ঝিনাইদহে বেসরকারি শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সমাবেশ

এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদানের দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচী পালনরত শিক্ষকদের উপর পুলিশের হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ও শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার  সকাল থেকে ঝিনাইদহ সদর, হরিণাকুণ্ডু, শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন বেসরকারী স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই কর্মসূচী পালন করে। শিক্ষকদের উপরে হামলার প্রতিবাদে হরিণাকুণ্ডুর সালেহা বেগম মহিলা ডিগ্রি কলেজ, জোড়াদহ কলেজ, প্রিয়নাথ স্কুল এন্ড কলেজ, হাজী আরশাদ আলী কলেজ, মানদিয়া আইডিয়াল কলেজ, পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঘোড়াগাছা লাল মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দখলপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মবিরতিসহ ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন পালন করে।

এছাড়া শিক্ষক কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্বতা ঘোষণা করেন এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান হরিণাকুণ্ডু আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মুর্শেদ শাহিন।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের সভাপতি আবুল হাসান মাস্টার জানান, এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের জাতীকরণের দাবিতে আমরা গত ৭ অক্টোবর ঢাকাতে একটি প্রোগ্রাম করেছিলাম। সেখানে আমাদের নেতাদের দাবি ছিলো জাতীয়করণের। তবে শিক্ষকদের দাবি নিয়েই যখন আন্দোলন হচ্ছে সেখানে, তাই অনাকাঙ্খি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এই শিক্ষক নেতা।

ঝিনাইদহ সদরের আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহীন রেজা জানান শিক্ষকদের উপরে হামলার তীব্র নিন্দা জানায় এবং শিক্ষকদের যোক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করার জোর দাবি করছি। এছাড়া সদর উপজেলার ঝিনাইদহ কলেজ, উত্তর নারায়নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাঞ্চননগর স্কুল এন্ড কলেজ, ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজ, ফজর আলী স্কুল এন্ড কলেজ, কালীগঞ্জের নুর আলী ডিগ্রি কলেজ, শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মিয়া জিন্না আলম ডিগ্রি কলেজসহ জেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিনভর স্কুলে উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালন করে। জেলার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের উপরে হামলার প্রতিবাতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে আন্দোলনকারীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে। কর্মবিরতি কালে শিক্ষকরা জানান, তিনদফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা ক্লাসে ফিরে যাবেন না। অনেক ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকদের এই আন্দোলনের সাথে শরিক হন। এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল বারী জানান, শিক্ষক কর্মচারীদের উপরে হামলা হলে তারা তো প্রতিবাদ করতেই পারে। এখানে আমাদের কি বলার আছে এ ব্যাপারে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে।




দামুড়হুদায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন

দামুড়হুদায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উদযাপন উপলক্ষে অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া, র‍্যলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার “সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ ” এই স্লোগান সামনে রেখে দুপুর ১২ টার সময় উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের আয়োজনে পরিষদের সভাকক্ষে প্রথমে উপজেলা চত্বর থেকে র‍্যলি ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয় পরবর্তীতে পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্রের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান, সমাজ সেবা অফিসার তোফাজ্জল হক, দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক তানজির ফয়সাল, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে জাহান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজিদ, ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হাসান, একাডেমিক সুপার ভাইজার রাফিজুল ইসলামসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও ছাত্র- ছাত্রীবৃন্দ।

এসময় আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন যেকোনো যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের অগ্রিম প্রস্তুতি থাকতে হবে। বজ্রপাত মোকাবেলায় আমাদের বেশি বেশি করে তালগাছ রোপন করতে হবে। যে সব দূর্যোগ থেকে অগ্নিকাণ্ড সৃষ্টি হয় সেগুলো সম্পর্কে নিজে সচেতন হতে হবে এবং আশেপাশের মানুষজনক সচেতন করতে হবে। এছাড়াও ভূমিকম্প ঘূর্ণিঝড়সহ অন্যান্য বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বিত প্রস্তুতি থাকতে হবে। দুর্যোগ সম্পর্কিত তথ্য জানানোর জন্য প্রশাসনসহ যেসব সরকারি হটলাইন নাম্বার আছে সেগুলো জনসাধারণকে জানাতে হবে।




