দামুড়হুদায় ৫ প্রতিষ্ঠানে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

লাইসেন্স নবায়ন না করা ও পেট্রোল-ডিজেলের পরিমাণে কম দেওয়ার অপরাধে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান।

জানা যায়, দামুড়হুদায় ব্রিজ স্কেলের লাইসেন্স নবায়ন না করা এবং পেট্রোল-ডিজেল টাকার পরিমাণে কম দেওয়ার অপরাধে ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন ২০১৮ সালের ৪৬/৪৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে জরিমানা করা হয়।

এর মধ্যে দামুড়হুদা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজারকে ৫ হাজার টাকা, ডিজিটাল ব্রিজ স্কেলের মালিককে ৫ হাজার টাকা, সাদমান ট্রেডার্সের মালিককে ১০ হাজার টাকা, প্রগতি ডিজিটাল স্কেলকে ৫ হাজার টাকা এবং লোকনাথপুরের মেসার্স কে. এম. ফিলিং স্টেশনের মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া বিএসটিআইয়ের পরিচালক নাজমুল সাদাত, পরিদর্শক আসিফ করিম এবং দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশের একটি টিম।




মেহেরপুরের আমদহে অ্যাড. কামরুল হাসানের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের বিএনপির ৩১ দফা দাবি প্রচারের অংশ হিসেবে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের আমদহ বাজারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়।

এ সময় তিনি এলাকাবাসীর হাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট তুলে দেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

গণসংযোগ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আলমগীর খান ছাতু, মীর ফারুক, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক লিটন, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকাবিল্লাহ, জেলা শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের সভাপতি আলিফ আরাফাত খান, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল বিশ্বাস, মহাজনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু, সাধারণ সম্পাদক সোনা গাইন, আমদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, আমদহ ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিএনপি নেতা নাহিদ আহমেদসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জে তিন প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকায় বিশেষ বাজার তদারকি অভিযান পরিচালিত হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে বীজ, কীটনাশক, বেকারী ও মুদি দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়।

অভিযানকালে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ তথ্যবিহীন পণ্য বিক্রয়ের অপরাধে মো. সিহাব উদ্দিন এর প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাবু স্টোর-কে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া, দন্ত চিকিৎসায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করায় মো. শাকিব হোসেন এর প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক ডেন্টাল-কে ৩ হাজার টাকা, এবং একই অপরাধে মো. আরিফুজ্জামান ফরজ এর প্রতিষ্ঠান মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল-কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সবমিলিয়ে মোট ২৮ হাজার টাকা প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হয়।

অভিযানকালে আরও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও দন্ত চিকিৎসালয় পরিদর্শন করা হয়। ব্যবসায়ীদের যথাযথ সনদ ব্যবহার, মূল্য তালিকা হালনাগাদ রাখা, নির্ধারিত ও যৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রয়, মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন পণ্য/ওষুধ বিক্রি থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

অভিযানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ক্যাব প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি টিম।

জনস্বার্থে এমন অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।




মেহেরপুরে স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন বিলুপ্ত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন

স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন বিলুপ্ত করে ভিন্ন অধিদপ্তরে একীভূত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, মেহেরপুর শাখা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি চামেলি ইয়াসমিন। এ সময় বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি আসাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক তুষার বিশ্বাস, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও মিডওয়াইফারি প্রতিনিধি আমেনা খাতুন, সুশিলা মণ্ডল, সুজন সরকারসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, ৪৮ বছরের ঐতিহ্য, অর্জন ও প্রশাসনিক স্বাতন্ত্র্য বহনকারী নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে বিলুপ্ত করে অন্য অধিদপ্তরে একীভূত করার উদ্যোগ নার্সদের পেশাগত মর্যাদা ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। তারা এ ধরনের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বক্তারা আরও বলেন, “স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন বিলুপ্তির এই অশুভ উদ্যোগ রুখে দিতে আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।” একই সঙ্গে তারা পেশার বিদ্যমান জটিলতা নিরসন ও বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের উপস্থাপিত দাবিগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে জেলা শাখার বিভিন্ন স্তরের নার্স ও মিডওয়াইফরা অংশগ্রহণ করেন।




ঝিনাইদহে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের কাতলামারী (কুঠিবাড়ি) গ্রামে পানিতে ডুবে আরিয়ান (৫) ও তাসনিম (৬) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

