দর্শনায় নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে বৈষম্য নিরসনপূর্বক পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের দর্শনাতে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ মানববন্ধনে অংশ নেন।

জানা গেছে, নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নে ‘প্রহসন’ চলছে অভিযোগ করে এবং ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে বৈষম্য দূর করে পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে তারা এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।

দাবিসমূহ হলো, নবম পে-স্কেল ২০২৫ দ্রুত বাস্তবায়ন ও গেজেট আকারে প্রকাশ করা, গ্রেডভিত্তিক বৈষম্য দূর করা ও কর্মচারীদের ন্যায্য বেতন প্রদান, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক ও রেলওয়ের নিয়োগবিধি-২০২০ দ্রুত সংশোধন করে পদোন্নতি বঞ্চিতদের পদোন্নতি প্রদান এবং সব শূন্য পদে অতিসত্ত্বর নিয়োগ দেওয়া।

মোঃ মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও নূর হোসেন বকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা তাদের দাবি তুলে ধরেন এবং দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই সঙ্গে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈষম্য দূর না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এ সময় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটির অন্যতম সদস্য নাহারুল ইসলাম মাস্টার। এছাড়া উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন মোঃ রাশেদ ইকবাল, মোঃ আশিকুর রহমান, আলমাস আলী আরিফ, তারুণ হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম, ফয়সাল আহমেদ, সাদ্দাম হোসেন, টিপু সুলতান, শাহীন আলমসহ আরও অনেকে।




মুজিবনগরে গুডনেইবারস বাংলাদেশের বিশেষ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

মেহেরপুরের মুজিবনগরে গুডনেইবারস বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপির উদ্যোগে মেহেরপুর সিডিপি বল্লভপুর প্রজেক্ট অফিস প্রাঙ্গণে বিশেষ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানের সিডিপি ম্যানেজার বিপুল রেমার সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গাইনাকোলজিস্ট ডা: সিনথিয়া আফরিন সিমি এবং খাদ্য ও পুষ্টিবিদ ফজলে রাব্বি।

হেলথ অফিসার আহসানুল হক সঞ্চালনায় ক্যাম্পেইনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিডিপির সিনিয়র এডমিন অফিসার উত্তম কুমার রায় এবং মেডিকেল অফিসার মেহেদী হাসান (সুইট)।

ক্যাম্পেইনের মূল কার্যক্রম মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য বিষয়ে আলোচনা, পুষ্টিকর খাবারের উপকারিতা ও সুষম খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।

ক্যাম্পেইনে স্বল্পমূল্যে গাইনি রোগী দেখা এবং অপুষ্ট শিশুদের জন্য ডায়েট চার্ট প্রদান করা হয়ে।

এছাড়াও কমিউনিটির জন্য ৩০% ছাড়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি প্যাকেজ সরবরাহ করা হয়ে।

গুডনেইবারস বাংলাদেশ জানায়, এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে কমিউনিটির মধ্যে সুলভ সেবা, স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি এবং পুষ্টি জ্ঞান সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।




চুয়াডাঙ্গায় বিরল প্রজাতির তিনটা তক্ষকসহ গ্রেফতার ১

চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুর ইউনিয়নের সরিষাডাঙা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিলুপ্তপ্রায় ৩টি তক্ষকসহ ১ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১২, ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-৩, মেহেরপুরের একটি বিশেষ আভিযানিক দল।

গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলেন চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুরের সরিষাডাঙা গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে মোঃ আব্দুল আজিজ (৬৭)।

র‌্যাব-১২ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আজিজ স্বীকার করেছে যে তিনি অবৈধ বন্যপ্রাণী ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত। উদ্ধার করা তক্ষকগুলো বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর তালিকাভুক্ত।

র‌্যাব-১২, সিপিসি-৩, মেহেরপুর জানায়, ঘটনার বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে অনন্য রেকর্ড মুশফিকের

দিনের চতুর্থ বলে ম্যাথিউ হামফ্রেস পরাস্ত করলেন মুশফিকুর রহিমকে, বল লাগল প্যাডে। জোরালো আবেদনের পর আম্পায়ার সাড়া দেননি। তবে ওই সেকেন্ডের ভগ্নাংশ যে বিরাট কাঁপুনি দিয়ে গিয়েছিল সমর্থকদের বুকে, তা একরকম নিশ্চিত। পরের বলও ব্যাটের কানা এড়িয়ে গিয়ে জমা পড়ল কিপারের হাতে। ওভার শেষ হামফ্রেসের, মুশফিকের অপেক্ষাটা দীর্ঘ হলো আরও একটু।

তবে সে অপেক্ষাটা শেষ হয়ে গেল পরের ওভারেই। জর্ডান নেইলের ওভারের তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিতেই ইতিহাস এসে লুটিয়ে পড়ল মুশফিকুর রহিমের। ১১তম ব্যাটার হিসেবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। যদিও মুশফিক একটা জায়গায় এখন অনন্য। এই তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি যে তিনি।

এই সেঞ্চুরিতে আরও একটা রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন মুশফিক। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩টি সেঞ্চুরি এখন তার। এই রেকর্ডে তার সঙ্গী হিসেবে আছেন মুমিনুল হক।

মুশফিক ইতিহাস গড়ার এই ইনিংসে নেমেছিলেন প্রথম দিনের প্রথম সেশনেই। ৯৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন কিছুটা ব্যাকফুটেই ছিল। তবে তিনি সে চাপটা সামাল দেন ভালোভাবে। প্রথমে মুমিনুলের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি, তার বিদায়ের পর গড়ে লিটন দাসের সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিক। তাদের জুটিও সেঞ্চুরির পথে।

তার আগেই নিজের সেঞ্চুরিটা তুলে নেন মুশফিক। ১৯৫ বলে ৫ চার মেরে এই মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন তিনি।




একদিকে ধানের শীষে ভোট প্রার্থণা অপরদিকে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি  

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে মেহেরপুর-২ (গাংনী ) আসনে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলমান রয়েছে। একদিকে মনোনয়ন প্রাপ্ত আমজাদ হোসেন ও তার অনুসারীরা ধানের শীষের ভোট প্রার্থনা করে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। অপরদিকে, মনোনয়ন বঞ্চিত জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের অনুসারীরা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে অন্দোলন কর্মসূচি চলমান রেখেছেন।  এতে গাংনীর রাজনৈতি অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির লক্ষ্যে মেহেরপুর -২ (গাংনী) আসনের সাহারবাটি ইউনিয়নের ধর্মচাকি গ্রামে ও গাংনী বাজারে ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেন।

গতকাল বুধবার বিকালে গাংনী উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্পটে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

তারেক রহমানের বার্তা সবার আগে বাংলাদেশ, শ্লোগান নিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন গণসংযোগ করে ভোট প্রার্থনা করেন।

এসময় গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোরাদ আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান গাড্ডু, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি উপাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন, গাংনী উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান বুলবুল, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আতাউল হক আন্টু, গাংনী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা ও তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, গাংনী পৌর জাসানের সাধারণ সম্পাদক সুলেরী আলভী, স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলামসহ গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু,জেলা ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুসাইন, যুবদলের সদস্য ফারুক হোসেন, যুবদল নেতা মাহফুজ আলম রহিদুল।

বক্তারা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

ধর্মচাকি গ্রামে উঠান বৈঠক শেষে আমজাদ হোসেন বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি বিএনপির ঘোষণা করা ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করেন এবং আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে পুরো এলাকায় নির্বাচনী আমেজ আরও জোরদার হয়ে ওঠে।

লিফলেট বিতরণকালে রাস্তার দুধারে শতশত নারী ভোটার ধানের শীষের এমপি  প্রার্থী আমজাদ হোসেনকে হাত তুলে অভিবাদন জানান।

অপরদিকে, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা।

গতকাল বুধবার বিকালে গাংনী উপজেলা শহরে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা ও সম্পাদক সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাসপাতাল বাজার এলাকা ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দাল হক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এডাম সুমন, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম সোহাগ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লব, মহিলা দলের সভাপতি ফরিদা পারভীনসহ বিএনপির নারীনেত্রী এবং বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করেছে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনকে। এ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।




গাংনীর বিএনপিতে অভ্যন্তরিণ দ্বন্দ্ব জনস্বার্থকে ছাপিয়ে যায়

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি একটি গভীর সংকটের প্রতিচ্ছবি ।

দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর থেকেই গাংনীর রাজনৈতিক অঙ্গনে যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলমান, তা কেবল স্থানীয় উত্তেজনা বাড়াচ্ছে না, বরং বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথেও বড় বাধা সৃষ্টি করছে। একদিকে মনোনীত প্রার্থীর ধানের শীষের জন্য ভোট প্রার্থনা, অন্যদিকে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ—এই দুই বিপরীতমুখী স্রোত বিএনপির দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য এবং সংহতির ওপর একটি কঠিন প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলিতে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ নতুন নয়। তবে গাংনীর ঘটনা কেবল সাধারণ ক্ষোভের প্রকাশ নয়; এটি একটি সুসংগঠিত বিদ্রোহ। দলীয় হাইকমান্ড সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনকে মনোনীত করার পরও, জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের অনুসারীরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তাঁদের বিক্ষোভ মিছিল এবং মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি স্পষ্ট করে যে স্থানীয় নেতৃত্বে আস্থার ঘাটতি রয়েছে, যা দলের তৃণমূলের ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের ঠিক আগে এই ধরনের বিভেদ জনমনে ভুল বার্তা দিচ্ছে এবং দলের মূল আদর্শ থেকে মনোযোগ সরিয়ে দেয়।

দেখা যাচ্ছে, আমজাদ হোসেন তার নির্বাচনী প্রচারে দলের ঘোষিত ‘৩১ দফা কর্মসূচি’ এবং তারেক রহমানের বার্তা নিয়ে ভোটারদের দুয়ারে যাচ্ছেন। এটি নিঃসন্দেহে দলের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু যখন একই সময়ে দলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করে, তখন সেই ইতিবাচক প্রচেষ্টা ম্লান হয়ে যায়।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মতো একটি মহৎ উদ্দেশ্য সফল করতে হলে প্রয়োজন ইস্পাত-কঠিন সংহতি। একটি শক্তিশালী জনমত গড়ে তোলার কথা ছিল, কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দল সেই মূল্যবান সময় এবং সুযোগের অপচয় করছে। সাধারণ ভোটারদের মনে এই প্রশ্ন জাগাচ্ছে যে, যে দল নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে পারে না, তারা কীভাবে দেশের শাসনভার গ্রহণ করবে?

বিএনপি হাইকমান্ডের উচিত এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে হালকাভাবে না নিয়ে দ্রুত এর সমাধান করা। হয় মনোনীত প্রার্থীকে সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে, অথবা বিচক্ষণতার সঙ্গে এমন একটি সমাধান খুঁজতে হবে যা উভয় পক্ষের নেতৃত্বকে সন্তুষ্ট করে এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচনী মাঠে নামতে সাহায্য করে। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে স্মরণ রাখতে হবে যে, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, এবং দলের চেয়ে দেশের বৃহত্তর স্বার্থ সবার আগে।

গাংনীর চলমান পরিস্থিতি মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির নির্বাচনী সম্ভাবনাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। ধানের শীষের পক্ষে যে গণজোয়ারের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা কেবল তখনই সম্ভব যখন দল তার ভেতরের বিভেদ মিটিয়ে একটি একক ও শক্তিশালী ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করবে। যদি এই দোটানা অব্যাহত থাকে, তবে তা শুধু একটি আসনের পরাজয় নয়, বরং বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথেও একটি গভীর ক্ষত তৈরি করবে। সংহতি ফিরিয়ে আনাই এখন গাংনী বিএনপির জন্য একমাত্র অগ্নিপরীক্ষা।




মানসিক নির্যাতন; একটি সামাজিক সঙ্কট

জীবনচক্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপের নাম বিয়ে। বিয়ে হল দুটি জীবনের চির বন্ধন। বিয়ে দুটি আত্মার একসাথে চলার প্রতিশ্রুতি। বিয়ে ভালোবাসার এমন এক অনুভূতি, যা মানুষের জীবনকে আলোকিত করে তোলে। বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে জন্ম নেয় শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, স্নেহ ও একে অপরের প্রতি গভীর যত্ন। পথ চলার স্থায়ী সঙ্গী হিসেবে পাশাপাশি থাকেন স্বামী-স্ত্রী। বিয়ে মানে কিন্তু কেবল একসঙ্গে থেকে দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া নয়। এর অর্থ এবং প্রভাব আরও বেশি। এমনকি বার্ধক্যে একসাথে চলার প্রতিশ্রুতির নাম বিয়ে।

মানসিক নির্যাতন সচরাচর একদিনে শুরু হয় না। এটি সম্পর্কের ভেতরে ধীরে ধীরে জন্ম নেয় — যখন ভালোবাসা বদলে যায় নিয়ন্ত্রণে, বোঝাপড়া বদলে যায় নির্দেশে। উচ্চস্বরে গালাগাল করা, মিথ্যা বলা, চারিত্রিক অপবাদ দেওয়া, খারাপ ব্যবহার করে পরমুহূর্তে তা অস্বীকার করা — এসবই মানসিক নির্যাতনের অংশ।

