মেহেরপুরের গাংনীতে ভুল অপারেশনে সুরভী খাতুন (১৭) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু’র অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সুরভী খাতুন উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর পশ্চিমপাড়ার দিনমুজুর সুরুজ আলীর মেয়ে ও প¦ার্শবর্তী ডাংমড়কা গ্রামের বাঁশিরুল ইসলামের স্ত্রী।
সুরভীর খালু নাজমুল হক জানান, সুরভী খাতুনকে গত বুধবার বিকালে বামন্দীর আল শেফা ক্লিনিকে (ফজলু ক্লিনিক) সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নেয়া হয়। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশন করার পর একটি পুত্র সন্তান হয়। ভুল অপারেশন করার কারণে তার রক্তক্ষরণ শুরু হলে অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা: ফজলুল হক রুগীকে ঢাকায় রেফার্ড করে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সুরভীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সুরভীর মামা সাহাজুল ইসলাম জানান, অপারেশন করার পর প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সুরভীর মৃত্যু হয়েছে। ভুল অপারেশন না হলে রক্তক্ষরণ হবে কেন।
সুরভীর পরিবার জানান,৭ হাজার ৫শ’ টাকা চুক্তিতে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য আল শেফা ক্লিনিকের (ফজলু ক্লিনিক) মালিক নজরুল ইসলামের সাথে চুক্তি হয়। ভুল অপারেশনের মাধ্যমে সুরভীকে হত্যা করা হয়েছে। অপারেশনকারী চিকিৎসক কিংবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে যেন থানায় অথবা সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ না করি এজন্য নানা ভাবে তদবির ও হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
একদিকে মেয়ের মৃত্যু অন্যদিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের হুমকি এ নিয়ে তিনি ও পরিবারেরর সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন। তারা অভিযুক্ত ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
আল শেফা ক্লিনিকের (ফজলু ক্লিনিক) মালিক নজরুল ইসলাম জানান, সুরভী অসুস্থ ছিলো একারণে তার মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ রোগীকে অপারেশন করালেন কেন জানতে চাইলে তিনি গড়িমশি করেন।
অপারেশকারী চিকিৎসক ফজলুল হক বলেন, সুরভীর একলামশিয়া রোগ ছিলো। উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে সুরভীর মৃত্যু হয়েছে। অপারেশনে কোন ভুল ছিলনা।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এম রিয়াজুল আলম বলেন, আল শেফা ক্লিনিকের (ফজলু ক্লিনিক) বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। প্রয়োজনে ক্লিনিক বন্ধ করার পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হেবে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মিজানুর রহমান জানান, ফজলুল হক মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছে। মৃত্যু’র ঘটনায় অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহমান জানান, সুরভীর পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আল শেফা ক্লিনিকের (ফজলু ক্লিনিক) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে মৃত্যু’র সংবাদ পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা: মো: নাসির উদ্দীন জানান, মৃত্যু’র ঘটনা দু:খ জনক। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।