সুস্থ মন, সুস্থ শরীর গড়তে খেলাধূলার বিকল্প নেই — এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন

বাংলাদেশ জাতীয় সাবেক ফুটবলারদের অংশ গ্রহনে মেহেরপুরের গাংনীতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৩ টার সময় গাংনীর ঐতিহ্যবাহী ভাটপাড়া কুঠি ফুটবল মাঠে প্রীতি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারায়নগঞ্জ জেলা রাইজিং সান ফুটবল একাদশ বনাম কুষ্টিয়া জেলা সোনালী অতীত ফুটবল একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ৭০-৮০ দশকের জাতীয় পর্যায়ের একাধিক খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গঠিত দুটি দল নিয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ খেলায় নারায়নগঞ্জ একাদশ ৩-২ গোলে মেহেরপুর জেলা সোনালী অতিত ক্লাবকে পরাজিত করে।

গাংনীর ভাটপাড়া নীলকুঠি উন্নয়ন সংঘের আয়োজনে কাথুলী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সুমন আহম্মেদ স্বপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কাথুলী ইউপি আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক জাবের আলীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন,মেহেরপুর-গাংনী আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা ও গাংনী উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন । বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন,গাংনী উপজেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ ওবাইদুর রহমান, গাংনী পৌর সভার মেয়র আশরাফুল ইসলাম,গাংনী উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান, মেহেরপুর জেলা পরিষদের সদস্য তৌহিদ মুর্শেদ অতুল, মজিরুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা মনিরুজ্জামান আতু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, খেলাধূলা দৈহিক কাঠামো সুদৃঢ় করতে এবং সুস্থ শরীর সুস্থ মন গড়তে খেলাধূলার বিকল্প নেই। খেলাধূলা মাদকাসক্তি, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে জীবনকে তথা দেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। খেলাধূলার সুন্দর পরিবেশ গড়ে তুলতে ইতোমধ্যেই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। গাংনীতেও শেখ রাসেল নামে একটি মিনি ষ্টেডিয়াম তৈরী করা হবে।

এসময় উপজেলা কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা,গাংনী থানা যুব মহিলালীগের সভাপতি শাহানা ইসলাম সাবেক ফুটবলার আমিরুল ইসলাম অল্ডাম প্রমুখ। এসময় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ছাড়াও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি,সুধী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

খেলা আমন্ত্রিত দল নারায়নগঞ্জ জেলা রাইজিং সান ফুটবল একাদশ বনাম কুষ্টিয়া জেলা সোনালী অতীত ফুটবল একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। নারায়নগঞ্জ জেলা ৩-২ গোলে স্বাগতিক কুষ্টিয়া জেলা একাদশকে হারিয়ে বিজয় লাভ করে। খেলাটি পরিচালনায় প্রধান রেফারী হিসাবে আব্বাস আলী, সহকারী রেফারী মাহবুবুর রহমান ও টুটুল। কুষ্টিয়া জেলা দলের কোচ হিসাবে ছিলেন,আমিরুল ইসলাম অল্ডাম। খেলায় বিজয়ী দলকে ক্রেষ্ট উপহার দেয়া হয়। মাঠে হাজার হাজার দর্শক খেলা উপভোগ করেন।

– নিজস্ব প্রতিনিধি




গাংনীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

মেহেরপুরের গাংনীতে পানিতে ডুবে সুমাইয়া খাতুন (৯) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর ২ টায় গাংনী উপজেলার আমতৈল মাথাভাঙ্গা নদীতে ডুবে তার মৃত্যু হয়। সুমায়ইয়া খাতুন আমতৈল গ্রামের ইকরামুল হকের মেয়ে ও স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী।

সুমায়ইয়া খাতুনের বাবা ইকরামুল হক জানান, প্রতিদিনের ন্যায় সুমাইয়া খাতুর বাড়ির পার্শে মাথাভাঙ্গা নদীতে গোসল করতে যায়। দীর্ঘ সময় সে বাড়িতে না ফেরায় তাকে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করা হয়। পরে নদীতে তার লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়দের সহায়তার তার লাশ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা জানান,সুমাইয়া খাতুন জীবিত রয়েছে এমন সন্দেহে তাকে পার্শবর্তী হারদী হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