মেহেরপুরে মহিলা দলের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে মেহেরপুরে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে পুলিশ লাইনের পাশে এ কর্মী সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মেহেরপুর সরকারি কলেজ সাবেক ভিপি জাহাঙ্গী

বিশ্বাস। জেলা মহিলা দলের সভাপতি সায়েদাতুন্নেসা নয়নের সভাপতিত্বে এবং অর্থ বিষয়ক সম্পাদক রুপালি খাতুনের সঞ্চালনায় সভাটি পরিচালিত হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বেদানা আক্তার পলি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিমা খাতুন, মহিলা দল নেত্রী ফিরোজা আক্তার পপি, বিউটি, রঞ্জনা, মল্লে, কল্পনা, শেফালী, তানিয়া প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মহিলা দলসহ সকল নেত্রী-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং সংগঠনকে আরও গতিশীল করতে হবে।




আলমডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমণ দিবস পালিত

আলমডাঙ্গায় ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ পালিত হয়েছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশে দুর্যোগ প্রস্তুতি হোক সবার অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আলমডাঙ্গা উপজেলায় পালিত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস–২০২৫’।

সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌদুদ আলম খাঁ’র সভাপতিত্ব প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশীষ কুমার বসু। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জনগণের সচেতনতা ও প্রস্তুতি। সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিক যদি নিজের অবস্থান থেকে প্রস্তুত থাকে, তবে যেকোনো দুর্যোগ সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব। আমরা চাই আলমডাঙ্গাকে একটি দুর্যোগ-সহনশীল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে, যেখানে মানুষ আগাম প্রস্তুত থাকবে, ভয় নয়, আত্মবিশ্বাস নিয়ে দুর্যোগ মোকাবিলা করবে।’ দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র‍্যালি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অপরদিকে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় ‘দুর্যোগ ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ে মহড়া’ কর্মসূচিও পালন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ইন্সট্রাক্টর জামাল হোসেন, উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার, এস এফ ডি এফ এর উপজেলা ব্যবস্থাপক দীপক কুমার বসু, সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহজাহান রেজা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আল মামুন, মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদুল আলম বিপুল, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারি মহসিন মোড়লসহ ও বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।




আলমডাঙ্গায় দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও নগদ টাকা সহ আটক-১

আলমডাঙ্গায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে দুটি দেশীয় অস্ত্র, ১৪ পিস টেপেন্ডাডল ট্যাবলেট ও মাদক বিক্রির নগদ ৫৮ হাজার ৪০ টাকা-সহ শামীম রেজা সাগর (৩২)-কে আটক করেছে।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয় না। আটককৃত শামীম উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে।

যৌথ বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ সোমবার ভোরে সেনাবাহিনী অস্থায়ী ক্যাম্প হারদী আলমডাঙ্গার অফিসার বি এ-১০৯৪৯ ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ অয়ন এর নেতৃত্বে, এস আই আব্দুল মতিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ওবায়দুর হকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় তার ছেলে শামীম রেজা সাগর কে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি তল্লাশি করে দেশীয় অস্ত্র, মাদক, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আজ সোমবার সকালে তাকে আলমডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।




দর্শনায় পাঁচ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক ব্যাবসায়ী গ্রেফতার

দর্শনা থানা পুলিশ গত দুইদিনে মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক ব্যাবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে।

গত রবিবার রাত ১১ টার দিকে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ শহীদ তিতুমীরের নেতৃত্বে অভিযান চালায় দর্শনা দক্ষিন চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডপাড়া মিজান টি স্টলের সামনে পাঁকা রাস্তার উপর। এ সময় দর্শনা থানার চৌকস এস আই মাসুদুর রহমান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ দর্শনা পৌরসভার দক্ষিনচাঁদপুর গোরস্থান পাড়ার খায়রুল ইসলামের ছেলে রাশেদুলকে (৩৫) গ্রেফতার করে।

