কোটচাঁদপুরে দুর্বৃত্তের বিষে পুড়ে গেল কৃষকের কচুর ক্ষেত

চাচা-ভাতিজির পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে বিষ প্রয়োগ করে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এক কৃষকের দেড় বিঘা জমির ইরি কচুর ফসল। ঘটনাটি ঘটেছে কোটচাঁদপুর-সাবদারপুর সড়কের পাশের কুশকুড়ি মাঠে। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। এ বিষয়ে তিনি সোমবার কোটচাঁদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোটচাঁদপুর-সাবদারপুর সড়কের পাশে কুশকুড়ি মাঠে শাহজামাল খান নামের এক কৃষক বাবু খান ও তামিমা তৈয়বা খানের কাছ থেকে দুই বিঘা জমি কিনে কচুর চাষ করে আসছিলেন। ২৬-০৬-২৫ তারিখে তামিমা তৈয়বা খানের নির্দেশে জমিতে ঘাস পোড়ানো বিষ প্রয়োগ করা হয়, যার ফলে সব কচু গাছ পুড়ে যায়।

ভুক্তভোগী কৃষক শাহজামাল খান জানান, “আমি বাবু খান ও তার ভাতিজি তামিমা তৈয়বা খানের কাছ থেকে দুই বিঘা জমি কিনে দেড় বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। বর্তমানে সেখানে আমি ইরি কচুর চাষ করেছি। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তামিমা তৈয়বা খান লেবার দিয়ে আমার জমিতে বিষ প্রয়োগ করান। এতে দেড় বিঘা জমির সব কচুর গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।”

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “তাদের সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। তারা তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন।”

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুস সামাদ বলেন, “ঘটনার দিন আমি মাঠে কাজ করছিলাম। হঠাৎ দুপুরে ২/৩ জন পুরুষ ও একজন নারী স্প্রে মেশিন নিয়ে আসে এবং জমিতে স্প্রে করতে থাকে। তবে আমি তাদের নাম-পরিচয় জানি না।”

তামিমা তৈয়বা খান বলেন, “বাবু খান আমার চাচা। তিনি আমাদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়েছিলেন। পরে জানতে পারি, তিনি তাঁর অংশের জমি মনিরুল ইসলাম খানের কাছে বিক্রি করে আমাদের অংশের জমিও দখলে দিয়েছেন। বিষয়টি আমি বর্তমান মালিকদের জানিয়ে জমি ছেড়ে দিতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা জমি ছাড়েননি এবং চাষাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। এ কারণে জমিতে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি শাহজামাল খানকে চিনি না, তার সঙ্গে আমার কোনো লেনদেন নেই। আমি কেবল মনিরুল ইসলাম খানকে চিনি।”

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, “ভুক্তভোগী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”




মেহেরপুরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

মেহেরপুরে স্ত্রীকে হত্যার মামলায় স্বামী সেন্টু মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাছিম রেজা এই দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডিত সেন্টু মিয়া মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আকুবপুর বাজারপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ জুন তিনি তার স্ত্রী সাগরিকাকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার চালান। পরে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয় এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২/২০১ ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলার ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যে সেন্টু মিয়া দোষী সাব্যস্ত হলে, বিজ্ঞ বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সাজা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন।

মামলায় সরকারি পক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইদুর রাজ্জাক এবং আসামিপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রন্টু।




ঝিনাইদহে কিশোরী ধর্ষনের অভিযোগ, ধর্ষক গ্রেপ্তার

ঝিনাইদহ সদরের উত্তর সমশপুর গ্রামে ১২ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে।

রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ওই কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে ঘটনার পর প্রতিবেশী অভিযুক্ত ধর্ষক তানভীর হোসেন ওরফে সোহেল মন্ডল (৩১) কে ওই গ্রামের একটি দোকান থেকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রাত ১ টার দিকে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে সদর থানায় সোহেল মন্ডল কে আসামী করে ধর্ষন মামলা দায়ের করেছেন।

