চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে পেয়েও হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারল না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ গোলে হারল নেইমারবিহীন ব্রাজিল।
বেশ কয়েক ম্যাচ ধরেই ছন্দে নেই সেলেসাওরা। টানা দুই হারের ক্ষত নিয়ে মারাকানায় পা রেখেছিল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার।
ম্যাচের আগে গ্যালারির উত্তেজনায় ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট পর। খেলা শুরুর পর সেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে মাঠেও। মাঠে নামতেই কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। শুরুটা হয় রদ্রিগো এবং মেসিকে দিয়ে। একটু পর বাকিরাও জড়িয়ে পড়েন তাতে। এমনকি খেলা শুরুর পরও একটুও কমেনি এর রেশ। ম্যাচটা যে গোলের এবং গোল করেই জিততে হবে সেটি যেন ভুলেই গিয়েছিলেন খেলোয়াড়েরা।
সংঘাতপূর্ণ এই ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিটে অন্তত ১০ জন খেলোয়াড়কে মাঠে গড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। গোলশুন্য প্রথমার্ধে সব মিলিয়ে ২২টি ফাউল করেছে দুই দল। যেখানে ব্রাজিলের ১৬টি ফাউলের বিপরীতে আর্জেন্টিনার ফাউল ছিল ৬টি।
অবশেষে গোলমুখ খোলে দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৩ মিনিটে গোলের দেখা যায় আর্জেন্টিনা। লো সেলসোর কর্নারে হেড দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন নিকোলাস ওতামেন্দি। এরপর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে নিষ্প্রভ মেসিকে তুলে নিয়ে আনহেল দি মারিয়াকে নামায় আর্জেন্টিনা। ৮১ মিনিটে ব্রাজিলের বিপদ আরও বাড়ে জেয়েলিংটন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। ১০ জনের ব্রাজিল শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
দুই বছর আগে সর্বশেষ ব্রাজিলে খেলতে গিয়ে না খেলেই ফিরে এসেছিল আর্জেন্টিনা। সেবার সাও পাওলোতে ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট পর ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ এজেন্সির (আনভিসা) কর্মকর্তারা মাঠে ঢুকে খেলা পণ্ড করেন। আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়ের বিপক্ষে কোয়ারেন্টিন বিধিমালা ভাঙার অভিযোগে ম্যাচটি খেলতে দেননি তাঁরা।
ভিন্ন কারণে আজ ফের ব্রাজিলের মাটিতে পণ্ড হতে বসেছিল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সুপার ক্লাসিকোর ম্যাচ। ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে গ্যালারিতে উত্তাপের সূচনা। জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা দুয়ো দিলে তাদের ওপর আসন ছুড়ে মারতে শুরু করে ব্রাজিলের সমর্থকেরা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। লিওনেল মেসিসহ আর্জেন্টিনা দল এবং মার্কিনিওস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। যদিও তাতে কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে সতীর্থদের নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান মেসি। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর।
সূত্র: ইত্তেফাক