
হিন্দু ধর্মীয় গুরু নিগমানন্দ সরস্বতীর ১৪৬ তম বার্ষিক সার্বভৌম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে তিনদিন ব্যাপি আয়োজিত নানা কর্মসূচিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ভক্ত অনুরাগীদের পদচারনায় এখন মুখরিত তার জন্মতিথি মেহেরপুরের কুতুবপুরে। সকাল থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ ও শিশুরা আসছেন।
তন্ত্র, জ্ঞান, বেদান্ত, যোগ, ভক্তি বা প্রেম দর্শন নিয়ে শ্রীচৈতন্য ও শংকরের দর্শনের সমন্বয়ে একটি নতুন ধর্মমত প্রচার করেন। স্বামী নিগমানন্দ পরমহংস” যিনি “স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংস” নামেও পরিচিত ছিলেন। আধ্যাতিক এই ধর্মগুরুর ভক্ত অনুরাগী রয়েছে ভারত, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলংকা, আস্ট্রেলিয়া আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন হাজার হাজার নারী-পুরুষ। সাঁথে এনেছেন শিশুদেরকেও।
ভক্তরা জানান, এহকালের সব কিছুই বিলিয়ে দিয়েছি গুরুর চরনে। ভালমন্দ সবই তার কৃপা। এখানে আসতে পেরে নিজেকে পাপ মুক্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন ভক্তরা।
রাজশাহী থেকে এসেছেন ডাক্তার সুকর্ণ ঘোষ,তিনি বলেন অনেক ছোট বেলা থেকে তিনি কুতুবপুর আশ্রমে আসেন পরিবারের সাথে। মনের অজান্তে সেই থেকেই গুরুর পায়ে নিজেকে সোপর্দ করেছি। সারা জীবন প্রতি বছরেই এখানে এসে গুরুকৃপা নিতে চাই।
যশোরের কলেজ শিক্ষার্থী পুষ্পিতা ঘোষ জানান, আধ্যাত্মিক ও মনস্তাত্ত্বিক ইশ্বরের নৈকট্য প্রাপ্ত ছিলেন শ্রী নিগামানন্দ। মেহেরপুরের কুতুবপুর ছিল তার বসতভিটা। এখানে আসতে পেরে নিজেকে আত্নশুদ্ধির সুযোগ হয়েছে। তবে নিগামানন্দের বসতভিটার জমিজমা এখন বেদখল। সেই সমস্ত জমিজমায় অনেক ইতিহাস ও গুরুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সরকারের কাছে সেগুলি উদ্ধারের দাবী জানান এই অনুসারী।
আশ্রমের ট্রাস্টি সদস্য নব কুমার জানান, প্রতি বছর এখানে দেশের ৬৪ জেলা থেকে অনুসারীরা আসেন। বিদেশ থেকেও আসেন অনেকে। প্রায় বিশ হাজার অনুসারীরা এখানে জমায়েত হয়ে প্রার্থনায় মিলিত হন। অনেক সময় নিরাপত্তা নিয়ে শংকা থাকে। অনুসারীদের নিরাপত্তা খাদ্য সরবারাহে সরকারের উদ্যোগ নেয়ার দাবী করেন তিনি।
তিনদিন ব্যাপি এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন, সমগ্র ভারত বর্ষের নিগামনন্দ ট্রাস্টের সভাপতি ভারতের আসাম রাজ্যের সভাপতি স্বামী দিগানন্দ স্বরসতি। তিনি বলেন, ধর্মের লক্ষ এক, মানুষের প্রেম এক, ইশ্বর এক, আল্লাহ এক। শুধুমাত্র পাওয়া ও চাওয়ার রাস্তা ভিন্ন। আমরা সবাই একই পথের যাত্রী।