বাসায়। সাংবাদিকরা সরজমিনে গেলে মেলে ঘটনার সত্যতা।

তিনি বললেন, বাবা তোমরা আমাদের সন্তানের মতো, একটা কিছু ব্যাবস্থা করো। তা নাহলে, আমরা যেকোনো মুর্হূতে খুন হয়ে যেতে পারি। তাই প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী মহল।




হারানো ১১২ মোবাইল উদ্ধার করে মালিককে বুঝিয়ে দিল পুলিশ

হারিয়ে যাওয়া ও চুরি-ছিনতাই হওয়া ১১২টি মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরত দিয়েছে ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। এসময় প্রতারণার মাধ্যমে খোয়া যাওয়া ৯৩ হাজার ২২০ টাকা ও প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া হয়।

গতকাল রবিবার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ উপস্থিত থেকে প্রকৃত মালিকদের কাছে এসব মোবাইল বুঝিয়ে দেন। এসময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের আবুল হাশেম, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের উপপরিদর্শক খালিদ হাসান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক ইখলাচুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, অভিযোগ ও জিডির ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে মোবাইলগুলো উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সহায়তায় খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।




ঝিনাইদহে রাতের আধারে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকতি

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রাতের আঁধারে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে উজ্জ্বল বিশ্বাস নামের এক কৃষকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল রবিবার ভোররাতের দিকে উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উজ্জ্বল বিশ্বাস ওই গ্রামের মৃত আব্দুল  গণি বিশ্বাসের ছেলে।

উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, আনুমানিক রাত সাড়ে ৩ টার দিকে আমার স্ত্রী ঘরের দরজা খুলে বাথরুমে যায়। সে সময় ৫ থেকে ৬ জন মুখোশধারী ডাকাতদল আমার ঘরে প্রবেশ করে। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে ও আমার স্ত্রী-সন্তানকে জিম্মি করে ফেলে। সে সময় আমার ঘরে থাকা নগদ ৫ হাজার টাকা, দুইটি মোবাইল ফোন ও সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার পর শৈলকুপা থানা-পুলিশকে একাধিক বার জানালেও তারা আমার বাড়িতে আসেনি।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ হোসেন বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।




অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার না করলে দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব হবে না

ভবিষ্যতে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি ক্ষমতায় আসেন, তাহলে দেশে কোনো ধরনের অনিয়ম, অত্যাচার, চাঁদাবাজি কিছুই থাকবে না। নির্বাচন অধিশীঘ্রই আসছে। তাই পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ যারা অবৈধ অস্ত্র বহন করে, যারা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাদেরকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করুন। অস্ত্রবাহীদের গ্রেফতার না করলে এই দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন হবে না, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হবে না।

আর এই ফ্যাসিস্টরা যদি কোনোভাবে মিছিল-মিটিং বের করে, তাহলে তাদের তৎক্ষণাৎ আইনের আওতায় আনুন। কারণ তারা এই নির্বাচন বানচাল করার জন্য বারবার চেষ্টা করছে বিভিন্ন জায়গায়, অফিসে, এমনকি ছোট ছোট এলাকায়ও তারা মিছিল করার চেষ্টা করছে। আমাদের অনুরোধ কোনো জায়গায় এরকম কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে বা জেলা বিএনপিকে সংবাদ দিন।

আজ রবিবার বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলার বামনপাড়ার মোড়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও জনসম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে মেহেরপুরে এক জনসভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসকল কথা বলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান।

তিনি আরো বলেন, আপনাদের কাছে আমাদের আহ্বান আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে মেহেরপুর-১ ও মেহেরপুর-২ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে জেলা বিএনপি প্রার্থী হবে এবং আপনাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।

দীর্ঘ ১৭ বছর আপনারা যে কষ্ট সহ্য করেছেন এই ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে ঘরে ঘুমাতে পারেননি, জেলখানায় থাকা অবস্থায় আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরাও দেখা করতে পারেননি সেই কষ্টের অবসান আসছে। এখন মাত্র দুই-তিন মাস আপনাদের পরিশ্রম করতে হবে। মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা দাবি তাদের বোঝাতে হবে, তাদের কাছে ভোট চাইতে হবে।

আমি বিশ্বাস করি, যদি আপনারা এই তিন-চার মাস সঠিকভাবে কাজ করেন, তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর আগামী ৫০ বছর বিএনপি ক্ষমতায় থাকবে।

তিনি বলেন, অন্য কারো কাছে জেলা বিএনপির সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কোনো সুযোগ নেই আপনারা নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আপনাদের মনোনীত প্রার্থীকেই আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ধানের শীষ প্রতীক দেবেন।

আমি আপনাদের বলতে চাই নির্বাচন নিয়ে দেশে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্ধর্ষ ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারা জানেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বিশেষ করে ভারতের ষড়যন্ত্র আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। তাই বলছি আপনারা সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ধানের শীষ প্রতীক ঘোষণার সাথে সাথে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, সেই প্রতীককে বিজয়ী করার জন্য।

দীর্ঘদিন এই সরকার সংস্কারের কথা বলে আসছে। কিন্তু আপনারা জানেন এক-এগারোর সরকারও সংস্কারের কথা বলে দুই বছর পর কী করেছিল!

