বাড়ির আঙ্গিনায়, বারান্দায় অথবা ছাদের শোভা বাড়াতে যে গাছের নামটি মনে আসে সেটি হল বাগানবিলাস। ভিন্ন ভিন্ন রঙের ফুলে যেন রঙিন হয়ে তোলে চারিদিক। ইংরেজিতে ফুলটির নাম বুগেনভিলিয়া। ফরাসী আবিষ্কারক লুই অটোইন ডি বোগেইনভিলিয়া’র নাম অনুসারে এ গাছের নামকরণ করা হয়েছে। কেউ কেউ ভালোবেসে এটিকে কাগজ ফুল বা কাগজি ফুল নামেও ডেকে থাকেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৈজ্ঞানিক নামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নামকরণ করেছেন বাগানবিলাস। সারা বছর বাগানের শোভা বাড়ায় ফুলটি । বাগান প্রেমীদের কাছে বাগানবিলাস একটি সেরা উপহার। এছাড়াও, আমদের দেশের প্রায় সব জায়গায় এই গাছ চোখে পরে। বিশেষ করে বাড়ির সামনের গেট অথবা পার্কে। বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে এই গাছের ফুল । লাল, কমলা, হলুদ, সাদা, গোলাপি, আরো কত রং!
তবে অনেকেরই অভিযোগ থাকে যে তাদের বুগেনভিলিয়া গাছে ফুল আসছে না। পাতায় ভরে যাচ্ছে গাছ, ভালো গ্রোথ থাকলেও ফুলের অভাব।
বাগানবিলাস গাছে ফুল আনার সবচেয়ে ভালো উপায় হল পানির অভাব তৈরি করা। বাগান বিলাস গাছের মাটি ভেজা থাকা মানেই এতে সেভাবে ফুলের দেখা পাওয়া যাবে না। তাই গাছের মাটি পুরো শুকিয়ে পাতা ঝিমিয়ে পড়া অবধি অপেক্ষা করতে হবে। এবং তারপরও যে পানি দেবেন সেটাও খুব সামান্য হতে হবে। মানে সেইটুকুই পানি দিতে হবে যতটা গাছটির বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন। কয়েকদিন এরকম করলেই দেখবেন গাছ ভরে ফুল এসেছে।
গাছে শুধু পর্যাপ্ত সূর্যের তাপ বা আলো পেলেই হবে না। রোদ পছন্দ করে এই গাছ । গাছটি সরাসরি রোদে রাখতে হবে দিনে অন্তত ৪-৫ ঘণ্টার জন্য। গাছ যত রোদ পাবে তত বেশি ফুল ফুটবে। কারণ এই গাছের খুব বেশি এনার্জির প্রয়োজন হয়। গরমে অনেক সময়ই দেখা যায় ফুলের রং একটু হালকা হয়ে গিয়েছে। অনেক সময় রোদের তীব্রতার কারণেই এমনটা হতে পারে। ভয় পেয়ে গাছকে ভুলেও ছায়ায় রাখবেন না।
বাগান বিলাস লতানো গাছ। তবে গাছ ঝাঁকড়া না হলে ফুলও কম পাবেন । সেক্ষেত্রে বুগেনভিলিয়া গাছ নার্সারি থেকে কিনে আনার পর তাতে পিঞ্চিং করতে হবে। গাছের পিঞ্চিং অর্থাৎ ডালের মাথার দিকের কচি দুটো কিংবা তিনটে পাতা খুটে দেওয়া। এতে গাছ ভরে নতুন নতুন শাখার জন্ম নিবে ।
এই ফুলের অনেক উপকারিতা রয়েছে, এটি জলে ফুটিয়ে সেবন করা যায় অথবা এর রস বানিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়াও, আপনি এর চা তৈরির সুবিধাও নিতে পারেন, যা কোলেস্টেরলের উপর খুব কার্যকর। অনেক সময় পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে বাড়িতে সবারই সর্দি-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, বোগেনভিলিয়া ফুলই পারফেক্ট প্রতিকার। এই ফুল জলে ফুটিয়ে পান করলে কাশি পুরোপুরি সেরে যাবে।
সূত্র: ইত্তেফাক