বামুন্দী ফায়ার সার্ভিসের লিডার মইনুদ্দীন জানান,পানিতে ডুবে যাতে কারোর মৃত্যু না এজন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা মুলক আলোচনা করা হচ্ছে।
-নিজস্ব প্রতিনিধি




চুয়াডাঙ্গায় বিরল প্রজাতির মাছ

চুয়াডাঙ্গায় বিরল প্রজাতির একটি মাছ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার ছোটশলুয়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে মাছটি পাওয়া যায়। শনিবার জেলেদের জালে বিরল প্রজাতির মাছটি ধরা পড়ে।
ছোটশলুয়া গ্রামের জেলে মকবুল হোসেন জানান, মাছ ধরার জন্য তারা পুকুরে জাল ফেলার পর অন্য মাছের সাথে বিরল প্রজাতির একটি মাছ জালে দেখতে পাওয়া যায়। মাছটি এর আগে কখনো দেখেননি তারা। মাছটির গায়ের রং কালো, ডোরাকাটা। পরে মাছটিকে নিয়ে গ্রামের একটি দোকানে পানির ভিতরে রাখলে স্থানীয় অনেকে মাছটি দেখতে ভিড় করে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার জানান, তিনি এখনো ঘটনা শোনেননি। মাছটি দেখলে তিনি ওই মাছের ব্যাপারে জানাতে পারতেন।

-চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি




টুটুলের চোখের পানিতে ভিজল আইয়ুব বাচ্চুর কবরের মাটি

গত বছর ১৮ অক্টোবর  পৃথিবী থেকে বিদায় নেন ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি ও এলআরবির প্রধান আইয়ুব বাচ্চু।

গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম শহরের চৈতন্যগলি কবরস্থানে আইয়ুব বাচ্চুর কবর জিয়ারত করতে যান আরেক সংগীত তারকা এসআই টুটুল। এ সময় তার চোখ ছিল ভেজা।

এসআই টুটুল বলেন, কবর জিয়ারত করেছি। কিছু সময় চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকেছি। বসের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। আপনারা এসআই টুটুল হিসেবে যাকে দেখছেন, তা আমার এই বসের অবদান। বস ছাড়া আমি শূন্য।

আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে এসআই টুটুলের যোগাযোগ সেই ১৯৮৭ সাল থেকে। তার আজকের ব্যান্ড সংগীতের এই সফল পথচলা তারই সহযোগিতায়।

চট্টগ্রামে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘লাভেলো-কি আনন্দ উৎসব’। এসআই টুটুল জানান, অনুষ্ঠানে তিনি গান গাইবেন। নতুন প্রজন্মের কাছে সামনে আইয়ুব বাচ্চুকে তুলে ধরবেন। তার গান শোনাবেন। তার কথা তুলে ধরবেন।

এ ছাড়া সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জামালখানে আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এসআই টুটুল ছিলেন এলআরবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি এলআরবিতেই ছিলেন।

আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

বাচ্চুর সংগীতজগতে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে। তার কণ্ঠের প্রথম গান- ‘হারানো বিকেলের গল্প’। গানটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।

১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে তিনি সোলস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি তার জীবনে সফলতা বয়ে না আনলেও ১৯৮৮ সালে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’ তার জীবনে সফলতার দ্বার উন্মোচন করে।

১৯৯১ সালে বাচ্চু এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন। এই ব্যান্ড গঠনের পর প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। এটি বাংলাদেশের প্রথম দ্বৈত অ্যালবাম। এই অ্যালবামের ‘শেষ চিঠি কেন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যান্ড অ্যালবাম ‘সুখ’ ও ‘তবুও’ বের হয়।

১৯৯৫ সালে তিনি বের করেন তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামের একটি বলে অভিহিত করা হয় এটিকে।

একই বছর তার চতুর্থ ব্যান্ড অ্যালবাম ‘ঘুমন্ত শহরে’ প্রকাশিত হয়।

‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’ তার বাংলা ছবির অন্যতম একটি জনপ্রিয় গান। এটি তার গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান।

