আলমডাঙ্গায় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

আলমডাঙ্গায় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পত্রিকার আলমডাঙ্গা কার্যালয়ে কেক কেটে ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সময়ের সমীকরণ পত্রিকার আলমডাঙ্গা ব্যুরো প্রধান খন্দকার হামিদুল ইসলাম আজম, দৈনিক মাথাভাঙ্গার ব্যুরো প্রধান রহমান মুকুল, দৈনিক পশ্চিমাঞ্চল পত্রিকার ব্যুরো প্রধান প্রশান্ত বিশ্বাস, দৈনিক খাসখবরের ব্যুরো প্রধান তানভীর সোহেল, দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিনের ব্যুরো প্রধান আতিক বিশ্বাস, দৈনিক লোকসমাজের আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি ফিরোজ ইফতেখার, দৈনিক মাথাভাঙ্গার সহকারী ব্যুরো প্রধান শরিফুল ইসলাম রোকন এবং দৈনিক পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী ব্যুরো প্রধান রানা আফিন্দি।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম পিন্টু, কবি গোলাম রহমান, কবি সিদ্দিকুর রহমান, কবি হাবিবুর রহমান মজুমদার, জাহাঙ্গীর আলম, কিশোর কারনিকসহ আরও অনেকে।




আলমডাঙ্গা পৌর ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ 

আলমডাঙ্গার পৌর ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল হকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বেলগাছি এলাকার ভুক্তভোগী মিঠু আলী। এ ঘটনায় তিনি সোমবার রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লিখিত অভিযোগ করেন।

মিঠু  আলী জানান, বেলগাছি মৌজার আরএস খতিয়ান নং ১০৪৪ ও খারিজ খতিয়ান নং ২৫–৭৭১৯–সহ একাধিক দাগে মোট ৩.৫২ একর জমি তাঁদের পারিবারিক সরিকানা অংশ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে রয়েছে। এই জমির ওয়ারিশসূত্রে তাঁরা আটজন অংশীদার।

 তিনি আরও বলেন, আরএস ১০৪৪ নং খতিয়ানে মৃত কুবের মন্ডলের ছেলে ওমর আলী ও ঝুমর আলীর অংশ ছাড়াও শহিদুল, ঝড়ি বিবি, শাহেদা খাতুন, কফিরন নেছা, আফিরন নেছা ও রুপজান নেছার নাম নিয়মিতভাবে রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। অন্যদিকে খারিজ খতিয়ান ২৫–৭৭১৯–এ বিপ্লব হোসেন গং-এর নাম রয়েছে।

মিঠু আলীর অভিযোগ, ২০১১ সালে একই এলাকার শাহিন রেজা গোপনে আফিরন নেছার কাছ থেকে ১৬ শতক সরিকানা জমি ক্রয় করেন। পরে তিনি আদালতে দখলে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান আলমডাঙ্গা পৌর ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল হক। চলতি বছরের ২৮ আগস্ট সরেজমিন তদন্তে গেলে ভূমি কর্মকর্তা তাঁদের বা অন্যান্য অংশীদারদের না জানিয়ে একতরফাভাবে তদন্ত পরিচালনা করেন এবং প্রতিবেদন আদালতে পাঠান। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত বিবাদীপক্ষকে আবাদি ফসল (ধান) কেটে নেওয়ার অনুমতি এবং আগামী ৩০ নভেম্বর দুই পক্ষকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

মিঠু আলী অভিযোগ করেন, ভূমি কর্মকর্তার পক্ষপাতমূলক ভূমিকার কারণেই আমাদের বৈধ জমি অন্যপক্ষ কেটে নিচ্ছে। এতে আমরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছি।যাহাতে পূন:তদন্ত করে আমার জমির ফলানো ফসল ফিরে পাই এবং সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সঠিক বিচার পাই তার জন্য  আলমডাঙ্গা ভূমি কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।




দামুড়হুদায় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত বহুল প্রচারিত দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার ১১ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে দামুড়হুদায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা প্রেসক্লাব হলরুমে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