পরে তার কাছ থেকে একটি ডিজিটাল দাঁড়িপাল্লাসহ প্লাষ্টিকের কসটেপ মোড়ানো ১ কেজি গাজা উদ্ধার করে।

অপরদিকে সোমবার সকাল ১০ টার দিকে দর্শনা থানার এস আই মাসুদুর রহমান মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে দর্শনা বাসষ্ট্যান্ড থেকে ৪ কেজি গাঁজাসহ মাদক সম্রাট মাগরিব আলীকে (৪৫) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত মাগরিব আলী দর্শনা পৌরসভার জয়নগর গ্রামের মৃত্য আজাদ আলীর ছেলে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গতকালই তাদের দুজনকে চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে সোপর্দ করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।




সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকমুক্ত সচিবালয় : পরিবেশবান্ধব প্রশাসনের নতুন দিগন্ত

সরকারের স্বায়ত্তশাসিত একটি সংস্থার মহাপরিচালক শওকত হায়দার(ছদ্মনাম)। অন্যদিনের মতো আজও তিনি ভোরে উঠে ফ্রেশ হয়ে মর্নিং ওয়াক-গোসল ও সকালের নাস্তা সেরে পরিচ্ছন্ন পোশাকে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। চাকরি জীবনের শুরু থেকেই দক্ষ মানুষ হিসেবে যেমন তাঁর পরিচিতি, অনুরূপভাবে পোশাক-পরিচ্ছদেও টিপটপ ব্যক্তি হিসেবে তার নামডাক বেশ। সকাল নয়টার আগেই রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় অফিসের সামনে পৌঁছায় তাকে বহনকারী জিপ গাড়িটি। তবে বিপত্তি ঘটেছে এখানেই, গতকাল সন্ধ্যায় যে অল্প একটু বৃষ্টি হয়েছে, সেই পানি রাস্তা ও অফিস চত্বরে এখনও পর্যন্ত জমে রয়েছে।

অফিসে ঢুকতে হলে ড্রেন ও সুয়ারেজের ময়লায় একাকার এই কালো পানিতে পা ভেজানো ছাড়া অন্য উপায় নেই। ইচ্ছে না থাকলেও অফিস জুতো খুলে স্যান্ডেল পরে সে পথেই হাঁটতে হলো তাকে। পানি আর ময়লার পঁচা দুর্গন্ধে গা ঘিনঘিন করা অবস্থা হলো তখন। একটু পরে অবশ্য সিটি কর্পোরেশনের লোক এসে পানি অপসারণের ড্রেনের মুখ থেকে জমে থাকা কিছু পলিথিন সরিয়ে দিতেই সমস্ত পানি নিমিষেই নেমে গেল। জলাবদ্ধতার কারণটি ছোট্ট হলেও অফিসের সবার ভোগান্তি ছিল অনেক বড়ো।

ফেলে দেওয়া পলিথিন বা প্লাস্টিকগুলো নাগরিক জীবনে এরকম ছোটো-বড়ো বিপত্তির কারণ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়তই। একসময়ে বিজ্ঞানের উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার পলিথিন বা প্লাস্টিক এখন পরিবেশ দূষণের উৎস ও জনজীবনে এক দুঃস্বপ্নের নাম। ব্যবহার শেষে প্লাস্টিক বর্জ্যের বড়ো একটি অংশ জমা হয় ভাগাড়ে, যেগুলো পচতে সময় লেগে যায় বছরের পর বছর। পরিবেশে প্লাস্টিকের প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং বিধ্বংসী। একবার ব্যবহারযোগ্য পলিব্যাগ থেকে শুরু করে বহুবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিকপণ্য সবই পরিবেশের ক্ষয়ে ভূমিকা রাখে। এসইউপি বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার এখন সর্বব্যাপী, বিশেষ করে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যাগ, স্ট্র এবং বোতলের মতো দ্রব্যাদি। এর অপব্যবহার এবং ব্যবহৃত পলিথিনের ব্যবস্থাপনাগত ঘাটতির ফলে বিশ্বব্যাপী বাস্তুতন্ত্রের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়া একটি মোটামুটি পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্যের গন্তব্য হচ্ছে জলাশয়গুলো, যার জের ধরেই ক্রমবর্ধমান সমুদ্র দূষণের সমস্যাটি আরও প্রকট হয়েছে। সমুদ্র যেন প্লাস্টিক বর্জ্যের এক বিশাল মজুদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এতে করে বিপর্যস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক জীবন। জাতিসংঘের পরিবেশ প্রোগ্রামের (ইউএনইপি) পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আট মিলিয়নেরও বেশি মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য প্রতিবছর সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। যা সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য বিশাল হুমকিতে রূপ নেয়, কেননা তারা প্রায়ই ভুল করে প্লাস্টিককে খাবার ভেবে খেয়ে ফেলে অথবা বিভিন্নভাবে তাদের শরীর প্লাস্টিকের সঙ্গে জড়িয়ে যায়, যা তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাটি দূষিত হয় এবং এতে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের কারণে জীবজগৎ ও উদ্ভিদকূল উভয়েই ক্ষতির মুখে পড়ে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে মাটির উর্বরতা ব্যাহত হয়, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে এবং বাস্তুতন্ত্রের সুস্থতা বাধাগ্রস্ত হয়। এ ধরনের বর্জ্য পুড়িয়ে নষ্টের চেষ্টা করলে তা পরিবেশে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ হয়ে মিশে যায়, যার ফলে বায়ু দূষণ ঘটে এবং পরবর্তীতে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগব্যাধির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। প্লাস্টিক দূষণের সবচেয়ে ভয়ের দিকটি হচ্ছে এর দীর্ঘস্থায়িত্ব। এর পচনে বহু বহু বছর লেগে যায় এবং বহু বছর পরও এটি ভেঙে গিয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক নামের ক্ষুদ্রাংশে পরিণত হয়। মাইক্রোপ্লাস্টিকের আকার পাঁচ মিলিমিটারের চেয়েও কম এবং সমুদ্রের তলদেশ থেকে শুরু করে যে বাতাসে আমরা শ্বাস নিই-তার সবখানেই এখন মাইক্রোপ্লাস্টিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এই ছোটো ছোটো কণাগুলো খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্ম দেয়।

প্লাস্টিকের জীবনচক্রের প্রথম ধাপ শুরু জীবাশ্ম জ্বালানি, অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস নিষ্কাশনের মধ্য দিয়ে। এই অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোকে প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল, যেমন-ইথিলিন ও প্রোপিলিন পেতে ব্যবহার করা হয়। এই নিষ্কাশন প্রক্রিয়ার ফলে বায়ু ও পানি দূষণ হয় এবং এর ফলে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাসের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড়োসড়ো ঘটনা ঘটে। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল বা আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইন কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, প্রায় ৯৯ শতাংশ প্লাস্টিকই আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। শুধু ২০২০ সালেই বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক শিল্প থেকে ১.৮ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সমপরিমাণ গ্যাস বের হয়েছে, যা কি না ৩৮০টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্বন দূষণের সমান।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার সীমিত করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শুরুতে ছিলো শপিংমলগুলোতে পলিব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ। এ ব্যাপারে আইনের প্রয়োগসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, যা এখনও চলমান আছে। এর পাশাপাশি ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে গত ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বর্জন।এর আওতায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ফাইল-ফোল্ডারের পরিবর্তে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব অন্যান্য সামগ্রীর তৈরি ফাইল ও ফোল্ডার ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া প্লাস্টিক ব‍্যাগের পরিবর্তে কটন বা জুট ফেব্রিকের ব্যাগ ব্যবহার করা, প্লাস্টিকের পানির বোতলের পরিবর্তে কাঁচের বোতল ও কাঁচের গ্লাস ব্যবহার, প্লাস্টিকের ব্যানারের পরিবর্তে কটন ফেব্রিক, জুট ফেব্রিক বা বায়োডিগ্রেডেবল উপাদানে তৈরি ব্যানার ব্যবহার, দাওয়াতপত্র, ভিজিটিং কার্ড ও বিভিন্ন ধরনের প্রচারপত্রে প্লাস্টিকের লেমিনেটিং পরিহার করার পরামর্শও রয়েছে। উপরন্তু বিভিন্ন সভা-সেমিনারে সরবরাহকৃত খাবারের প্যাকেট যেন কাগজের তৈরি হয় বা পরিবেশ বান্ধব হয় সেটি নিশ্চিত করা। একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, কাপ, স্ট্র, কাটলারিসহ সকল ধরনের পণ্য পরিহার, প্লাস্টিকের কলমের পরিবর্তে পেনসিল বা কাগজের কলম ব্যবহার, বার্ষিক প্রতিবেদনসহ সকল ধরনের প্রকাশনায় লেমিনেটেড মোড়ক ও প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিহার এবং ফুলের তোড়াতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত আছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সভায় সব মন্ত্রণালয়কে প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার সীমিত করা-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, দর্শনার্থীদের কেউ যাতে এসইউপি নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য প্রবেশপথে তল্লাশি করা এবং দর্শনার্থীদের কাছে প্লাস্টিকের ব্যাগ পাওয়া গেলে এর পরিবর্তে তাদের কাগজের বা কাপড়ের ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সচিবালয়ের প্রবেশপথসহ বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক বোর্ড বসানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্লাস্টিকের থলের পরিবর্তে পাটজাত, কাপড় বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য থলে ব্যবহার করতে হবে। সরকারি কেনাকাটায়ও প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এসইউপি ব্যবহার বন্ধে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে ব্যবহারের জন্য বিকল্প সামগ্রী সরবরাহ করা এবং সভা-সেমিনারে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব খাবারের প্যাকেট দেওয়া হবে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পারসন নিয়োগ ও মনিটরিং কমিটি গঠন করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করা এসব প্লাস্টিকপণ্য বন্ধে অনুসরণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করতে সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ধারণা করা যায়।

একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বর্জনের উদ্যোগে সবার আগে এগিয়ে এসেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও তার অন্যতম প্রতিষ্ঠান তথ্য অধিদফতর। তথ্য অধিদফতরের অবস্থান সচিবালয়ের ভেতরেই। বাংলাদেশ সচিবালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) মুক্ত ঘোষণা করার ধারাবাহিকতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং তথ্য অধিদফতর (পিআইডি)-কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।এর আওতায় পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণকল্পে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক-এর ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রীর পরিবর্তে নিম্নোক্ত প্রস্তাবিত বিকল্প পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করে। প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে ২০০২ সালে আইন করা হলেও গত ২২ বছরে তার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার সেই কাজে হাত দিয়েছে। এতদিন পরে এসে যখন বলা হয় পলিব্যাগের বিকল্প এখনো বাজারে নেই, তা কোনোভাবেই শতভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকৃত কথা হলো, ২২ বছরেও আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় প্লাস্টিকের বিকল্পও গড়ে ওঠেনি। স্বভাবতই আমরা প্লাস্টিকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছি। আইনের যথাযথ প্রয়োগহলে বাস্তবতার নিরিখেই প্লাস্টিকের বিকল্প গড়ে উঠবে। তখন সবাই প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য ব্যবহার করার সুযোগ পাবে ও সেক্ষেত্রে নৈতিক বাধ্যবাধকতা পালনও সহজ হবে। একটু ভেবে দেখা দরকার, আজ আমরা যেসব প্লাস্টিকগুলো বর্জ্য হিসেবে প্রকৃতিতে ফেলে দিচ্ছি, তার কোনো কোনোটি হয়তো আগামী ৪০০ বছরেও ধ্বংস হবে না।

জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচি (ইউএনইপি) তাদের বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার বিষয়ক ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা নদী দিয়ে প্রতিদিন ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে মিশছে। এর ফলে সমুদ্রের তলদেশে যে হারে পলিথিন-প্লাস্টিকের স্তর বাড়ছে, তাতে আগামী ৫০ বছর পর সমুদ্রে মাছের চেয়ে পলিথিনের পরিমাণই হয়তো বেশি হবে। বাংলাদেশে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কী পরিমাণ বেড়েছে তার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এবং বিশ্বব্যাংক। তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০৫ সালে দেশের শহরাঞ্চলে বছরে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল মাত্র তিন কেজি, যেটি ২০২০ সালে বৃদ্ধি পেয়ে নয় কেজিতে উন্নীত হয়েছে।