২০০৯ সালে তার একক অ্যালবাম বলিনি কখনও প্রকাশিত। ২০১১ সালে এলআরবি ব্যান্ড থেকে বের করেন ব্যান্ড অ্যালবাম যুদ্ধ।

ছয় বছর পর ২০১৫ সালে তার পরবর্তী একক অ্যালবাম জীবনের গল্প বাজারে আসে।

গিটারে তিনি সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বিখ্যাত। জিমি হেন্ড্রিক্স ও জো স্যাট্রিয়ানীর বাজনায় তিনি দারুণভাবে অনুপ্রাণিত। ঢাকার মগবাজারে ‘এবি কিচেন’ নামে তার নিজস্ব একটি মিউজিক স্টুডিও রয়েছে।

আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় গান ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতে যে কয়েকটি গান তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তার মধ্যে এই গানটি অন্যতম। লিখেছেন জনপ্রিয় গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী।

এ ছাড়া ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’ ‘সেই তুমি’, ‘সে তারা ভরা রাতে’, ‘সুখের পৃথিবী’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘আমি বারো মাস তোমার আশাই আছি’, ‘মেয়ে’, ‘আম্মাজান’।

২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর তিনি কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে চলে যান।.

সূত্রঃ  যুগান্তর




যে কারণে খুলে দেয়া হলো পাবজি

দক্ষিণ কোরিয়ার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ব্লু হোয়েলের তৈরি করা অনলাইন ভিডিও গেম প্লেয়ার আননোনস ব্যাটেলগ্রাউন্ডস (পাবজি) খুলে দেয়া হয়েছে।

গেমটিতে ক্ষতিকারক কোনো কিছু না পাওয়ায় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে গেমটির মাধ্যমে তরুণেরা সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ হতে পারে আশঙ্কায় গেমটি বন্ধ করা হয়েছিল। বন্ধের ফলে তরুণ-তরুণীদের কাছে জনপ্রিয় অনলাইন গেম পাবজি ইনস্টল করা যাচ্ছিল না।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘পাবজি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেটা আবার খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের ধারণা ছিল, এটি খুব ক্ষতিকর একটি বিষয়। পরে পর্যালোচনা করে দেখে ক্ষতিকারক এমন কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তাই খুলে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, রেডইট ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়েছে। কারণ, এখানে পর্নো উপাদান রয়েছে। বাকি সব কটি গেম খুলে দেয়া হয়েছে।

পাবজি গেম সহিংস মনোভাব তৈরির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মনোযোগ অন্য জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে-স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকদের কাছ থেকে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়ার পর গেমটি বাংলাদেশ থেকে খেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পাবজি গেমটি বাংলাদেশে খেলতে সমস্যা হওয়ার কথা জানিয়ে অনেকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত, নেপাল, চীনসহ কয়েকটি দেশে পাবজি গেমটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে অনলাইন গেম ‘ব্লু হোয়েল’ নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ।

সূত্রঃ যুগান্তর 




জেনিফার লরেন্সের আজ বিয়ে

অস্কারজয়ী মার্কিন অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্সের আজ বিয়ে। বর কুক ম্যারোনি নিউ ইয়র্কের একটি আর্ট গ্যালারির মালিক। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের নিউপোর্টে ১২৫ বছরের পুরনো একটি বাড়িতে হচ্ছে অনুষ্ঠান।

জানা গেছে, বিয়েতে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠ দেড় শ অতিথিকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে চলচ্চিত্রজগতের কারা আছেন সেটা জানা যায়নি। গেল বছরের জুনে ৩৪ বছর বয়সী ম্যারোনির সঙ্গে প্রেম হয় লরেন্সের।

অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, শিল্প-সাহিত্য ও সিনেমার প্রতি দুজনের আগ্রহের কারণেই দ্রুত তাঁদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের বয়স এক বছর হওয়ার আগেই এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুজনের বাগদান হয়। তখন এক সাক্ষাৎকারে ২৯ বছর বয়সী অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘আমার দেখা সেরা মানুষ ম্যারোনি।’ তবে এরপর বিয়ে নিয়ে লরেন্স বা ম্যারোনি কেউই আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেননি।

– ইন্টারনেট অবলম্বনে




প্রেমিক প্রেমিকা হিসেবে সাংবাদিকরাই সেরা !

সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেম করার বড় জ্বালা। যাদের স্বামী বা স্ত্রী সাংবাদিক, তাদের মুখে প্রায়শই এই কথা শোনা যায়। সাংবাদিক মাত্রই নাকি হামবড়িয়া ভাব থাকে। সবসময় জ্ঞান জাহির করার চেষ্টা করে।
তাই সাংবাদিকদের স্বামী বা স্ত্রী সবসময় অন্যকে বলেন, ‘আর যে পেশার মানুষকে বিয়ে কর, সাংবাদিককে নয়।’

সমীক্ষা বলছে, অন্য যে কোনো পেশার মানুষের চেয়ে সাংবাদিকরা প্রেমিক বা প্রেমিকা হিসেবে অনেক এগিয়ে। কারণ পেশার খাতিরে সাংবাদিকদের নানা সময় নানা জায়গায় যেতে হয়। তাই রাস্তাঘাট থাকে তাদের নখদর্পণে। কোনো জায়গার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে তাদের ঠোঁটস্থ থাকে উত্তর। তার উপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে কোথায় কী বলতে হবে, কোথায় কীভাবে থাকতে হবে, তা নিয়ে সম্যক ধারণা তৈরি হয়ে যায়। ফলে যেখানেই আপনি তাকে নিয়ে যান না কেন, অস্বস্তিতে তো পড়বেনই না, বরং সাংবাদিক সঙ্গী থাকলে আপনার মর্যাদাও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।

সাংবাদিকতার পেশায় সম্মান আছে। কিন্তু টাকা নেই। অন্য অনেক পেশার তুলনায় সাংবাদিকদের পারিশ্রমিক বেশ কম। স্রেফ নেশার তাগিদেই সংবাদ সন্ধানে ছুটে যায় তারা। টাকাটা তাদের কাছে বড় ব্যাপার নয়।

সাংসারিক জীবনেও এই মনোভাব কাজ করে। ফলে স্বামী বা স্ত্রীর আয় নিয়ে এদের কোনো মোহ থাকে না। এমন সঙ্গী পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার। তার উপর সাংবাদিকদের পেশার তাগিদে খাটতে হয় প্রচুর। ইচ্ছা-অনিচ্ছার উর্ধ্বে গিয়ে পরিস্থিতির চাপে পড়ে কঠোর পরিশ্রমী হয়ে ওঠে তারা।

সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি পরিশ্রমী হয়, তবে তো সবারই লাভ। তার উপর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক না গলানোর মতো সময় তাদের থাকে না।

সাংবাদিকরা চান বা না চান, অনেক রকম কাজ তাদের শিখতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো সাংসারিক জীবনেও উপকারে লাগে। এছাড়া পেশার খাতিরে তাদের পড়াশোনাও করতে হয় প্রচুর। তাই যে কোনো বিষয়ের উপর মোটামুটি জ্ঞান তাদের থাকে।

এখানে সুবিধা দু’টি। এক তো আপনি কোনো বিষয় না জানলে সঙ্গীর থেকে জেনে নিতে পারবেন। কোথায় কখন কী কাজে লেগে যায়, বলা তো যায় না। আর দ্বিতীয়ত, আপনি কোনো বিষয়ে আলোচনা করার মতো লোক পেয়ে যাবেন।

এছাড়া পেশার খাতিরেই বিশ্বাসী হন সাংবাদিকরা। সংবাদ উৎস সবসময় গোপন রাখতে হয় তাদের। এটা ব্যক্তিগত জীবনেও প্রভাব ফেলে বেশি।

– এমপি ডেস্ক




দশ বছরে বিএসএফের গুলিতে ৩ শতাধিক বাংলাদেশি নিহত

গত দশ বছরে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে ৩২২ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৮ জন।
গত ১১ জুলাই একাদশ জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে বিএসএফের হাতে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৯৪জন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য এম হারুনুর রশিদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ২০০৯ সালে অন্তত ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে মোট ৪৮ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন ও ২০১৮ সালে ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৮ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীর চারাঘাটে এক ভারতীয় জেলেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টায় বিএসএফ-বিজিবির গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে বিএসএফের এক জওয়ান নিহত হন। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি ভুল-বোঝাবুঝি কারণে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, সীমান্তে শান্তি রক্ষায় দুই দেশই তৎপর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

নিজস্ব প্রতিনিধি




যুবলীগের কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন কে?

