আলমডাঙ্গায় মাহফিলে আমির হামজার মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক, ভিডিও ধারণে বাধা

আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ৪১তম তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে মুফতি আমির হামজার আপত্তিকর বক্তব্যে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিক (মিডিয়া) নিষিদ্ধের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে স্থানীয়ভাবে।

গত সোমবার রাতে মাহফিলের শেষ দিন মঞ্চে প্রধান তাফসিরকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমীর হামজা। তাঁর তাফসিরের বিষয় ছিল সূরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াত।

তবে ওইদিন রাত ৯টার দিকে মাহফিলস্থলে সাংবাদিক ও স্থানীয় মিডিয়া প্রতিনিধিরা উপস্থিত হলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানানো হয়, কেউ মোবাইল বা ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ বা লাইভ সম্প্রচার করতে পারবেন না। ফলে উপস্থিত মিডিয়া কর্মীরা বাধ্য হয়ে স্থান ত্যাগ করেন।

এদিকে তথ্য সুত্রে জানা গেছে,তাফসিরকার জামায়াতের নেতা আমির হামজা বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন কোন কোন দল মনোনয়ন বিক্রি করছে। এসময় স্থানীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান।

এসময় জামায়াতের নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের নেতা আমির হামজা কোনো দলের নাম নিয়ে কিছু বলেন নি, তাহলে আপনাদের গায়ে বাধছে কেন। এসময় জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের দলের সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এবিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মুফতি আমির হামজার বক্তব্য স্যোসাল মিডিয়ায় দেবার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে সতর্ক করেছে। কিন্তু সাংবাদিক (মিডিয়া) কর্মীদের ভিডিও নেবার নিষেধাজ্ঞা করাটা উপস্থাপক তিনি মনগড়া ভাবে বলেছেন। এবিষয়ে অবশ্যই নিন্দনীয়। তিনি ঘটনায় দুঃখ ও নিন্দা জানান। তবে মুফতি আমির হামজার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক মহল ও সামাজিক পরিমণ্ডলে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, একটি ধর্মীয় মাহফিলে সাংবাদিক নিষিদ্ধ করার অর্থ কী? সেখানে এমন কী বলা হচ্ছিল যা জনসমক্ষে আনা যাবে না? আয়োজকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রের দাবি, রাজনৈতিক বক্তব্য বা নির্বাচনী ইঙ্গিত এড়াতেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, মুফতি আমীর হামজা গত মে মাসে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের এক সভায় কুষ্টিয়া-৩ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান। যদিও তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় কোনো পদে নেই, তবে দলের ওলামা শাখায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত বলে জানা গেছে।

ধর্মীয় বক্তা হিসেবে মুফতি আমীর হামজা দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। তার তাফসিরে ইসলামি মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সামাজিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা থাকলেও— সাম্প্রতিক সময়ে তার বক্তব্যে রাজনৈতিক ইঙ্গিত রয়েছে কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।




মেহেরপুর-১ আসনেও বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবীতে বিক্ষোভ

সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদে এবং মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে মেহেরপুর সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মহাম্মদ, পৌর বিএনপির সভাপতি লতিফ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এহান উদ্দিন মানা। এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম।

সমাবেশে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মহাম্মদ বলেন, কয়েক মাস আগে মেহেরপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে সাবেক এমপি মাসুদ অরুণকে শুধু সদস্য হিসেবে রাখা হয়, কোনো নেতৃত্ব বা গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়নি।

বর্তমান জেলা কমিটি বিভিন্ন ইউনিটে কমিটি গঠন করে সংগঠনকে নতুনভাবে সুসংগঠিত করেছে বলে নেতারা দাবি করেন। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষিত মনোনয়নে এই কমিটির তৃণমূল নেতাদের না নিয়ে সাবেক এমপি মাসুদ অরুণকে প্রার্থী করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সুসংগঠিত জেলা কমিটিকে উপেক্ষা করে দলের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মুখে ফেলা হয়েছে। বক্তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।

পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এহান উদ্দিন মনা বলেন, মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে মাসুদ অরুনের নেতাকর্মীরা বিএনপির কর্মীদের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। মেহেরপুর জেলা বিএনপি অনেক শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ এভাবে হুমকি দিয়ে লাভ হবে না। তিনি মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।

এর আগে, বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই মেহেরপুর-২ আসনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ এবং পরদিনে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের দলীয় অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়।

দুই দিনের ব্যবধানে জেলার দুই আসনেই মনোনয়ন ইস্যুতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে যা জেলার রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।




আলমডাঙ্গায় ২য় বিয়ের ৮ দিনের মাথায় তরুণীর বিষপানে আত্মহত্যা

প্রথম বিয়ে টিকেছিল মাত্র দু’দিন। বিচ্ছেদের শোক কাটিয়ে ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৭ বছর বয়সি তরুণী মীম আক্তার। সেখানেও সংসার করা হলো না তার। বিয়ের চারদিন পর স্বামীর বাড়ি থেকে বেড়াতে আসেন বাবার বাড়ি। তবে মেহেদির রং শুকানোর আগেই খুঁজে নেন আত্মহননের পথ। বিয়ের মাত্র আটদিনের মাথায় বিষপানে আত্মহত্যা করেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি ইউনিয়নের বেগুয়ারখাল গ্রামে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নিজের বাবার বাড়িতে বিষপানে ওই নববধূ মৃত্যু হয়।

নিহত নববধূ বেগুয়ারখাল গ্রামের উমিদ আলীর মেয়ে।

নিহত মীম আক্তারের ভাই সাব্বির হোসেন জানায়, গত ৮ দিন আগে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বলিয়ারপুর গ্রামে আব্দুর রশিদের ছেলে সাকিবের সাথে বিয়ে হয় মীমের। আর চারদিন আগে স্বামীসহ আমাদের বাড়িতে আসে সে। বাড়িতে এসে স্বামীর সাথে হাসিখুশি ভাবেই ছিল। কী কারণে বিষ খেয়েছে তা আমরা কেউ জানি না।

মীমের স্বামীর ভাই সাইফুল জানান, মীমের আগে অন্য একজায়গায় বিয়ে হয়েছিল। সেটা জেনেই তার ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেন তারা। বিয়ের পর তারা হাসিখুশিভাবেই চলাফেরা করছিল। মীমের ব্যবহারে কোনো কিছু মনে হয়নি। গত ৪ দিন আগে মীম তার পিতার বাড়িতে এসেছে। কী কারণে বিষপান করেছে সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।

নিহতের মা রত্না খাতুন বলেন, মেয়ের একটু মানসিক সমস্যা ছিল। আগেও একবার বিয়ে দিয়েছিলাম, তখনও দুইদিনের মধ্যেই তালাক হয়। এবারও কোনো ঝামেলা ছিল না। আমার ছেলে মীমের স্বামী সাকিবকে নিয়ে মার্কেটে গিয়েছিল। বাড়িতে মীম একাই ছিল। কখন যে মীম বিষপান করেছে কেউ জানেনা।

তিনি আরও বলেন, সে বিষপান করেছে জানতে পেরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মারা যায় মীম।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান পিপিএম বলেন, রাত ১২টার দিকে খবর পেয়ে ওসমানপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আলমগীর হোসেনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।




মেহেরপুরে উপজেলা প্রশাসন গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল

মেহেরপুর জেলা স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্পন্ন হয়েছে “উপজেলা প্রশাসন গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫”এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।

বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় দর্শকদের উপস্থিতিতে স্টেডিয়াম উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।

ফাইনালে আমঝুপি ইউনিয়ন দল মুখোমুখি হয় শ্যামপুর ইউনিয়ন দলের। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ড্র হলে ট্রাইব্রেকারে শ্যামপুর ইউনিয়ন বিজয়ী হয়। বিজয়ী দলকে ট্রফি ও ২০ হাজার টাকা এবং রানার্সআপ দলকে ট্রফি ও ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম। তিনি বলেন, খেলাধুলা তরুণ সমাজকে শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায় ও দলগত চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। খেলাধুলার মাধ্যমেই তরুণরা মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য তরুণ প্রজন্মকে সুস্থ বিনোদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। আমরা চাই প্রতিটি গ্রামে খেলাধুলার চর্চা আরও বাড়ুক।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তারিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া জাহান ঝুরকা, সহকারী কমিশনার শেখ তহিদুল কবির, সদর থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলামসহ জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

খেলা শেষে অতিথিরা বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।




দামুড়হুদায় মহিলা দলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে এক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে তারিনীপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠ প্রাঙ্গণে এই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ। প্রধান বক্তা ছিলেন হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী।

হাউলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শমসের আলীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সলেমান মল্লিক।

প্রধান অতিথি আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম। দেশের জনগণ আজ পরিবর্তন চায়, তাই প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে।

প্রধান বক্তা ইউসুফ আলী বলেন, এই কর্মীসভা আমাদের নারীদের সংগঠিত হওয়ার প্রেরণা দিচ্ছে। ঘরে ঘরে বিএনপির বার্তা পৌঁছে দিতে মহিলা দলের নেত্রীদের ভূমিকা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনকে সামনে রেখে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণই হবে আন্দোলনের শক্তি।
বিশেষ অতিথি সলেমান মল্লিক বলেন, আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব। নারী সমাজই হবে এই আন্দোলনের অগ্রদূত।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আক্তার সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক মালেক রুস্তম, উপজেলা বিএনপির সদস্য ওহেদুজ্জামান, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রকিবুল হাসান তোতা, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, মহিলা দলের নেত্রী রাবেয়া, শিউলী, খোদেজা বেগম, আরিছন, পরিছন, হাউলী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশাদুল হক, জেলা ছাত্রদলের পাঠাগার সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, হাউলী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রকি, ৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রুবেল হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির যুবদল নেতা শাহাজাহান আলী, তরিকুল ইসলাম রানা, বখতিয়ার হোসেন, সাজেদুল ইসলাম, আশান আলীসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।




ঝিনাইদহ-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন হোল্ড থাকায় বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উদ্বেগ উৎকন্ঠায়

ঝিনাইদহ -২(ঝিনাইদহ সদর-হরিণাকুণ্ডু) আসন ঘিরে বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে । আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে ২৩৭ জনের নাম ঘোষনা করা হয়েছে।

৩ নভেম্বর বিকালে বিএনপির গুলশান কার্যালয় থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। উক্ত তালিকায় ঝিনাইদহ-২ আসনে কারও নাম ঘোষণা কর হয়নি ফাঁকা রাখা হয়েছে। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনে গণঅধিকার পরিষদের ভুমিকা ছিল অন্যন্য ।

সেই সূত্রে জোটের প্রার্থী হিসেবে নুরুল হক নুর এবং রাশেদ খাঁন আলোচনায় রয়েছে। জোটের স্বার্থ বিবেচনায় গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁনকে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে এবং বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। তারা মনে করেণ এ আসনটি যদি গণঅধিকার পরিষদকে ছাড় দেয়া হয় তাহলে ঝিনাইদহে বিএনপিতে নানা সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবী, দীর্ঘ ১৭ বছর তারা বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ এম.এ মজিদের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছেন। হামলা, মামলা ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। তিনি দলের নিবেদিত প্রাণ ও ত্যাগী নেতা। তাকে মনোনয়ন না দিলে তারা নির্বাচনী মাঠে থাকবে না। দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের কর্মীরা ইমেজ সংকটে পড়তে পারে। এতে লাভবান হতে পারে জামায়াত বা অন্য স্বতন্ত্র পার্থীরা। পক্ষান্তরে বিএনপির ঘাটি বলে পরিচিত এ আসনটি বিএনপির হাত ছাড়া হতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা।

জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারন সম্পাদক আসিফ ইকবাল মাখন বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে কেন্দ্রীয় ভাবে গণঅধিকার পরিষদের ভুমিকা থাকলেও ৫ আগষ্টের আগে ঝিনাইদহে তাদের কোন ভুমিকা ছিল না। এমনকি দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নাম ৫ আগষ্টের আগে ঝিনাইদহের মানুষ জানতো না। নির্বাচনী এলাকায় তার তেমন কোন পরিচিতি নেই।

জেলা বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ভাবে দল যদি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে এ আসনটি শরীক দলের ছেড়ে দেয় তাহলে আগামীতে দলীয় মিছিল মিটিং বা আন্দোলনে নেতা কর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না । সে ক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন না পেলে দলের মধ্যে শৃংখলা ভঙ্গ হবে।

ঝিনাইদহ সদর-২ আসন হোল্ড করে রাখার বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানান, বিএনপির সাথে আমরা ২০২২ সাল থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে একসাথে কাজ করেছি। সে ক্ষেত্রে সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিল তাদের সাথে পজেটিভ ভাবে একসাথে ইলেকশন করার আলোচনা চলছে। এটা এখন পর্যন্ত চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ঝিনাইদহ-২ আসনে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি না হয় এর জন্য চিঠি দিয়েছিল। শুধু এই আসন হোল্ড করে রেখেছে এ রকমও না। যুগপৎ আন্দোলনের আরো যারা অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ আছে সেখানেও হোল্ড করে রেখেছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। চুড়ান্ত হলে জানাবো।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ এম,এ মজিদ বলেন, ১, ২ও ৪ দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী চুড়ান্ত। তবে রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে ডিক্লেয়ার করা হয়নি । তিনি আরো বলেন, ঝিনাইদহ সদর-২ আসনটি দলীয় হেড কোয়ার্টার। এ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে। এ আসনে অন্য কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এঘটনায় তৃণমূল পর্যায় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।




ঝিনাইদহে লাগেজভ্যানের স্প্রিং ভেঙে ট্রেন চলাচল ব্যাহত

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনে ট্রেনের লাগেজভ্যানের স্প্রিং ভেঙে প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ট্রেনের সিডিউলে সাময়িক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়।

বুধবার (৫নভেম্বর) দুপুরে খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রকেট মেইল ট্রেনটি কালীগঞ্জ সীমান্তে প্রবেশ করার পর পেছনের লাগেজভ্যানে চাকার সমস্যা দেখা দেয়। দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে মোবারকগঞ্জ স্টেশনে ট্রেন থামানোর পর চাকার স্প্রিং ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করা হয়। পরবর্তীতে লাগেজভ্যানে থাকা মালামাল সরিয়ে বগির ওপর রাখা হয় এবং প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ট্রেনের চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, “খুলনা থেকে ট্রেন ছাড়ার পর কালীগঞ্জ সীমান্তে ঢোকার সময় পেছনের লাগেজভ্যানের চাকায় সমস্যা টের পাই। মোবারকগঞ্জ স্টেশনে থামিয়ে দেখি স্প্রিং ভেঙে গেছে। পরে মালামাল সরিয়ে নিরাপদে ট্রেনটি আবার চালু করি।”




মাটি ও পরিবেশ রক্ষায় মেহেরপুরে কৃষক ঐক্য ফাউন্ডেশনের পথসভা

“মাটি বাঁচাও, পরিবেশ বাঁচাও” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কৃষক ঐক্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পথসভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে শুরু হওয়া র‍্যালিটি উপজেলা চত্বর থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে কৃষক ঐক্য ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি সাইদুর রহমান শাহীন এবং সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়ন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুজন।

সভাপতির বক্তব্যে জাহিদ হাসান বলেন, “মাটিকে রক্ষা করতে হলে আমাদের প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কমাতে হবে। পাশাপাশি রাসায়নিক সার ব্যবহার হ্রাস করে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মাটির প্রাকৃতিক সুফল থেকে বঞ্চিত হবে এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “উপজেলা কৃষি অফিসারের তালগাছ রোপণ অভিযানের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি এক লক্ষ তালগাছ রোপণের যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, সেটিকে আগামীতে দুই লক্ষে উন্নীত করার দাবি জানাই।”

এর জবাবে কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, “আপনাদের এই দাবি যথার্থ। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের প্রত্যাশা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

অনুষ্ঠানে বক্তারা টেকসই কৃষি, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানান। আরও বলেন, পরিবেশ ও মাটির ভারসাম্য রক্ষা না করলে কৃষি উৎপাদনসহ মানুষের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে। তাই এখনই সবাইকে সচেতন হয়ে গাছ লাগানো ও মাটির উর্বরতা রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে।




গাংনীতে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু

মেহেরপুরের গাংনীতে বিষধর সাপের কামড়ে শামীম হোসেন (১৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শামীম হোসেন উপজেলার করমদি গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে। গতকার মঙ্গলবার দিনগত মধ্যরাতে শয়নকক্ষে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড় দেয় শামীমকে।

স্থানীয়রা জানান, রাতে নিজ কক্ষে শামীম হোসেন ঘুমিয়ে ছিল। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে সাপে কামড় দেয়। পরে বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।




নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন জোহরান মামদানি

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জয় পেয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানি। এনবিসি নিউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রগতিশীল ভোটারদের উজ্জীবিত করে এবং দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে তিনি এই ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছেন। তার জয়ে যেমন আনন্দে ভাসছে প্রগতিশীল শিবির, তেমনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকানরা এবং কিছু ডেমোক্র্যাটিক মধ্যপন্থী নেতাও।

নিউইয়র্কের ১১১তম মেয়র হলেন মামদানি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী মামদানি সহজ ব্যবধানে পরাজিত করেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে। কুয়োমো ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে পরাজয়ের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েন। আর বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস গত সেপ্টেম্বরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে কুয়োমোকে সমর্থন জানান।

প্রায় এক বছর আগে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করা মামদানির জন্য এটি এক অবিস্মরণীয় উত্থান। একজন তুলনামূলক অখ্যাত স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান থেকে আমেরিকার সবচেয়ে বড় শহরের নেতৃত্বে পৌঁছে গেলেন তিনি। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে তিনি নিউইয়র্কের প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক পরিবারের উত্তরসূরিকে দু’দুবার হারিয়ে দেন।

এখন জাতীয়ভাবে পরিচিত এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে মামদানিকে সামলাতে হবে বিশাল প্রশাসনিক কাঠামো, বাস্তবায়ন করতে হবে তার উচ্চাভিলাষী নীতিমালা, এবং প্রগতিশীল রাজনীতির জাতীয় ধারায় প্রভাব বিস্তার করতে হবে। তার ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভাড়া নিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাটে ভাড়া বৃদ্ধিতে স্থগিতাদেশ, সার্বজনীন শিশুসেবা, বিনামূল্যে বাস চলাচল ব্যবস্থা ও সিটি করপোরেশন পরিচালিত মুদি দোকান চালু করা।

কুইন্সে হাজারো সমর্থকের সামনে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এক সমাবেশে মামদানি বলেন, ‘এমন মুহূর্ত যেন আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল—এমনটা ভাবতে ইচ্ছে করে। কিন্তু যখন আমি প্রচারণা শুরু করি, তখন সেখানে একটিও টেলিভিশন ক্যামেরা ছিল না।’ তিনি যোগ করেন, ‘চার মাস পর, ফেব্রুয়ারিতেও আমাদের সমর্থনের হার ছিল মাত্র ১ শতাংশ—আমরা ছিলাম সেই প্রার্থীর সঙ্গে সমান, যার নাম ছিল “অন্য কেউ”।’