বর্তমানে শুধু রাজধানীতেই একজন মানুষের বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার ছাড়িয়েছে ২৪ কেজি। পুরো বাংলাদেশের হিসেব বিবেচনায় নিলে প্রতিবছর প্রায় এক কোটি টন পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে। যদি ও এ সব প্লাস্টিক-পলিথিনের মাত্র ৩৭শতাংশ রিসাইক্লিং করা সম্ভব হচ্ছে। পলিথিন এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই) সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম। বৈশ্বিক প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণের প্রায় আড়াই শতাংশ সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশেই। এ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সচিবালয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্রকে প্লাস্টিক-পলিথিন মুক্ত করার যে শুভ উদ্যোগের শুরু হয়েছে, তার গুরুত্ব অশেষ। উদ্যোগটির বাস্তবায়ন সফল হলে পুরো দেশকে পলিথিন মুক্ত করার পথে আমরা আর ও একধাপ এগিয়ে যাব। বাংলাদেশ মুক্ত হবে এক পরিবেশগত মহা-হুমকি থেকে। তাই, উদ্যোগটির সফলতার প্রত্যাশা এখন সবার।

লেখক: সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর, ঢাকা




মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে মেহেরপুরে বর্ণাঢ্য র‍্যালি, আলোচনা ও মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে।

সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. খায়রুল ইসলাম, মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ইনজামুল হক, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক সাকরিয়া হায়দার, এবং ব্র্যাকের জেলা প্রতিনিধি মনিরুল হায়দার প্রমুখ।

আলোচনা সভার আগে দিবসটি উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালামের নেতৃত্বে র‍্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে।

পরে, আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদ্যোগে মহড়ার আয়োজন করা হয়।




ঝিনাইদহে তালাবদ্ধ দোকানঘর থেকে স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক

ঝিনাইদহে স্বামীর তালাবদ্ধ দোকানঘর থেকে স্ত্রী তাসলিমা খাতুন (৩৮) নামে এক গৃহবধুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার রাতে ঝিনাইদহ শহরতলীর গোপীনাথপুর এলাকার ওই কাঠের দোকানের ভিতর থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তাসলিমা খাতুনের স্বামী লাল মিয়া পলাতক রয়েছে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঝিনাইদহ শহরতলীর গোপিনাথপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রী লাল মিয়া ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাশে একটি দোকান করে ফার্নিচার তৈরির কাজ করেন।

সকালে লালমিয়া দোকানে এলে বাড়ি থেকে তার স্ত্রী তাসলিমা খাতুনও দোকানে আসে। বিকেলে তার ছেলে বাড়িতে এসে বাবা-মা কাউকেই খুজে পায়না। অনেক খোঁজাখুজি পরে তাদের কাঠের দোকানে গেলে ঘরের ভিতর তার মা তাসলিমার মৃতদেহ দেখতে পায়। তখন সে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এটি হত্যাকান্ড বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।




আলমডাঙ্গায় টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন

আলমডাঙ্গায় টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। টাইফয়েড প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আলমডাঙ্গায় শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় আলমডাঙ্গা গার্লস স্কুল প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আক্তার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অশীষ কুমার বসু, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, তদন্ত ওসি লিয়াকত আলীসহ স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।

উদ্বোধন শেষে ডা. শারমিন আক্তার বলেন, “টাইফয়েড একটি সংক্রামক রোগ, যা মূলত দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে শিশু ও কিশোরদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। সরকারের এই মহতী উদ্যোগ সফল করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “টিকা গ্রহণের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। তাই এ বিষয়ে অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে এবং সবাইকে অংশ নিতে উৎসাহিত করতে হবে।” সরকারের এই কর্মসূচির মাধ্যমে ধীরে ধীরে উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়নে টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, সরকারের এমন স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগে তারা সন্তুষ্ট এবং আশা করছেন, এর ফলে এলাকাজুড়ে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে।