কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ সময় ভীত সন্তস্ত্র হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন রোগীর অভিভাবকরা। এতে ক্ষয়ক্ষতি না হলেও আতংক কাটেনি তাদের মধ্যে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আক্কাস আলী।
কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক রমিজ উদ্দিন (তপু) বলেন, রাত তখন ১০ টা বাজে। হঠাৎ চিৎকার শুনতে পেলাম আগুন লাগার। ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পেলাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার ডায়রিয়া শিশু ওয়ার্ড এটি। ওই ওয়ার্ডে বৈদ্যুতিক সুইসে থেকে আগুনের সুত্র হয়েছিল বলে জানতে পেলাম। এ সময় আগুনের ভয়ে ভীত সন্তস্ত্র হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন রোগীর অভিভাবকরা। তবে ওই ঘটনায় কারো কোন ক্ষতি হয়নি।
শিশু ওয়ার্ডের সার্থকের পিতা সজিব দাস বলেন, আগুন লাগার পর খুবই ভয় পেয়ে ছিলাম। এ সময় ওই ওয়ার্ডে আমার বাচ্চা সহ অনেক বাচ্চা ছিল। সবাই নিজ নিজ বাচ্চা নিয়ে নিচে নামার চেস্টা করেন। খোজেন নিরাপদ আশ্রয়।
তিনি বলেন, পরে আগুন নিয়ন্ত্রনে আসলে কিছু রোগী ওয়ার্ডে ফিরে আসে। আর কিছু রোগী রাতেই বাড়িতে ফিরে যান। তবে রোগীরা ওয়ার্ডে ফিরলেও আতংক ছিল সবার চোখে মুখে।
একই কথা বলেন, কামরুন নাহারের অভিভাবকসহ ওই ওয়ার্ডের অনেকে। তারা বলেন, আমরা ছিলাম পাশের সাধারণ ওয়ার্ডে। আগুন লাগার পর ওয়ার্ডের সবাই সব কিছু ফেলে রেখে বাচ্চাগুলো নিয়ে নিচে নেমে যায়। পরে ওয়ার্ডে ফিরে এলেও আতংক ছিল সবার ভিতর।
ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র স্ট্যাফ নার্স শাহানাজ পারভিন বলেন,রাত সে সময় ১০ টা বাজে।হঠাৎ করে আগুন লাগার চিৎকার শুনতে পারি। এ ছুটে বৈদ্যুতিক সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার পর আগুন নিভে যায়। তবে ধোয়া উঠতে থাকে।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় ডায়রিয়া আর সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ টি বাচ্চা ভর্তি ছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভয়ে কিছু রোগী বাড়ি চলে যান ওই সময়।তবে বেশির ভাগ রোগীই ভর্তি ছিল।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা আক্কাস আলী বলেন,রাত ১০ দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছিলাম। ১০.১০ মিনিটের সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন দেখতে পায়নি। তবে গন্ধ আর ধোয়া ছিল সে সময় ও।
তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ আগুনের সুত্রপাত হয়েছিল।
কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর রশিদ বলেন,বৈদ্যুতিক বোডের মধ্যে টিকটিকি ছিল। এ কারনে শর্টসার্কিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় আমাদের নার্স শাহানাজ পারভিন রোগীদের মাধ্যমে জানতে পেরে দ্রুত মেইন সার্ভিসের সুইস বন্ধ করে দেন। এছাড়া অন্যরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এতে করে তেমন কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি। তবে সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা। এতে সাময়িক অসুবিধা হয় রোগী ও অভিভাবকদের। এ কারনে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় যারা দূর্ঘটনা মোকাবিলায় সহায়তা করেছেন প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।