এমনকি অনেক সময় নির্যাতনকারী বলেন, “আমি রাগ করার মতো কিছু বলিনি, কী এমন বলেছি? খারাপ কী বললাম?” — এই কথাগুলোর মধ্যেও লুকিয়ে থাকে মানসিক নিয়ন্ত্রণের অস্ত্র।তুমি এখানে যেতে পারবে না, “তুমি ঘরের বাইরে কাজ করতে পারবে না,তুমি শুধুই সংসার সামলাবে।বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও মানসিক নির্যাতন।”তুমি এটা কেন করছ?”, “তুমি এমন পোশাক পরো না”, “তুমি কিছুই ঠিকমতো পারো না”, “তোমার কাজের কোনো দাম নেই, তুমি কেবল বোঝা” — এসব কথায় ধীরে ধীরে ভেঙে যায় একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস।শুধু তাই নয়, যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়া বা বাধ্য করাও এক ধরনের মানসিক নির্যাতন। স্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলা, উপেক্ষা করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, স্পষ্ট করে দোষ না বলা, স্ত্রীর বাবার বাড়ির লোকজন নিয়ে খোঁটা দেওয়া, অপমানসূচক কথা বলা কিংবা গালিগালাজ — সবই মানসিক নির্যাতনের প্রতিফলন।

স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা বা সন্তান নিতে বাধ্য করা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন দুই-ই। এমনকি পুত্র সন্তানের জন্য বারবার গর্ভধারণে বাধ্য করা কিংবা গর্ভস্থ কন্যা সন্তানকে গর্ভপাত করানো — এসবও মানসিক নির্যাতনের গভীর ছাপ ফেলে।

ছোট ছোট কথাগুলো হয়তো প্রথমে তুচ্ছ মনে হয়, কিন্তু সময়ের সঙ্গে এগুলো রূপ নেয় মানসিক বন্দিত্বে।একজন সঙ্গী অপরজনকে ক্রমাগত ছোট করতে করতে নিজের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে, আর অপরজন নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এই ধীরে ধীরে তৈরি হওয়া অসম ভারসাম্যই সম্পর্কের সবচেয়ে বড় বিষ।

নির্যাতিতা মনে করেন এর চেয়ে গায়ে হাত তুলে মারাও অনেক ভালো। এভাবে সবসময় মানসিক নির্যাতনের চেয়ে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করা যায়।

মানসিক নির্যাতন যা শারীরিক আঘাতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। কারণ এর ক্ষত দৃশ্যমান নয়, বরং ধীরে ধীরে ভেতরের শক্তি নিঃশেষ করে দেয়।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, দীর্ঘদিন মানসিক নির্যাতনের মধ্যে থাকলে মানুষ ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, অনিদ্রা, আত্মবিশ্বাসহীনতা ও আত্মহননের চিন্তায় ভোগে। সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হএই কষ্টের কোনো দৃশ্যমান চিহ্ন থাকে না। বাইরে থেকে সব কিছুই “স্বাভাবিক” মনে হয়, অথচ ভেতরে মানুষটা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে থাকে।

আমাদের সমাজে ‘নির্যাতন’ শব্দটি উচ্চারিত হলেই প্রথমে নারীর কথাই সামনে আসে। বাস্তবতা হলো — নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী, কিন্তু পুরুষরাও এর বাইরে নন। অনেক পুরুষ প্রতিদিন স্ত্রী বা পরিবারের কাছ থেকে তির্যক ব্যঙ্গ, অপমান কিংবা তুলনার মুখোমুখি হন। কিন্তু সমাজ তাদের কষ্টকে গুরুত্ব দেয় না, কারণ পুরুষের যন্ত্রণা নাকি “পুরুষোচিত” নয়! তাই তারা চুপ করে যান। এই নীরবতাই ধীরে ধীরে সম্পর্কের মধ্যে বিষ ছড়ায়।

আসলে, মানসিক নির্যাতন লিঙ্গভিত্তিক নয়, এটি ক্ষমতার অপব্যবহার। যে সম্পর্কের ভেতরে একজন সব সময় ‘নিয়ন্ত্রণকারী’ হয়ে ওঠে, সেখানে অন্যজন ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।