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মীর গোলাম ফারুক।

সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমুল হোসেন মিন্টুর যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, আনসার উল হক, আলমগীর খান ছাতু, সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সালেহ নাসিম, এ. কে. এম. খাইরুল বাশার, হাফিজুর রহমান হাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক রোমানা আহমেদ, ওমর ফারুক লিটন, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা।

এছাড়াও সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমান খান (গাজু), সৌরভ উদ্দিন, আমদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেনসহ বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।




নতুন কুঁড়ি জয় করেছেন কোটচাঁদপুরের তরিতা

নতুন কুঁড়ি জয় করেছেন কোটচাঁদপুরের শেখ রোদসী রায়ানা (তরিতা)। তিনি নতুন কুঁড়িতে আধুনিক গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। শনিবার ঢাকার বিটিভি ভবনে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে নৃত্য, লোকসংগীত ও আধুনিক গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন শেখ রোদসী রায়ানা (তরিতা)। তিনি কোটচাঁদপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। তরিতা ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বাবুল আক্তার টোকনের মেয়ে।

তিনি নতুন কুঁড়ির তিনটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। এরপর খুলনা বিভাগের প্রাথমিক বাছাইয়ে আধুনিক গানে সেরা ৫ জনের একজন হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে সেরা দশে জায়গা করে নিতে যাত্রা শুরু করেন তরিতা, যেখানে অংশ নেন দেশের আট বিভাগের ৪০ জন প্রতিযোগী। সব বাধা অতিক্রম করে তরিতা আধুনিক গানে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। শনিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা।

এদিকে তাঁর এ অর্জনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের সহপাঠী, শিক্ষক, পিতা-মাতা ও শুভানুধ্যায়ীরা।

সহপাঠীরা বলেন, তরিতার এ অর্জনে আমরা গর্বিত। আমাদের ভালো লাগছে এ ভেবে যে, আমাদের বন্ধু দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে গানে।

তরিতার পিতা বাবুল আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকেই তরিতা সাংস্কৃতিকমনস্ক। সে কারণে আমরা তাকে সবসময় সহযোগিতা করেছি। তার প্রথম হাতে খড়ি কোটচাঁদপুর মিতালী সংগীত একাডেমিতে। তিন-চার বছর বয়স থেকেই সে এখানে গান শিখছে। তার প্রথম সংগীতগুরু খাজা সামাদ উল্লাহ্ টুটুল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান নতুন কুঁড়ি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এ বছর নতুন করে শুরু হয়েছে। তরিতা ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। আমি চাই জীবনে সে আরও বড় হোক।

তিনি জানান, তরিতা প্রথমে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছড়া গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১ম স্থান অর্জন করে। ২০২৪ সালে শিল্পকলা একাডেমি থেকে লোকগানে ‘জপলা’তে অংশ নিয়ে ১ম হয়েছিল। তবে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা এখনও শেষ হয়নি। ২০২৪ সালের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় লোকগানে জেলা পর্যায়ে ২য় স্থান এবং নৃত্যে ১ম স্থান অর্জন করে। এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ে একাধিকবার ১ম স্থান অর্জন করেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাধা রানী বলেন, তরিতার এ অর্জনে আমরা অত্যন্ত খুশি। আমি চাই তাকে দেখে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হোক এবং জীবনে এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জয়লাভ করুক।

গানের শিক্ষক খাজা সামাদ উল্লাহ্ (টুটুল) বলেন, এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সবচেয়ে ভালো লাগছে, সারা বাংলাদেশের এত সংগীত একাডেমি ও শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও কোটচাঁদপুরের মিতালী সংগীত একাডেমি থেকে শেখ রোদসী রায়ানা (তরিতা) দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমি চাই, তরিতা এই অর্জনকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে জীবনে আরও দূর এগিয়ে যাক।




ঝিনাইদহে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে এক দুর্নীতিগ্রস্থ ইউএনও’র পদায়ন ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২ নভেম্বর) সকালে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য।
এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতৃবৃন্দ, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।

ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক আবু হুরাইরা, সদস্য সচিব সাইদুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবির শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সভাপতি এম আব্দুর রহমান, কেসি কলেজ শিবিরের সভাপতি মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সেসময় বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহকে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে বদলি করা হয়েছে। এতে আপত্তি জানিয়ে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচারের দোসর ও দুর্নীতিবাজ কোন কর্মকর্তাকে ঝিনাইদহে যোগদান করতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবী জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে।