ঝিনাইদহে মৃত ক্রেতার পরিবারকে ওয়ালটন প্লাজার আর্থিক সহায়তা

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নেবুতলা গ্রামের গৃহিণী বেদানা খাতুন ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে একটি ফ্রিজ কিনেছিলেন। দুই কিস্তি পরিশোধের পর অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ প্রেক্ষিতে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ।

ওয়ালটনের ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ এর আওতায় বাকি সব কিস্তি মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে শহরের অগ্নিবীনা সড়কের ওয়ালটন প্লাজায় বেদানা খাতুনের স্বামী হায়দার আলীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন ওয়ালটনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান ফয়সাল ওয়াহিদ, কো-অর্ডিনেটর গোলাম মোস্তফা, চিফ ডিভিশনাল অফিসার ওয়াহিদুল ইসলাম, ক্রেডিট ম্যানেজার আবু সালেহ এবং ম্যানেজার এস. এম. সাদিক-ই-নূর।

ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজার সাদিক-ই-নূর বলেন, ক্রেতা মারা গেলে কিস্তি মওকুফসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান ওয়ালটনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিশ্বের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ওয়ালটনই এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে। কিস্তিতে পণ্য কেনার পর ক্রেতা মারা গেলে তার পরিবারের কোনো দায়ভার থাকে না। ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।




কোটচাঁদপুরে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালন

“আমি কন্যাশিশু, স্বপ্ন গড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি” এমনই প্রতিপাদ্য নিয়ে কোটচাঁদপুরে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১টায় কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে দিবসটি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিলা বেগম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমানউল্লাহ আল মামুন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তারুণ কুমার দাস, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দ্বীন ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শামসুল আলম, কোটচাঁদপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এনায়েত আলী খন্দকার, কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজুল ইসলাম, পৌর আমীর মুহাদ্দিস আব্দুল কায়ুম, ছাত্র সমন্বয়ক হৃদয় আহমেদসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

আলোচনা সভায় বক্তারা কন্যাশিশুর যত্ন, তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পাশাপাশি বাল্যবিয়ে ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে সমাজের সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।




মুজিবনগরে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন

“একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছ, আজ আমি স্বপ্ন গড়ব, স্বযত্নে তোমায় রাখব আগলে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ও মোনাখালী ইউনিয়নে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস।

গতকাল মঙ্গলবার পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় এবং পলাশী পাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির (পিএসকেএস) বাস্তবায়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় দিবসটি পালন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে বাগোয়ান ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক প্রবীণ নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা শেষে পাঁচজন প্রবীণ নারী ও পাঁচজন প্রবীণ পুরুষকে তাদের চলাফেরার সুবিধার্থে লাঠি প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাগোয়ান ইউনিয়ন প্রবীণ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগোয়ান ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পিএসকেএস এর উপনির্বাহী পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান, উপজেলা কর্মসূচি সমন্বয়কারী মোঃ হাসানুজ্জামান এবং সহকারী উপজেলা কর্মসূচি সমন্বয়কারী মোঃ রহিম আকতার সাগর।




মুজিবনগরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

“আমি কন্যাশিশু, স্বপ্ন গড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে মুজিবনগরে পালিত হয়েছে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস।

বুধবার সকালে মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিম রেজা-র সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মণ্ডল।

অফিস সহকারী নয়নতারা নিশাতের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মামুন উদ্দীন আল আজাদ, শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান, মেডিকেল অফিসার ডা. তাসনুভা তাবাচ্ছুম, মুজিবনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ওমর ফারুক প্রিন্স এবং কিশোর-কিশোরী ক্লাবের আবৃত্তি শিক্ষক রুম্পা খাতুন প্রমুখ।

এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মণ্ডলের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়।
র‍্যালিতে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।




মেহেরপুরে পৃথক মামলায় ২ জনের জেল-জরিমানা

মেহেরপুরে জাল দলিল মামলায় দীন মোহাম্মদকে দশ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং মারধরের মামলায় আব্দুল খালেককে এক বছর কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে মেহেরপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলী এ আদেশ দেন।

প্রথম আসামির মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৮-১০ বছর আগে দীন মোহাম্মদ ও তার ভাই আমজাদ খাঁ বাদীর গ্রামে বসবাস শুরু করে। বাদীর পিতা সাময়িকভাবে তাদেরকে বসবাসের অনুমতি দেন, কিন্তু পরবর্তীতে দীন মোহাম্মদ বাদীর পৈত্রিক জমির একটি অংশ নিজের নামে জাল ও ভূয়া দলিল তৈরি করে আত্মসাতের চেষ্টা চালায়।