এ সময় অতিথিবৃন্দ বলেন, সময়ের সমীকরণ একটি পরিচ্ছন্ন ও তথ্যনিষ্ঠ দৈনিক। সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশনের কারণে পত্রিকাটি পাঠকের আস্থা অর্জন করেছে। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে চললে একদিন পত্রিকাটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে পরিণত হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিক এবং পত্রিকার সঙ্গে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার দামুড়হুদা প্রতিবেদক মোজাম্মেল শিশিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তানজির ফয়সাল এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল মতিন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তাছির আহমেদ, হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান কাজল, সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল বাবু, সদস্য জহিরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাজাহান আলীসহ প্রেসক্লাবের অন্যান্য সাংবাদিক।




দামুড়হুদার কাদিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কাদিপুর গ্রামে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার বেলা ২টার দিকে কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে চটকা গাছে সজোরে ধাক্কা লাগলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন লোকনাথপুর পশ্চিমপাড়ার এনামুলের ছেলে সেলিম (১৮) এবং তারিফের ছেলে তানজিল (১৬)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তানজিল ওয়ালটন কোম্পানির একটি ১১০ সিসি মোটরসাইকেল চালিয়ে সেলিমকে নিয়ে এলাকায় ঘুরছিল। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত গতির কারণে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুলের সামনে রাস্তার পাশে থাকা গাছে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই সেলিম মারা যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম তানজিলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেও মারা যায়।

সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেলের গতি বেশি থাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুই তরুণের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা দুজনেই কৃষিকাজে যুক্ত ছিলেন।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ূন কবির বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে। কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় ঘটনাস্থলে মৃত সেলিমের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপর লাশটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রয়েছে।




হরিণাকুণ্ডুতে চোর সন্দেহে যুবকের নাকে খত দিয়ে গ্রামে ঘুরানোর অভিযোগ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে চুরির সন্দেহে এক যুবককে নির্যাতনের পর নাকে খত দিয়ে গ্রাম ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে সিরাজুল ইসলাম নামের বিএনপি এক স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে।

গত শনিবার দুপুরে ভায়না ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কালিশংকরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম রসুল মিয়া (৩০) সে একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ওই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক এনামুল হকের চুরির ঘটনা ঘটে । পরদিন বেলা তিনটার দিকে সালিশের মাধ্যমে ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুই গ্রামের মাতবরের সামনে তাকে চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করেণ কয়েকজন ব্যক্তি।

এই ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ব্যাপক ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায় যুবককে মাটিতে শুইয়ে নাক মাটির সাথে ঘষতে ঘষতে মাঠে ঘুরাচ্ছে। সেই দৃশ্য দেখছেন স্থানীয় গ্রামবাসী।সেখানে আরও দেখা যায় এই নাকে খত শেষ হলে তাকে সোজা করে উঠিয়ে তিনবার কানধরে উঠবস করাচ্ছে। এরপর তাকে মারতে মারতে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। এসময় ওই কথিত নেতা বলেন এই বিচারের বিরুদ্ধে কেউ তথা বললে তাকেউ শাস্তি দেওয়া হবে।

যার নির্দেশে নাকে খত দেওয়া হয়েছে তিনি ভায়না ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। এব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলে বিএনপির এই নেতা বলেন পুলিশে দিলে ওর অনেক ক্ষতি হয়ে যেত, তাছাড়া স্থানীয়দে কাছ থেকে ওকে বাচাতে আমি তাকে এই শাস্তি দিয়েছি। এব্যাপাওে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, আইন বহির্ভূত এসব শালিশ করার এখতিয়ার কারও নেই। নির্যাতিক ওই যুবক বা তার পরিবারের কেউ অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।




গাংনীতে মনােনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে দীর্ঘ সড়ক জুড়ে মানববন্ধন

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপি’র দলীয় মনােনয়ন পরিবর্তন করে ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে মনােনয়ন দেওয়ার দাবিতে গাংনীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সােমবার বিকেলে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের আলমপুর ব্রিজ হতে খলিশাকুন্ডি ব্রিজ পর্যন্ত মানববন্ধনে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, বিএনপি নেতা ও ধানখােলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান, গাংনী পৌর বিএনপি’র সভাপতি মকবুল হােসেন মেঘলা, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।