একটা ধারণা প্রচলিত — “সংসার মানেই সহ্য করা। এই ধারণাই নির্যাতনকে স্বাভাবিক করে তুলেছে। একজন নারী যদি বলে “আমার স্বামী আমাকে অপমান করে”, সমাজ বলে — “সব পুরুষই তো এমন”। একজন পুরুষ যদি বলে “স্ত্রী আমাকে মানসিকভাবে কষ্ট দেয়”, সমাজ বলে — “তুমি নিশ্চয়ই দুর্বল”। এই চিরাচরিত মানসিকতার কারণেই অনেক দাম্পত্য সম্পর্ক ধীরে ধীরে ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ে।

সমাজ ভাবে — যতক্ষণ না কেউ মারা যাচ্ছে, ততক্ষণ সবই সহনীয়। কিন্তু সত্য হলো, মানসিক নির্যাতন ধীরে ধীরে আত্মাকে হত্যা করে।

প্রথমত, সম্পর্কের মধ্যে যোগাযোগের অভাব মানসিক নির্যাতনের সবচেয়ে বড় কারণ। দুজন মানুষ একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা কথা না বললে, ভুল বোঝাবুঝি, অহংকার ও অপমান জায়গা নেয় ভালোবাসার স্থানে।

মানসিক নির্যাতন কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয় — এটি একটি সামাজিক সংকট, যা নীরবে অসংখ্য সম্পর্ক ধ্বংস করছে। যে সম্পর্কের ভেতরে সম্মান থাকে, সেখানে নির্যাতন টিকতে পারে না। সময় এসেছে আমরা সবাই নিজের ভেতরের দেয়ালটা ভাঙ্গি। ভালোবাসার আসল শক্তি নীরবতা নয়, বোঝাপড়ায়। আর সম্পর্কের সত্যিকারের সৌন্দর্য মুক্তিতে, নিয়ন্ত্রণে নয়।
লেখক: কবি ও সাহিত্যিক




গাংনীতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা।

আজ বুধবার বিকালে গাংনী উপজেলা শহরে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা ও সম্পাদক সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাসপাতাল বাজার এলাকা ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দাল হক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এডাম সুমন, বামন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম সোহাগ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লব, মহিলা দলের সভাপতি ফরিদা পারভীনসহ বিএনপির নারীনেত্রী এবং বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করেছে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনকে। এ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।




গাংনীতে মোটরসাইকেল-ট্রলি সংঘর্ষে তিন যুবক আহত

গাংনীর নওপাড়া বাজারে ট্রলির সঙ্গে দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় তুহিন আলী, ইমন ও সাব্বির হোসেন নামের তিন যুবক আহত হয়েছেন। আহত তিনজনের বাড়ি একই গ্রামের নওপাড়া।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় নওপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তুহিন, ইমন ও সাব্বির একটি মোটরসাইকেলে করে দ্রুতগতিতে বাজার পার হচ্ছিলেন। এসময় সামনে থাকা একটি ট্রলির সঙ্গে জোরালো ধাক্কা লাগলে তিনজনই রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।




দর্শনায় বাবু খানের পক্ষে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দর্শনায় ধানের শীষ মার্কায় বাবু খানের পক্ষে গণসংযোগ ও বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনা পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ড শ্যামপুর গ্রামে এ নির্বাচনী প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এ নির্বাচনী প্রচারণায় দর্শনা পৌর বিএনপির অন্যতম সমন্বয়ক আলহাজ্ব মোঃ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন দর্শনা থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মুকিত, ছাত্রনেতা আব্দুর রহিম মুন্না, সুজন, দর্শনা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব পলাশ আহমেদ, ছাত্রদল নেতা রাজ, ডাবলু, রকি, পলাশ প্রমুখ।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে জননেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু ভাইকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত করলে স্বাধীনতার পরবর্তী অবহেলিত এ অঞ্চলে সামনের বাংলাদেশ গড়ে উঠে এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার উঠবে। এই চুয়াডাঙ্গা-২ এলাকা হয়ে উঠবে আশপাশের জেলার মধ্যে অন্যতম একটি এলাকা। আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করলে এ দেশে সৃষ্টি হবে উন্নয়নের নবদিগন্ত। তাই সবাই আসুন দলে দলে বিএনপির পতাকা তলে।

উপরোক্ত কথাগুলো ভোটারদের মাঝে বলে, কেন্দ্রীয় বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি এবং চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবুর পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।