বাদী বিষয়টি গাংনী সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যাচাই করে দলিলটি জাল প্রমাণিত হয়। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি), গাংনী প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০-এর ১৫০ ধারা অনুযায়ী দলিলভিত্তিক নামজারী বাতিলের আদেশ দেন। আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দীন মোহাম্মদকে দণ্ডিত করা হয়।

দ্বিতীয় আসামির মামলার বিবরণে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাদী সাংবাদিক সম্মেলন শেষে বাড়ি ফেরার সময় আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে তার ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় আসামি আব্দুল খালেক ইট দিয়ে বাদীর মাথায় সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।

পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার নথি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে আসামিদের বিরুদ্ধে উপরোক্ত রায় দেন। রায় ঘোষনার পরে আসামীদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।




গাংনীর নওয়াপাড়ার ফারুক ট্রেডার্সের ২০ হাজার টাকা জরিমানা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওয়াপাড়া ও সাহারবাটি বাজারে অভিযান চালিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রয়ের অপরাধে ফারুক হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

বুধবার ‍দুপুরে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মামুনুল হাসান এ অভিযান পরিচালনা করেন।

তিনি জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রয়ের কারণে নওয়াপাড়ার ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫১ ধারা অনুসারে মেসার্স ফারুক ট্রেডার্সের মালিক ফারুক হোসাইনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং দ্রুততম সময়ে ত্রুটি সংশোধন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

অভিযান পরিচালনাকালে জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: তারিকুল ইসলাম ও জেলা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।




শিশু সুরক্ষা 

গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে এ উপত্যকায় জাতিগত হত্যা চালাচ্ছে। উপত্যকাটিতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত কম-বেশি ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশু। ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘শিশুদের ওপর (যুদ্ধের) প্রভাব শুধু শারীরিক আঘাত বা ক্ষুধায় সীমাবদ্ধ নয়। তাদের ক্ষত গভীর ও অদৃশ্য। এর মধ্যে আছে উদ্বেগ, দুঃস্বপ্ন, আক্রমণাত্মক আচরণ ও ভয়। অনেক শিশুকে ভিক্ষা, চুরি বা শিশুশ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে। এটি এক হারানো শৈশব।

এ অবস্থা যত দীর্ঘ সময় ধরে চলবে, শিশুরা তাদের চলমান ও গভীর ট্রমার ছায়ায় প্রজন্ম ধরে ভুগবে।‘ গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা প্রতিদিনই শিশু নির্যাতন ও হত্যার সংবাদ জানতে পারছি। আমাদের দেশেও শিশু নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। শিশুদের ওপর অমানবিক আচরণ বন্ধ করা যায়নি। মাতা-পিতা, অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় দিন কাটান। নিষ্পাপ এসব শিশুর ওপর নির্যাতন ও হত্যায় আঁৎকে উঠেন সচেতন সব মানুষ। আমাদের ব্যর্থতা হলো আমরা শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ আবাস গড়তে তুলতে পারিনি,তবে এটা ঠিক নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যহত আছে।

শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী আমাদের দেশের অনুর্ধ্ব ১৮ (আঠার) বৎসর বয়স পর্যন্ত সকলকে শিশু হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশে শিশুদের প্রধান ১২টি অধিকার রয়েছে। এই অধিকারগুলো মূলত জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের আলোকে প্রণীত শিশু আইন ২০১৩ এবং জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ অধিকারগুলো হলো: বেঁচে থাকা ও বিকাশের অধিকার, স্বাস্থ্যসেবার অধিকার, খাদ্যের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, সুরক্ষার অধিকার, অংশগ্রহণের অধিকার, নাম ও জাতীয়তার অধিকার, বিনোদন ও খেলার অধিকার, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার অধিকার, নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশের অধিকার, আরাম ও বিশ্রামের অধিকার এবং বৈষম্যহীনতার অধিকার । সমাজের সকল প্রকার বৈষম্য থেকে মুক্ত থাকার এবং সকল স্তরে সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার প্রতিটি শিশুর রয়েছে।

এ অধিকারগুলো আইনদ্বারা স্বীকৃত হলেও বাস্তবে আমরা কতটুকু নিশ্চিত করতে পারছি সেটাই প্রধান বিবেচ্য বিষয়। প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। এ দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজের পায়ে না দাঁড়ানো পর্যন্ত শিশুকে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে মা-বাবা, অভিভাবক, রাষ্ট্রসহ সর্বোপরি সমাজের সব মানুষকে।

শিশুদের সহিংসতা, শোষণ, অবহেলা এবং যেকোনো ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য শিশু সুরক্ষার ৬টি নীতি রয়েছে। এগুলো হলো: প্রতিরোধ (Prevention), সুরক্ষা (Protection), ক্ষমতায়ন (Empowerment), আনুপাতিক প্রতিক্রিয়া (Proportionate Response), অংশীদারিত্ব (Partnership), এবং জবাবদিহি (Accountability)। শিশুদের প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা, শোষণ, এবং অবহেলা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো প্রতিরোধ বা Prevention ।

সুরক্ষা বা Protection হলো ক্ষতি বা ঝুঁকির সম্মুখীন হওয়া শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য দ্রুত সাড়া দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা। শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং তাদের নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদান করা হলো ক্ষমতায়ন বা Empowerment । আনুপাতিক প্রতিক্রিয়া বা Proportionate Response হলো ঝুঁকির মাত্রা ও পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আনুপাতিক এবং উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো। অংশীদারিত্ব বা Partnership হলো পরিবার, সমাজ এবং বিভিন্ন সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। যারা শিশুদের ক্ষতি করেছে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো জবাবদিহি বা Accountability।

সমাজে শিশুর প্রতি ভালোবাসা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাদের প্রতি হিংগ্রতা ও নিষ্ঠুরতার মাত্রা বাড়ছে। এ অবস্থার অবসান না হলে বিপন্ন হবে শিশুর ভবিষ্যৎ জীবন। আমাদের সমাজে অনেক শিশু তাদের বাবা-মা, শিক্ষক এবং সেবাদানকারীদের দ্বারা শারীরিক শাস্তি ও মানসিক আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের হাতেই শিশুরা প্রায়শই সহিংসতার শিকার হয়, যা একটি বড়ো সমস্যা। অর্থনৈতিক কারণে অনেক শিশু, পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কাজে যেতে বাধ্য হয় অথবা অপরিণত বয়সে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে শিশুকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। বাংলাদেশে শিশু অধিকার লঙ্ঘন একটি সাধারণ বিষয়।

শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, সুষম খাদ্য, সুরক্ষা, নিরাপদ পানি, অংশগ্রহণ, বিনোদন, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির মৌলিক অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিশু এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

আমাদের সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে শিশুদের অগ্রগতির বিশেষ বিধানের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাসহ মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা, সুযোগের সমতা, অধিকার-কর্তব্য, জনস্বাস্থ্য এবং নৈতিকতা বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অথচ শারীরিক ও মানসিক জটিলতা অথবা আর্থসামাজিক কারণের জন্য অনেক শিশু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলোর শিশুরা শিক্ষা লাভ করতে পারে না। সামাজিক বৈষম্য তাদের শিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পথশিশুদের একটি বিশাল অংশ পথেই থাকে এবং তারা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পায় না, কারণ তারা অনাথ। তারা নিজেদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে না।

শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী শিশুকে দিয়ে ভিক্ষা করানোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনের ৭১ ধারায় বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যদি কোন শিশুকে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়োগ করেন বা কোন শিশুর দ্বারা ভিক্ষা করান অথবা শিশুর হেফাজত, তত্ত্বাবধান বা দেখাশুনার দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি যদি কোন শিশুকে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়োগদানে প্রশ্রয়দান করেন বা উৎসাহ প্রদান করেন বা ভিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রদান করেন, তাহা হলে তিনি এই আইনের অধীনে অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এছাড়াও ৭২ ধারায় শিশুর দেখাশুনার দায়িত্বে থাকাকালে কোন ব্যক্তিকে যদি প্রকাশ্য স্থানে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং এই কারণে যদি তিনি শিশুটির যথাযথ তত্ত্বাবধান করিতে অসমর্থ হন, তাহা হলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আইনি সুরক্ষা থাকা সত্ত্বেও শিশু ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করা যাচ্ছে না।

শিশুরা আমাদের সবচেয়ে বড়ো সম্পদ। তারা আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা কি আমাদের শিশুদের সত্যিই তৈরি করছি বা করার চেষ্টা করছি ভবিষ্যতের জন্য।শিশুর আবেগীয় অনুভূতিগুলোকে সঠিকভাবে বুঝে সে অনুযায়ী যদি তাকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া যায় তাহলে সে একজন সৎ মানবিক মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।একটি শিশুর জীবনের প্রথম ৮ বছরে যে মানসিক বিকাশ লাভ করে, তা তার সমগ্র জীবনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর মস্তিষ্কের শতকরা ৯০ ভাগ বিকাশ হয় এ সময়ে।

শিশুর সুরক্ষা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। শিশুর সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা হলো সহিংসতা, শোষণ, অপব্যবহার এবং অবহেলা থেকে শিশুদের রক্ষা করা এবং তাদের সুস্থ, নিরাপদ বিকাশ নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করার জন্য পারিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক কল্যাণ সুরক্ষত হয় এবং তারা সমাজে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে এটাই হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা।

লেখকের নাম: ইমদাদ ইসলাম, সিনিয়র তথ্য অফিসার, তথ্য অধদফতর।




দামুড়হুদায় জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ

দামুড়হুদায় জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‍্যলি, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০ টায় ” সপ্নগড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি ” এই স্লোগানকে সামনে রেখে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এই আলোচনা সভা, র‍্যলি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে জাহানের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল সাবাহ্, দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান কাজল, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম রসূল, সহকারী মৎস কর্মকর্তা ফারুক মহলদার, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলা আশরাফুল আলম, মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সুমন আলীসহ মহিলা বিষয়ক ক্লাবের সদস্য, ও উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আমন্ত্রিত ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ।

আলোচনা সভায় বক্তারা জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে বলেন, কন্যশিশু হলো মায়ের জাতি। আজকের কন্যা হলো আগামী প্রজন্মের মা! ইসলাম ধর্মমতে মায়ের পায়ের তলায় সন্তানের জান্নাত। কন্যা সন্তান হোক আর ছেলে সন্তান হোক এবিষয়ে পার্থক্য না করে আমরা সবাই মা বাবার সন্তান এটাই হোক বড় পরিচয়।

বর্তমানে একজন কন্যা বা নারী দেশ সেবায় নিয়োজিত অফিসার, মা বা সাংসারিক গৃহীনি, ব্যবসায়ি, সমাজ সেবক, ধর্মীয় জ্ঞান গরীমায়সহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে সকল ক্ষেত্রে আজকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ছেলে সন্তানের চেয়ে কন্যা সন্তান কোন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই। সুতরাং আমাদের ছেলে সন্তান হোক আর মেয়ে সন্তান হোক সকলকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়!




মেহেরপুরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সচেতনতা বাড়াতে সেমিনার

সমাজসেবা অধিদপ্তরাধীন ও মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপকারভোগী এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সমন্বয়ে “সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমসমূহ সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়নে অংশীজনদের করণীয়” শীর্ষক একদিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার মেহেরপুর শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

শহর সমাজসেবা অফিসার মোঃ সোহেল মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আশাদুল ইসলাম।

এছাড়াও এসময় সমাজসেবা অফিসার (রেজিঃ) কাজী মোঃ আবুল মুনসুর এবং প্রবেশন অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ আনিছুর রহমান, মোঃ আরশাদ আলী, মোঃ মাহামুদুল হাসান, জেলা সমন্বয় পরিষদের সভাপতি রাহিনুজ্জামান পলেন ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান কম্পিউটার প্রশিক্ষক এস.এম. রাসেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব।




মেহেরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত

মেহেরপুরের গাংনীতে কবুতর চুরির মিথ্যা অপবাদে জুনায়েদ আহমেদ নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। মাদ্রাসার শিক্ষক জুবায়ের আহমেদ শিশুটিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। আহত জুনায়েদ বর্তমানে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯ টার দিকে গাংনীর পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের ফজলুল উলুম ক্বওমী মাদরাসায় শিশু নির্যাতনের এ ঘটনাটি ঘটেছে।

জুনায়েদ আহমেদ ওই মাদ্রাসায় হেফজ নাজেরা বিভাগে অধ্যায়নরত। সে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পার গোয়াল গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। সাত বছর যাবৎ একই মাদ্রাসাতে সে পড়ালেখা করছেন।

তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে চিকিৎসা চলছে বলে জানান, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল আজিজ। তিনি জানান, শিশু জুনায়েদের পিঠে, বাম পায়ের উরু ও বাম হাতের একটি আঙ্গুলে জখম ও নীলা ফোলা দাগ রয়েছে। তবে, শিশুটি আশংকামুক্ত।

শিশুটি জানান, পরীক্ষার পর তার দুই বন্ধু দুটি কবুতর দিয়েছিল। কবুতর দুটি বাড়িতে রেখে এসেছে। গতকাল রাতে হুজুর জুবায়ের আহমেদ এটিকে চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দফায় দফায় ছড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। এসময় অন্যান্য ছাত্ররা ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে। তাকে চিকিৎসা না দিয়ে ঘরে আটকিয়ে রাখে।

মাদ্রাসার পাশের কয়েকজন জানতে পেরে তার মা রিমা খাতুনকে মোবাইল ফোনে জানালে তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক জুবায়ের হোসেনের মোবাইল ফোনে ছেলের খোঁজ জানতে এবং কথা বলতে চান। কিন্তু শিক্ষক জুবায়ের তাকে না দিয়ে তালবাহানা করেন। আজ সকালে মাদ্রাসাতে এসে ছেলেকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। এঘটনায় রিমা খাতুন গাংনী থানায় শিক্ষক জুবায়ের হোসেনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক জুবায়ের হোসেন পলাতক রয়েছেন।

গাংনী থানা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।