আরিয়ান ওই গ্রামের সোহেলের ছেলে এবং তাসনিম একই গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে। তারা একে অপরের চাচাত ভাই-বোন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নবগঙ্গা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনকার মতো সকালে শিশু দুইটি নবগঙ্গা নদীর ধারে খেলতে গিয়েছিল এসময় আরিয়ান পা ফসকে নদীতে পড়ে যায়, তাকে তুলতে গিয়ে তাসনিম সেখান গেলে সেও পানিতে পড়ে যায়। অন্য শিশুরা দেখে বাড়িতে জানানোর পরে নিহতের স্বজনরা এসে তাদের উদ্ধার করে। ততক্ষনে শিশু দুইটি মৃত্যু বরণ করে।

এবিষয়ে কাতলামারী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই জাহাঙ্গীর আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন এটা একটা মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। এঘটনায় লাশ তার পিতা-মাতাদের দাফনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এই মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।




ঝিনাইদহের এক সিআইডি কমকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ

ধর্ষন প্রচেষ্টা মামলার বাদীর সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তুলে আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা ও বানোয়াট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ সিআইডির এসআই মোঃ ইউসুফ হোসেনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট সদর উপজেলার কালা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইদ্রিস আলী ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবী করেন, তার ছোট ভাই মোঃ আলী আকবর প্রবাসি হওয়ায় স্ত্রী আকলিমা খাতুন লাইলি পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। তার চলাফেরা এবং বেপরোয়া আচরণ সংযত করে ভদ্রভাবে জীবন যাপনের পরামর্শ দেন ভাসুর ইদ্রিস আলী। কিন্তু লাইলি সংযত না হয়ে উল্টো ছোট ভাই আলী আকবরকে তালাক দিয়ে অন্য ছেলের সাথে পালিয়ে যায়। ঘরে দুইটি অবুঝ শিশু থাকায় আবার লাইলি কে বুঝিয়ে সংসারে ফিরিয়ে আনা হয়। কিছুদিন পর লাইলী আবারো পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয়, এ নিয়ে লাইলির পিতা ও ভাইদের সঙ্গে তাদের মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং লাইল তার স্বামীকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায়। একই গ্রামে বাড়ি হওয়ায় লাইলির পরিবার সামাজিক ভাবে ইদ্রিস আলীর বিপক্ষে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক।

দুই পরিবারের মধ্যে সংগর্ষের পর লাইলি তার বাপ ভাইয়ের পরামর্শে ঝিনাইদহ নারী ও শিশু আদালতে ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষন প্রচেষ্টার মিথ্যা মামলা দায়ের। মামলাটি তদন্ত করতে বিজ্ঞ আদালত ঝিনাইদহ সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে সিআইডির এসআই ইউসুফ হোসেন লাইলির ঘরে বসে খাওয়া-দাওয়া করতো এবং লাইলির ওড়না দিয়ে হাত মুছতো। এঘটনার প্রতিবাদ করে ইদ্রিস আলী তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করেন, মামলার তদন্ত করতে এসে তার ঘরে খাওয়া দাওয়া করা এবং শাড়ীর আঁচলে হাত মুছা কি ঠিক ? প্রতিউত্তরে সিআইডি কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গালিগালাজ করেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকী দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিআইডির ওই এসআই ইউসুফ হোসেন প্রায়ই বাদী লাইলি বাড়ী এসে দু’জন শহরে চলে যেতেন এবং ঐ কর্মকর্তার সাথে সময় কাটাতেন। ইদ্রিস আলী নিজেকে পদ্মাকর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দাবী করে এই মিথ্যা প্রতিবেদন প্রত্যখান পুর্বক সিআইডি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি দাবী করেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সিআইডির এসআই মোঃ ইউসুফ হোসেন তার বিরুদ্ধে সাবেক সেনা সদস্য ইদ্রিস আলীর উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টা করেছিলেন। এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে চার্জসিট প্রদান করা হয়েছে। এ কারণে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।




ঝিনাইদহে দিনব্যাপী আন্ত:স্কুল বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত

‘স্কুল হোক বিজ্ঞান শিক্ষার আনন্দময় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু’ এ শ্লোগানে ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী আন্ত:স্কুল বিজ্ঞান মেলা।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে শহরের নিউ একাডেমী স্কুল মাঠে এ মেলার উদ্বোধন করেন ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান। সেসময় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান, নিউ একাডেমীর প্রধান শিক্ষক বদিউজ্জামান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এন এম শাহজালাল, ওয়েলফেয়ার এফোর্টস (উই)’র পরিচালক শরিফা খাতুনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় ওয়েলফেয়ার এফোর্টস (উই)’র আয়োজনে দিনব্যাপী এ মেলায় ঝিনাইদহ সদর ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার ৩২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বিভিন্ন স্টলে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনী প্রজেক্ট ও বিজ্ঞানভিত্তিক মডেল প্রদর্শন করেন। এসব মডেলের মাধ্যমে তারা দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা সমাধানের নতুন ধারণা তুলে ধরেন।




