গাংনীতে কাম’স সিএফএইচের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

কাম ফর হিউম্যানিটি-সিএফএইচের উদ্যোগে মেহেরপুর জেলাব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্বোধন করা হয়।

আজ মঙ্গলবার বেলা ২টার সময় মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার চিৎলা ফোরকানিয়া হাফেজিয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্যদিয়ে সিএফএইচ শীত উৎসব সিজন-২ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাবা দিলারা রহমান।

সংগঠনের সভাপতি মামুন অর রশিদ বিজন এর সভাপতিত্বে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য শফিউর রহমান, মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম আম্বিয়া, মাদ্রাসার শিক্ষক হারুন অর রশিদ, মো: জামান, মো: আনিচুর রহমান।

এসময় সিএফএইচের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার তুরিন, দপ্তর সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাজ্জাদ উদয়, অর্থ সম্পাদক সহরাব হোসেন, সদস্য, সবুজ খান, জারিন তাসনিম রোজা, মাহমুদা রহমান মিম, ইরফানা তাসনুবা অদিতি, আশিকুর ইসলাম, শবনাম শোভা, জাহিদ ইসলাম, মোছা: তাম্মি প্রমুখ।

মেপ্র/ আরপি




মেহেরপুরে জেলা রেজিষ্টার কার্যালয় ঘেরাও

বিনা কারণে বদলি ও অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে জেলা রেজিষ্টারের কার্যালয় ঘেরাও করেছে নকল নবিসরা।

মঙ্গলবার বিকালে মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলার নকল নবিসরা জেলা রেজিস্টারের কার্যলয় ঘেরাও করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

এসময় নকল নবিসরা বলেন, জেলা রেজিষ্টার সুখরঞ্জন রায়ের আজ চাকরির শেষ দিন। এই শেষ দিনে আমাদের উপর রাগের বশবর্তি হয়ে বিনা কারণে অন্য উপজেলায় বদলি করে দিয়েছে। সেই বেশ কয়েকজন অপ্রয়োজনীয় ভাবে মেহেরপুর সদর সাব রেজিষ্টারের কার্যালয়ে বদলি করেছে।

নকল নবিস নুর আলম বলেন, অবৈধ নিয়োগের প্রতিবাদে আমরা জেলা রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে আমরা মামলা দায়ের করেছিলাম। এ জন্য সে আমাদের উপর প্রতিশোধ নিতে ক্ষমতার অপ্রব্যবহার করেছে।

নকল নবিস রোজিফা খাতুন বলেন, জেলা রেজিষ্টারের কার্যালয়ের অফিস সহকারি ফরিদা ইয়াসমিন, শহিদুল ইসলাম, খায়রুল ইসলামের সহযোগীতায় অবৈধভাবে ৬-৭জন নকল নবিস নিয়োগ করেছিল। এজন্য আমরা নকল নবিশরা তিব্র প্রতিবাদ করেছিলাম।

নকল নবিস লিলুফা ইয়াসমিন বলেন, আমরা ৫১ জন মেহেরপুরে জেলা রেজিষ্টার অফিসে কর্মরত আছি। এর পরও আরও কয়েকজনকে গাংনী ও মুজিবনগর থেকে সদরে বদলি করা হয়েছে। যেখানে নকল নবিসের কোন প্রয়োজন নেই সেখানে সুখরঞ্জন রায় জোর করে বদলি করেছে।

এছাড়াও সাব রেজিষ্টারের অফিস সহকারী আব্দুল ওয়াহেদকে বদলি করা হয়েছে জেলা কার্যালয়ে। আজ তার যোগদান করার কথা। কিন্তু যোগদান করতে এসে দেখে জেলা রেজিষ্টারের কক্ষ তালা বদ্ধ।

জেলা রেজিষ্টার কার্যালয়ের পরিছন্ন কর্মি বলেন, জেলা রেজিষ্টারের আজ চাকরির শেষ দিন। তাই অফিস ছুটির আগেই তিনি চলে গেছেন।

মেহেরপুর সদর সাব রেজিষ্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, সদরে নকল নবিস এমনিতেই বেশি। সেখানে অপ্রয়োজনীয়ভাবে অতিরিক্ত নকল নবিস দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কোন রকম ফেয়ারওয়েল ছাড়াই জেলা রেজিষ্টার আজ শেষ দিনে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে জেলা রেজিষ্টারের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।




জীবননগরে পাঁচটিকে জরিমানা এবং দুটি ইটভাটা বন্ধ

নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ইট প্রস্তুত করায় চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে পাঁচটি ইটভাটাকে দুই লাখ ৮০ টাকা জরিমানা এবং অনুমোদনহীন দুটি ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।

মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিব্বির আহমেদ জীবননগরের পাঁচটি ভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুতের দায়ে জীবননগর উপজেলার এএনজেএম ব্রিক্সের মালিক জীবননগর পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দেড় লাখ, এআরবি ব্রিক্সের মালিক আরিফুজ্জামানকে ২০ হাজার, শাহ ইটভাটার মালিক এসএম শামীমকে ৩০ হাজার, সরকার ইটভাটার মালিক শাকিলুজ্জামানকে ৬০ হাজার এবং এমএআর ব্রিক্সের মালিক আসাদুল হককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এসময় অনুমোদন না থাকায় এআরবি ব্রিক্স ও শাহ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।

মেপ্র/ইএম




ঝিনাইদহে কৃষকের ধান বিক্রির চেক ছিনতাইয়ে বাঁধা দেওয়ার বাড়ী-ঘর ভাংচুর

অভ্যন্তরীণ আমন ধান সংগ্রহে সরকার সচ্ছতা নিশ্চিত করতে কৃষকের এ্যাপসের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করছে। সারাদেশের ১৬ টি উপজেলার মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা এ কর্মসূচীর একটি মডেল। সদর উপজেলার ২১’শ ২৮ জন কৃষককে এ্যাপসের মাধ্যমে লটারী করে নির্বাচিত করা হয়। যারা সরাসরি গুদামে ধান দিবেন ও কৃষকের নিজের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করবেন।

এরপরও যেন থেমে নেই মধ্যস্বত্তভোগীদের দৌরাত্বা। প্রকৃত কৃষককে ব্যাংকে নিয়ে তার কাছ থেকে জোরপুর্বক চেক স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সোমবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে সদর উপজেলার সুরাট ইউনিয়নে। চেক ছিনতাইয়ে বাঁধা দেওয়ার অপরাধে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।

জানা যায়, সোমবার বিকেলে চুটলিয়া গ্রামের নির্বাচিত কয়েকজন কৃষককে শহরের হামদহ পুবালী ব্যাংকে নিয়ে আসেন সুরাট ইউনিয়নের কবির হোসেন জোয়ার্দ্দার কেবির ভাই শাবু ও কল্যানপুর গ্রামের মৃত শরাফতের ছেলে জিয়া।

শাবু ও জিয়া কৃষকদের ২ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে কৃষক কার্ড ও চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা চুটলিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান চঞ্চল বাঁধা দিলে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়।

পরবর্তীতে সোমবার বিকেলে জিয়া ও শাবুর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন লোক মোটর সাইকেল যোগে চঞ্চলের বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তারা ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় চঞ্চল বাদী হয়ে সদর থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মঈন উদ্দিন বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 




মেহেরপুরে দুই দিন ব্যাপী জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলা শেষ

মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ৪১ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলা শেষ হয়েছে।

সোমবার দুপরে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে মেলা শেষ হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় কুমার চাকী, একাডেমিক সুপারভাইজার আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।

পরে মেলার স্টল, বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। মেলায় ‌স্টলে সিনিয়র গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করেছে মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে মেহেরপুর সরকারি কলেজ ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ।

জুনিয়র গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করেছে মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

বিতর্কে সিনিয়র গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ, রানার্সআপ মেহেরপুর সরকারি কলেজ।

সিনিয়র গ্রুপের শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের এরিনা আজিজ জেসী এবং জুনিয়র গ্রুপ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রানার্স আপ হয়েছে এ এল এম জিয়াউল হক ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন।

অলিম্পিয়াড জুনিয়র গ্রুপে প্রথম হয়েছে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শামস বিন শহীদ, একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন সাফি, এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ এর ফারহান।

মেপ্র/ইএম




ঝিনাইদহে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাদকসেবীর কারাদন্ড

ঝিনাইদহে কালীগঞ্জে মাদক সেবনের অভিযোগে আয়ুব হোসেন (৪৫) নামের এক মাদক সেবীকে ৫ দিনের কারাদন্ড ও ৫’শ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ভুপালী সরকার এ দন্ডাদেশ প্রদাণ করেন।
আদালত সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে মাদক সেবন করা অবস্থায় উপজেলার বাদেডিহি গ্রাম থেকে আয়ুব হোসেনকে আটক করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৫ দিনের কারাদন্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা করে আদালতের বিচারক।

 




কোটচাঁদপুরে ট্যাক্টর থেকে আঁখ টানতে গিয়ে প্রাণ গেল শিশুর

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ট্যাক্টর থেকে আঁখ টানতে গিয়ে ইমরান হোসেন (১০) নামে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার সাফদারপুর মকসেদ মোড়ে এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার দেপদোয়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, শিশু ইমরান হোসেনের বাবা স্থানীয় মকসেদ মোড়ে রিপন বিক্সে শ্রমিকের কাজ করেন। সে বাবার সাথে ইট ভাটার পাশেই একটি ঘরে বসবাস করতেন। মঙ্গলবার সকালে শিশুটি আখঁ খাওয়ার জন্য মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের আঁখ বোঝাই একটি ট্যাক্টরের পিছনে দৌড়াতে থাকে। এসময় গাড়ি থেকে আঁখ টানতে গিয়ে ট্যাক্টরের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের পরিবারে পক্ষ থেকে কোন প্রকার অভিযোগ না থাকায় শিশুটির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মেপ্র/ ইএম




ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে মাদক মামলার আসামীর মৃত্যু

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে নিজাম উদ্দিন নামে এক মাদক মামলার আসামীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়। তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজার পাড়ার হিম চাঁদের ছেলে।

ঝিনাইদহ জেল সুপার গোলাম হোসেন জানান, নিজাম উদ্দিন মাদক মামলায় জেলাখানায় আটক ছিলেন। সোমবার বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।




ঝিনাইদহ সার্কেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশারের যোগদান

ঝিনাইদহ সার্কেলে যোগদান করলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে আসা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার । তিনি ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ থানার (সদর সার্কেলে) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে সম্প্রতি যোগদান করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে ৩১ তম বিসিএসের মাধ্যমে সহকারি পুলিশ সুপার হিসাবে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন তিনি।

তার বাড়ি খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায়। ইতিপূর্বে তিনি ভোলা, বরিশাল ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই ব্যাপারে আবুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান (পিপিএম) এর নির্দেশনা মোতাবেক এ জেলায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন ও মানুষের সেবা প্রদানের জন্য কাজ করে যাব”।

কোন ধরনের অবৈধ কাজ, অস্ত্র, মাদক, নাশকতা, সন্ত্রাসসহ সকল প্রকার অপরাধ মূলক কর্মকান্ড রুখতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

 




ছাত্রলীগ নেতার বিনা বেতনের পাঠশালা

দুস্থ গরিব ও অসহায় শিক্ষার্থীদেরকে বিনা পয়সায় কোচিং করিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখছেন গাংনী উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা ওয়াজ্জেল হোসেন।

গত ৫ বছর যাবৎ তিনি নিজ উদ্যোগে চালিয়ে আসছেন বিনা বেতনের পাঠশালা। তার পাঠশালায় লেখাপড়া করে উপকৃত হচ্ছে এলাকার শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া শতশত শিক্ষার্থী। এলাকার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে এবং স্থানীয়দের দুঃখ দুর্দশায় পাশে থেকে এলাকার উন্নয়ন ও নিজেকে মানব সেবায় নিয়োজিত রাখতে চান তিনি।

ওয়াজ্জেল হোসেন গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নুর ইসলামের ছেলে ও ধান খোলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

২০১৩ সালের কথা। বিদ্যালয়ে কোচিং না করায় একের পর এক পরীক্ষায় ফেল করছিল কসবা গ্রামের এক দিনমজুর এর ছেলে ইসরাফিল হোসেন। মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে লেখা পড়া বন্ধ করে দিয়েছিল ওই শিক্ষার্থী।

বিষয়টি জানার পর তার পাশে এসে দাঁড়ায় ছাত্রলীগ নেতা ওয়াজ্জেল হোসেন। সকাল বিকাল কোচিং করিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করায় শিক্ষার্থীকে। পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করায় শিক্ষক শিক্ষার্থী দুজনের মধ্যেই প্রানের সঞ্চার লাভ করে।

শুরু হয় নব উদ্যোমে বিনা পারিশ্রমিকে কোচিং করানোর বিষয়টি। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু হয় বিনা বেতনের পাঠশালা নামরে কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম। সকাল-বিকাল কোচিং করিয়ে অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থীকে মেধা তালিকায় নিয়ে আসে ওয়াজ্জেল হোসেন।

খোলা আকাশের নিচে বসে পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের কৃতত্ব দেখে মুগ্ধ হয় এলাকার মানুষ। ওয়াজ্জেলের বিনা বেতনের কোচিং এর কারনে এলাকার অসহায় দুস্থ্য পরিবারের ছেলে মেয়েরা তার কাছে পড়তে আসে। তার মানবিকতা ও শিক্ষার্থীদের সাফল্য দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী একটি ঘর প্রদান করেন। সে ঘরে বসেই ওয়াজ্জেল এখন মাধ্যমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কোচিং করিয়ে থাকেন।

যে শিক্ষার্থীকে নিয়ে ওয়াজ্জেল বিনা বেতনের কোচিং শুরু করেন সেই ইসরাফিল এখন ৯ম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত। ইসরাফিল জানায়, ওয়াজ্জেল তার পাশে না দাঁড়ালে তার লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যেতো। সে এখন লেখাপড়ায় ভাল করছে।

তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী সুরাইয়া জানায়, তার বাবা ও মা দুজনেই শারিরীক প্রতিবন্ধী। তার লেখা পড়ার খরচ যোগানো সম্ভব না হওয়ায় সুরাইয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন ওয়াজ্জেল হোসেন।

কসবা গ্রামের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী ছাদিয়া জানায়, পিতা মাতার অভাবের সংসারে প্রাইভেট পড়ানোর খরচ যোগাতে না পারায় লেখা পড়ায় পিছিয়ে পড়ছিলাম। ওয়াজ্জেল ভাইয়ের কাছে বিনা বেতনে পড়ে আমি এবছর অনুষ্ঠিত পরিক্ষায় ভাল ফলাফল করেছি। তবে তার এ মানবিকতা দেখে সরকারি সহযোগীতা থাকলে বড় পরিসরে লেখা পড়ার কার্যক্রম চালাতে পারবে।

Meerpur

৯ম শ্রেণীর আর এক ছাত্রী মারিয়া জানায়, বিদ্যালয়ে লেখা পড়া করে শুধু মাত্র পাশ করা যায়, কিন্তু ভাল ফলাফল করা যায়না। তার দিন মজুর পিতার কাছে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বল্লে পিতা অপারগতা জানায়। আমার প্রতিবেশী এক বান্ধবির কাছে আমার হতাশার বিষয়টি জানালে সে আমাকে ওয়াজ্জেল হোসেন ভাইয়ের কাছে নিয়ে আসে এবং সেখানেই শুরু করি বিনা বেতনে কোচিং।

শুধু মারিয়া নয় প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী এখানে লেখা পড়া করছে। প্রতিদিন সকালে ওয়াজ্জেল হোসেনের বাড়ির উঠানে বসে কোচিং-কাচাদের পাঠশালা। সেখানে প্রাথমিক পড়ুয়া প্রায় অর্ধশতাধিক ছেলে মেয়ে পড়া লেখা করে।

আরো পড়ুন্: বামন্দীতে পল্লী বিদ্যুৎ এর এজিএম কে প্রাণ নাশের হুমকিতে লিটন মেম্বরের নামে মামলা

দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ওয়াজ্জেল তার অবৈতনিক পাঠশালা পরিচালনা করে আসছেন। ছোট বেলা থেকেই ওয়াজ্জেলের স্বপ্ন ছিলো সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে নিয়ে কিছু করার। সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ওয়াজ্জেল হোসেন বিনা বেতনে এলাকার গরিব দিনমজুরের ছেলে মেয়ে ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মনোনিবেশ করতে পেরে খুব সাচ্ছন্দ বোধ করেন।

ওয়াজ্জেল হোসেন নিজেও একজন ছাত্র। সে বি.এ বি.এস.এস ক্লাশে লেখা পড়া করছেন। নিজের লেখা পড়ার পাশাপাশি অন্যকে শিক্ষিত করতে শ্রম দিয়ে যাচ্চেন। সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এলাকার অসহায় গরিব মানুষকে অর্থিক সহায়তা ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করছেন। স্থানীয় মানুষের কিছু হলেই ওয়াজ্জেল হোসেন ছুটে যান তাদের পাশে।

Meherpur

স্থানীয় উপকার ভোগীরা জানান, দিন দিন ওয়াজ্জেলের কাছে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বর্তমানে পাঠদানের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত জায়গা ও চেয়ার-টেবিল। এসবের ব্যাবস্থা করতে পারলে শতশত শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।

আরো পড়ুন্: সাড়ে ৩ বছরের শিশু রাজাকারের তালিকায়!

ওয়াজ্জেল হোসেন জানান, অর্থের অভাবে যেন একটি শিক্ষার্থী লেখা পড়ায় পিছিয়ে না থাকে এ জন্য তার এ বিনা বেতনের পাঠশালা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন আমি দেখিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গরিব অসহায় ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে এগিয়ে নিতে প্রাণপন চেষ্টা করছে। ভালকাজ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মুখ উজ্জল করার পাশাপাশি এলাকার উন্নয়ন করতে চাই। তাই মনে হয়েছে এলাকার মানুষকে শিক্ষিত করতে পারলেই এলাকার উন্নয়ন হবে। যে সব শিক্ষার্থী আামার কাছ থেকে সুবিধা নিচ্চে তারাও একদিন বড় হয়ে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াবে।

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান বলেন, ওয়াজ্জেল হোসেন তার বাড়িতে বিনা বেতনের যে পাঠশালা চালাচ্ছেন তাতে অনেক মানুষ উপকৃত হচ্ছে। সে যাতে বড় পরিসরে কিছু করতে পারে সে ব্যাপারে তাকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। তিনি আরো বলেন শুধু ওয়াজ্জেল হোসেন নয় ভাল কাজ করার জন্য সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা উচিৎ।

মেপ্র/ইএম