গাংনীতে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

অশ্লীল ভিডিও কান্ডে ভাইরাল হওয়া মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সপ্না খাতুন।

আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কাজিপুর গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে প্রধান শিক্ষক মোঃ রাজু আহমেদ ২০২২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন তার অফিসে একা ডেকে নিয়ে নানা রকম প্রলোভনে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে হাত দেয়। বাধা দিতে গেলে মুখ চেপে ধরে খুন করে ফেলার হুমকি দিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এভাবে ১০/১১/২০২৫ সাল পর্যন্ত দিনের পর দিন আমাকে স্কুলের অফিস রুম সহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে।

এছাড়া রাজু মাষ্টার তার মোবাইল ফোন থেকে তাকে ফোন করেন এবং যৌনাঙ্গ প্রদর্শন সহ বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে যৌন হয়রানী করতে থাকে দিনের পর দিন। এইভাবে আসামী আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কুষ্টিয়া শহরে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতো। শেষ ঘটনার তারিখ ও সময়ে বিয়ের কথা বলে তার অফিসে স্কুল ছুটির পরে ডেকে নিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে একাধিক বার জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।

নিরুপায় হয়ে ধর্ষক রাজু মাষ্টারের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৯(১)/১০ ধারায় মামলা দায়ের করেছি। মামলায় তিনি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন।

স্থানীয় ও এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, অশ্লীল ভিডিও কান্ডে ভাইরাল হওয়া রাজু মাষ্টারের বিরুদ্ধে নানা আলোচনা-সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। অপকর্ম আড়াল করতে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। তার বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী ইতোমধ্যে মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্বারকলিপিও দিয়েছে। এঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ রাজু মাষ্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও দাবি উঠেছে স্থায়ী বহিষ্কারের।

এবিষয়ে কথা বলতে এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত ভাইরাল হওয়া প্রধান শিক্ষক রাজু মাষ্টারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

মামলার আইনজীবি শাহরিয়ার মাহমুদ শাওন বলেন, বিজ্ঞ মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলী মাসুদ শেখ মামলাটি এফআইআর (নথিভুক্ত) করতে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বানী ইসরাইল বলেন, আদালতের নির্দেশের কাগজপত্র এখনও থানায় আসেনি। আসলে মামলা রেকর্ড করে তদন্ত কার্যক্রমের পাশাপাশি আসামী গ্রেফতারে অভিযান চলানো হবে।




মহেশপুরে জামায়াত প্রার্থীর সমর্থনে গণমিছিল

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় জামায়াত ইসলামী মনোনীত ঝিনাইদহ-৩ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মতিয়ার রহমানের সমর্থনে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়নের সমান্তা বাজার মসজিদ থেকে শুরু হয়ে বিল্লাল মোড় ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয় মিছিলটি। মিছিল শেষে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে কাজিরবেড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল আলী, ইউনিয়ন আমির মহিউদ্দিন, সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জিয়াউর রহমান, যুব বিভাগের সভাপতি ফারুক আহমেদ ও সেক্রেটারি শাহিনুজ্জামানসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তারা এলাকায় শান্তি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।




ঝিনাইদহে জনবল নিয়োগে আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ

ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আয়োজনে আজ সোমবার সকালে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ।

এতে পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন, জেলা শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জিয়াবুল হকসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