ঝিনাইদহে মাঠ থেকে কৃষকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ার পোতা গ্রামের মাঠ থেকে হাত-পা ও গলা বাঁধা অবস্থায় ইসাহাক আলী (৬৫) নামের এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে বংকিরা- রাঙ্গিয়ার পোতা সড়কের বটদাড়ির মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইসাহাক আলী রাঙ্গিয়ার পোতা গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে আইলে ইসাহাক আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে স্বজনদের খবর দেয়। স্বজনরা এসে ইসাহাক আলীকে শনাক্ত করলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আনিছুর রহমান বলেন, পাঁ বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে ইসাহাক আলীকে হত্যা করে ওই স্থানে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা দ্রুত শনাক্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।




কোটচাঁদপুরে চার বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ

চার বছর দশ মাসেও শেষ হয়নি কোটচাঁদপুরের সাবদারপুর মুনসুর আলী একাডেমির নির্মাণাধীন ভবনের কাজ। কক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে বিজ্ঞান ল্যাব, কমন রুম ও কম্পিউটার ল্যাবে। দ্রুত রি-টেন্ডার করে কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত কুমার পাল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর মুনসুর আলী একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬০ সালে। সে সময় থেকে সুনামের সঙ্গে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৬৫০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এতো শিক্ষার্থীর জন্য ১৮ থেকে ২০টি শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন হলেও বর্তমানে বিদ্যালয়ে আছে মাত্র ১৪টি কক্ষ। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের কমন রুম, বিজ্ঞান ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব ও শিক্ষকদের অফিসও রয়েছে।

ফলে শ্রেণিকক্ষের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার প্রেক্ষিতে ঝিনাইদহ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়। যার প্রথম তলার নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি। তবে কাজটি একাধিকবার বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজটি বাতিল করেছে এবং নতুন করে রি-টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

এদিকে কক্ষ সংকটে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হারিয়েছে স্বাভাবিক পাঠদানের পরিবেশ। তারা কখনও কমন রুমে, কখনও বিজ্ঞান ল্যাবে, আবার কখনও কম্পিউটার ল্যাবে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ ও অনন্ত ঘোষ বলেন, কক্ষ সংকটের কারণে আমাদের বসার জায়গা খুবই কম। ঠিকভাবে বসতে না পারায় ক্লাস করতে অসুবিধা হয়।

অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও একই অভিযোগ করে দ্রুত নির্মাণাধীন ভবনের কাজ শেষ করে কক্ষ সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিন উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে ছয়শ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তাদের পাঠদানের জন্য ১৮ থেকে ২০টি কক্ষ প্রয়োজন হলেও বর্তমানে আছে মাত্র ১৪টি। ফলে বাধ্য হয়ে ল্যাব, কমন রুম ও কম্পিউটার ল্যাবে ক্লাস নিতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করার পর ভবন বরাদ্দ পাওয়া গেলেও কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় আছি।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত কুমার পাল বলেন, ঠিকাদার কাজটি পাওয়ার পর শুরু করলেও গুরুত্ব না দেওয়ায় একাধিকবার বন্ধ রেখেছে। কয়েকবার তাগাদা দেওয়ার পরও নির্ধারিত সময় (১৩-১০-২০২১) এর মধ্যে কাজ শেষ না করায় কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। খুব দ্রুত রি-টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজ শুরু করা হবে।




মেহেরপরে সাবেক জনপ্রতিনিধির হাতে নির্মাণ হচ্ছে পাঁচতলা ভবন

মেহেরপুর জেলা শহরের আদালতপাড়ায় একাই পাঁচতলা ভবনের নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রামের এক সাবেক জনপ্রতিনিধি মো. একরামুল হক। পেশায় সৌখিন রাজমিস্ত্রি হলেও এলাকাবাসীর চোখে তিনি একজন আদর্শবান মানুষ, সমাজসেবক ও পরিশ্রমী নাগরিক।

বিনা পারিশ্রমিকে নিজের ওয়ার্ডের শতাধিক দুস্থ পরিবারের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ করেছেন তিনি। দেশে এটাই প্রথম ঘটনা, যেখানে একজন ব্যক্তি শ্রমিক ও মিস্ত্রি দুয়ের ভূমিকায় একাই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। প্রতিদিনই অনেকে তার কাজ দেখতে আসছেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা একরামুল হক আদালতপাড়ায় নিজের জমিতে নির্মাণ করছেন একটি আধুনিক ভবন। ইতোমধ্যে পঞ্চম তলার ছাদ পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়ে সেখানে ভাড়াটিয়াও উঠেছেন। তৃতীয় থেকে পঞ্চম তলার কাজ এখনও চলমান।

