
এশিয়া কাপের ধুলোমাখা স্মৃতি পেছনে ফেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ্র মরুর বুকে আজ এক নতুন লড়াইয়ে নামছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শারজাহ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দু’দল।
এশিয়া কাপে ফাইনালের খুব কাছে গিয়েও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বাংলাদেশের, অন্যদিকে আফগানিস্তান সুপার ফোরেই উঠতে পারেনি। তাই এই সিরিজটি উভয় দলের জন্যই ঘুরে দাঁড়ানোর এবং নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের এক দারুণ সুযোগ।
আর এই লড়াইয়ের ভাগ্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে শারজার ধীরগতির ঘূর্ণি সহায়ক উইকেট। তবে সিরিজ শুরুর আগেই বাংলাদেশ শিবিরে বড় দুঃসংবাদ।
দলের নিয়মিত অধিনায়ক এবং ব্যাটিং ভরসা লিটন কুমার দাস এশিয়া কাপে পাওয়া পিঠের চোটের কারণে পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে এশিয়া কাপের শেষ দুই ম্যাচের মতো এই সিরিজেও দলকে নেতৃত্ব দেবেন তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জাকের আলী অনিক।
লিটনের বদলি হিসেবে দলে ডাক পাওয়া সৌম্য সরকার এখনো সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা না পাওয়ায় প্রথম ম্যাচে মাঠে নামতে পারছেন না। আফগান স্পিনারদের বিপক্ষে লিটনের যে অভিজ্ঞতা তার অভাব বাংলাদেশ কীভাবে পূরণ করে, সেদিকেই থাকবে সবার দৃষ্টি। শারজার পিচের চরিত্র অনুযায়ী, এই ম্যাচে স্পিনাররাই ছড়ি ঘোরাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যে দল স্পিন সবচেয়ে ভালোভাবে সামলে পাওয়ারপ্লের ওভারগুলোকে কাজে লাগাতে পারবে, তারাই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেবে। ব্যাটসম্যানদের ধৈর্য এবং আগ্রাসনের এক দারুণ মিশ্রণ ঘটাতে হবে। সঠিক সময়ে আক্রমণ করার পাশাপাশি মাঝের ওভারগুলোর জন্য উইকেট বাঁচিয়ে রাখাও হবে বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে বোলারদের জন্য, বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য, নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে রান আটকে রাখার কৌশলই হবে সাফল্যের চাবিকাঠি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের লড়াই বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ।
এখন পর্যন্ত দুই দল ১৩টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে আফগানিস্তানের ৭ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ৬টিতে। পরিসংখ্যানই বলে দেয়, লড়াইটা কতটা সমানে সমান। তাদের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল এশিয়া কাপের মঞ্চে, যেখানে বাংলাদেশ ৮ রানের এক রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নিয়েছিল। সেই ম্যাচটিই প্রমাণ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশনে দুই দল কতটা কাছাকাছি মানের। যদিও সামগ্রিক জয়ের হিসাবে আফগানিস্তান কিছুটা এগিয়ে, তবে বেশিরভাগ ম্যাচই ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অল্প ব্যবধানে নিষ্পত্তি হয়েছে।
শারজার ধীরগতির পিচ এবং রাতের ম্যাচে শিশিরের প্রভাব অনেক সময় দলগুলোর শক্তির পার্থক্য কমিয়ে দেয়, যা ম্যাচের ফলাফলকে আরও অপ্রত্যাশিত করে তোলে। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায়, বাংলাদেশের সাইফ হাসান (৭ ম্যাচে ২২৬ রান) এবং তানজিদ হাসান (৮ ম্যাচে ১৫০ রান) ব্যাটিংয়ে কাড়তে পারেন। বোলিংয়ে তাসকিন আহমেদ (৭ ম্যাচে ১৭ উইকেট) এবং মোস্তাফিজুর রহমানের (৮ ম্যাচে ১২ উইকেট) দিকে তাকিয়ে থাকবে দল। সব মিলিয়ে, ক্রিকেটপ্রেমীরা আরও একটি স্পিন-নির্ভর রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের অপেক্ষায়।
সূত্র: মানবজমিন।