চলমান শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ার পর ক্যাসিনোকান্ডে সুবিধাভোগী হিসেবে নাম আসে যুবলীগের প্রতাপশালী চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এরপর থেকে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি। প্রায় এক মাস ধরে যাচ্ছেন না যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। যাচ্ছেন না নিজের প্রতিষ্ঠিত যুব গবেষণা কেন্দ্রেও।
এদিকে যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৩ নভেম্বর এই কংগ্রেস হবে। কংগ্রেস সামনে রেখে যুবলীগে চাঙা ভাব লক্ষ্য করা গেলেও সংগঠনটির চেয়ারম্যান আড়ালে দিন যাপন করছেন। নেতাকর্মীরা তার দেখা পাচ্ছেন না। ফোনেও তাকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতাকর্মীরা।
সংগঠনের চেয়ারম্যানকে ছাড়াই হয়েছে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম বৈঠক। ওই বৈঠকে তার অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
কংগ্রেসের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আনতে রোববার গণভবনে যাচ্ছেন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা। এই বৈঠকে থাকছেন না ওমর ফারুক চৌধুরী। তাকে গণভবনে যেতে বারণ করা হয়েছে বলে যুবলীগের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এমতাবস্থায় যুবলীগের আসন্ন কংগ্রেসে কে সভাপতিত্ব করবেন এই প্রশ্ন এখন নেতাদের মুখে মুখে।
৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরীকে বাদ দিয়ে সংগঠনের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতাকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার গুঞ্জনও শোনা যাচ্চে। সেক্ষেত্রে ওই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই ২৩ নভেম্বরের কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন।
জানা গেছে, রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে ওমর ফারুক চৌধুরীকে বাদ দিয়ে প্রেসিডিয়ামের সিনিয়র কোনো সদস্যকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব দেবেন সংগঠনটির নেতারা।
পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় কংগ্রেসের প্রস্তুতি কমিটি গঠনসহ সার্বিক আয়োজন, যদি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কাউকে না করা হয়, সেক্ষেত্রে কংগ্রেসে কে সভাপতিত্ব করবেন, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের সম্মেলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা চাইবেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কার্যালয়ে যুবলীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এসব বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানায়, জাতীয় সম্মেলনকে (কংগ্রেস) সামনে রেখে রোববার বিকাল ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে (গণভবনে) যুবলীগ নেতাদের ডাকা হয়েছে। এ সাক্ষাতের বিষয়ে আলোচনা করতেই মূলত বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মো. আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ার নিখিল গুহ, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী বৃহস্পতিবার বিকালে বলেন, এবারের জাতীয় কংগ্রেসের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমরা সার্বিক বিষয়ে তার দিকনির্দেশনা চাইব। তিনি যেভাবে দিকনির্দেশনা দেবেন সেই নির্দেশনা মেনেই পরবর্তী সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কোন নেতারা যাবেন এবং কোন কোন বিষয়ে দিকনির্দেশনা চাওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৃহস্পতিবার বৈঠকে। হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন- এ মর্মে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তবে যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের বাইরে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যদেরও নেয়া যায় কিনা- সে ব্যাপারেও সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রস্তাব এসেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, যুবলীগে যাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ছাড়াই কংগ্রেসের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সংগঠনের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। এমনকি জাতীয় কংগ্রেস আয়োজনের সব কার্যক্রম থেকেও তাদের দূরে রাখার বিষয়ে আলোচনা হয় গতকালের বৈঠকে।
রাজধানীতে মাদক-দুর্নীতি-টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পরও ভোকাল ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। সভা-সমাবেশে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন। শুরুতেই ‘শুদ্ধি অভিযান’ নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেয়ায় যুবলীগ চেয়ারম্যান সমালোচনার মুখে পড়েন। অবশ্য বাস্তবতা বুঝতে পেরে দ্রæত নিজেই অবস্থান বদল করেন। অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে ক্যাসিনোর পেছনে যুবলীগের অনেকে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনের সভাপতি হিসেবে এটি তার ব্যর্থতা বলে তিনি মনে করেন।