কোনো নির্মাণশ্রমিক ছাড়াই তিনি নিজেই এই ভবনের মিস্ত্রি ও সহকারী। টাইলসের কাজও করছেন নিজ হাতে। একাই সিমেন্ট-বালু মাখানো, মাথায় করে ইট তোলা, সিমেন্ট-বালু দিয়ে ইটের পর ইট গাঁথা সবকিছুই তিনি করছেন একা।

প্রথম দিকে মাটি খোঁড়ার কাজে শ্রমিক নিয়েছিলেন। প্রতিটি ছাদ ঢালাইয়ের দিনও কিছু অতিরিক্ত লোকবল নিয়েছেন নিরাপত্তার জন্য। তবে বাকি সব কাজ নিজেই করছেন এই পরিশ্রমী মানুষটি। তার আশা, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরো ভবন নির্মাণ শেষ করবেন।

ব্যক্তিজীবনে একরামুল হক একজন বহুমাত্রিক মানুষ কখনো কৃষক, কখনো নাট্যশিল্পী, আবার কখনো রাজমিস্ত্রি।

১৯৮৮ সালে প্রথমবার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অল্পের জন্য পরাজিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালের নির্বাচনে গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হন ইউপি সদস্য হিসেবে। পরবর্তী নির্বাচনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেন।

জনপ্রতিনিধি থাকাকালে নিজ সম্মানী থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০টি গরিব পরিবারের গৃহকর পরিশোধ করেছেন।

গ্রামের অনেক দুস্থ পরিবার ইট-বালু জোগাড় করতে পারলেও শ্রমিকের মজুরির অভাবে ঘর নির্মাণ করতে পারত না। তখন একরামুল নিজেই মিস্ত্রি হিসেবে একা একা ৯৮টি ঘর নির্মাণ করে দেন বিনা পারিশ্রমিকে। তার হাতে তৈরি সেই ঘরগুলো আজ নিরাপদ আশ্রয় অসংখ্য দরিদ্র পরিবারের।

সহগল গ্রামের দরিদ্র আছিয়া খাতুন বলেন, গরু-ছাগল বিক্রি করে ঘর নির্মাণের চিন্তা করছিলাম। একরামুল ভাই এসে নিজের হাতে আমার জন্য ঘর তুলে দেন। তিনি কোনো পারিশ্রমিক নেননি।

একই গ্রামের অতিদরিদ্র ওবাইদুল্লাহ আলম বলেন, একবার অগ্নিকাণ্ডে আমার মাটির ঘর পুড়ে যায়। তখন একরামুল মেম্বার নিজে ইট, টিন ও বাঁশ জোগাড় করে বিনা পারিশ্রমিকে ঘর তৈরি করে দেন। গ্রামের অনেকের ঘরই তিনি এমনভাবে নির্মাণ করে দিয়েছেন।

আদালতপাড়ায় প্রতিদিন নিজের ভবনে হাতুড়ি, কাঠ, সিমেন্ট ও বালুর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন এই মানুষটি। সমাজের প্রতি তার দায়বদ্ধতা, পরিশ্রম ও আন্তরিকতা তাকে এলাকার এক অনন্য অনুপ্রেরণায় পরিণত করেছে।

আদালতপাড়ায় গিয়ে দেখা যায় একরামুল মাথায় করে ইট তুলছেন পাঁচতলায়।

নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়িতে একমাত্র ছেলে মুদি ব্যবসা করে। আমি বসে থাকতে পারি না। লেখাপড়া ছেড়ে সখের বসে রাজমিস্ত্রির কাজ শিখেছিলাম। পারিশ্রমিক ছাড়াই দুস্থ মানুষের ঘর বানিয়ে দিতে আনন্দ পাই। প্রতিদিন ভোরে মেহেরপুরে এসে নিজের পাঁচতলা ভবনের কাজ করছি।

কাথুলী ইউনিয়নের কাঠ ব্যবসায়ী ওয়াহেদ হোসেন বলেন, একবার স্থানীয় একটি স্কুলে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা দাবি করে পুরস্কারটি একরামুল মেম্বারের হাত থেকেই নিতে চায়। তখন তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা মন দিয়ে পড়ো, বড় হয়ে এই গ্রামটাকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলো। এখনো তিনি সেই আশায় বেঁচে আছেন।

কাথুলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, একরামুল ছিলেন একজন নির্লোভ ও মানবিক জনপ্রতিনিধি। মানুষের বিপদে তিনি পাহাড় হয়ে দাঁড়াতেন। তার ওয়ার্ডে তিনি প্রার্থী হলে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সাহস পেত না। তার কাজ ও চরিত্র সত্যিই শ্রদ্ধার যোগ্য।