মুজিবনগরে ব্র্যাকের কার্যক্রম পরিদর্শন করলেন ইউএনও

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মণ্ডল।গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামে ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় আয়োজিত সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক পরিদর্শন করেন তিনি। বৈঠকে প্রায় ৩৫ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ও চিকিৎসাধীন প্রায় ১৫ জন রোগীর সাথে মতবিনিময় করেন এবং বলেন, এক নাগাড়ে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কারো কাশি থাকলে অবশ্যই কফ পরীক্ষা করতে হবে।

তিনি অংশগ্রহণকারীদের যক্ষ্মা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের স্কুল, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি বাল্যবিবাহ, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, মোবাইল ফোনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ও সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, ব্র্যাক বাংলাদেশের যক্ষ্মা (টিবি) নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সংস্থাটি কমিউনিটি পর্যায়ে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ, চিকিৎসা ফলোআপ এবং সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্র্যাকের রিডিং প্লাস কর্মসূচি ও মুজিবনগর এরিয়া অফিস পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি ব্র্যাকের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি ও সফলতা সম্পর্কে অবহিত হন এবং ব্র্যাকের সার্বিক কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, ব্র্যাক মেহেরপুর

জেলা সমন্বয়ক শেখ মনিরুল হুদা, মেহেরপুর অঞ্চল আরএম (এমএফ-দাবি), নাজমুল হুসাইন, মুজিবনগর এরিয়া ম্যানেজার (দাবি) মোঃ জসিমউদ্দিন, এরিয়া ম্যানেজার (প্রগতি) মোঃ সেলিম, টিবি কনট্রোল প্রোগ্রামের ডিএম অচিন্ত কুমার বোস, রিডিং গ্লাস কর্মসূচির এরিয়া ম্যানেজার মোঃ কামরুজ্জামান, টিবি কনট্রোল প্রোগ্রামের উপজেলা ম্যানেজার বিচিত্র, শাখা ব্যবস্থাপক (দাবি) মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ শাখা ব্যবস্থাপক (বিসিইউপি) আল-আমিন প্রমুখ।




আলমডাঙ্গা কুমারী ইউনিয়নে শরিফুজ্জামান শরিফের গণসংযোগ ও পথসভা

আলমডাঙ্গা উপজেলা কুমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ ও পথসভা করলেন শরিফুজ্জামান শরিফ।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধানের শীষের বার্তা আলমডাঙ্গা উপজেলার সকল গ্রামের মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে জনসংযোগ ও পথসভা করে চলেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী শরিফুজ্জামান শরিফ। তারই অংশ হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলা কুমারী ইউনিয়নে সকল গ্রামে গতকাল পথসভা ও জনসংযোগ করেন।

পথসভাকালে তিনি বলেন ধানের শীষ প্রতীকে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই। বাংলার মাটি থেকে দূর্ণীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠন করতে হলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাংলার বুকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাত শক্তিশালী করতে হলে আমাদের সকল ভেদাভেদ ভূলে এক হয়ে চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক কে বিজয়ী করতে হবে।

গণসংযোগ ও পথসভায় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহসভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুল হক মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার কাজী সাচ্চু, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মীর উজ্জ্বল, সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী আলম বাবু, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক নাজিম উদ্দীন মোল্লা, সদস্য সচিব সাইফুল আলম কনক, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের, সাবেক ছাত্রনেতা হাসিবুল ইসলাম, পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব তন্ময় আহমেদ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জাকারিয়া হোসেন শান্ত।

এসময় আরও উপস্থি ছিলেন, আলমডাঙ্গা পৌর ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনসুর আলী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ডের সভাপতি তানভীর আহমেদ হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক প্রমুখ।




দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন জাকের পার্টির সাংগঠনিক র‍্যালি ও জনসভা অনুষ্ঠিত

