
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহেনা পারভীনকে হঠাৎ বদলির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
বদলির আদেশকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে উল্লেখ করে গতকাল বুধবার বিকেলে আলমডাঙ্গার হাইরোড আল-তায়েবার মোড়ে মানববন্ধন করেন তারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে রেহেনা পারভীনকে বদলি করা হয়।
মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা শতাধিক কৃষক অংশ নেন। তাদের অভিযোগ, রেহেনা পারভীন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কৃষি খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। তিনি নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের খোঁজখবর নিয়েছেন এবং ভেজাল বীজ ও সার মজুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
ডাউকি ইউনিয়নের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা যতদিন মনে করতে পারি, কোনো কৃষি কর্মকর্তা মাঠে এসে এভাবে কৃষকের পাশে ছিলেন না। তিনি না থাকলে আবারও দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
জামজামি ইউনিয়নের কৃষক লাল মিয়া বলেন, রেহেনা পারভীন সৎ ও ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন। এই কারণেই প্রভাবশালী একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।
কৃষকদের দাবি, রেহেনা পারভীন মাঠপর্যায়ের কৃষকদের কাছে ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তার উপস্থিতিতেই সার পাচার ও মজুত বন্ধ হয়েছিল। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তার বদলির জন্য চাপ দিয়েছে।
মানববন্ধন শেষে কৃষকদের একটি প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদী ইসলামের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। তিনি সমকালকে বলেন, কৃষকদের দাবি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেব।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহেনা পারভীন বলেন, আমি সব সময় চেষ্টা করেছি কৃষকদের স্বার্থে কাজ করার। মাঠে থেকে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোই আমার প্রধান দায়িত্ব ছিল। বদলির বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে কৃষকদের ভালোবাসা আমার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রেহেনা পারভীন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আলমডাঙ্গায় কৃষি উৎপাদনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। সার ডিলার পয়েন্টগুলো নিয়মিত মনিটরিং করায় ভেজাল সার ও মজুতের প্রবণতা অনেকটাই কমে যায়। এ কারণে একশ্রেণির ব্যবসায়ী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
কৃষকদের অভিযোগ, মূলত এই চাপ থেকেই তাকে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।