
আলমডাঙ্গা মীর শামসুজ্জোহা ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্টাতা দানবীর, শিক্ষানুরাগী, চাটার্ড একাউনটেন্ট মীর শামসুজ্জোহার ২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকীর দিনেও তার কৃতিত্ত্বময় জীবন আজও স্বরণীয়।
প্রাথমিক পড়াশোনা হারদী প্রাইমারি স্কুলে। পরে ভর্তি হন আলমডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে। পায়ে হেঁটে ৪ মাইল দূরে অবস্থিত বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে মেট্রিকুলেশন শেষে খুলনা আযম খাঁন কমার্স কলেজে ভর্তি হন। খুলনা পিপলস জুট মিলে চাকুরী করে ও নাইট কলেজে পড়াশোনা করে সেখান থেকে আই, কম পাস করে পরবর্তীতে ঢাকা জগন্নাথ কলেজ হতে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে অধ্যয়ন করেন চাটার্ড এ্যাকাউন্টেন্সি (সিএ)। সিএ পাস করার পর পাড়ি জমান লন্ডনে বড় ভাই প্রবাসী ডাঃ সামসুল আলমের নিকট। সেখানে গড়ে তোলেন বর্তমানে বিশ্বের বহুদেশে বিস্তৃত ও বিখ্যাত “জোহা এন্ড কোম্পানি” চাটার্ড এ্যাকাউন্ট অডিট ফার্ম।
জোহা সাহেবের কর্মজীবন লন্ডনে হলেও জন্মভূমিকে কোনোদিন ভুলতে পারেননি। তিনি নিজ এলাকা ও দেশের জন্য যা করেছেন, তা অনন্য। এম.এস হুদা ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজি, এম.এস জোহা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, এম.এস জোহা কৃষি কলেজ ও এম.এস জোহা বিজনেন্স ম্যানেজমেন্ট কলেজ তথা নিপ্পন জোহা এডুকেশন কমপ্লেক্স। প্রতিষ্ঠা করেছেন মীর শাসসুল ইসলাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, এছাড়া তার ভাবি নার্গিস ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠিত নার্গিস ইসলাম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।
ল্যাবরেটরীতে গ্যাস বিস্ফোরণে বড় ছেলে নিপ্পন জোহা মাত্র ছয় বছর বয়সে মৃত্যু ঘটে। নিপ্পন জোহার নামে আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে একটি লাইব্রেরি ভবন নির্মাণ করে দেন জোহা সাহেব। যার নামে এই ক্যাম্পাসে নিপ্পন জোহা টেকনিক্যাল স্কুল, এস.এস.সি (ভোক) প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর পিতার নামে হারদী গ্রামে মীর সামসুদ্দীন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।
এছাড়াও বর্তমানে আলমডাঙ্গায় পাঁচ ভাই ও দুই বোন। বড়ভাই প্রয়াত ডাঃ মীর শামসুল আলম, এম.আর.সি.পি লন্ডনে বসবাস ও কর্মস্থল ছিল। মেজ ভাই মরহুম মীর সামসুল হুদা ছিলেন সাবেক ফরেষ্ট রেঞ্জার। সেজ স্বয়ং সুবিদিত শিক্ষানুরাগী ও দানবীর মীর শামসুজ্জ্বোহা, ৪র্থ ভাই মরহুম মীর শামসুল আজম, এম.এ (অর্থনীতি) ছিলেন জোহা এন্ড ব্রাদার্স’র এম.ডি আর ছোট ভাই মরহুম মীর শামসুল ইসলাম ছিলেন অতিরিক্ত কর কমিশনার।
স্ত্রী হামিদা জোহা লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন ও একমাত্র ছেলে ডাঃ ময়েন জোহা লন্ডনে ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত আছেন। আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অংক শিক্ষক শ্রদ্ধেয় মরহুম আবুল হোসেন ও আমেরিকার বিখ্যাত চেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোনায়েম চৌধুরী তাঁর ক্লাসমেট ছিলেন। ২০০২ সালের ২২ শে ডিসেম্বর নিয়তির অমোঘ বিধানে লন্ডনে দানবীর এই মহাপুরুষের মৃত্যু হয়।
গতকাল তার ২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে হারদী এমএস জোহা কলেজে তার জন্য দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজের হলরুমের সামনে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এম এস জোহা কলেজের অধ্যক্ষ নিয়ামত আলী।সহকারি অধ্যাপক একে এম ফারুকের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন, সহকারি অধ্যাপক, মীর শামসুজ্জোহা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান, সহকারি অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সহকারি অধ্যাপক জেসমিন আরা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদস্য আব্দুস সাত্ত্বার খান ‘শামসুদ্দিন আহমেদ মধ্যমিক, বিদ্যালয় অব: প্রধান শিক্ষক, ‘মোঃ মহিনুল হক, হিতৈষী সদস্য, মোঃ আব্দুল হান্নান, বিদ্যোৎসাহী সদস্য, মোঃ আরব আলী, অভিভাবক সদস্য মহির উদ্দিন, মোঃ আব্দুস সাত্তার, শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, সমাজ সেবক মহিনুল ইসলাম, মোঃ শহিদুল ইসলাম খান। দোয়া পরিচালনা করেন, সহকারি অধ্যাপক আব্দুর রহমান।