দামুড়হুদা উপজেলার সদর ইউনিয়ন জাকের পার্টি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪ টার দিকে দামুড়হুদা থানা জাকের পার্টির কার্যালয়ের সামনে চিৎলায় প্রথমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় পরবর্তীতে জাকের পার্টির সাংগঠনিক নির্বাচনী র‍্যালি শুরু হয়ে চিৎলা মোড় হয়ে পুনরায় কার্যালয়ের সামনে এসে রওজা যিয়ারতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন জাকের পার্টির সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জাকের পার্টির সভাপতি, কেন্দীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় উপ-প্রেস সচিব আব্দুল লতিফ খান যুবরাজ এসময় তিনি বলেন সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। সাম্য ও ভাতৃত্ববোধের মাধ্যমে ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলায় জাকের পার্টির প্রধান লক্ষ্য। তিনি আরো বলেন বর্তমানে কৃষক তার ন্যায্য মূল্যে কৃষি উপকরণ পাচ্ছে না, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। জুলুম নির্যাতনের শিকার মানুষজন তার সঠিক বিচার পাচ্ছে না। সমাজে নানা রকম বৈষম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ সমস্ত সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আগামী সাংসদ নির্বাচনে জাকের পার্টির গোলাপ ফুল মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে শ্রেনী বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় তালাবা ফ্রন্টের সদস্য মাওলা মুফতি কামাল হোসেন আশিকী, জেলা জাকের পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান, জেলা জাকের পার্টির যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক রহুল কুদ্দুস, জেলা শ্রম ফ্রন্টের সভাপতি তক্কেল খাঁন, কৃষক ফ্রন্টের সভাপতি আব্দুল মজিদ, জেলা মহিলা ফ্রন্টের সাধারন সম্পাদিকা হাফিজা খাতুন,জেলা যুবফ্রন্টের সভাপতি রুস্তম মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক তাফসির আহম্মেদ, ছাত্রী ফ্রন্টের সভানেত্রী নাসরিন খাতুন, দামুড়হুদা থানা জাকের পার্টির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাই মেম্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মজনু মিয়া।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, দামুড়হুদা থানা জাকের পার্টির সভাপতি মোনাজাত হোসেন।




দর্শনায় দিনদুপুরে দুঃসাহসিক চুরি, ২১ ভরি স্বর্ণ ও আড়াই লাখ টাকা লুট

দর্শনার কেরুজ আমতলাপাড়ায় দিনদুপুরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা ঘরের গ্রীল কেটে প্রায় ২১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ আড়াই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে দর্শনা শহরের আমতলাপাড়ায় এ চুরির ঘটনা ঘটে।

প্রতিদিনের মতো ওই বাড়ির গৃহকর্ত্রী মনজু ঘোষ, যিনি কেরু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, সকাল ৮টার দিকে বিদ্যালয়ে যান। স্কুল ছুটি শেষে দুপুর ১টার দিকে বাসায় ফিরে এসে দেখেন, ঘরের ক্ল্যাসিবল গেট কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে।

চোরের দল ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ আড়াই লাখ টাকা, ৭ জোড়া স্বর্ণের চেইন, ১২টি স্বর্ণের আংটি, ৭ জোড়া হাতের রুলি, নাকফুলসহ বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো মনজু ঘোষ ঘরের তালা ও গ্রীল লাগিয়ে স্কুলে যান। এ সুযোগে চোরেরা পাশের বাড়ির ছাদ টপকে সিঁড়িঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এরপর আলমারির তালা ভেঙে তারা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যায়।

ঘটনার খবর পেয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ঘটনায় মনজু ঘোষ দর্শনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।




গাংনীর বামন্দীতে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দীতে পুকুরের পানিতে ডুবে ইয়ানুর (৫) নামক এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইয়ানুর চরগোয়ালগ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১১টার দিকে বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প পাড়ার মতি হাজীর পুকুরের পাশে খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশু ইয়ানুর মারা যায়।

স্থানীয়রা জানায়, চরগোয়ালগ্রামের ভ্যানচালক জিয়ারুল ইসলাম বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প পাড়ায় একটি বাড়িতে ভাড়ায় ছিল। প্রতিদিনের মতো শিশু ইয়ানুর দুপুরে খেলতে বের হয়েছিল। খেলার একপর্যায়ে মতি হাজীর পুকুরে পড়ে যায়৷ অনেক খোঁজাখুঁজির পর ইয়ানুরকে দেখতে না পেয়ে তার মা পুকুর পাড়ে গিয়ে শিশুটিকে ভাসতে দেখে।

পরে স্থানীয়রা শিশু ইয়ানুরকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য বাংলা ক্লিনিকে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি বাণী ইসরাইল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।




দর্শনায় ভারতীয় মদসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের ইয়ার্ডে অভিযান চালিয়ে ৯ বোতল ভারতীয় মদসহ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রউফ বাবুকে প্রেপ্তার করেছে দর্শনা থানা পুলিশ।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সআব্দুর রউফ বাবু একজন দর্শনা রেল বাজারের ষ্টেশনারী ব্যাবসায়ী ও দর্শনা ইসলাম বাজার এলাকার মৃত রুস্তম আলীর ছেলে।

পুলিশ জানায়, দর্শনা থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) মাসুদুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রেল স্টেশন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছিলেন। এসময় আব্দুর রউফ বাবুকে তল্লাশি করা হয়।

এসময় তার কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ছয় বোতল ভারতীয় রয়েল স্ট্যাগ সুপিরিয়র হুইস্কি, দুই বোতল ম্যাক-ডোলস লাক্সারী ব্লেন্ডার হুইস্কি ও এক বোতল ইম্পেরিয়াল ব্লু সুপিরিয়র হুইস্কি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, উদ্ধারকৃত বিদেশী মদ গুলোর অনুমানিক বাজার মূল্য ৫৫ হাজার টাকা। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গতকালই তাকে চুয়াডাঙ্গা কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।




ডেঙ্গুর বাড়াবাড়ি রুখতেই হবে

হাসপাতালের এক কোণে ছোট্ট মেয়েটা জ্বরে কাঁপছে। মায়ের চোখে ঘুম নেই, হাতে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট। প্লেটিলেট দ্রুত নেমে যাচ্ছে। পাশের বেডে আরও দু’জন রোগী। কারও শরীরে স্যালাইন চলছে। কেউ বমি সামলাচ্ছে। সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে এমন দৃশ্যই এখন প্রতিদিনের বাস্তবতা। পত্রিকার পাতায় প্রতিদিন ছাপা হচ্ছে উদ্বেগজনক সংবাদ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবেই আছে এ বছরের শুরু এই পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমনের সংখ্যা ৫১ হাজারের বেশি, এই সময়ের ভেতর মারা গেছেন ২১৭ জন। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগি আর মৃত্যুবরণ করা রোগির সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সি তরুণরা। যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে শিশু-কিশোর ও তরুণদের সংখ্যাই বেশি। সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী শহরাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর অনুপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও এবছর গ্রাম-বিভাগেও ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্কবার্তা আছে।

ডেঙ্গু জ্বর ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে হয়, যা এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে মারাত্মক রোগের তালিকায় রেখেছে। বর্ষা শুরু হলেই ডেঙ্গু জ্বরের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এই সময়ে ডেঙ্গুর মশা খুব বেশি সক্রিয় হয় এবং এর কামড় থেকে ডেঙ্গু জ্বর হয়। প্রচন্ড জ্বর, অনেক বেশি দুর্বলতা, শরীর ব্যথা, গাঁটে ব্যথা হয়ে অবস্থা নাজেহাল করে তোলে। সাধারণ জ্বরের তুলনায় ডেঙ্গু অনেক বেশি বিপজ্জনক, কারণ এর মৃত্যুহার প্রায় ১.৩%। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে শরীরে লোহিত রক্তকণিকা কমে যায়।

ডেঙ্গু একসময় “বর্ষার রোগ” বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন এটি ঋতুর সীমানা ছাড়িয়ে এক ভয়াল জনস্বাস্থ্য সংকট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সংবাদে যোগ হচ্ছে নতুন নাম, নতুন মৃত্যু। এমন এক বছর এটি, যখন প্রায় প্রতিটি পরিবারই কাউকে না কাউকে ডেঙ্গুর গ্রাসে হারিয়েছে বা হারানোর ভয় নিয়ে বেঁচে আছে। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে পোস্ট দেখিনি তেমন একটা। মানুষের মাঝে উদ্বেগ নেই। চেনা মানুষের বিপদের সংবাদে কিংবা যখন নিজের ঘরে হানা দিচ্ছে মৃত্যুদূত, তখন অনুভবের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে উদ্বেগ। অথচ ভেবে দেখুন, এবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ কিন্তু গত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। কেনো এমন হলো? ডেঙ্গুর এই বাড়াবাড়ি কারণ আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে।