জানা যায়, রোববার দুপুরে ১২ বছর বয়সী ওই কিশোরী প্রতিবেশী সোহেল মন্ডলের বাড়িতে যায়। সেসময় সোহেল তার শিশু সন্তানকে কোলে নেওয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষন করে। এরপর বাড়ি ফিরে আসলে সন্ধ্যায় কিশোরীর শারীরিক যন্ত্রণা শুরু হয়। তখন সে তার মা’কে বিষয়টি জানায়। এরপরই বিষয় টি জানাজানি হয়।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, থানায় মামলার পর অভিযুক্ত আসামী সোহেল মন্ডলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা জানায়, তার মেয়ে লেখাপড়া করেনা। বাড়িতেই বেশী সময় থাকে। মাঝে মধ্যে প্রতিবেশী সোহেল মন্ডল এর বাড়িতে যায়, তার ছোট শিশুকে কোলে নেয়। রবিবারও তাদের বাড়িতে যায়। তখন সোহেল বাচ্চা কে কোলে নেওয়ার কথা বলে ঘরে ডেকে নিয়ে এই পাশবিক নির্যাতন করে। প্রশাসন যেন সঠিক তদন্ত করে এর সঠিক বিচার করে।




ঝিনাইদহে ক্রিড়া প্রশিক্ষণের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী

ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০২৪-২৫ এর আওতায় জেলা ক্রীড়া অফিস ঝিনাইদহের আয়োজনে অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল, সাঁতার ও অ্যাথলেটিকস প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠান ও সাঁতার প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল জেলা শহরের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে এ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ক্রীড়া অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্র নাথ রায়। সেসময় অঙ্কুর নাট্য একাডেমির পরিচালক নাজিম উদ্দিন জুলিয়াস, সাঁতার প্রশিক্ষণের কোচ তরিকুল ইসলামসহ অন্যান্য ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।




ঝিনাইদহে দুর্নীতি বিরোধী বাইসাইকেল র‌্যালী

দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বাড়াতে ঝিনাইদহে সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে শহরের আজাদ রেস্ট হাউজের সামনে থেকে ইয়েস গ্রুপের আয়োজনে এক র‌্যালী বের করা হয়।

র‌্যালিতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। র‌্যালীটি শহরের পায়রা চত্বর হয়ে, হামদহ ঘুরে, আরাপপুর হয়ে পোস্ট অফিসে মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সনাকের সভাপতি এম সাইফুল মাবুদ। সেসময় উপস্থিত ছিলেন সনাকের সদস্য এন এম শাহজালাল, নাসরিন ইসলামসহ অন্যান্যরা।

আয়োজকরা আশা করেন, এই সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সবাই মিলে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে একসঙ্গে কাজ করবে।




সংশোধণী

গত ২৭ জুন শুক্রবার ভোরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাফর আলীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনী। তার বাড়ির আঙ্গিনা সংলগ্ন পরিত্যক্ত ঘর থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও ৩টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।

গাংনী সেনা ক্যাম্প সূত্র জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এলাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা জাফর আলীর বাড়িতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বাড়ির ভিতরে ও বাইরে সম্পূর্ণ তল্লাশি করা হয়। এসময় বাড়ির আঙ্গিনা সংলগ্ন পরিত্যক্ত ঘর থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৩টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।

তাৎক্ষণিকভাবে সন্দেহভাজন হিসেবে জাফর আলীকে আটক করে গাংনী সেনাক্যাম্পে নেয়া হয় এবং পিস্তলের প্রকৃত মালিকানা যাচাইয়ের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বিদেশী পিস্তল, ম্যাগজিন ও তিনটি ককটেলসহ গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়।

পরে রাতে জাফর আলীর বড় ভাইয়ের মুচলেকায় পুলিশ তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়।

প্রসঙ্গত: গত ২৭ জুন মেহেরপুর প্রতিদিন অনলাইনে এবং ২৮ জুন ছাপা পত্রিকায় সেনাবাহিনীর নির্দেশে জাফর আলীকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে সংবাদ প্রকাশ হয়। অথচ তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সেনাবাহিনীর কোন নির্দেশনা ছিলনা। যা ভুলবোঝাবুঝির একটা অংশ ছিলো।




মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত

মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলায় স্বপন আলী নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ তহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

দণ্ডিত মোঃ স্বপন আলী মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মহম্মদপুর কেলাপুর গ্রামের এনামুল হকের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে পার্শ্ববর্তী জেলার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসাছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন স্বপন আলী। সম্পর্কের সূত্রে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গাংনী উপজেলার আকুবপুর গ্রামের নির্মাণাধীন দুইতলা ভবনে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।

পরে মেয়েটির বাবা গাংনী থানায় স্বপন আলীকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। মামলায় প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে কুমারীডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মিন্টু মিয়া অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে আদালত স্বপন আলীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর সাইদুর রাজ্জাক এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আতাউর রহমান পিন্টু।




মুজিবনগরে গাছের চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন

মুজিবনগর কৃষি অফিসের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার ২৯ জুন সকাল ১০টার দিকে মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মমিনের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল। তিনি উপজেলার বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চারা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

পরে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়কের দুই পাশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে মোট ১২০টি তাল গাছের চারা রোপণ করা হয় (প্রতিটি পাশে ৬০টি করে)।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবং সহমর ফারুক প্রিন্স।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল বলেন, “সময় স্বল্পতার মাঝেও এ বছর আমাদের প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানোর একটি ইচ্ছা ছিল, যার সূচনা হলো কৃষি অফিসের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে।”

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণের জন্য চারা বিতরণ করা হয়েছে।




মেহেরপুরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ কর্মশালা

মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার সকালে সদর উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা করেন মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. কামরুন নাহার।

সভাপতির বক্তব্যে মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই মিলে মেহেরপুরকে তামাকমুক্ত করতে চাই। তামাক এমন একটি পণ্য যাতে আসক্ত হলে মানব শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রোগাক্রান্ত হতে পারে। একটি তামাকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে এই প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অংশগ্রহণকারীরা আইন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভের পাশাপাশি বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগে ভূমিকা রাখবেন।

প্রশিক্ষণে আরও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা, পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাসিমা খাতুন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান, জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি তোজাম্মেল আজম, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শামিম রেজা এবং আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রওশন আলী টোকন, বুড়িপোতা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন, পিরোজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইকবাল এনামুল কবীর, শ্যামপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, ছাত্র প্রতিনিধি তামিম ইসলাম, ক্যাব-এর সভাপতি রফিক-উল-আলম এবং সুবাহ সামাজিক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মঈন-উল-আলম।

এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের কার্যকর প্রয়োগে সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।




কোটচাঁদপুরে আদম ব্যবসায়ীর ফাঁদে ১২ পরিবার সর্বস্বান্ত

দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়ে স্বপ্ন ছিল ভালো চাকরি, একটু স্বচ্ছল জীবন। কিন্তু সেই স্বপ্নই এখন ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার ১২টি পরিবারের কাছে।

অভিযোগ উঠেছে, কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারী গ্রামের আদম ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ও তার কাতার প্রবাসী ছেলে মাসুম বিল্লাহ মামুন বিদেশে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিটি পরিবার থেকে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেকে শেষ সম্বল বিক্রি করেছেন, জমি বন্ধক রেখেছেন, এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়েছেন সবই সন্তানদের সোনালী ভবিষ্যতের আশায়।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, গত বছরের নভেম্বর থেকে কাতারের উম সালাল মোহাম্মদ এলাকায় গাদাগাদি করে একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে ১২ যুবককে। নেই বৈধ কাজ, ঠিকমতো খাবারের ব্যবস্থাও নেই। উপরন্তু হুমকি দেওয়া হচ্ছে আরও টাকা না পাঠালে দেশে লাশ ফেরত যাবে!

কাগমারী গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ‘ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে সংসারটা একটু ভালোভাবে চলবে ভেবেছিলাম। ৮ মাস হয়ে গেলো কোনো কাজ নেই। এখন ছেলেটা ওখানে না খেয়ে আছে, আর আমাদের বলছে আবার টাকা পাঠাতে!’

প্রতিবেশী বিধবা নারী নুরজাহান বেগমের কণ্ঠেও হতাশা ও ক্ষোভ, ‘জমি বন্ধক রেখে, গরু বিক্রি করে আর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দালাল নজরুলের হাতে টাকা দিয়েছিলাম। এখন বলছে আরও দুই লাখ টাকা না দিলে কাজ হবে না। এখন খাই কীভাবে, টাকা দেবোই বা কোথা থেকে!’

একই গ্রামের ভুক্তভোগী তবিবুর রহমান বলেন, ‘ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে সংসারে স্বপ্ন দেখেছিলাম দুই বেলা ভালোভাবে খাবো, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাবো। সেই আশায় সব বিক্রি করেছি, ঋণ নিয়েছি। এখন শুনি, কাজ তো দূরের কথা ওরা না খেয়ে আছে, আর বলছে আরেক দফা টাকা না দিলে ছেলের খোঁজও মিলবে না! সব শেষ হয়ে গেছে এখন এই প্রতারকরা যাতে আর কারো সর্বনাশ করতে না পারে, তাই বিচার চাই।’

এ ঘটনায় এক পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে, আরেকটি পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু তারপর থেকে নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। গ্রামের বাড়িতে ঝুলছে তালা, বন্ধ রাখা হয়েছে তাদের মোবাইল ফোনও।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার ওসি কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তাদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’