
খুলনায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান ও শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় সংগঠক মোস্তাফিজুর রহমান শিকদার আহত হওয়ার পর থেকে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি)’র পক্ষ থেকে ব্যাটালিয়নের আওতাধীন মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ঘটনার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ মেহেরপুর সীমান্তের পিলার ৭৫/০ থেকে ১৩১/৮-আর পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি কার্যক্রম শুরু করেছে।
সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল বৃদ্ধি, গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার এবং অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, যেসব সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেসব এলাকা বিশেষভাবে সিলগালা করা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে যেন কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা অপরাধী পালিয়ে যেতে না পারে, সে লক্ষ্যে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মুজিবনগর, নাজিরাকোনা, দারিয়াপুর, বুড়িপোতা, ইছাখালী, ঝাঝা, হরিরামপুর, শোলমারিসহ বিভিন্ন বিওপি এলাকায় অতিরিক্ত টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তসংলগ্ন অভ্যন্তরীণ এলাকায় যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ওপর তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।
সীমান্ত এলাকা ছাড়াও গাংনী উপজেলা শহরে, মুজিবনগরের কেদারগঞ্জ ও মেহেরপুর শহরে বিজিবির বিভিন্ন দল টহল ও তল্লাশি করতে দেখা গেছে। ঘটনাটি রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান জোরদার করেছে।
খুলনায় এনসিপি নেতা মোতালেব হোসেনকে (৪২) গুলি করে আহত করার ঘটনায়- মেহেরপুরের গাংনীর সীমান্ত এলাকায় নজরদারি, পাহারা ও টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
এদিকে ৪৭ বিজিবির পক্ষ থেকেও সোমবার বিকাল থেকে গাংনী সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় পাহারা ও টহল জোরদার করা হয়। ৪৭ বিজিবি’র পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ ডিসেম্বর খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির শ্রমিক উইং এর খুলনা বিভাগীয় আহবায়ক ও এনসিপি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোঃ মোতালেব সিকদারকে (৪২) দুর্বৃত্তরা গুলি করে আহত করে। এঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতকারীকে আটক এবং সীমান্ত অতিক্রম রোধকল্পে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী গাংনী বিভিন্ন সীমান্তে নিচ্ছিদ্র নজরদারী ও পাহারা জোরদার করা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) এর অধীনস্থ বিওপিসমূহ কর্তৃক দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এবং সীমান্তের আশেপাশের এলাকায় ৮টি চেকপোষ্ট স্থাপনের মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীকে আটকের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সীমান্তে দ্বিগুন টহল তৎপরতা বৃদ্ধি, চেকপোষ্টে তল্লাশি কার্যক্রমের মাধ্যমে দৃষ্কৃতকারী, অপরাধীর সীমান্ত অতিক্রম রোধকল্পে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় দুর্বৃত্তরা তার মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পরবর্তীতে চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শেখ হাসিনা সিটি মেডিকেল সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।