পরে তাদের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবর পেশ করেন।




গ্রাম আদালত : স্থানীয় বিরোধের কার্যকর নিষ্পত্তি

গ্রামের প্রতিটি সাধারণ মানুষ নানা ধরনের দৈনন্দিন বিরোধ ও সমস্যার সম্মুখীন হয়। সেই সমস্যা যেমন ব্যক্তিগত সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ, গবাদিপশুর ক্ষতি, চুক্তি-দলিলের সমস্যা অথবা পারিবারিক সহিংসতার মতো অভিযোগ নিষ্পত্তি সাধারণ আদালতে দীর্ঘ সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ। এই সমস্যাগুলো দ্রুত ও সহজভাবে সমাধান করার উদ্দেশ্যে গ্রাম আদালত গঠিত হয়েছে। এটি এমন একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান যা ইউনিয়নের সীমিত এলাকায় সুনির্দিষ্ট ফৌজদাবি ও দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে গ্রামে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ আইনের আওতায় এসে সহজেই তাদের অধিকার আদায় করতে পারে। এই আদালতের কার্যক্রমের আইনগত ভিত্তি প্রবর্তিত হয়েছে গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ এবং পরবর্তীতে এর কার্যকারিতা আরও শক্তিশালী করতে গ্রাম আদালত সংশোধন আইন, ২০২৪ প্রণীত হয়েছে।

এই আইনের অধীনে গ্রাম আদালত দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে, স্থানীয় বিরোধ ও সমস্যার সমাধান করে এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য ন্যায্য ও সমতা ভিত্তিক আইনি সেবা প্রদান করে। এতে আদালতের জটিলতা কমে আসে, সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়। ফলে গ্রামের মানুষ ন্যায়বিচারের জন্য সহজেই সহায়তা পেতে সক্ষম হয়।

গ্রাম আদালতের মূল কাঠামোতে একজন চেয়ারম্যান এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক মনোনীত চারজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, মোট পাঁচজন। চেয়ারম্যান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্য বা নির্বাচিত ব্যক্তি হতে পারে যিনি আদালতের কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যদি ফৌজদারী বা দেওয়ানী মামলায় নারীর স্বার্থ বা শিশু বিষয় জড়িত থাকে তবে আদালতের গঠনে নিশ্চিতভাবে একজন নারী সদস্যকে মনোনয়ন প্রদান করতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে নারী ও শিশুদের স্বার্থের প্রতি যথাযথ সংবেদনশীলতা বজায় থাকবে।

তবে কোনো কারণে সদস্য মনোনয়ন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না হলে, আদালত নির্দিষ্ট সদস্যদের ছাড়াই কার্যক্রম বৈধভাবে চালাতে সক্ষম। অর্থাৎ, আদালতের কার্যক্রম স্থগিত হবে না, বরং স্থানীয় বিরোধ ও বিতর্ক দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে বিচার কার্যক্রম যথাযথভাবে চালানো সম্ভব। এই কাঠামো নিশ্চিত করে যে, গ্রাম আদালত দ্রুত, সহজ ও সমন্বিত বিচার সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং গ্রামের মানুষ দ্রুত তাদের আইনি অধিকার আদায়ে সহায়তা পাবে।

গ্রাম আদালত স্থানীয় বিরোধ ও বিতর্ক দ্রুত ও সহজভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য নির্দিষ্ট ক্ষমতা রাখে। গ্রাম আদালত ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে গ্রামের অল্পমূল্যের সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ ও সাধারণ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ক্ষমতা রাখে। এর আওতায় আসে চুরি, মারামারি, আঘাত, ভয়ভীতি প্রদর্শন, অবৈধ জনসমাবেশ এবং অন্যের সম্পত্তি ক্ষতি বা দখল সংক্রান্ত বিষয়। এছাড়া, গবাদিপশুর ক্ষতি বা চুরি সংক্রান্ত ঘটনা, যেগুলোর মূল্য সীমিত সেসব এই আদালতে বিচার করা হয়। গ্রাম আদালত অল্পমূল্যের অর্থ বা সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রতারণা, জালিয়াতি, চুক্তিভঙ্গ এবং ক্ষতির জন্য মামলা দেখার ক্ষমতাও রাখে। এছাড়া, এসব অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা সহায়তা প্রদানের বিষয়ও আদালতের বিচারযোগ্যতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে, গ্রাম আদালত চুক্তি, রশিদ বা অন্যান্য দলিলের ভিত্তিতে প্রাপ্য অর্থ আদায়ের মামলা, অস্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা উহার মূল্য আদায়ের মামলা এবং কৃষি শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি বা ব্যক্তিগত অধিকারভুক্তদের বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা পরিচালনা করতে সক্ষম। তবে আদালতের এখতিয়ার সীমিত, যা অনুযায়ী দাবিকৃত অর্থ বা সম্পত্তির মূল্য সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে হবে। এই সীমাবদ্ধতা নিশ্চিত করে যে গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের ছোটো ও মাঝারি মামলার দ্রুত সমাধান পেতে পারবে যেখানে ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিতর্ক সহজভাবে এবং প্রথাগত জটিলতা ছাড়াই নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