অনেক সময় ধরে বৃষ্টি না থাকা বা হঠাৎ ভারী বৃষ্টি হওয়া মশা বংশবিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। বৃষ্টির পানি জমে থাকা স্থানগুলো মশার উপযুক্ত প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। প্রকৃতি, শহর পরিকল্পনা, জলবায়ু এবং আমাদের অবহেলা মিলেমিশে তৈরি করেছে ডেঙ্গুবান্ধব বাস্তবতা। আবহাওয়ার পরিবর্তন নিয়েই কথা বলা উচিত প্রথমে। কিছুদিন আগে রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল এরকম — Bangladesh Sees Worst Single-day Surge in Dengue Cases and Deaths This Year. বৃষ্টি মৌসুম দীর্ঘ হচ্ছে। বর্ষার পরিপ্রেক্ষিতে পানির মুক্ত চলাচল কমে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ গড়ে উঠছে জলাবদ্ধতা যেখানে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে অনেক বেশি।

তাপমাত্রা বাড়লে ডেঙ্গু ভাইরাস মশার দেহে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মশার উড়ানের সময়ও বেড়ে যায়, যা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়িয়ে তোলে। আমেরিকার National Library of Medicine Gi AbjvBb Rvb©v‡j cÖKvwkZ Dengue Fever in Bangladesh: Rising Trends, Contributing Factors, and Public Health Implications শীর্ষক গবেষণাপত্রে বাংলাদেশে এবছরের ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী করা হয়েছে তাপমাত্রার বৃদ্ধি, আর্দ্রতা বেশি হওয়ার মতো আবহাওয়াকে যা মশাদের ডিম পাড়ার সুযোগ বাড়িয়ে দেয়, অর্থাৎ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ বাড়ে। এছাড়াও শহরায়ন ও জনসংখ্যার ঘনত্ব পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।

বাংলাদেশে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে, শহরগুলোর অবকাঠামো সব জায়গায় প্রস্তুত নয়। শহরকে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে প্রস্তুত করার মতো দক্ষ পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মতো ব্যর্থতা আমাদেরই। শহরের বাসিন্দারা ব্যবহৃত প্লাস্টিকসামগ্রীর মধ্যে জমে থাকা পানি ফেলার ব্যাপারে সচেতন নয়, ড্রেনের ভেতর পলিথিন ফেলছে অবলীলায়, মশারি ব্যবহারে আলসেমি। এবছর গ্রাম এলাকাগুলোও বাদ পড়েনি ডেঙ্গুর থাবা থেকে। প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গ্রামে গ্রামে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ স্বাস্থ্যসেবা, রোগ নির্ণয় ও দ্রুত চিকিৎসার সুযোগ এখনো শহরের তুলনায় গ্রামে অনেক কম।

এবছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু যেমন বেশি, ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার পর আবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বেশি। ডেঙ্গু রোগের নকশা নাকি বদলে যাচ্ছে! এরকম ভয় ধরানো সংবাদ পড়েছিলাম দুই বছর আগে, Bangladesh Battles Record Dengue Deaths As Disease Pattern Changes শীর্ষক আলজাজিরার এক স্বাস্থ্য প্রতিবেদনে। মৃত্যুর সংখ্যা বছর বছর বাড়ছে, এর পেছনে দায়ী এই নকশাও। কেউ একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে সব ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে রক্ষাকবচ পেয়ে যান, ব্যাপারটা তেমন নয়। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ভিন্ন সেরোটাইপ রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সেরোটাইপের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলেও, অন্য সেরোটাইপ দ্বারা আক্রান্ত হলে তা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। যারা একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের দ্বিতীয়বার অন্য সেরোটাইপ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

এই দ্বিতীয় সংক্রমণটি অনেক বেশি মারাত্মক হতে পারে, কারণ এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় একটি “যুদ্ধংদেহী” প্রতিক্রিয়া ঘটে, যা রক্তনালীকে ছিদ্রযুক্ত করে এবং আরও নানা জটিলতা সৃষ্টি করে। সঙ্গতকারণেই যারা একবার আক্রান্ত হয়েছেন, তারা দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হলে রোগের জটিলতা বেশি হয়। বর্তমানে নতুন সেরোটাইপ দেখা যাচ্ছে, যার কারণে ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থা আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। এর সাথে আছে আমাদের জাতীয় চরিত্রগত সমস্যা— চিকিৎসায় সময়ক্ষেপণ। অনেক রোগী জ্বর-লক্ষণ দেখার পর বাড়তি দেরি করেছেন হাসপাতাল যেতে বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। আমাদের স্বাস্থ্যসেবার নানা দুরবস্থার বাস্তবতাকেও এড়ানোর উপায় নেই। হাসপাতালে রোগিরা প্রাথমিক সেবা বা ফ্লুইড থেরাপি সময়মতো পান না। আছে চিকিৎসক সংকট, নার্স সংকট, চিকিৎসাসামগ্রীর সংকট।

পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশার ওষুধ ছেটানোর বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগকেও এড়ানোর উপায় নেই। ডেঙ্গু এখন শুধু একটি রোগ নয়— এটি বাংলাদেশের নগর পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও নাগরিক সচেতনতার পরীক্ষার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে প্রয়োজন সমন্বিত, টেকসই ও তথ্যভিত্তিক উদ্যোগ। প্রথমত, নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে বৈজ্ঞানিকভাবে পরিকল্পিত করতে হবে।

প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকায় মাসিকভাবে লার্ভা জরিপ চালানো বাধ্যতামূলক করতে হবে, যাতে আগেভাগে সংক্রমণ প্রবণ অঞ্চল শনাক্ত হয়। ফগিং বা স্প্রে নয়, লার্ভা ধ্বংসের স্থায়ী ব্যবস্থা —যেমন ড্রেন পরিষ্কার, জমে থাকা পানি নিষ্কাশন ও নির্মাণস্থলে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে বাস্তব পর্যায়ে। প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিক স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করা যেতে পারে, যারা সপ্তাহে একদিন “পানি ফেলা অভিযান” পরিচালনা করবে। মিডিয়া প্রচারণায় কেবল ভয় দেখানো নয়, মানুষকে নিজের ঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখার অভ্যাসে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রস্তুতি ও ডেটা-শেয়ারিং ব্যবস্থা উন্নত করা জরুরি। ডেঙ্গু প্রতিরোধকে সারা বছরের জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার হিসেবে দেখতে হবে।

আপাততঃ আসুন, প্রত্যেকের জায়গা থেকে ব্যক্তিগত সচেতনতার মাত্রা বাড়ানোর কাজ করি। জ্বর হলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা ও প্লেটিলেট মনিটরিং করতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে, বাড়িতে অনির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কী লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, জানা থাকতে হবে সবার। হঠাৎ উচ্চ মাত্রার জ্বর, সাথে তীব্র পেট ব্যথা, বারবার বমি, মুখ-নাক বা দাঁতের পাটি দিয়ে রক্ত পড়লে, বুকের ভেতর ব্যথা বা কষ্ট অনুভব করলে, হঠাৎ চেতনা হারালে দেরি না করে হাসপাতালে যেতে হবে। সময়মতো তরল গ্রহণ এবং পর্যবেক্ষণ রোগির জীবন রক্ষা করে।

আসুন, অসুস্থ হওয়ার আগে অসুস্থ হওয়া ঠেকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করি। বাসার আশেপাশের ছোটোবড়ো সব পাত্র ঢেকে রাখুন বা উল্টে রাখুন। স্থানীয়ভাবে নিজেদের এলাকা পরিষ্কার রাখতে পরিচ্ছন্নতা কাজে অংশগ্রহণ করুন, সহযোগিতা করুন। ডেঙ্গুর বাড়াবাড়ি রুখতেই হবে আমাদের!

লেখক: কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার




দামুড়হুদায় জমি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১, গুরুতর আহত ৩

দামুড়হুদার গোবিন্দহুদায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে নুরুল হক পেশকার গ্রুপ ও মাসুম বিল্লাহ মন্টু গ্রুপের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষে মন্টু গ্রুপের ৩ জন গুরুতর আহত ও ১ জন নিহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে গোবিন্দহুদা গ্রামের মাঠে বিরোধপূর্ণ জমিতে কাজ করার সময় এ মারামারির ঘটনা ঘটে।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামে নুরুল হক পেশকার গ্রুপ ও মাসুম বিল্লাহ মন্টু গ্রুপের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নুরুল হক পেশকার গ্রুপের লোকজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মন্টু গ্রুপের ৩ জন গুরুতর আহত ও ১ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নিজ গ্রাম গোবিন্দহুদার মাঠে নিজ নিজ জমিতে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে।
মাসুম বিল্লাহ মন্টু গ্রুপের নিহত ব্যক্তি হলেন গোবিন্দহুদা গ্রামের মৃত জড়ু মন্ডলের ছেলে জয়নুর (৫০)। আহতরা হলেন মৃত জড়ু মন্ডলের ছেলে খাজা আহমেদ (৫৭), জাহির (৫০) এবং খাজা আহমেদের ছেলে দিপু (১৬)।

সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ লেগে আছে। এ বিষয়ে আদালতে উভয় পক্ষের মামলা চলমান রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নিজ নিজ জমিতে কাজ করছিল সবাই। কাজ করার সময় বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল রক্তাক্ত সংঘর্ষ বাঁধে। এরই একপর্যায়ে নুরুল হক গ্রুপের লোকজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মন্টু গ্রুপের ৪ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মন্টু গ্রুপের জয়নুর মারা যান।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, সকালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারি হয়েছে। সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। জানতে পেরেছি, মারামারির ঘটনায় জয়নুর নামের একজন নিহত হয়েছেন। এখনো পর্যন্ত উভয় পক্ষের কারো কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।




গাংনীতে ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে একজন নিহত

মেহেরপুরের গাংনী-কাথুলি সড়কে ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে মকলেছুর রহমান নামের এক জমি পরিমাপ আমিন নিহত হয়েছেন। নিহত মকলেছুর রহমান গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের আব্দুর রহমান কারিগরের ছেলে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ২ টার সময় গাংনী-কাথুলি সড়কের এবাদতখানার সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, নিহত মকলেছুর রহমান গাংনী থেকে মোটরসাইকেলযোগে সাহারবাটি ফিরছিলেন। এবাদতখানার কাছে পৌছানো মাত্র পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা মারে। এতে তিনি ট্রাকের নিচে পড়েন। এসময় ট্রাক তাকে টেনে হিঁচড়ে বেশ কিছু দুর নিয়ে আসে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
এদিকে ঘাতক ট্রাকের চালক পালিয়ে গেলেও ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানী ইসরাইল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে।




উইন্ডোজ ১০-এর আপডেট শেষ আজ, সাইবার হামলার ঝুঁকিতে ব্যবহারকারীরা 

উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আর কোনো সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা দেবে না মাইক্রোসফট। ফলে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারগুলো সাইবার হামলার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এই সমস্যা সমাধানে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীদের দ্রুত উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরা চাইলে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারে বিনা মূল্যে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করতে পারবেন, তবে সব পুরোনো মডেলের কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা বন্ধ হলেও উইন্ডোজ ১০ কম্পিউটার ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু তা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করবে।

ইউরোপে বসবাসকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীরা চাইলে এক্সটেন্ডেড সিকিউরিটি আপডেট সুবিধা নিতে পারবেন। এর মাধ্যমে তারা ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা পেলেও নতুন সুবিধা বা প্রযুক্তিগত কোনো সহায়তা পাবেন না। ইউরোপের বাইরে অন্য অঞ্চলের ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের এ সুবিধা পেতে হলে কম্পিউটারে সর্বশেষ সংস্করণের উইন্ডোজ ১০ থাকার পাশাপাশি মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট এবং ব্যাকআপ সম্পন্ন থাকতে হবে।

অন্যথায় প্রতি কম্পিউটারের জন্য ৩০ মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই খরচ প্রতি কম্পিউটারের জন্য ৬১ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অঞ্চলভেদে এ পরিমাণ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।

মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ১৪০ কোটি কম্পিউটারে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশই চলে উইন্ডোজ ১০-এ। ব্রিটিশ ভোক্তা নির্দেশিকা সংস্থা উইচের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাজ্যে এখনো দুই কোটিরও বেশি মানুষ উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন।

সংস্থাটির সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ব্যবহারকারীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মাইক্রোসফটের সহায়তা বন্ধ হওয়ার পরও পুরোনো সংস্করণটি ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, অন্যদিকে প্রতি সাতজনের একজন জানিয়েছেন, তারা নতুন কম্পিউটার কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভোক্তা সংগঠনগুলো জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তের ফলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ও প্রযুক্তি বর্জ্যের পরিমাণ আরও বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভোক্তা অধিকার সংস্থা পিআইআরজির জ্যেষ্ঠ পরিচালক নাথান প্রোক্টর বলেন, ‘উইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা বন্ধ করা ভোক্তা ও পরিবেশ দুয়ের জন্যই একটি বিপর্যয়। আমাদের এমন প্রযুক্তি প্রয়োজন, যা টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি।’

সূত্র: ইত্তেফাক