
একাধিক অভিযোগে কোটচাঁদপুর সরকারি খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল, গণস্বাক্ষর, জুতা নিক্ষেপসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তারা এসব কর্মসূচি পালন করেন।
জানা যায়, কোটচাঁদপুর সরকারি খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. শেখ মো. আমানুল্যাহ। তিনি যোগদানের পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষক, কর্মচারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগ বারবার তাঁকে অবহিত করা হলেও তিনি কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেননি। এ কারণে বেশ কিছুদিন ধরে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কলেজ খোলার সঙ্গে সঙ্গে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। পাশাপাশি গণস্বাক্ষর গ্রহণ, অধ্যক্ষের নামের ওপর জুতা নিক্ষেপসহ একাধিক কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় কলেজের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কথা শোনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়ে দুই দিনের সময় চান।
কলেজের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র হাবিবুর রহমান বলেন, অধ্যক্ষ আমানুল্যাহ যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছেন। তিনি ছিলেন শাহবাগী ব্লগার এ নিয়ে তিনি একটি বইও লিখে প্রকাশ করেছেন। তিনি কলেজের ছাত্রী ও ম্যাডামদের বোরখা নিয়ে কটূক্তি করেন, এমনকি নবী, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়েও মন্তব্য করেন। এসব বিষয়ে তাঁকে বারবার জানানো হলেও তিনি আচরণ পরিবর্তন করেননি। তাই আজকের আন্দোলন।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। দুই দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। দাবিপূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।
এসময় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী আলী হাসান, ফায়েজ আহম্মেদ, ইমন হোসেনসহ প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল অধ্যক্ষকে অপসারণের প্ল্যাকার্ড, মুখে ছিল স্লোগান। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাস।
কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অধ্যক্ষ বিবাহ প্রথায় বিশ্বাসী নন, বহু কামিতায় বিশ্বাসী এ নিয়ে প্রতিবাদ করেও কোনো ফল হয়নি। তিনি ছাত্রী ও ম্যাডামদের বোরখা নিয়ে কটূক্তি করতেন এবং বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়েও মন্তব্য করতেন। শাহবাগ আন্দোলনের সময় তিনি ব্লগার ছিলেন এবং এ বিষয়ে একটি বই লিখে ২০২৪ সালে প্রকাশ করেন। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ ছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ আজকের বিক্ষোভ।
তিনি আরও বলেন, অধ্যক্ষসহ তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের অপসারণের দাবিও শিক্ষার্থীরা তুলেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুই দিনের সময় নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অধ্যক্ষ শেখ মো. আমানুল্যাহর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাসউদ বলেন, আমি আজই যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখছি কী ঘটেছে।


