আমঝুপি চাঁদবীল কলনি পাড়ায় আগুনে দুটি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

মেহেরপুর সদর উপজেলা আমঝুপি ইউনিয়নের চাঁদবীল কলনি পাড়ায় শর্ট সার্কেট হয়ে আগুনে দুই টি পরিবারের প্রায় ৩ লক্ষ্য টাকার মালা মাল পুড়ে ছাই।

গতকাল বৃস্পতিবার বেলা ৩ টার সময় চাঁদবীল কলনি পাড়ায় নিরেস ও চাম্পা রানীর বসত বাড়ি আগুন দেখতে পাই। এলাকার লোক জন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিস কে খবর দেওয়া হয়।

মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসের ৩ টি ইউনিট ১ ঘন্টা ব্যাপি চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসে। তার আগে দুইটি পরিবারের প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মালা মাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানান, নিরেস এবং তার পরিবার কয় দিন আগে ভারতে বড় ভাইয়ের ছেলে মারা যাওয়ার কারণে ভারতে গেছেন।

এই সময়ে চাম্পা রানী বলেন, বসত বাড়িতে কেউ না থাকাই বিদ্যুৎ থেকে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সব কিছুই আগুনে পুড়ে ছাই, আমাদের আর কিছুই নেই। তিনি বলেন, আমাদের ৪টি ছাগল, একটি গরু এবং কিছু মুরগী, ধান, কাপড়, শীত বত্র সহ সব কিছু পুড়ে ছায় হয়ে গেছে।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাসুদুল আলম ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন এবং এসময় তিনি দুই পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

-নিজস্ব প্রতিনিধি




চকলেট বিক্রেতা থেকে সফল ব্যবসায়ী মহিদুল

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামের ফজলুল মল্লিকের ছেলে মহিদুল ইসলাম (৩০)। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান তিনি। দুই ভায়ের মধ্যে মহিদুল ছোট।

ছেলেবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল একজন বড় ব্যবসায়ী হওয়ার। কঠোর পরিশ্রম আর সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্ন সফল হয়েছে। সামান্য চকলেট বিক্রেতা থেকে তিনি আজ একজন সফল ব্যবসায়ী।

২০০১ সালে বন্যার পর, তখন তার বয়স ছিল আনুমানিক ১০ বছর। তখন থেকেই তিনি মুজিবনগর কমপ্লেক্সের ভিতর দর্শনার্থীদের কাছে ঝাঁপিতে করে চকলেট বিক্রি করতেন।

এই সূত্রে তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে থাকেন ব্যবসার কলা-কৌশল। তখন থেকেই বড় ব্যবসায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকেন।

ব্যবসার জন্য কিছু টাকা জোগাড় করতে তিন বছর পর শুরু করেন ঝাল-মুড়ির ব্যবসা। ঝালমুড়ি বিক্রি করতে করতে আরও দুই বছর পার হয়ে যায়।

পরবর্তীতে চকলেট বিক্রি ও ঝাল-মুড়ির ব্যবসা করে যে টাকা সঞ্চয় করেন, তা দিয়ে ২০০৫ সালের দিকে মুজিবনগরে একটা ছোট চায়ের দোকান দেন। সেখান থেকে শুরু হয় তার স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা।

২০০৭ সালের দিকে মুজিবনগর উপজেলা পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রমের (আরএসএস) আওতায় সুদমুক্ত একটি ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্সে ঢুকতে মেইন গেটের সামনে একটি দোকান নিয়ে ফাস্টফুডের মালামাল তুলে ব্যবসাটাকে বড় করেন।

আর এই ব্যবসার মাধ্যেমে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। আস্তে আস্তে তিনি ব্যবসায় ভালো লাভবান হতে থাকেন। তার এই ব্যবসার মাধ্যেমে বর্তমান তিনি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

সেই সঙ্গে হয়ে উঠেছেন একজন সফল ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি ফাস্টফুড, কসমেটিকসসহ সাতটি দোকানের মালিক। আর তার এই সকল দোকান থেকে আরও কয়েকজন যুবকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

এ বিষয়ে মহিদুল ইসলাম বলেন, আমি একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পরিবারের অভাব ঘোচাতে আমি ছোট থেকে কিছু করার চেষ্টা করতাম। কখনো চকলেট বিক্রি, কখনো বাদাম বিক্রি করতাম।

এসব বিক্রি করতে করতে আমার ইচ্ছা জাগে আমি একজন বড় ব্যবসায়ী হব। সেই থেকে কখনো আমি পিছুপা হইনি। অনেক কষ্ট ও কঠোর পরিশ্রম করে আজ আমি এই জায়গায় উঠে আসতে পেরেছি।

আর আমার এই সফলতা হবার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সমাজসেবা অফিস।
স্থানীয় চাঁদ আলী জানান, মহিদুল ভাই অনেক ছোট থেকে চকলেট বিক্রিসহ নানান ধরনের ব্যবসা করতেন।

আমরা দেখতাম তার ব্যাবসা করার প্রতি অনেক চেষ্টা। তার এই প্রাণপণ চেষ্টায় তিনি আজ সফল ব্যবসায়ী হিসাবে পরিণত হয়েছেন। তার এই সফলতা দেখে আমাদের খুবই ভালো লাগে।

এ ব্যাপারে মুজিবনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রব জানান, আমাদের এখান থেকে উদ্যোগী ব্যবসায়ীদের পল্লী সেবা কার্যক্রম (আরএসএস) এর আওতায় সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

আমি যখন জানতে পারি, মহিদুল ইসলাম তার ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকে একটি বড় ব্যবসা করার উদ্যোগ নিয়েছে, অথচ টাকার জন্য সেটা সফল করতে পারছে না।

তারপর গ্রাম ও পরিবার জরিপের মাধ্যেমে তার আর্থিক অবস্থা বিচার করে তাকে এই ঋণ কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এবং তার হাতে পল্লী সামাজিক কার্যক্রমের অর্থ স্টিম তুলে দেওয়া হয়। আর সেই ঋণের টাকাসহ তার কিছু গচ্ছিত টাকা দিয়ে সে নতুন করে একটি দোকান দেয়।

সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, মহিদুলের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে সে বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ী। আমি তার এই সফলতাকে সাধুবাদ জানায়। আমাদের ঋণ গ্রহীতাদের জন্য তার এই সাফল্য অনুকরণীয় হবে বলে আমি আশা করি।

-শাকিল রেজা, মুজিবনগর




মেহেরপুর বিআরটিএ অফিসে চালকদের উপচেপড়া ভিড়

নতুন সড়ক আইন পাশ হওয়ার পর থেকে মেহেরপুরে গাড়ি চালকদের মাঝে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক। এই আতঙ্কে চালকরা ভিড় জমাচ্ছে বিআরটিএ অফিসে।

গাড়ির রেজিট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে গ্রাহকরা।

হঠাৎ করেই গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিআরটিএ কতৃপক্ষকে।

কম জনবল নিয়ে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়ে মেহেরপুর বিআরটিএ অফিস।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেহেরপুর বিআরটিএ অফিসে দীর্ঘ লাইন।

ঐদিন মেহেরপুর বিআরটিএ’র এডি আতিয়ার রহমান না থাকায় অন্য কর্মকর্তদের উপর চাপ ছিল আরও বেশি।

আতিয়ার রহমান না থাকার কারন জানতে চাইলে উচ্চমান সহকারি প্রিতি খাতুন জানান, অফিসে আসার পর উনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এজন্য আজ ছুটিতে আছেন।

কিন্তু কয়েকজন গ্রাহক এ প্রসঙ্গে ভিন্ন মতপোষণ করে বলেন, আতিয়ার রহমান ঠিকমত অফিসেই আসেন না।

এছাড়াও আরও কয়েকজন জানান, বিভিন্ন হয়রানির কথা। বেশ কয়েকদিন ধরে বিআরটিএ অফিসে এসে কোন কাজ হচ্ছে না।

আজ না কাল বলে ফিরিয়ে দিচ্ছে বার বার।
এবিষয়ে প্রিতি খাতুন বলেন, আমারদের জনবল অনেক কম সে হিসেবে কাজ করতে একটু দেরি হচ্ছে।

আমরা জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মহোদয়কে জানিয়েছি, আশা করছি অল্প কয়েকদিনে মধ্যে পর্যাপ্ত জনবল পাবো। তখন সেবা পেতে সমস্যা হবে না।

-নিজস্ব প্রতিনিধি




আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে মেহেরপুরের স্থলবন্দর

অবশেষে অলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে স্থলবন্দর আন্দোলন। মেহেরপুর জেলায় একটি স্থলবন্দরের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে মেহেরপুরবাসী।
আর এই আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন মেহেরপুরের সন্তান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির সদস্য এম এ এস ইমন।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কতৃপক্ষ গত ৩ নভেম্বর একটি প্রস্তাবিত তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবিত তালিকায় নতুন করে ২টি স্থানে স্থলবন্দর তৈরি করার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকায় স্থান পেয়েছে মেহেরপুরের মুজিবনগর ও কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর।  এ দিকে নতুন করে স্থলবন্দর প্রস্তাবিত তালিকায় আসায় মেহেরপুরবাসীর নতুন করে স্বপ্ন দেখছে।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম এই স্থলবন্দরের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তিতে ২০১৪ সালে গঠন করা হয় মেহেরপুর স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফোরাম। এই ফোরামের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এম এ এস ইমন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে স্থলবন্দর বাস্তবায়নের কাজকে ত্বরাণিত করে চলেছেন।

এ প্রসঙ্গে এম এ এস ইমন বলেন, মেহেরপুর বাংলাদেশের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক জেলা। এই জেলার মুজিবনগর হচ্ছে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুতিকাগার। অথচ এই জেলায় তেমন কোন শিল্পকারখানা বা বেকার সমস্যা সমাধানের কোন সুব্যাবস্থা নেই। মেহেরপুরের মুজিবনগর প্রতিবেশি দেশ ভারতের কাছাকাছি অবস্থিত। তাই ভারতের সাথে বানিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করা আমাদের জন্য সহজ। এখানে যদি একটি স্থলবন্দর স্থাপন করা হয় তবে সেখানে অনেক বেকার যুবক-যুবতির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেই সাথে মেহেরপুরের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমরা প্রথমে কয়েকজন যুবককে সাথে নিয়ে স্থলবন্দরের দাবিতে আন্দোলন শুরু করি। পরবর্তিতে ২০১৪ সালে একটি ফোরাম গঠন করি। যার নাম দেওয়া হয় মেহেরপুর স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফেরাম। এই ফোরামের নেতৃত্বে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ আমার খুব ভালো লাগছে যে অবশেষে আমাদের পরিশ্রম, আমাদের সপ্নের স্থলবন্দর বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে। এটি মেহেরপুরবাসীর জন্য খুবই সুসংবাদ। আমরা আশা করবো এই প্রস্তাবিত স্থলবন্দর যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।

জানা গেছে, স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফোরামের নেতৃত্বে ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, মেহেরপুর জেলায় অনশন ধর্মঘট, বিভিন্ন মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ করা হয়। এ সকল কর্মসূচিতে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মেহেরপুর স্থলবন্দর আন্দোলনের অন্যতম সদস্য বেলাল হোসেন। স্থলবন্দর প্রস্তাবিত হওয়ার খবরে তিনি বলেন, ইমনের নেতৃত্বে মেহেরপুরবাসীকে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। অবশেষে সেই আন্দোলনের স্বার্থকতা পেতে যাচ্ছি।

আন্দেলন কারীদের মধ্যে ফরিদ উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্থলবন্দর আমাদের কাছে সপ্নের মত। এটা বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে এর চাইতে আনন্দের খবর আর কি হতে পারে?
জাগো মেহেরপুর’র মুখপাত্র শোয়েব রহমান জানান, অবশেষে মেহেরপুরবাসী অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। আমাদের সপ্ন পূরণের পথে।
স্থলবন্দর বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে এমন খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে বইছে আনন্দের বাতাস। বেকার সমস্যা সমাধান সেই সাথে মেহেরপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কার্যকরি সম্ভনা তৈরি হতে যাচ্ছে। সেই সাথে তৈরি হবে ব্যবসার নতুন দিগন্ত।

মেহেরপুর কোর্ট রোডের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, মেহেরপুরে স্থলবন্দর অত্যন্ত জরুরী। এখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করবে। এছাড়াও আমাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক ভালো হবে। বিভিন্ন পন্য আমদানি রপ্তানী করে আমরা লাভবান হতে পারবো।

আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান বলেন, স্থলবন্দর আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, এটা প্রস্তাবিত হয়েছে শুনে খুব ভালো লাগছে। এলাকার উন্নয়নের জন্য স্থলবন্দর প্রয়োজন। এছাড়াও সাধারণ মানুষ সেখানে বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। চিকিৎসা নিতে যদি ভারতে যেতে হয় তবে খুব সহজেই পাড়ি দিতে পারবে।

জেলা মটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, স্থলবন্দর তৈরি হলে খুব ভালো হবে। আমাদের শ্রমিকদের কাজের অভাবে বসে থাকতে হবে না। তাছাড়া মটর গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতী আমরা খুব সহজেই কম দামে কিনতে পারবো। বিভিন্ন ভারতীয় গাড়ি কম খরচে আনতে পারবো।
-মর্তুজা ফারুক রুপক




মেহেরপুরে একই দিনে ৪ জনের আত্মহত্যার চেষ্টা

মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে হঠাৎ করে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামের ৪ জন বিভিন্ন ভাবে আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালায়। এসমস্ত আত্মহত্যার চেষ্টাকারীর অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা চালায় বলে পারিবারিক ভাবে জানা যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার যারা বিষপান ও অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় তারা হলো মেহেরপুর শহরের মল্লিক পাড়ার মনির হোসেনের মেয়ে ফারজানা, শোলমারী গ্রামের ইদ্রিস আলীর মেয়ের রিশিতা খাতুন, সুবিদপুর গ্রামের সাদ্দামের মেয়ে সাথী এবং সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে বিপ্লবের স্ত্রী শারমিন।
আত্মহত্যা চেষ্টা করি ৪ জনের অবস্থা গুরুতর বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।

– নিজস্ব প্রতিনিধি:




চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আয়োজনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল ইসলাম মণির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের বিএনপি প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফ।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি




গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ৪ টি প্রকল্প কাজের লটারীর ড্র অনুষ্ঠিত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪ প্রকল্পের কাজের লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষে এ লটারি ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এসময় গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ খালেক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান,এমপি প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান আতু উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় লটারিতে অংশগ্রহনকারি বিভিন্ন ঠিকাদার,স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তি,সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্পগুলো হচ্ছে,চাদপুর দুলাল নগর চাকলির বিল রাস্তার এইচবিবি করন,বরাদ্দ ৫৪ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

গাড়াডোব ইসলামপুর বহিলাপাড়া খাল মুখি রাস্তা এইচবিবি করন,বরাদ্দ ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গাড়াবাড়িয়া হলদিপাড়া থেকে মাঠমুখি রাস্তার এইচবিবি করন,বরাদ্দ ৫৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।এবং পিরতলা হাতিমারা রাস্তার এইচ্িববি করন কাজে ব্যায় ধরা হয়েছে ৫৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। খুব শিঘ্রই এ সকল রাস্তার এইচবিবি করন কাজ শুরু হবে। উক্ত রাস্তাগুলি প্রস্ততকরা হলে স্ব-স্ব এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।

-নিজস্ব প্রতিনিধি




মেহেরপুরে বর্শিবাড়িয়া ফুটবল একাদশ ২ গোলে জয়ী

মেহেরপুর সদর উপজেলা রাজনগর গ্রামে সুখরঞ্জন ও বকুল রানী সরকার স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে বর্শিবাড়িয়া ফুটবল একাদশ ২ গোলে জয়ী হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে রাজনগর স্কুল মাঠে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

৭০ মিনিটের খেলায় টান টান উত্তেজনায় বর্শিবাড়িয়া ফুটবল একাদশ ১-১ গোল করে ভগিরাতপুর ফুটবল একাদশ দল খেলায় ড্র করে। পরবর্তীতে খেলা শেষে ট্রাইব্রেকারে খেলা বর্শিবাড়িয়া ফুটবল একাদশ ৫-৩ গোলে ভড়িরাতপুর ফুটবল একাদশ কে পরাজিত করে।

খেলা শেষে ম্যান অব দা ম্যাচ ও সেরা গোলদাতা সহ তিন জনকে প্রাইজবন্ড দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। খেলাটি পরিচালনা করেন জহির উদ্দিন, ইমাদুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলাম।

খেলাটির সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন সুধাংশু মোহন সরকার ও শ্রমতি ভারতী রানী সরকার। এসময় খেলা পরিচালনা কমিটির  সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য আলিহিম, সাবদার আলী সহ খেলা দেখতে আসা হাজার হাজার দর্শক খেলাটি উপভোগ করেন।

নিজস্ব প্রতিনিধি




৪০০০ বছরের পুরোনো রেসিপির পাঠোদ্ধার

হয়তো আপনি রন্ধনশিল্পী নন। রান্না-বান্নায় তত আগ্রহীও নন, কাজটাকে রীতিমতো ঝামেলা মনে করেন। তবে মাঝেমধ্যে অতিথি আপ্যায়নে বা কোনো খাবারের স্বাদ নিজের মতো করে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষায় হয়তো আপনার রাঁধতে মন চায়। আর সে ক্ষেত্রে আপনার সম্বল হচ্ছে রান্নার একেবারেই ছকবাঁধা সাধারণ কিছু জ্ঞান। অর্থাৎ, আপনি জানেন, চুলা জ্বেলে তাতে হাঁড়ি বসিয়ে রান্না শুরু করতে হয়। এমন রান্না জ্ঞান নিয়েও ভিন্ন ঘরানার কিছু রাঁধতে এখন আর আপনি অথই সাগরে পড়েন না। সেই দিন অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কারণ আপনার হাতের নাগালে আছে অনলাইন রেসিপি।

এই আধুনিকতায় বড় একটি সীমাবদ্ধতা তো রয়েছেই। কিছু জিনিস অনলাইনের কোটি কোটি রেসিপির মধ্যেও খুঁজে পাবেন না। যেমন ধরুন, কিছু রান্না আপনার মা দারুণ করেন। অন্যদের মতো একই উপাদান দিয়ে মা অমুক খাবারটি রাঁধেন। এরপর মা কী যেন একটা ঢালেন, এতে খাবারে চলে আসে অসাধারণ স্বাদ। ঠিক ওই স্বাদের খাবারটি তৈরিতে মায়ের সহায়তা আপনি নিতেই পারেন। যদি মা বেঁচে না থাকেন, আর সেই রান্না আপনি বা কেউ শিখে না রাখেন, তাহলে মায়ের সঙ্গে সেই খাবারের স্বাদ নেওয়ার ইচ্ছেকে জলাঞ্জলি দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

এত উদাহরণ দেওয়ার একটাই কারণ—এমন কিছু বিশেষ রেসিপির কথা তুলে ধরা। এর একটি হলো ভেড়ার মাংসের পাতলা ঝোল। মূল রেসিপিতে যা যা লেখা আছে, এর সব নিয়ে রান্না শুরু করলেন। মাংস প্রস্তুত করা হয়েছে। পানি প্রস্তুত। খাঁটি দানাদার লবণ, যবের শুকনা কেক, পেঁয়াজ, পারস্যের বিশেষ পেঁয়াজ, দুধ, সব একত্র করে তাতে রসুন মাখালেন। তবে এর মধ্যে কী বাদ পড়ল, তা বাবুর্চির কাছ থেকে জেনে নেওয়া একদমই অসম্ভব। কারণ মূল রেসিপিটি যিনি লিখে গেছেন, তিনি চার হাজারের বেশি সময় আগে মারা গেছেন।

ইতিমধ্যে বেশ কিছু রেসিপির পাঠোদ্ধারও হয়েছে।
প্রাকৃতিক ইতিহাসের ইয়েল পিবডি মিউজিয়ামের কাচের বাক্সে রাখা নরম মলাটের বইয়ের আকৃতির ট্যাবলেটগুলো দেখিয়ে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রাচীন এই সভ্যতা বিশেষজ্ঞ গোজকো বারজামোভিচ রেসিপিগুলো সম্পর্কে বলেন, এটা অনেকটা গান পুনর্গঠনের চেষ্টার মতো, কোনো একটি নোটের হেরফের থেকে পুরো বিষয়টি পাল্টে যাবে। তিনি ট্যাবলেটগুলো থেকে পাঠোদ্ধারের কাজ করছেন। চারটি ট্যাবলেটের মধ্যে তিনটি ১৭৩০ খ্রিষ্টপূর্বের এবং একটি এক হাজার বছর আগের। সব ট্যাবলেটই বেবিলন ও আসিরিয়াসহ মেসোপটেমিয়া অঞ্চলের। পুরোনো তিনটি ট্যাবলেটে ২৫টি ঝোলযুক্ত খাবারের উপকরণসহ রেসিপি আছে। আরেকটিতে রয়েছে ১০টির বেশি রেসিপি। এগুলোতে রান্নার প্রক্রিয়া ও পরিবেশনের তথ্য আরও বিশদভাবে আছে। তবে সেগুলো অনেকখানি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পড়া যাচ্ছে না।

এই দলের সদস্য হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির খাদ্য রসায়নবিদ পিয়া সোরেনসেন বলেন, সেগুলো খুব বেশি তথ্যবহুল রেসিপি নয়। হয়তো চার লাইনের। ফলে অনেক বেশি অনুমানের সুযোগ রয়েছে। কাজ করতে গিয়ে যা বোঝা যাচ্ছে, খাবারগুলোতে ঝোলের মাত্রা বেশি। এটা স্যুপের মতো।
রেসিপিগুলো নিয়ে কর্মরত হার্ভার্ড সায়েন্স অ্যান্ড কুকিং ফেলো প্যাট্রিসিয়া জুরাদো গনজালেজ বলেন, খাদ্য উপাদানগুলো আজ এবং চার হাজার বছর আগের একই। মাংসের টুকরা মানে মাংসের টুকরাই। পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে একই প্রক্রিয়া। এখানে একটি বিজ্ঞান রয়েছে, সেটা চার হাজার বছর আগে যা ছিল, এখনো তা আছে।

ইরাকের রন্ধশালাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং এ-বিষয়ক ইতিহাসবিদ নাওয়াল নাসরাল্লাহ বলেন, এটা খুব অবাক করা বিষয় যে, এখন ইরানের প্রধান খাবার যেটি তা হচ্ছে ঝোলের খাবার। এটা প্রাচীন সময়েও প্রধান খাবার ছিল। ইরাকে এটা এখন প্রতিদিনের খাবার তালিকায় থাকে। ঝোলযুক্ত তরকারি, ভাত, সঙ্গে রুটি। এটি সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মতো বিষয় যে, খাবারটি প্রাচীনকাল থেকে এখন পর্যন্ত টিকে রয়েছে।




শারীরিক প্রতিবন্ধীর বন্ধু হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

চাকরির ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে অক্ষম মানুষের জন্য সুখবর বয়ে আনতে পারে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আধুনিক প্রযুক্তি শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষের বন্ধু হয়ে উঠবে বলেই পূর্বাভাস দিচ্ছে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সাল নাগাদ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের চাকরির সুযোগ তিনগুণ বেড়ে যাবে।

গার্টনারের ফেলো ডেরিল প্ল্যামার বলেন, দক্ষ প্রতিভাসম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করার একটি সুযোগ রয়েছে। এআই, অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (এআর), ভার্চুয়্যাল রিয়্যালিটির (ভিআর) মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

উদাহরণ হিসেবে প্ল্যামার বলেন, অনেক রেস্তোরাঁয় রোবট পরিবেশনকারী নিয়োগ করা হচ্ছে। এই রোবট পরিচালনায় যুক্ত হচ্ছেন শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা। যেসব প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন এমন ব্যক্তিকে কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়, তাদের সুনাম বাড়ার পাশাপাশি ৭২ শতাংশ উৎপাদনশীলতা বাড়ে। এ ছাড়া কর্মী ধরে রাখার হারও ৮৯ শতাংশ বাড়ে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের লাভ ২৯ শতাংশ বেড়ে যায়।

গার্টনারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালের পর থেকে এইআইয়ের পেছনে ছুটবে প্রতিষ্ঠানগুলো। ক্রেতার আবেগ ও আচরণ বিশ্লেষণ করে তার কেনাকাটার তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এই বুদ্ধিমত্তা কাজ করবে। ভবিষ্যতে মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এআই ও মেশিন লার্নিংকে (এমএল) কেনাকাটার ক্ষেত্রে শীর্ষ তিনে স্থান দিয়েছেন ২৮ শতাংশ ক্রেতা।