হরিণাকুন্ডুতে ৫৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ মহেশপুরের মঈনুল আটক

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে ৫৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ মঈনুল ইসলাম (৪০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার আইজ উদ্দিন মোড়ের নিজামের হোটেলের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয় বলে দৈনিক পশ্চিম অঞ্চলকে জানাই আটককৃত মঈনুল ইসলাম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সলেমানপুর গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে।

হরিণাকুন্ডু থানার এসআই গোলাম সরোয়ার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে উপজেলার আইজ উদ্দিন মোড়ের নিজামের হোটেলের সামনে ব্যাগে ফেন্সিডিল নিয়ে একব্যক্তি দাড়িয়ে আছে।

এমন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ব্যাগে রাখা ৫৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ ওই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। বিক্রির উদ্দেশ্যে সে মহেশপুর থেকে নিয়ে আসে।

মাদক আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে বলে এসআই গোলাম সরোয়ার জানান।

হরিণাকুন্ডু প্রতিনিধি




মেহেরপুরে টাকা না পেয়ে অন্ধ মহিলার ভিজিডি’র কার্ড কেটে দিয়েছে ইউপি সদস্য

মেহেরপুরের গাংনীতে ২ হাজার টাকা না দেওয়ায় হাসিনা খাতুন নামের এক অন্ধ মহিলার ভিজিডি’র কার্ড কেটে দিয়েছে ধানখোলা ইউপি সদস্য তৌহিদী হাসান নিলু।

অন্ধ হাসিনা খাতুন ধানখোলা ইউপির কসবা গ্রামের মামুনুর রশিদের স্ত্রী। অন্ধের ভিজিডি কার্ড কেটে দেওয়ায় এলাকায় নানা সমালোচনার মুখে পড়েছে ইউপি সদস্য তৌহিদী হাসান নিলু।

অন্ধ হাসিনা খাতুন জানান, ইতোপূর্বে বিভিন্ন পত্রিকায় অন্ধ জীবনের করুন দশা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তৎকালীন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ স্যারের সুপারিশে ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান ৩০ কেজি চাউলের একটি ভিজিডি কার্ড করে দেয়।

কিন্তু গত কয়েক মাস আগে কসবা গ্রামের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বর তৌহিদী হাসান নিলু ২ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ার কারণে আমার ভিজিডি’র কার্ড কেটে দিয়েছে।
এ ব্যপারে ইউপি সদস্য তৌহিদী হাসান নিলু জানান, হাসিনার ১৫০ নং কার্ডটি কেটে দেবার বিষয়ে শুনেছি।

তবে চেয়ারম্যান উক্ত কার্ডটি কেটে শানঘাট এতিমখাতানায় দিয়েছেন। আমি অন্ধ হাসিনার কাছে টাকাও চাইনী এ ব্যপারে কিছু জানিনা। তবে আমাদের ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীণ ভাতা কার্ড পেয়েছে ৮০ টি।

সেখানে আমাকে দিয়েছে মাত্র ১ টি।
এর প্রতিবাদ করাই আখের চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে গভির ষড়যন্ত্র করে অন্ধ মহিলার কার্ড কেটে দিয়েছে। বিষয়টি উদর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে দেবার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান।

ধানখোলা ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজগর জানান, হাসিনা অন্ধ ও গরিব মানুষ তার ভিজিডি’র কার্ড কাটা ঠিক হয়নি। নিলু মেম্বার নয়া আওয়ামী লীগ সাজার চেষ্টা করে।

ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামানকে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া না দেয়াই কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনি জানান, টাকার জন্য অন্ধ মহিলার কার্ড কেটে দিয়েছে এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না। অবশ্যই এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনী প্রতিনিধি




গাংনীর সাহারবাটি ইউনিয়নে মাতৃত্বভাতার আবেদন কারীদের যাচাই বাছাই সম্পন্ন

গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীণ ভাতা ভোগীদের নামের তালিকা চুড়ান্ত করতে গণশুনানী ও যাচাই বাছাই পর্ব অনুীষ্ঠত হয়েছে।

রবিবার সকাল ১০ টার সময় সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদ সভাকক্ষে ইউনিয়নের প্রান্তিক পর্যায়ের দুস্থ্য গর্ববতী ও প্রসাবকালীণ মায়েদের যাচাই বাছাই কাজের আনুষ্ঠানিকতা শরু হয়। স্বচ্ছ ও জবাদিহিতার জায়গা থেকে গরিব ও দুস্থ্যদের মাতৃত্ব ভাতার আওতায় আনার লক্ষ্যে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তি, ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে ৮০ জন আবেদনকারীর সাক্ষাতকার গ্রহন করেন ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক।

এসময় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বলেন, ইউনিয়নের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা নিরেপেক্ষতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করতেই ইউপি সদস্যদের দেয়া তালিকার যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যারা মাতৃত্বভাতার আওতাভুক্ত হওয়ার যোগ্য তাদেরকেই এ কার্ডের তালিকায় রাখা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সচিব আব্দুল মতিন, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ, গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজের হিসাব রক্ষণ অফিসার রবিউল ইসলামসহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ।

নিজস্ব প্রতিনিধি




গাংনীর সাহারবাটিতে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে র‌্যালী ও আলোচনা

‘সকলের হাত, পরিছন্ন থাক’-‘সকলের জন্য উন্নত স্যানিটেশন, নিশ্চিত হোক সুস্থ্য জীবন’ এ প্রতিপাদ্যে জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ২০১৯ ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার সকাল ১১ টার সময় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুকের নেতৃত্বে একটি র‌্যালী সাহারবকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে পরিষদ সভাকক্ষে অলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, এসকেএস ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট অফিসার পরিমল চন্দ্র। ইউপি সচিব আব্দুল মতিন, ইউপি সদস্য বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

মেহেরপুর প্রতিনিধি




চিৎলা ইউনিয়ানের কুলপালা থেকে রুইথনপুর, হাপানিয়া সড়কের বেহাল দশা

আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের কুলপালা গ্রামের মাঝপথ দিয়ে রুইথনপুর হাপানিয়া সড়ক। আর এই সড়কটিতে চিৎলা ইউনিয়নের সকল জনগণ যাওয়া আসা করে।
বছরের অধিকাংশ সময় এই রাস্তায় পানি জমে থাকে।

সাধারণ মানুষের চলাচল করতে সমস্যা হয়। বিশেষ করে কুলপালা গ্রামের মানুষের বেশি সমস্যা হচ্ছে। ওই রাস্তা দিয়ে মুসুল্লিরা নামাজে যাই। ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যায়।

গ্রামের মোহাম্মদ সোহেল শাহ, লাল্টু মিয়া, পটল মিয়া, মমিন মিয়া জানান, এই সড়ক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি মহোদয় তারা আশ্বস্ত করে। তারা বলেছিলেন যে রাস্তাটি পুণরায় নতুন ভাবে নির্মাণ করা হবে। কিন্তু সেটি খাতা-কলমে সীমাবদ্ধ । বাস্তবে তার কোনো কার্যক্রম আমরা দেখতে পাইনি।

প্রায় ৭-৮ বছর এভাবে সাধারণ জনগণ কষ্ট করে। মাঝে মাঝে ইঞ্জিনিয়ার এসে রাস্তার মাপ নিয়ে যায়। কিন্তু কোন কিছুই হয় না।

চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহ বাতেন মিয়া জানান, আমি এই বিষয়টি নিয়ে এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। এমপি মহোদয় জানিয়েছেন অতিশীঘ্রই সড়কটি হয়ে যাবে। আর এটাও সাধারণ জনগণের প্রাণের দাবি।

চিৎলা প্রতিনিধি




দর্শনায় ভারতগামী মালবাহী ট্রেন-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় ভারতগামী মালবাহী ট্রেন ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ ৭ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতরা সকলেই মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শহরেরর মহিলা কলেজ পাড়ার বাসিন্দা।

রবিবার রাতে দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট সীমান্তের রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আহতরা হলেন, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা শহরের বজলুর রহমানের স্ত্রী নাসিমা খাতুন (৪৫), মহিউদ্দীনের ছেলে মিজানুর রহমান (৪৫), শের আলীর ছেলে মইনুল ইসলাম (৪২), তার সহোদর আব্দুল হান্নান (৪৯), আব্দুল মালেকের ছেলে তরিকুল ইসলাম (২২), একই এলাকার ফাতেমা খাতুন (০৬) ও ইয়ামিন হোসেন (০৭)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাায়, রোববার সন্ধ্যায় দর্শনা চেকপোষ্ট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরা পাসপোর্টধারী যাত্রীরা মাইক্রো বাসযোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এ সময় জয়নয়ন চেকপোস্ট অতিক্রম করতে গেলে ভারতগামী একটি মালবাহী ট্রেন ও

মাইক্রোবাসের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মাইক্রোবাস দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গুরুতর আহত হয় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৭ জন মাইক্রোবাসের যাত্রী। পরে বিজিবি সদস্যরা তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করা স্থানীয় ও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শামীমা ইয়াসমিন জানান, আহতদের মধ্যে নাসিমা খাতুন, মইনুল ও হান্নানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ দিকে আমাদের গাংনী প্রতিনিধি জানান, মইনুল ইসলাম ষোলো টাকা ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য। তিনি সহ ৪ জন ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। গতকাল সন্ধ্যার পর দর্শনা চেক পোস্ট হয়ে দেশে ফিরেন। তাদের কে আনতে পরিবারের সদস্যরা মাইক্রো যোগে দর্শনা যায়। সেখান থেকে ফিরার পথে ভারতগামী মালবাহী ট্রেনের সাথে মাক্রোটি ধাক্কা খায়। এতে ৭ জন গুরুতর আহত হয়।

চুয়াডাঙ্গা ও দর্শনা প্রতিনিধি




মেহেরপুরে জেলা রাজস্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা রাজস্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনির সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইবাদত হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুদুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: মাইনুদ্দিন, রাকিবুল ইসলাম, মিথিলা দাস প্রমুখ। সরকারি রাজস্ব আদায়ের সকলকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

নিজস্ব প্রতিনিধি




মেহেরপুরের গোভীপুর থেকে সিগারেটের প্রচার সামগ্রী জব্দ

মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভীপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে সিগারেটের প্রচার সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।

রবিবার দুপুরের দিকে স্যানেটারী ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান কালে বিভিন্ন দোকানে তামাকজাত দ্রব্য সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন কার্যক্রম দেখা যায়।

এ সময় গোভীপুর গ্রামের ৫টি দোকান থেকে সিগারেট প্রচার সামগ্রী জব্দ এবং দোকান মালিকদের ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করে প্রচার চালানোর অভিযোগ সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিনিধি




মেহেরপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার বিকালে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মেহেরপুর জেলা এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং জেলা ও দায়রা জজ এস এম আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন পারভীন অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট মো: তৌফিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, ডা. অলোক কুমার দাস প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিনিধি




আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলা কাউন্সিল: বিতর্কিতদের কমিটিতে না রাখতে তৃণমূলে চিঠি

আওয়ামী লীগে চলমান শুদ্ধি অভিযানের ঢেউ লেগেছে তৃণমূলেও। এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা নেতাদের সতর্ক করে শনিবার থেকে চিঠি পাঠানো শুরু করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

চিঠিতে অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজ, বিতর্কিত, যারা দলে বলয় তৈরি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন ও ‘পদ বাণিজ্যে’র সঙ্গে জড়িত- এমন নেতাদের কোনো স্তরের কমিটিতে স্থান না দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানম-ির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় বিভিন্ন জায়গায় অনুপ্রবেশকারী, সুযোগসন্ধানী ও বিতর্কিতরা ঢুকে পড়েছে। এদের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়। অনেক সময় বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে তৃণমূল সম্মেলন গুলো হচ্ছে। এটাই মুখ্য সময় এদের বিষয়ে সতর্ক থাকার। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেন কোনোভাবেই বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীরা দলে জায়গা না পায়।

ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গতকাল রবাইজান যাওয়ার আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলে কাউন্সিলের (সম্মেলন) আয়োজন ও নতুন কমিটিতে বিতর্কিতদের না রাখার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে যান। এরপর সেদিনই বিষয়টি নিয়ে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে তৃণমূলে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার এসব চিঠিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। শনিবার দুপুর থেকে এসব চিঠি জেলা-উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ঠিকানা বরাবর কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠানো শুরু হয়।

আরও জানা গেছে, কিছুদিন আগে তৃণমূলে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব পর্যায়ের কাউন্সিল শেষ করে তা তালিকা আকারে কেন্দ্রে পাঠাতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কমিটি থেকেও বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এটি চলমান ‘শুদ্ধি’ অভিযানের অংশ বলে দলটির নীতিনির্ধারণী সূত্র থেকে বলা হয়েছে।

এদিকে শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে গতি বেড়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলনেও। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, উপজেলার কাউন্সিল শেষ করতে চান দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। ইতিমধ্যে মাঠেও নেমে পড়েছেন তারা। প্রায় প্রতিটি জেলা, মহানগর ও উপজেলায় কর্মিসভা এবং বর্ধিত সভা করেছেন। এরপরই শুরু হয়েছে জেলা-উপজেলা কাউন্সিল। প্রায় অর্ধশত উপজেলা-থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনও। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা বলছেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সব উপজেলা এবং ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে জেলা সম্মেলন শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

আওয়ামী লীগের আগের কমিটির মেয়াদে (২০১২ থেকে ২০১৬ সালে) ৫৮টি সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় সম্মেলনের পর ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে শুধু একটিতে (২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজার) সম্মেলন হয়েছিল। বাকি প্রায় সবগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। এর মধ্যে চাঁদপুর, কুমিল্লা দক্ষিণ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, শরীয়তপুর ও গাইবান্ধাসহ কিছু জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারিতে। আর বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, বাগেরহাট, কক্সবাজার ও মাগুরাসহ বেশকিছু জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর।

কিছু জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে তারও আগে। আর উপজেলা-থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছিল অনেক আগেই।
এরই মধ্যে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র থেকে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল করার ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ সব কমিটির সম্মেলন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনার পরই মাঠে নামে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা। কোন কমিটির মেয়াদ নেই, কতদিন আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে, কমিটি গঠনে কি কি সমস্যা রয়েছে- সেসব বিষয়ে সাংগঠনিক পরিকল্পনা তৈরি করেন তারা।

এরই অংশ হিসেবে প্রায় ৭ বছর পর শনিবার ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়াদোত্তীর্ণ বাকি সাংগঠনিক জেলাগুলোর মধ্যে ১৫ নভেম্বর কুমিল্লা উত্তর জেলা, ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, ১ ডিসেম্বর বরগুনা, ২ ডিসেম্বর পটুয়াখালী, ৩ ডিসেম্বর পিরোজপুর, ৫ ডিসেম্বর সিলেট জেলা, ৭ ডিসেম্বর বগুড়া জেলা ও বরিশাল জেলা, ৮ ডিসেম্বর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্যগুলোর তারিখও খুব শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, নেত্রীর (শেখ হাসিনার) বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তৃণমূলের সম্মেলন করার জন্য আমরা প্রায় প্রতিদিন আলাদাভাবে বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর করছি। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, সাংগঠনিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের যে ধারাবাহিক কার্যক্রম তা চলমান রয়েছে।

আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ সব জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে গঠন করা হবে। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় কমিটি আপডেট আছে। যেগুলোর মেয়াদ নেই, তা নিয়ে কাজ করছি। তবে কিছু জায়গায় সমস্যাও আছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।
খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, আমরা জেলা-উপজেলার সম্মেলনের কাজ শুরু করে দিয়েছি। আমার বিভাগে নভেম্বরের মধ্যে ৩৯টি উপজেলার সম্মেলন হবে।

এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ৪টির মতো জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মেয়াদ উত্তীর্ণ উপজেলার সম্মেলন হয়ে যাবে। জেলা সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে বান্দরবান জেলার সম্মেলন হবে। এরপর কক্সবাজার আছে। কাল (রোববার) চট্টগ্রামে প্রতিনিধি সভা আছে।

আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সবগুলোর সম্মেলন শেষ করতে পারব।

নিজস্ব প্রতিনিধি