মামদানির এই জয়ের প্রভাব শুধু নিউইয়র্কেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; তা সারা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিউইয়র্কে এখন তার প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে অ্যালবানি ও সিটি কাউন্সিলের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা—যাদের অনেকেই শুরুতে তার পাশে দাঁড়াতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন।

জাতীয় পর্যায়ে ডেমোক্র্যাট নেতারা খতিয়ে দেখবেন, কীভাবে মামদানি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছেন এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটকে প্রধান ইস্যু বানিয়েছেন—যা তাদের নিজেদের নির্বাচনী লড়াইয়েও দিকনির্দেশনা দিতে পারে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা ইতিমধ্যেই মামদানির বামঘেঁষা নীতিকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

এনবিসি নিউজের এক্সিট পোল অনুযায়ী, মামদানি নিউইয়র্কের প্রায় সব জাতিগত গোষ্ঠীর ভোট পেয়েছেন—শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো, এশীয় ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ভোটারদের বড় অংশই তাকে বেছে নিয়েছেন। ৪৫ বছরের নিচের ভোটারদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা ছিল বিপুল; কুয়োমোর চেয়ে ৪৩ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন তিনি। অন্যদিকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের মধ্যে কুয়োমো ১০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।

শিক্ষাগত পার্থক্যও ভোটের ফলাফলে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে এক্সিট পোল জানায়। এছাড়া গত ১০ বছরে নিউইয়র্কে বসতি স্থাপন করা নতুন বাসিন্দা ও জন্মসূত্রে নিউইয়র্কে থাকা ভোটারদের মধ্যেও স্পষ্ট বিভাজন দেখা গেছে।

তবে মামদানির ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান নির্বাচনজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তার মুসলিম পরিচয় ও ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিরূপ প্রচারণা চললেও শেষ পর্যন্ত ভোটাররা তাকেই সমর্থন দেন। এক্সিট পোল অনুযায়ী, ইহুদি ভোটারদের মধ্যে কুয়োমো এগিয়ে ছিলেন ৬০% ভোটে, যেখানে মামদানি পান ৩১% ভোট।

নির্বাচনের শেষ সপ্তাহগুলোতে মামদানি ও কুয়োমোর মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ হয়। কুয়োমো তাকে ‘নিউইয়র্কে বিভাজন সৃষ্টিকারী’ বলে আখ্যা দেন, অন্যদিকে মামদানি কুয়োমোকে ট্রাম্পের ‘কাঠপুতলি’ বলে সমালোচনা করেন। নির্বাচনের আগের রাতেই ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়োমোকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, স্লিওয়াকে ভোট দেওয়া মানে মামদানিকে ভোট দেওয়া।

একইসঙ্গে এক্সিট পোল থেকে জানা যায়, রিপাবলিকান ভোটারদের বড় অংশ স্লিওয়ার চেয়ে কুয়োমোকেই সমর্থন করেছেন—রিপাবলিকানদের ৬১% ভোট গেছে কুয়োমোর পক্ষে, আর স্লিওয়া পেয়েছেন ৩৫%।

গত মাসের শেষদিকে এক আবেগপূর্ণ ভাষণে মামদানি বলেন, তিনি নিজের মুসলিম পরিচয় নিয়ে ‘বর্ণবাদী ও ভিত্তিহীন’ আক্রমণের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা এই নির্বাচনকে বানাতে চেয়েছে আমার ধর্মবিশ্বাসের ওপর গণভোট, কিন্তু আমি লড়েছি নিউইয়র্কবাসীর জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের বিরুদ্ধে।’

নিউইয়র্কের ইতিহাসে তিনিই হতে যাচ্ছেন প্রথম মুসলিম মেয়র। তার বিজয় শুধু নিউইয়র্ক নয়, সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে দিল।

সূত্র: ইত্তেফাক