গ্রামের একজন ব্যক্তি যদি গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করতে চায়, তবে সে সরাসরি তার ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম আদালতে আবেদন করতে হবে। আদালত অভিযোগ বা দাবি নথিভুক্তকরণের মাধ্যমে মামলা রেজিস্ট্রেশন করবে এবং প্রয়োজনীয় বিবরণ লিপিবদ্ধ করবে। এই প্রক্রিয়ার সময় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, গ্রাম আদালতে কোনো পক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে না। সকল মামলা নিজ উদ্যোগে বা প্রাথমিকভাবে বিচারকদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। এর ফলে আদালতের কার্যক্রম সহজ, দ্রুত এবং কম খরচে সম্পন্ন হয় যা সাধারণ গ্রামের মানুষের জন্য বিচারপ্রাপ্তি আরও সহজলভ্য করে তোলে।

গ্রাম আদালতে বিচার প্রক্রিয়া মূলত উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটি দ্বারা পরিচালিত হয়। চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে, সদস্যদের সমান ভোট হলে চেয়ারম্যান নির্ণায়ক ভোট প্রদান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। আদালতে মামলার উভয় পক্ষ সমানভাবে বিবেচনায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারে। এছাড়া শিশু, মহিলা বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি যদি আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের পক্ষে স্বাক্ষ্য প্রদান করতে অক্ষম হন তবে উক্ত ব্যক্তির পক্ষ থেকে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলা পরিচালনা করতে পারেন। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে, গ্রাম আদালতের বিচার সমতাপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপটে গ্রহণযোগ্য।

গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকরকরণ প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। আদালত যে কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ, সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা দখল প্রত্যার্পণের নির্দেশ প্রদান করলে, উক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি অর্থ প্রদান বা সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পন্ন না হয়, তবে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া, মামলার পক্ষগণ যদি মনে করেন যে গ্রাম আদালত যথাযথ বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা সংশ্লিষ্ট সহকারী জজ বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আপীল করতে পারেন, যেখানে পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত বাতিল বা পরিবর্তন বা গ্রাম আদালতে ফেরত পাঠানোর সুযোগ থাকে। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে, গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকর, যথাযথ ও ন্যায়সংগত।

গ্রাম আদালতের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা ও সতর্কতা মানা আবশ্যক। আদালত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় দলিল বা অপ্রকাশিত রেকর্ড প্রদানের জন্য কোনো ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে পারবে না। একইভাবে, ফৌজদারী মামলার তদন্তে পুলিশ যদি যুক্ত থাকে, তারা তদন্ত বন্ধ করতে পারবে না। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী ফৌজদারী আদালত মামলাটি গ্রাম আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারে। আদালতের কার্যক্রমে অনধিকার ক্রিয়াকলাপ বা অপমান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জরিমানা আরোপ করা হয় এবং জরিমানা আদায় না হলে আদালত সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে কারাদণ্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এসব বিধান নিশ্চিত করে যে, আদালতের সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমের প্রতি সম্মান রক্ষা করা হয় এবং বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়।

গ্রাম আদালতের সুবিধা নাগরিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এটি দ্রুত, সহজ এবং সুলভ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে, ফলে সাধারণ মানুষ কম সময় ও খরচে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। স্থানীয় সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধান হওয়ার কারণে এলাকার সামাজিক শান্তি বজায় থাকে। পাশাপাশি, আদালত নারীর এবং শিশুর স্বার্থ সংরক্ষণে বিশেষ মনোযোগ দেয়, ফলে নারী বা শিশু বিষয়ক মামলায় নারী সদস্য মনোনয়ন বাধ্যতামূলক। ফলে গ্রাম আদালত সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহজলভ্য বিচারব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।

লেখক: সহকারী তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর