
কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে।
মামলায় আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মাহবুব উল আলম হানিফের পাশাপাশি তাঁর চাচাতো ভাই সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, সহসভাপতি কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এ্যাড. অনুপ নন্দী, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকা ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আবদুল্লাহ নামের এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে মাহবুব উল আলম হানিফকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ১০ থেকে ২০ জনকে।
গত রবিবার রাতে হওয়া হত্যা মামলায় মোট ৭৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা হিসেবে আসামি করা হয়েছে আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে।
নিহত ইউসুফ শেখের (৬৬) মেয়ে মোছা. সীমা বাদী হয়ে গতকাল দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলাটি করেন।
ইউসুফ শেখ কুষ্টিয়া শহরের চর থানাপাড়া এলাকার মৃত এদাত আলীর ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে চাকরি করতেন। ৫ আগস্ট বিকেলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ইউসুফ শেখ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কুষ্টিয়া শহরের ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনের নূর টেইলার্স গলির ভেতরে পৌঁছালে এজাহারনামীয় আসামিরা তাঁকে দেখে ধাওয়া করেন। এরপর হানিফ ও তাঁর চাচাতো ভাই আতাউর রহমানের নির্দেশে আসামিরা তাঁকে গুলি করেন। অন্য আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।