১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ওরফে ক্যাসিনো খালেদ গ্রেফতার হওয়ার পর ধাক্কা খান ওমর ফারুক। এর পর আরেক যুবলীগ নেতা জিকে শামীম গ্রেফতার হন। তাদের জবানবন্দি থেকে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।
পরে দিন পনেরো রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও যুবলীগের দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান। এরা দুজনই ওমর ফারুকের আশীর্বাদপুষ্ট। তাকে রাজনৈতিক গুরু মানে এই দুজনই। ওমর ফারুক চূড়ান্ত বেকায়দায় পড়েন ক্যাসিনো সম্রাট গ্রেফতার হওয়ার পর।
যুবলীগের প্রভাবশালী নেতারা ওমর ফারুকের আশকারায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার যুবলীগ নেতারা ক্যাসিনোর অবৈধ আয় থেকে ওমর ফারুককে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক হিসাব তলব করা হয় ওমর ফারুকের। বিদেশ যেতে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। এর পর থেকে অনেকটাই গৃহবন্দি যুবলীগ চেয়ারম্যান। বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। সাড়া দিচ্ছেন না ফোনে। রয়েছেন গ্রেফতার আতঙ্কেও। এই আতঙ্ক নিয়েই সময় কাটছে তার।
সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর উত্তরায় যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের একটি ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলনে দেখা গিয়েছিল ওমর ফারুক চৌধুরীকে। এর পর থেকে কেটে গেছে ২৪ দিন। এই সময়ে তার দেখা পাননি নেতাকর্মীরা। শুক্রবার যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডিয়াম সভায়ও হাজির হননি ওমর ফারুক চৌধুরী। কাউন্সিলের আগে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে তার অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। যুবলীগের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ভার দেয়া হয়। শোনা যাচ্ছে, যুবলীগের আসন্ন কংগ্রেসে তাকে সভাপতিত্ব করতে দেয়া হবে না।
গত বুধবার যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৩ নভেম্বর যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেসের তারিখ ঘোষণার পর চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। পদপ্রত্যাশীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। নেতাকর্মীদের অনেকে ধারণা করেছিলেন, ওমর ফারুক চৌধুরী সংগঠনের কার্যালয়ে আসবেন। তবে গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অসংখ্য নেতাকর্মী অপেক্ষা করেও তার দেখা পাননি। ফোনেও তাকে পাচ্ছেন না তারা।
ব্যাংক হিসাব তলব ও অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারির পর ওমর ফারুক চৌধুরী প্রকাশ্যে আসছেন না। ধানমÐির ৫ নম্বর সড়কে তার প্রতিষ্ঠিত যুব গবেষণাকেন্দ্রের কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ধানমÐির ৮/এ সড়কে তার বাসায় অবস্থান করছেন।
ওমর ফারুক চৌধুরী যে বাসায় থাকেন, ‘ইস্টার্ন হেরিটেজ’ নামের সেই বাসার দারোয়ান মেহেদি বলেন, গণমাধ্যমকর্মী বা দলীয় নেতাকর্মী কারোরই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি নেই। ওমর ফারুক চৌধুরী বাসায় আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি তো আমি বলতে পারব না।’
এদিকে ওই বাসার আশপাশের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে সেখানে প্রায়ই নেতাকর্মীদের লাইন লেগে থাকত। অভিযান শুরুর পর প্রথম দিকে অনেক নেতাকর্মী যুবলীগ চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সেখানে গেছেন। কিন্তু কয়েক দিন হলো সেখানে কারও দেখা মিলছে না।
তামাকের বিকল্প ‘টেন্ডু পাতা’ বিক্রির মাধ্যমে তার পেশাগত জীবন শুরু হয়। বিড়ি শ্রমিক লীগ, জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন যুব সংহতির রাজনীতি করে আসা ওমর ফারুক ২০০৯ সালে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। ২০১২ সালে যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটি নয়, সব বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই শেষ কথা হয়ে দাঁড়ায়। তার দাপটে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারাও টু শব্দটি পর্যন্ত করার সাহস পাননি।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিজের অনুগতদের বসিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। ঢাকা মহানগর ও দেশব্যাপী জেলা কমিটিগুলোও হয়েছেন তার পকেটের লোক দিয়ে।
নিজেকে তরুণ ভাবাপন্ন ৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরী যুবলীগের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই একক ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। শুরুতে সাবেক নেতাদের পরামর্শ ছাড়াই একটি ঢাউস কমিটি গঠন করেন তিনি। অভিযোগ আছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি অনেক নেতাকে কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পদভেদে ১০ লাখ থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। ফ্রিডম পার্টি ও যুবদলের অনেকে টাকার বিনিময়ে ঠাঁই পেয়েছেন যুবলীগে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, বিগত সাত বছরে তারা চেয়ারম্যানের ভয়ে তটস্থ ছিলেন। মুখ বুজে সব অপকর্ম সহ্য করেছেন। সংগঠনে সব সিদ্ধান্ত তিনি এককভাবে নিয়েছেন। আমাদের শুধু সম্মতি দিতে হয়েছে। তার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দিলেই তাৎক্ষণিক বহিষ্কার, অফিসে আসতে বারণ পর্যন্ত করা হয়েছে। তারা বলেন, তার সব অপকর্ম জায়েজ করার মেশিন ছিল যুব জাগরণ প্রকাশনা। এখান থেকে নানা বই ও প্রকাশনা বের করে সবার কাছে ভালো সাজার চেষ্টা করতেন। পুরো সাত বছরে যুবলীগ বলতে আমরা শুধু তাকেই বুঝতাম।
প্রসঙ্গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের বিষয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, যুবলীগের এক নেতা অস্ত্র উঁচিয়ে চলে। আরেকজন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়।
এর পর গণমাধ্যমে যুবলীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতায় ঢাকার ৬০টি জায়গায় ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশ হয়। ১৮ নভেম্বর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস, ওয়ান্ডারার্স এবং গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, বিপুল পরিমাণ মদ ও ৪০ লাখের বেশি টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ওই দিনই যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি ইয়াংমেনস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
পাশের ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকেও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার। এর পর ধানমÐির কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালিয়েও ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পায় র‌্যাব। অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ক্লাবের সভাপতি কৃষক লীগের সহসভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে।
এর মধ্যে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বিসিবির পরিচালক লোকমান ভূঁইয়াকে।
দুবাই থেকে গ্রেফতার করা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে। পরে গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানকে ‘শুদ্ধি অভিযান’ নাম দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সন্ত্রাস, চাঁদবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের ভাসানচরে পাঠানো হবে।
ক্যাসিনো ব্যবসায় যুবলীগ নেতাদের মদদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তলব করা হয়েছে ব্যাংক হিসাব।

নিজস্ব প্রতিনিধি




আফগানিস্তানে মসজিদে হামলা, নিহত অন্তত ৬২

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নানগারহারে জুমার নামাজ চলাকালীন মসজিদে দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ৬২ মুসল্লি নিহত এবং আরও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র আতাউল্লাহ খোগানি এ হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নানগারহার প্রদেশের হাসকা মায়েনা জেলার জাও দারা নামক এলকায় মসজিদটি অবস্থিত। গভর্নরের মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মসজিদটির ভেতরে বিস্ফোরক পুতে এবং লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। যখন মুসল্লিরা সবাই নামাজ আদায় করছিলেন তখন সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যারা আহত হয়েছেন তাদের অনেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

নাঙ্গারহার প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সোহরাব কাদেরি জানিয়েছেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিস্ফোরণের ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ এখনও বের করছে উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয়রা। গভর্নরের মুখপাত্র আতাউল্লাহ জানান, বিস্ফোরণে মসজিদের ছাদ ধসে পড়েছে।

দেশটিতে নিয়মিত হামলা চালানো আফগান তালেবান মসজিদে হামলার দায় স্বীকার করেনি। এছাড়া কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকী টুইট বার্তায় এ হামলায় শোক প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।